অস্পষ্ট প্রেমাবেগ - পর্ব ১৮ - সুলতানা পারভীন - ধারাবাহিক গল্প


৩৫!! 

তামান্নার পুরো দিনটাই কেটেছে বিরক্তিতে। দীপ্তিকে স্কুলে দিয়ে এসে রান্না করেছে। তারপর শাওয়ার নিয়ে এসে অযথাই আলমারি থেকে কাপড় বের করে আবার গুছিয়েছে। দীপ্তি স্কুল থেকে ফিরলে ওকে গোসল করিয়ে খাইয়ে দিয়েছে। তবু মনের মধ্যে কেমন একটা অস্বস্তি লাগছে। শেষে আর থাকতে না পেরে বিকেলে দীপ্তিকে ঘুম পাড়িয়ে কিশোরকে কল করেছে। কয়েকবার রিং হওয়ার পর কলটা রিসিভ হয়েছে।

-হ্যালো? তমা? বলো?

-কি করছেন?

-এইতো একটু কাজ করছি। তুমি কি করছো? দীপ্তি কোথায়?

-এই তো বসে--। দীপ্তি ঘুমাচ্ছে। আপনি খেয়েছেন?

-নাহ। সময় পাই নি। কাজ করছি তো। তুমি খেয়েছ?

-উঁহু----।

-খেয়ে নাও না? কয়টা বাজে খেয়াল আছে?

-হুম---।

-খেয়ে নাও তুমি কেমন? আমি পরে সময় করে কল দিবো? ওকে?

-আচ্ছা---।

-ওকে বায় তমা-।

-বায়।

তামান্না কলটা কেটে দেয়ার প্রায় সাথে সাথেই আরেকটা নাম্বার থেকে কল এলো। নাম্বারটা দেখেই তামান্নার সারা শরীর একবার কেঁপে উঠলো। কলটা রিসিভ করবে কি না ভাবতে ভাবতে রিসিভ করলো তামান্না। 

-হ্যালো মিসেস তামান্না কিশোর চৌধুরী? কেমন কাটছে দিনকাল?

-আজ আবার কেন কল করেছেন আপনি? কি চাই আপনার?

-আহ!! আমার যা চাই সেটা তো তোমার কাছ থেকে চাইতে হবে না। সেটা আমি নিজেই নিয়ে নিবো--।

-আপনার যা ইচ্ছে হয় করুন না। আমাকে কেন বলতে এসেছেন আপনি? আমি কি আপনার কাছে জানতে এসেছি?

-বাহ! কিশোর তোমার জন্মদিনে বাড়িতে আসায় তো দেখছি ভালোই কথা বলতে শিখে গেছো! তা তোমার কি মনে হয় কিশোর ইচ্ছে করে তোমার বার্থডে সেলিব্রেট করতে বাড়িতে এসেছিল?

-মানে?

-ওকে তো আমিই এক প্রকার জোর করে পাঠালাম। হাজার হোক আমাদের মেয়ের জন্য এতোদিন ধরে এতোকিছু করছো তুমি--। এটুকু তো করাই যায়--। আর তাছাড়া কয়েকজন আত্মীয় স্বজনের সাথে পরিচয় করালেই তো আর তুমি কিশোরের বউ হয়ে যাবে না--।

-চুপ করুন আপনি--। চুপ করুন।

-কেন শুনতে খারাপ লাগছে বুঝি? আচ্ছা কিশোর তোমাকে ডিভোর্সের কথাটা বলে নি না? এই ছেলেটাও না? এতো ফর্মালিটি করে---।

-একটাও বাজে কথা বলবেন না সুপ্তি। এটা আমার সংসার। আমি উনার ওয়াইফ, দীপ্তির মামনি--। উনি কখনোই আমাকে ডিভোর্স---।

-সেই আশাতেই থাকো তামান্না। আর সংসার, দীপ্তি, কিশোর! এসব আবার তোমার কবে থেকে হলো! কিশোর আমাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছে কথাটা ভুলে যাও কেন বলো তো? আমার উপরে ওর অভিমান হতে পারে, রাগ হতে পারে, কিন্তু তার জন্য তো আর আমার জন্য ওর ভালোবাসাটা কমে যায় নি--। দেখলেই তো এই কয়টা মাস? বিয়ের পরদিনই ও তোমাকে ছেড়ে সেই আমার কাছেই এসে---।

