আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুগ্রহ করে গল্প সম্বন্ধে আপনার মতামত অবশ্যই প্রকাশ করবেন। আপনাদের মতামত আমাদের এই ছোট প্রয়াসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগায়। শীঘ্রই আরও নিত্য নতুন গল্প আপডেট আসছে, সঙ্গে থাকুন। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখক/লেখিকা'র নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত গল্পের ডায়েরি’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখক/লেখিকা'র কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় গল্পের ডায়েরি কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ করলে তা কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

অচেনা অতিথি - পর্ব ০৮ - নাফিসা মুনতাহা পরী - ধারাবাহিক গল্প


- "তিতির ফিডার এনে দুধটা নেড়ে অন্য দিকে হয়ে চিনি নিতেই রাহাত এসে তিতিরের কোমড়ে হাত দিতেই রাহাতের হাত মুচড়ে গরম দুধের ভিতর ডুবিয়ে দিল মাহাদ। আর একহাত দিয়ে মুখ চিপে ধরল যাতে আওয়াজ না করতে পারে।"

|

- "অনেকটা ধস্তাধস্তির শব্দে তিতির রাতিশাকে নিয়ে পিছন ফিরতেই মাহাদ রাহাতের হাত দিয়ে দুধটা ফেলে দিয়ে রাহাত কে হাত ধরে টেনে নিয়ে গেল বাহিরে।"

|

- "তিতির বুঝতে পারছেনা কি হয়েছে। এই আমার দুধ ফেলে দিলেন কেন! বাবু এখন কি খাবে?"

|

- "আমি কারো কিছু ফেলে দেইনি। যার জায়গা যেখানে সে সেখানেই অবস্থান করছে। মাহাদের এই কথা শুনে তিতির ভিষন লজ্জা পেয়ে গেলল। সাবিনা বলেই চিৎকার দিয়ে ডেকে উঠল মাহাদ।"

|

-" জ্বী ভাইয়া বলেন বলে সাবিনা এসে দাড়াল। রাহাতের চোখমুখ ততক্ষনে নীল হয়ে গেছে। হাত পুরোটা পুরে গেছে আর সেই হাতই মাহাদ শক্ত করে ধরে আছে। রাহাত অসহায়ের মত তাকিয়ে আছে মাহাদের দিকে কিন্তু কিছু বলতে পারছেনা।"

|

-" সাবিনা ম্যাডামের কি লাগবে গিয়ে দেখ তো বলে মাহাদ রাহাতকে নিয়ে ওর রুমে চলে গেল।"

♦♦♦♦♦♦♦♦

- "মাহাদ রাহাতের হাতে ব্যান্ডেজ করে দিতে দিতে বলল- " কিচেনে কেন গিয়েছিলি?"

|

- "ভাই আমার কথা শোনেন আমি সত্যি বলছি। আমার কোন উদ্দেশ্য ছিল না। আমিতো পানি নিতে কিচেনে গিয়েছিলাম।"

|

- " রাহাতের হাত ব্যান্ডেজ করা অবস্থায় মোচড় দিল মাহাদ। আমি কতটা খারাপ জানিস তো! লাশ গুম করে দিব। তোর বাপ কোনদিনও খুঁজেই পাবেনা তোর লাশ কোথায় আর কি অবস্থায় আছে। যা বলছি তার সঠিক জবাব দে। "

|

-" ভাই তিতিরকে আমার খুব ভাল লাগে বলতেই মাহাদের চোখ লাল হয়ে গেল। যেটা দেখে রাহাত আরও ভয় পেয়ে গেল।

ভাই ভুল হয়ে গেছে এমন কাজ কোনদিনও করবোনা বলে রাহাত কেঁদে ফেলল।"

|

-" আজকের মত মাফ করে দিলাম। ফার্দার যদি আমি এমন কিছু দেখছি তাহলে তোর.......... আশা করি বাঁকিটা আর বলতে হবেনা। আজই বাসা হতে চলে যাবি। তোর মুখও আমি এই বাসায় দেখতে চাইনা। যা এখান থেকে।"

|

-" রাহাত ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে রুম থেকে বের হয়ে গেল। মাহাদ কি জিনিস সেটা রাহাত খুব ভাল করে যানে। একটা মানুষকে খুন করে সেখানেই পুঁতে রেখে তার উপর বসবাস করতেও এক মিনিট ভাববেনা। এটা সেই জিনিসই.....

♦♦♦♦♦♦♦♦

- "সাবিনা আপা উনি কে! এভাবে চিৎকার দিয়ে কথা বলছেন কেন?"

|

- "মাহাদ ভাইয়ার কথা বলছেন! ভাইয়া একটু রাগী স্বভাবের। কিন্তু মনটা অনেক ভাল। বাসার সবার সাথে ভালো মিল কিন্তু বাবা আর রেজওয়ান ভাইয়ার সাথে তার কিছুতেই বনিবনা হয়না। "

|

- "এই সেই মাহাদ! তিতির মাহাদকে এখন অবদি দেখেনি। লোকটাকে দেখাই যায়না। এতদিন হল বাসায় আসছে তবুও চোখের সামনে কখনই আসতে দেখেনি।"

♦♦♦♦♦♦♦♦♦

- "দেওয়ান মো. কামরান আহনাফ তার মা বাতাসি বেওয়ার পাশে বসে আছে। কামরান বাধ্য ছেলের মত মায়ের পাশে বসে আছে।"

|

-" হ্যাঁ রে "কামু" তুই চুলে কলব করিস ক্যান! তোর কি বিয়া করার আবার সখ জাগছে তাই কলব করা ধরেছিস!"

|

- " আম্মা আপনার ছেলে দেশের এতবড় একটা বিজনেসম্যান। তার সুনাম চারদিকে আর আপনি সবার সামনে আমার নাম বিকৃতি করে আমায় কামু বলে ডাকেন! এটা আমার জন্য লজ্জাদায়ক আম্মা। আব্বায় আমার একটা সুন্দর নাম রাখছে সেটা ধরে ডাকলে কি সমস্যা!"

|

- " পরের টাকা মাইরা বড় হইছোস আর আমার কাছে পোদ্দারি দেখাস? আমার খুব ভাল করে জানা আছে কালো টাকার ধান্দা তোর। এই জন্য মাহাদ তোরে দেখতে পারেনা। ও তোকে সব থেকে ভালো চিনে।"

|

- " আম্মা আপনি বরাবরই একটু বেশি কথা বলেন। কাজের মেয়ে সাবিনাকে ডাক দিয়ে বলল - " সাবিনা মায়ের পান ছেচে দাও তো বলে উঠে পড়ল কামরান।"

|

-" ঐ আমি তোরে উঠতে কইছি! কানের গোড়ায় দুইডা বাড়ি দিলে আগের মত এমনি ঠান্ডা হইতি আর সুর সুর করে আমার কাছে বসতি।"

|

- "কাজের মেয়ের সামনে এমন অপদস্ত হওয়াতে কামরান গম্ভীর মুখে চলে গেলেন। এখানে থাকলে তাকে আর বেহুদা কথা শুনতে হত।"

♦♦♦♦♦♦♦♦

- " দাদী স্যারের লগে এমন ব্যবহার কেন করেন! স্যারের তো একটা মান সম্মান বলে তো কিছু আছে নাকি!"

|

- " ঐ চুপ থাক। মায়ের থেকে মাসীর দরদ বেশি। পান ছেচে দিতে কই ছে পান ছেচ না হলে চোখের সামনে থেকে বাইর হ। একদম উপদেশ দিতে আসবি না।"

|

-" বাতাসি বিবির ধমক খেয়ে সাবিনা চুপ হয়ে গেল। এক মনে পান ছেচে দিয়ে উঠে গেল। এই বুড়িটাকে শুধু মাহাদ ভাইয়াই ঠিক করতে পারে। আমাদের কারো সাধ্য নাই এর সাথে লাগা।"

|

- "তিতিরের এখানে কাজ করা তেমন লাগেনা তাই সুয়ে বসেই দিন কাটে। বাবার কথা অনেক মনে পড়ে। একদিন কলও দিয়েছিল কিন্তু মা ফোন ধরাতে আর কথা বলতে পারেনি। রাতিশাকে নিয়েই সময় বেশি কাটে। মেয়েটাও তিতিরকে পেলে আর কিছু চায়না।"

|

-" তিতির আসবো!"

|

- " তিতির দরজায় তাকিয়ে দেখে রেজওয়ান দারিয়ে আছে। জ্বী ভাইয়া আসেন বলে তিতির দাড়িয়ে গেল।"

|

-" আমাকে দেখে দাড়ানোর কি হল বল! সব সময় বেশি সম্মান ভাল দেখায় না। তোমার গ্রামের বাসা কই!"

|

- " কেন ভাইয়া! আসলে অতীতটা আমার তেমন ভালো না তাই অতীত মনে করতে চাচ্ছিনা বলে অন্যদিকে মুখ করে দাড়াল তিতির।"

|

-" রেজওয়ান ভাল করে বুঝল তিতির তার অতীত কারো সাথে শেয়ার করতে চায় না। কিন্তু ওর অতীতটা জানা খুব দরকার। আমি যা অনুমান করছি তা যদি ঠিক হয় তাহলে পুরোই কিস্তিমাত আমার হাতে। এই হবে আমার পরবর্তী গুটি।"

|

- "আচ্ছা তুমি থাকো বলে রেজওয়ান তিতিরের রুম থেকে বের হতেই মৌয়ের সাথে ধাক্কা খেল। মৌ চোখ কোথায় রেখে চলাফেরা করো ! দেখে সুনে চলতে হয় তো?"

|

-" মৌ রেজওয়ানকে সম্মান এবং ভয় দুটোই করে। তাই মিনমিনিয়ে বলল -" তুমি তিতিরের রুমে কেন?"

|

- " তিতির ডেকেছিল আমায়। হয়ত রাতিশাকে দেওয়ার জন্য। আর কেন আসছিলাম এটা কেমন ধরনের প্রশ্ন! আমার বাসা আমি যেখানে খুঁশি সেখানে যাবো। এরকম প্রশ্ন যেন ২য় বার না শুনতে পাই বলে রেজওয়ান বের হয়ে গেল।"

|

- " মৌ রেজওয়ানের সামনে ভেজা বিড়াল কিন্তু তিতিরের কাছে বাঘিনীর থেকে কম নয়। একে ছাড় দিলে এ মাথায় উঠবে বলেই পিছন দিক থেকে সোজা চুলের মুঠি ধরেই একটা হ্যাঁচকা টান দিল। "

|

- "তিতির তাল সামলাতে না পেরেই রাতিশাকে নিয়ে ফ্লোরে পড়ে গেল। রাতিশাও চিৎকার দিয়ে কাঁদতে লাগল। মৌ রাতিশাকে কোলে নিয়েই তিতিরের হাত ধরে টেনে তুলেই ২ টা থাপ্পড় লাগাল। এই রেজওয়ান কে কেন ডাকছিস তোর রুমে! তোর মতলব কি? "

|

- " আপু........ বলতেই রুপালী তিতিরের রুমের সামনে দিয়ে যাচ্ছিল। মৌ রাতিশা কাঁদছে কেন বলতেই মৌ তিতিরকে ইশারা করল কিছু না বলতে।"

|

- " মা তিতির রাতিশাকে নিয়ে পড়ে গিয়েছে তাই রাতিশা কাঁদছে। মৌয়ের কাছ থেকে রাতিশাকে কোলে নিয়ে চলে গেল ওর শাশুড়ী। এবার মৌ তিতিরের দিকে এমন করে তাকাল যেন তিতিরকে গিলে খাবে। "

|

- " আপু আমার ভাগ্যটা খুব খারাপ। আমি না কিছু করলেও দোষটা আমার ঘাড়ে চাপে। আমি ভাইয়াকে ডাকি নাই। উনি এসে আমার গ্রামের বাসা সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। আপনি বরং ফুফুকে ফোন দিন যাতে আমায় নিয়ে যাক।"

|

- " আসলে কি বল তো! তুই নিজেই একটা মসিবত। যেখানেই যাবি সেখানেই মসিবত খাড়া করবি। দাদী আমাকে সব বলে তোর ব্যাপারে সর্তক করে দিয়েছে। তুই ওখানে থাকলে আমার মায়ের ভাত যাবে আর এখানে থাকলে আমার ভাত যাবে। তাই তোর রাস্তা তুই ধর। কাল খাবার টেবিলে বলবি তুই বাসায় যেতে চাস। খবরদার যেন আমার দোষ এখানে না আসে বলে মৌ চলে গেল।"

|

- " তিতিরের কথা বন্ধ হয়ে গেল। আসলেই কি তার জন্য এদের সংসার ভাঙ্গতে যাচ্ছে! না তারা সকলেই নোংরা মনমানুষিকতা সম্পূর্ন মানুষ।"

♦♦♦♦♦♦♦♦♦

-" সন্ধ্যার পর নামায পড়ে তিতির ব্যালকোনিতে নগ্ন পায়ে দাড়িয়ে আছে। ব্যালকুনিতে একটা লজ্জাপতীর গাছ রয়েছে। কেন লজ্জা পতির গাছ শুধু এই ব্যালকুনিতে আছে সেটা ওর জানা নাই। লজ্জাপতীর গায়ে হাত বুলাতেই সব পাতা নিজেকে গুটিয়ে নিল। মাথায় অনেক চিন্তা কাল কথাটা কিভাবে বলবে। বাসায় যাওয়া তো অসম্ভব। কার কাছে যাবে সে। যদি পড়াশুনাটা চালিয়ে যেতে পারতো তাহলে একটা আশাছিল কিন্তু এখন কিভাবে কি করবে বুঝতে পারছেনা।

হঠাৎ তিতিরের চোখ পড়ে অদুরে শান বাঁধানো পুকুর ঘাটে। কেউ একজন সেখানে বসে সিগারেটে টান দিচ্ছে। তিতির অনেকক্ষন ধরে দেখল একে একে কয়েকটা সিগারেট টেনে পুকুরের পানিতে ফেলে দিচ্ছে। কিছুক্ষনের জন্য মনে হচ্ছে পুকুরের পানিতে জোনাকি পোকা স্নান করছে। অপূর্ব সুন্দর একটা দৃশ।

তিতির লোকটাকে দেখার জন্য অনেক চেষ্টা করলো কিন্তু সফল হল না।

|

-" পরের দিন সকালে সবাই নাস্তার টেবিলে শুধু মাহাদ ছাড়া। মাহাদ কখনও কারো সামনে খাবার খায়না। বাতাসি বেওয়া সবার দিকে চেয়ে তারপর সাবিনাকে বলল- " কিরে মাহাদকে খাবার দিয়েছিস!"

|

-" ঘুম ভাঙ্গে নাই তার দাদী। ভাঙ্গলে আমি গিয়ে খাবার দিয়ে আসবো।"

|

- "কিরে রাহাত হাতে এতবড় বান্ডেজ কেন! চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছিস তাই সগ্গলে মিলে তোর হাত ধুয়ে দিছে নাকি!"

|

- " জুস রাহাতের গলায় আটকে গেল। বিষম উঠে মরা মরা অবস্থা। লাবীবা উঠে গিয়ে রাহাতের মাথায় হাত বুলিয়ে বলল- " আস্তে আস্তে খাবার খেতে হয় বাবা।"

|

-" আমি ঠিক আছি ফুফি বলে নিজেকে কন্ট্রোল করল রাহাত। আবার নাস্তায় মনযোগ দিল রাহাত। সত্য কথা যে চোরের পেটে সয় না সেটা রাহাতকে দেখে বোঝা গেল।"

|

- "মৌ তিতিরের দিকে চেয়ে ইশারা করল। তিতির ঢোক গিলে কেবল মুখ খুলবে এমন সময় কামরান বলে উঠল তিতির তুমি যেন কোন ক্লাসে পড়ো! সেদিন মৌয়ের মা তোমার সম্পর্কে বলেছিল কথা মাথায় ছিল।"

|

-" আজও তিতির দাড়িয়ে গেল খাবার ছেড়ে। কেন দাড়ায় তিতির নিজেও জানেনা। হয়তবা কামরান আফনাফের সম্মানে...........

আঙ্কেল মাধ্যমিক পাশ করেছি। আডমিশন আর দেওয়া হয়নি।"

|

-" তুমি আবার দাড়িয়েছ! আর কখনো এমন করবে না। আমার এসব পছন্দ না। কামরান তিতিরের দিকে তকিয়ে বলল রেজাল্ট কি ছিল।"

|

-" এবার মৌ মুখ খুলল। মামা ওর রেজাল্ট খুবই ভাল। মৌ সব কিছু খুলে বলল আসলে তিতির এখানে থাকতে চাচ্ছেনা। ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিবে তাই চলে যেতে চাচ্ছে।"

|

- " রাহাত একটু খোঁজ নাও তো তোমাদের ভার্সিটিতে। যদিও ডেট চলে গেছে তারপরও আমার কথা বলবা তোমার প্রিন্সিপাল স্যারকে। বাঁকিটা আমি ফোন করে জানাবো।

আর তিতির কোথাও যাচ্ছেনা। তোমাকে আমার খুব ভাল লাগছে তিতির। তোমার সমস্ত দায়িত্ব আমি নিলাম আজ থেকে।"

|

-"মৌ দাঁত কিটমিট করে তিতিরের দিকে তাকালো। মৌ করতে চাইছিল কি আর হয়ে গেল কি।

কারো সামনে কিছু বলতেও পারছেনা। "

|

- " রাহাত এবার বিপাকে পড়ে গেল। মাহাদ ভাইয়া জানলে আমাকে আর বাঁচার সুযোগও দিবেনা। ফুফু তিতিরের ব্যাপারে মাহাদ ভাইয়াকে বলেন না উনার তো সব চেনা জানা আছে।"

|

- " লাবীবা চোখ কপালে তুলে কি যেন ইশারা করল আর রাহাত থেমে গেল। কামরান গম্ভীর মুখ নিয়ে উঠে পড়ল নাস্তার টেবিল থেকে। লাবীবা যা ভয় করেছিল তাই হল। আবার মাহাদের ক্ষমতা সম্পর্কে কথাটা কামরানের সামনে তোলা হল।"

♦♦♦♦♦♦♦♦♦

- "কামরানের টাইটা বেঁধে দিচ্ছিল লাবিবা। লাবীবা মাহাদকে বলো তিতিরকে যেন ভার্সিটিতে নিয়ে যায়। আমার থেকে তো তোমার ছেলের নামই বেশি সবখানে। বাঁকি কাজ করে কামরান বের হয়ে গেল। এই বাবা-ছেলের কেন যে বিরোধ সেটা বাসার কেউ যানেনা। সব তো ভালয় চলছিল হঠাৎ কি হতে যে কি হয়ে গেল আল্লাহ্ ভাল জানে।

|

- " লাবীবা তার শাশুড়িকে নিয়ে মাহাদের রুমে গেছে। কারন মাহাদের এত সকালে ঘুম ভাঙ্গেনা। ছেলেকে খুব ভয় পায় লাবীবা। কারন এক ছেলেকে সে হারিয়েছে অন্য ছেলেকে হারালে ওর বেঁচে থাকার স্বাধটাই মরে যাবে।"

♦♦♦♦♦♦♦♦

- " বাতাসি বেওয়া মাহাদের চোখমুখে এক গ্লাস পানি মারতেই মাহাদ ধরপড় করে উঠে বসল। চোখ খুলে সামনে মা আর দাদীকে দেখে চটে গেল।

বাতাসি বিবি আবার আসছো আমার কাছে! বলিনি আমাকে বিরক্ত করবেনা! আবার কেন আসছো।

যেমন বিছানা নষ্ট করলা ঠিক তেমনি তুমিই বিছানা পরিষ্কার করবা বলে বাথরুমে গেল মাহাদ।"

|

- " বৌমা এবার তুমি যাও, আমার জিনিসকে আমি ঠিকি সামলাইতে পারবো বলে লাবীবাকে পাঠিয়ে দিল বাতাসি বেওয়া।

|

-" মাহাদ ফ্রেস হয়ে এসে দেখল দাদী তার বিছানা পরিষ্কার করার মিথ্যা অভিনয় করছে।

মাহাদ এসে দাদীর গায়ে হাত দিতেই বাতাসি বেওয়া ২ হাত দুরে চলে গেল।

|

- " সোয়ামী♥ যখন তখন গায়ে হাত দেন কেন! লজ্জা লাগে তো!"

|

- " ওরে বাব্বা আবার সোয়ামী♥ ডাকা হচ্ছে! আমি দিব নাতে কে হাত দিব । আমার থেকে ভাল কাউকে পাইছো নিশ্চয়।"

|

- " লজ্জা দেন কেন সোয়ামী♥! আমার বুঝি লজ্জা করেনা!"

|

- "এগুলো ঢং ছেড়ে কি বলতে আসছো সেটা বলো। আমি জানি তুমি মতলব ছাড়া এত আদর করতে আসোনা বাতাসি বিবি।"

|

- " তিতিরকে নিয়ে ভার্সিটিতে যা। মেয়েটার এই বয়েসে পড়াশুনা শেষ হয়ে যাবে সেটা তো হতে পারেনা।"

|

- " তোমার যখন এত দরদ হয়েছে তুমি নিয়ে যাওনা। আমি পারবোনা বলে মাহাদ সোফায় গিয়ে সুয়ে পড়ল।

|

- " জানু, ডারলিং, কলিজা বলছি আজকের কাজটা করে দেনা বলে মাহাদের পা টিপতে লাগল বাতাসি।"

|

- " এই বুড়ি তোমায় এত কথা কে শিখিয়েছে! দাদাকে তো মনে হয় জিবনেও এগুলো কথা বলে আদর করোনি আর আজ আমায় বলছো! আমি পারবোনা.

|

- " তোরে আদর দিয়ে বাঁদর আমি বানিয়েছি। আমায় বুড়ি বলিস কোন হুদ্দাই। আমারে দেখে কি তোর বুড়ি বুড়ি লাগে! বাতাসি বিবির মেজাজই খারাপ হয়ে গেল। "

|

- " তুমি বুড়ি হইতে যাবা কেন! তুমিতো আমার ১৪ বছরের কচি বিবি। তুমি কি বুড়ি হতে পারো! যাও তাকে রেডি হতে বলো। ১০ মিনিট সময় দিচ্ছি তার মধ্যই যেন গাড়িতে গিয়ে বসে। বোরখা ছাড়া কিন্তু আমি তাকে নিয়ে যাবোনা বলে মাহাদ কফির মগে চুমুক দিল।

বৌ কফি তো ঠান্ডা হয়ে গেছে; এটা নিয়ে যেতে বলো বলে রেডি হতে লাগল মাহাদ।

♦♦♦♦♦♦♦♦

- ২০ মিনিট হয়ে গেল তবুও মাহাদ আসছেনা। তিতির খানিকটা বোর হয়ে গেল। পাক্কা ২৫ মিনিটের পর মাহাদ এসে গাড়িতে উঠতেই ডাইভার গাড়ী স্টার্ট করল। তিতির মাহাদের চেহারা দেখার আরও একবার চেষ্টা করলো কিন্তু সম্ভব হলো না।

|

-" ১৫ মিনিটের মধ্য ভার্সিটিতে এসে পৌছালো। মাহাদ গাড়ী থেকে নেমেই সোজা প্রিন্সিপ্যালরে কক্ষে চলে গেল।

প্রিন্সিপাল মাহাদকে দেখেই হাসিমুখে বলল কি মাহাদ কেমন আছো। প্রিন্সিপ্যাল মাহাদকে বুকে জড়িয়ে কোলাকুলি করে বলল - " কাজ ছাড়া তো তুমি আসোনা। কোন দরকার ছিল?"

|

- " স্যার আমার খুব আপনজন তার ভর্তির ব্যাপারে আসছি। অত্যান্ত মেধাবী। আমি তার ব্যাপারে কোন সুপারিশ করতে আসিনাই তার যোগ্যতাই তাকে ভর্তি করে নিবেন। তার আডমিশন নেন টিকলে নিবেন না হলে নিবেন না। আমি চাইনা তার কোন ইয়ার লস যাক তাই নিয়ে আসছি।

|

- " এত কিছুর প্রয়োজন ছিলনা মাহাদ, তুমি যেহেতু বলছো তাহলে তাকে নিয়ে আসো। আমি এখানেই পরীক্ষা নেই।"

|

-" ওকে স্যার বলেই মাহাদ একটি মেয়েকে পাঠালো তিতিরকে আনতে। মাহাদ আরো অনেক কথা বলল প্রিন্সিপ্যালের সাথে।

♦♦♦♦♦♦♦♦

- তিতির বসে ঘেমেই যাচ্ছিল। আপু স্যার আপনাকে ডাকছে বলেই তিতিরকে সাথে নিয়ে গেল মেয়েটা। সিড়িতে উঠতে গিয়েই মেয়েটা বলল-"আপু একটা কথা বলব!"

|

-" হুম বলেন.......

|

- " মাহাদ ভাইয়া আপনার কে হোন?"

|

- " আমি ওনার বাসায় থাকি। সোজাসাপ্টা উত্তর দিয়ে প্রিন্সিপ্যালের রুমে ঢুকল তিতির। ৫ জন স্যার অলরেডি বসে আছে সেখানে। কিছুটা নার্ভাস ফিল হচ্ছে। তিতির সামনে যেতেই ওনারা বসতে বলল।

|

- প্রায় দেড় ঘন্টা ধরে তিতিরকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেই চলছে সব স্যাররা মিলে। তিতির স্বাভাবিক ভাবে সব কিছুর জবাব দিয়ে চলছে। অনেক দিনের আশা পুরুন হচ্ছে ওর।

এদিকে মাহাদ কিছুটা টেনশনে আছে তবে পুরোটা বিস্বাস আছে তিতিরের উপর। হয়তবা কিছুদিন চর্চার অভাবে একটু সমস্যা হতে পারে কিন্তু তবুও উত্তীর্ন হবে।

♦♦♦♦♦♦♦♦

- "তিতির আর মাহাদ রেস্টুরেন্টে বসে আছে। তিতির মাহাদকে এই প্রথম দেখল।

অচেনা অতিথী টা কথা দিয়েছিল তিতিরকে যদি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে সিলেক্ট হয় তাহলে সে তিতিরের সামনে আসবে। কথা রেখেছে তার অচেনা অতিথীটা তিতিরের অজান্তেই।

ভাগ্য পাকে আজ দুজনই একই ছাদের নিচে বসবাস করছে। তিতির কি চিনতে পারবে তার এই অচেনা অতিথীকে!"
Author, Publisher & Developer

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

উফ!
মনে হচ্ছে আপনার ইন্টারনেট সংযোগে কিছু সমস্যা আছে। অনুগ্রহ করে আগে আপনার ইন্টারনেটের সংযোগ ঠিক করুন এবং তারপর আবার ব্রাউজিং শুরু করুন৷
AdBlock সনাক্ত করা হয়েছে!
আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি আপনার ব্রাউজারে অ্যাডব্লকিং প্লাগইন ব্যবহার করছেন৷ আমরা আপনাকে আপনার অ্যাডব্লকিং প্লাগইন বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করছি, কারন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমরা যে রাজস্ব আয় করি তা এই ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।