কে বলেছে শ্যামলা মেয়েদের সবার কছে লাঞ্চিত হতে হয়?শ্যামলা মেয়েরা সুন্দর হয় না?নিজের মনেই প্রশ্ন গুলো করল আয়াজ।তার সামনে এক শ্যামবতী কন্যা দাড়িয়ে আছে যাকে কালো শাড়িতে তার কাছে কোনো অপ্সরী থেকে কম লাগছে না।মাথায় খোপায় কাঠগোলাপ গেঁথেছে খুব সুন্দর করে।চোখ দুটো সরাতেই পারছে না আয়াজ।সবকিছু কেমন নেশাময় লাগছে।তাকে কি এই শ্যামবর্ণার নেশা পেয়েছ?
ভ্রু কুঁচকে চেয়ে আছে আরশি।আয়াজের মতিগতি কিছুই বুঝতে পারছে না সে।বৃষ্টির পানি ছিটকে এসে গায়ে লাগছে তার।অথচ এই মিষ্টার নায়ক পুরো দশ মিনিট যাবত তাকিয়েই আছে তার দিকে।চোখের পলক দুটোও ফেলার নাম নেই। এখন তার বিরক্ত+অস্বস্তি দুটোই হচ্ছে। তাই সে উচ্চ স্বরে চিল্লিয়ে ডেকে উঠল----
"নায়ক সাহেব,,,,,,,,,,,,,,,""
এতো জোরে চিল্লানোর আওয়াজ শুনে আরশির দিকে রক্তিম চোখে তাকালো আয়াজ।আরশির চিল্লানোতে রাগ লাগছে না তার বরং তার প্রিয়তা কে দেখতে বাঁধা দেওয়ায় রাগ লাগছে তার।আয়াজের রক্তিম চোখ দেখে ভয়ে চুপসে গেলো আরশি।দৌড়ে গিয়ে গাড়িতে উঠে গেলো।আরশির এমন কান্ড দেখে আয়াজও হেসে গাড়িতে গিয়ে ড্রাইভিং সিটে বসল।
--------------
একটা বড় খোলা মাঠের দিকে গাড়ি থামালো আয়াজ।মাঠটা ঘাসে ভরপুর। সারা রাস্তা জানালা দিয়ে প্রকৃতি দেখতেই ব্যস্ত ছিল আরশি।আর আয়াজ সে একটু পর পরই তার প্রিয়তা কে দেখেছে আড়চোখে। গাড়ি থামাতেই সামনের দিকে তাকাতেই চোখ দুটো খুশিতে ঝকঝক করে উঠল আরশির। বিশেষ মানুষের সাথে বৃষ্টিতে প্রেমবিলাস করার জন্য এর চেয়ে আর পারফেক্ট জায়গা হতেই পারে না।আয়াজ ছাতাটা মেলে গাড়ি থেকে নেমে আরশির কে নামতে ইশারা করল।আয়াজের হাতটা ধরে এক প্রকার লাফ দেওয়ার মতো করেই নেমে পড়ল সে।আরশি নেমে দাঁড়াতেই আয়াজ কোমড়ের এক পাশে হাত রেখে টেনে নিজের বাহুতে তার প্রিয়তাকে আবদ্ধ করে নিলো।খালি কোমড়ে আয়াজের ঠান্ডা হাতের স্পর্শ পেতেই কেঁপে উঠল আরশি।অজস্র শিহরণ ভয়ে গেলো তার সারা শরীরে।নিজের এক হাত নিয়ে ঠেকালো আয়াজের বুকে।অনাসয়ে বলা যায় একই ছাতার নিচে এক জোড়া প্রেমিকযুগল তাদের প্রেমবিলাসে ব্যাস্ত।
আরশিকে নিয়ে সামনের দিকে পা বাড়ালো আয়াজ।হঠাৎ দাড়িয়ে পড়ল আরশি।থমকে গেলো আয়াজও।আরশির মুখের দিকে তাকালো।
---কি হয়েছে প্রিয়তা?
জবাব দিলো না আরশি।নিজের পায়ের জুতা জোড়া খুলে গাড়ির এক পাশে রেখে দিল।আয়াজ কে ও ইশারা করল।
-----নো ওয়ে প্রিয়তা।পায়ে কাঁদা পানি লেগে সমস্যা দেখে দিবে।তুমিও জুতাগুলো পরে নাও।
----প্লিজ প্লিজ নায়ক সাহেব,,
প্রিয়তার এমন আকুতি ভরা আবদার ফেলে দিতে পারল না আয়াজ।নিজের কনভার্স গুলো খুলে একপাশে রেখে দিল সে।টেনে নিজের বাহুতে আবারও আবদ্ধ করে নিলো সে তার প্রিয়তাকে।মাঠের মাঝে এসে দাড়াল দুজন।সবুজ ভেজা ঘাসে আরাম অনুভূত হচ্ছে আরশির।চারদিকে একবার চোখ বুলালো সে।কিছুটা দূরে তাদের মতোই বৃষ্টিতে প্রেমবিলাসে ব্যাস্ত কিছু প্রেমিকযুগল। আর কিছু দূরে বটগাছের নিচে দেখা যাচ্ছে ফুচকা, চটপটি,হালিম,,চায়ের স্টল।চোখ দুটি চকচক করে উঠল আরশির।ভীষণ খুশী লাগছে তার।আজকের দিনটা হয়তো তার জন্য বিশেষ দিন।
ছাতার নিচ থেকে বের হতে গেলে আয়াজ তার হাত দুটো আকড়ে ধরে।
---কোথায় যাচ্ছো?
---ভিজতে,,
---ঠান্ডা লেগে যাবে প্রিয়তা।
---লাগবে না।
বলেই ছুটে বের হয়ে আসল আরশি।রিমঝিম এই বৃষ্টি খুব ভালো লাগছে তার।ভিজে গেছে সে।প্রকৃতির এই সৌন্দর্য খুব উপভোগ করছে সে। আয়াজ উপভোগ করছে তার প্রিয়তার সৌন্দর্য। একদম ভিজে গেছে আরশি।পায়ের দিকে তাকাতেই দেখল নুপুর ও পড়েছে সে।তার প্রিয়তা তার জন্য এতো সুন্দর করে সেজেছে অথচ কোনো প্রশংসাই করল না সে।একটু হাসল আয়াজ।সেও আজ এই বৃষ্টিতে প্রেমবিলাস করতে চায় তার প্রিয়তার সাথে।
-----------
এই শীতল আবহাওয়ায় ঘাড়ে গরম নিশ্বাসের উত্তাপ পেতেই একটু কেঁপে উঠল আরশি।পিছন ফিরে আয়াজ কে দেখল তার দিকে নেশা ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।নেশাময় দৃষ্টি দেখে ঢুক গিলল আরশি।কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলল
--আপপপনি,,,
----হুশশশশশ,,,
আয়াজের এমন স্বর শুনে আরও কেঁপে উঠল আরশি।এ কেমন কম্পন হচ্ছে তার হৃদয়ে।আয়াজ নিজের হাতে এক আঙুল দিয়ে আরশির ভেজা ঠোঁট ছুয়ে দিলো।নিজেকে যথেষ্ট কন্ট্রোল রাখার চেষ্টায় মনের সাথে যুদ্ধ করছে সে।কোনো ভুল করতে চায় না সে এই পাবলিক প্লেসে যতই আরশি তার বউ হোক না কেনো!! তাড়াতাড়ি করে নিজের জ্যাকেট টা আরশির শরীরে জরিয়ে দিল সে।কারণ শাড়ি ভিজে আরশির শরীর একদম দৃশ্যমান যা পাগল করে তুলছে আয়াজ কে।আয়াজের সাদা টি-শার্ট ও ভিজে চুপ চুপ হয়ে আছে।যা নজর কাড়ছে আরশির।নিজেকে নিজেই মনে মনে এই অসভ্যতামির জন্য বকে দিল সে।মাথা নিচু করে নিল।আরশির এমন করার কারণ চোখ এড়ায় নি আয়াজের।ঠোঁট কামড়ে হাসল সে।
--------------
ফুচকার স্টলে বসে আছে আরশি। আয়াজ গিয়েছে চা আনতে।কিছু একটা ভাবতেই ভীষণ হাসি পাচ্ছে তার।একটু আগে সে আবারও আবদার করেছিল ফুচকা খাবার।শুধু তা না আয়াজের সাথেই খেতে চায় আয়াজ না খেলে সে কষ্ট পাবে এমন আবদার করেছিল। আরশির এমন আবদার শুনে মুখটা একদম চুপসে গিয়েছিল বেচারা আয়াজের।রাস্তায় চা খেতে তার প্রবলেম নেই বরং এতে তার অভ্যেস আছে।কিন্তু ফুচকার কথা বলতেই তার মুখ দেখে মনে হলো কেউ তাকে করলার জুস খেতে বলেছে। আয়াজের রিয়াকশন টা মনে পড়তেই আবারও হেসে উঠল আরশি।তখনই একটা হাত তার দিকে এক কাপ চা মুখের সামনে ধরল।মানুষটার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে চায়ের কাপটা নিয়ে চুমুক দিল সে।আয়াজও পাশে বসে পড়ল।ভীষণ ঠান্ডা লাগছিল তার।চা খেয়ে এখন শরীর কিছুটা গরম লাগছে।এর মধ্যেই ফুচকা দিয়ে গেলো।আয়াজ ফুচকার দিকে ভীতু চোখে তাকালো।কিন্তু নিজের প্রিয়তাকে সে কোনোভাবেই কষ্ট দিতে পারবে না।
আরশি আয়াজের মুখের সামনে একটা ফুচকা তুলে ধরতেই কোনোরকম ইতস্তত না করেই সেটা মুখে পুরে নিলো সে।একটু হাসল আরশি।আরেকটা ফুচকা নিয়ে যখনি নিজের মুখে দিতে যাবে সামনের দিকে তাকিয়েই তার চোখ ছানাবড়া,,,
—————
ভয়ে থরথর করে কাঁপছে নিশাদ।সামনেই রক্তিম চোখে তার দিকে তাকিয়ে আছে আয়াজ।আনহা আর আরশি মুখ টিপে হাসছে।তখন আরশির নিশাদ আর আনহা কে একসাথে দেখে চোখ ছানাবড়া হয়নি।হয়েছে সে যখন দেখল নিশাদ একটা ছেলেকে চোখ রাঙিয়ে শাসাচ্ছে আনহা কে উত্যক্ত করাতে।অবাক হলো আরশি।এই ছেলেকে আরশির কাছে একদম সরল মনে হয়েছিল।সে এমন রাগী কখনও ভুলেও মনে হয়নি আরশির।আচ্ছা সবাই কি ভালোবাসার মানুষের বেলায় এমন হয়ে যায়?আয়াজ আরশি কে ফুচকা না খেয়ে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে দেখে ভ্রু কুঁচকাল। তার নজর অনুসরণ করে সামনের দিকে তাকালো। আরশির হাতটা শক্ত করে ধরে এগিয়ে গেলো সামনের দিকে।
----কি কবে ধরে চলছে এইসব?এতো বিশ্বাস করে তোমাকে তিনটা বছর ধরে নিজের পাশে রেখেছি নিজের ভাইয়ের মতো আর তুমি এইসব করে বেড়াচ্ছ আমার বোনের সাথে?(কিছুটা রাগী স্বরে বলল আয়াজ)
ঘেমে একাকার নিশাদ।ভয়ে নয়।এই মানুষটাকে যথেষ্ট সম্মান করে সে।মানুষটা ও তাকে খুব বিশ্বাস করে।কি জবাব দিবে সে?
----সসসসস্যার,,,আপপপনি
কোনো কথাই আসছে না তার মুখ থেকে।গলার মধ্যেই আটকে যাচ্ছে সব।
----তোতলাতে হবে না আর।বিয়ে কবে করছো সেইটা বলো?(মুচকি হেসে বলল আয়াজ)
সাথে ফিক করে হেসে দিল আরশি ও আনহা।খুব বেশি অবাক হলো নিশাদ।মানুষটা কি তাকে তার অপরাধের শাস্তি দিবে না?সে তো অপরাধ করেছে। ভীষণ বড় অপরাধ। বিশ্বাসে আঘাত করেছে।
----কি হলো বিয়ে করবে না আনহা কে?
হাসল নিশাদ।কতো সহজেই মেনে নিল আয়াজ।কিন্তু সে যে বিশ্বাসে আঘাত দিয়েছে?তাই কিছুটা কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে উঠল,,
---আমায় ক্ষমা করবেন স্যার। আমি,,,
কথার মাঝে থামিয়ে দিল আয়াজ।আনহা কে নিজের বাহুতে জরিয়ে বলতে শুরু করল,,,
---বাবা-মা যখন মারা যায় আনহা তখন কেবল পাঁচ বছরের।তখন থেকেই এই অবুঝ শিশুটা কে নিজের হাতে আগলে রেখেছি আমি।বড় করে তুলেছি। তোমাদের সম্পর্কের শুরুর আগে থেকেই সে এসে একদিন বলল তার তোমাকে চায়।সবকিছু তো আর জোর করে হয় না। তাই সেদিন ওকে বুঝিয়ে বলেছিলাম যদি তুমি ওকে ভালোবাসো তবে কোনোরকম ঝামেলা ছাড়াই মেনে নিবো আমি।যখন শুনলাম তুমিও ওকে ভালোবাসো সেদিন ওকে তোমার সাথে সম্পর্কের অনুমতি দিলাম।বলেছিলাম ওকে তোমায় যেনো বলে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসতে।কিন্তু তুমি নাকি বছর দুয়েক সময় চেয়েছিলে।তুমি আমায় সম্মান করো সেটা জানি।তবে কখনও যদি আমার কলিজার টুকরাতে একটু ও আঘাত লেগেছে তবে সেদিনই তোমার শেষ দিন হবে।
ঢুক গিলল নিশাদ।সে ভালো করেই জানে এই হুমকি মিছে মিছে না।একটু হেসে বলল নিশাদ,,
---যে আপনার জন্য নিজের জীবনটাও দিতে পারবে সে কখনও আপনার কলিজায় আঘাত করবে না স্যার।
ভাইকে জরিয়ে ধরে কেঁদে দিল আনহা।এই মানুষটা তার জীবনে বাবা-মার,,ভালো বন্ধুত্বের দায়িত্ব পালন করে গিয়েছে সর্বদা।নিজের ভাইটা কে ও সে অনেকখানি সুখ এনে দিতে চায়।জীবনে অনেক লড়াই করেছে তার ভাইটা।সে ভালো করেই জানে তার ভাইয়ের সুখটা এখন প্রিয়তা নামক মেয়েটার মধ্যেই নিবদ্ধ।
তাদের পাশেই দাড়িয়েই কাদছে আরশি।ভাই বোনের এমন ভালোবাসা সে কখনও দেখে নি। কারণ সে তো একা। চোখে পানি চলে এলো তার নায়ক সাহেবের কথা ভাবতেই। মানুষটাকে সেও সুখে রাখতে চায় ।
হঠাৎ করেই আয়াজ আনহা কে ছুড়ে মারল নিশাদের দিকে।হতভম্ব হয়ে গেলো আনহা।পড়তে গেলেই নিশাদ তাকে আকড়ে ধরল।পাশ থেকেই আরশি কে ধাক্কা মেরে নিচে ফেলে দিল সে।হাতে ব্যাথা পেল আরশি।কি হচ্ছে নিশাদ আরশি আনহা কিছুই বুঝতে পারছে না।খটকা লাগল নিশাদের।যখনি সে কিছু বলতে যাবে তখনই মাটিতে লুটিয়ে পড়ল আয়াজ।থমকে গেলো তিনজনই। রক্তের লাল রঙে রাঙিয়ে উঠল সবুজ ঘাসগুলো।
--------------------------
ধরফরিয়ে উঠে বসল আরশি।নিজেকে হাসপাতালে আবিষ্কার করল।নায়ক সাহেব বলে চিল্লিয়ে উঠল সে।তার চিল্লানোতে একজন নার্স দৌড়ে আসল।রক্তে ফোবিয়া আছে তার।তখন এতো রক্ত দেখে বেহুশ হয়ে গিয়েছিল।বেড থেকে নেমে দাড়াল সে।
----চিল্লাচ্ছেন কেনো আপনি?
আরশির চিতকারে আনহা ও এলো নার্সের পিছু পিছু। নার্সের দিকে না তাকিয়েই আনহার দিকে গেলো আরশি।কাঁদতে কাঁদতে চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে আসছে তার।
----আনহা তোমার ভাইয়য়য়া?
----ভাইয়া কে কেবিনে শিফট করা হয়েছে ভাবি।হাতে লেগেছে গুলি টা তাই ততো একটা রিস্কি হয় নি।
আয়াজের কেবিনের সামনে এসে দাঁড়াল আরশি।একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে ভিতরে ঢুকল। তাকে দেখেই ডান হাত টা বাড়িয়ে কাছে আসতে ইশারা করল আয়াজ।নিশাদ বসেছিল। আরশি কে দেখতে পেয়েই বেড়িয়ে গেলো সে।হাতের ইশারা পেতেই আরশি ঝাপটে পড়ল আয়াজের বুকে।পাগলের মতো কাঁদতে লাগল।সবাইকে হারিয়ে আপন বলতে এখন শুধু আয়াজই আছে তার।আর সেই মানুষটাও তাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছিল।ভাবতেই মনে হয় মরে যাচ্ছে সে।কখন থেকে কেঁদেই যাচ্ছে। আয়াজ আলতো করে নিজের ডান হাতটা আরশির মাথায় রাখল
----রিলাক্স জান।কিছু হয়নি আমার।প্লিজ এইভাবে কেঁদো না।
----আপনার যদি আজ কিছু হয়ে যেতো আমি মরে যেতাম নায়ক সাহেব।
কথাটা বলেই আবারও ঢুকরে কেঁদে উঠল আরশি।আয়াজ নিজের বুকের মাঝে গভীর ভাবে জরিয়ে নিল তাকে। আরশির মাথায় ঠোট ছুয়ে দিল।এই মেয়েটা ঠিক আছে ভাবতেই মনে প্রশান্তি বয়ে যাচ্ছে তার।নিজের ভালোবাসা কে প্রটেক্ট করতে পেরেছে সে।
।
।
তিনদিন পরই আয়াজ কে রিলিজ করে দেওয়া হলো হসপিটাল থেকে।বাড়িতে আসতে বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়েছে তার মিডিয়াদের জন্য। কিন্তু আজ প্রশ্ন উঠেছে যে আরশি তার কে?কেনো একটা মেয়ে কোনো কারণ ছাড়াই তার বাড়িতে থাকছে?একদম স্পষ্ট ভাষায় জবাব দিয়েছিল সে--আরশি আমার বউ।সে ভালোই বুঝতে পেরেছে আরশির দিকে আঙুল তুলতে চাইছিল লোকটা।আর লোকটার এইসব প্রশ্নের পিছনে নিশ্চয়ই অন্য কেউ ছিল।আরশিকে সমাজের সামনে নিজের বউয়ের অধিকার দিবে সে আর কেউ যেনো আঙুল তুলার সুযোগ না পায়।
কাঁধে কারো স্পর্শ পেতেই নিজের ভাবনা থেকে বেরিয়ে এলো আয়াজ।
---এখানে দাঁড়িয়ে আছেন কেনো?খাবার খেয়ে ঔষুধ খেতে হবে তো।আপনার শরীর ভালো না। তাড়াতাড়ি ঘুমানো ও প্রয়োজন।
----আমরা কালই বিয়ে করব প্রিয়তা।(আরশির গালে হাত রেখে বলল আয়াজ).
----কি বলছেন??আপনার হাত তো ঠিক হয়নি।আপনি আগে পুরোপুরি সুস্থ হন।
---না। আমরা কালই বিয়ে করব মানে কালই।তোমার মতামতের প্রয়োজন নেই আমার।(একটু রাগী স্বরে বলল আয়াজ)
হাসল আরশি।অসুস্থ অবস্থায় ও কেমন পাগলামি করছে লোকটা।
---আচ্ছা কালই বিয়ে হবে নায়ক সাহেব।
।
।
।
ডান হাতে ছুড়ি নিয়ে একটা লোকের সামনে বসে আছে আয়াজ। এই লোকটাই গুলি চালিয়েছিল সেদিন।লোকটার ফোন বেজে যাচ্ছে কখন থেকেই।কলটা রিসিভ করে স্পিকারে দিয়ে ইশারা করল কথা বলতে।
---হ্যাললো বস,,,
উচ্চস্বরে হেসে উঠল অপর পাশের লোকটা।লোকটার হাসির আওয়াজ শুনতেই হিংস্র হয়ে উঠল আয়াজের চেহারা।
--কেমন আছিস আয়াজ?আমি জানি আমার লোকটা কে এখন তুই মেরে দিবি।তাতে আমার কোনো আফসোস নেই।তোর প্রিয়তার গায়ে গুলি না লেগে তোর গায়ে লেগেছে তাতেও আমার আফসোস নেই। কিন্তু তুই মরে যাস নি তাতে আমার অনেক অনেক আফসোসসসসস,,,,
কথাটা বলে আবারও হেসে উঠল লোকটা।ফোনটাকে প্রচন্ড জোরে ফ্লোরে ছুড়ে মারল আয়াজ।সামনে বসে থাকা লোকটার গলা বরাবর ছুড়ি চালিয়ে বের হয়ে গেলো সে।