-চুপ করুন আপনি। আমি আপনার একটা কথাও বিশ্বাস করি না--।

-করো না। যখন ডিভোর্স লেটারটা হাতে পাবে তখন বুঝবে কি বোকাটাই না ছিলে তুমি--। 

----------------------

-তামান্না তুমি জানো কিশোর আমাকে এতো ভালোবাসে যে আমার জন্য ও সব করতে পারে। এই ধরো ওকে যদি বলি আজ রাতটা আমার সাথে স্পেন্ড করতে তাহলে ও---।

-জাস্ট স্টপ ইট---। 

-আরে? এতো হাইপার হচ্ছো কেন? তুমি তো বিশ্বাস করবে না। তাই বলে রাখলাম আর কি-। আচ্ছা নাহয় কাল তোমাকে ছবি পাঠিয়ে দিবো--। একটু পরেই আমরা বের হবো----।

তামান্না কান থেকে ফোনটা সরিয়ে কল না কেটেই মোবাইলটা সুইচ অফ করে দিলো। তারপর বিছানার এক কোণে বসে হাঁটুতে মুখ গুঁজে কাঁদতে লাগলো। কিশোর কিছুতেই এই কাজটা করতে পারে না। মানুষটা তো ওকে নিয়েই নতুন করে সব শুরু করতে চাইছে৷ তাহলে তামান্না কেন অযথা অন্যের কথায় উনাকে অবিশ্বাস করবে! কখনো না। কিছুতেই তামান্না এসব আলতু ফালতু চিন্তা মাথায় আসতে দিবে না। এসব ভাবতে ভাবতেই আরো বেশি কান্না পাচ্ছে তামান্নার। কিছুতেই কান্নাটা আটকাতে পারছে না মেয়েটা৷ কিছু একটা হারানোর বড্ড ভয় হচ্ছে ওর৷ সবটা পেয়েও যেন হারিয়ে ফেলার একটা প্রচন্ড ভয় তিলে তিলে গ্রাস করতে শুরু করেছে ওকে। 

এদিকে কিশোর হাতের একটা ফাইলের পেইজ উল্টে পাল্টে দেখতে দেখতে ম্যানেজারের দিকে তাকালো।

-আসিফ? তোমাকে যে খবরটা নিতে বলেছিলাম সেটার কাজ কদ্দূর?

-স্যার আমি সবটা খবর নিয়েছি। আপনার সন্দেহটা ঠিক ছিল স্যার। মিস্টার আহমাদ খান কাজটা প্ল্যানিং করে করিয়েছেন উনার মেয়েকে দিয়ে---।

-হুম--। আমি আগেই কেন যে ব্যাপারটা খেয়াল করলাম না--! উফ!! 

-টেনশন করবেন না স্যার। সব ঠিক হয়ে যাবে--।

-আর কোন খবর আছে?

-স্যার আমরা অনেকদিন ধরে আপনাদের বাড়ির সবকটা মোবাইল নাম্বারের উপরে নজর রাখছিলাম। সেখানে একটু প্রবলেম দেখা দিয়েছে--।

-বুঝলাম না। কেমন প্রবলেম?

-একটা আননোন নাম্বারের সাথে আপনাদের বাড়ি থেকে কন্টাক্ট করা হচ্ছে বেশ অনেক দিন ধরে। আর সেই আননোন নাম্বারটা কিছুদিন হলো ম্যাডামের সাথেও কন্টাকে আছে--।

-তামান্নার!! আননোন নাম্বারটা কার? আর বাড়িতেই বা আর কার সাথে---।

-স্যার সেটা নিয়ে আমরা এখনো কাজ করছি। এখনো সিমের ওনারের ডিটেইলস পাওয়া যায় নি। 

-আচ্ছা দেখো---। আর তোমাদের কি অবস্থা? সব শিফ্ট করে হেড অফিস শিফ্ট করতে হলে তো আরেকটু তাড়াতাড়ি কাজ করতে হবে----।

-স্যার আমি বলি কি--একেবারে শিফ্ট না করে একটা নতুন ব্রাঞ্চ শুরু করলে হয় না? এদিকেরটা এখন যেমন চলছে----।

-সেটা ভালো হবে বলছো?

-আমার মতামতটা আপনাকে জানালাম স্যার--। আসলে এতোজন স্টাফ সবাইকে শিফ্ট করানোর চেয়ে---।

-আচ্ছা। কিন্তু আমি কিন্তু এমন হুটহাট করে ঢাকায় আসতে পারবো না। তোমাদের ম্যাডাম অলরেডি খেপেছে--। কাল মেয়েটার বার্থডে ছিল আর আমি আজ এখানে--। দেখেছো ফোনটাও অফ করে বসে আছে--।

-এদিকের কাজ তো প্রায় শেষ স্যার। বাকি আপডেট আপনাকে আমরা ফোনে জানিয়ে দিবো--।

-ওকে। এখন উঠি কি বলো? তোমরা ভাই এদিকটা সামলাও।

-জি স্যার। 

রাতে দীপ্তিকে খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছে তামান্না। সারাদিনের ক্লান্তিতে একসময় ঘুমিয়েও গেছে। ভোররাতের দিকে একবার ঘুম ভাঙলে উঠে বসতে গিয়ে একটু চমকে উঠলো আবার। সেদিনের মতো আজও পিছন থেকে জাপটে ধরে তামান্নার ঘাড়ে মুখ গুঁজে কেউ একজন আজও ঘুমাচ্ছে। মানুষটার উষ্ণ নিঃশ্বাস এসে ধাক্কা খাচ্ছে তামান্নার কাঁধে, ঘাড়ে। তামান্না মানুষটার হাতে হাত রেখে চোখ বুজে উপস্থিতিটা অনুভব করার চেষ্টা করলো একবার। সত্যি কি কিশোর এসেছে নাকি সবটাই তামান্নার স্বপ্ন! কিছুই বুঝতে পারছে না বেচারি।

৩৬!! 

সকালে তামান্নার ঘুম ভাঙলো গালে কারো আলতো করে চুমোর স্পর্শে। চোখ খুলে কিশোরকে দেখে তামান্না যতটা না অবাক হলো সম্ভবত তার চেয়ে বেশি খুশিই হলো। কিশোর বালিশের উপরে বাম কনুইয়ে ভর দিয়ে গালে হাত ঠেকিয়ে তামান্নার দিকে মুখ করে শুয়ে আছে৷ আর ঠোঁটের কোণে ঝুলে আছে দুষ্টু মিষ্টি একটা হাসি৷ তামান্নাকে চমকে দিতে পেরে যেন বেশ মজাই পাচ্ছে সে। কিশোর যে সত্যিই রাতেই এসেছে সেটা বুঝতে তামান্নার আর দেরি হলো না। রাতের অন্ধকারে স্বপ্ন মনে হলেও দিনের আলোয় সেই ঘোরটা কেটে গেছে তামান্নার। আর ঘোরটা কাটতেই তামান্না কিশোরকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললো। কিশোরও তামান্নাকে নিজের বুকের সাথে জড়িয়ে নিলো। 

-এই তমা? কাঁদছো কেন এভাবে? বলেছিলাম না চলে আসবো? বিশ্বাস হয়নি বুঝি?

-------------------------------

-তমা? এই বউ? কাঁদো কেন এতো? বলো কি হয়েছে? রাগ করে আছো?

-আপনি-------।

তামান্না কিশোরের মুখের দিকে তাকিয়ে কথাটা বলতে শুরু করলেও শেষ করতে পারলো না। কিশোর তামান্নার ঠোঁট জোড়া নিজের ঠোঁটের বাঁধনে আটকে দিয়েছে ততক্ষণে। একটু পরে কিশোর সরে আসতেই তামান্না আবার বলার চেষ্টা করলো৷ এবারেও কিশোর তামান্নার ঠোঁট জোড়া নিজের আয়ত্তে নিয়ে নিলো। তামান্না চোখ পিটপিট করে কিশোরের দিকে তাকালো। 

-আমি কিছু বলছিলাম---।

-যতক্ষণ পর্যন্ত বক্তব্য আমার পছন্দ মতো হবে না ততক্ষণ এভাবেই চলবে---।

-মানে!! আপনার পছন্দ মতো হওয়ার জন্য কি করতে হবে এখন আমাকে---?

কিশোর আবার তামান্নাকে আটকালো। তামান্না এবার একটু বিরক্ত হয়ে কিশোরের কাছ থেকে সরার চেষ্টা করতে শুরু করলো।

-তুমি নিজেই ভাবো কি করবা--। 

-শুনতে হবে না কাউকে---।

-উঁহু। সেটা তো হবে না গো বউ। শুনবো তো অবশ্যই। তবে শোনার জন্য সেরকম মিষ্টি করে বলতে হবে তো--।

-কিভাবে মিষ্টি করে বলে! আমি কি তিতা করে বলছি আপনাকে?

-আবার? আসো? আরেকবার ভুল করলে, সো আরেকবার বাঁধা পড়বে--।

-সরুন তো--।

-দেখেছো? বলছি তবু শুনছে না--। তোমাকে আমি----।

-কি শুনছি না!

-আপনি করে বলছো এখনো। আমি তোমার একটা মাত্র দুষ্টু হাসবেন্ড না?

-কিসব বলেন?

-তমা? আজকে কিন্তু কোনো ছাড় হবে না। আগেই বলেছি তুমি সোজা পথে কথা না শুনলে নিজের ব্যবস্থা আমি নিজেই করে নিবো---।

কিশোরের কথাটা শোনামাত্রই তামান্নার আবার সুপ্তির কথাগুলো মনে পড়ে গেল। যদিও কিশোরকে মনে প্রাণে বিশ্বাস করে তামান্না। তবু কেন যেন একটা খটকা লাগছে। সুপ্তি শুধুশুধু এতো মিথ্যে কথা কেন বলতে গেল ওকে? কিশোর যদি না আসতো তাহলে তামান্না আসলেই কি ভেবে নিতো কিশোর সুপ্তির সাথে আছে! এসব ভাবতে ভাবতেই আবার কিশোরের ঠোঁটের স্পর্শ পেল তামান্না৷ তামান্না একটু কেঁপে উঠে কিশোরের বুকে মুখ লুকালো। কিশোরও তামান্নার চুলগুলো একটু এলিয়ে দিলো।

-তমা? রাগ করে আছো? খুব জরুরি কাজ ছিল --সত্যি।

-নাহ---।

-তাহলে মোবাইলটা অফ করে কেন রেখেছ? কতবার ট্রাই করেছি জানো? 

-নাহ আসলে----।

-বলেছিলাম না শীগ্রি চলে আসবো? এভাবে রাগ করতে হয়?

-রাগ করি নি----।

-তাহলে কি হয়েছে বলো?

-আম--। দীপুকে স্কুলে নিয়ে যেতে হবে। ওকে ডেকে দিই----।

-আজকে শুক্রবার তমা। অফ ডে দীপুর। ঘুমাক--। তুমি আমাকে বলো কি হয়েছে---।

-আসলে---। আপনি-----।

-নো আপনি আজ্ঞে--। আই এম ইউর হাসবেন্ড ম্যাম। বস নই। 

-আমি-----। 

-তমা? শুনবে না তো কথা? আমার কি! ঠিক করে না বললে সবার সামনেও এমন ঠোঁট জোড়ায়---।

-ছি!! কিসব বলেন সবসময়? 

-কি বললাম আবার! যা করব তাই বলে দিলাম। বাকিটা তোমার ইচ্ছে। আর হ্যাঁ ম্যাডাম। নিজের বউয়ের কাছে এতোটুকু তো আশা করতেই পারি, নাকি?

-------------------------------

-আর ম্যাডাম? কি হয়েছে সেটা না বলা পর্যন্ত রুম থেকে কোথাও নড়তেও পারবেন না৷ সেটাও মাথায় রাখবেন---।

-ব্ল্যাকমেইল করছেন?

-যা বুঝেন আর কি আপনি। সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে আঙুলটা একটু বাঁকাতে তো হয়ই----।

-আপনি একটা-----। ইইইইই-।

-সে তুমি রাগ দেখাও আর যাই দেখাও। আমার কথা তো মানতেই হবে। সো একটু কো অপারেট করো। 

-গতকাল বিকেলে একটা নাম্বার থেকে কল এসেছিল---। এর আগেও কয়েকবার কল করেছিল-।

-কে কল করেছিল? তোমার পরিচিত কেউ---?

