অন্যদিকে বর্ণের প্রচন্ড মেজাজ খারাপ হচ্ছে কারন এখনো রেহানের কোন নিউজ পায়নি বর্ণ ৷ বর্ণ দু হাত দিয়ে কপাল চেপে ধরে চোখ বন্ধ করতে ছন্দের হাস্যজ্বল ছবি ভেষে ওঠে বর্ণের চোখের সামনে৷ পরক্ষনে বর্ণের ঠোটের কোনে হাসি ফুটে ওঠে৷ বর্ণের মনে পরে যায় আজ রাতে ছন্দের কাছে যাওয়ার কথা৷ বর্ণ ঝটপট ফ্রেস হতে চলে যায়৷ ফ্রেস হয়ে চেন্জ করে নেয় বর্ণ তখনি দরজায় কেউ নক করে বর্ণ বিরক্ত হয়ে দরজা খুলে দেখে মিসেস বর্ণালি দারিয়ে...
৬৫
"" মম কিছু বলবে?"
" রাত অনেক হলো খেতে হবে না?নিচে চলো আমি তোমার জন্য খাবার সার্ব করছি"
" নো মম আমি বাইরে থেকে খেয়ে এসেছি তোমরা খেয়ে নেও..""
"" বাহ ছেলে মেয়ে দুটো এক রকম হয়েছে ৷ খেয়ে বললে বলে বাইরে থেকে খেয়ে এসেছি ৷""
কথাটা বলে রাগে ফোস ফোস করতে করতে মিসেস বর্ণালি নিচে চলে যায়৷ বর্ণ দ্রুত রেডি হয়ে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে প্রায় বার টা বেজে গেছে যেতে আরো বিশ মিনিট এভারেজ পৌছাতে পৌছাতে সারে বারটা বেজে যাবে৷ বর্ণ চুল গুলো সেট করে হাতে কালো চামড়ার ঘড়ি, পায়ে কালো সু , পরে ওয়াইট প্যান্ট আর ব্লাক শার্ট ৷ হাতা ফোল্ড করা ৷ বর্ণ কে দেখতে পুরো তামিল হিরোদের মতো লাগছে ৷ বর্ণ ফোন আর গাড়ির চাবিটা হাতে নিয়ে ধিরে ধিরে বেরিয়ে পড়ে৷ ড্রইং রুমে এসে খুব সাবধানে ধিরে ধিরে বেরিয়ে যায় ৷ মিস্টার চৌধুরী বা মিসেস চৌধুরী খেয়াল না করলেও বাড়ির বাকি সারবেন্টরা ঠিকি দেখে পায় কিন্তু কিছু বলার সাহস পায় না৷
বর্ণ গাড়ি নিয়ে সাবধানে বেরিয়ে যায়৷ আজ তার টিয়াপাখির কাছে আসবে বিধায় বর্ণের মন ভিষন ফুরফুরে আইনতঃ ছন্দ তার স্ত্রী ৷ ছন্দের উপর সব অধিকার একমাত্র শুধু তার ভাবতে বর্ণের মনে আনন্দের জোয়ার বয়ে যাচ্ছে ৷ ইচ্ছে করছে তার টিয়াপাখি কে নিয়ে তার ভালোবাসার সর্বোচ্চসীমা ঘুড়িয়ে আনতে কিন্তু আফসোস তার টিয়াপাখির অনুমতি ছাড়া বর্ণ কোন ভাবে তাকে স্পর্শ করতে চায় না৷
বর্ণ তার ভাবনায় এতোটাই বিভোর যে কেউ একজন বর্ণকে ফলো করছে অথচ বর্ণ তা বুজতেও পারছে না৷ বর্ণ ছন্দের বাড়ি থেকে একটু দুরে গাড়ি টা পার্ক করে আসে ৷ বর্ণ আগের কার মতো-ই বেলকনি দিয়ে ছন্দের রুমে প্রবেশ করে ৷ তবে এবার বর্ণ রুমে প্রবেশ করে চমকে যায়৷ পুরো রুমে সুগন্ধি ক্যান্ডেল দিয়ে সাজানো৷ দেয়াল জুরে ফেয়ারি লাইট৷ বেলী ফুলের সুগন্ধ ছড়িয়ে আছে পুরো রুমে ৷ আজ রুম টা পুরো অন্য রকম লাগছে ৷ দরজা খোলার আওয়াজ পেয়ে বর্ণ সামনে তাকিয়ে দেখে ছন্দ সুতি কালো রঙের একটা শাড়ি পরেছে ৷ আদভেজা চুল হালকা লেপ্টে যাওয়া চোখের কাজল ঠোটে লাল লিপষ্টিক ৷ কানে জুমকো ৷ হাতে মুঠো ভরা কাচের চুড়ি যার শব্দে পুরো পরিবেশটা বেশ রোমান্টিক করে তুলেছে৷
ছন্দ শাড়ি ঠিক করতে করতে সামনে চোখ পড়তে চোখ জোড়া আটকে যায়৷ ওয়াইট প্যান্ট ব্লাক শার্টে বর্ণ কে প্রচন্ড রকমের সুন্দর লাগছে বিশেষ করে বর্ণের ব্রাউন কালার চোখের মনির জন্য.. ..
"" উফফফ এই ছেলেটাকে এতো ভালো লাগে কেন আমার ইচ্ছে করে খেয়ে ফেলি ""
ছন্দের মুখের ভাব ভঙ্গি দেখে বর্ণ ছন্দের কোমর টেনে জরিয়ে কানের কাছে ফিস ফিস করে বলে " আমাকে না হয় পড়ে খেয়ে ফেল তার আগে না আমি তোমাকে খেয়ে ফেলি ৷ কি চাও তুমি আমি খুন হয়ে যায় তোমার রুপের আগুনে৷ নাকি জ্বলসে দিতে চাইছো কোনটা...?"
ছন্দ খুব আল্লাদে হাত দুটো বর্ণের কাধে রেখে বর্ণের নাকে নাক ঘশে বললো" আপাদতো তোমাকে খাবার খেতে দিতে চাইছি ওই দেখো টেবিলে আমি আগে থেকে তোমার জন্য খাবার সাজিয়ে রেখেছি..."" ছন্দের কথা শুনে বর্ণ পিছুনে তাকিয়ে দেখে সত্যি টেবিলে খাবার সাজিয়ে রাখা ৷ কিন্তু বর্ণ ভেবে ছিলো ছন্দ হয়তো রোমান্টিক হয়ে কিছু একটা বলবে বাট বর্ণ ভূলে-ই গেছিলো রোমান্টিক মোমেন্ট ভেস্তে দেওয়ার একটা সুক্ষ্ম ক্ষমতা ছন্দের আছে ৷ বর্ণ দম নিয়ে ছন্দের কোমর ছেড়ে দিয়ে ছন্দের হাত ধরে টেবিলের কাছে যায় তখনি মনে পরে মুরাদের কথা আজ ওদের ও ক্যান্ডেল লাইট ডিনার করার কথা ৷ মনে মনে হাসলো বর্ণ ৷
টেবিলে একপ্লেট বিরয়ানি সালাট চিকেন ফ্রাই পায়েশ রাখা ৷ বর্ণ চেয়ারে বসে ছন্দ কে কোলে বসিয়ে নেয়৷
"" এমা কি করছো! আমাকে কোলে কেন বসালে এখন তোমার তো খেতে অসুবিধে হবে বনরাজ""
" মটেও না টিয়াপাখি ৷ তুমি এভাবে বসবে আর আমাকে খাইয়ে দিবে ৷"
" আমি!"
" ইয়েস তুমি কুইক ফাস্ট টিয়াপাখি আমার বড্ড ক্ষিদে পেয়েছে৷ "
" কি আর করার এখন না খাইয়ে দিয়ে উপায় আছে? "
ছন্দ একলোকমা করে বর্নের মুখে খাবার তুলে দিতে লাগলো আর বর্ণ এমন ভাবে খাচ্ছে যেন অমৃত ৷ অর্ধেক টা খাওয়া শেষ হতে বর্ণ ছন্দ কে থামিয়ে দিয়ে নিজে হাতে ছন্দ কে খাইয়ে দিতে লাগলো..ছন্দ চুপচাপ খেতে লাগলো ৷ ছন্দ জানে এখানে তার কোন কথা-ই খাটবে না তাই চুপ থাকাই শ্রেয়৷
খাওয়া শেষ হতে ছন্দ বর্ণের কোল থেকে উঠে দারিয়ে বলে " হাত টা ধুয়ে নিন "
বর্ণ ওয়াশরুম থেকে হাত ধুরে বের হতে ছন্দ ঢুকে হাত ধুয়ে বের হয়ে দেখে বর্ণ উলটো দিকে ঘুর কোমরে হাত দিয়ে দারিয়ে আছে ৷ ছন্দ ধিরে ধিরে পিছুন থেকে বর্ণ কে জরিয়ে ধরে তখনি বর্ণ ছন্দ কে বলে উঠলো "" টিয়াপাখি সে দিন না দেখে তুমি যে পেপারসে সাইন করেছিলে সেটা ছিলো আমাদের মেরেজ পেপারস ৷ "" বর্ণের কথা শেষ হতে ছন্দ বর্ণ কে ছেড়ে দিতে নিলে বর্ণ হাত চেপে ধরে বলে ... - আমি ছাড়া তোমার শহরে কারো প্রবেশ নিষিদ্ধ.!
- তুমি শুধু আমার ভালোবাসায় সীমাবদ্ধ.! টিয়াপাখি ....
বর্ণ ছন্দের হাত ছেড়ে দিয়ে ছন্দের পায়ের কাছে বসে ছন্দের ডান পা তুলে পকেট থেকে একটা পায়েল বের করে ছন্দের পায়ে পরিয়ে দেয় বর্ণ৷ ক্যান্ডেলের আলোয় ছন্দ পায়েলটার দিকে খেয়াল করে দেখে পায়েলটা আলোয় চিক চিক করছে ডিজাইন টা ইউনিক দেখতে ভিষন সুন্দর ৷
বর্ণ উঠে দারিয়ে ছন্দের কপালে চুমু দিয়ে দু গালে আলতো করে ছুয়ে বর্ণ বললো" তুমি কি আমাকে ভুল বুজেছো টিয়াপাখি?এ ভাবে না জানিয়ে তোমার অনুমতি না নিয়ে বিয়ে করায়?" ছন্দ কিছু বললো না শক্ত করে বর্ণ কে জরিয়ে ধরলো৷ বর্ণ মুচকি হাসলো ৷ বর্ণ আবারও বলতে লাগলো... " আমি তোমার সকল হাসির কারন হতে চাই ৷ হতে চাই তোমার অন্তরাল যেখানে থাকবে শুধু আমি আর আমার ছোয়া৷ আই সোয়ার টিয়াপাখি জীবনে তুমি যতোটা না কষ্ট পেয়েছো তার দ্বিগুণ সুখ দিয়ে তা বিলিন করে দিবো ৷ অন্ধকারময় জীবন আমি আলোতে ভরিয়ে দিবো আমার ভালোবাসা দিয়ে৷ কখনো ওই মায়াবী চোখে মুক্তোর মতো দানা ঝড়তে দিবো না ৷ ভালোবাসার চাদরে মুরিয়ে রাখবো আমি তোমায়৷ এক আকাশ সমান ভালোবাসি তোমায় কারন আমার অন্তরালে তুমি টিয়াপাখি....."
বর্ণের প্রত্যেকটা কথা ছন্দের ভিতরটায় যেন তোলপার শুরু করে দিছে৷ যেটা তার বনরাজ কে বুঝানোর মতো ক্ষমতা তার নেই ৷ বর্ণ ছন্দের অবস্তা বুজতে পেরে ছন্দ কে কোলে তুলে নিয়ে বর্ণ ছন্দ কে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে ছন্দের ঠোটে ঠোট দিয়ে ছুয়ে দিয়ে ছন্দ কে বুকের সাথে ঝাপটে ধরে চোখ জোড়া বুজে ফেলে বর্ণ৷ ছন্দ বর্নের বুকের স্পন্দন শুনছে ৷
" আমি জানি বনরাজ তোমার বুকের প্রতিটা স্পন্দনে আমি ৷ কথা দিচ্ছি কখনো ছেড়ে যাবো না তোমায় কারন তুমি আমার বেচে থাকার অবলম্বন ৷ তোমাকে ছাড়া আমার জীবনে কোন গতি নেই বনরাজ ৷ আমি জানি তুমি তোমার ভালোবাসার চাদরে মুরিয়ে নিতে চাও আমায় কিন্তু এখনো সেই সময় আসেনি ৷ আমাদের আরো কিছুদিন ধৈর্য ধরতে হবে ৷ যারা আপনজন হয়ে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছে তাদের কে তাদের প্রাপ্য শাস্তি না দেওয়া পর্যন্ত আমি পুরো পুরি ভাবে তোমার কাছে ধরা দিতে পারছি না ক্ষমা করো আমায়...." কথা গুলো মনে মনে বলে চোখ বন্ধ করলো ছন্দ.....
৬৬
পরেরদিন ভোর বেলায় ছন্দের ঘুম ভাঙতে দেখে রাতে যেভাবে বর্ণের বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে ছিলো এখনো ঠিক সেভাবে আছে ৷ ছন্দ একটু নরে চরে উঠতে নিলে বর্ণ চোখ বন্ধ করে বলল"" একদম নরাচরা করো না টিয়াপাখি আমাকে ঘুমাতে দেও পুরো রাত ঘুমায়নি আমি..""
" কিহ পুরো রাত তুমি ঘুমাও নি মানে ? কিন্তু কেন?"
"" কারন আমি পুরো রাত ঘুমালে আমি আমার টিয়াপাখির ঘুমন্ত মুখটা দেখতে পেতাম না তাই" চোখ বন্ধ করে উওর দিলো বর্ণ...
ছন্দ বর্ণের কথা শুনে অবাক একটা মানুষ কতোটা ভালোবাসলে এরকম পাগলামি করতে পারে এটা বর্ণ কে না দেখলে কখনো জানতে পারতো না ৷ ছন্দের চোখের কোনে বিন্দু বিন্দু জল এটা কোন দুঃখের জন্য না বরং সুখের ৷ কেউ যে তাকে তার স্বার্থ ছাড়া এতোটা ভালোবাসতে পারে এটা ছন্দ বিশ্বাস করতে পারছে না৷ তবুও বর্ণ কে দেখে বিশ্বাস করতে বাধ্য হচ্ছে৷
ছন্দ ঘড়ির দিকে তাকাতে দেখে সকাল সাতটা বেজে গেছে ৷ মুন্নি ঘুম থেকে এই সময় ওঠে বলে ছন্দের ধারনা আর গেটে দারোয়ান ও জেগে আছে ৷ এখন বর্ণ কি করে বের হবে এটাই ভাবছে ছন্দ.. তখনি বর্ণ ঘুম জড়ানো কন্ঠে বলে উঠলো " এতো ভেবো না টিয়াপাখি আমি ঠিক সময়ে রুম থেকে বেরিয়ে যাবো আর কেউ দেখতে পাবে না৷""
"" তুমি কি করে বুজলে আমি এগুলো ভাবছি?""
"কারন তোমার সব ভাবনা শুধু আমাকে ঘিড়ে রেখেছ টিয়াপাখি ৷ তোমার সকল ভাবনায় আমি ৷ তোমার প্রত্যেকটা স্পন্দনে আমার বসবাস..."" কথাটা বলে বর্ণ ছন্দের গলায় গভীর চুমু খেয়ে উঠে পরে ৷ সে সুযোগে ছন্দ তার এলোমেলো শাড়ি গোছাতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে৷ বর্ণ ওয়াশরুমে ঢুকে ফ্রেস হতে তখনি ছন্দ পুরো রুম গুছিয়ে ফেলে কেউ দেখার আগে ৷ কারন ছন্দ চায় না কেউ এখনি ওকে সন্ধেহ করুক৷ আর আজ তো একটা বিশেষ দিন তার সো কল্ড বাবা সাব্বির আহাম্মেদের জীবনে ৷ এই দিন টা বিষিয়ে বিষাদময় না করা পর্যন্ত ছন্দের শান্তি নেই৷ ছন্দের ভাবনা গুলোর মাঝে বর্ণ পিছুন থেকে ছন্দ কে জরিয়ে ধরে ছন্দের গলায় গভির ভাবে কয়েকটা চুমু দিয়ে কানের কাছে আসতে করে বললো" গুড মরনিং টিয়াপাখি ৷ "
" গুড মরনিং বনরাজ"
" টিয়াপাখি এখন আমাকে বের হতে হবে অনেক লেট হয়ে গেছে""
" নাস্তা করে যাও আমি তোমার জন্য হালকা কিছু বানিয়ে আনছি"
" উহু একদম না আমার তো শুধু তোমার ওই ঠোটের স্পর্শ চাই ""
"" এটা পেলে তোমার পেট ভরে যাবে৷ মাজাকি হচ্ছে আমার সাথে হু সরুন তো আমাকে ফ্রেস হতে হবে ৷ ""
ছন্দ এক প্রকার বর্ণ কর ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে যায়৷
ছন্দ ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে বর্ণকে রুমে কোথাও না দেখতে পেয়ে ছন্দের মন খারাপ হয়ে যায় তখনি বর্ণ পিছুন থেকে ছন্দ কে জরিয়ে ধরে ৷ ছন্দ স্পর্শ পেয়ে বুজতে পারে এটা কার ছোয়া৷ ঠোটেন কোনে এক চিলতে হাসি ফুটে ওঠে ছন্দের ৷
"" কি ভেবেছিলে টিয়াপাখি সব বারের মতো এবারও তোমায় না বলে চলে যাবো ? "
ছন্দ মাথা নারে..
"" পাগলি এখন থেকে তা আর হচ্ছে না ৷ তবে এখন আমাকে যেতে হবে তার আগে তোমার ওই মিষ্টি ঠোটের মিষ্টি স্পর্শ পেতে চায় আমার মন...
ছন্দ মুচকি হেসে বর্ণের ঠোটে ঠোট জোড়া মিলিয়ে দেয় ছন্দ... তালে তাল মিলায় বর্ণ ৷ পাচঁমিনিট সময় চলে যাওয়ার পর ছন্দ বর্ণ কে ছেড়ে দিয়ে জরিয়ে ধরে৷
"" এখন আমাকে যেতে হবে জান""
"" রাতে আসবে তো?" আল্লাদি কন্ঠে বললো ছন্দ....
"" হুম আসবো না এসে উপায় আছে বুঝি আমার .." বলে হেসে দেয় বর্ণ ..
দুমিনিট পর ছন্দ বর্ণ কে ছেড়ে দেয় ৷ বর্ণ ছন্দের কপালে চুমু দিয়ে বেলকনি দিয়ে নিচে নেমে যায় ৷ বর্ণ যতোক্ষন না চোখের আড়াল হয় ততোক্ষন তাকিয়ে থাকে ছন্দ... বর্ণের গাড়ি বেরিয়ে যেতে ছন্দ রুমে এসে অনিল কে ফোন করে...
"" হ্যালো অনিল..""
" ইয়েস কুইন !"
" সারপ্রাইজ টা পাঠিয়ে দেও"
" ওকে কুইন""
কল ডিসকানেক্ট করে বাকা হাসলো ছন্দ ....
৬৭
ছন্দ শাড়ি পাল্টে একটা সিমপিল ত্রিপিস পরে চুল ঠিক করে রুম থেকে বের হয়ে নিচে এসে দেখে সাব্বির আহাম্মেদ সোফায় বসে পেপার পড়ছে ৷ ছন্দ মুচকি হেসে সাব্বির আহাম্মেদ এর পাশে বসে পরে বলে "" হ্যাপি বার্থডে আব্বু"
"" থ্যাংকিউ মামনি" পেপারটা সামনে রেখে বললো সাব্বির আহাম্মেদ...
"আব্বু আজ তোমার জন্য স্পেশাল সারপ্রাইজ আছে৷"
" কি সারপ্রাইজ ছন্দ..?" সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে বললো কাব্য...
"" উফফফ ভাইয়া সারপ্রাইজ টা বলে দিলে কি আর সারপ্রাইজ থাকে তুমিও না""
"" তা ছন্দ রানী আমাকেও কি বলা যায় না?"" (রুনা)
"" না গো ভাবি এই সারপ্রাইজ টা শুধু মাত্র দ্যা গ্রেট সাব্বির আহাম্মেদের জন্য..."" ছন্দের কথা শেষ হতে কিয়ারা বেগম ছন্দের কান মুলে দিয়ে বলে ফাজিল মেয়ে বাবার নাম ধরে বলছিস "
"" স্যরি আম্মু আমি তো মজা করছিলাম প্লিজ ছাড়ো না কান টা ব্যাথা পাচ্ছি তো""
"" এই বার ছাড়ছি পরের বার মাইর দিবো "" বলে ছেড়ে দিলো কিয়ারা বেগম...
"" সাবু ছন্দ কাব্য বউ মা কায়রা খেতে বসো আজ আমি সবার প্রিয় খাবার রান্না করেছি৷""
সবাই চেয়ারে বসতে নিবে তখনি কলংবেল বেজে উঠলো... সাব্বির আহাম্মেদ নিজে থেকে বললো" তোমরা খেতে থাকো আমি দেখছি কে আসলো"" সাব্বির আহাম্মেদ কে উঠে দরজার দিকে যেতে দেখে রহস্যময় হাসি দিলো ছন্দ....
সাব্বির আহাম্মেদ দরজা খুলে দেখে দেখে দরজার সামনে বড় সর একটা বক্স.. সাব্বির আহাম্মেদ এর দেরি দেখে সবাই সাব্বির আহাম্মেদ এর পাশে এসে দারায় ৷
"" এতো বড় বক্স তার উপর এই ছোট কার্ড টা কিসের ভাইয়া দেখতো""(ছন্দ)
"" দারা দেখছি..."" কাব্য কার্ড টা তুলে দেখে তাতে লেখা"" HAPPY BIRTHDAY MR. SABBIR AHAMED..."
" এটাতে তো আব্বু কে উইস করেছে "
—
" বাবা আপনি বক্সটা খুলে দেখুন কি আছে এটাতে..""
"" হ্যা আব্বু দেখো কি আছে বক্সটাতে...""
সাব্বির আহাম্মেদ সবার জরাজরিতে বক্সটার উপর চকচকে রঙিন কাগজ টা সরিয়ে দেখে একটা কাফিন৷ সবাই বেশ অবাক হয় কাফিন টা দেখে শুধু মাত্র ছন্দ ছাড়া ৷ জন্মদিনে যে কেউ কাউকে কাফিন গিফ্ট করতে পারে এটা কারোর ধারনায় ছিলো না ৷ কাফিনটা খুলে স্তব্ধ হয়ে যায় সাব্বির আহাম্মেদ .....
৬৮
"" সি,,য়াম..!"" (সাব্বির আহাম্মেদ )
" সিয়াম মানে ও তো রোদ ওকে এতো নিষ্ঠুর ভাবে মারলো কে?" (কিয়ারা বেগম)
কায়রা কোন কথা বলছে না যেন পাথর হয়ে গেছে৷ নিজের একমাত্র ছেলে কে কাফিনে মৃত অবস্তায় দেখে কোন মা সহ্য করতে পারে? কায়রা তার ছেলের লাশের কাছে যেতে নিলে সাব্বির আহাম্মেদ কায়রার হাত ধরে আটকে দিয়ে ইশারায় তার লাল রক্তিম চোখ দিয়ে বারন কারে কাছে যেতে ৷ কায়রা তার স্বামীর দিকে করুন চোখে তাকিয়ে লাভ হয় না তখনি ছন্দ বলে ওঠে " খালামনি তুমি ঠিক আছো? রোদ কে কি তুমি চিনো? "
"" ন,,নাহ চিনি না" কাপা কাপা গলায় বললো কায়রা...
"" তাহলে তোমার চোখ মুখ এমন লাগছে কেন? আর এই রোদ কে এতো কষ্ট দিয়ে কে মারলো ? " সাব্বির আহাম্মেদ ছন্দ কিছু বলতে যাবে তার আগে রুনার বমি শুরু হয়ে যায় ৷ আসলে প্রেগনেন্সির সময়ে এই ধরনের ভয়ঙ্কর কিছু তার তারা সহ্য করতে পারে না৷ কিয়ারা বেগম রুনার শরীল বেগতিক দেখে কাব্যের সাহায্য নিয়ে দ্রুত ভিতরে নিয়ে আসে ৷
"" কাব্য বউমা কে দ্রুত রুমে নিয়ে যা আমি ডক্টর কে ফোন করে আসতে বলছি""
"" ওকে আম্মু কিন্তু বাইরে যে... বাকিটা বলার আগে কিয়ারা বেগম হাতের ইশারায় থামিয়ে দিয়ে বলতে লাগলো" ওটা নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না তুমি আমাদের বংশধর কে নিয়ে ভাবো বাকি সব কিছু নিয়ে ভাবার জন্য আমরা আছি৷ "" কাব্য আর কিছু বলার সুযোগ পেল না কারন রুনার শরীল আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে ৷ কাব্য দ্রুত রুনাকে কোলে নিয়ে রুমে চলে যায়৷
কিয়ারাকে ভিতরে যেতে দেখে কায়রা নিজেকে আর সামলাতে পারলো না হাউমাউ করে কান্না করতে লাগলো সিয়ামের কাফিন ধরে... সাব্বির আহাম্মেদের ও চোখের কোনে পানি ৷ রাগে চোখ মুখ লাল বর্ন ধারন করেছে সাব্বির আহাম্মেদের ৷ কে তার একমাত্র ছেলে কে খুন করলো এটা সাব্বির আহাম্মেদ কিছুতেই বুজতে পারছেন না৷ সাব্বির আহাম্মেদ ভালো করে সিয়ামের মৃত লাশটার দিকে তাকিয়ে রইল৷ সিয়ামের শরীলে অসংখ্য সাপের ছোবলের দাগ স্পষ্ট ৷ সাথে শরীলে আরো দাগ তবে এগুলো কিসের দাগ এটা বুজতে পারছে না৷
"" যে এই কাজ টা করুক না কেন আমি তাকে ছাড়বো না তাকে এর থেকেও কঠিন শাস্তি দিয়ে মৃত্যু দিবো৷ কেদো না কায়রা উঠে দারাও কেউ যেন কিছু বুজতে না পারে ""
কায়রা তার মৃত ছেলের কাফিন ছেড়ে উঠে দারিয়ে সাব্বির আহাম্মেদ এর কলাট দু হাত দিয়ে চেপে ধরে বলে" তুমি কি মানুষ সাব্বির? একটা পশুর যখন তার সন্তান মারা যায় সে পাগলের মতো করে অন্তত তার চোখ থেকে এক ফোটা পানি বের হয় কিন্তু তোমার! তোমাকে দেখে তো বিন্দুমাত্র মনে হচ্ছে না তোমার সন্তানের মৃত্যুতে তুমি সামান্যতম শোক পেয়েছো"
" বলা শেষ হলে কলাট ছেড়ে দুরে সরে দারাও কিয়ারা দেখতে পেলে সমস্যা হবে ৷"
সাথে সাথে কায়রা সাব্বির আহাম্মেদের কলাট ছেড়ে দুরে সরে দারিয়ে বলতে লাগলো"" আজ আমার ছেলের মৃত্যুর সাথে সাথে তুমি ও মৃত আমার কাছে মনে রেখ সাব্বির আহাম্মেদ ৷ আর তোমার ফল আমাদের ছেলেকে পেতে হলো৷ মনে রেখ পাপ কখনো বাপ কেও ছাড়ে না৷ তোমার পাপের সংখ্যা আজ পরিপূর্ণ তোমার মৃত্যু খুব সংনিকটে আর তোমার মৃত্যুর কারন তোমার-ই আপন জন হবে মনে রেখ সাব্বির আহাম্মেদ ..."" কথা গুলো বলে কায়রা চোখের পানি মুছে উপরে চলে গেল৷
"" ইমোশনাল ফুল বাট আজ এই দিনে সত্যি আমি সারপ্রাইজড কখনো ভাবতে পারেনি আমার সন্তানের লাশ কেউ আমাকে সারপ্রাইজ দিবে..." কথাটা বলে চোখের পানি মুছে কাউ কে ফোন করলো.. বিশ মিনিটের মাথায় দশ পনেরো জন এসে হাজির হয়৷
"" এই লাশ টা দাফনের ব্যবস্তা কর যতো তারাতারি সম্ভব ৷ পুলিশ যেন কোন ভাবে টের না পায় ""
"" জ্বি স্যার তবে মাল পাতি একটু বেশি লাগবো""
"" পেয়ে যাবি কাজ শেষে..""
"" ওকে স্যার , এ সবাই এই কাফিন টাকে তুলে নিয়ে চল "" লোকটার কথা মতো লোকগুলো কাফিন কাধে নিয়ে চলে গেল৷ ছন্দ ড্রইং রুমে বসে সবটাই ক্লিয়ার ভাবে দেখছে ৷ ছন্দ সামান্য অবাক হয় এটা দেখে রোদ অরফে সিয়ামের মৃত্যুতে কায়রা আর সাব্বির আহাম্মেদ এই দুজন একটু শোক পালন করছে কিন্তু কিয়ারা বেগম তাকে দেখে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না ৷ ছন্দ মুন্নি কে চা বানিয়ে আনতে বলে নিজের রুমে চলে যায়৷
" নাহ প্লান টা কাজে লাগলেও সাববির আহাম্মেদ কে ভেঙে গুড়িয়ে দিতে পারে নি ৷ আমাকে এমন কিছু করতে হবে যাতে সাপ ও মরে লাঠিও না ভাঙে ৷ ওয়েট এন্ড ওয়াচ মিস্টার সাব্বির আহাম্মেদ ৷ এবার এমন কিছু শুনবেন যা শুনে আপনাকে পুরো নাড়িয়ে দিবে৷ " ছন্দ ফোনে অনিলের নাম্বার ডায়াল করে ফোন করে...
" হ্যালো অনিল "
" ইয়েস কুইন"
" আমার একজনের ইনফরমেশন চাই "
" পেয়ে যাবেন বাট কার..?"
" ......................."
"" ওকে কুইন আমি রাতে আপনাকে সবটা জানাবো..""
"" ওকে .."" ছন্দ কল ডিসকানেক্ট করে মুখে দুখি দুখি ভাব করে নিচে এসে দেখে সাব্বির আহাম্মেদ দম মেরে সোফায় বসে আছে ৷ ছন্দ সাব্বির আহাম্মেদের পাশে বসে বলল" আব্বু রোদ কে এমন ভাবে কে মারলো? বাবা কি ভয়ঙ্কর ভাবে মেরেছে ৷ পুরো শরীল নীল বর্ণ ধারন করেছে৷ আমার তো মনে কোন বিশাক্ত পোকা মাকড় বা সাপ কামড়েছে ৷ নাহলে এমন ভাবে পুরো শরীল নীল হতো না"
সাব্বির আহাম্মেদ এখনো চুপ মুন্নি এসে ছন্দ কে এক কাপ চা দিয়ে যায়৷ ছন্দ চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে সাব্বির আহাম্মেদ এর দিকে তাকিয়ে রইল.. সাব্বির আহাম্মেদ উপরে কঠিন দেখালেও ভিতর থেকে যে ভেঙে চুরে যাচ্ছে এটা ছন্দ বেশ বুজতে পারছে ৷
কিছুক্ষণ পর ডাক্তার এসে রুনা কে দেখে গেছে ৷ আর কিছু মেডিসিন প্রেসক্রিপ করেছে সে অনুযায়ী কাব্য রুনার দেখভাল করছে৷ ছন্দ দুবার তার ভাবি কে দেখে আসে ৷
৬৯
রাস্তার সব সি সি ক্যামেরা চেক করেও কোন প্রকার ক্লু না পেয়ে বর্ণ প্রচন্ড রেগে আছে ৷ গাড়ির নাম্বার পেয়েও গাড়িটাকে কোন ভাবে ট্রেস করতে পারেনি বর্ণ কারন সেই গাড়িটা চুরির গাড়ি তার উপর গাড়ির নাম্বার ইতেমধ্যে চেন্জ করে ফেলেছে বর্ণের ধারনা৷ মিহির ভয়ে বর্ণের আসে পাশে যেতেও ভয় পাচ্ছে যদি বর্ণ রেগে ওকে শুট করে দেয় সেই ভয়ে৷ মুরাদ বন্যার সকথে ফোনে কথা শেষ করে বর্ণের পাশে এসে বসে " বর্ণ শান্ত হো ৷ আমার মনে হচ্ছে এটা কোন ছোট খাটো গ্যাংয়ের কাজ নয় আর না রেহানের কোন লোকের কাজ কারন আমি খবর নিয়ে দেখেছি আনিস সব লোকদের ফ্রি করে দিয়ে নিজে পরিবার নিয়ে দেশের বাড়ি চলে গেছে ৷""
"" তাহলে এটা তুই শিওর হলি কি করে যে এটা কোন নিউ গ্যাংয়ের কাজ নয়?""
"" কারন খুব সিমপিল এই শহরে কারো এতো বড় কলিজা হয়নি যে তোর সাথে লাগতে আসবে বাই দ্যা ওয়ে একটা নিউজ আছে এন্ড খুব ইমপটেন্ট..""
"" ওয়াট!"
"" রোদ যাকে তুই মেরে হসপিটালে ভর্তি করিয়েছিস ৷ তারপর হসপিটাল থেকে মিসিং আর আজ তার ডেড বডি কেউ ভাবির বাড়ির সামনে রেখে গেছে""
"" ওয়াট! কে মারলো রোদ কে?"
"" এটাতো আমিও জানি না বর্ণ কে রোদ কে মারতে পারে""
"" যাই হোক ওকে অন্য খুন না করলে আমার হাতে ওকে মরতে হতো মুরাদ৷ যে আমার টিয়া পাখির দিকে তাকাবে বা আমার থেকে ছিনিয়ে নিতে চাইবে তাকে আমি এই দুনিয়া থেকে বিদেয় করে দিবো এন্ড আই মিন ইট""
"" তোকে বুঝানো আমার কর্ম না চল অফিসে যেতে হবে ৷ আর এই রেহান কে যে তুলে নিয়ে যাক না কেন আমার মনে হয় না রেহান বেচে ফিরতে পারবে৷ দেখিস এই রোদের মতো না ওই রেহানের অবস্তা হয়""
বর্ণ গাড়ি ড্রাইব করছে পাশের ছিটে মুরাদ আর পিছুনে মিহির চুপ করে বসে আছে৷ কিছুদুর যেতে বর্ণ খেয়াল করে একটা সাদা গাড়ি ওদের ফলো করছে ৷ বর্ণ আর একটু শিওর হওয়ার জন্য অন্য রাস্তা ধরে এগোয় ৷ গাড়িটাও বর্ণের গাড়িকে ফলো করে সেভাবে এগোচ্ছে৷ বর্ণ শিওর হয়ে যায় কেউ ওদের কে ফলো করছে৷ বর্ণ মুরাদের কোমর থেকে গানটা নিয়ে দ্রুত কাচ নামিয়ে সাদা গাড়িটার সামনের টায়ারে শুট করে দেয়৷ সাথে সাথে গাড়িটা তার ব্যালেন্স হারিয়ে গাছের সাথে ধাক্কা লাগে ৷ বর্ণ গাড়ি থামিয়ে দ্রুত বের হয়ে গাড়ির কাছে এসে দেখে গাড়ি পুরো ফাকা কেউ নেই৷
"" স্ট্রেন্জ বর্ণ গাড়িতে কেউ নেই?"
"" পালিয়েছে ""
"মানে?"
" কেউ একজন আমাদের ফলো করছিলো সে পালিয়েছে৷ মিহির গাড়ির নাম্বার নোট করে এখুনি খরব নে গাড়িটা কার?"
"" ইয়েস বস "" মিহির গাড়ির নাম্বার টা নিয়ে দুরে দারিয়ে কাউকে কল করে ঠিক পাঁচমিনিটের মাথায় মিহির এসে জানায়" বস গাড়িটা আমান খানের নামে রেজেস্ট্রি করা ""
"" ইউ মিন রেহান খানের ভাই আমান খান"(মুরাদ)
"" ইয়েস স্যার"
"" বাহ হয়তো ভাইয়ের খবর না পেয়ে বেচারা আমাকে ফলো করছে ৷ মুরাদ এই চোর পুলিশ খেলাটা এখন আর আমার ভালো লাগছে না আমান কে আমার সামনে চাই""
"" পেয়ে যাবি....""
"" গুড তাহলে যাওয়া যাক""
"" হু চল ..""
______________________________________
আমান দৌড়াতে দৌড়াতে হাপিয়ে যায়৷ বর্ণদের গাড়ি থেকে বেশ খানিকটা দুরে চলে এসেছে আমান ৷ একটুর জন্য ধরা পরে যায়নি আমান নাহলে ওই বুলেট হয়তো তার শরীলে গেথে দিতো বর্ণ ৷
"" কিন্তু আমি তোকে ছাড়বো না বর্ণ তুই আমার দুই ভাইকে কেড়ে নিয়ে ছিস জানি না রেহান ভাই কেমন আছে আদো বেচে আছে কিনা? কিন্তু তুই আমার ভাইয়েদের সাথে সাথে আমার ভালোবাসা কেও কেড়ে নিয়েছিস এর শাস্তি তো তোকে পেতেই হবে তোর জান দিয়ে৷ আমি খুব তারাতারি আসছি তোর জান কবজ করতে বর্ণ তারপর জানপাখি শুধু আমার হবে আমার..... " আমান ওটো করে ফিরে যায়৷ বাড়িতে এসে ভাংচুর শুরু করে দেয় আমান ৷ ভাইয়ের অবর্তমানে সব দায় দ্বায়িত্ব যে এখন তার এটা মনে করিয়ে দিতে হঠাৎ আগমন ঘটে রেহানের অফিসের ম্যানেজার ইকবাল ...
"" বাবা আমান শান্ত হও দয়া করে ৷ এভাবে ভাংচুর করে তুমি কি তোমার ভাইকে ফিরে পাবে ? নাহ পাবে না তাহলে এভাবে ভাংচুর কেন করছো ?""
"" আপনি এখানে?"
"" না এসে উপায় আছে ! স্যারের অর্বতমানে তুমি এখন কম্পানির বস ৷ এতো হাজার হাজার কর্মচারী তাদের রুটি রুজি তো তোমাদের কম্পানি এখন তুমি যদি হাল না ধরো তাহলে সব ডুবে যাবে ৷ এই ম্যানশন নিলামে উঠবে...""
"" ওয়াট ! নাহ তা আমি হতে দিবো না ৷ আমি আগামিকাল থেকে অফিস আসবো আপনি সব রেডি করে রাখবেন"
"" ওকে স্যার""
"" স্যার নয় আমান বলে ডাকবেন""
"" আচ্ছা আমান বাবা"" ইকবাল চলে যেতে আমান নিজের রুমে এসে ছন্দের ছবি হাতে নিয়ে কথা বলতে থাকে....
" জানপাখি তোমাকে খুব তারাতারি আমার কাছে নিয়ে আসবো আই প্রমিজ ইউ৷ ওই বর্ণ চাইলেও তোমাকে কোথাও খুজে পাবে না বিশ্বাস করো ""
" আমি জানি তুমিও আমাকে ভালোবাসো শুধু মাত্র ওই বর্ণের ভয়ে কিছু বলতে পারো না ৷ ওকে শেষ করে আমরা এক হবো জানপাখি ৷"" কথা গুলো পাগলের মতো হাসতে লাগলো আমান.....
____________________________________
৭০
পুরোটা দিন ছন্দ সবার সামনে গোমরা মুখ করে থাকলেও ভিতরে ভিতরে ভিষন খুশি তবে আজ একটু বেশি কারন তার সো কল্ড বাবা সাব্বির আহাম্মেদ কে তার জীবনের বেস্ট গিফ্ট দিতে পেরে৷ ছন্দ আজ পুরো দিন মুন্নি কে চোখে চোখে রেখেছে কেন যেন এই মেয়েটাকে ভিষন রহস্যময় মনে হয় ছন্দের কারন টা হলো মুন্নিকে বাহির থেকে যেমন টা দেখতে ভিতর টা তার সম্পূর্ণ আলাদা বলে মনে করে ছন্দ ৷ সে দিন ভাবির সাথে গল্প করতে করতে ভাবি সেই রাতের কথা ছন্দ কে জানায় যখন রান্না ঘরে মুন্নি কে দেখতে পায় না আবার হঠাৎ দেখতে পায়৷ ছন্দ বেশ ভেবেছে মুন্নি কে নিয়ে মেয়েটার সত্যতা খুজে বের করতে হবে এটা ভেবে পুরো দিন মুন্নি কে চোখে চোখে রেখেও বিশেষ কিছু চোখে পড়েনি৷ সন্ধা হতে বর্ণের মেসেজ আসে সেটা পরে ছন্দের মন খারাপ হয়ে যায়৷ বর্ণ আজ রাত আসতে পারবে না ৷ বিজনেসের কাজের জন্য সিলেট যেতে হবে৷ বর্ণ এখন অবদি ছন্দের রুমের সিকরেট ক্যামেরার ফুটেজ দেখতে ভূলে গেছে ৷ বর্ণ এটাও জানে না ছন্দ সেই ক্যামেরা গুলো ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে৷ ছন্দ মনে মনে ঠিক কর নেয় ৷ আজ রাতে Rk জীবনের বাতি নিভিয়ে দিবে৷
ছন্দ রাতে ডিনার করতে এসে দেখে কায়রা মানে তার ছোট খালামনি খেতে আসেনি তার নাকি শরীল খারাপ লাগছে তবে সাব্বির আহাম্মেদ কে দেখে মনে হচ্ছে না আজ এতো বড় একটা কান্ড হয়েছে ৷ তার কোন প্রভাব তার ভিতর দেখছে না সে নিজের মতো করে খেয়ে যাচ্ছে ৷ কাব্য আজ নিচে নামেনি রুনা কে ছেড়ে... কিয়ারা বেগম মুন্নি কে খাবার দিয়ে নিজেও খেতে বসে ৷ পুরো টেবিলে নিরবতা বিরাজমান৷ কারোর মুখে কোন কথা নেই তবে ছন্দ মুন্নির দিকে খেয়াল করছে ৷ মুন্নি ওরনার নিচে লুকিয়ে কিছু একটা দেখছে ৷ ছন্দ কিছুটা আন্দাজ করে নিয়েছে কি হতে পারে ওটা৷ খাওয়া শেষে ছন্দ সবাইকে গুড নাইট জানিয়ে রুমে চলে আসে৷
রাত দেরটায় ছন্দ রেডি হয়ে পিছুনের দরজা দিয়ে বের হতে যাবে তখনি ছন্দ দেখতে পায়...........