অস্পষ্ট প্রেমাবেগ - পর্ব ১৫ - সুলতানা পারভীন - ধারাবাহিক গল্প


২৯!! 

-ও বাবাই? এই বক্সগুলোয় কি আছে?

-তুমি গেস করো মামনি?

-না না। তুমি বলো না বাবাই প্লিজ?

-খুলেই দেখো?

-ইয়েএএএ---। আসো আমরা সবাই মিলে বাক্সগুলো খুলে ফেলি--।

দীপ্তি আর ওর নতুন কয়েকজন সাঙ্গোপাঙ্গরা মিলে বিশাল সাইজের কার্টুন বক্সগুলোর উপরে হামলা চালালো। যে যেদিক থেকে পারলো বক্সগুলো ছিঁড়ে টিঁড়ে একাকার করে ভেতরের গুপ্তধন আবিষ্কার করায় লেগে পড়লো৷ কিশোর, তামান্না, আর দীপশিখার আপা সবাই দেখছে শুধু ঘটনাটা। তামান্না একটু অবাক হয়ে ভাবার চেষ্টা করলো, বড় আপা সাধারণ কিছু না বললেও অন্য আপারা এতোক্ষণে এদেরকে ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে দেয়ার কথা। আর বাচ্চাগুলোরও এতো সহজভাবে, ভয়লেশহীন হয়ে এসব করার কথা না। তাহলে আজকে হচ্ছেটা কি এসব? কিছু তো একটা রহস্য আছে এর পিছনে, যেটা কিশোর ওকে বলছে না। কেন এমন করছে লোকটা! এতো এতো চমকে দিচ্ছে কেন বারবার? এতো সারপ্রাইজ দেয়া লাগে বুঝি?

তামান্না এসব ভাবতে ভাবতে খেয়ালই করে নি বাচ্চারা ততক্ষণে বক্স খোলায় সফল হয়েছে। কিন্তু বক্সের ভিতরে রাখা বস্তু দেখে তারা এতোটাই আনন্দে আপ্লুত হয়ে গেছে যে একটা শব্দ পর্যন্ত করতে পারে নি। কাঁপা কাঁপা হাতে কাজের গতি আরেকটু বাড়িয়ে বাকি বক্সগুলোও খোলায় লেগে পড়লো। প্রায় কয়েক মিনিটের মধ্যে বক্সগুলো খুলে ফেলে এক একজন খুশিতে প্রায় লাফাতে শুরু করলো। তাদের সবার চেয়ে বেশি যে খুশিতে লাফালাফি করলো সে হলো দীপ্তি। কিশোর ওদের লাফানো দেখে হেসে ফেললো।

-ইয়েএএএএ৷ টেডি!! বাবাই আমি রেড কালারের টা নিবো প্লিজ প্লিজ প্লিজ?

দীপ্তির কথাটায় তামান্নার হুঁশ হতেই সামনের দিকে তাকিয়ে তামান্না পুরো হা হয়ে গেল। বাচ্চাগুলো বক্সগুলো থেকে টেডিবেয়ার গুলো বের করে পুরো রুমের মেঝেটাই ভর্তি করে ফেলেছে। দুই রঙের টেডিবেয়ারে রুমের মাঝখানটায় ছোট খাটো একটা পাহাড় তৈরি হয়ে গেছে। কোনটার রঙ গোলাপি, আর কোনটার লাল। সেরকমই লাল রঙা একটা টেডি দুহাতে জাপটে ধরে দীপ্তি এই মূহুর্তে কিশোর আর তামান্নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ব্যাপারটা দেখে তামান্না পুরো বিষম খাওয়ার জোগাড় হলো। এই মানুষটা কি সত্যি পাগল হয়ে গেছে নাকি আজকে! এতোগুলো টেডি দিয়ে হবেটা কি! তাও টেডিগুলো এক একটা মোটামুটি বাচ্চাদের সাইজের৷

-দীপু তুমি চাইলে আরেকটাও নিতে পারো। বলা তো যায় না ভবিষ্যতে যদি টেডি নিয়ে খেলার জন্য আরেকজন আসে?