-সু-সুপ্তি----।

-হোয়াট! কি বলেছে ও তোমাকে? আর তোমার নাম্বারটা ই বা পেল কি করে?

-আমি জানি না---। বলেছে---। আপনি---। বলেছে তুমি আমাকে ডিভোর্স----।

-হেই পাগলি? কাঁদো কেন এভাবে? শশশশ। চুপ কাঁদবা না একদম--। আর কি বলেছে?

-বলেছে ---তুমি উনাকে এখনো ভালোবাসো। তাই বিয়ের পরদিনই উনার কাছেই চলে গেছো---।

-তমা? আমার দিকে তাকাও? তোমার কি মনে হয় আমার যদি ওর কাছে যাওয়ারই হতো তাহলে আমি ওকে ডিভোর্স দিতাম? ওই ---। ওই কালনাগিনীকে একবার জীবন থেকে বের করে দেয়ার পর আবার ওর কাছেই আবার ফিরে যাবো, এতোটা গাধা মনে হয় আমাকে তোমার?

-নাহ----।

-তাহলে কাঁদছো কেন এভাবে বোকার মতো?

-উনি বলেছে উনার যা চাই সেটা উনি নিজেই নিয়ে নিবে----।

-মামার বাড়ির আবদার আরকি-। তুমি বলো নি কেন? এই সংসারটা তোমার। স্বামী, সন্তান সব তোমার৷ সেখানে আর কারো উপস্থিতি মানবা না তুমি--। হুম?

-সব কিছুতেই তো উনার ছায়াটা আজীবন থাকবে----।

-তো আপনি কি উনার কথায় কনভেন্স হয়ে সবটা মেনে নিয়েছেন? যে সব ছেড়ে স্বেচ্ছায় চলে গেছে তাকে সবটা দান করে দিয়ে মহান হতে চান আপনি?

-নাহ-----।

-তাহলে কাঁদছো কেন এভাবে? নাকি তোমার মনে হচ্ছে আসলেই ওর কাছ থেকেই ফিরছি আমি?

-না----।

-তাহলে?

-আমার ভয় করছে খুব। সবটা পেয়ে হারাতে হলে মরে যাবো---। 

-এই মেয়ে? একটা দিবো ধরে--। কিসব বলো? আর হারাতে হবে কেন? তার মানে আমার উপরে একটুও ভরসা নেই না? ভালোই--।

-না না---। আমি আসলে---।

-চুপ--। কথা না আর। আর এসব নিয়ে কান্নাকাটি করতে দেখলে খবর আছে তোমার৷ আর তোমার ওই সুপ্তিকেও আমি দেখছি--। এই মেয়ে তোমার নাম্বারটা পেল কি করে সেটা শুধু একবার জানতে পারি--। তারপর দেখাচ্ছি আমি কিশোর কত খারাপ হতে পারি---।

-কি করবেন?

-আবার? তোমাকে নিয়ে যে আমি কি করব তমা! উফফফ--। এখন চুপচাপ বুকে শুয়ে থাকো--। কথা বলবা না একদম--। ভাবতে দাও আমাকে---।

-হুম----।

-তমা?

-হুম?

-ভিষণ ভালোবাসি তোমাকে। 

তামান্না একদম গুটিশুটি হয়ে কিশোরের বুকে মুখ লুকালো লজ্জা পেয়ে। কিশোরের মুখে 'ভালোবাসি' শব্দটা শুনে মনের সমস্ত দুঃখ কষ্ট এক নিমিষেই যেন উবে গেছে তামান্নার। তার বদলে ঠাঁই পেয়েছে এক রাশি লজ্জা। এভাবে হুট করে এসব বলতে হয় বুঝি! মানুষটা যে মাঝে মাঝে কিসব অদ্ভুত কাজ করে তামান্নাকে এমন লজ্জায় ফেলে দেয়!তামান্না এসব ভাবতে ভাবতে কিশোরের বুকের ভিতরেই লজ্জা লাল হয়ে উঠছে বার বার। আর কিশোরও সুযোগ পেয়ে তামান্নাকে নিজের বুকে শক্ত করে আগলে রাখার চেষ্টা করছে সমস্ত দুঃখ কষ্টের আঁচ থেকে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন