আমার অন্তরালে তুমি - পর্ব ২২ - ফারহানা ছবি - ধারাবাহিক গল্প


ছন্দ কে বসিয়ে কিছুটা দ্রুরত্ব নিয়ে আমান বসে ৷ কাজি বিয়ে পড়ানো শুরু করতে ছন্দ আচলের তোল থেকে রিভলবার বের করে আমানের দিকে তাক করতে বাইরে ফায়ারিংয়ের আওয়াজ শুনতে পায় ছন্দ৷ সবার নজর বাইরের দিকে ৷ ছন্দ অবাক হয়ে দরজার দিকে তাকিয়ে হাতের রিভলবার লুকিয়ে ফেলে তখনি হাতে রিভারবার নিয়ে প্রবেশ করে বর্ণ... 

৭৪

ব্লাক সুট বুট পড়া হাতে রিচওয়াচ চোখে ব্লাক সানগ্লাস খোচা খোচা চাপদাড়িতে বর্ণের সৌন্দর্য যেন উপচে পড়ছে ৷ ছন্দ হ্যা করে বর্ণ কে দেখে যাচ্ছে ৷ আমান একবার ছন্দের দিকে তাকিয়ে দেখে ছন্দ হ্যা করে বর্ণের দিকে তাকিয়ে আছে ৷ এটা দেখে আমানের যেন মাথায় রক্ত উঠে গেল৷ বর্ণ আমান আর ছন্দের সামনে দারিয়ে চোখের সানগ্লাস খুলে সিঙ্গেল সোফায় পায়ের উপর পা তুলে বসে রিভলবার আঙুলে ঘুড়াতে লাগলো....

"" কি হলো মিস্টার আমান খান বিয়ে করছেন না কেন? বিয়ে শুরু করেন" চোখ মুখ স্বাভাবিক রেখে বললো বর্ণ ৷ বর্ণের এই শান্ত রুপ দেখে ছন্দ ভিতরে ভিতরে সত্যি প্রচন্ড ভয় পাচ্ছে৷ কারন মানুষ যখন কাউকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসে তখন ওই মানুষটার সাথে ভুল বা অন্যায় করলে  সে মানুষ টাকে মনে মনে ভয় পেতে থাকে৷ ছন্দ আজ সত্যি বর্ণকে দেখে প্রচন্ড ভয় পাচ্ছে৷ আমান কাজির দিকে চোখ গরম দিতে কাজি খাতা নিয়ে আবার ছন্দ আমানের সামনে বসে বিয়ে পড়াতে শুরু করে কাপা কাপা গলায়  আমানের নাম নিতে তখনি বর্ণ বলে ওঠে.."" কাজি সাহেব আপনি পাত্রের নাম টা ভূল বলছেন ওখানে আয়ান চৌধুরী বর্ণ হবে বরের নামের জায়গায়....""

"" কিহ কাজি কেন তোর নাম বলবে ?,আমি ছন্দ কে বিয়ে করবো তাহলে তোর নাম নিবে কেন? একান্ত তোর ইচ্ছে হলে আমাদের বিয়ের শাক্ষি  হতে পারিস বর্ণ..." আমানের কথা শেষ হওয়ার পূর্বে চারিদিক দিক দিয়ে বর্ণের লোক আমানের মাথায় বন্দুক তাক করে যা দেখে আমান নিনে ঘাবড়ে যায়৷ 

"" ইউ নো ওয়াট আমান তোর ছোট ভাইও সেম ভুল করে ছিলো আমার কলিজায় হাত দিয়ে কিন্তু দেখ তার পরিনাম কি হলো কবর..."" বর্ণের কথা শুনে আমানের মাথা ঘুড়ে গেল কি বলছে বর্ণ ...

"" তা,,তার মানে তু,,তুই আমার ভাই কে খুন করেছিস?""

" একদম ইভেন  তোর বড় ভাই RK অরপে রেহান কেও আদমরা আমি করেছি নিজ হাতে ওর ডান হাতে কেটেছি কিন্তু আফসোস ওকে নিজের হাতে খুন করতে পারলাম না তার আগে..... বাকিটা বলতে বলতে থেমে গিয়ে বর্ণ আবার বলতে লাগলো "" এবার বল তুই কার মতো মরতে চাস রেহান নাকি আকরাম? "

আমান রেগে নিজের কোমর থেকে গান বের করে বর্ণের দিকে তাক করতে বর্ণ আমানের হাত ধরে মুরে পিছুনে চেপে ধরে দাঁতে দাঁত চেপে বর্ন বলতে লাগলো"" খুব শখ না আমার জানকে বিয়ে করার তোর এই শখ আমি মিটাবো ওয়েট আগে আমার জানের সাথে বিয়ে টা শেষ করেনি ৷ গার্ড যতোক্ষন না বিয়ে শেষ হচ্ছে ততোক্ষন এটাকে দেখবে যদি একচুল নড়ার চেষ্টা করে তাহলে শুট করে দিবে ৷ ""

"" ইয়েস বস..."" 

আমানের ডান হাত প্রায় ভেঙে গেছে হাতের যন্ত্রণা নিয়ে ছন্দের দিকে তাকিয়ে আছে আমান৷  বর্ণ ছন্দের পাশে বসে ছন্দের হাত ধরতে ছন্দ ভয়ে কেঁপে উঠে ৷ কারন বর্ণে দুচোখ দেখলে যে কেউ বুজতে পারবে বর্ণের রাগ ৷ কাজি সাহেব বিয়ে পরাতে শুরু করলে মুরাদ মিহির এসে উপস্থিত হয় ৷ মুরাদ মিহির বর্ণের হয়ে আর যে মেয়ে দুটো ছন্দ কে সাজিয়ে ছিলো সে মেয়ে দুটো ছন্দের হয়ে বিয়ের সাক্ষি দিয়ে বিয়ে টা সম্পূর্ন করে ৷ পুরো সময় টা ছন্দ শুধু মনে মনে আল্লাহ কে ডেকে গেছে ৷ বর্ণের সামনে কোন টু শব্দ করেনি৷ 

"" তো ভাবিজান এবার সত্যি সত্যি আমাদের ভাবি হয়ে গেলেন এবার তো বাসরের ব্যাবস্তা করতে হয় তাই না দোস্ত বর্ণ কে ইশারা করে বলবো মুরাদ...""

"" সে সব পরে হবে আগে এটা নিয়ে চল ওকে ওর পাওনা শাস্তি না দেওয়া অব্দি আমি শাস্তি পাবো না""

"" চিল দোস্ত এটাকে আমাদের উপর ছেড়ে দে না আমরা এটা কে দেখে নি?"

"" নাহ তা হবে না মুরাদ আমি যখন বলেছি আমি শাস্তি দিবো তার মানে আমি দিবো ৷ ""  কথাটা বলে বর্ণ উঠে ডাইনিং টেবিলের উপর থেকে ফল কাটার ছুড়ি এনে আমানের দু হাতের রগ কেটে দেয়৷ তারপর পা দুটোর বর্ণের এমন ভয়ঙ্কর রুপ দেখে আমান কিছু বলতে গিয়ে পারলো না কারন তার সেই শক্তি নেই বর্ণ কে বলার... ধিরে ধিরে শরীলের সব রক্ত বেরিয়ে যেতে লাগলো আমানের ৷ ছন্দের কাছে বিষয় টা ভিষন নিরামিষ টাটাইপ লাগছে ৷ আরো এক্সসাইনিং কিছু করবে বর্ণ সেটাই ভেবেছিলো ছন্দ কিন্তু যাস্ট এতোটুকু করে ওকে ধিরে ধিরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে দিবে এটা বুঝেনি ৷ ছন্দ বসা থেকে উঠে দারিয়ে বর্ণের হাত থেকে ছুড়িটা নিয়ে  আমানের বুক বরাবর ছুড়িটা রেখে ছিড়ে ফেলে ৷ ছন্দের এমন কান্ডে বর্ণ মিহির মুরাদ চমকে যায়৷ ছন্দ সে দিকে খেয়াল না করে কিচেন খুজে সেখান থেকে মরিচের গুড়ো আর লবন নিয়ে এসে আমানের বুকে ঢেলে দেয়৷ বুকে জ্বলনে চিৎকার করতে থাকে আমান ৷ কিন্তু এতেও যেন ছন্দের তৃপ্তি মিটছে না কিন্তু এখন এর বেশি কিছু করতে পারবে না ছন্দ তাহলে বর্ণ ওকে সন্ধেহ করতে পারে ৷  কিন্তু এখন যেটা করলো এটার ব্যাখ্যা বা কি দিবে বর্ণ কে ও সেটাই ভেবে যাচ্ছে ছন্দ ৷ 

তখনি বর্ণ এসে ছন্দের হাত থেকে ছুড়ি নিয়ে দুরে ছুড়ে মেরে ছন্দের পানি ঢেলে রক্ত পরিষ্কার করে দেয় বর্ণ৷ ছন্দ চুপ চাপ হাত ধুয়ে নিলো৷ বর্ণ ছন্দ কে কিছু না বলে ছন্দ কে কোলে তুলে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে ছন্দ কে গাড়ি তে বসিয়ে নিজে ড্রাইব করতে লাগলো৷ 

অন্যদিকে মুরাদ আমানের পালস চেক করে বুজতে পারে আমান মারা গেছে৷ মুরাদ গার্ডদের নির্দেশ দেয় আমানের বডিটা মাটির নিচে পুতে ফেলতে ৷ মুরাদের নির্দেশ মতো আমানের বাড়ির বাগানে আমান আর বাকি গার্ড যাদের কে বর্ণ কে মেরে ফেলেছে তাদের পুতে ফেলে ৷ 

৭৫

ঘন্টাখানিক ড্রাইব করার পর বর্ণ একটা বাংলোর সামনে গাড়ি থামায়৷ ছন্দ এখনো চুপ করে বসে আছে৷ বর্ণ গাড়ি থেকে নেমে ছন্দ কে আবার কোলে তুলে নিয়ে ভিতরে ঢুকতে লাগলো৷ বর্ণে কে দেখে সারবেন্ট গার্ড সবাই লাইনে দারিয়ে বর্ণ কে সন্মান করছে ৷ বর্ণ ছন্দ কে নিয়ে ভিতরে ঢুকে দ্বিতীয় তালায় নিজের রুমে গিয়ে ছন্দ কে বিছানায় বসিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল বর্ণ৷ হঠাৎ বর্ণ কে চলে যেতে দেখে ছন্দ বেশ অবাক হলো ৷ ছন্দ উঠে পুরো রুম ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলো "" পুরো রুমটা নীল আর সাদা রঙ করা ৷ রুমের প্রত্যেকটা জিনিস যে খুব সুন্দর করে সাজিয়েছে ৷ বোঝা যাচ্ছে বর্ণ ভিষন সৌখিন ধরনের লোক৷ ছন্দ বেলকনি দেখতে পেয়ে দেরি না করে বেলকনিতে গিয়ে দেখে নানা রকমের ফুলের গাছ ৷ দেশ বিদেশি নানা রকম ফুল গাছ ৷ ছন্দের ভিষন ভালো লাগছে ফুল গুলো দেখে ৷ ছন্দের হুট করে ইচ্ছে হলো ফুল গুলোর সাথে সেলফি তোলার কিন্তু পরক্ষনে মনে পরে গেল ফোন পার্স ওই আমানের বাড়িতে তাহলে সবার সাথে যোগাযোগ কি করে করবে ও.... 

পনেরো মিনিট পর বর্ণ রুমে এসে ছন্দ কে দেখতে না পেয়ে বুকের ভিতর মোচর দিয়ে ওঠে৷ ওয়াশরুম চেক করে ছন্দ না পেয়ে হঠাৎ মনে পরে বেলকনির কথা দ্রুত বেলকনিতে গিয়ে দেখে ছন্দ ফুল গুলো ছুয়ে দিচ্ছে ৷ বর্ণ রেগে ছন্দের বাহু ধরে রুমে এনে বিছানায় ছুরে মারে....

"" আমাকে না বলে বেলকনিতে কেন গিয়েছিলি ?" প্রচন্ড রেগে বললো বর্ণ..

"" আ,, আমি তো যাস্ট বেলকনিতে গিয়ে ছিলাম বনরাজ.."" ছন্দের মুখে বনরাজ নাম টা শুনে বর্ণ ছন্দের গাল শক্ত করে চেপে ধরে বললো"" একদম ওই নামে আমাকে ডাকবি না তুই ৷ ওই নামে ডাকার অধিকার শুধু মাত্র আমার টিয়াপাখির ৷ তুই ওই নামে ডাকার অধিকার হারিয়ে ফেলেছিস যখন ওই কু* বা* কে বিয়ে করতে রাজি হয়ে গিয়েছিলি"" ছন্দ চেয়েও বর্ণের হাত সরাতে পারলো না ৷ ব্যাথায় ছন্দের চোখে পানি এসে পড়লো ৷ ছন্দের চোখে পানি দেখে বর্ণ ছন্দ কে ছেড়ে দিয়ে উঠে দারায়৷ 

"" আহা আমার কিউট  গুলুমুলু গালটায় ব্যাথা দিলা বনরাজ আর ওই আমান আমাকে একদম ব্যাথা দেয়নি উলটো আ,,, বাকিটা বলতে পারলো না বর্ণের রক্ত চক্ষু দেখে ...

"" কি থেমে গেলি কেন বল কি আদর করতে চেয়ে ছিলো নাকি করেছে হ্যা কোথায় কোথায় টার্চ করেছে তোর বল কোথায়."" বর্ণ পাগলের মতো ছন্দ হাত গলা পা চেক করছে যেন আমান আদর করলে সেগুলো দাগ হয়ে শরীলে বসে থাকবে... ছন্দ পারছে না দাঁত গুলো বের করে হাসতে ৷ বাই এনি চান্স বর্ণ একবার যদি ওকে দাঁত বের করে হাসতে দেখে তাহলে নির্ঘাত ওর দাঁত গুলো ভেঙে দিবে৷  

ছন্দের ভাবনার মাঝে বর্ণ ছন্দ কে কোলে তুলে নিয়ে ওয়াসরুমে বাথ টপে ফেলে দিয়ে বাইরে থেকে দরজা লক করে দেয়৷ ছন্দ কোন ভাবে বাথ টপ থেকে উঠে দরজা খোলার চেষ্টা করেও লাভ হয় না ৷ ছন্দ বাধ্য হয়ে শাওয়ার নিয়ে নেয় ঘন্টা ঘানিক তারপর বাধে বিপত্তি কারন এখানে তার কোন ড্রেস নেই তবে পাশে ছোট্ট তাকে দেখতে পায় তোয়ালে ছন্দ বাধ্য হয়ে তোয়ালে পেচিয়ে নিয়ে দরজায় দুবার ধাক্কা দিতে দরজা খুলে যায়৷ ছন্দ ভিজে পায়ে রুমে প্রবেশ করতে হতবাক হয়ে যায়৷ মাত্র একঘন্টায় পুরো রুমের ডেকোরেশন চেন্জ হয়ে গেছে ৷ পুরো রুম জুরে মনমাতাল করা ফুলের ঘ্রান ৷ ক্যান্ডেল জ্বলিয়ে পুরো রুমে সেট করা ৷ গোলাপের পাপড়ি দিয়ে বেড সহ পুরো রুমে ছড়ানো৷ বলতে গেলে এক রোমান্টিক পরিবেশ৷ হঠাৎ ছন্দ আয়নার দিকে তাকাতে দেখে বর্ণ আয়নায় তার প্রতিবিম্বের দিকে তাকিয়ে আছে৷  ওয়াইট শার্ট ব্লাক জিন্স পরা ৷ শার্টের বোতাম বুক পর্যন্ত খোলা ৷ বর্ণের ব্রাউন রঙের চোখের দিকে তাকাতে ছন্দ লজ্জায় কুকড়ে যায়৷ ভেজা চুল ভেজা ঠোট ভেজা মুখ মোমবাতির আলোয় যেন আরো মোহনীয় লাগছে ৷ ছন্দের ভেজা চুল দিয়ে টপ টপ করে পানি ঝরে পড়ছে আর অন্য দিকে বর্ণের হৃদয়ে ঝড় তান্ডব করছে ৷ বর্ণ ছন্দের কাছে গিয়ে ছন্দের ভেজা ঠোটে আলতো করে ঠোট ছুইয়ে দিয়ে ছন্দের কপালের সাথে কপাল ঠেকিয়ে বর্ণ বলে উঠলো " ভালোবাসার উত্তাল সমুদ্রে তোমাকে আজ ভাসিয়ে নিয়ে যেতে চাই ৷ ডুবে যেতে চাই তোমার ভালোবাসার অতল গভিরে ৷ ভালোবাসতে চাই তোমায় নিজের সবটা উজার করে ৷ সে অধিকার কি দিবে আমায় টিয়াপাখি?" ছন্দ কিছু কিছু বললো না উলটো বর্ণের বুকে মুখ লুকালো ছন্দ ৷ বর্ন তার উওর পেয়ে গেছে ৷ বর্ণ ছন্দ কে কোলে তুলে নিয়ে বেডে শুইয়ে দিলো ৷ 

আজ আকাশ জুরে কালো মেঘের হাত ছানি ৷ ঝরের তান্ডব লীলা শুরু হতে লাগলো অন্য দিকে সেই তন্ডবলীলায় দুটো হৃদয়ের ভালোবাসার রঙে দুজন কে রাঙাতে লাগলো......

৭৬

"" আম্মা ছন্দ এখনো বাড়ি ফিরলো না রাত তো অনেক হলো আর বাইরে তো ঝড় হচ্ছে ৷ মেয়েটা কি করে আসবে কোথায় ও?"(রুনা)

"" চিন্তা করো না বউ মা ৷ ছন্দের বান্ধুবী আমাকে ফোন করেছিলো বললো ঝড়ের কারনে আজ ছন্দ ওর সাথে থাকবে কাল একে বারে ভার্সিটির ক্লাস করে বাড়িতে ফিরবে...""

"" ওহ আচ্ছা ""

" বউ মা খেয়ে নেও আর ওই দিকে তোমার শশুর কোথায় গেলো ঝড়ের ভিতর আল্লাহ জানে ৷ কায়রা আর কাব্যকে আমি ডাকছি তুমি ততোক্ষনে খাওয়া শুরু করো ৷""

"" জ্বি আম্মা,  " 

____________________

"" পেয়েছিস সাগরিকা কে?""(সাব্বির আহাম্মেদ)

"" না বস না ওনাকে পেয়েছি আর না ওই Rk কে ""

"" তোদের উপর ভরশা করে দেখছি আমার কোন লাভ ই হলো না উলটো আরো সময় নষ্ট হলো ৷ ""

"" বস আর একটু সময় দেন বিশ্বাস করেন আমি আপনারে নিরাশ করমু না"" 

"" ঠিক আছে তোকে আমি চব্বিশ ঘন্টা সময় দিলাম এর ভিতর যদি তুই আমাকে কোন খবর না দিতে পারিস তাহলে তোকে দুনিয়া থেকে উঠিয়ে দিবো...."" কথা গুলো বলে সাব্বির আহাম্মেদ বৃষ্টির ভিতরে বের হয়ে গাড়িতে উঠে গাড়ি স্টার্ট দেয়৷ 

"" সাগরিকা কে তো আমায় পেতে হবে ৷ কোথায় বোন আমার ফিরে আয় তোর ভাইয়ের কাছে কথা দিচ্ছি পেপারস গুলো নিয়ে তোদের মা মেয়ে কে শান্তির ঘুম পারিয়ে দিবো ৷ "" কথা গুলো বলতে বলতে গাড়ির স্পিড বাড়িয়ে দিলো সাব্বির আহাম্মেদ ....

____________________________

'' তুমি এতো রাতে আমার রুমে কি করে এলে ""(বন্যা)

"" ইট'স কল'ড আ ম্যাজিক বেবি"" বন্যার গালে আঙুল দিয়ে স্লাইট করে বললো মুরাদ...

"" ইয়াক ডোন্ট কল মি বেবি মুরাদ ৷ আমি কি বাচ্চা নাকি যে আমাকে বেবি ডাকবে"" চোখ মুখ কুচকে বললো বন্যা...

"" একদম তুমি হলে একটা ছোট্ট কিউট বেবি..""

" এহেহ আসছে কিউট বেবি আজ বিয়ে করলে কাল দু বাচ্চার মা হয়ে যাবো সেখানে আমাকে বলছে বেবি.."" 

"" কি বললে আবার বলো জান?" 

বন্যা বুজতে পারলো সে কি বলে ফেলেছে ৷ লজ্জায় মুরাদের দিকে তাকাতে পারছে না বন্যা...

"" কি কিছু না ৷ "" 

" কিছু তো অবশ্যই বলেছো সুইটহার্ট ৷ তবে আমার এখানে আশার বিশেষ দুটো কারন আছে ""

"" কি কারন ?""

"" ১. তোমাকে দেখা আর ২...""

"" ২ কি বলবা নাকি নাটক করবা কোন টা?"" রেগে বললো বন্যা..""

"" ২ হলো তোমার ভাই বর্ণ আর ছন্দের বিয়ে হয়ে গেছে...""

"" কিহহহহহহ.""

"" আস্তে জান তোমার মম ড্যাড শুনে ফেলবে তো"" বন্যার মুখ চেপে ধরে বললো মুরাদ...

"" তার আগে বলো তুমি যা বললে সব সত্যি...?"" 

"" হাম ..."" তারপর মুরাদ শুরু থেকে সবটা বন্যা কে খুলে বলে সব শুনে বন্যা যাস্ট স্পিচলেস ...

"" তোমরা কি করে জানলে ছন্দ আমানের কাছে ..?" 

"তাহলে প্রথম থেকে শুনো ৷ ভাবি সকালে বর্ণকে ফোন করার তিন ঘন্টার মধ্যে সব কাজ সেরে ফেলে আমরা বেরিয়ে পরি ৷ বর্ণ ভাবি কে সারপ্রাইজ দিবে বলে আগে জানায় নি৷ শহরে ফিরতে বর্ণের কাছে ফোন আসে বর্ণ জানতে পারে আমান ওকে কিডন্যাপ করেছে৷ "

"" বাহ এতো দেখছি পুরাই থ্রিলারার একশন মুভি ইস আমি মিস করে গেলাম.."" 

"" হুম তুমি অনেক কিছু-ই মিস করেছো জান তবে মানুষের উপরের খোলস দেখে ভিতর টা কখনো বিচার করা যায় না ৷ এক এক মানুষের ভিতর কার রুপ এক এক রকম ৷""


"" কি সব বলে যাচ্ছো মুরাদ আমি কিছুই বুজতে পারছি না""

"" উহু কিছু না বুকে আসো ৷ আমার জানটাকে একটু মন ভরে আদর করি ৷""  বন্যা হাসি মুখে মুরাদ কে জরিয়ে ধরে.. মুরাদ বন্যা কে জরিয়ে ধরে  মনে মনে বলতে লাগলো" আমার কেন যেন মনে হচ্ছে ছন্দ ভাবি যে রুপ টা আমাদের দেখাচ্ছে সেটা তার আসল রুপ নয় ৷ এই সহজ সরল মিষ্টি মুখটার আড়ালে কোন এক ভয়ঙ্কর রুপ আছে ৷ যে তুমি আমি বা বর্ণ কেউ জানি না" 

____________________________________

৭৭

কাঁচ ভেত করে সূর্যের নরম রোদ বর্ণের চোখে পড়তে ঘুম ভেঙে যায় বর্ণের৷ চোখ মেলে তাকিয়ে বিছানায় ছন্দ কে দেখতে না পেয়ে বর্ণ ভেবে নেয় ছন্দ হয়তো ওয়াশরুমে কিন্তু ঘন্টা দের পার হবার পর ও যখন ছন্দের কোন দেখা নেয় তখন বর্ণ উঠে পরে৷ পুরো বাংলো খুজে ফেলে কিন্তু ছন্দ কে কেউ খুজে পায় না ৷ রাগে পুরো শরীল কাঁপছে বর্ণের কারন কিছুক্ষন আগে গার্ড এসে জানিয়েছে ছন্দ ভোর বেলাই বেরিয়ে গেছে৷ 

"" এভাবে আমাকে না জানিয়ে চলে যাওয়াটা তোমার একদম ঠিক হয়নি টিয়াপাখি ৷ ইউ এ্যাভ টু পে ফর দিস""  দেয়ালে ঘুশি মেরে রুমে চলে যায় বর্ণ৷ 

____________

'' দশ টা বেজে গেছে আমাকে এখুনি ফুফির কাছে পৌছাতে হবে৷ ভাগ্যিস বনরাজ আগে থেকে সব কিছুর এরেন্জমেন্ট করে রেখেছিলো নাহলে শাওয়ার নিয়ে কি পড়ে বের হতাম হু.. বাট গোলাপি ত্রিপিস টা বেশ সুন্দর ৷ "

গতকাল রাতে মুরাদ ছন্দের ফোন পার্স পাঠিয়ে দেয় বর্ণের কাছে তাই ছন্দের বিশেষ কিছু করতে হয়নি ফোন পার্স নিয়ে যেতে যেহেতু বর্ণ ঘুম ছিলো...

ছন্দ অটো করে পৌছে যায় সাগরিকার বাড়ি ৷ ছন্দের অপেক্ষায় ছিলো সাগরিকা আর তার মেয়ে সায়মা৷ দরজা খোলা থাকায় ছন্দ ভিতরে ঢুকতে কোন সমস্যা হয় না ৷ 

"" ফুফি তোমরা তৈরি?"" 

"" হ্যা সোনা মা কিন্তু এখনো নাস্তা করেনি তোর জন্য অপেক্ষা করছিলাম ৷ ""

"" তাহলে দেরি কেন চল নাস্তা করেনি প্রচন্ড ক্ষিদে পেয়েছে আমার..""

"" হুম চল...""

ডাইনিং টেবিলে সায়মার সামনা সামনি বসায় সায়মা ছন্দ কে ভালো করে খেয়াল করে বলে"" আপু তোমার গলায় ওই লাল লাল কিসের দাগ ? মনে হচ্ছে কেউ কামড়েছে.."" সায়মার কথা শুনে ছন্দের গলায় যেন খাবার আটকে গেল...ছন্দের ফুফি দ্রুত ছন্দের দিকে পানির গ্লাস টা বারিয়ে দিয়ে ছন্দের পিঠে হাত বুলাতে থাকে...

"" সায়মা এই সব কি হ্যা খাবার টেবিলে কথা বলা আমার একদম পছন্দ না এটা তুমি জানো না?""

"" স্যরি মাম্মাম , স্যরি আপু আমার জন্য তোমার এতোটা কষ্ট হলো""

ছন্দ একটু স্বাভাবিক হয়ে বলল, "নাহ  তোকে স্যরি বলতে হবে না ৷ আসলে আমার এ্যালার্জির সমস্যা আছে মাঝে মাঝে লাল রাসের মতো গালায় হাতে পায়ে বের হয়৷ "

" ওহ তাই বলো ৷ খেয়ে নেও তারপর আমি তোমায় ঔষধ দিবো তুমি খেয়ে নিও ""

"" আচ্ছা এখন কথা না বলে খেয়ে নেও দুজনে"" 

সবার খাওয়া শেষ হলে সায়মার দেওয়া ঔষধ টা খেয়ে নেয় ছন্দ ৷ 

"" ফুফি তোমার গোসগাছ শেষ?""

" হ্যা ,আমার কি নেওয়ার আছে বল তবে তোর বোন কে দেখ কতো গুলো লাগেস লেগেছে""

"" হি হি হি লাগবে তো ওর ড্রেস কসমেটিক্স বই খাতা জুতো সব নিতেও তো একটা ট্রাক লাগবে ভেবে ছিলাম বাট তিনটে লাগেসে হয়ে গেল!"

"" আপু তুমি ও আম্মুর মতো আমার মজা নিচ্ছো ?" নাক ফুলিয়ে বলল সায়মা..

"" একদম না আমি আমার লক্ষি বনুর সাথে মজা নিতে পারি হ্যা আমার ঘাড়ে কটা মাথা আছে শুনি.."" বলে হাসতে লাগলো ছন্দ সাথে সাগরিকা...

" আচ্ছা অনেক মজা হলো ফুফি এখণ আমাদের বের হতে হবে ৷ "

সাগরিকা কামাল কে দিয়ে সব জিনিস পত্র গাড়িতে তুলে নিলেন ৷ সাগরিকার গাড়ি থাকায় ছন্দ আর গাড়ি আনায় নি৷ তবে অনিল কে ফোন করে সব ঠিক ঠাক করে রাখতে বলেছে ছন্দ ৷ কামাল কে ও বাড়িতে রেখে সায়মা সাগরিকা ছন্দ রওনা দেয়৷ 

পঁচিশ মিনিটের মাথায় গাড়িটা একটা সুন্দর ডুপ্লেক্স বাড়ির সামনে দারায়৷ 

"" ওয়াও আপু বাড়ি টা কি সুন্দর""

"" পছন্দ হয়েছে আমার বনুর"

" হ্যা অনেক , কি সুন্দর বাড়িটা সাদা মারবেল দিয়ে যেন তৈরি ৷ দু পাশে গার্ডেন ৷ গার্ডেনের ঠিক মাঝে গোল ছোট্ট একটা পুল ৷ এক পাশে দোলনা আবার বসার জন্য চারটে চেয়ার আর টেবিল রাখা ৷ সায়মা যাস্ট বাইরে টা দেখে ফিদা ৷ ছন্দ হাসছে সায়মার কান্ড দেখে ৷ ভিতরে গিয়ে ছন্দ তার ফুফি আর সায়মার রুম দেখিয়ে দেয়৷ অনিল আগে থেকে দু জন সারবেন্টের ব্যাবস্তা করে রেখেছিলো যারা ওদের দেখা শুনা করবে৷ আর বাড়ির বাকি কাজ গুলো করবে৷ 

"" ফুফি তোমরা কেউ বাড়ির বাইরে যাবে না ৷ কিছুর প্রয়োজন হলে ওদের বলবে(সারবেন্ট) ওরা আজ থেকে তোমার সব কাজ করে দিবে ৷"

"  আপু তুমি কি এখনি চলে যাবে?"

"" হ্যা বনু আমাকে যেতে হবে ৷ ফুফি আমাকে এখন যেতে হবে ৷ ""

"" সাবধানে যাস সোনা মা..""

"" হুম তোমরা নিজেদের খেয়াল রেখো আর আমি যা বললাম তা মাথায় রাখবে...""

"" ওকে.."

ছন্দ বেরিয়ে গেটের কাছে আসতে দেখে অনিল গাড়ি নিয়ে ওর জন্য অপেক্ষা করছে৷ ছন্দ মুচকি হেসে গাড়িতে উঠে বসে৷ 

"" কুইন একটা কোশ্চেন করবো?""

"" হাম করো তবে গাড়ি সাবধানে চালাও""

"" জ্বি .." অনিল সামনের দিকে নজর দিয়ে আবার বলতে লাগলো" কুইন এরা কারা যাদের জন্য আপনি এতো করছেন?" 

"" একজন আমার ফুফি সাগরিকা বিশ্বাস আর অন্য জন ফুফির মেয়ে সায়মা..."" ফুফি নাম টা শুনে অনিল গাড়ি ব্রেক মারে...

"" ওয়াট অনিল এভাবে গাড়ি ব্রেক মারলে কেন?"

" কুইন আমি যতো টুকু জানি কিংয়ের ভাই বোন দুজনে খুব লোভি ছিলো ৷ শুধু সুযোগ খুজতো কি করে কিং কে জানে শেষ করে সব সম্পত্তি নিজেদের নামে করে নিতে ৷ কিন্তু কড়া গার্ডয়ের কারনে সে স্বপ্ন ওনাদের পূর্রন হয়নি আর তাই রেহানের সাথে পরিকল্পনা করে কিং কে খুন করে পেপারস গুলো নিয়ে পালিয়ে যায় সাব্বির আহাম্মেদ এর অজান্তে ৷ কারন তিনি জানতে পেরেছিলেন সাব্বির আহাম্মেদ তার ভাইয়ের পর তাকে আর তার মেয়ে কে খুন করবে ...

অনিলের কথা শুনে মুহূর্তে ছন্দের মাথাটা যেন ঘুড়ে গেল৷ 

"" অনিল বাবার সব প্রোপার্টির পেপারস কার কাছে?""

"" আমার কাছে যতো টুকু ইনফরমেশন আছে সব পেপারস আপনার ফুফির কাছে ৷ কিং ওনাকে খুব বিশ্বাস করতো ৷ উনি সেই বিশ্বাসের ফায়দা লুটে পেপারস সব নিজের কাছে নিয়ে নেয়৷ সব থেকে বড় কথা হলো সব পেপারস নিজের কাছে রেখেও কোন সুবিধা করতে পারে নি আপনার ফুফি.."

" কিন্তু কেন?"

" কারন কিং সব প্রোপার্টি আপনার নামে করে গেছে আর উইলে এটাও স্পষ্টত উল্লেখ করেছেন ৷ আপনার পঁচিশ বছরের মধ্যে যদি আপনি বিজনেস প্রোপার্টির দেখাশুনা না করেন তাহলে সব ট্রাস্টে চলে যাবে৷ কেউ কিছু  চাইলেও করতে পারবে না৷ ""

"  অনিল গাড়ি ঘুড়িয়ে নেও "

"" শিওর কুইন..." 

ছন্দ কে কিছুক্ষনের মধ্যে আবার ফিরে আসতে দেখে সাগরিকা বেশ অবাক হন ৷ ছন্দ ভিতরে এসে দেখে সাগরিকা সোফায় বসে টি টেবিলের উপর পা  রেখে আঙুল ফল খাচ্ছে ৷ আর সারবেন্ট দুজন মাথা নিচু করে দারিয়ে আছে৷ 

ছন্দ দুজন কে যেতে ইশারা করলে দুজন চলে যায়৷ সাগরিকা পা নামিয়ে মুখে মিষ্টি হাসি নিয়ে ছন্দ কে জ্বিগাসা করে.." সোনা মা তুই আবার ফিরে এলি..?"

"" হ্যা এলাম ফুফি একটা জিনিস নিতে ভূলে গিয়ে ছিলাম..""

"" কি ?"

" পেপারস গুলো যে গুলো তোমার কাছে রাখা .."

"" ও হ্যা তাই তো, আমি এখুনি নিয়ে আসছি .."" সাগরিকা যেতে যেতে থেমে যায় ৷ পিছুনে ঘুরে ছন্দ কে প্রশ্ন করে " সোনা মা তোর বয়স টা যেন এখন কতো?"

"" এইতো ফুফি চব্বিশ বছরে পা আর কয়েকমাস পর... "" হাসি মুখে জবাব দিলো ছন্দ....

"" ওহ আচ্ছা , এখনো এক-দের বছরের অপেক্ষা ধ্যাত.."" বির বির করতে করতে রুমে গেলেন সাগরিকা... পাচঁ মিনিট পর ফিরে এসে ছন্দের হাতে ফাইল গুলো তুলে দেয়৷ 

" নে এখানে সব পেপারস আছে" 

" থ্যাঙ্কিউ ফুফি আসছি ভালো থেকো " 

" তুই ও নিজের দিকে খেয়াল রাখিস সোনা মা .."

ছন্দ রহস্যময় হাসি দিয়ে বেরিয়ে এলো ... 

_____________________________________

৭৮

বর্ণ একাই গাড়ি ড্রাইব করে অফিসে যাচ্ছিলো ৷ কিন্তু মাঝ পথে জ্যামে আটকে পরে ৷ একি রাস্তায় অনিল আর ছন্দ ছিলো ৷ বর্ণ রাগে এদিক ওদিক তাকাতে একটা অজানা ছেলের গাড়িতে ছন্দ কে দেখে বর্ণের রাগ যেন আকাশ ছোয়া বেরে গেল ৷ বর্ণ গাড়ি থেকে নামতে যাবে তখনি জ্যাম ছেড়ে দেয় ৷ অনিল গাড়ি স্টার্ট দিয়ে চলে যায়৷ বর্ণ আর ছন্দ কে ধরতে পারে না৷  

অনিল ছন্দ কে বাড়িতে ড্রপ করে দেয়৷ 

" অনিল রেহান কি ডেড নাকি এখনো বেচে আছে?"

"" কুইন শয়তানটার কই মাছের প্রান এখনো আছে ৷""

"" গ্রেট তাহলে রাতে বেশ মজা হবে ওকে নিজের হাতে শেষ করতে পারবো"" বাকা হেসে বললো ছন্দ...

"" ইয়েস কুইন , তাহলে কি আমি রাতে আসবো?"

"" আমি ফোন করলে এসো "

" ওকে.."
অনিল কে বিদেয় দিয়ে ছন্দ বাড়িতে প্রবেশ করতে কিয়ারা বেগম নানা প্রশ্ন করেন ৷ ছন্দ প্রশ্ন গুলোর উত্তর দিয়ে নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিয়ে গলায় মলম লাগিয়ে নিয়ে ওড়না দিয়ে ভালো করে গলা ঢেকে নিয়ে নিচে আসে৷ 

"" আম্মু ভাইয়া আব্বু  কোথায়?""

" অফিসে , যা তো তোর ভাবি আর খালামনি কে ডেকে নিয়ে আয় আমি হাত ধুয়ে আসছি ততোক্ষনে...""

ছন্দ কিয়ারা বেগমের কথা মতো দুজনকে ডেকে আনে৷ টেবিলে পিনপান নিরবতা৷ কায়রা বেগমের মুখে হাসি নেই ৷ চোখ মুখ শুকিয়ে গেছে ৷ তবে রুনা যেন দিন কে দিন আরো সুন্দর হয়ে উঠছে ৷ বেশ গুলু মুলু হয়ে গেছে পেট ও আরো উচু হয়ে গেছে ৷ 

ছন্দ নিজের মতো করে খেয়ে নিয়ে মুন্নিকে লক্ষ করতে লাগলো ৷ মুন্নি তার মতো খেয়ে যাচ্ছে ৷ 

" সেদিন রাতে কার সাথে কথা বলছিলো মুন্নি? কে সে ব্যাক্তি যার কথা মতো আমার ক্ষতি করতে এসেছে? এই রহস্য গুলো ভেদ তো আমি করবো-ই ৷ কিন্তু আজ বনরাজ কে তো আমি বলে আসিনি নিশ্চয় খুব রেগে আছে৷ রেগে থাকার-ই কথা এভাবে না বলে চলে আসাটা ঠিক হয়নি কিন্তু আমারও তো কিছু করার ছিলো না ৷ বর্ণ কে বললে তখন আমাকে ছাড়তো না ৷ আর আমার আসাটাও জরুলি ছিলো৷ " মনে মনে কথা গুলো বলে টেবিল ছেড়ে উঠে গেল ছন্দ..... 

সন্ধায় কাব্য সাব্বির আহাম্মেদ ড্রইং রুমে বসে চা খাচ্ছে ৷ সাব্বির আহাম্মেদ কে দেখে বেশ খুশি খুশি লাগছে ৷ ছন্দ বাকা চোখে তাকিয়ে সাব্বির আহাম্মেদ কে দেখছে ৷ তার খুশির কারন এখনো ছন্দ ধরতে পারেনি৷ 

"" ছন্দ মা তোমার পড়া শুনা কেমন চলছে..?""

"" ভালো আব্বু কিন্তু আজ তোমাকে বেশ খুশি খুশি লাগছে কারনটা কি হুম..""

"" আজ আব্বু এক কোটি টাকার একটা প্রজেক্ট পেয়েছে তাই এতো খুশি.."" কাব্যের কথাটা ছন্দের কেন যেন বিশ্বাস হলো না ৷ 

___________________________________

ইন চৌধুরী ম্যানশন....

"" বর্নালি বর্ণ কোথায়?""(মিস্টার চৌধুরী)

"" কিছুক্ষন আগে ফিরেছে ৷ মুখ গম্ভির আর প্রচন্ড রেগে  আছে ৷ অফিসে কি কিছু হয়েছে ?"

"" নাহ অফিসে তো সব কিছুই ঠিক ঠাক ছিলো ৷""

"" তাহলে ছেলেটা এতোটা গম্ভির হয়ে আছে কেন..?"

"" মম ড্যাড ভাইয়ার বিয়ে দিলে তো পারো ৷ মেয়েও তোমাদের পছন্দ করা তাহলে দেরি কেন?"(বন্যা)

" দেরি কারন টা হলো সাব্বির ৷ ওই জঘন্য লোকটা যদি জানতে পারে ছন্দ কে আমরা চিনে ফেলেছি তাহলে ছন্দের বিপদ বেরে যাবে ৷ তুমি কি চাও তোমার বেস্টফ্রেন্ডের কোন বিপদ হোক?""

"" নাহ চাই না, ড্যাড মম তোমরা তো জানো না তোমার ছেলে আমার বেস্টুকে অলরেডি বিয়ে করে ফেলেছে জানলে না হার্ড এট্যাক হয় তোমাদের.."" মনে মনে কথা গুলো বলে হাসতে লাগলো...

"" কি বেপার তুই হাসছিস কেন?"

"" এমনি ,ড্যাড আমার পড়া আছে আমি রুমে গেলাম.."" বন্যা উপরে এসে বর্ণের রুমের সামনে থেকে যেতে দেখতে পায় পুরো রুমে যেন কোন ঝড় বয়ে গেছে ৷ প্রত্যেকটা জিনিস পত্র ভাঙাচুরা ৷ বন্যা এগুলো দেখে ভয় পেয়ে যায় ৷ বর্ণের রুম সাউন্ড প্রুফ হওয়ার ভাঙচুরের আওয়াজ নিচ পর্যন্ত পৌছায় না তবে দরজা সামান্য ফাক থাকায় যতো টুকু দেখতে পায় বন্যা তাতে বুজতে পারে যে কিছু একটা হয়েছে৷ বন্যা দোয়া দুরুত পড়ে বর্ণের রুমে ঢুকে পরে৷ রুমে ঢুকে দেখে বর্ণ হাতে ছুড়ি নিয়ে দারিয়ে আছে ৷ বন্যা ভয় পেয়ে বর্ণের হাত থেকে ছুড়িটা ছিনিয়ে নিয়ে ছুড়ে ফেলে দেয়৷ বর্ণ বন্যার দিকে তাকাতে বন্যা ভয় পেয়ে যায় কারন বর্ণের চোখ  মুখ রক্ত জবার মতো লাল হয়ে আছে ৷

"" ভাইয়া তোর কি হয়েছে ? তোর চোখ মুখ এমন লাগছে কেন?""

"" লিভ মি এলোন বন্যা ..""

""কিন্তু ভাইয়া.... বাকিটা বলার পূর্বে বর্ণ চিৎকার করে বললো"" লিভভভভ..." বর্ণের ধমকে কেপেঁ উঠলো বন্যা দ্রুত রুম থেকে বেরিয়ে গেল.....

'' বর্ণ যতোবার নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করছে ঠিক ততোবার অনিলের সাথে গাড়িতে বসে হেসে কথা বলার দৃশ্য মনে পড়ে গেল.. আবার শুরু হলো বর্ণের তান্ডব....

________________

বাইরে  ঝিরি ঝিরি বৃষ্টির মাঝে ঝড়ো হওয়া বইছে ৷ থেমে বাজ পড়ছে৷ কেমন যেন শান্ত পরিবেশ কিন্তু মুহূর্তে ঝড় যেন তার শান্ত পরিবেশ কে অশান্ত করে তুলতে লাগলো ৷ ছন্দ ডিনার কম্পিলিট করে রবীন্দ্র সংঙ্গিত  ছেড়ে উপন্যাস বই নিয়ে বসে পড়ে ৷ একসময় বিদ্যুৎ চলে যায় ছন্দ বাধ্য হয়ে উঠে মোম আর ম্যাচ খুজে মোম জ্বালিয়ে সামনে নিতে লাল টকটকে চোখ জোড়া দেখে ভয় পেয়ে যায় ছন্দ......

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন