আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুগ্রহ করে গল্প সম্বন্ধে আপনার মতামত অবশ্যই প্রকাশ করবেন। আপনাদের মতামত আমাদের এই ছোট প্রয়াসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগায়। শীঘ্রই আরও নিত্য নতুন গল্প আপডেট আসছে, সঙ্গে থাকুন। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখক/লেখিকা'র নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত গল্পের ডায়েরি’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখক/লেখিকা'র কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় গল্পের ডায়েরি কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ করলে তা কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

সাইকো ইজ ব্যাক - পর্ব ১০ - সিজন ২ - সুরাইয়া সাত্তার ঊর্মি - ধারাবাহিক গল্প

 
দেখতে দেখতে সাত দিন কেটে গেল। এই সাত দিনে সব নরমাল থাকলেও নরমাল ছিল না আমার ফুপি শাশুড়ি। আমার সাথে তেমন কথা বলতেন না তিনি..এরিয়ে চলতেন খুব। আবার ইশারা ইঙ্গিতে খুব কথা শুনাতেন তিনি, মাঝে মাঝে বাবা-তুলে গালি গালাজ করতেন।খুব কষ্ট হত কিছু বলতেো পারতাম না।এর মাঝে জেনির ভাই এসে জেনিকে নিয়ে যায়। জেনি হচ্ছে ফুপির পাতানো ভাইয়ের মেয়ে..!! কোনো এক ট্রেন জার্নিতে পরিচয় হয়েছিল তাদের।জেনির ভাই রনি যাকে আমার মোটেও ভাল লাগেনি। লোকটার তাকানো আমার জন্য খুব অস্বস্তিকর তৈরি করছিল। তিনি এমন ভাবে তাকাতেন, যেন চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছেন। দেখলে মন চাইত জুতা পিটা করতে। সত্যি যদি আমাকে একদিনের জন্য কেউ প্রধানমন্ত্রী করতো, তাহলে আমি প্রথম এমন ব্যক্তিদের মৃত্যুদণ্ড দিয়ে দিতাম..! এমন কিছু মানুষের জন্যই আজ কালকের মেয়েদের ধর্ষণের শিকার হতে হয়। আফসোস...!এমনটা হবার নয়। ছোট শ্বাস বেরিয়ে এল আমার। বেলকনিতে দাড়িয়ে এসব ভাবছিলাম তখনি বারিশ পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলতে লাগে,
----কি করছে আমার বাবুইপাখিটা??
বারিশের বাবুইপাখি ডাকটা প্রতিবার বুঝিয়ে দেয় ইউসুফ আমার সাথে হারিয়ে যায় নি...!!তার স্মৃতি হারিয়ে গেলও, তার স্বাভাব,আচরণ, ব্যবহার কোনোটাই পরিবর্তন হয়নি...!প্রতিবারের মত এই ডাকটি মনে দোলা দিয়ে উঠে..!আমি তার দিকে ঘুরে তার গলার পিছনে দু হাত দিয়ে বেঁধে বলতে লাগি,
----তেমন কিছু না! 
বারিশ তার দু হাত দিয়ে আমার কোমরে চাপ দিয়ে আরো কাছে নিয়ে আসল, আর বলল,
----তাই বুঝি..!!আমাকে মিস করছিলেনা..!
আমি ভাব নিয়ে বললাম,
----আপনি কে? যে মিস করবো হুম...!!
বারিশ ভ্রু কুচকে মুখে দুষ্ট দিয়ে বললো,
----তাই, বুঝি..!!বলে আমাকে সুড়সুড়ি দিতে লাগলো। আমার শরীরে এমনিতে অনেক সুড়সুড়ি...! তার হঠাৎ এমন আক্রমনে আমি অবাক হয়ে যাই। মুহুর্তে হেসে কুট কুট হতে হতে বলি,
----বারিশ আর না প্লিজ।  এববার আমি হাসতে হাসতেই মরে যাবো..! প্লিজ না...!বারিশ...!
বারিশ আমার কথা শুনে টাইট করে জড়িয়ে ধরলো।আর বলতে লাগল,
----বাবুইপাখি এসব আর বলবে না..! 
----কি বলব না..!
----তোমার মরার কথা আর বলবে না। কষ্ট হয় খুব আমার..!
-----আচ্ছা বাবা সরি..! এত সেন্টি হচ্ছেন কেন? আছি তো আপনার পাশে।
----হুম।আর কখনো এসব বলবে না..!
বলে কপালে চুমু খেল বারিশ।আমি সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে ফেললাম। 
তখন বারিশ বলল,
----বাবুইপাখি..! আই নিড ইউ...!
আমি সাথে সাথে চোখ মেলে তাকাই তার দিকে..!সে তখন নেশাময় কন্ঠে বললেন,
----প্লিজ..!
আমি কিছু বলবো তার আগেই বারিশ আমার গলায় মুখ ডুবিয়ে দেয়। কিন্তু আমি  সাথে ধাক্কা মেরে দেই। কিন্তু বারিশ তার নেশা কাতর কন্ঠে বলে উঠে,
----প্লিজ বাবুইপাখি আজ না কর না...!
আমি কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললাম,,
-----বারিশ আমার কিছুটা সময় লাগবে, প্লিজ বারিশ ট্রাই টু আন্ডারস্ট্যান্ড?
বারিশের যেন আমার কথা কানে যাচ্ছে না..!!তিনি মনে হচ্ছে মাতাল হয়ে যাচ্ছে। আমি এবার জোড়ে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে বলতে লাগি,
----প্লিজ বারিশ..!
বারিশ হয়ত এমন কিছু আশা করে নি। সে ভাবল কুহু লজ্জা পাচ্ছে নয়ত ভয় তাই এমন করছে। বারিশ মুচকি হেসে, আমার দু গালে হাত রেখে বলতে লাগে,,
----বাবুইপাখি ভয় পাচ্ছো কেন?আমি আছি তো..!
বলে এবার ঠোঁটে চুমি দিতে গেল, আমি তাকে ধাক্কাচ্ছি। তার যেন কানে কোনো কথাই যাচ্ছিল না। এক প্রকার ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এর মাঝে হুট করেই বারিশের গালে আচমকা চর লেগে যায়। 
চর খেয়ে বারিশ হতভম্ব হয়ে যায়।আমি নিজেই অবাক হয়ে গেলাম এ আমি কি করে বসলাম।বারিশ গালে হাত দিয়ে বলতে লাগে,
----তুমি আমাকে মারলে..!!
আমি এবার কাঁদোকাঁদো হয়ে বললাম,
----আম সরি আমি ইচ্ছে করে করি নি..! কেমনে জানি..!!
বারিশ আমাকে বলতে না দিয়ে হাত উঁচু করে থামিয়ে দেয় আর গম্ভীর গলায় বলে,
----আমার দোষটা কি বলবে? ভালবাসার মানুষকে আপন করে পেতে চাওয়া কি খুব দোষ..! একটা মাস হয়ে গেছে আমাদের বিয়ের আর এর মাঝে যত বার তোমাকে কাছে পেতে চেয়েছি ততবার তুমি কিছু না কিছু করেছো..! আজতো...! 
আমার চোখ দিয়ে পানি পরতে লাগলো। সত্যি আজকে বারিশকে আমি অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছি।আমি বারিশে কাছে যেতেই সে দু কদম পিছিয়ে যায়। আর বলতে লাগে,
----নাহ!  আমার কাছে আসবে না..!আর না আমি তোমার কাছে আসবো..!
বলে সে বের হয়ে চলে গেল..!
আমি সেখানেই বসে পরে কাঁদতে লাগলাম।দু হাত দিয়ে নিজের গালে চর মারতে লাগলাম ইচ্ছা মত। কি করে বসলাম আমি..!নিজের ভালবাসার মানুষের গায়ে হাত তুললাম..!যে হাত দিয়ে মেরে ছিলাম সে হাতকে আর রাখবো না। সামনে থাকা কাঁচের ফুলদানী ভেঙ্গে তার টুকরো দিয়ে হাত কেঁটে ফেলি। সাথে সাথে ফিনকী দিয়ে রক্ত বের হয়ে ভেসে  যাচ্ছে পুরো ফ্লোর..!! ধীরে ধীরে আমি সেখানেই শুয়ে পরি..!!চোখের সামনে সব ঘোলা হয়ে আসচ্ছে আমার।
🕊
তীব্র আলো চোখে পরতেই ঘুম ভেঙ্গে যায় আমার। চোখ মেলে দেখি সকাল হয়ে গেছে, আমি বেলকনির ফ্লোরে শুয়ে আছি। ফ্লোরে রক্ত শুকিয়ে  আছে।আমি উঠে বসি। মাথা টা ঝীম জীম করছে, উঠে ঘরে উঁকি দেই। নাহ্ বারিশ নেই। হযত চলে গেছে। কালকের কথা মনে পরতেই চোখ দুটো ভিজে উঠলো আমার। নিজের দোষে আপন মানুষকে কষ্ট দিয়ে ফেলছি বার বার।ফোনের রিং বাজতেই ভাবনায় ছেদ পরে, মনে হলো বারিশ কল দিয়েছে ফোন তুলে দেখি টিনা কল করেছে।কল রিসিভ হতেই টিনা বলল,
----দোস্ত কই তুই?
----বাসায়..!
----এখনো বাসায় ভুলে গেছিস আজ পরিক্ষা?
----সত্যি ভুলে গেছিলাম। তুই কই?
----আমি বের হয়েছি বাসা থেকে,,তাড়াতড়ি আসিস.!
-----আচ্ছা। 
ফোন কেঁটে রেডি হয়ে নিচে চলে আসলাম।টেবিলে দাদু ব্রেকফাস্ট করছিল আমাকে দেখে বলল,
----আরে দাদু ভাই আয় নাস্তা করে নে।
আমি মুচকি হেসে বললাম,,
----দাদু ভাই লেট হয়ে গেছে, বাহিরে খেয়ে নিব..!
দাদু বলল,
----আচ্ছা। তা বারিশ কই? আজ এত লেট হচ্ছে ওর? 
আমি অবাক হয়ে গেলাম। তাহলে কি রাতে বারিশ বাসা থেকে বের হয়ে গেছিল?আমি চাঁপা হেসে বললাম,
----উনিতো সকালে চলে গেছেন,  কি জানি কাজ ছিল তার।।
----আচ্ছা।
আমি দাদুকে বাই বলে চলে আসি।আর ভাবতে লাগি,  তাহলে কি বারিশ রাগ করে আর বাসায় ফিরে নি..!কিন্তু উনি গেল কই? এমন তো কখনো করেন। 
 
সেদিন ভার্সিটি পরিক্ষা শেষে টিনা বলল,
----দোস্ত কাল আমার বার্থ ডে জানিস তো?
----হুম জানি কেন?
-----কালকে আমি পার্টি থ্রো করেছি।একটি রেস্টুরেন্টে..!আর তোকে আসতেই হবে। ভাইয়াকে নিয়ে আসবি কিন্তু..!!
আমি মুচকি হেসে বললাম,
----আচ্ছা।
ঘড়িতে ১ টা ছুই ছুই বারিশ এখনো বাসায় আসেনি। ফোনে অনেক ট্রাই করছি প্রতিবার কেঁটে দিচ্ছে। খুব কষ্ট লাগচ্ছে আমার তার এমন কাজে। ১.৩০ বাজতেই ঘরে ঢুকলো বারিশ।তাকে দেখে মনের মাঝে ধক করে উঠলো,  বারিশ ড্রিংকস করে এসেছে।সে হেলে দুলে বেডে শুয়ে পরলো।তার  এমন অবস্থায় খুব খারাপ লাগচ্ছে আমার। তখন আমি এগিয়ে তার পায়ে জুতা খুলতে গেলাম, সে বলল,
----ডোন্ট টাচ মি..!ডোন্ট। বলে উবু হয়ে শুয়ে পরলো। তার এমন কাজে আমি মুখ চেঁপে কাঁদচ্ছি। এসবের জন্য আমি দায়ি।।

—————

সকাল থেকে বারিশের সাথে কথা বলার ট্রাই করে যাচ্ছি কিন্তু সে আমাকে পাত্তাই দিচ্ছে না। কি রাগ বাবা গো?তার উপর টিনা ফোনের উপর ফোন করেই যাচ্ছে যাওয়ার জন্য। কি করব ভেবে পাচ্ছি না। তখনি বারিশ রুমে ঢুকে। আমি বিছানায় চুপটি করে বসে তাকে দেখছি। আজ সে অফিস যায়নি,রাতে খুব কাঁপুনি দিয়ে জ্বর এসেছিল তার।সকালে হলকা জ্বর থাকায় দাদু যেতে নিষেধ  করে দিয়েছেন।দাদুর কথা বারিশের জন্য পাথরের লাকির স্বরূপ। বারিশ একটা ফাইল নিয়ে বের হতে যাবে তার আগেই দরজা লাগিয়ে তার সামনে দাড়িয়ে পরি।বারিশে ভ্রু কুচঁকে বলতে লাগে,
----কি সমস্যা?
আমি মাথা নারলাম, মানে সমস্যা নেই..!
----দরজা থেকে সর, যেতে দেও।
----না মানে একটা কথা ছিল।
----কি কথা?
----আজ টিনার বার্থ ডে..!
----তো আমি কি করবো?
----কিছু না। ওই ইনভাইট করেছে।
----তো যাও আমাকে কেন বলছো?
আমি মিনমিন করে বললাম,
----আপনাকেও যেতে বলছে।
বারিশ বিরক্তি সুরে বলল,
----লিসেন, আমার এতো ফালতু সময় নেই যতসব। বলে আমাকে দরজার সামনে থেকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। আরিশ।কষ্ট লাগে খুব কেমন ব্যবহার টাই না করছে আমার সাথে।আমি একাই যাবো।

আমি সুন্দর একট লাল খয়েরী শাড়ি পরে নিচে নামলাম। আরিশ তখন হলে বসে কাজ করছিল। আমাকে দেখে চোখের চশমা খুলে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে রইল। আমি ভাব দেখিয়ে নিচে নেমে তার সামনে দিয়ে  চলে আসলাম তাকালামো না। কেন তাকবো? তাকাবো না। মোটেও না। বলে তাও আড় চোখে তাকালাম। উনি তাকিয়েই আছেন।

বাহিরে বের হয়ে দেখি রিয়ান ভাইয়া গাড়িতে উঠছেন।
---ভাইয়া। টিনার বার্থ ডেতে যাচ্ছেন?
----হুম..! তুমি?
----হে।  
----একা যাচ্ছো? ভাইয়া কই..!
আমি মলিন হেসে বললাম,
----কাজ করছেন।
----চলো তাহলে এক সাথে যাই।
----আচ্ছা।

এদিকে বারিশ এখনো হা হয়ে বসে। ইস তার বাবুইপাখিকে কত যে সুন্দর লাগচ্ছিল।
----কি করছিস বাবা?
বারিশের ভাবনায় ছেদ পরে ফুপির কথায়।
মুচকি হেসে বলল,
----অফিসের কাজ করছিলাম। কিছু বলবে?
ফুপি আমতা আমতা করে বলল,
----কি ভাবে যে বলি?
----টাকা লাগবে ফুপি।
----না না কি যে বলিস। মাসের শুরুতে যা দিস তাও থেকে যায় আমার কাছে।
----তাহলে?
-----বউ মার বেপারে বলতাম,
বারিশ এবার কাজ রেখে ফুপির দিক তাকায়।
ফুপি নড়েচড়ে বসে বলে উঠে,
----ছোট থেকে মানুষ করেছি তোকে,  ভাল, মন্দ সুখে,  দুঃখে অসুখে বিসুখে তোর সাথেই ছিলাম। রিয়ান থেকে কমট ভালবাসি নি তোকে।
----ফুপি কি বলতে চাও সোজাসুজি বলতো?
----বলতাম না তোকে, তুই আমার ছেলের মতো। সব মা তার ছেলের ভালই চায়।বিশ্বাস করবি কিনা জানি না বাপু।
----এখনো তো বললেই না ফুপি বিশ্বাস তো পরের কথা।
ফুপি এবার আঁচল ভাল করে টেনে বলতে লাগে,
----মানে, তুই বাসা না থাকলে কুহু রোজ বের হয়ে যায়।
বারিশ এবার ফাইটলে নজর দিয়ে বলতে লাগে,
---যানি সেটা ওই ভার্সিটিতে যায়।
----তা আমি যানি তা বলি নি মাঝে যখন তুই বাসায় থাকিস না। তখন এবাবেই সেঁজে গুজে বের হয়ে যায় কুহু।
বারিশ ভ্রু দুটো কুঁচকে বলল,
----ফুপি কি বলতে চাইছো সরাসরি বলোতো..!
ফুপি এবার ভয়ে ভয়ে বলল,
----মানে প্রায় তুই বাসায় না থাকলে কুহু এভাবে সেজে গুজে বের হয়ে যায়। রাতে একটি ছেলে নামিয়ে দিয়েও যায়। তোকে বলতাম না। হয়তো জানিস সব তুই। কিন্তু আমরা তো সমাজে থাকি বিয়ের পর জামাই ছাড়া রাত বিরাতে কোনো পর পুরুশের সাথে মেলা মেশা ভাল দেখায় না তাই বললাম। তোরা আধুনিক হতে পারিশ।বউকে এক এদিক ওদিক ছাড়তে পারিস,  কখন কি করছে বলাতো যায়।আজ যে গেল হতেো পারে অন্য কার সাথে..! যাই হোক তোরা ডিজিটাল যুগের কিন্তু সমাজ এখনো সেকেলেই আছে বাবা।
ফুপি এবার বারিশের দিকে তাকালো। বারিশ হাত মুষ্ঠি বদ্ধ করে আছে। কপালের রগ ফুলে উঠেছে। কিন্তু কিছু বলছেন না। তিনি যে আরো সাহস পেলেন। এবং কুহুর নামে যাতা বলে গেলে উঠে গেলেন তিনি।
বারিশের মনে ফুপির বলা কথা গুলো ঘুরছে। সে কি করবে? সে তো তার বাবইপাখিকে চিনে..! সে তো এমন না..! আর ফুপি? তার কি লাভ মিথ্যা বলে? মাথা ফেটে যাচ্ছে বারিশের। মনের মাঝে না চাইতেও সন্দেহ সৃষ্টি হচ্ছে তার।কি করবে?
বারিশ রেডি হয়ে বের হয়ে যায়। উদ্দেম্য টিনার বার্থ ডে পার্টি।

পার্টিতে এসেছি অনেকক্ষণ। টিনা একটু পর কেক কাটবে। টিনা আর রিয়ান জুটি কি নুন্দর লাগচ্ছে। খুব মিস করছি বারিশকে।  ইশ্ এখন আমার পাশে থাকলে কত ভাল হতো। সবাই বলতো মেইড ফর ইচ আদার। এসব বলে নিজেই হেসে দিলাম। তখন পিছন থেকে কেউ বলল,
----ও মা কুহু যে??
পিছনে ফিরে দেখি আশিক আর শুভ ভাইয়া দাড়িয়ে।আমি তাদের দেখে হেসে বললাম,
----কেমন আছো শুভ ভাইয়া? আর আশিক তুমি এভাবে মুখ ভার করে কেন আছো।
শুভ ভাইয়া হাসতে হাসতে বলল,
----মজনুর মন ভেঙ্গেছে তাই।
আমি চুপ করে গেলাম। কারণ আশিক আমাকে লাইক করতো। কতবার প্রপোজ ও করেছে।কিন্তু হে বলতে পারিনি। কারণ মার মনে প্রাণে জুরে শুধু ইউসুফ ওরফ বারিশ ছিল।

আমি আর আশিক একটা টেবিলে বসে আছি,
----তা কেমন আছো কুহু.!
আমি হেসে বললাম,
-----ভাল তুমি?
-----ভাল থাকার কারণ তো নেই আমার কাছে কেমনে ভাল থাকি?
-----দেখ আশিক হয়তো যেন গেছো আমার বিয়ে হয়ে গেছে। এমন কি আমার বাসায় কাউকে বলিনি এখনো। এখন আর ওয়েট করো না। ইনা তোমাকে অনেক ভালবাসে।তার লাইফে ফিরে যাও।
তখনি আচমকা আশিক আমার হাতে হাত রেখে
বলতে লাগে,,
----ছেড়ে দেও তোমার হাজবেন্ডকে কুহু। আমি তার থেকে তোমাকে অনেক ভাল বাসবো, আর অনেক সুখে রাখবো।
আশিকের এমন কাজে অবাক হয়ে যায়। সে হাত ছাড়াতে ছাড়াতে বলে উঠে,
-----আশিক পাগলামি করো না। আমি আমার বরকে অনেক ভালবাসি। দুনিয়েতে না শুধু তাকে আমি ইহো কাল পরকাল সব জায়গায় তাকরই চাই। বলে উঠে চলে আসলাম।এ ছেলেটা দিনদিন পাগল হয়ে যাচ্ছে।।

পার্টি শেষের দিকে এবার যাওয়া পালা। কিন্তু বিপত্তি ঘটলো এখানে,  টিনা আর রিয়ান আজ একে অপরের সাথে আলাদা টাইম স্পেন্ড করবে।তাই চলে গেল তারা। রাত একটা ছুই ছুই। ড্রাইভার কে কল দিয়ে বলে দিয়েছিল রিয়ান আসার জন্য।কিন্তু গাড়ি অর্ধেক রাস্তায় নষ্ট হয়ে যাওয়াতে আসতে পারছে না।আর বারছে। মোটামোটি সবাই চলে গেছে।তখন আশিক ও বের হচ্ছিল তার বাইক নিয়ে।তখন টিনা বলল,
----আশিক ওকে একটু পৌছে দেবে?
আশিক কিছু বলার আগেই আমি বললাম,,
-----নারে দোস্ত আমি যেতে পারবো টেক্সি ডেকে দিলেই হবে।
----পাগল হইসিস এত রাতে তোকে একা ছাড়বো।
তখন রিয়ান বলল,
----ভাবি ও তো তোমার ছোট বেলার ফ্রেন্ড সমস্যা কি চলে যাও।
সবার জোরা জুরিতে আশিকের বাইকে উঠলাম।

অন্দকার রুমে বসে আছে বারিশ। মাথার মাঝে তখনের সিন ভাসচ্ছে। কুহুকে একটি ছেলে হাত দরে বলছে, ভালবাসি, আর আরিশকে ছবড়ে দিতে।তখন টিনার পার্টিতে গিয়ে এসব দেখে মাথা নষ্ট হয়ে গেছে তার।কুহুকে এতটা ভালবাসা এতটা স্বাধীনতা কি তাকে ছেড়ে যাওয়ার জন্য দিছে নাকি, তাকে ফেলে অন্য কাউকে ভালবাসার জন্য? এই জন্যই কি তাকে কুহু আপন করে নিতে পারে না..!মাথাটা ফাকা ফাকা লাগচ্ছে বারিশের।তাই বেলকনিতে গেল সে।

বাইক এসে গেটের সামনে দার করালো আশিক কুহু সাথে সাথে আসি বলে চলে আসতে নিলো। তখনি আশিক হেচকা টান দিয়ে জড়িয়ে ধরে কুহুকে। এতে কুহু ভয় পেয়ে যায়।সাথে সাথে নিজেকে ছাড়াতে ব্যস্ত হয়ে পরে সে। তখন আশিক বলে,
----ভাল থেকে কুহু। লাভ ইউ।
বলে ছেড়ে দিল। কুহু আর দারালো না দৌড়ে ভিতের চলে গেল।ভয়ে বুক ধুকধুক করতে সে।

কুহু রুমে ঢুকতেই দেখে আরিশ সোফায় পা তুলে বসে আছে। তার চোখ, মুখে হিংস্রতার ছাপ।এ রূপ সে দেখছিল সেই ১ মাস আগে তাকে যখন বিয়ে করে চিল বারিশ।

বারিশের এই রূপ দেখে মেনের মাঝে ওজানা ভয়ের জানান দিচ্ছে। ভয়ে ঢুক গিলে  তার সামনে আসতেই বারিশে গম্ভীর ভাবে প্রশ্ন করলো,
----রাত কটা বাঁজে??
আমি ভয়ে ভযে বললাম,,
----সরি।  আসলে সব ফ্রেন্ডসদের সাথে অনেক বছর পর দেখা হলো তাই..!!
বারিশ এবার হুংকার ছেড়ে বলল,,
----আমি জিগ্যেস করছি কটা বাঁজে?
আমি বারিশের এমন হুংকারে কেঁপে উঠি।মিন মিন করে বলি,
----পনে দুটা।
বারিশ এবার উঠে আমার সামনে এসে দাড়ালো। আমি ভয়ে দু কদম পিছিয়ে যেতেই সে আমার বাহু চেঁপে ধরে তার সামনে এনে বলে লাগে,,
Author, Publisher & Developer

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

উফ!
মনে হচ্ছে আপনার ইন্টারনেট সংযোগে কিছু সমস্যা আছে। অনুগ্রহ করে আগে আপনার ইন্টারনেটের সংযোগ ঠিক করুন এবং তারপর আবার ব্রাউজিং শুরু করুন৷
AdBlock সনাক্ত করা হয়েছে!
আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি আপনার ব্রাউজারে অ্যাডব্লকিং প্লাগইন ব্যবহার করছেন৷ আমরা আপনাকে আপনার অ্যাডব্লকিং প্লাগইন বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করছি, কারন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমরা যে রাজস্ব আয় করি তা এই ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।