বৃষ্টির পর হালকা মৃদু রোদ তার সাথে মিলিয়ে ফুরফুরে বাতাসে মন ছুঁয়ে যাচ্ছে কুহুর। পার্কের চেয়ারে কুহু, মিশু, নুশরা-বুশরা বসে আছে। ইউসুফকে না জানিয়ে শুধু মাত্র মনিশার অনুমতি নিয়েই ছুটেছে তারা। পাশ দিয়ে ছোট একটি ছেলে বাদাম নিয়ে যাচ্ছে পড়নে তার ছেড়ার গেন্জি আর একটি ময়লা পেন্ট। কুহু ছেলেটিকে ডাকলো,,
---" এই বাবু! ১০টাকার বাদাম দেও না?"
ছেলেঠি তার ফোঁকলা দাঁতে হেসে বলল,,
---"জে আফা।"
কুহুর মায়া হলো কেন জানি ছেলেটির দিক। সে জিগ্যেস করলো,,
---" নাম কি তোমার?
---" পিন্টু!"
---" বাসা কই?"
---" চড়েই!"
---" তুমি যে এসব করছো? তোমার বাবা-মা কই? তারা কি করে? এতটুকুন ছেলেকে কেউ কাজে পাঠায়?"
ছেলেটির মুখ ফ্যাকাসে হয়ে গেলো। বলল,,
---" আমার বাপ-মা নাই! চাচার সাথে থাকি। কাম না করলে ভাত দেয় না!"
কুহুর খারাপ লাগলো খুব। বাবা-মা ছাড়া ছেলে-মেয়েদের খুব কষ্ট। কুহু এবার ছেলেটিকে পার্স থেকে ১০০ টাকার একটি নোট দিলো। তা দেখে মিশু বলল,,
---" আরে তুই এত টাকা কেন দিচ্ছিস? এদের কাজই এমন। মিথ্যা বলে টাকা নেয়া!"
ছেলেটির মুখের রঙ উড়ে গেল। মলিন হেসে বলল,,
---" আফা এত টাকা লাগবো না। ১০ টা দেন যাই গা!"
কুহু মিশুকে বলল,,
---" আপু এভাবে বলো না। এর মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে ও মিথ্যা বলছে না। আর ওইতো টাকা চায়ও নি আমি দিচ্ছি। বাবু তুমি রাখো এটা কিছু খেও কেমন?"
ছেলেটি কেঁদে দিলো। আজ কতদিন একটি জামা কিনবে বলে সে টাকা জমাচ্ছিলো। আজ পূর্ণ হলো তার চাহিদা। ছেলেটি হাসতে হাসতে যেতে লাগলো। কুহু তার হাসি দেখে তার খুব ভাল লাগচ্ছে। সেও হাসচ্ছে। কিন্তু সে হাসি রইলো না বেশিক্ষণ হুট করেই ছেলেটির চিৎকার ভেসে আসে। সাদা গেন্জিটা লাল রং ধারণ করে। মুহূর্তেই ছেলেটি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। বাদাম গুলো সব পরে যায় এদিক ও দিক। কুহু স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে যায়। ছেলেটি কাতরাতে থাকে। আশে-পাশে ভীড় জমে যায়। কুহুর সাথে মিশুও থমকে যায়। যখন তার চোখে ধরা পরে। রাস্তার ওপারে একটি লোক গাড়ির ভিতর থেকে আবার গুলি করতে উদ্যোগ নিচ্ছে গান পয়েন্ট কুহুর দিক তাক করে। সে এক চিৎকার দিলো। কুহু তখনি তার দিকে ফিরে গুলিটি তার মাথা এক ইঞ্চি দূরে থেকেই চলে যায়। লোকটি তখন মিশুকে দেখে তাড়াতাড়ি গাড়ি স্টার্ট করে চলে যায়।
কুহু আবার ঝটকা খায় যখন বাচ্চাটির নিথর দেহকে একটি গামছা দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়। কুহু সেখানেই বসে পড়ে। কান্না করতে লাগে। মিশু সামলাতে চায় কিন্তু ব্যর্থ। এদিকে নুশরা কল করে ইউসুফকে।
ইউসুফ সকলের সাথে বসে কথা বলছে। কবির সহ আজ সবাই ইউসুফকে দেখে মিটিমিটি হাসতে লাগলো। ইউসুফ গম্ভীর মুখে তখন তাদের বলে উঠে,,
---" এভাবে হাসার কি আছে? ঘরে কি আপনাদের বউ নেই?"
সবাই সে মুহূর্তে বিব্রত বোধ করলো। কবির তখন মুখে চেপে হাসে। কারণ তার স্যার ভুলেই গেছে বউ তো তার ঘরেই নেই। কিন্তু মজার বিষয়, তার স্যার লজ্জা পাচ্ছে না বরং গর্ব বোধ করেছে এমন ভাব করে কথা বলে যাচ্ছে। তার স্যার যে কি রকম নির্লজ্জ তা আজ বুঝতে পারলো কবির।তার ভাবার মাঝেই ইউসুফের ফোন বেজে উঠলো। যা তার হাতে দিয়া। নুশরার কল দেখে এগিয়ে দিলো ইউসুফের দিক। ইউসুফ ফোন কানে দিতেই ভেসে আসে নুশুরার কান্নার শব্দ।
মনিশাকে ঘাপটি মেরে ধরে এখনো হু হু করে কাঁদছে কুহু। ইউসুফ ঘরে আসতেই কান্না বন্ধ হয়ে গেলো তার। কিন্তু কান্না দমকে কেঁপে কেঁপে উঠছে।
ইউসুফ কন্ঠে রাগ ঢেলে বলল,,
---" বাসা থেকে কোন সাহসে বের হয়েছিলি?"
কুহু চুপ। ভয়ে চোখে জোড়াও নিভু নিভু হয়ে আসচ্ছে।
ইউসুফের কন্ঠ এবার আরো চওড়া হলো,,
---" কথা বলছিস না কেনো? "
মনিশা ইউসুফকে বুঝাতে চাইলো,,
---" আমার কাছে বলে গেছিলো। ওকে কেন বকছিস? ও কি জানত এমন হবে?"
---" আমি জানতাম তাই না করেছিলাম। কিন্তু আমার কথার তো দাম নেই তোমাদের কাছে?এদের বোকামির কারণে ছেলেটির প্রান গেল।"
---" এভাবে বলছিস কেন? ও এমনিতেই ভয়ে আছে!"
---" ভয় পাবারি কথা। চল তুই আমার সাথে উপরে।"
টেনে ধরলো কুহুর হাত জোড়া। কুহু কান্না বেরে গেলো।
---" খালামনি আমি যাবো না।"
---"যেতে তো তোকে হবেই!" কাঁধে তুলে নিলো কুহুকে। আর কুহু চিৎকার করে কেঁদেই গেল। যাবে না কিছুতেই।
কুহু রুমে বসে এখনো ফুপাচ্ছে। ইউসুফ তার পাশে বসলো। এক হাত তাকে আকড়ে ধরে বলল,,
---" কাঁদিস না। আমি তোকে কিছু বলবো না। খারাপ লাগছে বাচ্চাটির জন্য। "
কুহু এবার ইউসুফ বুকে হেলে পড়ে কেঁদে দিলো। ইউসুফ মাথায় হাত বুলিও বলতে লাগলো,,
---"কাঁদিস না। যারা এমন করেছে তাদের আমি ছাড়বো না।"
—————
সেদিনের ঘটনার পর কুহু অনেক ভেঙ্গে পরে। তখন মনিশা ইউসুফকে বলে,,
---" ওকে কদিনের জন্য ঘুরিয়ে আন!"
ইউসুফ তখন বের হচ্ছিল। হাত ঘড়ি পড়তে পড়তে বলল,,
---" মা আমার সময় কই? দেখছোই তো বাবা আউট অফ টাউন। এত কাজ পড়ে আছে এগুলো ছেড়ে কিভাবে কোথাও যাওয়ার প্লেন করি?
মনিশার চোখে-মুখে চিন্তার ছাপ। মেয়েটা কদিনে নেতিয়ে গেছে। উনি বললেন,,
---" তো এক কাজ কর না বাবা, ওকে ওর মার বাসায় দিয়ে আয়। আজ কতদিন সুমি ফোন করে বলছিলো। ও ঘুরে আসুক মনটাও ভালো হবে!"
ইউসুফ সঙ্গে সঙ্গে না করে দিল।বলল,,
---অসম্ভব মা। ওকে আমি আর এক মুহূর্ত চোখে আড়াল করতে চাইন না। সে দিন যেভাবে ওরা হামলা করেছে। সুযোগ পেলে আবার করবে। তারা বুঝে গেছে আমার দূর্বলতা।"
চোখে মুখে হতাশা প্রকাশ পেল ইউসুফ।কিন্তু কুহুর দিক টাও তার ভাবতেই হবে। পরক্ষণেই খ্যাক করে কেশে বলল,,
---" আচ্ছা নিয়ে যাবো ওরে আমি কিন্তু আবার সেদিনি চলে আসবো। বলো গিয়ে ওরে রাজি থাকলে রেডি হতে!"
মনিশা খুশি হলেন। তিনি দ্রুত চলে গেলেন কুহুকে বলতে।
বাহিরে ঝিড়ি ঝিড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। গাড়ির অর্ধেক জানালা খুলে বাহিরের তাকিয়ে আছে কুহু। বৃষ্টি ছাট এসে পড়ছে কুহুর নাকে মুখে। কুহুর সেদিকে খেয়াল নেই কুহু। ইউসুফ ড্রাইভিং করছে। আড় চোখে বার বার সেই দৃশ্য দেখে যাচ্ছে। কতটা অমায়িক লাগচ্ছে কুহুকে। বৃষ্টির ফোঁটা গুলো বিচরণ করছে কুহুর মুখখানায়। ইউসুফের খুব ইচ্ছে হলো কুহুকে একটু ছুঁয়ে দেখতে, আদর করতে, গাল হাত দিয়ে চোখে চোখ রেখে বলতে," ভালবাসি তোরে বাবুইপাখি। এ মনের মনি কোঠায় ""আমার একটাই যে তুই" ছাড়া কেউ নেই।"" হয়ে যা না এ মনের রানী, এ দিলের রানী, এ রাজ্যের এক মাত্র রানী।"
কিন্তু হায় সে পাড়ছে না তা বলতে। না পাড়ছে সে তার অধিকার দেখাতে। ইউসুফ দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লো। কুহুর উদ্দেশ্য বলল,,
---"গ্লাসটা লাগিয়ে দে ঠান্ডা লেগে যাবে!"
কুহু নির্বিকার। যেন কানে পৌঁছে নি কথা। ইউসুফ ভালো করে তাকালো। তার বাবুইপাখিটা ঘুমিয়ে গেছে। ইউসুফ হাসলো। ছোট পাখিটা তার যেখানে সেখানে ঘুমিয়ে যায়। ইউসুফ তার বাম হাতে কুহুর মাথাটা তার কাঁধে হেলে দিলো। জানালা বন্ধ করে দিয়ে বাম হাতেই আকড়ে ধরে রাখলো। আর ডান হাতে গাড়ি চালাতে লাগলো। কুহুর তখন বিড়াল ছানার মতো ইউসুফের বুকের সাথে লেগে গেলো।ইউসুফের ঠোঁট বাঁকা হাসি। কুহু চুলের মাঝে চুমু দিয়ে গাড়ি চালতে মন দিলো।
বাসার কাছে আসতেই কুহুর ঘুম ছুটে গেলো। রাস্তা ভাঙা হওয়া গাড়ির ঝাঁকুনি সেইতে না পেরে চোখে মেলে তাকালো। নিজেকে কারো বুকের মাঝে দেখে চট জলদি সরে গেলো। ইউসুফ তখন হেসে বলল,,
---" ঘুম ভেঙ্গেছে তাহলো তোর! এতটা ঘুম কাতুর কেন তুই। তোকে ঘুমের মাঝে তুলে নিলেও টের পাবি না।"
কুহু ভ্রু কুচকে ফেললো। বলল,,
---" শরীর ক্লান্ত বলে ঘুমিয়ে গেছিলাম আমি মোটেও ঘুম কাতুর না!"
ইউসুফ হাসলো। কুহুর গা জ্বলে গেলো।
---" আমি মোটেও মিথ্যা বলছি না!"
ইউসুফ হাসতেই থাকলো। কুহু তেজি গলায় বলল
---"হাসচ্ছেন কেন?"
ইউসুফ উত্তর দিলো,,
---" তুই রাতে কি কি করিস তার একটাও কি তুই জানিস?"
কুহু সন্ধিহান দৃষ্টিতে তাকালো৷ ইউসুফ গাড়ি সাইডে করে রেখে দু হাত বেঁধে বললো,,
---" আমি যদি এখন বলতে শুরু করি তুই লজ্জায় আমার সামনে বসে থাকতে পাড়বি তো?"
কুহুর এবার একটু ভয় ভয় করলো। না হয় সে একটু বেশিই ঘুম কাতুর তাই বলে এমন কেউতো বলেনি যে সে ঘুমের মাঝে উল্টো পাল্টা কিছু করে। তাও হতে পারে কিছু সে করে একবার তো তার চাচাতো বোন মিমি তার সাথে ঘুমিয়ে ছিলো। সকালে মাটিতে পড়ে এক চিৎকার দিলো। চিৎকারের আওয়াজে ধড়ফড়িয়ে উঠে কুহু। নিচে মিমিকে পড়ে থাকতে দেখে কুহুর চোখ কঁপালে উঠে যায়। সে অবাক হওয়ার ভঙ্গিতে বলে,,
---" বইন তুই নিচে কেন?"
মিমি তখন কটমট করে বলে,,
---" একদম কথা কবি না বেদ্দপ মাইয়া। ঘুমের মাঝে লাথি মাইরা আমারে ফালাইয়া এখন ঢং দেখাইতে আইছোস?"
কুহু অসহায় মুখ করে বলল,,
---" আমি কখন দিলাম লাথি!"
---" আমিকি তোরে মিছা কইতাছি হারামি? মনে থাকবো কেমনে তোর যে মারার মতো ঘুমাস! তোর জন্য আমার কোমড় গেলোরে কুহু। এবার আমায় বিয়ে কে করবে।" মিমির লাষ্ট কথা গুলো কান্না করার ভঙ্গিতে বলল।
কুহু আহত সুরে বলে,,
---" আমি ইচ্ছা করে করি নাই বইন। মাফি দে!"
---" কোথায় হারায় গেলি?"
ইউসুফের ডাকে ভাবনা থেকে বের হয় কুহু। শুকনো ঢুক গিলে ভয় ভয় বলে,," কি করেছি?"
ইউসুফ বলল,,
----" চল তাহলে ফ্ল্যাশব্যাক এ যাই!"
কুহু মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দেয়। ইউসুফ বলতে শুরু করে,,
---" বিয়ের পরের দিন কি সুন্দর করে বালিশ দিয়ে তুই দেয়াল দিলি। তারপর কি করলি...
সেদিন ইউসুফ ফ্রেস হয়ে বিছানায় যেতেই কুহু বলল,,
---" আমি আপনার সাথে ঘুমোবো না।"
ইউসুফ নির্বিকার ভাবে বলল,,
---" এস ইউর উইশ। সোফাও আছে, ফ্লোরে পরিস্কার আছে, নয়তো বেলকনিতে মশার সাথেও ঘুমাতে পারিস!"
কুহু হতাশ হলো। ভেবেছিলো ইউসুফ সোফায় শুবে। কিন্তু এখানে তার উল্টো। আর এদিকে কুহু সোফায় সে ঘুমাতে পারে না। মাটিতে শুলে তার ঠান্ডা লেগে যায়। এখন কি করবে সে? ইউসুফ যে খাটাশ মোটেও তাকে দেয়া দেখিয়ে বলবে না,,
---" বাবুইপাখি আয় আমি বিছানা ছেড়ে দিচ্ছি!"
কুহু ছোট শ্বাস ছাড়লো। সে ঠিক করলো ইউসুফের পাশেই ঘুমুবে। তাই করলো। কিন্তু তার আগে বালিশের দেয়াল দিয়ে দিলো। ইউসুফ তা দেখে মিটিমিটি হেসে বলে,,
---" বউ তাহলে বরে কাছে এসেই গেলো? "
কুহু তখন চোখ রাঙ্গায়। আঙ্গুল তুলে শাসিয়ে বলে,,
--খবরদার কাছে আসচ্ছেন তো। খুন করে ফেলবো?"
ইউসুফ তখন হো হো করে হেসে উঠে বিছানায় গড়াগড়ি খেতে লাগে। বলে,,
---" আমি 'ভ' পাইছি বাবুইবউ।"
কুহু তখন ভেঙ্গচি কেঁটে ইউসুফের দিক পিঠ করে শুয়ে পড়ে। ইউসুফ তখনো কুহুর কর্মকান্ডে নিরবে হেসে যাচ্ছে।
গড়ির কাটা যখন টিংটং করে জানান রাত দিচ্ছে ২ টা বেঁজে গেছে। তখন ইউসুফ তার বুকে ভাড়ি কিছু আবিষ্কার কারে। ঘরে তখন নরম হলদে আলো জালানো। হলদে আলোয় দেখা যাচ্ছে কুহু বালিশ সব নিচে ফেলে ইউসুফের বুকে মাথা পেতে ঠিক বাচ্চাদের মতো শুয়ে আছে। ইউসুফের চোখ তখন কঁপালে। এ যে মেঘ না চাইতেও বৃষ্টি। ইউসুফ তখন কুহু তার বুকে আরো টেনে আনে। কুহু আরো মিশে যায় ইউসুফের সাথে। ইউসুফ সেই হলদে আলোতেই তার বাবুইবউকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখায় ব্যস্ত। কুহু চিকন ঠোঁট ভাড়িপল্লব চোখ জোড়া। গাড়ো ভ্রু গুলুমুলু মুখখানি। সব মিলিয়ে যেন মা শা আল্লাহ। ইউসুফ তাকিয়েই তাকলো। মাঝে মাঝে ছুয়েও দেখতে লাগলো। এ মেয়েটি সজাগ থাকে তখন কাছে ঘেসতেই চায় না। ইউসুফ কাছে আসতে চাইলে দূরে দূরে ভাগে আর এখন? কত কাছে। ইউসুফে বুকে সাথে তার বুকে লেগে আছে। যেন ঢুকেই যাবে তার বুকের ভিতর টায়। ইউসুফ তাই যেন চাইছে। মন বলছে ঢুকে যাক বুকে। কেউ তাহলে ধরতে পারবে না। না কেউ খুতে পারবে তার বাবুইবউকে। শুধু সে ছুবে, আদর করবে, বকবে। সব টুকু অধিকার যেন ইউসুফেরই।
ইউসুফ হাসলো। তার ভাবার মাঝেই কুহু টুপ করে তার বুকে চুমু খেয়ে বসলো।তারপর বিড়বিড় করে বলল,,
---"ভালবাসি!"
ইউসুফ হকচকিয়ে গেলো। পরক্ষণেই হেসে ফেললো। বুকের মাঝে এক শান্তির ঢল নেমে এলো। তার বাবুইবউ তাকে ভালবাসি বলেছে এতে কম কিসে? খুশিতে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে শুয়ে থাকলো ইউসুফ।
ইউসুফের কথা শেষ হতেই কুহু নাক মুখ কুঁচকে বলে উঠলো,,
---"আমি আপনাকে চুমু খেয়েছি নো নেভার! আপনি বানিয়ে বানিয়ে গল্প বলছেন!"
ইউসুফ হেসে ফেললো কুহুর দিক তাকিয়ে,,
---" আমি জানতাম বিশ্বাস করবি না। "
---" অবিশ্বাসের মতো কথা বললে বিশ্বাস করবো কিভাবে? আমি ১০০% শিউর আপনি মিথ্যা বলছেন!"
ইউসুফ মুহূর্তেই গম্ভীর হয়ে গেলো। কুহুর দিক ঝুঁকি থমথম মুখে বলে উঠলো,,
---" আমি মিথ্যা বলি না!"
কুহু স্তম্বিত হলো। সে ভুলেই গেছিলো ইউসুফ না মিথ্যা বলে না পছন্দ করে। সে শুকনো ঢুক গিললো। মনে মনে বলল,,
---" ছিঃ কুহু লাষ্ট পর্যন্ত ঘুমের মাঝে কারো উপর হামলে পড়লি? তুই যে বড্ড বেহায়া হয়ে গেলিরে!"