সাইকো ইজ ব্যাক - পর্ব ০৬ - সিজন ২ - সুরাইয়া সাত্তার ঊর্মি - ধারাবাহিক গল্প


ঘুম ভাঙ্গতেই অনেক লেট হয়ে গেছে আজ।।১১ টা বাজে।।অফিস থেকে আজ ছুটি নিয়েছি।।বিছানার সাইড থেকে ফোনটা হাতে নিলাম।।ফোনটা ওফ হয়তো চার্য শেষ।।ফোনটি খুলে চার্যে দিলাম।।তখনি টুং করে মেসেজ বেঁজে হাতে নিয়ে দেখি আননোন নাম্বার থেকে মেসেজ এসেছে।।
মেসেজে,,
   "Assalamu Alaikum!!
   kemon acho jaan??
   ghum kmn holo??
আমি মেসেজ দেখে যেন আকাশ থেকে পরলাম।।এ কোন বনমানুষ? আল্লাহমালুম।।হয় তার গফ বা বফকে মেসেজ দিতে গিয়ে আমাকে দিয়ে ফেলছে।।তাই আমি লিখে দিলাম,,
---"wrong number "
অপাশ থেকে সাথে সাথে মেসেজ আসলো,,
---"No write number "
আমি মেসেজ দেখে অবাক বেটা বলে কি??আমি জিগাসা করলাম,,
----apni amk chinen? 
----hm..
----ami apnk chini?
----hoyto abar noyto!!
----eita kmn kotha?
----normal kotha!
তখন মাথায় আসলো,  ব্যক্তিটি স্ত্রী লিঙ্গ না পুংলিঙ্গ?? তাই সাথে সাথে জিগাসা করলাম,,
----you male na female?? 🤨
আপাশ থেকে আসলো কত গুলো,,
----😂😂😂😂🤣🤣
----hasen kn?😏
----tumi asolai pagol kuhu!
মেসেজটি দেখে অবাক।। এখন আমি কনফার্ম, ব্যাক্তিটি আমাকে চিনেন।।আমি বললাম,,
----apni k?
ও পাশ থেকে কোনো মেসেজ নেই।।তাই কল দিলাম, রিং হচ্ছে ধরছে না কেউ।।
কিছুক্ষণ পর কল কেঁটে দেয়।।আর একটা মেসেজ আসে,,
---- your psycho lover😎
আমি কিছুক্ষণ থম মেরে রইলাম।।তারপর আবার কল করলাম।।নাম্বার বন্ধ।।পরে ভাবলাম হয়তো কেউ মজা করছে।।তাই আর কিছু না ভেবে ওয়াশরুমে চলে গেলা।।বের হওয়ার সময় একটি টাওয়াল পেচিয়ে বের হলাম।।তার পর কেবিনেট থেকে একটি ফুল হোয়াইট ড্রেস বের করলাম।।বিছানায় রেখে অন্য টাওয়াল দিয়ে চুল মুছতে লাগলাম।।তখনি আরেকটা মেসেজ আসলো।।চেক করলাম সেই আনোন নাম্বার।।মেসেজ ওপেন করতেই আমি বিস্ময়ের শেষ চুড়ায়।।
----you looking so sexy..!! 
----mane??
----sotti  tumk khub hot lagche...!!
----ki bolte chaichen apni?
----aitai bina kapor a sudu ekta toylate tumk khub hot and sexy lagche...😎

আমি মেসেজটি পরে থ হয়ে গেলাম।।চোখ বড় বড় করে মেসেজটি দেখছি।।সাথে সাথে কাপর নিয়ে ওয়াশরুমে দৌড় লাগাই।।

পুরো ঘর খুজা শেষ কোথাও তো হিডেন ক্যামেরা পেলাম না।।তাহলে কি ভাবে বলছে এসব ওই লোক।।তোখন আবার মেসেজ আসল,
----খুঁজা শেষ!
----মানে!
----এই যে সি সি ক্যামেরা খুঁজলে? পেলে?
----আপনি আমার রুমে ক্যামেরা লাগিয়েছেন?
----হয়তো বা!  আবার নাও?
----কি বলতে চাইছেন?
----কিছু না তোমাকে হোয়াইট ড্রেসে খুব মায়াবী লাগচ্ছে।।
----কে আপনি ভাই????এটার কোনো মানে হয়? আপনি জানেন এর জন্য আমি কেস করতে পারি??
----হুম জানিতো বাট তুমি জানো না! আমার নামে কেস করার জন্য আমার নাম জানতে হবে।।
সত্যিতো এর নাম তো জানি না আমি।।এখন নিজের চুল ছিড়তে ইচ্ছা করছে।।হুহ!!
 আমি আর মেসেজের রিপলাই করলাম না।।
ব্যাগ নিয়ে বের হয়ে গেলাম।। নিচে এসে দাড়াতেই একটি লোক এগিয়ে আসে আমার কাছে আর বলতে লাগে,,
---হাই আমি বিহান!
---তো?
----আপনি আমাকে চিন্তে পারেননি?
----না তো?
----এটা আমাদের বাসা..!
----ওহো বাড়িওয়ালা আপনি?
----জ্বি! এতদিন দেশের বাহিরে ছিলাম পড়াশুনার জন্য।।কাল রাতেই ফিরেছি।।আর আপনাকে কাল বেলকনিতে দেখি।।আপনি মেবি কাঁদছিলেন?
লোকটির গায়ে পরা বুঝা যাচ্ছে এমন মানুষ দু চোখে দেখতে পাড়ি না আমি।। কিন্তু এদের সাথে হ্যান্ডেল কিভাবে করা লাগে তা জানা আছে।।
তাই বললাম,,
----ওহ তাহলে আপনি সেই,, আনোয়ার নানা ভাইয়ে ছেলে।।বিহান মামা।। ভালই হলো চলে এসেছেন।। নানা ভাই অনেক বলতো আপনার কথা।।
লোকটা মুখ কাচু মুচু করে বলতে লাগে,,
----জ্বি আচ্ছা তাহলে আসি।।
খুব মজা লাগচ্ছিল লোকটির কাজে।।
হাসতে হাসতে জান শেষ।।তখনি ফোন টুং করে বেঁজে উঠে,,
-----এত কি কথা ছেলেদের সাথে তোমার?
-----আমার ইচ্ছে!  আপনার কি?
-----আমার কি না! আরেক দিন দেখলে হাত পা ভেঙ্গে দিব..!!
----যা ইচ্ছে করেন গে।। আমি ভয় পাইননা আপনাকে বুঝলবন হুহ!!
সেদিন অনাথ আশ্রমে যাই।।সবাইকে নিয়ে দুপের লান্চ করে তাদের সাথে সারাটা দিন কেঁটে যায় আমার।।
পরেরদিন সকালে রেডি হয়ে চলে আসি অফিসে।।আজ অফিসে কিছু ক্লায়েন্ট আসেছ বাহির থেকে।।
আমি তাদের আপ্যায়নে ব্যস্ত।। তাদের দিক ড্রিংস দেয়া সময়  নিসাদ নামের একটি লোক আমার হাত ধরে বলতে লাগে,,
----মেম আপনি বসুন আমরা করে নিবো।।
আমি লোকটির থেকে হাত ছাড়িয়ে বলতে লাগি,,
----না না সমস্যা নেই আপনারা বসুন।।
তখনি লিনা এসে বলতে লাগে,,
----কিহু বারিশ স্যার তোমাকে ডাকচ্ছেন।।
----আসচ্ছি।।বলে চলে গেলাম তার রুমে,,যে দেখি স্যার তার সিটে বসে চোখ বন্ধ করে আর হাতে ওয়েট পেপার ঘুরাচ্ছেন।।কাপালের রং দুটো ফুলা।।
-----মে আই কামিং স্যার।
স্যার তার দু আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করলেন ভিতরে আসার জন্য।। আমি ভিতরে ঢুকতেই অটোমেটিকলি  দরজাটা বন্ধ হয়ে গেল।। এমন হওয়াতে কিছুটা হকচকিয়ে যাই আমি।।
স্যার ততখনে উঠে এসে আমার সামনে দাড়িয়ে বলতে লাগেন,,
----কেমন আছেন মিস কুহু!!
স্যারের এমন কথায় কেমন আশ্চর্য লেগে যাই আমি।।এখন বিকেল হতে চলল, সকাল থেকে ২০০ বারের মতো তার সাথে দেখা কই একবারো তো জিগেস করলেন না কেন আছি।।এখান কেন জিগাসা করছেন "কেমন আছি "? অদ্ভুত!
আমি তার দিকে ভ্রু কুচকে বললাম,,
----স্যার আর ইউ ওকে?
স্যার মুচকি হেসে বললেন,
---এতক্ষন ছিলাম মিস..!! বাট এখন নেই!
----মানে??
স্যার হাসলো।। স্যারের হাসিটা কেমন রহস্য লাগছে।।স্যার বললেন,,
---মিস কুহু!  যদি আপনার সব চাইতে প্রিয় জিনিসে কেউ হাত দেয়,  তাহলে আপনি কি করবেন?
----আমি তো তার হাত পুড়িয়ে ফেলবো..!!
----গুড মিস..!! 
----এটা কেন জিগেস করলেন স্যার?
----কিছু না মিস..!!
বলে স্যার আমার হাতটা ধরলেন।।স্যারের এমন কাছে আমি হতভম্ব।। স্যারের কাছ থেকে হাত সরাতে নিতেই স্যার জোরে ধরলেন আর তার কাঁধ সাইকো দের মতো বাঁকা করলেন।।আর বললেন,,
----মিস আমার হাত গুলো খুব সুন্দর।।আল্লাহ তালা নিশ্চয়ই এ হাত গুলো বানানোর জন্য এক্সট্রা টাইল নিয়েছেন।।সো যাকে তাকে এই হাত ধরতে দিয়ে না।।
বলে বের হয়ে গেলেন তিনি রুম থেকে।।
আমি তার এমন কাজে অবাক আর বিস্ময় নিয়ে চেয়েই রইলাম।।

মিটিং চলছে।।লিনা প্রেজেন্টেশন দেখাচ্ছে।।বারিশ বসে তার দু পাশে নিশাত আর তার সাথী।। আর কুহু।।লিনার প্রেজেন্টেশনে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই বারিশের তার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিশাতের দিক।।হটাৎ করেই নিশাত চিৎকার করে উঠে,,সাথে সাথে সবাই দাড়িয়ে যায়।।নিশাতের হাতে গরম কফি পরে যায়।।সে হাত ধরে দাড়িয়ে চিৎকার করছে।।আর  বারিশ সবার অগোচরে হাসলো।। আর মুখে বলল,,
----সরি মিষ্টার  নিশাত আমি দেখেনি।। হটাৎ হাত লেগে কিভাবে..!!
বারিশকে কিছু না বলতে দিয়ে নিশাত বলতে লাগে,,
----ইটস ওকে স্যার কিছু মনে করি নি আমি।।
বারিশ লিনাকে বলে,,
----উনাদের নিয়ে যান আর হাতে মেডিসিন লাগিয়ে দিন।। 
লিনা চলে গেল।।আমি অবাক হয়ে সবটা দেখলাম।।আমি স্পষ্ট দেখেছি স্যার ইচ্ছা করে তার হাত গরম কফি ফেলে দিছেন।। এমন কেন করলেন??
রুমে এখন আমি আর বারিশ স্যার।। স্যার আমার দিক ঘুরে কিছু ঝুকে বলতে লাগেন,
----অবাক হওয়ার কিছু নেই মিস।।আপনি যেমন আপনার প্রিয় জিনিসে হাত দিলে তার হাত পুড়িয়ে ফলতেন ঠিক তেমনি উনি আমার জিনিসে হাত দিয়েছেন তাই পুড়িয়ে দিয়েছি।।বলে চলে গেলেন।।উনার কথার আগা মাথা কিছু বুঝলাম না।।ইদানীং স্যারকে কেমন যানি সাইকো সাইকো মনে হয়।।

সেদিন রাতে বাসায় আসতেই শুনি টিনা বলল,,
বাড়িওয়ালা নানা ভাইয়ার ছেলের হাত কে জানি ভেঙ্গে দিয়েছে।।সে তখন নাকি পার্কিং লট ছিল।।আর হুড়মুড় করে কতগুলো লোক এসে মুখে কাপর বেধে তার একটি হাতে ইচ্ছা মত বাড়ি দিয়ে ছে।। আমি শুনে থম মেরে রইলাম।।
তখন আসলো আবার মেসেজ,,
----আমার জিনিসে নজর দিলে কাউকে আমি এত সহজে ছাড়ি না।।আসা করি বুঝতে পেরেছো?? 
"ইওর সাইকো লাভার "😎
এখন আমার ভয় লাগচ্ছে যা মজা ভেবে উড়িয়ে দিয়েছি তা যে কতটা সিরিয়াস ছিল এখন বুঝছি।।

—————

ভোরে হাটতে বের হয়েছি আমি আর টিনা।।পেট ইদানীং মনে হচ্ছে বেরে যাচ্ছে।।টিনা তা দেখে অবশ্য বলে,,
--- তোর পেট দেখে এখন সেক্সি লাগে।।আগেতো দেখাই যেতো না।।
---কি যাতা বলিস  তুই??
---সত্যি বলছি দোস্ত।।রিয়ান আমাকে প্রায় বলে তোমার পেট একটু কমাও নয় তো ছুঁতে মজা লাগে না।।
----ছিঃ কি অসভ্য কথা বার্তা বলিস তোরা?
----ছিঃ কি আছে? তুই যখন প্রেম করবি তখন কত কথা বলবি তখন সেক্স কেমনে করে না করে? এমন কি বাচ্চা-কাচ্চার প্ল্যানিং পর্যন্ত করবি।। অার আমি এটুক বলতেই ছিঃ ছিঃ করছিস?? আর সে তুই তো? যে কিনা ইনার বিয়ের সময় খাটের নিচে থাকার প্ল্যানিং করেছিলি।। আর এখান ছি ছি করছিস?
----দেখ তখন ছোট ছিলাম মনের মাঝে সব কিছু জানার কৌতুহল থাকেই।।আমারও ছিল?
-----তো এখন কই গেল সেই কৌতুহল?
-----দোস্ত এখন বড় হয়েছি।।আর ছেলে মানুষি করা ছেড়ে দিসি বুঝলি।।
----হুম বুঝলাম।।চল ওই দিকটায় যাই।।

হাটঁছি নদীর পার ধরে।। টিনা রাউন্ড দিচ্ছে।।কিছুদূর দেখলাম একটি বৃদ্ধ কেমন যেন করছে।।আমি তার কাছে গেলাম।। বৃদ্ধ করে জিগাসা করলাম,,
----দাদু আপনি ঠিক আছেন?
----দাদু হাপাচ্ছেন।।মনে হয় শ্বাসকষ্ট আছে তার।।
তিনি আমার হাতে একটি ঠিকানা দিলেন আর বললেন,
----আমাকে এই ঠিকানায় একটু পৌছে দিবে দাদু ভাই?
আমি কি করবো বুঝতে পারছিলাম না| ততখােন টিনা এসে আমার পাশে দাড়িয়ে ঠিকানাটা দেখে বলল,,
---দোস্ত এখান থেকে ১০ মিনিটের রাস্তা।। চল দিয়ে আসি মনে হচ্ছে বেশি ভাল না তার অবস্থা।।
আমি হে বললাম।।তারপর একটি সি এনজি ডেকে তাকে নিয়ে রওনা করলাম।।

সিএনজি এসে থামল একটি বড় বাংলোর সামনে।।  ২ তলা বাংলোর আশেপাশে অনেক সিকিউরিটি গার্ড।। বাসার নেমপ্লেট দেখে আমি থ!! এতো বারিশ স্যারের কোম্পানির নাম।।তাহলে কি এটা তার বাড়ি?

বৃদ্ধকে দেখে গার্ড ভিতরে ঢুকতে দিলেন।।
ভিতের ডুকতেই একটি মাঝ বয়সি মহিলা এসে হাজির।।মহিলার গায় গ্রীন লাইট কালারের একটি শাড়ি।। হাতে দুটো চুরি।। চুল গুলো খোপা করা।।
তিনি এসেই বলতে লাগেন,,
----বাবা কি হয়েছে তোমার??সাথে সাথে একজন কাজের মেয়েকে ইনহেলার আনতে পাঠিয়ে দেয় দাদুর ঘরে।।ইনহেলার নেয়ার পর কিছুটা শাস্ব নেন তিনি।।
মহিলাটি তখন বলতে লাগে,,
----কতবার বলেছি তোমাকে একা বের না হতে।। গাড়িটাও নিলে না।।আজ কিছু হয়ে গেল।।আমাদের কি হতো?
দাদু বললেন,,
----নারে মা কিছু হবে না আমার! এখনো এই বুড়ো শরীরে জোর আছে বুঝলি?? এখনো কত মেয়েরা প্রেম নিবেদন করে জানিস??
উনার কথা শুনে আমি আর টিনা হেসে দেই।।
মহিলাটা তখন বলে উঠে,,
----তুমি না বাবা বয়স হয়েছে কিছু দুস্টমি ছাড়ো না।।আরে তোমরা দাড়িয়ে কেন বস।।আমি খেয়ালি করি নি।।তোমরা বস।।
----না আন্টি আজ যেতে হবে।। অফিস আছে।। পরে একদিন আসবো।।
আন্টি যেন শুনতে না নারাজ।।নাস্তা না খাইয়ে ছারবেন না তিনি।।আগত তার কথা রাখতে হল।।মহিলাটি অনেক মিশুক ভালই লাগচ্ছে তার সাথে কথা বলে।।তখনি বাহির থেকে কানে হেড ফোন গুজে কেউ প্রবেশ করলো।।তাকে দেখে আমি আর টিনা দাড়িয়ে গেলাম চমকে।।লোকটি আর কেউ না টিনার বফ।। টিনাকে থেকে থতমত খেয়ে ফললো।।টিনাও তাই।।
রিয়ান তখন আমতা আমতা করে বলল,,
----টিনা তুমি??
টিনা বলল,,
----তুমি এখানে?
আন্টি বলল,,
----একে অপরকে চিনিস নাকি??
-----না মানে হে চিনি ও আমার ফ্রেন্ড হে ফ্রেন্ড।।
আন্টি সন্দিহান চোখে বলল,,
----এত তোর হাটুর বয়সি মেয়ে ও তোর ফ্রেন্ড?
রিয়ান মাথা চুলকাতে চুলতাকে বলতে লাগে,, 
-----মা তুমি সব সময় শুধু আমাকে সন্দেহ করো!!
আন্টি বললেন,,
----কাজ গুলাই তেমন করো?
তখন দাদু বলল,,
-----নানু ভাই!  এরা আজ তোর নানুর জান বাচিঁয়েছে বুঝলি।।
----কি হয়েছিল! আতঙ্কের সুরে বলল রিয়ান!
----বাবা আজও একা বের হয়ে গেছিল।।
দাদু বলল, 
----আজ না গেলে এত সুন্দর দুটো নাতনী পেতাম না।।

কথার মাঝেই গাড়ি এসে থামল বাহিরে।। আন্টি তখন বলতে লাগেন,,
----ওই চলে এসে আমার ছেলে, এখন তোমার ক্লাস নিবে বাবা দেখে নিও।।
দাদু বলল,,
----আমি তোর ওই উটকে ভয় পাইনা বুঝলি??

তখনি পিছন থেকে কেউ বলে উঠে,,
----কে উট দাদু?
দাদু বিড়বিড় করে বলল,,
----এসে গেছে হিটলার।।
----এই বুড়ো তুমি কি বল আমি শুনি না?  তোমাকে কত বার না করেছি একা বের হতে?  এত গার্ড কি জন্য রাখি আমি,  সব কটাকে আজ শিক্ষা দেব দাড়াও।।বলে সব কটা গার্ডকে এনে ঝাড়ি দিতে লাগলেন।।এক পর্যায় পিছন থেকে বন্দুক বের করে সবার দিক তাক করে বলতে লাগলেন,,
---নেক্সট টাইম যদি আপনাদের দেখি উনাকে একা যেতে দিতে সব কটা মেরে গুম করে দিব বলে দিলাম।।
আমি আর টিনা এসব দেখে অবাক।।

নাস্তার টেবিলে বসে নাস্তা করছি সবাই।। একটা জিনিসে আমি অনেক অবাক হচ্ছি স্যার এমন ভাব করছেন যেন আমাকে চিনেন না।।যেন আমি বলতে কোনো মানুষ এখানে নেই।।তাই আমিও ইগনোর করলাম তাকে।।
🐝
অফিসে আমার কেবিনে বসে কাজ করছিলাম তখন ল্যান্ড লাইনে কল আসে,
---হ্যালো!
----আমার কেবিনে আসুন।
গেলাম বারিশ স্যারের কেবিনে তিনি বললেন,,
---মিস,  আমার দাদুর হেল্প করেছেন তার জন্য মন থেকে অনেক অনেক শুকরিয়া আপনাকে।।দাদু আমার জান।(কথার মাঝে স্যার আমার দুহাত তার দুহাতে ধরে) উনার কিছু হলে নিজেকে মাফ করতে পারবো না তার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।।
----এটা একজন পথচারী হিসেবে আমার কর্তব্য স্যার।।বলে হাত ছাড়িয়ে নিলাম।।কারণ উনি যত বার আমার হাত ধরেন তত বার আমার শরীরে আলাদা শিহরণ দিয়ে উঠে।।স্যার আসি তাহলে।।
বারিশ বলল,,
---আমার কথা শেষ হয়নি মিস।।আমাদের আজ রাতে কক্সবাজার যেতে হবে মিটিং আছে।। আপনি এখন বাসায় চলে যান।। আমি এসে পিক করে নিব আপনাকে।। 
----ওকে স্যার।।এই প্রথম কোনো ছেলের সাথে একা বের হবো ভাবতেই কেমন ভয় ভয় করছে।।

বাসায় গিয়ে রেডি হয়ে নিলাম রাত ৮ টায় স্যার এলেন।।আমিও নিচে নেমে গেলাম।।গাড়িতে স্যার ড্রাইভিং সিটে বসে।।তার পাশে খালি।।তাই পাশেই বসলাম।।স্যার হয়তো নিজে ড্রাইভ করেই যাবেন।।কিন্তু তাই বলে রাতের বেলা কেন? বুঝলাম না..!!

অনেকক্ষণ যাবৎ স্যার ড্রাইভ করছেন ভাবলেশহীন ভাবে।।তাকে দেখে মনে হচ্ছে উনি ছাড়া এই গাড়িতে কেউ নেই।।কি আশ্চর্য!  তাই আমিও বাহিরের দিক তাকিয়ে রইলাম।।আমরা অনেক দূর পর্যন্ত চলে এসেছি।।মাঝে আমি এক ঘুম দিয়ে উঠে পরেছি।।রাতে তখন বাজে ১২ টা কিছু কিছু দোকান পাঠ খোলা তো কিছু কিছু দোকান পাঠ বন্ধ করে ফেলছে।। হটাৎ একটি দোকানের নেম প্লেটে চোখ যায় যেখানে লিখা সিলেট।। আমি এটা দেখে অবাক যাওয়ার কথা কক্সবাজার আর স্যার নিয়ে এসে সিলেট।।স্যারের প্লেন কি? স্যার কি আমাকে মেরে ফেলেতে এনেছেন? নাকি বেঁচে দিতে? স্যারের কি কোনো কু মতলব আছে?? ভাবতে ভাবতে হটাৎ গাড়ি থেকে যায়।।সাথে সাথে শুকনো ঢুক গিললাম।।
----সসস্যার আআআমরা সিলেট কেন? আমরা না কক্সবাজার যাব??  (ভয়ে তুতলিয়ে বলতে লাগলাম)
কিন্তু স্যার কিছু বললেন না।। আমার দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসলেন শুধু।।তার পর তার হাত দিয়ে সামনের চুল গুলো সরিয়ে বলে উঠেন,,
----সারপ্রাইজ বেবী। 
বলে আমার কানে পিছনে কি করলেন সাথে সাথে জ্ঞান হারায় আমি।। আর কিছু মনেই নেই আমার।।
🐝

চোখ খুলে পিটপিট করে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করি।। আমি কই আছি।।বিছানা থেকে উঠার ট্রাই করি কিন্তু পারছি না আমার দুহাত খাটের দু পাশে হ্যান্ডকাপ লাগানো সাথে দু পায়েও।। এসব কি হচ্ছে আমার সাথে।। আর একি হাল আমার।।আমি হাত খোলার ট্রাই করছি কিন্তু পারছি না।।শুধু মুচড়া মুচরি করছি।আর চিৎকার করছি।।
----প্লীজ হেল্প প্লীজ!!
কিন্তু কোনো সাড়া শব্দ নেই।। তাহলে কি সত্যি স্যার আমাকে বেচে দিলেন?? এবার জোড়ে জোড়ে কাঁদতে লাগলাম।।আজ যদি ইউসুফ ভাইয়া থাকতো? কখনো আমাকে এ হালে পড়তে দিতো না।।তখনি খট করে দরজ টা খুলে গেল।।
আমি তাকিয়ে দেখি,,,
----আপনি????

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন