"কে কে আমার পরিকল্পনা ভেস্তে দিলো তাকে আমার সামনে চাই ৷ তাকে আমি নিজের হাতে শেষ করবো ৷ হাহ তার আগে বেবিকে সব টা জানাতে হবে কিন্তু ও কেন মেসেজের কোন রিপলে দিলো না ? নাহ এবার সহ্য হচ্ছে না আমার ... বলে ফোন বের করে তাকে কল দিলো......
"" হ্যালো সুইটহার্ট কাল তুমি মেসেজের রিপলে দেওনি কেন?""
"" স্যরি আয়ু আমি একটু অসুস্থ ছিলাম তাই তোমার মেসেজের রিপলে দিতে পারি নি""
"" বেবি একটা ব্যাড নিউজ আছে""
"কি ব্যাড নিউজ?"
" বন্দি পালিয়েছে?"
" কিহ এটা কি করে সম্ভব আয়ু তোমার কাছ থেকে ওরা পালালো কি করে?"
"ওরা পালায় নি ওদের কে রেসকিউ করেছে কেউ কিন্তু কে তা এখনো জানা যায় নি""
""তুমি কি করছো বসে বসে ঘোড়ার ঘাস কাটছো? দ্রুত ওদের খুজে বের করো নাহলে আমাদের এতো দিনের প্লান সব শেষ হয়ে যাবে ৷"
"" এই ভয়টা তো আমারও হচ্ছে ৷ ওদের খুজে না পেলে হয়তো আমাদের প্লান সবটা জেনে যাবে তারা.."
"" আমি দেখছি এখানে থেকে কিছু করা যায় কিনা"
" হু আর শোন কাল বিকেলে গার্ডেনে আসবে ওখানে তোমার সাথে দেখা করে বাকি প্লান টা করে নিবো..""
"" ওকে..."
________
৮৯
সাব্বির আহাম্মেদ চায়ের কাঁপ নিয়ে রুমে এসে দেখে কিয়ারা ফোন হাতে দারিয়ে কি যেন ভাবছে ৷ দেখে খুব চিন্তিত দেখাচ্ছে ৷
"" কিয়ারা ওভাবে দারিয়ে কি ভেবে যাচ্ছো ?" সাব্বির আহাম্মেদের কথা শুনে কিয়ারা ভাবনার জগত থেকে বেরিয়ে আসে৷
"" হু না মানে তুমি কিছু বলছো সাবু?"
" হুম বলছি , এই যে তুমি দারিয়ে কি ভাবছো?""
"" কই কিছু না তো""
"" কিন্তু তোমাকে দেখে তো খুব চিন্তিত লাগছে"
"" তেমন কিছু না ৷ আচ্ছা মুন্নি কোথায়?""
"" মুন্নি কে তো রান্না ঘরে এই যে চা করে দিলো আমায়.."
"" একটু পর ভাত খাবে আর এখনি আবার চা ...""
"" কি করবো বলো চা ছাড়াই তো আমার চলেই না তাই ...""
"" আমি রান্না ঘরে যাচ্ছি .."" কথা না বারিয়ে দ্রুত রুম ত্যাগ করে কিয়ারা বেগম.... রান্না ঘরে এসে কিয়ারা মুন্নির হাব ভাব লক্ষ করতে লাগলো৷ কিন্তু মুন্নি কে দেখে মনে হচ্ছে ওর যেন কাছের কেউ মরে গেছে তাই এতো মন মরা হয়ে কাজ করছে ৷ কিয়ারা বেগম মুন্নি কে তার উপস্তিতি বুঝানোর জন্য শুকনো কাশি দিয়ে মুন্নি কে জ্বিগাসা করলো রান্না কতো দুর....
"" এই তো আম্মা রান্না হইয়া গেছে..""
" ভালো তা তোর মন খারাপ কেন ? কি হয়েছে?""
"" কই কিছু হয়নি তো.. আম্মা আমি খাবার গুলা টেবিলে সাজায় রাখতাছি ..""
"" হুম রাখ..."
মুন্নি খাবার গুলো সাজিয়ে রেখে রান্না ঘর পরিষ্কার করে গোছল করতে চলে যায়৷ কিয়ারা মুন্নির হাব ভাব দেখে শিওর হলো মুন্নি এখনো কিছুই জানে না৷ কিয়ারা ঝটপট ফোনে কাউকে মেসেজ করে দিয়ে শাওয়ার নিতে চলে গেল৷
_________
ভরদুপুর বেলা ছাঁদের রেলিং ধরে দারিয়ে আছে ছন্দ ৷ পুরো আকাশে পুজ্ঞ পুজ্ঞ মেঘ ভেষে বেরাচ্ছে৷ সূর্যের জ্বালিয়ে দেওয়া রোদ ভ্যাবশা গরম সব মিলিয়ে অসহ্য কর পরিবেশ কিন্তু তাতে ছন্দের বিশেষ কিছু আসে যায় বলে মনে হয় না ৷ ছন্দ ছাঁদ থেকে দুরের নারকেল গাছ আম গাছ গুলোর দিকে তাকিয়ে আছে৷ মাথায় হাজারো চিন্তা একটা ভূল সিদ্ধান্ত কয়েকটা মানুষের জীবন শেষ করে দিতে পারে বিধায় ছন্দ ভেবে যাচ্ছে ৷
"" হাতে আর সময় নেই শত্রুকে আর বেশি সময় দেওয়া যাবে না ৷ যাতে সে পাল্টা আঘাত করতে পারে৷ পাল্টা আঘাত করার পূর্বে শত্রুকে শেষ করে দিতে হবে৷ না থাকবে বাস আর না বাজবে বাসুরি..." ছন্দ ফোনের ডায়াল লিস্টে অনিলের নাম্বারে কল করে...দুবার রিং বাজতে অনিল কল রিসিব করে...
"" ইয়েস কুইন ..""
"" অনিল যেখান থেকে সব কিছুর শুরু হয়েছিলো আমি চাই সেখানে সব শেষ হোক... ওদের সবাই কে কাল আমি সেখানে দেখতে চাই..""
"" কাজ হয়ে যাবে কুইন কিন্তু মুরাদ ?"
" কমিশনারের সাথে কথা বলে দু দিনের জন্য মুরাদ কে অন্য কোথাও পাঠানোর ব্যাবস্থা কর""
" কুইন ওকে ও আটকে রাখা যেতে তো?"
" বেশি কথা বলছো অনিল "
" স্যরি কুইন.."
ছন্দ কল ডিসকানেক্ট করে কপালের লেপ্টে থাকা ঘামের সাথে চুল গুলো হাত দিয়ে সরিয়ে ধিরে ধিরে নিচে নিজের রুমে চলে গেল৷
_____________
"" বর্ণের বাবা তুমি এই সময়ে বাড়িতে?""
" কেন বর্নালি আমি কি এই সময়ে আসতে পারি না?" রেগে বললো আয়মান চৌধুরী...
"" উফফ আমি কখন এই কথা বললাম আর শুধু শুধু রেগেই বা যাচ্ছো কেন?""
আয়মান চৌধুরী বুজতে পারছে তার রাগ গুলো সে ভূল যায়গায় দেখাচ্ছে ৷ আয়মান চৌধুরী দীর্ঘ শ্বাস ফেলে নরম কণ্ঠে বর্নালি কে বলে" স্যরি বর্নালি আসলে কাজের এতো পেশার যে মাথা ঠিক রাখতে পারনি ৷ "
" ইটস ওকে , তুমি বসো আমি তোমার জন্য এক গ্লাস ঠান্ডা পানি নিয়ে আসছি৷ " বর্ণালি রান্না ঘরে যেতে আয়মান চৌধুরী গলার টাই ঢিলে করে সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে৷ তখনি আয়মানের ফোনটা বেজে ওঠে , বিরক্ত হয়ে কল রিসিব করে কানে ধরতে বুজতে পারে এটা বর্ণের কল...
" ড্যাড অফিসের কাজের জন্য আমাকে কানাডা যেতে হচ্ছে ৷ আর এক ঘন্টা পর আমার ফ্লাইট মম কে জানিয়ে দিও""
"" কবে ফিরবে?""
"" পরশুদিন ড্যাড..""
"" ওকে সাবধানে যেও আর পৌছে আমাকে ফোন করো ""
"" ওকে ড্যাড আমাকে বের হতে হবে রাখছি...""
কল ডিসকানেক্ট করে ফোন টি টেবিলের উপর রাখতে বর্নালি পানি নিয়ে হাজির হয় ৷ আয়মান পানির গ্লাস টা হাতে নিতে নিতে বর্ণালি কে বলে.."" বর্ণ কিছুক্ষন পর দেশের বাইরে যাচ্ছে বিজনেসের কাজে পরশু ফিরে আসবে ৷""
" ওহ আচ্ছা ফ্রেস হয়ে এসো আমি সারবেন্ট কে বলে লান্চ সার্ব করতে বলছি ...""
আয়মান পানি খেয়ে উঠে রুমে চলে যায়৷
আয়মান কোট খুলতে খুলতে আয়মানের দ্বিতীয় ফোন টা বেজে ওঠে ৷ আয়মান এবার প্রচন্ড বিরক্ত হয়ে ফোন হাতে নিয়ে দেখে তার পিএ এর নাম্বার... কল রিসিব করে ..
"" হ্যালো বস আপনাকে এখুনি একবার আমাদের ছোট অফিসে আসছে হবে""
"" কেন কি হয়েছে?"
" বস আপনার সব ইললিগাল অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে সিল করে দিয়েছে পুলিশ আর.... বাকিটা বলার আগে আয়মান চৌধুরী চিৎকার করে উঠলো"" কিহহহহ কি করে হলো আর তুই এখন আমাকে জানাচ্ছিস হাহ ""
"" স্যরি স্যার আমি খবর টা মাত্র পেলাম আর পেয়ে আপনাকে জানিয়েছি...."
"" আর বাকি প্রজেক্ট গুলো যে গুলো আমার পাওয়ার কথা ছিলো?"
" বস সেই AM কোম্পানি সেই প্রজেক্ট গুলো পেয়েছে৷ ""
"" ওয়াট আবার লাখ লাখ টাকার ক্ষতি ... বর্ণ জানে এই নিউজ গুলো?""
"" না বস আপনি তো বর্ন স্যার কে বিজনেসের অন্য সাইট দেখতে দিয়েছেন ৷ এবং ওই সাইটটা বর্ণ স্যার খুব ভালো ভাবে দেখছে ৷ "
"" বর্ণ কে এই সব জানানোর প্রয়োজন নেই ওকে ?"
"" ওকে স্যার....""
"" আর হ্যা বর্ণের পিএ মিহির ওকে বলে দিস ও যেন বর্ণে এই সব না জানায়..""
"" ইয়েস বস""
কথা শেষ হতে আয়মান ফোনটা বিছানায় ছুড়ে মেরে ওয়াশরুমে ঢুকে শাওয়ার অন করে তার নিচে দারিয়ে থাকে ৷ এই মুহূর্তে তার মাথা ঠান্ডা হওয়াটা ভিষন রকমের প্রয়োজন না হলে কে এই অচেনা শত্রু তা ধরা কোন প্রকারে সম্ভবপর নয় ৷
"" আমাকে আগে সেই শত্রু কে খুজে বের করতে হবে যে আমার সেই সব প্রজেক্ট ছিনিয়ে নিচ্ছে৷ ইয়েস SJ এই ব্যাক্তি হচ্ছে সেই শত্রু নাহলে হঠাৎ করে ওই কোম্পানিকে কেন দার করানোর চিন্তা করে শুধু মাত্র আমার পিছুনে লাগবে? "
আয়মান ভেবে নিয়েছে তাকে SJ কে খুজে বের করতে হবে ৷ মাথা ঠান্ডা করে পরবর্তী পরিকল্পনা করে যাচ্ছে আয়মান চৌধুরী ........
____________________________
৯০
ছন্দ লান্চ করে রুমে এসে ফোন চেক করতে দেখে বর্ণের ২৬+ মিসড কল ৷ ছন্দ ঘাবড়ে যায় এতো গুলো মিসড কল দেখে ৷ ছন্দ দ্রুত বর্ণ কে কল ব্যাক করে কিন্তু ফোন সুইচঅফ ৷ ছন্দ কল কাটতে দেখে বর্ণের মেসেজ ভালো করে সময় টা দেখে বুজতে পারে দশ মিনিট আগে পাঠিয়েছে মেসেজ টা বর্ণ ৷
"* Tiyapakhi amk argent kaj er jonno canada jaty holo . tmk call kory cilam bt tmi call recived koro ni . er sasti ami fery asy dibo . ami porsu din firbo .nijar khayal rakho janpakhi .ami poicy tmk call korbo. bye and Love You❣️*
মেসেজ টা পরে ছন্দ কিছুটা নিশ্চিন্ত হয় এটা ভেবে আগামিকাল যা হবে তার বিন্দু বিষয় বর্ণ জানতে পারবে না ৷ কিছুক্ষন আগে অনিল মেসেজ করে জানিয়েছে মুরাদ কে বরিশাল একটা কেসের তদন্ত করতে পাঠিয়েছে ৷ এটা শুনে ছন্দের ঠোটের কোনে রহস্যময় হাসি ফুটে উঠলো ...
সন্ধায় কিয়ারা বেগম মুন্নিকে চিনি আনতে পাড়ার মোরের দোকানে পাঠায় কিন্তু দু ঘন্টায়ও মুন্নি কে ফিরে আসতে না দেখে কিয়ারা বেগম চিন্তায় পরে যায়৷ ছন্দ কিয়ারা বেগমের চোখে মুখের চিন্তা ছাপ দেখে একটা আপেল নিয়ে সোফায় পা দুলাতে দুলাতে খেতে লাগলো ৷ কিয়ারা বেগম ছন্দের এমন ব্যাবহার দেখে মনে মনে ভাষন ক্ষুদ্ধ ৷ তার ইচ্ছে করছে এই মুহূর্তে ছন্দ কে কয়েকটা চর দিতে কিন্তু আফসোস সে তা করতে পারবে না তাহলে তার মা সেজে থাকা ভালো মানুষির মুখোস খুলে যাবে যা এই মুহূর্তে হলে ব্লান্ডার হয়ে যাবে৷ কিয়ারা বেগম নরম কণ্ঠে ছন্দ কে বলতে লাগলো" ছন্দ দেখনা মা মুন্নি কে সে কখন চিনি আনতে পাঠিয়েছি কিন্তু সে মেয়ের আসার নাম গন্ধ আছে ? তুই একটু সামনে এগিয়ে দেখনা মেয়েটা কোথায় গেল?""
"" আচ্ছা দেখছি..." ছন্দ ওড়না টা শরীলে মাথায় সুন্দর করে দিয়ে আপেল হাতে বেরিয়ে পড়ে....
এদিকে কিয়ারা মুন্নির জন্য অস্থির হয়ে পরেছে"" মুন্নি তো এখান কার কিছু চিনে না তাহলে কোথায় গেল? পালিয়ে যায়নি তো? নাহ পালিয়ে যাবে আর কোথায় ফিরে তো এখানে আসতে হবে ৷ একবার বাড়িতে আসুক তারপর ওকে দেখছি আমি..."" রাগে ফুসতে ফুসতে কথা গুলো বলে পানি খেতে লাগলো....
ছন্দ পাড়ার মোড়ের দোকান থেকে চিপস কিনে খেতে খেতে আসতে লাগলো ৷ বাড়িতে ফিরে দেখে কিয়ারা বেগম মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে ৷ তিনি ছন্দ কে দেখতে পেয়ে উঠে দারায়...
—
""ছন্দ মুন্নিকে পেলি?""
"" না আম্মু পুরো এলাকা চসে এলাম কিন্তু মুন্নি কোথাও দেখতে পাইনি..."
ছন্দের কথা শুনে আশাহত হলো কিয়ারা... তারপর রাগে ফস ফস করতে করতে উপরে চলে গেল ৷ ছন্দ কিয়ারা বেগমের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রহস্যময় হাসি দিলো.....
মুন্নিকে আর খুজে পায়নি কিয়ারা বেগম ৷ সাব্বির আহাম্মেদ মুন্নিকে খোজার চেষ্টা করে কিন্তু কোন লাভ হয় না৷
_____
অন্যদিকে আয়মানের লোক SJ কে তাকে খুজে যাচ্ছে কিন্তু অনেক খুজেও কোন ক্লু না পেয়ে হার মেনে নেয়৷ পরেরদিন আয়মান চৌধুরী অফিসের উদ্দেশ্যে বের হয় কিন্তু অর্ধেক পথে আয়মানের গাড়ির চাকা পান্চার হয়ে যায়৷ আয়মান ড্রাইভার কে বকা দিয়ে গাড়ি থেকে নামতে পিছুন থেকে আয়মানের মুখ চেপে ধরে ৷ ধিরে ধিরে আয়মান সেন্সলেস হয়ে যায় ৷
সন্ধা ছয়টা চারিদিকে আস্তে আস্তে অন্ধকারে ঘিড়ে ধরছে ৷ পুরো রুমটা জুরে অন্ধকার বিরাজমান ৷ হঠাৎ কারো হাতে তালিতে রুমের চারিদিকে আলো ছেয়ে গেল ৷ আয়মান চৌধুরী পিট পিট করে চোখ মেলে সামনে অজ্ঞান ব্যাক্তিদের দেখে চমকে যায়...
"" কিয়ারা, কায়রা ,সাব্বির , সাগরিকা, এরা এখানে..? আর আমাকে কে বা তুলে আনলো কার এতো বড় সাহস?"" তখনি কারো পায়ের আওয়াজ পেয়ে সাব্বির আহাম্মেদ ঘাড় ঘুড়িয়ে তাকায়.. হুডি ওয়ালা জেকেট চোখে চশমা মুখে মাক্স পায়ে ব্লাক শু ৷ দেখে বোঝার উপায় নেই এই খোলশের ভিতর কে? ছন্দ ভিতরে ঢুকে তার বাবার শিংহাসনে বসে অনিলকে ইশারা করতে বালতি ভরতি পানি সবার মুখে ঢেলে দেয়৷ সবার জ্ঞান ফিরে আসে নিজেদের এই পোরা বাড়িতে আবিষ্কার করে অবাক হয়ে যায়৷
সাব্বির আহাম্মেদ চোখ মেলে নিজেকে তার মৃত ভাইয়ের পোড়া বাড়িতে দেখে চমকে যায় তারপর চোখ পরে আয়মান চৌধুরীর উপর...
"" আপনি এখানে..?" (সাব্বির আহাম্মেদ )
"" হুম আমাদের এখানে তুলে আনা হয়েছে সাব্বির ""(আয়মান)
"" কিন্তু কে আমাদের তুলে আনলো আর কেন?" (সাগরিকা)
" কারনটা তুমি জানো না ননোদিনি ?" (কিয়ারা)
" তোমরা নিশ্চয় বড় কোন পাপ করেছো নাহলে হঠাৎ কেউ এভাবে তোমাদের তুলে আনতো না ""(কায়রা)
"" চুপ কর হারামজাদী তোর বড় বড় কথা তোর কাছে রাখ নয়লে এখানে তোরে শেষ করে দিবো" সাব্বির আহাম্মেদ কথা টা বলে তেরে কায়রার কাছে যেতে নিলে খেয়াল করে তাদের প্রত প্রত্যেককের হাত পা ইলেকট্রিক তার দিয়ে বাধা....
ছন্দ তাদের ভিতরকার কথা গুলো শুনে হঠাৎ বলে উঠলো "" চোখ মেলে তাকিয়েছে আস্তিনের সাপ গুলো হুম..?" সবার নজর ছন্দের উপর বর্তমানে কিন্তু কেউ ছন্দ কে চিনতে পারছে না ৷
"" আস্তিনের সাপ মানে কে তুই হাহ আর তোর সাহস কি করে হয় আমাদের তুলে আনার ? জানিস তোর অবস্তা আমরা কি করতে পারি?""( সাব্বির )
"" হুম জানি নিজের আপন ভাই ভাবির সাথে যেটা করেছিলে ওটাই করবি ৷ গ্যাস সিলিল্ডার লিক করে দিয়ে সব শেষ করে দিতে...""
ছন্দের কথা শুনে সাব্বির আহাম্মেদ সাথে বাকিরা চুপ হয়ে গেল ৷ কিয়ারা এবার প্রশ্ন করলো..." কে তুমি কি চাও আমাদের থেকে বলো কতো টাকা চাও আমরা দিবো আমাদের ছেড়ে দেও"" ছন্দ কিয়ারার কথা শুনে পাগলের মতো হাসতে লাগলো তার পর বললো"" কতো টাকা আছো তোর কাছে কিয়ারা বল উপস স্যরি ছন্দের সব সম্পত্তি তো এখনো হাতাতে পারিস নি আর না ওর বাবা ইফাজের কোন সম্পত্তি হাতাতে পেরেছিস তাহলে কার কাছ থেকে টাকা নিয়ে আমাকে দিবি তোর প্রেমিক আয়মান চৌধুরীর কাছ থেকে..?" ছন্দের কথায় সাব্বির আহাম্মেদ প্রতিবাদ করে ওঠে..."" একটা বাজে কথা বললে তোর জিব ছিড়ে ফেলবো ৷ আমার কিয়ারার প্রেমিক আয়মান কেন হতে যাবে ওর স্বামী আমি...""
"" রেইলি তো মিসেস কিয়ারা বেগম এন্ড আয়মান চৌধুরী আপনারা আপনাদের সম্পর্কের মুখ খুলবেন নাকি আমি অন্য ব্যাবস্তা নিবো?"
"" আমি কিচ্ছু জানি না " আয়মান চৌধুরী ...
" ফাইন যখন মুখ খুলবেন না তখন মুখ খুলানোর ব্যাবস্থা আমাকে করতে হবে ৷ "" ছন্দ হাতে এক দু বার তালি দিয়ে অনিল ছন্দের হাতে একটা রিমোট দিয়ে পাশে দারায়৷ ছন্দ রিমোর্টের একটা বাটন চেপে ধরতে আয়মান চৌধুরী ইলেকট্রিক শক খেতে লাগলো .. ছন্দ কয়েক সেকেন্ড শক দিয়ে আবার আয়মান কে বলে"" তো মিস্টার চৌধুরী আরো কারেন্ট শক খেতে চান?""
"" নাহ নাহ আমি বলছি আমি আমি আর কিয়ারা দুজন দুজনকে ভালোবাসি কিন্তু এটা শুধু মাত্র আমি আর কিয়ারা জানে তৃতীয় কোন ব্যাক্তি জানে না""
আয়মানের কথা শুনে সাব্বির আহাম্মদ শক্ড...
"" কিয়ারা তু,,তুমি আমাকে ঠকালে?"" (সাব্বির)
"" চুপ করো সাব্বির তোমার মতো একটা প্রতারক ঠকবাজের মুখে এ কথা শোভা পায় না ৷ তুমি কি ভেবেছো আমি কিছু ই জানি না তুমি আমার বোনের স্বামী এটা আমি জানি না ?""
"" আপা তুই জানতি?"
"" হ্যা জানতাম বিয়ের দু বছর পর সবটা জানতে পারি আর আমাকে সবটা আয়মান জানায় ৷ সাব্বিরের প্রতারনা আমায় ভেঙে ফেলেছিলো তখন আয়মান আমার পাশে দারায়৷ "
"" ওয়াও কি বোন কি ভালোবাসা বাহ তোদের কে তো নোবেল ছুড়ে দেয়া উচিত ৷ বাই দ্যা ওয়ে কিয়ারা একটা কথা জানিস তো তোর ছেলে কাব্য কে এতিম আর তোকে বিধবা তোর এই দ্বিতীয় স্বামী করেছে"
ছন্দের কথা শুনে কিয়ারা যেন আকাশ থেকে পড়লো ৷ কিয়ারা এটা জানতো তার স্বামী তার ছোট বোনের ও স্বামী কিন্তু এটা জানতো তার এই দ্বিতীয় স্বামী তাকে বিধবা করেছে৷
"" তুমি আমার স্বামী কে খুন করেছো?"
সাব্বির আহাম্মেদ চুপ কোন কথা বলছে না৷
"" আপা এটা সত্যি এই শয়তানটা দুলাভাই কে খুন করেছে৷ "
কিয়ারা হাত পা ছুটো ছুটি করতে লাগলো তখনি ছন্দ রিমোটের বাটনে প্রেস করতে কিয়ারার কারেন্ট শক্ড লাগে৷ কয়েক সেকেন্ডের জন্য ৷
কিয়ারা শান্ত হয়ে যায়৷ ছন্দ সাগরিকার উদ্দ্যশ্যে বলতে লাগলো"" আপনাকে যতো বলবো ততো কম হবে কতো সুন্দর নিজের ভাই আর ভাবির সরলতা ভালোবাসার সুযোগ নিয়ে সামান্য সম্পত্তির লোভে খুন করতে পিছপা হয় না ""
"" না আমি আফাজ ভাই আর শোহিনি ভাবিকে খুন করেনি আমি তো শুধু... বলতে বলতে থেমে গেল সাগরিকা...
"" শুধু কি শুধু ওদের প্লানে সামিল হয়েছি তাই তো?"
"" হ্যা হ্যা শুধু এতো টুকু , আমাকে আয়মান ভাই শহর ছেড়ে চলে যেতে বলে ৷ তিনি সব ব্যাবস্থা করে দেয় ৷ সেখানে খাওয়া থাকা সবটা ৷ তার পর কিছুদিন আগে আমাকে ফিরে আসতে বলে৷ ""
"" এই সব কিছু তো সম্পত্তি লাভের জন্য তাহলে ছন্দ কে কেন মারতে চাইছিস তোরা?"
"" কিহ ছন্দ কে মারতে চায়ছে কে ?"" সাব্বির আহাম্মেদ রেগে বললো...
"" সেটা নাহয় আপনার দ্বিতীয় স্ত্রী আর আপনার পার্টনার কে জ্বিগাসা করুন...""
সাব্বির আহাম্মেদ তিক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আয়মান আর কিয়ারার দিকে তারা দুজনে চুপ হয়ে আছে৷ তারপর আয়মান বলতে লাগলো"" হ্যা আমি ছন্দ কে শেষ করে দিতে চাইছি ৷ কারন আমি ছন্দ কে আমার ছেলের জীবন থেকে সরাতে চেয়েছি ৷ আমি চেয়েছি ওর কোন সম্পত্তি যেন তোরা না পাস৷ তাই তো কিয়ারাকে ব্যবহার করে মুন্নি কে দিয়ে মেরে ফেলতে চেয়েছি"
"" কিহ তুমি তোমার নিজের স্বার্থের জন্য আমাকে ব্যবহার করেছো?""
"" হ্যা করেছি"" নির্লিপ্ত গলায় বললো আয়মান...
কায়রা কিয়ারা সাব্বির প্রত্যেকে শক্ড ....
"" গাইজ তোমাদের জন্য একটা সার্রপ্রাইজ আছে "" বলে রিমোটের একটা বাটন প্রেস করতে পাশে কালো একটা পর্দা উঠে যায়৷ কিয়ারা আয়মান সাগরিকা তাকাতে চমকে যায়.. কাব্য সায়মা বন্যা প্রত্যেকে বেধে রাখা হয়েছে চেয়ারের সাথে সেন্সলেস অবস্থায়৷ প্রত্যেককে ভাঙা কাচের টুকরো দিয়ে ঘেরা ...
"" সায়মা.."(সাগরিকা)
" কাব্য" (কিয়ারা)
" বন্যা"(আয়মান)
"" বন্যাকে কেন বেধে রেখেছো বন্যা কি দোষ করলো প্লিজ তুমি যেই হও না কেন বন্যাকে ছেড়ে দেও প্লিজ.."(আয়মান)
"" কাব্য কে ছেড়ে দেও তো কিছু করেনি যা করার আমি করেছি আমাকে শাস্তি দেও""(কিয়ারা)
"" সায়মা বাচ্চা মেয়ে ও তো কিছু করেনি তুমি ওকে মেরো না ছেড়ে দেও প্লিজ..."" (সাগরিকা)
এর মাঝে সাব্বির প্রশ্ন করে .."" কে তুমি..? আমাদের কেন বেধে রেখেছো ? আমরা যদি কারোর অপরাধি হয়ে থাকি তাহলে সেটা ছন্দের কাছে .... তুমি কে ?"
ছন্দ উলটো দিকে প্রথমে চশমা তার পর মাক্স সব শেষে জেকেট খুলে সাব্বিরের দিকে ফিরতে প্রত্যেকে শক্টড ....
"" ছ,,ছন্দ তু,,ই?" শক্টড হয়ে
"" হ্যা আমি কি বলছিলে যেন তোমরা কার অপরাধী ছন্দের রাইট নাও ছন্দ এসে গেছে এবার প্রস্তত হও নিজেদের পাপের শাস্তি পাওয়ার জন্য.... "" ছন্দ কায়রার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো "" অপরাধ না করেও অপরাধীকে সাহায্য করা দুটোই সমান ভাবে দোষী দুজনকে সমান শাস্তি পেতে হবে""
"" আমি তৈরি আমাকে যে শাস্তি দিবে আমি মাথা পেতে নিবো কারন হলো আমি অপরাধী আমার স্বামীর কু-কৃর্তী যখন সবার সমুক্ষে তুলে ধরা উচিত ছিলো তখন আমি চুপ ছিলাম এটা অপরাধ , আমাকে শাস্তি পেতে হবে ছন্দ ..."" ছন্দ অনিলের দিকে ইশারা করতে অনিল একটা ইনজেকশন নিয়ে এসে কায়রার কাধে পুশ করে দেয়৷ কয়েক মুহূর্তে কায়রা চোখ বন্ধ করে ফেলে ৷ অনিল গার্ড কে বলে .. "" এটাকে ভাগারে ফেলে আয়..."
"" জ্বি স্যার..."
ছন্দ সাগরিকা কিয়ারা সাব্বির আর আয়মানের চারদিকে হাটতে হাটতে বলতে লাগলো ....