আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুগ্রহ করে গল্প সম্বন্ধে আপনার মতামত অবশ্যই প্রকাশ করবেন। আপনাদের মতামত আমাদের এই ছোট প্রয়াসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগায়। শীঘ্রই আরও নিত্য নতুন গল্প আপডেট আসছে, সঙ্গে থাকুন। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখক/লেখিকা'র নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত গল্পের ডায়েরি’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখক/লেখিকা'র কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় গল্পের ডায়েরি কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ করলে তা কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

অচেনা অতিথি - পর্ব ২৪ - সিজন ২ - নাফিসা মুনতাহা পরী - ধারাবাহিক গল্প


সাদ তার দাদার রুমের দরজায় জোড়ে জোড়ে ধাক্কা দিতে লাগলো। দরজা ধাক্কানোর শব্দে লাবীবা বেগমের ঘুম ভেঙ্গে গেল। এভাবে কে দরজা ধাক্কাচ্ছে বলেই তিনি দ্রুত উঠে লাইট জ্বালিয়ে দরজা খুলে দিতেই দেখলেন সাদ কাঁদছে দাড়িয়ে।

লাবীবা বেগম বিশ্ময়ের  সাথে বলল -

~" কি হয়েছে সাদ!"

সাদ কথা না বলে কেঁদেই চললো। সাদের কোন জবাব না পেয়ে লাবীবা বেগম রুম থেকে বের হয়ে এদিক ওদিক চেয়ে দেখলো কেউ নেই। শুধুু সাদই দাড়িয়ে আছে।

লাবীবা বেগম সাদকে কোলে নিতেই এবার সাদ বলল-

~" দাদী মাকে তো পাওয়া যাচ্ছেনা। সাথে গোলাব ভাইয়াও নেই। বাবা দৌড়ে বাহিরে গেল। আপনি একটু আমাকে বাহিরে নিয়ে যাবেন?"

লাবীবা বেগম নাতীকে কোলে আর না নিয়ে ঐ অবস্থায় বাহিরে আধা দৌড়ে চলে গেলেন। দাদীও সাদকে নিয়ে গেলোনা। তাই সাদ দৌড়ে ওর দাদাজানের কাছে গেল।

.

তিতির সেন্সলেস হয়ে গেছে। মাহাদ না এদিকে যেতে পারছে না অন্যদিকে। এমন সময় আফাজ মিয়া দৌড়ে এল। ততক্ষনে লাবীবা বেগমও চলে এসেছে। তিনি এসে তিতিরকে ধরতেই মাহাদ গোলাবের দিকে গেল। মাহাদ যতই গোলাবকে তুলে নিয়ে আসতে চায় গোলাব ততই কবরের উপর ওর শরীর এড়িয়ে দেয়। শেষে মাহাদ কাঁদতে লাগে। যে চলে গেছে সে কখনো ফিরে আসবেনা। তার পরও অবুঝের মত কেন এমন আচরন করছিস! মাহাদের কন্ঠ শুনে গোলাব যেন থেমে গেল।

অনেক কষ্টে ওদের নিয়ে বাসায় ঢুকলো মাহাদ। গোলাবকে পরিষ্কার করতে বলে তিতিরকে নিয়ে বেডরুমে চলে যায় মাহাদ। দু'জনের পুরো শরীরই বৃষ্টির পানিতে ভিজে একাকার। রুমে আসতেই তিতিরের সেন্স ফিরেছে। মাহাদ কোন রকম কথা না বলে ওকে ফ্রেশ করে দিয়ে নিজেও ফ্রেশ হলো। ওয়াশরুম থেকে রুমে এসে দেখলো তিতির খুক খুক করে কাশি দিচ্ছে। 

মাহাদ দ্রুত শক্ত করে তিতিরের মুখ চেপে ধরে বলল-

~" এত রাতে ওখানে কেন গিয়েছিলি, বল...!"

তিতির মাহাদের হাত ছাড়ানোর জন্য ছটপট করছে কিন্তু পারছেনা। মাহাদ ওকে আরও শক্ত করে চেপে ধরতেই তিতিরের চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগলো। মাহাদ ওকে ছেড়ে দিতেই তিতির বেড থেকে উঠে মাহাদের কাছ থেকে দুরে চলে গেল।
মাহাদ চিৎকার দিয়ে বলল-

~" এই এখান থেকে কেন গেলি! কেন গেলি বল! আয় এখানে, এক্ষুনি আয়। যদি আমি উঠি তো তোর কপালে কিন্তু  দুঃখ আছে। রাত-বিরাতে সবসময় তোর মাথায় ভুত চাপে?"

মাহাদের ধমক খেয়ে তিতির ফুফিয়ে কেঁদে উঠলো। কাঁদতে কাঁদতে বলল-

~" আর মারবেন না তো!"

~" আমাকে উঠতে হবে?"

এবার তিতির সুড় সুড় করে এসে মাহাদের থেকে একটু দুরে দাড়িয়ে রইলো। মাহাদ ওকে আবার জিঙ্গাসা করলো ঝাঝালো গলায়, এই রাত ২টার সময় তুই ওখানে কেন গিয়েছিলি! তোর মাথার ব্রেন কি নষ্ট হয়ে গেছে!

~" আমার মেয়ে......!"

~" চুপপপপ, আর একবার যদি মেয়ে মেয়ে করিস তো তোরে এখুনি থাবড়াইবো। আমি যেন কখনো তোরে দেখিনা ওখানে গেছিস। যদি দেখি তো তোরে এমন পিটান পিটাইবো তখন কেঁদেও কূল পাবিনা।"

হুম মাহাদের শাসন ওর উপর বেশ কাজ দিয়েছে। ভয়ে বিছানায় গিয়ে গুটিশুটি মেরে বসে রইলো। ঐ দিকে সাদ দরজার বাহির থেকে মা মা বলে ডেকেই চলছে। মাহাদ বেড থেকে উঠেই তিতিরের দিকে চেয়ে বলল-

~" তোরে যেন এখান থেকে নড়তে না দেখি। আর মাথায় ওড়না কই! ভালো করে গায়ে মাথায় ওড়না দে!"

মাহাদের ধমক খেয়ে তিতির ওর ওড়না গায়ে মাথায় দিয়ে চুপ করে বসে রইলো। মাহাদ গিয়ে দরজা খুলে দিতেই সাদ চুপ করে দাড়িয়ে রইলো। মাহাদ ওকে রুমে আসার জন্য ইশারা করে রুম থেকে বের হয়ে গোলাবের কাছে গেল। 
এতক্ষন গোলাবও ছটপট করছিলো। মাহাদকে দেখে ও শান্ত হয়ে দাড়িয়ে রইলো। কুসুম হেয়ার ড্রাই দিয়ে গোলাবের শরীরের লোম শুকানোর চেষ্টা করছিল। 

মাহাদ গোলাবকে ধমক দিয়ে বলল-

~" তোরেও কি উত্তম মাধ্যম দিতে হবে?"

গোলাব মাহাদের কথা শুনে ফ্লোরেই চুপটি মেরে বসে রইলো।

এদিকে সাদ ওর মায়ের কাছে যেতেই তিতির নিচু গলায় বলল-

~" সাদ আমার খুদা লাগছে। তুমি কি আমাকে খাবার এনে দিবে!

মায়ের ছলছল চোখের চাহোনি দেখে সাদের খুব কষ্ট হল। আমি এখুনি আনছি মা বলে সাদ দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে গেল। সাদ কিচেনে আসতেই ওর বাবার সাথে দেখা হয়ে গেল। মাহাদ সাদকে দেখে বলল-

~" এখানে কেন এসেছ বাবা!"

~" বাবা, মা কাঁদছে। ওনার নাকি খুব খুদা লাগছে। খাবার নিতে এসেছি।"

~" আমি দেখছি, তুমি গোলাব ভাইয়াকে নিয়ে ঘুমাতে যাও।"

সাদ আর কিছু বলতে পারলোনা। গোলাবকে নিয়ে নিজের রুমে চলে গেল। সাদ চলে যেতেই কামরান সাহেব চিন্তিত মুখে বলল-

~" তিতির কি গোলমাল কিছু করছে! ডাক্তার যা বলেছে সেটা কি মিলে গেছে ওর সাথে?"

মাহাদ দীর্ঘশ্বাস ফেলে মন ভার করে বলল-

~" আমি বুঝতে পারছিনা বাবা। কিন্তু ওর আচরন অস্বাভাবিক।"

মাহাদ খাবার নিয়ে ওর রুমে এসে দেখলো তিতির ওভাবেই বসে ঘুমে ভেঙ্গে পড়ছে বার বার। খাবার ট্রী টেবিলের উপর রেখে ওর মাথায় হাত দিতেই ও ঝিকে উঠে চোখ মেলালো। মাহাদকে দেখে আরও গুটিশুটি মেরে রইলো। মাহাদ ওর পাশে বসে প্লেটের ভাত মাখিয়ে ওকে ইশারা করতেই ও বলল-

~" আমি খাবোনা।"

মাহাদ ভ্রু কুচকে বললো-

~" খাবেনা কেন?"

আমারতো খুদা লাগেনি। মিনমিন করে বলল তিতির। 

~" খুদা লাগেনি মানে! তাহলে সাদকে খাবার আনতে বলেছিলি কেন?"

~" আমার সাথে তো সাদের দেখাই হয়নি?"

কিহ্ সাদের সাথে তোর দেখাই হয়নি! এত মিথ্যা কথা কবে থেকে শিখলি!  কথাগুলো বলে রাগী চোখে তিতিরের দিকে চাইলো মাহাদ।

আপনি ওমন করে কেন তাকান আমার দিকে! আমি বলছিতো, সাদের সাথে আমার দেখাই হয়নি। আমি খাবারগুলোও ওকে আনতে বলিনি বলেই তিতির কাঁদতে লাগলো।

এই তুই আমার বউমা কে বকছিস কেন বলে লাবীবা বেগম রুমে আসলো। তারপর তিতিরের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল-

~" তিতির, সত্যি কি তুমি খাবার খেতে চাওনা!"

তিতির মাথা নাড়িয়ে না বললো। লাবীবা বেগম ছেলের হাত থেকে প্লেট কেড়ে নিয়ে ছেলেকে বেশ জোড়ে ধমক দিয়ে বলল-

~" ওকে যেন আর বকাবকি করতে না দেখি। যদি দেখছি তো পা ভেঙ্গে দিব।"

মাহাদকে বকতেই তিতির যেন খুশিই হল একটু। কিন্তু লাবীবা বেগম চলে যেতেই তার আচল খামচে ধরলো ও। লাবীবা বেগম সাথে সাথে পিছন ফিরে বলল-

~" কিছু বলবে!"

~" আপনি আমাদের সাথে ঘুমান না। অাপনি না থাকলে উনি শুধু আমার গায়ে হাত দেয়.......।"

কথা শুনে লাবীবা লজ্জা পেল ব্যাপক। এখন মনে হচ্ছে রুমে ঢোকা ঠিক হয়নি। মাহাদ সব হান্ডেল করে নিতে পারতো। খামোকা এসে ছেলের সামনে লজ্জিত হতে হল।
মাহাদও চোখ বড় বড় করে তিতিরের দিকে চাইলো। তিতির ভয়ে শাশুড়ির আচল ছেড়ে দিয়ে চুপ করে রইলো। লাবীবা আর কিছু না বলে রুম থেকে বের হয়ে গেল। 
মা চলে যেতেই মাহাদ রাগের চোটে দরজা বন্ধ করে দিয়ে বালিশটা নিয়ে সোফায় রেখে হাত ধুয়ে এসে অন্য দিকে মুখ করে সুয়ে পড়লো।

তিতির বেশ কিছুক্ষন চুপ করে রইলো। তারপর একটু উচ্চস্বরেই বলে উঠলো, এই যে শুনছেন?

মাহাদের কোন রিপ্লাই আসেনা। আবার চুপ হয়ে রয় তিতির। আরও আধা ঘন্টা সময় এভাবে চলে যায়। কেউ কারো সাথে কথা বলেনা। তিতির ওখানেই সুয়ে পড়ে। খানিকক্ষণ পর মাহাদ উঠে তাহাজ্জুদের জন্য অযু করে এসে সালাতে দাড়াতেই তিতির ধড়মড় করে উঠে অযু করে মাহাদের পাশে দাড়ালো। কি নামায পড়লো সে ভালো জানে। মাহাদের সালাত শেষ হওয়ার আগেই ও বিছানায় গিয়ে কাপটি মেরে সুয়ে রইলো।

মাহাদ সালাত শেষ করে রুমে লাইট জ্বালিয়ে বেডে গিয়ে সুয়ে পড়তেই তিতির উঠে সোফায় গিয়ে বসলো। মাহাদ কোন প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে চোখ বন্ধ করলো। তিতির ওভাবেই মাহাদের দিকে চেয়ে আছে। মাহাদের কোন রেসপন্স না পেয়ে ওর হাতের বালা দুটি খুলে শব্দ করতে লাগলো।

মাহাদ এবার চোখ মেলে তিতিরের দিকে তাকাতেই তিতির আবার চুপ হয়ে গেল। মাহাদ শান্ত হয়ে আদুরে গলায় বলল-

~" তিতির এখানে আসো!"

~" না আপনি মাব্বেন?"

~" মারবো না আসো!"

~" সত্যি মাব্বেন না তো!"

~" উমহু আসো,  অনেক আদর করবো।"

এবার তিতির মাহাদের কাছে গিয়ে বসতেই মাহাদ ওর কপালে কিস করে বলল-

~" বউ আমি আর সাদ ছাড়া তোমার শরীরে কাউকে হাত দিতে দিবেনা। কাউকে বলতে কাউকে না। এমন কি কোন মেয়ে মানুষকেও না। বুঝেছ আমার কথা!"

তিতির শুধু মাথা নাড়ায়। মাহাদ ওকে বুকের ভিতর নিতেই ও বলল-

~" আপনি খুব খারাপ।"

মাহাদ ওর ঠোটের পরশ বুলিয়ে দিল তিতিরের গালে। তারপর বলল-

~" এখনো খারাপ!"

ছাড়েন আমায়, আপনি আমাকে মেরেছেন বলেই তিতির মাহাদের কাছ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতেই মাহাদ ওর দুটি হাত চেপে ধরলো শক্ত করে। তারপর তিতিরকে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে ওর মধ্য ডুবে গেল। তিতির প্রথমে ছটপট করতে শুরু করলেও মাহাদের ভালোবাসায় শিক্ত হয়ে গেল। এত কষ্ট, দুঃশ্চিন্তার মধ্যও মাহাদ তিতিরের ভিতর সুখ খুঁজতে লাগলো। তিতিরের নিঃশ্বাস ঘন হয়ে আসছে মাহাদের আলিঙ্গনে। মাহাদ যেন এই সময়েরই জন্য অপেক্ষা করছিল। তাই দেরী না করে স্ত্রীর ভালোবাসা পেতে আর দিতে মত্ত হয়ে গেল। 


৩ দিন পরে,

তিতিরের ব্রেনে কিছু সমস্যা হয়েছে। যার দরুন সে অস্বাভাবিক আচরন করে। চিকিৎসা চলছে কিন্তু তিতিরের জটিলতা যেন বেড়েই চলছে। খেয়েও বলে খায়নি, কিছু মনে রাখতেও পারেনা, ছোট মেয়ে শিশুদের যেখানেই দেখে সেখানেই কান্না-কাটি করে। এত সমস্যার ভিতরও মাহাদ ওকে আগলে রেখেছে।

সকালে বাসার সবাই নাস্তা করতে বসেছে এমন সময় বাতাসি কেবল চায়ে চুমুক দিছে, ওমনি লাফ দিয়ে উঠে চিক্কুর দিয়ে বলল-

~" এই অ্যারে কে লবন চা দিচে! অ্যার মুখ গেলরে গেল.....।"

কাজের মানুষদের তো ভয়ে  মুখ শুকিয়ে গেল। বাতাসির চায়ে লবন দেওয়া মানে নিজের কবর নিজেই খোড়া। এমন দুঃসাহস অন্তত এদের হবেনা। তাহলে এতবড় কাজটা করলো কে?

কামরান সাহেব মায়ের চা পরোখ করে দেখলো তার আম্মাজান ভুল বলেননি। তিনিও রেগে গিয়ে বললেন, কার এতবড় সাহস, চায়ে লবন দেওয়ার?

সবাই ভয়ে কাঁপাকাপি করলেও তিতির মুচকি মেরে হাসছে। কারন এত বড় দুঃসাহসের কাজ তিতির নিজেই করেছে। বাতাসি বিবি যখন তখন মাহাদরে সোয়ামী, সোয়ামী বলে ডাকে। যেটা তিতিরের একদম পছন্দ হয়নি। তাই সবার অজান্তে এমন মহান কাজ সে করেছে।

অনেক কষ্টে বাতাসিরে ঠান্ডা করে নাস্তা করানোর জন্য বসাতেই তিতির ওর দিকে চোখ বড় বড় করে চাইলো। বাতাসিও সাথে সাথে তিতিরের দিকে চেয়েই বলল-

~" চোর পাইয়া গেছিরে, পাইয়া গেছি....। পাগলডারে ধর! মাহাদ তোর বউরে শাসন কর কইচি। আই নিশ্চিত তোর বউ অ্যার চায়ে  লবন মিসাইছে।"

তিতিরও সাথে সাথে মুখে ভেংচি কেটে মিনমিন করে বলল-

~" কাউয়াতাসি, বাতাসি, বাসপাতালি।"

ব্যস হয়ে গেল। বাতাসির মুখ ছুটলো। পাগল ছাগলো মাইয়া কোনহানকার। বাপের বাড়ী পাইছোস! অ্যারে বাসপাতালি কস! তোর থোপনাতে বারি মাইরা মুখ ভাঙ্গমু।

মাহাদ তিতিরের দিকে চাইতেই তিতির চুপ হয়ে নাস্তা খেতে লাগলো । মাহাদ নিচু গলায় বলল-

~" বউ এমন মহান কাজ কি আপনি করেছেন?"

তিতির প্রথমে না বলল। কিন্তু পরক্ষনেই ফিক করে হেসে মাথা উপর নিচ করলো। মাহাদ সাথে সাথে চোখ বড় করে বলল-

~" চুপ চুপ, কোন হাসি না। দাদী কনফার্ম না যে, তুমিই কাজটা করেছ। যদি জানে তাহলে সব শেষ করে ছাড়বে। এখুনি এখান থেকে উঠে যাও।"

~" আমি খাবোনা! আমার তো খুদা লাগছে।"

~" না দরকার নেই। আমি রুমে তোমার জন্য খাবার নিয়ে যাচ্ছি। যাও এখুনি......!"

মাহাদের কঠিন মুখ দেখে তিতির একটু ভয় পেয়েই উঠে কিচেনে গেল। তবে যাওয়ার আগে বাতাসিরে ভেংচি কেটে গেল, যেটা কেউ দেখতে পেলোনা।

~" ঐ মাহাদ, দেখ দেখ তোর বউ অ্যারে মুখ বাঁকানি দিয়ে গেল। এর বিচার না করলে আই মুখে ভাত তুলুম না।"

~" আম্মা আপনি তিতিরকে আগে থেকেই দেখতে পারেন না। আর এখন তো অসুস্থ। ওরে এভাবে না বকলে কি নয়?"

লাবীবার কথা শুনে বাতাসি যেন চটে গেল। তুমি অ্যার ব্যাটার বউ না অন্য মানষের বউ! আজই বাপের বাড়ী চইলা যাবা। অ্যার পুতরে আজই আর একখান বিয়া দিমু। তহন তুমি ঠিক হইবা। তোমার থাইকাও ছোড মাইয়ার লগে বিয়া দিমু। তোমারে ঘরে আইনা আই ভুল করিচি। যাও তুমি অ্যার চোক্বের সামনে থাইকা।

বাতাসির কথা শুনে মাহাদ উঠে গেল কিছু না বলে। যেহেতু বউ দোষ করেছে তাই এমন কথায় মাহাদ আর বাতাসিকে কিছু না বলে চলে গেল।

নিসাও মুখে বাঁকিয়ে বলল-

~" তিতির যদি লবন দিয়েও থাকে তাহলে বেশ করেছে। আমি হলে বিষ দিতাম বিষ।"

হারামজাদি তোর পিছে যেদিন পাগলটা লাগবো তহন বুঝবি কত ধানে কত চাল। এহন অ্যার কষ্ট দেইহা মুখ বাকা করোস! তোর দাঁত পইড়া গিয়া জলদি ফোকলা হবি। হেইদিন জুম্মাতে জকাত দিমু ১০ টাকার। এই বাড়ী সব মরদেরা ওগো বউয়ের আচলের তলায় মাউ মাউ করে। সব মাইয়ারা এই মরদগো তাবিজ করছে। বাতাসির চিল্লানো যেন বেড়েই যায়।

এদিকে মাহাদ এসে রুমের দরজা লাগিয়ে দিয়ে তিতিরকে ধরে বলল-

~" এগুলো কি শুরু করছো! দাদীর পিছে লাগছো কেন?"

~" আপনি আমাকে বকা দেন কেন?"

মাহাত দাতে দাত চেপে বলল-

~" তোমাকে  সাধে বকা দেইতো! এই যে বাসার পরিস্থিত তুমি জটিল করছো তার দায় কে নিবে! "

~" এমন করে বকা দিলে কিন্তু আপনারে আর আদর করতে দিবোনা আমাকে হু!"

তিতিরের কথা শুনে বাক্কেল হয়ে গেল মাহাদ। এ বলে কি! কি বললা তুমি?

তিতির মাথা নাড়িয়ে মুচকি হাসি দিয়ে বলল-

~" আপনার বাসপাতালি, নিসা কালডাকনী এক্ষুনি জোড়ে একটা চিৎকার দিলো বলে।"

 এই তুমি ওদের সাথে কি করেছ বলতেই সত্যিই বাতাসি আর নিসা এক সাথে গলা ফাটিয়ে চিৎকার দিয়ে উঠলো.........
Author, Publisher & Developer

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

উফ!
মনে হচ্ছে আপনার ইন্টারনেট সংযোগে কিছু সমস্যা আছে। অনুগ্রহ করে আগে আপনার ইন্টারনেটের সংযোগ ঠিক করুন এবং তারপর আবার ব্রাউজিং শুরু করুন৷
AdBlock সনাক্ত করা হয়েছে!
আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি আপনার ব্রাউজারে অ্যাডব্লকিং প্লাগইন ব্যবহার করছেন৷ আমরা আপনাকে আপনার অ্যাডব্লকিং প্লাগইন বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করছি, কারন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমরা যে রাজস্ব আয় করি তা এই ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।