সাইকো ইজ ব্যাক - পর্ব ০৩ - সিজন ৩ - সুরাইয়া সাত্তার ঊর্মি - ধারাবাহিক গল্প


ক্লাস করাচ্ছেন প্রত্যয় স্যারের।তিনি "মনোবিজ্ঞানের ইতিহাস" বইটির "প্রাচীন চিন্তা ও ধারণা" অধ্যায়টি উপর লেকচার দিচ্ছেন।প্রতিটি ক্লাসে ছেলে-মেয়েরা অমনোযোগী থাকলেও প্রত্যয় স্যার ক্লাসটি যেন মন্ত্র মুগ্ধকর। প্রত্যয় স্যার চোখের চশমাটা ঠিক করে বলতে শুরু করলেন,,

---psyche হচ্ছে মন বা আত্মা এবং logos হচ্ছে প্রঞ্জা বা বিজ্ঞান। এই দুটিকে একসাথে মিলালে হয়ে যায় মনোবিজ্ঞান। যার অর্থ বুঝায় মনের বিজ্ঞান। কিন্তু এটি ভুল।মনোবিজ্ঞান হচ্ছে প্রাণীর বিশেষ করে মানুষের, আচরন ও মানসিক সম্পর্কিত বিজ্ঞান। 

স্যারে ক্লাসে মাঝেই হঠাৎ করে দরজায় নক করে লিমন মিয়া।তার হাতে নোটিশ। লিমন মিয়ার আগমনে মুগ্ধ হয়ে ক্লাস করা স্টুডেন্টদের মনোযোগ  
ব্যাঘাত ঘটে।সবাই বিরক্ত।স্যার লিমন মিয়াকে ভিতরে আসতে বলেন। ভিতরে আসতেই লিমন মিয়া স্যারের দিক এগিয়ে নোটিশ খাতা।স্যার পরে বলতে লাগেন,,

---দু দিন পর আমাদের ভার্সিটিতে একটি মেলা হবে, যেখানে অনেক বাহিরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে স্টুডেন্টরাও এই মেলায় ঘুরতে আসবে। এখানে তোমরা চাইলে পার্টিসিপেট করতে পারো। এই মেলায় যে যত টাকা ইনকাম করবে তার উপর প্রাইজ নির্ধারণ করা হবে। যারা করতে চাও ক্লাস শেষে হল রুমে বড় ভাইয়া, আপুরা আছে তাদের কাছে নাম দিয়ে এসো।

নোটিশটি শুনার পর থেকে ক্লাসে কলরব সৃষ্টি শুরু হলো। কে কে পার্টিসিপেট করবেন তা নিয়ে।কুহু আর তানিয়াও তাই।ক্লাস শেষে দৌড়ে চলে গেল বড় আপি আর ভাইয়াদের কাছে। তারা স্টল দিবে যেখানে তার এড করবে হাতে করা কারুকাজ আনকম জিনিষ কিছু নিয়ে।

খুশিতে সেদিন নাচতে নাচতে বাসায় গেল কুহু।কারণ ছোট থেকেই এসবের প্রতি অগ্রহ তার।

সেদিন রাতে বসে হাতের কাজ করছিল কুহু।দু দিন পর সেই গুলো তার স্টলে তুলবে তানিয়া আর কুহু।দুজনেই কাজ ভাগ করে নেয়। রাত ততখন... ২ঃ৩০।।বাহিরে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পরছে।হালকা শীত শীত ও করছে।তিন্নি কুহুকে হেল্প করতে করতে ঘুমিয়ে গেছে।তিন্নির শরীরে কাঁথা টেনে দেয় কুুহু।আজ রাতে তারেক সাহেব  মানে কুহুর বাবা ঢাকার বাহিরে গেছেন।বাসায় তিন্নি আর কুহু। কুহুর কাজ করতে তরতে ঘুম ঘুম পাচ্ছিল। তাই সে উঠে চুলে হাত খুপা করতে করতে রান্না ঘরে চলে এলো। কফি করে খাবে সে।তাহলে ঘুমটা কেঁটে যাবে।কফি করার সময় গুন গুন করে গান করছিল কুহু। তখনি ওর মনে হলো পিছনে কেউ দাড়িয়ে আছে।কুুহু সাথে সাথে পিছনে ঘুরে নাহ কেউ নেই...!  হলের হালকা আলোতে চারপাশ আবারো দেখে নিল কুহু। মনের ভুল ভেবে আবারো কাজে মন দেয় সে।তখনি হুট করে রান্না ঘরের লাইট বন্ধ হয়ে যায়। কুহুর ভয় লাগতে লাগে কারণ হলে লাইট জ্বলছে তাহলে রান্না ঘরের লাইট কি হয়ে গেল। তখন কুহু লাইটের কাছে যেতে  নেয়। তখনি তার হাত টান পরে।একটি ভিজা শক্ত হাত তার হাত ধরে আছে।কুহুর ভয় ক্রমশ বেরে উঠে পিছনে তাকানোর সাহস হয় না তার। হাত মুচরাতে লাগে সে হাত ছুটানোর জন্য।হল রুমের আলোতে সেই ব্যক্তিটি ছায়া দেখতে পেল কুহু। ভয়ে কান্না করে দিল সে।তখনি সেই ব্যক্তিটি হেচকা টান দিয়ে তার বুকের সাথে চেপে ধরে। কুহু এবার ব্যক্তির বুকের সাথে লেপ্টে। বুকের ভিতরের হৃদপিন্ড ডীপ ডীপ আওয়াজ স্পষ্ট কানে আসচ্ছে তার।যে এক হৃদছন্দের উৎপন্ন। তার সাথে আসচ্ছে একটি চেনা পরিচিত মন মাতানো ঘ্রাণ। বুঝতে বাকি নেই কুহুর এটি যে সেই ব্যক্তি যে আজ ভার্সিটি তাকে চেপে ধরে হুমকু দিয়ে গেছিল।ভয়ে হাত পা কাঁপচ্ছে কুহুু।লোকটিতে ধাক্কাতে শুরু করলো সে। গলার মাঝে আওয়াজ যেন আটকে তার।ভয়ে ঘেমে একাকার কুহু।তখনি ব্যক্তিটি লেহন করলো কুহুর ঘারে। কুহু সাথে সাথে মুর্তির মত দাড়িয়ে গেল।শরীরে যেন আলদা রকমের শিহরণ খেলে গেল।লোকটি কুহুকে জড়িয়ে ধরে আরো কাছে নিয়ে আসলো।যেন নিজের ভিতর ঢুকিয়ে নিবে তাকে।লোকটি কুহুর হাত খোপা করা চুল গুলো খুলে দিল। ঘারে পিছনে একটি হাত দিয়ে কুহুকে তার মুখের সামনে নিয়ে এলো। লোকটির নিশ্বাস কুহুর মুখ বিচরণ করছে।কুহু সাথে সাথে খিচে চোখ বন্ধ করে নেয়। লোকটি কুহুর কানের কাছে এসে নেশা কতর কন্ঠে ফিসফিস করে বলতে লাগে,

---এভাবে আমায় পাগল করলে নাও পারতে। আমার সামনে এভাবে কখনো পরও না! কন্ট্রোল করতে কষ্ট হয় খুব। বাই দ্যা ওয়ে ওড়না ছাড়া তোমাকে খুব হট লাচ্ছে।বলে কুহুর কঁপালে গভীর চুমু এঁকে দেয়ে।

সাথে সাথে কুহু ঢলে পরে ব্যক্তিটির উপর। ব্যক্তিটি হেসে দেয়। এবং চুলা ওফ করে কুহুকে কোলে তুলে নেয়।এবং তার ঘরে নিয়ে তিন্নির পাশে শুয়ে দেয়ে।কুহুর চুল গুলো এলো মেলো ভাবে মুখের উপর পরে আছে।চুল গুলো শরীয়ে কুহুর কঁপালে গভীর চুমু এঁকে দিয়ে বলে উঠে,,

---প্রতিবার এভাবে আমাকে না মারলেও পারো কুহু! তোমার সেই হাত খোপা করা দেখলে আলাদা আকর্ষণ করে আমাকে।তোমাকে বউ বউ লাগে, আমার বউ। বলে হেসে দেয় লোকটি। আর কুহুর ঠোঁটে উপর চুমু দিয়ে সেই স্থান ত্যাগ করে ব্যক্তিটি।

____

চুপি চুপি বাসায় ঢুকে ইউসুফ।সবাই তখন ঘুম। ইউসুফ হল রুম ক্রস করার সময় চারিদির লাইট জলে উঠে। ইউসুফ পিছনে তাকিয়ে দেখে রেহানা  বসে সোফায়। ইউসুফকে ঘুড়তে দেখেই খুব ঠান্ডা ভাবে বলল,,

---ভদ্র ঘরের ছেলেরা এত রাত করে বাড়ি ফিরে না ইউসুফ!কোথায় ছিল এতক্ষণ? তুমি তোমার কোন ফ্রেন্ডের সাধেও ছিলে তো কই গেছিলে তুমি?

ইউসুফ মাথা নত করে দাড়িয়ে রইল। উত্তর দেয়ার কোনো মুড নেই তার।সম্পর্কে রেহানা তার মা হলেও, তাদের মা ছেলের সম্পর্ক খুব একটা ভাল না।ইউসুফকে চুপ থাকতে দেখে রেগে জান তিনি।আর রাগ মাথা কন্ঠয় বলে উঠে,,

---কি হলো কথা বলছো না কেন?দিন দিন বেয়াদব হয়ে উঠছো তুমি? কেউ কিছু জিগ্যেস করলে তার উত্তর দিতে হয় ভুলে গেছো সব ম্যানার্স? 

ইউসুফ এবার বিরক্তির সুরে বলল,,

---ওহো প্লীজ!ডোন্ট টিচ মি? প্রথমে নিজে ঠিক হও দেন আমাকে শিক্ষাতে এসে।

রেহানা চিল্লিয়ে উঠে বলে,,

---ইউসুফ!

ইউসুফ সেদিকে খেয়াল না করে। বড় বড় পা ফেলে উপরে চলে যায়।ইউসুফের মা সেখানেই বসে পরে।নিজের কাজের জন্য ছেলেকে সময় দিতে পারেননি সে। যার ফলে ছেলে আজ তার থেকে অনেক দূরে। 

—————

ভার্সিটিকে আজ খুব সুন্দর করে সাজনো হয়েছে।চারিদিক নানান ফুলে সুসাজ্জিত্য করা হয়েছে। ফুলের গন্ধ মো মো করছে। তার সাথে স্নিগ্ধ উজ্জ্বল রোদের সাথে  বইছে হিম শীতল বাতাস ।মন কারা একটি দিন।ভার্সিটিতে অনার্স আর মাস্টার্স স্টুডেন্টরা মিলে মোট পঁচিশটি স্টলের পেন্ডাল টানো হয়েছে।সব পেন্ডেল তাদের নাম দেয়া যারা পার্টিসিপেট করেছেন।

ভার্সিটির সবাই মোটামোটি কাজ করে যাচ্ছেন। ইউসুফ আর তার দল বল পাশের বিছানো চেয়ারে বসে কোলড্রিংস খাচ্ছে।তখনি তানিয়া আর কুহু দুজন দু হাত ব্যাগ নিয়ে তাদের সামনে দিয়েই স্টলের দিকে যাচ্ছে।ইউসুফের চোখ কুহুর দিকে পড়তেই হা করে চেয়ে রইল।

কুহু আর তানিয়া আজ দুজন সাদা শাড়ি আর নীল চুড়ি পরেছে। চোখে দিয়েছে মোটা করে কাজল আর চুল গুলো ছেড়ে দিয়েছে। সব মিলিয়ে খুব অমায়িক লাগচ্ছে কুহুকে। ইউসুফ ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে। কুহুর নজর যখন পরলো ইউসুফের দিকে , ইউসুফকে যেন আজ সব দিন থেকে বেশী সুন্দর আর ডেশিং লাগচ্ছে। পরনে তার সাদা ধুতি পাঞ্জাবি। তার সাথে মিলিয়ে পায়ে সেন্ডেল। হাত ব্র্যান্ডের হাতঘড়ি। সব মিলিয়ে প্রিন্স চার্মিং লাচ্ছে।কুহু আড় চোখে বার কয়েক তাকিয়ে নিজের কাজে মন দিল। 

চারিপাশে মানুষের আনোগোনা শুরু। কুহুর দোকান সাজানো শেষ। জেনির দোকান  তার  উল্টো পাশে।জেনি পার্লার সেজে গুজে এক গাদা মুখের মাঝে দুই ইঞ্চি ময়দা লাগিয়ে এসে দাড়িয়ে। তার স্টল অন্য একটি মেয়েকে বসিয়ে ইউসুফের গা ঘেসে বসে পড়লো সে। এসেই আহ্লাদী সুরে বলল,,

--বেবী কেমন লাগচ্ছে দেখতে?

ইউসুফের ধেয়ান, মন, মনোযোগ সব সামনে থাকা কুহুর স্টলে।কুহু শাড়ির আঁচল কোমরে গুজে কাজ করছে।জেনির কথায় সে আন মনে বল উঠলো,,

---ন্যাচারাল বিউটি!

জেনি খুশিতে গদ গদ হয়ে বলল,,

---শাড়িতে কেমন লাগচ্ছে?

---অমায়িক লাগচ্ছে।

জেনি যেন এবার খুশিতে কেঁদে দিবে।এত দিনে যেন আল্লাহ তার মুখের দিকে তাকালো। ইউসুফ তার সুনাম করছে?

---সত্যি?  সুন্দর লাগচ্ছে??

ইউসুফ আনমনে বলতে লাগে,,

---হে খুব সুন্দর। মনে হচ্ছে একটি পরি।  সাদা পরি। মনে হচ্ছে এই মাত্র পরিস্থান থেকে সে নেমে এসেছে।মাটি পা রাখতেই চারপাশ অলৌকিক শক্তিতে, পুরো জায়গাটা বিমোহিত করে তুলেছে। সাদা শাড়িতে কতটা নিষ্পাপ মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে একটা ফুল যাকে ছুয়ে দিলে সে মুর্ছে যাবে।

"সাদা শাড়ি" কথাটিতে টনক নরে জেনি। সেতো সাদা শাড়ি পরেনি, সে পরে একটি রেড কালার শাড়ি। এবার সে ইউসুফের দিক তাকায়। ইউসুফ সামনের দিক তাকিয়ে। জেনি সামনে তাকিয়ে দেখে ইউসুফ কুহুকে দেখছে। সাথে সাথে হাসি মুখটা অন্ধকার নেমে আসে। তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে সে
বসা থেকে উঠে কোমরে দু হাত দিয়ে কটমট করতে করতে বলল,,

---ইউসুফ তুমি এসব কাকে বলছো?

ইউসুফ তার নজর সেই কুহুর দিক রেখেই বলল,,

--কাকে আবার বলব? আমার সামনে থাকা সাদা পরিকে বলছি।

জেনি এবার কান্না করে দেয়। ইউসুফ অবাক হয়ে বলে,,

---তুমি কান্না করছো কেন?

জেনি চোখের পানি নাকের পানি মুছতে মুছতে বড় বড় পা ফেলে চলে গেল।

ইউসুফ ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বসে রইলো। তখনি পাশ থেকে আজিম বলল,,

---দোস্ত জেনিকে এভাবে না বললেও পারতি?

---ওরে হাজার বার বলছি আমার পিছনে না ঘুরতে এসব লাভ টাভ আমার জন্য না!

---আচ্ছা!  তাহলে কুহুকে এভাবে দেখে এতো সুন্দর কমপ্লিমেন্ট দিচ্ছিস কেন?

---সুন্দরকে সুন্দর বলছি দেটস ইট। 


প্রতিটি স্টলে ভিন্ন জিনিস সেল করা হচ্ছে।যেমন, কেউ হস্ত শিল্প, কুটির শিল্প, আরো অনেক কিছু। কুহু তার স্টলে সেল করছে হাতে তৈরি করা বোতলে কাক আর তার সাথে নানান রকম পুতি  দিয়ে, উইন চার্মস, বড় ঝাড়, ছোট ডোরবেল বানিয়েছে।

তানিয়ে আর কুহুর দোকান সাজানো প্রায় শেষ,

তখনি আশিক এসে বলে,,

---হাই কুহু? ইউ লুক সো প্রীটি।

কুহু হেসে বলল,,

---ধন্যবাদ ভাইয়া।
 
আশিকে কুহুর স্টল দেখে আবার বলে উঠলো,

---ওয়াও। তোমাদের উইন চার্মস গুলো তো খুব সুন্দর।আমি একটা নিতে পারি?

কুহু খুশি হয়ে বলে,
-- হে ভাইয়া! কোনটা নিবেন?

আশিক একটার দিক তাকিয়ে বলে উঠে,,

---ওইটা! দাম কত?

কুহু দিতে দিতে বলল,,

--১৫০ টাকা। 

কুহুর কথায় আশিক অবাক হয়ে বলল,,

---এত সুন্দর উইন চার্মস এর দাম মাত্র ১৫০ টাকা। আমিতো ভাবসি অনেক হবে!

কুহু হেসে দিল। তখন মোটামোটি সকল স্টুডেন্ট এসে হাজির। সবাই স্টল ঘুরে দেখছে। এর মাঝে কুহুর দোকানে আশিককে দেখে ইউসুফের রাগ উঠে যায়। তখনি আশিক কুহুকে টাকা দেয়ার সময় হাতে স্পর্শ করে। কুহু সাথে সাথে সরিয়ে নেয়।যে ইউসুফের চোখ পরে যায়। আর তখন রাগ কন্ট্রোল করতে না পেরে তার হাতে থাকা কোলড্রিংসের কাচের বোতল মাটিতে আঘাত করে যা মুহুর্তে খন্ড বিখন্ড হয়ে যায়। এতখন তাদের মাঝে হাসি ঠাট্টা হলেও সবাই চুপ হয়ে গেল এক মুহুর্তে। ইউসুফ উঠে চলে গেল।রাগ লাগচ্ছে তার।সব ভেঙ্গ ঘুরিয়ে দিতে ইচ্ছা করছে।


টুং টুং করে বেঁজে উঠলো তানিয়ার।ফোন তুলতেই ওপাশ থেকে কিছু বলতেই তানিয়া হন্তদন্ত হয়ে  কুহুকে বলল,,

---দোস্ত আমার যেতে হবে, নাফিজ আসচ্ছে ।কিছু মনে করিস না।বুঝিসিতো সিলেট থেতে হুট করে চলে আসচ্ছে,  সারপ্রাইজ দিবে বলে।

কুহু হেসে বলল,,

---আরে সমস্যা নেই যা। জিজুকে আমার সালাম দিস।

তানিয়া মাথা নেরে পার্স নিয়ে চলে গেল। এদিকে কুহুরের দোকানে ভীর বেশী হয়ে গেছে। একা পেরে উঠ ছিল না। তখনি আশিক আবার আসে। আর বলতে লাগে,,

---আমি কি তোমার হেল্প করতে পারি??

কুহু কিছু বলবে তার আগেই ইউসুফ এসে হাজির। সে কুহুকে কিছু বলতে না দিয়ে দোকানে ঢুকে গেল। কুহু আর আশিক দুজনেই হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে!

ইউসুফ এদের এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে ইউসুফ এক ভ্রু উঁচু করে বলে উঠে,,

--হোয়াট?

কুহু কি বলবে বুঝতে পারছে না। তখনি ইউসুফ বলে উঠে আবার,

---এভাবে তাকিয়ে থেকো ও না। হেল্প করতে এসেছি। বলবে এখন কোনটা কি??

স্টলে কাস্টমার বেশী হওয়া চেঁচাচ্ছিল সব মিল। তাই আর কোনো দিক কান না দিয়ে তারা বিক্রি করতে লাগলো।এদিকে আশিক অপমানিত ফিল করলো। আর চলে গেল।কুহু তো অবাক এই বেপরোয়া মানুষ তাকে কি সুন্দর হেল্প করছে। হাতে হাতে কাজ এগিয়ে দিচ্ছে।আড় চোখে বার কয়েক লক্ষ করলো কুহু ইউসুফকে। সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে, কুহু তার স্টলে আসার পর থেকে আরো যেন হুমরি খেয়ে পরছে তার মেয়েরা।এটা দেখে হাসলো কুহু।

দূর থেকে এসব দেখে জেনি আর দাড়ালো না ভার্সিটি ত্যাগ করলো কাঁদতে কাঁদতে।আর ওর ফ্রেন্ডরা বলতে লাগে, 

---দোস্ত আমাদের ইউসুফ দেখি প্রেমে পরে গেলরে.!
বলে হাসতে লাগলো তারা।


মেলা শেষ এখন ঘোষণ হবে কে জিতেছে। প্রিন্সিপাল স্যার।  এখানে তিনজন জিতেছে। কুহু ফাস্ট হয়েছে। ২য় হয়েছে রাইসা, তয় হয়েছে অনিতা।স্যার তাকে একটি মেডেল আর গিফ্ট বক্স দিলেন।কুহুতো সেই খুশি।তার সাথে সে ৩০০০০ হাজার টাকার মতো পেয়েছে। সবাই তখন আনন্দ মেতে উঠেছে। চারিদিক গান বাজনা চলছে।কুহু আশেপাশে ইউসুফকে খুঁজে যাচ্ছে।ক্লাস রুমের পাশে ফোনে কথা বলতে দেখে দৌড়ে সেখানে গেল কুহু। ইউসুফ তখন পিছনে ঘুড়ে কথা বলছিল। কুহু পিছন থেকে ইউসুফ ডাক দিতেই ইউসুফ ওর দিকে ঘুরে বলতে লাগে,,

---আমি তোমাকে পরে কল করছি। ফোন পকেটে রেখে বলে উঠে,  তুমি?

কুহু হাপাচ্ছিল। শ্বাস টেনে বলল,,

---এটা আপনার।  একটা প্যাকেট এগিয়ে দিল।

ইউসুফ ভ্রু কুচকে বলে,

--কি এটা?

কুহু হেসে বলল,

---আপনার সম্মান না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন