আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুগ্রহ করে গল্প সম্বন্ধে আপনার মতামত অবশ্যই প্রকাশ করবেন। আপনাদের মতামত আমাদের এই ছোট প্রয়াসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগায়। শীঘ্রই আরও নিত্য নতুন গল্প আপডেট আসছে, সঙ্গে থাকুন। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখক/লেখিকা'র নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত গল্পের ডায়েরি’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখক/লেখিকা'র কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় গল্পের ডায়েরি কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ করলে তা কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

প্রিয়তা (পর্ব ০৭)


লাল বেনারসি পড়ে বধূ সেজে বসে আছে আরশি।খোঁপায় আজো কাঠগোলাপ গাঁথা। নিজেকে আয়নায় দেখে লজ্জায় মিহিয়ে যাচ্ছে সে। বাবা -মা থাকলে আজ কতটা খুশি হতেন ভেবেই একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। আয়না থেকে চোখ সরিয়ে ঘড়ির কাটার দিলো দৃষ্টি দিল আরশি।রাত আট টা বাজছে।একটু আগেই আনহার  কাছে জানতে পারল আয়াজ এখনো ফিরে নি।চিন্তিত হয়ে পড়ল আরশি।সেই দুপুরে বারণ করা সত্বেও অসুস্থ শরীর নিয়ে বেরিয়েছে। অনেকবার কল দিয়েছিল কিন্তু রিসিভ করে নি আয়াজ।আবারও কোনো বিপদে পড়ল নাতো ভাবতেই উঠে দাঁড়াল আরশি।তার আর ভালো লাগছে না।কোথায় গেলো তার নায়ক সাহেব?দরজার কাছে যেতেই আনহার দেখা পেলো। 

----ওনি এসেছেন আনহা?
---না। নিশাদ জানিয়েছে ভাইয়া কি জরুরি একটা কাজে বেরিয়েছে।একটু পরেই চলে আসবে।তুমি টেনশন করো না ভাবি।
-----ওনি আসলে আগে আমার সাথে দেখা করতে বলবে প্লিজ। বলবে তার প্রিয়তা তার অপেক্ষায়।

 -----বাহ্!!!! আগে ভাবতাম আমার ভাই তোমার জন্য পাগল।এখন তো দেখছি তুমিও ডুবে ডুবে খুব ভালো বাসছো । (দুষ্টু হেসে বলল আনহা)

---এমন কিছুই না।আসসলে ওওনি অসুস্থত তাই আরকি।(লাজুক হাসল আরশি)

আনহা যেতেই আবারও বসে পড়ল আরশি।ভালো লাগছে না তার আয়াজ কে ছাড়া।মন বলছে নিচে যেতে।আয়াজ কে খোঁজতে।কিন্তু নিচে মেহমান থাকায় যেতেও পারছে না সে।যদি আর আধা ঘন্টার মাঝে নায়ক সাহেব না আসে তবে আমি নিজে যাব ওনাকে খুঁজতে। কথাটা বলে একটা শ্বাস ছাড়ল আরশি।সাথে সাথেই কানে ভেসে উঠল ---"আরশি"।

হাসি ফোটে উঠল মুখে কিন্তু পরক্ষণেই চুপসে গেলো মুখটা।কারণ, তার নায়ক সাহেব কখনো আরশি বলে ডাকে না।পিছন ফিরল সে।মানুষটাকে দেখে স্তব্ধ হয়ে রইল সে।
সুন্দর এক যুবক।লম্বা ৬ ফুট হবে।মুখে তার হাসি।অস্ফুটস্বরে উচ্চারণ করল আরশি,,,,

----ইফাজ ভাইয়া,,
 
মুখের হাসিটা আরো প্রসারিত করল ইফাজ।ধীর গতিতে আরশির কিছুটা দূরত্বে এসে দাঁড়াল সে।

----অন্য কাউকে বিয়ে করে ফেলছিস আমায় নিজের হবু স্বামী বানিয়ে? (তাচ্ছিল্য স্বরে বলল ইফাজ)

মাথা নিচু করে ফেলল আরশি।নিচু গলায় বলতে শুরু করল,,
-----------আমি তোমায় হবু স্বামী বানায় নি ইফাজ ভাইয়া।বরং তুমিই ফোর্স করছিলে আমায় বিয়ের জন্য। 

-----বাহ!!এতো বছর আগলে রাখলাম তোকে আর তুই আমায় ছেড়ে অন্য কাউকে বিয়ে করছিস?আমি তোকে ভালোবাসি আরশি।

ছলছল চোখে মাথা উঁচু করে তাকাল আরশি।তাচ্ছিল্য কন্ঠে বলল,,,
---আগলে রাখো নি তুমি আমায় বরং আশ্রয় দিয়েছ।আর কি বললে?ভালোবাসো?ভালোই যদি বাসতে তবে চালাকি করে আমার বাবার সম্পত্তি নিজেদের নামে করে নিতে না।ভালোই যদি বাসতে তবে মাঝরাতে আমায় রাস্তায় ফেলে দিতে না তোমরা।আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানায় যে তোমার সাথে আমার বিয়ে হয় নি।হলে হয়তো আমি আমার ভালোবাসার মানুষটা কে পেতাম না।

----তুই আমায় ভুল বুঝছিস আরশি।এইসব বাবা -মা করেছে তা আমি মানছি।তুই তো জানিস তারা কেমন?আর যেদিনই দেশে এসেছি সেদিন থেকেই পাগলের মতো খুঁজে বেরিয়েছি তোকে।নিজের হবু বউকে অন্য কারো হতে দেখব ভাবতেই পারি নি।প্লিজ ফিরে চল আরশি।

কথাটা বলে ইফাজ যেই না আরশির হাত ধরতে যাবে তার হাতটা খুব শক্ত করে চেপে ধরল আয়াজ।হিংস্র চাহনি দিয়ে বলে উঠল- ডোন্ট ইউ  ডেয়ার মিষ্টার ইফাজ আহমেদ।শি ইজ মাই ওয়াইফ।ওনলি মাইন।সো ডোন্ট ডেয়ার টু টাচ হার।

আরশি কে নিজের সাথে চেপে ধরল আয়াজ।আয়াজের কথায় বাঁকা হাসল ইফাজ।আয়াজের দিকে তাকিয়ে বলল---
--ডোন্ট বি পেনিক দ্যা গ্রেট স্টার আয়াজ বিন সাদ।
আরশি আপনার ওয়াইফ বা হবু ওয়াইফ যাই হোক তার আগে ও আমার মামাতো বোন।আরশি কে আমি ভালোবাসি কিন্তু তাকে আমি জোর করে চাই না।ও যদি আপনাকে চায় তবে আপনারই হোক।

রহস্যময় হাসি হাসল আয়াজ।ইফাজ কে জরিয়ে ধরে বলল আপনার বোনকে আমি খুব ভালো রাখব শালা সাহেব।সরে আসতে নিয়ে আবারও কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল---
"মৃত্যুর জন্য রেডি হ ইফাজ"
আয়াজ কে শক্তভাবে জরিয়ে ধরল ইফাজ।

---এতোবছর বেঁচে ছিলি। সেদিনও বেচে গিয়েছিস।এখন তিলে তিলে মরার জন্য রেডি হ আয়াজ।খুব জলদি তোর প্রিয়তাকে তোর প্রাণভোমরা কে কেড়ে নিব আমি।(মনে মনে বলল ইফাজ)

গোলাপি একটা শাড়ি পড়েছে আনহা।দেখতে একদম গোলাপি পরী লাগছে নিশাদের কাছে।আনহা এমনিতেই খুব সুন্দর।  শাড়িটা তার সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।বেচারা নিশাদ যেনো আজ চোখের পলক ফেলতেই ভুলে যাচ্ছে। সবার অগোচরে আনহাকে কাছে টেনে নিল সে।খালি কোমড়ে কারো হাতের স্পর্শ পেতেই আঁতকে উঠল আনহা।পাশ ফিরতেই নিশাদ তার গালে কিস করে একরকম পালিয়ে গেলো।হতভম্ব দাঁড়িয়ে পড়ল আনহা।গালে হাত দিয়ে ব্লাশিং করতে করতে বলে উঠল----"ভীতু একটা"।

--------

বাসর ঘরে বসে আছে আনহা।বিস্ময়ে হতবাক সে।কারণ পুরোটা ঘর শুধু সাদা গোলাপ দিয়ে সাজানো হয়েছে।আনহার কাছে সে শুনেছিল আয়াজের সাদাগোলাপ পছন্দ। 
তার ভাবনার মাঝেই দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করল আয়াজ।বাহিরে তুমুল বেগে বর্ষণ হচ্ছে। শীতল বাতাস বয়ে যাচ্ছে রুমে।
আরশির পাশে এসে বসল আয়াজ।মন ভরে দেখে নিল তার লাল টুকটুকে বউকে।তার প্রিয়তাকে।গভীর চুমু একে দিল কপালে।

-----ফ্রেশ হয়ে এসো প্রিয়তা।আর হে,,টেবিলের উপর  ব্যাগে শাড়ি আছে।ঐটাই পড়ে আসবা।

উঠে দাঁড়াল আরশি।শাড়িটা নিয়ে পা বাড়াল ওয়াশরুমে।আরশি যেতেই বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়াল আয়াজ।বৃষ্টির পানি এসে ভিজিয়ে দিয়ে যাচ্ছে তাকে।আজ নিজেকে সুখী লাগছে তার। কিন্তু অজানা এক ভয়ও গ্রাস করছে।প্রিয়তাকে হারানোর ভয়।কি আশ্চর্য একজন মাফিয়া হয়েও ভয় পাচ্ছে সে?যার  কাউকে মারতেও হাত কাঁপে না।ভালোবাসা হয়তো এমনই। কঠোর মানুষটাকে নিমিষে নরম করে দেয়। আবার পাথরের বুকেও  ফুল ফুটিয়ে দেয়।

ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আয়াজ কে রুমে না দেখে একটু ভয় পেল আরশি।পরক্ষণেই মুখে হাসি ফুটে উঠল ড্রেসিং টেবিলে চাপা দিয়ে রাখা নীল চিরকুট টা দেখে। হাতে তুলে নিল আরশি। বড় বড় অক্ষরে ভেসে উঠল ---

" বেলকনিতে চলে আসবেন মিসেস সাদ"।

মিসেস সাদ শব্দটা আরশির মনে প্রাণে অজস্র ভালো লাগায় ভরিয়ে দিল।বেলকনিতে এসে আয়াজের পাশে দাঁড়াতেই টেনে সামনে এনে কোমড় জরিয়ে ধরল আয়াজ।ভিজে যাচ্ছে আরশিও।কোমড়ে স্লাইড করতে লাগল আয়াজ।হাত দুটো চেপে ধরল আরশি।হালকা হাসল আয়াজ।আরশির হাত সরিয়ে কোমড়ে একটা বিছা পড়িয়ে দিল সে।আরশির কানের কাছে মুখ নিয়ে গেলো সে।
---তোমার বাসর রাতের উপহার বউ।
ঘোর লাগানো কন্ঠে বলল আয়াজ।তার ঠোঁট বার বার ছুয়ে যাচ্ছে আরশির কানে।অবাক হলো আরশি।এতো খুশি এতো সুখ সে কোথায় লুকিয়ে রাখবে?প্রকাশ করতেও ভুলে গেছে সে।পিছন ফিরে শক্ত করে জরিয়ে ধরল আয়াজ কে।

---আমারও তো গিফট চাই প্রিয়তা।

বুক থেকে মাথা উঠিয়ে আয়াজের মুখের দিকে তাকালো আরশি।কাঁপা কাঁপা কন্ঠে প্রশ্ন করল--"কি চায়?"

---সিলেটে যেই কাজটা অসম্পূর্ণ ছিল সেটা চাই।(ঘোর লাগালো কন্ঠে বলল আয়াজ)।

লাজুক হাসল আরশি।কোনোরকম ইতস্তত না করেই নিজের মুখ টা এগিয়ে নিল আয়াজের মুখের কাছে।ঠোঁট দুটো ছুই ছুই।চুলের নিচে নিজের হাত গলিয়ে আরশির ঠোঁটে ঠোঁট দুটো মিশিয়ে দিলো আয়াজ।গভীর ভাবে কিস করতে লাগল সে।আরশিও তাল মিলাল তার সাথে।ঠোঁট ছেড়ে আরশির গলায় নেমে এলো সে।ছোট ছোট কিসের পাশাপাশি কামড়ও দিতে লাগল।আয়াজের পিঠে খামচে ধরল আরশি।চোখ দুটো বুজে ফেলল আবেশে।ভিজে চুপচপে হয়ে আছে দুজনের শরীর।আজ এই বর্ষণ ও সাক্ষী হয়ে রইল তাদের প্রেমের।আরশিকে কোলে তুলে রুমের দিকে পা বাড়ালো আয়াজ।

—————

সকালে আয়াজের ঘুম আগে ভাঙল।মাথায় হাত ঠেকিয়ে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল সে আরশির ঘুমন্ত মায়াবী মুখটার দিকে।

ভালোবাসি প্রিয়তা।খুব ভালোবাসি।তোমায় এবার হারালে পাগল হয়ে যাব আমি।কখনও অবিশ্বাস করবে না আমায়।তোমার এই নায়ক সাহেব সব ঠিক করে দিবে সবকিছু। শুধু বিশ্বাসটুকু রেখো যে তোমার নায়ক সাহেব কখনও বিনা দোষে কাউকে শাস্তি দিতেই  পারে না।

আরশির মুখের দিকে তাকিয়ে কথাগুলো বলল আয়াজ।ঠোঁটে আলতো করে চুমু দিয়ে উঠে গেলো সে।আয়াজ যেতেই চোখ মেলে তাকালো আরশি।আয়াজের কিছু কথা ভেসে এলো তার কানে।বিড় বিড় করে বলল--

--আপনি কখনো কোনো অপরাধ করতেই পারেন না নায়ক সাহেব।

-----------

ডাইনিং টেবিলে বসে আছে আয়াজ আরশি আনহা।খাওয়ার মাঝেই আনহা বলে উঠল---

--ভাবি কি আর পড়াশোনা করবে না ভাইয়া?

 আরশির দিকে তাকালো আয়াজ।মুচকি হেসে বলল--অবশ্যই করবে।আরও কয়েকদিন যাক তারপর আমি নিজেই ওকে ভালো একটা ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি করিয়ে দিব।কথাটা শুনে খুব খুশি হলো আরশি।সে নিজেও আয়াজ কে এই ব্যাপারে বলতে চাইছিল কিন্তু তার আগেই আয়াজ আনহা তার মনের কথাটা বলে দিল।এতো ভালো স্বামী এতো ভালো ননদ কয়জনের ভাগ্যে জুটে।আয়াজ মুখের সামনে খাবার ধরতেই খেয়ে নিলো একদম লক্ষী মেয়ের মতো।
সবকিছু গুছিয়ে রুমে গেলো আরশি। আয়নার সামনে দাড়িয়ে রেডি হচ্ছে আয়াজ। পিছন থেকে জরিয়ে ধরে আয়াজের পিঠে মাথা ঠেকাল সে।

আয়নার মধ্যেই আরশির দিকে তাকাল আয়াজ।

--কি ম্যাডাম?সারারাত খামচি দিয়ে ও সাধ মিটে নি?এখনো খামচি দিচ্ছেন।ওহ্ বুঝেছি বললেই তো হয় আরো আদর লাগবে আপনার।(ভ্রু নাচিয়ে)

লজ্জায় আরশি মুখ লুকিয়ে ফেলল আয়াজের পিঠে। লজ্জিত স্বরে বলে উঠল----
"অসভ্য আপনি নায়ক সাহেব "।

" তাই নাকি?আরেকটু অসভ্যতামি করি তাহলে?"

"একদম না"(চিতকার করে)

আরশি সরে যেতে নিলেই তার হাতটা ধরে দাঁড় করালো আয়াজ।পাশের টেবিল থেকে এক গ্লাস পানি আর একটা পেইন কিলার এগিয়ে দিল আরশির দিকে।চোখ ছলছল করে উঠল আরশির।এই লোকটা কিভাবে তার প্রবলেম গুলো বুঝে যায়? কেনো এতো ভালোবাসে লোকটা তাকে?

---কি হলো খেয়ে নাও।
 
ঔষধ টা খেয়ে নিল আরশি।শক্ত করে জরিয়ে ধরল আয়াজ কে।

---আপনি কেনো আমায় এতো বুঝেন?কেনো আমার মতো সাধারণ একটা মেয়েকে এতো ভালোবাসেন?

---তুমি সাধারণ কেউ নও। তুমি আমার প্রিয়তা।আর আমার প্রিয়তা আমার জান কখনও সাধারণ কেউ হতেই পারে না।আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয় তুমি। আমার লাইফ তুমি।আর কখনো এমন বলবে না জান।

আরশিকে একদম বুকের সাথে মিশিয়ে নিল।আরশিও ব্যস্ত হয়ে পড়ল আয়াজের হৃদস্পন্দন শুনতে।কিছুক্ষণ পর আরশির মুখটা নিজের দুই হাতে নিয়ে কপাল বরাবর কিস করল আয়াজ।

---কোথায় যাচ্ছেন?
---এইতো ডিরেক্টর সাহেবের কাছে যাবো।তাড়াতাড়ি চলে আসবো ওকে?
---হুম সাবধানে যাবেন।ঔষধ খেয়েছেন?
---ইশশ!!একদম ভুলে গিয়েছি বউ।
 
অবাক হলো আরশি।নিজের ঔষধ খেতে ভুলে গেছে অথচ তার খেয়াল রাখতে ভুলে নি মানুষটা।এই মানুষটাকে কখনো কষ্ট দিতে পারবো না আমি।

আয়াজের ঔষধ এগিয়ে এনে দিতেই খেয়ে নিল সে।আরশির গালে হাত ছুঁয়ে ঠোঁটে আলতো করে কিস করে বেরিয়ে পড়ল  আয়াজ।
একটা কফিশপে মুখোমুখি বসে আছে ইফাজ -আয়াজ।ইফাজের ফোনেই এখানে এসেছে আয়াজ।রাগের বশে এখন আর কিছু করতে চায় না সে।ইফাজ কে শাস্তি দিবে তবে মাথা গরম করে নই। নিজেকে শান্ত রাখতে চায় সে।নিজের কোনো ভুলের জন্য ও আর প্রিয়তাকে হারাতে পারবে না আয়াজ।রাগী চোখে ইফাজের দিকে তাকালো সে।হেসে উঠল ইফাজ। 

----রিলেক্স ব্রো।চোখ দিয়েই ভস্ম করে দিবি নাকি আমাকে?(কথাটা বলেই হেসে দিল সে)

----কেনো ডেকেছিস আমাকে?বাঁচতে আর ইচ্ছে করছে না?(দাঁতে দাঁত চেপে বলল আয়াজ)

---ভাবলাম সব দ্বন্দ্ব শেষ করে নেই।অতীতের সবকিছু ভুলে যায়।আফটার অল এখন আমরা শালা-দুলাভাই হয়।

---আবার নতুন চাল?তুই যা করেছিস তার ক্ষমা হয় না।মৃত্যুর যোগ্য তুই। তা আমি দিব।আমার প্রিয়তাকে কেঁড়ে নেওয়ার শাস্তিও দিব।

কথাটা বলেই বেরিয়ে গেলো আয়াজ।মাথায় তার রক্ত টগবগ করছে।ইচ্ছে করছিল ইফাজকে খন্ড খন্ড করে কেটে ফেলতে।একজন গার্ড গাড়ির দরজা খুলে দিতেই উঠে বসে পড়ল সে।আয়াজ বেরিয়ে যেতেই রহস্যময় হাসি হাসল ইফাজ। উচ্চস্বরে বলে উঠল---

"" আমি মরব তবে তোকে মেরে।একবারেই মেরে দিব না বরং তিলে তিলে মারব।এই যে তোর এতো রেপুটেশন এতো অ্যাটিটিউড সবই তোর প্রিয়তা নিজেই নষ্ট করে দিবে। জাস্ট ওয়েট এন্ড সি আয়াজ মাই ফ্রেন্ড। ওপস,, সরি এক্স বেস্ট ফ্রেন্ড। "
। 
অফিসে বসে আছে আয়াজ।যেইভাবে হোক ইফাজ কে তার কর্মের শাস্তি দিবে আয়াজ।চোখ দুটো বন্ধ করে ফেলল সে।মনে পড়ে গেলো সেই বিষাদময় স্মৃতি গুলো।মনে পড়ে গেলো মানুষ চিনতে কতটা ভুল করে ফেলেছিল আয়াজ।একটা ভুল মানুষকে নিজের প্রিয় বন্ধুর আসনে বসিয়েছিল সে।প্রিয় বলেই হয়তো আজও মানুষটাকে শাস্তি দিতে পারছে না। তবুও দিতে হবে। ইফাজ তার জীবন থেকে তার প্রিয়তাকে কেঁড়ে নিয়েছিল।কেঁড়ে নিয়েছিল খুব কাছের বান্ধবী আরোহী কে।আরোহী কে আয়াজ তার বোনের মতোই  ভালোবাসতো ।অথচ আজ সে নেই।
সময় কাটানোর জন্য আয়াজের বুক শেলফ থেকে একটা বই নিল আরশি পড়ার জন্য। একা একা ভালো লাগছিল না তার।আনহা থাকলে একটু আড্ডা দিত।আনহা নিশাদের সাথে ঘুরতে বেরিয়েছে।কাল নিশাদ আসবে তার ফ্যামিলি ক নিয়ে আনহা কে দেখতে।বইটা নিয়ে আসার সময় বইয়ের ভাজ থেকে গড়িয়ে নিচে একটা ছবি পড়ল।ভ্রু কুঁচকালো আরশি।ফ্লোরে উবু হয়ে  ছবিটা হাতে নিতেই তার চোখ থেকে একফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ল গাল বেয়ে।
Author, Publisher & Developer

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

উফ!
মনে হচ্ছে আপনার ইন্টারনেট সংযোগে কিছু সমস্যা আছে। অনুগ্রহ করে আগে আপনার ইন্টারনেটের সংযোগ ঠিক করুন এবং তারপর আবার ব্রাউজিং শুরু করুন৷
AdBlock সনাক্ত করা হয়েছে!
আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি আপনার ব্রাউজারে অ্যাডব্লকিং প্লাগইন ব্যবহার করছেন৷ আমরা আপনাকে আপনার অ্যাডব্লকিং প্লাগইন বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করছি, কারন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমরা যে রাজস্ব আয় করি তা এই ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।