-কে আসবে বাবাই? 

-সেটা তো তোমার মামনিই ভালো জানে--। আসবে কি না---।

-ও মামনি? কে আসবে? কবে আসবে? আমি তাহলে দুটো টেডি নিবো? আমার কিন্তু রেড কালারের টেডিটা--। পিংক একটাও নিবো? বলো না? ও মামনি?

দীপ্তি তামান্নাকে প্রশ্ন করলেও তার ছোট্ট চোখ জোড়া আরেকটা টেডি চুজ করায় ব্যস্ত। তাই খেয়াল করলো না তামান্নার লজ্জারাঙা মুখটা। কিশোর সেটা দেখে হেসে তামান্নার দিকে একটু সরে এসে একটু নিচু স্বরে কথা বলা শুরু করলো।

-কই? আরেকজনের পছন্দ বেছে নাও? দুটো এক্সট্রা এনেছি তো--।

-কি শুরু করেছেন বলুন তো?

-আরে কি মুশকিল! আমি আবার কোথায় কি করলাম? কথায় বলে না? যত দোষ নন্দ ঘোষ? তোমাকেও তো দেখছি সেই রোগে পেয়েছে--।

-এতো টেডি কেন আনলেন এখানে?

-আমি যতটুকু জানি বাচ্চাদের টেডি ভিষণ পছন্দ---।

-ওদেরকে আজ একদিন এসব দিয়ে যে অভ্যেসটা খারাপ করছেন সেটা কি আপনি বুঝতে পারছেন না? আজ নাহয় ওদের দিনটা স্বপ্নের মতো কাটছে। কিন্তু কাল? কাল যখন আবার সেই একই সেই ডাল ভাতটাও খাওয়া জুটবে না, নোংরা চাদর পেতে ঘুমাতে হবে। তখন কি করে মেনে নেবে ওরা? অনাথ বলে কি একদিন সুখের স্বপ্ন দেখিয়ে আজীবনের জন্য দুঃখের সাগরে ফেলে দিতে হবে? এই তামাশাটা কেন করছেন বলুন তো? পেটে খাবার না জুটলে কি আপনার টেডি ছিঁড়ে খাবে ওরা তখন?

-তমা? এতো হাইপার হও কেন বলো তো? আজ থেকে ওদের প্রত্যেকটা দিন স্বপ্নের চেয়েও সুন্দর কাটবে। এটা তোমাকে দেয়া আমার প্রমিস-। মিলিয়ে নিও। জীবন থাকতে কথার নড়চড় হবে না---।

-কি করে!! কি করে? আজ নাহয় সোলেমান শেখ কোন কারণে নেই-। কিন্তু কয়দিন থাকবে না সে? কয়দিন ওদের----।

-আর কখনোই আসবে না সে দীপশিখায়---।

-কি? কেন? কিভাবে সম্ভব? এটা উনার পারিবারিক----।

-আরে ধুর আসো তো। বাচ্চাদের কার কোনটা টেডি পছন্দ হলো দেখি চলো--।

কিশোর তামান্নার একটা হাত ধরে টেনে হলরুমের মাঝখানে নিয়ে এলো। দীপশিখার প্রায় ২০-২৫ জন বাচ্চা সবাই একটা করে পছন্দ মতো টেডি জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে। ওদের সাথে দীপ্তিও দুই হাতে দুটো টেডি আঁকড়ে ধরে রাখার চেষ্টা করছে তার হাসছে। টেডি পেয়ে অন্য বাচ্চাগুলোর মতো দীপ্তিও ভিষণ খুশি। আরো কয়েকটা টেডি মেঝেয় পড়ে ছিলো। কিশোর সেগুলো স্টোররুমে রাখতে বললো যাতে পরে অন্য কোন বাচ্চাকে দেয়া যায়। তামান্না অবাক হয়ে এসব দেখছে। সবাই কিশোরের সাথে দীপশিখার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে দেখেও তামান্না আরো একটু অবাক হলো। ওকে এতোকিছু বলার কি হলো! 

কিশোর সবার সাথে কথা বলা শেষ করে তামান্নার কাছে এসে বেশ কতোগুলো কাগজ তামান্নার হাতে ধরিয়ে দিলো। তামান্না থতমত খেয়ে গেল। কাগজগুলো একটু আগে বড় আপা কিশোরকে দিয়েছে সেটা তামান্না দেখেছে। কিন্তু কিসের কাগজ এগুলো আর কিশোরই বা ওকে কেন কাগজগুলো দিলো কিছুই মাথায় ঢুকলো না তামান্নার।

-এগুলো কিসের---?

-আপনার বার্থডে গিফ্ট--। কিছু তো দেয়া হলো না বার্থডে গার্লকে--। আপাতত এটাই রাখুন--।

-আমার কিছু লাগবো না। আর কি এসব!!

-দীপশিখার মালিকানার দলিলপত্র--। 

-কি!! কিসব বলছেন? আশ্রমের কাগজ আমাকে কেন?

-হায়রে!! যাতে তোমার আশ্রমের বাচ্চাদের ভবিষ্যতটা তুমি নিজে যেমন চাও তেমন করে সাজাতে পারো--তাই--। আজকের পর থেকে তোমাকে কেউ তোমার দীপশিখায় আসা থেকে আটকাতে পারবে না-। বুঝতে পেরেছেন ম্যাডাম?

-এসব!! এসব কখন কি করে করলেন?

-অনেক হ্যাঁচা গেছে কাজটা করতে বাবা! উফফ!! যে চন্ডাল লোক ওই বুড়ো ব্যাটা!! শেষমেশ যে আশ্রম বিক্রি করেছে সেই অনেক--। অবশ্য এখানে বড় আপা আর অন্য টিচারদের অবদানও অনেক---।

-কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না ---।

-উফফ--। বাবা!! অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে। আর বুঝতে হবে না আপনাকে। চলুন চলুন বাসায় ফিরি এখন---।

সবার থেকে বিদায় নিয়ে ওরা তিনজন যখন ফেরার জন্য রওনা হয়েছে ততক্ষণে আটটা পার হয়েছে ঘড়িতে। দীপ্তি তার নতুন দুই টেডি বন্ধুকে নিয়ে গাড়ির পেছনের সিটে বসেছে। আর তামান্না বসেছে কিশোরের পাশে। দীপ্তি তার দুই টেডি সঙ্গীর সাথে আনমনে বকবক করে চলেছে। আর তামান্না জানলা দিয়ে বাইরের অন্ধকার দেখছে আর ভাবছে। আজকের দিনটা কতোই না অদ্ভুতভাবে কেটেছে ওর। রাতে হুট করে কিশোরের আসা থেকে শুরু করে দীপশিখার স্বত্বাধিকার! সবটাই ছিল কিশোরের দেয়া সুন্দর সারপ্রাইজ। মানুষটা কি করতে চাইছে সেটাই তামান্নার মাথায় ঢুকছে না আজও। তবুও ভাগ্যিস তার ঝুলির সারপ্রাইজটা শেষ হয়েছে। 

-আমার আনসারটা কিন্তু এখনও পাই নি ম্যাডাম-। তবে আনসার যাই হোক না কেন বাড়িতে আরো কিছু সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে আপনার জন্য--।

কিশোরের কথাটা শুনে তামান্না চমকে একবার কিশোরের দিকে তাকালো। কিশোর সামনের দিকে তাকিয়েই ড্রাইভ করছে। আর তার ঠোঁটের কোণে ঝুলে আছে দুষ্টুমি ভরা একটা হাসি। তামান্না তাড়াতাড়ি আবার জানলার দিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলো। এই মানুষটার মনে সবসময় কি যে চলে বোঝা মুশকিল। আর বাড়িতেই বা কিসের সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে কে জানে!!

৩০!! 

গাড়ি থেকে নামার আগেই তামান্না রীতিমতো হা হয়ে গেল দূর থেকে চৌধুরী ম্যানশনের সাজসজ্জা দেখে। গেইট দিয়ে গাড়িটা বাড়ির গ্যারেজে ঢোকার আগেই তামান্নার মনে হলো ওরা কোন একটা স্বপ্নের রাজ্যে চলে এসেছে। রাতের অন্ধকারকেই যেন হার মানিয়ে দিয়েছে চৌধুরী ম্যানশনের আলোক সজ্জা। একটু পরে তামান্নার পাশের গাড়ির দরজাটা খোলার শব্দে তামান্নার যেন ঘোর কাটলো। পাশে তাকাতেই দেখতে পেল কিশোর গাড়ির দরজাটা খুল একটা হাত বাড়িয়ে দিয়েছে তামান্নার দিকে। তামান্না একটা ঘোরের মাঝেই কিশোরের দিকে তাকিয়ে রইলো। মনে হচ্ছে কোন দূর অন্ধকার পাড়ি দিয়ে ওকে সুখের দেশে নিয়ে এসেছে অচিন দেশের কোন রাজকুমার।

-হ্যালো ম্যাডাম? দেখার সময় পরেও পাবেন। এখন তো ভিতরে চলুন?

কিশোরের কথা শুনে তামান্নার ঘোরটা কেটে গেল। এই রাজকুমার কোন অচিনপুর থেকে আসে নি। এই রাজকুমার ওর মানসপট দখল করেছে অনেক আগেই। শুধু তার অস্তিত্বটা এতোদিন তামান্না বুঝতে পারে নি। তামান্না আরো কিছু ভাবার আগেই কিশোর তামান্নার একটা হাতটা ধরে গাড়ি থেকে নামালো। তামান্না একবার মুখ তুলে কিশোরের দিকে তাকিয়ে বাড়ির দিকে তাকালো। কতো রঙিন আলো জ্বলছে বাড়ির গা বেয়ে। এতো আলো জীবনে কখনো দেখি নি তামান্না। এতো কিসের আয়োজন বাড়িতে? ওর জন্মদিন বলে? নাকি অন্য কোন উপলক্ষ আছে! কেউ কি এসেছে? কাউকে সাদরে গ্রহণে করার জন্য এই আলোর খেলার আয়োজন চলছে চৌধুরী ম্যানশনে!

-ও বাবাই? আমার টেডি?

-আব্বাস দাদু দিয়ে আসবে তোমাকে। চলো এখন? দিম্মা ওয়েট করছে না?

-হুম। মামনি---। চলো চলো?

তামান্না একবার কিশোরের দিকে তাকিয়ে দীপ্তির হাত ধরে হাঁটা শুরু করলো বাড়ির দিকে। কিশোরও ওদের সাথেই পা বাড়াতে বাড়াতে মোবাইলে টিপছে। বাড়িতে ঢুকে আরো এক দফা অবাক হতে হলো তামান্নাকে। ফালেহা চৌধুরী ড্রইং রুমে পায়চারি করছেন। আরো বেশ অনেক মানুষই বসে আছে। মনে হচ্ছে এখানে আসলেই কোন কিছুর সভা বসেছে। কিসের অনুষ্ঠান চলছে বাড়িতে সেটাই তামান্নার মাথায় ঢুকছে না। এর মধ্যেই দীপ্তি 'দীম্মা' বলে ছুটে গিয়ে ফালেহা চৌধুরীকে জড়িয়ে ধরলো। আর দীপ্তিকে দেখেই যেন ফালেহা চৌধুরী একটু শান্ত হলেন।

-কিশোর? এখন আসার সময় হলো তোদের? সাড়ে নয়টা বাজে সেই খেয়াল আছে?

-না মা--৷ মানে--। আসলে--। একটা কাজে আটকা পড়ে গিয়েছিলাম---।

-তুমি সারাজীবনই কোন না কোন কাজে আটকাই পড়ে যাও বাবা। মেহমানরা যো চলে যাবেন সেই খেয়াল নেই?

-মা---। সরি মা--। 

-রাখ তোর সরি--। আর বউমা? ওই ছেলে তো এমনিতেও একটু আপনভোলা--। তুমিও গিয়ে একেবারে বুড়ো মানুষটাকেই ভুলে গেলে? এটা কি ঠিক?

-না মা---। আসলে----।

-থাক-। হয়েছে--। এজন্যই বলে যার বিয়ে তার খবর নেই পাড়া পড়সির ঘুম নেই। যার জন্মদিনের পার্টি তাকে দেখা ছাড়াই পার্টি শেষ হয়ে যাচ্ছিলো আরেকটু হলেই--।

-জি??

-আসো এখন। আর কিছু বলতে হবে না---। ওহো!! তুমি গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এসো--। কিশোর তুইও গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নে--। দীপ্তি---।

-দিম্মা-দিম্মা-দিম্মা--। জানো আজকে কি হয়েছে?---আজকে না---।

-আচ্ছা শুনছি দাদুভাই--। তোমরা দাঁড়িয়ে কেন? তাড়াতাড়ি যাও--। আমি মেহমানদের খাবারের ব্যবস্থা করছি। তোমার এলে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিবো--।

-জি মা---।

কিশোর আগেই চলে গেছে দেখে তামান্নাও তাড়াতাড়ি রুমের দিকে চললো। রুমের দরজাটা একটু ধাক্কা দিয়ে ভেতরে ঢোকার সময়ই কেউ তামান্নার হাত ধরে টেনে দেয়ালের সাথে চেপে ধরলো। এই স্পর্শটা ইদানিং খুব বেশি পরিচিত হয়ে গেছে তামান্নার কাছে৷ তবু কেন জানি যখন মানুষটা এভাবে ওকে টেনে নেয় তখন তামান্নার মনের মধ্যে যেন একটা কম্পন শুরু হয়। প্রত্যিবার তা স্পর্শে তামান্নার হৃদয়ে অন্য রকম একটা শিহরণ জাগে।

-আপনি?

-হুম। আমি--। আর কে আসবে বলো?

-কি করছেন? নিচে সবাই ওয়েট করছে---।

-করছে করুক। এতোক্ষণ যখন ওয়েট করতে পেরেছে আরো কিছুক্ষণও ওয়েট করতে পারবে--। 

-মা--মা রাগ করবে দেরি করলে--।

-সব সময় এতো বাদ সাধো কেন বলো তো? সবসময় কেমন দৌঁড়ের উপরে থাকো--। এতো তাড়াহুড়োর কি আছে আমি তো সেটাই বুঝি না বাপু---। শুধু যেটা করার কথা সেটাই সময়ের মধ্যে করো না---।

-আমি!! আমি আবার কি করলাম?

-করলে কোথায়? করলে না বলেই তো সেটা বলছি---।

-কি করিনি?

-এই যে এতোক্ষণ হয়ে গেল--। তুমি আমাকে আমার প্রশ্নের উত্তরটা এখনো দিলে না--। আমিও তো ওয়েট করেই আছি----।

-----সরুন---। সবাই ওয়েট করে আছে---। নিচে যেতে হবে--।

-যাও যাও--। যত ইচ্ছে পালাও--। যতক্ষণ পারো সময় নাও--। কিন্তু আজ রাত শেষ হওয়ার আগেই আমার আনসার চাই--। নইলে এবার এমন হাওয়া হবো যে----।

-কি বলছেন? হাওয়া হবেন মানে কি?

-আমার সারপ্রাইজগুলো দেয়া শেষ হওয়া পর্যন্তই ওয়েট করব ম্যাডাম-।

-আপনি-----?

-এখন ফ্রেশ হয়ে এসো যাও---। 

-হুম----।

কিশোরের হাত থেকে ছাড়া পেতেই তামান্না ওয়াশরুমে ঢুকে পড়লো। এই লোকের সাথে কথা বলতে থাকা মানে নিজের পায়ে কুড়াল মারা। নিজেই তামান্নাকে কথায় লাগিয়ে রেখে পরে সমস্ত দোষটা তামান্নার ঘাড়ে চাপিয়ে দিবে। তার উপরে এই লোকটা কখনো কখনো এমন কথা বলে যেগুলো নেওয়া তামান্নার অসাধ্য। এর চাইতে আপাতত ফ্রেশ হয়ে নিচে যাওয়া যাক। বাকিটা পরে দেখা যাবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন