আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুগ্রহ করে গল্প সম্বন্ধে আপনার মতামত অবশ্যই প্রকাশ করবেন। আপনাদের মতামত আমাদের এই ছোট প্রয়াসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগায়। শীঘ্রই আরও নিত্য নতুন গল্প আপডেট আসছে, সঙ্গে থাকুন। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখক/লেখিকা'র নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত গল্পের ডায়েরি’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখক/লেখিকা'র কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় গল্পের ডায়েরি কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ করলে তা কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

অচেনা অতিথি - পর্ব ১২ - নাফিসা মুনতাহা পরী - ধারাবাহিক গল্প


- " ভয় করলে কি আপনি খুব খুঁশি হতেন! আমি কিন্তু  আপনাকে ভয়-টয় করিনা। তাই আমার কাছে একদম মাতব্বরি করবেন না। তিতির মাহাদের আরো কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বলল-"   আমি তো  চাই  মাহাদ নামক প্রেম কারাগারে সবসময়  বন্দী থাকতে। "


-" মাহাদ কিছুক্ষন কিছু একটা ভেবে বলল-"  এভাবেই কি কাছে কাছে সবসময় থাকবা তিতির! ছেড়ে যাবেনা তো? মেয়েরা তরল পদার্থ। যে পাত্রে তাকে রাখা হয়ে সেই পাত্রেরই আকার ধারন করবে। দেখা গেল তুমি অনেক বড় হলে তারপর মাহাদ কেই ভুলে গেলে...... "


-" আমি কখনো আপনাকে ছেড়ে যাবোনা। আপনাকে আমার মনে বেঁধে রাখবো সবসময়।
আপনি হয়তো জানেন না আপনার ভালবাসা আমাকে  কোথা থেকে কোথায় নিয়ে এসেছে।  এই ভালবাসা আমাকে সব কিছু মনের কথা প্রকাশ করাইতে শিখিয়েছে। আগে আমার জিবনটা সাদা-কালো ছিল আপনি আমার জিবনে এসে পুরোটা রঙ্গীন করে দিয়েছেন। আপনি আমাকে কখনো ভুলে যান না ; আর যদি কখনো ভুলে যান  তাহলে আমার পৃথিবীতে নিঃস্বাস ফেলার মত কোন জায়গা থাকবে না। আমি মরেই যাবো।"


-"  আযান হচ্ছে তিতির ; যাও   গিয়ে নামায পড়ো বলেই মাহাদ ছাদের অন্য প্রান্তে চলে গেল। তিতির নেমে গেলে মাহাদও একটু পড়ে নেমে যায়। মাহাদ চায়না তিতির সবার সামনে অসম্মানিত হোক। মাহাদ তিতিরকে একটা সুন্দর জিবন দিতে চায়। তাই সবকিছু সাবধানে কন্ট্রোল করে..... নিজের আবেগ ও বাদ যায়না এতে।"

♦♦♦♦♦♦♦♦

-"  কামরান আহনাফ তার মায়ের কাছে বসে আছে। কামরান একটা ডিসিশন নিয়েছে।  রেজওয়ান কে বিজনেস্ এর সব দায়িত্ব দিয়ে ইলেকশনে দাড়াবে। এলাকায় তার একটা প্রচুর সুখ্যাতি আছে। সেই ভরসায় মন স্থির করে ফেলেছে সে ইলেকশনে দাড়াবে। তাছাড়া তার বাবা আগে এলাকার চেয়ারম্যান ছিল। 
সেই কথাটায় বাতাসি বেওয়াকে জানাতে এসেছে। কিন্তু বাতাসি বিবির মুখে কোন কথা নাই।কাঠপুতলির মত কামরানের দিকে চেয়ে রয়েছে।

আম্মা আপনাকে কিছু বলছি তার জবাব দেন!


-" কি আর জবাব দিব তোরে! তোর যে লাবীবাকে আর ভাল লাগেনা সেটা আগে বললেই পারতিস। তাহলে লাবীবা সংসার ছেড়ে এতদিনে চলে যেত। খামোকা দুইডা সন্তান আর পয়দা করতে হত না।"


-" আম্মা আপনাকে কোন ভাল কথা আর বলাই যায়না। আপনি এখন কি সব উল্টাপাল্টা বকেন সবসময়। দেখছি কোন কথায় মুখে আটকায় না।
এখানে  লাবীবাকে টেনে আনলেন কেন?"


-" তোর বাপ ২ বার মেম্বার আর ৩ বার চেয়ারম্যান হইছে। খুব সুখ্যাতি কিন্তু তার চরিত্র নষ্ট ছিল। সে মাঝে মাঝে নষ্ট মাইয়াদের লগে থাকতো। আমার জিবনডা ত্যানা-ত্যানা করে ছাড়ছে তাই আমি বাঁইচা থাকতে তোরে ভোটে দাড়াতে দিমুনা। তুইও একই ক্যাম করবু। বেচারী লাবীবার জিবনডা নষ্ট হয়ে যাইবো তাই এসব আশা ছাইড়া দিয়ে যা কাজ করছিস এতদিন  সেটাই গিয়ে কর।"


-" মায়ের কথা শুনে অত্যান্ত লজ্জায় পড়লেন মো. কামরান আহনাফ। তার বাবার চরিত্র যে এমন ছিল এই প্রথম তিনি  শুনলেন  তার জন্মদাত্রী মায়ের কাছ থেকে। এমনও দিন দেখতে হলো কামরানকে! 

আম্মা কি সব বলছেন! আপনার মাথা পাগল হয়ে যায় নি তো!


-" এবার বাতাসি বিবি চরম ক্ষেপে গেল। আমি পাগল! 
তুই পাগল, তোর বাপ পাগল, তোর বোন দুইডা পাগল, তোর চৌদ্দ গোষ্টী পাগল। আমি আর মাহাদ ছাড়া এই বাড়ির সগ্গলে পাগল। আমি পাগলা গারদে আর থাকুম না।"


-" এবার কামরানই ভয়ে চুপসে গেল। তার আম্মাজান যে এতটা রেগে যাবে তিনি মোটেও চিন্তা করে দেখেননি। ছোট থাকলে পিঠে এতক্ষন বেতের বারি পড়ত। এখনো যে পড়বেনা তার কোন ভরসা নাই। কামরান এদিক ওদিক চোখ বুলিয়ে দেখল তার আম্মাজানের হাতের কাছে কিছু আছে কিনা। এই বয়সে আম্মার হাতে মাইর খাওয়া
 মান- সম্মানের ব্যাপার।  পাগলের কথা যে কোন দুঃখে বলতে গেছিল সেটাই ভাবছে কামরান।

আম্মা বাদ দিন তো এসব কথা!  আমার সব কিছু ঠিক হয়ে গেছে তাই এখন আমি ফিরতে পারবোনা। 

আর শোনেন..... এগুলো কথা যার তার সামনে বলবেন না। নিজের স্বামীর বিষয় এসব কথা যে বলছেন ; আপনার কি বিবেকে বাঁধছে না?"


-" থোহ্ তোর বিবেক। কেন তোর বুঝি লজ্জা লাগছে। এতই যদি লজ্জা পাস তাহলে লাবীবার শাড়ী ফিন্দে মাথায় ঘোমটা দিয়ে মুখ লুকা নতুন বউয়ের মত। 

উমহ্  বাপের জন্য দেহি দরদ উছলে পড়ছে। যা চোখের সামনে থাইকা।

 আর একবার যদি বাপের পক্ষে কথা কস তাহলে ৪ মাথার মোড়ে গিয়ে কুত্তার পিঠে চড়ে ভাঙ্গা টিন পিটিয়ে তোদের কেলেঙ্কারি বিলিয়ে বেড়ামো আর মুড়ি বাতাশা ছিটামো। তারপর তোদের ইজ্জত কোথায় থাকে সেটা আমিও দেখমু।"


-" কামরান বাতাসি বেওয়ার কথা শুনে তাজ্জব বনে গেল আর  মহাঝামেলায় পড়ে গেল।

 আম্মা আপনি  থাকেন আপনার কথা নিয়ে  বলে উঠে গেল কামরান। তার মা যে লাষ্টে এমন কথা বলবেন তিনি নিজেও ভাবতে পারেননি। দ্রুত বাতাসি বেওয়ার রুম থেকে বের হয়ে এলেন।

অন্য দিকে বাতাসি বেওয়া বাসা মাথায় তুল নাচাচ্ছে। যা মুখে আসছে সব বলে কামরানের বাবাকে ধুয়ে দিচ্ছে।
কামরানের বাবা ইমতিয়াজ চেয়ারম্যান যদি একবার এসব কথা আজ শুনতে পেত তাহলে একটা মাইরও বেকার যেত না; সব বাতাসির পিঠে পড়ত। ভাগ্গিস উনি মৃত ছিলেন।"


-" কামরান!  মা ওমন করে চিল্লাচাটি করছে কেন রে  ?(রুপালী)


-" আপনি গিয়েই দেখেন না! আপনার মায়ের কান্ড কারখানা। মানুষ এত কথা বলে? আল্লাহ্ জানে তার সাথে আমার কি শত্রুতামি...........!"


-" আচ্ছা আমি দেখছি বলে রুপালী ওর মায়ের রুমে চলে গেল। গিয়ে দেখল তার আম্মাজান মুখদিয়ে কথার ফুলঝুরি বের করছেন আর সাবিনা দাড়িয়ে থেকে মনযোগ সহকারে খুটে খুটে  সব কথা শুনছে।

আম্মা আপনি দেখছি আর মান সম্মান আমাদের রাখবেন না  বলেই রুপালী সাবিনাকে একটা ধমক দিয়েই বলল-" ঐ এখানে কি! তামসা দেখছিস!কাজ নাই তোর? যা কাজে.........

সাবিনা রুম থেকে বের হতেই রুপালী তেড়ে আসল বাতাসি বেওয়ার উপর।"


-" এবার বাতাসি বেওয়া ভয়েই থেমে গেল। রুপালীর ভাব-সাব দেখে বেশ ভয় পেয়ে গেছে। শেষে এই বৃদ্ধ বয়েসে মেয়ের হাতে মাইর খেতে হবে নাতো!"


-" রুপালী বাতাসি বেওয়ার কাছে এসে শুধু ওর শাহাদত আঙ্গুল তুলে কঠিন চোখে ইশারা করেই বলল-" আম্মা আপনার অনেক কথা শুনছি কিন্তু আপনি আজ আব্বা জানের ইজ্জতের উপর হামলা করেছেন। আর আমরা তার সন্তান হয়ে চুপ থাকবো? মোটেও তা ভাববেন না! আজ আমার মৃত আব্বাকেও ছাড়লেন না! আব্বা মরে গিয়েই ও দেখছি শান্তি নাই। আর একটা কথা যদি বলছেন তাহলে কিন্তু আপনার খবর আছে।

এবার যেন আর একটা কথাও  না শুনি?"


-" বাতাসি বেওয়া শুধু চুপ করেই রইলেন। রুপালী চলে গেলে বাতাসি গুন গুন করে কাঁদতে লাগল। বাতাসির মেজাজ দিন দিন খিটখিটে হয়ে যাচ্ছে। শুধু ঝাল লাগতেই থাকে বাতাসির।"

♦♦♦♦♦♦♦♦

-" মৌ রাতিশাকে ফিডার খাওয়াচ্ছে এমন সময় রেজওয়ান রুমে ঢোকে।  রেজওয়ান কে খুব খুশি খুশি দেখাচ্ছে। হয়ত এতদিনে ওর নিজের স্বপ্ন পুরুন হতে চলেছে। 
মৌ কি করো?"


-" আমি কি করি না করি সেটা তোমার না জানলেও চলবে। দুদিন পর কথা বলতে আসছে। মৌ রাতিশাকে সুয়ে দিয়ে চলে যেতেই রেজওয়ান এসে মৌয়ের সামনে দাড়াল।"


-" স্যরি মৌ ঐ দিন তোমার সাথে ওমন ব্যবহার না করলেও চলতো। তোমার সব কথা আমার শোনা উচিত ছিল। আমি সত্যিই খুব দুঃখিত।"


-" আমার যা শাস্তি পাওয়ার কথা আমি পেয়ে গেছি। আমার কিছু ভাল লাগছেনা। যেই স্বামী সব কিছু বাচ-বিচার না করেই স্ত্রীর গায়ে হাত তোলে তার থেকে ভাল কিছু প্রত্যাশা করা যায় না। সরো বলেই মৌ চলে গেল রুম থেকে।"


-" রেজওয়ান রাতিশার কাছে গিয়ে বলল -" মাই প্রিন্সেস তোমার বাবা তোমাকে জিবনে অনেক কিছু উপহার দিবে। আমার বাবা আমার জন্য কিছু করতে পারেনি; যা করেছি আমি আমার মেধায় করেছি। কিন্তু আমি তোমার জন্য অনেক কিছু করবো আমার মা।
রাতিশা  রেজওয়ানের কথা বুঝল কিনা সেটা বোঝা গেলনা। শুধু বাবার মুখের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রয়েছে আর হাত দিয়ে বাবার মুখটা বার বার ছোয়ার চেষ্টা করছে।"


-" রেজওয়ানের ছোট বোন রুমকি বাসায় এসেছে। মেয়েটা যথেষ্ট সুন্দরী। অনেক স্মার্ট। রুপালী মেয়ে বলতেই অজ্ঞান।  মেয়ে যাই বলুকনা কেন সব কিছুই তার কাছে জায়েয মনে হয়। রুমকি কিছু বলার আগেই সব কিছু ওর চোখের সামনে হাজির করছে রুপালী।

রুমকি কপাল জড়িয়ে ওর মাকে জিঙ্গেস করল-"আম্মু বাসায় একটা মেয়ে দেখলাম সে কে?"


-" ও আমার ছোট বোন  ।  ওর নাম তিতির।
কেমন আছো রুমকি! দুদিন আগেতো তোমার আশার কথা ছিল।(মৌ)


-" এজনের জায়গা হয়না তার মধ্য দেখছি অন্যজনকে এনে বাসায় ঠাই দিয়েছে। আমার ভাইয়া কি দানশালা খুলে রাখছে যার জন্য আরও একজনকে ঘাড়ে নিয়ে আসছো?(রুমকি)


-" রুমকি কি বলছিস! ও অনেক মেধাবী মেয়ে।  ওর সব খরচ কামরান আর মাহাদ দেয়। এখানে রেজওয়ানের কোন খরচ হয়না। অযথা না জেনে কিছু বলতে নেই মা।(রুপালী)


-" মাহাদ ভাইয়া দেয় মানে? মাহাদ ভাইয়া ওর দায়িত্ব নিবে কেন? ঐ মেয়েটার সাথে মাহাদ ভাইয়ার কি সম্পর্ক! রুমকি এমন করে মৌয়ের দিকে তাকাল যেন মনে হয় ঐ চোখ দিয়েই মৌকে ভষ্ম করে ফেলবে। "


-" রুমকির জ্বলা দেখে মৌ পিছন ফিরে একটা মুচকি হাঁসি দিয়ে মনে মনে বলল-" তোর তেজ এবার কত আছে মাহাদের উপর ঝাড়িস। আর মাহাদ তোর কি হাল করে এবার টের পাবি ময়না। বিয়ের পর থেকে আমাকে অনেক জ্বালাইছোস   এবার তিতিরে গায়ে হাত দিয়ে দেখিস। তোর হাত আর হাত থাকবেনা। মিস পেয়ারী ননদিনী তোমার সতীন  চলে আসছে এই বাসায়। এবার আমি মজা করে পিকচার দেখবো। 

মুভির নাম " মাহাদ তুমি কার?"

বোন তিতির তুই আমার কাছে এসে যে কতবড় উপকার হইছে  সেটা তোরে বুঝাইতে পারবোনা। তোর পা ধুয়ে জল খাওয়া উচিত আমার। মৌ খুঁশি মনেই রুম থেকে বের হয়ে গেল।"

♦♦♦♦♦♦♦♦

-" মাহাদ বাতাসি বিবির কাছে বসে আছে আর বাতাসি বিবি বসে মাহাদের সামনে ছিচ ক্যাদুনি কেঁদেই চলছে। মাহাদ রিতিমত বিরক্ত হয়ে যাচ্ছে তার দাদীর ব্যবহারে কিন্তু কিছু বলছেনা।
বাতাসি তোমার কি হইছে একটু বলবা! না আমি এখান থেকে চলে যাবো? "


-" সোয়ামী♥ তুমিও আমায় বুঝলা না? ছেলে মেয়ে আমার শত্রু হয়ে গেছে। রুপালী আমার দিকে তেড়ে আসছে। আমাকে হয় আমার বাপের বাড়িতে রাইখা আয় না হয় বৃদ্ধাশ্রমে পাইঠা দে। আমি এহানে থাকুম না। এখনো ভাই ভাস্তারা বাঁইচা আছে আমাকে আর ফেলে দিবেনা।"


-" মাহাদ মুচকি একটা হাঁসি দিয়ে বলল-" কখন যাবা বলবা তো!  আমি তোমারে সসম্মানে রেখে আসবো। এখুনি তাহলে রেডী হও বাতাসি! আমি তোমায় রেখে আসি।"


-" বাতাসি বিবি এবার থেমে গেল। সত্যই কি মাহাদ ওরে রেখে আসবে? বাতাসি চুপ করে রইল।"


-" কি হল চুপসে গেলা কেন! ওঠো ওঠো জলদি রেডী হয়ে নাও তোমায় রেখে আমি অন্য জায়গায় চলে যাবো। 
বাতাসি বিবি ঐ ভাবেই স্থির হয়ে বসে আছে।

বাতাসি ডারলিং তোমার সুখ বেশি হয়ে গেছে তাই দুঃখের ভাত খেতে মন চাচ্ছে। যাও বৃদ্ধ বয়সে ভাই-ভাস্তার ঠাঙ্গানি খেয়ে শেষ জিবন পার করো। আমারে যতটা আদর করে সোয়ামী♥ বলে ডাকো এই ডাকটা যদি ইমতিয়াজ বুইড়ারে ডাকতা তাহলে বুইড়া না থাকলে তো কি হয়েছে! তার ভুত এতদিন তোমার সাথে থাকতো।"


-" খবরদার আমার সোয়ামীরে যদি বুইড়া কইছোস তাহলে ভাল হবে না কিন্তু! 
খারাপ হোক ভাল হোক সে আমার সোয়ামী।"


-" আমার পুরুষ সতীনরে বুড়া বলব না তে কি বলবো! ব্যাটা নিজে মরে বেচেঁ গেল আর আমার ঘাড়ে অর্কমা বাতাসিরে চেঁপে দিল! না সেবা করতে পারে না চুপ করে থাকে। শুধু বক বক করে কথা বলতেই থাকে। ইমতিয়াজ তোমার বউডা আমার জিবন কয়লা বানিয়ে ছাড়লো।

বাতাসি,,,, আজ ইমতিয়াজ বুইড়াকে যেভাবে ধুয়ে দিছো আমার তো মনে হচ্ছে বুইড়া আল্লাহ্ রে ডেকে ডেকে বলছে আল্লাহ্ কবরডা একবার ভেঙ্গে দাওনা। আমি একবার উঠে মনে সুখে বজ্জাত বাতাসির পিঠের ছাল তুলে আসি। আল্লাহর জন্য আজ তুমি নিশ্চিত  বাঁইচা গেছ বাতাসি। তানাহলে আমিও ইমতিয়াজ চেয়ারম্যানের হাত থেকে তোমাকে বাঁচাতে পারতাম না।

 মাহাদ এবার বুঝল কাজ হয়েছে। আপাতত দাদারে নিয়ে অকথ্য কথাবার্তা অন্তত ১মাসেও বলবেনা। 

বাতাসি যদি আর একবার দেখছি এমন কথাবার্তা বলো ইমতিয়াজরে নিয়ে তাহলে ইমতিয়াজের ভুতকে তোমার সাথে থাকার এবার পাঁকাপাঁকি ব্যবস্থা করে দিব। এজন্মেও তোমায় ছাড়বেনা। তাই হুস করে কথা বলবা এবার। 

এমন সময় মাহাদের ফোনে কল আসতেই মাহাদ ফোনের স্কীনে দেখল ফুয়াদ ভাইয়ার কল।
মাহাদ ফোন রিসিব করে সালাম দিতেই নিধির গলা ফাটানো কান্নার  চিৎকার শুনতে পেল।"


-" মাহাদ নিধির সাথে কথা বলতো! মেয়েটা দুদিন ধরে থেকে-থেকেই কেঁদে উঠছে তোর জন্য। মনে হয় ওর বাবা আমি না তুই ওর বাবা।"(ফুয়াদ)


-" চাচ্চু তুমি আমাকে  না বলে চলে গেছ কেন? আমার  বুক ধপপড় করছে। তুমি এখুনি আসো বলে ফুফিয়ে কেঁদে উঠল নিধি।"


-" কই ধপপড় করছে মা বলেই  মাহাদ বেড থেকে উঠে বাতাসির রুম থেকে বের হতেই রুমকির সাথে ধাক্কা খেতে খেতে আর খেলনা। মাহাদ নিজেই সরে গেছে। তারপর নিধির সাথে কথা বলতে বলতে চলে গেল। "


-" ভাইয়া কেমন আছেন! কিন্তু মাহাদ উত্তর না দিয়েই চলে গেছে। যেটা রুমকির জন্য অত্যন্ত অপমান জনক একটা ঘটনা। রুমকি রাগে ফায়ার হয়ে বাতাসির রুমে ঢুকল।"


-" তুই কখন আইলি!"(বাতাসি)


-" কেমন আছো নানী আপি? এইতো একটু আগে আসছি। তুমি নাকি আম্মুর সাথে ঝগড়া করেছো! এমন কেন করো আম্মুর সাথে?"


-" তোর মা যখন এখানে আসছে তখন তুই ওর পেটে। আজ ২১ টা বছর হল ওরে কত খেদমত করে রাখছি আর সে কিনা আমার দিকে তেড়ে আসে! তোর বাপতো অন্য মাইয়ার লগে ঠিকি সংসার করছে তারে গিয়ে কিছু কইতে পারেনা! আর আমার সাথে এরকম করে ক্যান? ছাওয়াল পাওয়াল পয়দা করে দেখছি আমি ভুল করছি।"


-" বাতাসির কথা শুনে রুমকি আরো চেতে উঠল। তুমি  আবার ঐ বজ্জাতটার কথা বলছো! মন চাচ্ছে এখুনি তোমার গলা চেঁপে ধরি। তোমার কাছে আসাটাই সব থেকে আমার বড় ভুল। সব সময় শুধু প্যাঁচাল পাড়তেই জানো।"


-" তুই কার জন্য বাসায় আইছোস সেটাও আমি ভাল করেই জানি। যা এহান থাইকা। যে কদিন এহানে থাকবি তোর মুখও আমাকে দেখাবি না।
রুমকি দ্রুতই বের হয়ে গেল বাতাসির রুম থেকে। 

ফউন্নি মাইয়া বাপের ঘরে জায়গা পায়নি আর আমারে কিনা গলা চাইপা ধরবে। গলা চেঁপে ধরেই দেখনা!  তোর চোপা যদি না ভাঙ্গছি তাহলে আমার নামও বাতাসি নয়।

♦♦♦♦♦♦♦♦

-" মাহাদ ছাদে এসে নিধির সাথে কথা বলছে। আম্মু এখন তো অনেক রাত হয়েছে গেছে এখন কিভাবে যাবো। তুমি চাইলে কাল আমরা দেখা করতে পারি। তোমাকে নিয়ে অনেক জায়গায় ঘুরবো। এখন তো যেতে পারবোনা মা!"


-" কাল সত্যি আসবা তো!(নিধি)


-" আমার আম্মাজান আমায় স্মরন করেছে আর আমি যাবোনা! অবশ্যই যাবো মা। প্রায় দেড় ঘন্টা শুধু নিধির সাথে কথা বলল মাহাদ। কত্ত তার প্রশ্ন। কি করেছো, কি খাচ্ছো।  চাচ্চু তোমার কাছে আমায় কবে নিয়ে যাবা। আমি তোমার বাসায় গিয়ে থাকবো সহ নানা কথা।

নিধির কথা গুলো শুনে মাহাদ বড়সহ একটা ঢোঁক গিলে নিজের চোখের জল কন্ট্রোল করল। 
মা আর কিছুদিন অপেক্ষা করো আমি তোমাকে আমার বাসায় নিয়ে আসবো।

কথা শেষ করে মাহাদ প্রচন্ড মন খারাপ নিয়ে নিচে নামল। 

অনেক রাত হয়ে গেছে তখন। কিছু না খেয়ে রুমে ঢুকতেই রুমকি এসে পিছন দিক থেকে জড়িয়ে ধরল মাহাদ কে।


-" এমনি মাহাদের মন প্রচন্ড খারাপ তার ভিতর এমন কান্ডে মাহাদ অত্যান্ত রেগে গেল। রুমকির কাছ থেকে মাহাদ নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়েই কষে ঠাশশশ্ করে একটা থাপ্পড় মারল রুমকির গালে।
Author, Publisher & Developer

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

উফ!
মনে হচ্ছে আপনার ইন্টারনেট সংযোগে কিছু সমস্যা আছে। অনুগ্রহ করে আগে আপনার ইন্টারনেটের সংযোগ ঠিক করুন এবং তারপর আবার ব্রাউজিং শুরু করুন৷
AdBlock সনাক্ত করা হয়েছে!
আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি আপনার ব্রাউজারে অ্যাডব্লকিং প্লাগইন ব্যবহার করছেন৷ আমরা আপনাকে আপনার অ্যাডব্লকিং প্লাগইন বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করছি, কারন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমরা যে রাজস্ব আয় করি তা এই ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।