আমার একটাই যে তুই - পর্ব ০১ - সুরাইয়া সাত্তার ঊর্মি - ধারাবাহিক গল্প


--"এখানে দাঁড়িয়ে, দাঁড়িয়ে ছেলেদের মজ্জা দিচ্ছিস? লজ্জা করছে না?"

এমন একটি বাক্য শুনে হতভম্ব আমি। পিছনে ফিরেই দেখতে পাই সেই বিষাক্ত কথার মানুষটি আর কেউ না ইউসুফ ভাইয়া। যে এখন আমার দিক লাল লাল মার্বেলের মতো বিলাই চোখে তাকিয়ে আছে।যে চোখে নিজেকে হাারিয়েছি আমি।তার সেই চোখ গুলো দেখেই ভয়ে চুপসে গেলাম। সাথে সাথে যোগ হলো চোখের পানি।তিনি আবার ধমকে বললেন,,

--"এক্ষুনি ভিতরে যাবি।  এখানে আর একবার দেখলে ঠ্যাং ভেঙ্গে হাতে ধরিয়ে দেবো। "

তার ধমকে কেঁপে উঠি আমি।সাথে সাথে দৌড়ে রুমে চলে আসি।তিনি সব সময় এমন কেন করেন   আমার সাথে?  বুঝি না। লোকটি খুব খারাপ। সাংঘাতিক ধরনের খারাপ। শুধু শুধু বকে আমায়...! এ সব ভেবে কেঁদতে লাগি আমি।  তখনি রুমে ঢুকে মিশু আপি।তিনি হচ্ছেন ইউসুফ ভাইয়ার আদরের এক মাত্র ছোট বোন। আমাকে কান্নারত দেখে আমার পাশে বসে পরেন তিনি। বিচলিত হয়ে চোখ মুছতে মুছতে বলে উঠে,,

--"সোনাপাখি? কান্না করছিস কেন? কি হয়েছে? কেউ বকুনি দিয়েছে? আমার সোনাপাখিকে?

মিশুপির কথায় কান্নার বেগ কমলো না বরং বারলো।হেঁচকি তুলে কান্না করছি আমি। মিশুপি মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,,

--" ভাই বকেছে?"

আমি এবার মাথা উপর নিচ নেড়ে হে জানালাম। সাথে সাথে কান্নার বেগ দিগুন স্পিডে ছুটল। 
তা দেখে আপি আমায় শান্ত করার ট্রাই করতে লাগলো আর জানতে চাইলো কেন কান্না করছি। এক পর্যায় কান্না কিছুটা কমে আসলো। পুরো পুরি থামলো না। তখন সেই কান্নারত ভাঙ্গা গলায় বলে উঠি,,

--"বা..বাহিরে তো..তোমার সে...স্টেজ স..সাজানো হচ্ছে হলুদের, আ..আমি নুশরা, বুশরা, তিথি দাড়িয়ে দে..দেখছিলাম তখনি তোমার সেই লম্বু খাসি, সাইকো ভাইটা এসে সবার সামনে আমাকে বলতে লাগে_(কান্না জড়িত কন্ঠে)আ..আমি  নাকি ছে...ছেলেদের দা...দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মজ্জা দিচ্ছি। বলে হাউমাউ করে কেঁদে আপিকে জড়িয়ে ধরে আবার বললাম,,

--"জা...জানো মিশুপি সে..সেখানে সবাই ছিল তাদের কিচ্ছু বললো না। কিন্তু আ...আমাকে সকলের সামনে অ...অপমান করলো। এ্যা এ্যা এ্যা...!

আবার কান্না করতে লাগলাম।তখনি মিশুপি আমাকে আদুরী সহিত বলল,,

--"কান্না করিস না কুহু! জানিস তো ভাই আমাদের নিয়ে কতটা  সেনসিটিভ। আর তোর উপর একটু বেশী। তুই যে সবার ছোট তাই। বুঝলি?"

--" তাই বলে কি সবার সামনে এভাবে বলবে? আমি এখন তাদের সামনে কেমনে যাই? তুমিই বলো? আমাকে দেখে এখন তারা হাসবে..আর বাঁকা চোখে দেখবে!" 

বলে আবার ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে উঠলাম আমি।মিশুপি আপি আমাকে বুঝাবার ব্যর্থ  চেষ্টা করতে করতে একে বারে বিরক্ত হয়ে বাহিরে চলে গেলেন। আর আমি নাক টেনে কান্না করে যাচ্ছি। কেন করবো না? ;উনি আমার প্রেস্টিজের বারোটা বাজায় দিসে! এখন সবাই হাসবে। সত্যি হাসবে?সাথে বাঁকা কথাও বলবে আর টিটকিরি দিয়ে বলবে,,

--"ওই দেখ যাচ্ছে কুহু। এত বড় মেয়ে বকা খায়? নিশ্চয় চরিত্র সমস্যা আছে  ছিঃ ছিঃ! কি সাংঘাতিক ব্যপার!

এসব ভেবে কান্নার বেগে দিগুন থেকে তিনগুনে ট্রানস্ফার হলো।তখনি ধপাধপ পায়ে রুমে আসলেন ইউসুফ ভাই।সাথে সাথে বন্ধ হয়ে গেল আমার কান্না। তার পাশে আড়াআড়ি ভাবে হাত ভাজ করে দাড়িয়ে মিশুপি। ইউসুফ ভাইয়ার চোখে মুখে বিরক্তি স্পষ্ট। তখনি তিনি রেগে দাঁত কিড়মিড় করে বলতে লাগেন,,

--"ওই ছিঁচকাঁদুনে মাইয়া!  কাঁনদিস কেন? কান্নার প্রতিযোগীতায় বসেছিস? হুম! আর একটা বার যদি কান্নার আওয়াজ আসে তাহলে তোর কণ্ঠনালী শিলি করে দেব। যতসব আজগবি কারবার।"

বলে তিনি ঠিক যেভাবে ধপাধপ পায়ে এসেছিলেন, ঠিক তেমনি বেড়িয়ে গেলেন। আর আমি চোখ  বড় বড় করে তার যাওয়ার দিক তাকিয়ে রইলাম।এটা কি ছিল তাই ভাবচ্ছি। কান্না অটোমেটিকলি বন্ধ।তখনি মিশু আপি পাশ থেকে নিজের মাথায় চাপর দিয়ে বলল,,

--" ভাইকে ডাকলাম কি জন্য? আর সে করলোটা কি? সরি বোনু আমার জন্য আবার বকা খেলি। কই বলে এলাম তোর কান্না থামাতে উল্টো রাগ দেখিয়ে চলে গেল।তুই ঠিকি বলেসি ভাই সত্যি সাইকো।বড় মাপের সাইকো। আচ্ছা বাদদে তো চল আমায় রেডি করাবি না? চল চল কান্না একদম বন্ধ। বাঁচিয়ে রাখ পরশুর জন্য বুঝলি।"

আমি মিশু আপির দিক অসহায় মুখ করে তাকিয়ে মাথা নাড়ালাম।  অর্থাৎ হে বুঝেছি।তারপর আপির সাথে চলে গেলাম আপিকে সাজাতে।আজ মিশুপির হলুদ সন্ধ্যা।পার্লার থেকে লোক এসেছে তার আপিকে সাজাতে ব্যস্ত। নুশরা, বুশরা, তিথিরা রেডি বাকি শুধু আমি।কিন্তু আমার সাজ্জতে ইচ্ছে করছে না। মোটেও না।তখনের কথা মনে পরে দুঃখ দুঃখ লাগচ্ছে। ভাবচ্ছি সেই মানুষ গুলোর সামনে কিভাবে যাই? কিভাবে????
মিশু আপির কথায় আমার ভাবনায় ছেদ পড়ে।তিনি কাউকে বলছেন আমাকে সাজাতে।মেয়েটিও টেনে নিয়ে বসিয়ে দিল আয়নার সামনে। আর সাজাতে লাগলো। সেদিকে কোনো খেয়াল নেই আমার।শুধু মনে পরছে সেদিনের কথা যেদিন এই ইউসুফ নামক ক্রাশে আহত হয়ে দিনের পর পর দিন বাশ খাচ্ছি আমি।এইতো আজ থেকে তিন মাস আগের ঘটনা। সেদিন ছিল বৃষ্টি বিলাসের জন্য আনন্দের দিন।নাহার হচ্ছেন আমার নানু আর ইউসুফ ভাইয়ার দাদুর নাম।তিনি তার ছোট নাতিকে অত্যধিক ভালবাসেন।তাই তিনি খুব খুশি এক যুগ পর বাড়ির ছোট ছেলে বিদেশ থেকে ফিরছে বলে কথা। পুরো বাড়িকে সেদিন রঙ্গিন আলোয় রাঙ্গানো হয়েছিল।বড় মামা শাফিন তার ছেলের স্বাগতম জানানোর জন্য তার দল বলের লোক জন রেডি। যেহেতু বড় মামা মেয়র আর তার ছেলে আসবে বলে পুরো ময়মনসিংহ আনন্দে উৎসবের ঢল নেমে এলো। ছোট মামাও তার ইম্পরট্যান্ট মিটিং ক্যানসেল করিয়েছে। অবশেষে তাদের অপেক্ষার প্রহর শেষ করে হাজির হলো ইউসুফ ভাইয়ার গাড়ি...!

গাড়ি থেকে নেমে আসতেই তার উপর পড়লো ফুলের বর্ষণ। আমি তাকে দেখার সেদিন কি ব্যর্থ চেষ্টাই না করছিলাম। এক গাদা মানুষ ঠেলে ঠুলে যখন দেখতে না পাই তখনি দৌড়ে চলে যাই ছাদের দিক।সেখান থেকে স্পষ্ট দেখতে পাই তার মুখ খানা।সেদিন মুগ্ধ নয়নে দেখছিলাম তাকে। মাথা ভর্তি হালকা কোঁকরানো আর সিল্কি সংমিশ্রণ চুল।পাতলা লালচে ঠোঁট, মনে হচ্ছে লিপস্টিক দেয়া। বিলাই চোখ, টোল পড়া গালে হালকা চাপ দাড়ি।, ফর্শা রং আর থুতনিতে খাঁজ।সব মিলিয়ে মারাত্মক সুন্দর যাকে বলে। আমি তাকে দেখে ক্রাশ খেয়ে বসলাম কয়েক দফা।আমি তার দিকে তখন হা করে দেখছিলাম।শুধু যে আমি দেখছিলাম তা মোটেও না এলাকার মেয়েরাও গিলে খাচছে তাকে।নিজেকে তখন বেহায়া মনে হচ্ছিল তাও চোখ সরাতে পারিনি। মনে মনে প্রশ্ন জাগছিল, আচ্ছা উনি এত সুন্দর কেন? মেয়েরাও তো এত সুন্দর হয় না? তাহলে? কেন উনি এত সুন্দর? কেন? কেন? আচ্ছা উনি যদি মেয়ে হতেন? তাহলে ছেলেদের লাইন লেগে যেত নির্ঘাত? তখন তার অনুভূতি কি হতো? এক দিন জিগেস করবো! তখন কি তিনি রাগ করবেন? না কি বলবেন? মেয়েটি পাগল, বড্ড পাগল। আচ্ছা উনি মেয়ে হলো? তার নাম কি হতো? খায়রুন সুন্দরি?? 

আমি এসব আজগবি প্রশ্ন যখন ভাবচ্ছি তখনি তার সাথে গাড়ি থেকে নেমে আসে এক ইংলিশ মেম। যাকে দেখে আমার খুশি খুশি মুখটা চুপসে গেল! কিন্তু কেন? সাথে বুকে চিন চিন ব্যথা! এসব কেন হচ্ছে? বুকে হাত দিয়ে তাকিয়ে ছিলাম তাদের দিক।মনে হচ্ছি মেইড ফোর ইচ আদার।তখনি ইউসুফ ভাইয়া উপরে তাকালেন। তার চোখের সাথে আমার চোখা চোখি হতেই হারিয়ে গেলাম তার সেই বিড়াল চোখের গভীর অতলে। পলকহীন ভাবে চেয়েছিলাম একে অপরের দিক!কতক্ষণ খেয়াল নেই।তখন তার সেই চোখের চাহনীতে আমার কি হলো ঘুরে গেল চারিদিক। অসাড় হয়ে গেল শরীর। ধীরে ধীরে চোখ দুটি বুজে আসলো। সেখেনেই পরে গেলাম আমি। তারপর আর কিছু মনে নেই আমার।।

—————

কতক্ষন পর চোখ খুলেছিলাম সেদিন ঠাহর করতে পারিনি আমি। চোখ মেলে তাকাতেই সারা রুম জুরে বসে আছে পুরো পরিবার।আর আমার পাশেই বসে আছেন ভ্রু কুচকে ইউসুফ ভাই। তাকে দেখে আবার চমকে উঠি। সাথে সাথে আমার চোখ জোরা বড় বড় হয়ে যায়। আমাকে এভাবে তাকাতে দেখে তিনি সেদিন ভ্রু কুচকে বলেছিলেন,,

--" আমি কি ভুত? না বাঘ, ভাল্লুক?? যে আমার এক চাহনিতে জ্ঞান হারালি??"

সেদিন আমার বলতে ইচ্ছে করছিল।  ইউসুফ ভাইয়া আমি আপনাকে দেখে নয়, আপনার সেই সুন্দর,  গভীর বিড়াল চোখ দুটির অতলে হারিয়েছিলাম, আপনার নেই মায়াবী চোখ দুটো যে আমার হুশ উড়িয়ে বেহুশ করে দিল! এটা কি আমার দোষ বলুন তো?দোষটা তো আপনার। আপনি কেন এত সুন্দর ইউসুফ ভাই আপনি একটু কম সুন্দর হতে পারলেন না? কিন্তু মুখ দিয়ে যেন একটি বাক্য বের হলো না আমার! তার দিক শুধু ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে ছিলাম আমি বেহায়ার মতোন! সত্যি সেদিনের কথা মনে হলে এখনো লজ্জা লজ্জা করে কেমন যেন।

--"ওয়াও"

"ওয়াও" কথাটিতে ভাবনার ফোঁড়ন কাটতে যথেষ্ট ।পাশে দাঁড়িয়ে তিথি মুখে হাত দিয়ে। তার দিক জিগাসু দৃষ্টিতে তাকাতেই সে আমাকে আয়নায় তাকাতে ইশরা করে। আর বলে, 

--"কুহু তোকেতো আসমানে পরি মনে হচ্ছেরে!বোইন আজ যে কেউ তোরে দেখলে জ্ঞান হারাবে।"

তিথির কথায় হাসলাম আমি। মনে মনে বললাম শুধু,

--"আমি তো ওল রেডি এক জনের উপর জ্ঞান হারিয়ে! আর কারো হারালো তা দিয়ে আমার কি কাজ? যার উপর নিজেকে হারিয়েছি সে হারালেই চলে আমার উপর আর কাউকে চাইনা আমি! হোক বেটা সাইকো! প্রেমে পড়লে সব ঠিক ঠাক করে দিব পিটিয়ে।এসব ভাবচ্ছি আর লজ্জায় লাল নীল হচ্ছি।তখনি তিথি ধাক্কা দিতে লাগে।  আর ভ্র কুচকে বলে,,

--"ওই আবার কই হারাইলি? আর এত লজ্জা কেন পাচ্ছিস?কাহিনী কি?"

--" কোনো কাহিনী নাই চলতো!"

--"বুঝি বুঝি সব বুঝি? তলে তলে টম্পু চালাও না? আর আমরে বললে দোষ?"

--" সত্যি এমন কিছু না বোইন চল নিচে যাই হলুদ শুরু হলো বলে!"

তিথি নড়লো না এক পা।  সে আমার দিক সন্দিহান দৃষ্টতে চেয়ে।তা দেখে আমি নিজেই টেনে টুনে নিচে নামিয়ে নিয়ে আসি তাকে। 

হলুদ শুরু হয়েছে অনেকক্ষণ।কিন্তু কোথাও ইউসুফের  দেখা নেই। না আছে সেই ইংলিশ মেমের! নিশ্চিয় চিপকে আছে কোথাও ইউসুফ ভাইয়ার সাথে! একে একে আপিকে বাড়ির সকলেই হলুদ দিচ্ছে শুধু তার দেখা নেই।ছেলের বাড়ি থেকে তত্ত্ব নিয়ে হাজির সবাই!সবার যখন দেয়া শেষ, তখন দৌড়ে গেলাম আমি মিশুপিকে হলুদ মাখাতে। আপিকে হলুদ লাগাচ্ছি। আর চোখ দুটো শুধু খুঁজে যাচ্ছে এদিক সেদিক ইউসুফ ভাইয়াকে। নাহ্ তার পাত্তাই নেই।তখনি পাশ থেকে বড় মা মানে ইউসুফ ভাইয়া আর মিশুপির আম্মু আফরোজা বলে উঠেন,

--" কুহু মা দেখতো ইউসুফ কই! বল যে আমি ডাকচ্ছি! যা জলধি! "

বড় মার কথায় খুশি হয়ে গেলাম আমি মনে মনে হাজারটা ধন্যবাদ দিয়ে তাকে বের হলাম খুঁজতে। পুরো বাড়ি খুঁজে না পেয়ে চলে গেলাম ছাঁদে সেখানেও নেই। ছাঁদ থেকে নিচের দিক উঁকি দিতেই চোখে পড়লো তাকে। বাহিরে দাড়িয়ে কথা বলছেন ফোনে। সাদা পাঞ্জাবিতে কি মারাত্মক না লাগছে তাকে ।সাথে সাথে ছুটে গেলাম সেখানে। ও মা নেই! গেল কই? আচ্ছা উনি কি আমার সাথে হাইড এন্ড সিক খেলছেন? আমি খুঁজবো তাকে,  আর ধরা পরলেই বলবো তিল্লা। এসব ভাবতে ভাবতেই কখন যে অনেক এগিয়ে এসে পড়েছি বুজতেই পারি নাই। তাই পিছনে মুরে যেই যেতে নেই অমনি পথ আটকায় এলাকার বখাটে ছেলে পূর্ণ আর তার দল বল। তাদের দেখে হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসতে লাগে আমার। ছেলেটি মোটেও ভাল না। এ পর্যন্ত পাঁচটা রেপ আর ছয়টা খুন করেছে। প্রুফ না পাওয়ায় ধরতে পারেনি পুলিশ তাকে।দু, তিন মাস যাবত আমার পিছনে পরে সে। তাই বাসা থেকে বের হওয়া বন্ধ করে দি।  বেশী প্রয়োজন হলে বড়দের সাথে বাহিরে যাই। আর আজ সেই খচ্চরের কাছে নিজ থেকে ধরা দিয়ে দিলাম মনোর অজানতেই। পূর্ন আমার দিক তাকিয়ে শরীর দুলিয়ে বিশ্রী হেসে দিল।সে প্রচুর পান খায়।পানের কষ হাসার সাথে সাথে ঠোঁট বয়ে পড়ছে দেখেই ঘেন্না ঘেন্না করছে। সে হাসি থামালো আর বলল,,

--" কেমন আছো সুন্দরী! লাষ্ট পর্যন্ত খাঁচা থেকে বের হলে তাহলে! আজতো তোমায় হট লাগচ্ছে, পুরাই মাখোন।"

বলে হো হো করে হাসতে লাগলো।সাথে তার সঙ্গ পঙ্গ রাও।তাদের এমন ভাবে দেখে ভয়ে হাত পা কাপতে লাগে আমার। সাহস করে তাদের পাশ কাঁটাতেই আমার সামনে হাত দিয়ে পথ আটকালো আর বলল,

--" আ আ আ..! কই যাও বেবী?  আজ তো যেতে দিচ্ছি না! "

বলে আবার হাসতে লাগে। তাদের এসব দেখে কান্না করে দেই আমি।  হাত জোর করে বলি,

--" প...প্লীজ য...যেতে দিন আ...আমায়! আমি ব..বাসায় যাবো!

--"হে বেবী যাবে তো আমার বাসায়! আমার সাথে রাত্রিযাপন করতে! হে হে হে"

এমন বিশ্রী কথা শুনে মেজাজ বিগরে গেল আমার।আর যাই হোক মেয়েদের মান সম্মানে হাত দিলে এই ডোর ভয় থাকে না।তাই রাগের চোটে এক ধলা থুতু ছুড়ে মারি তার দিক।আর বলতে লাগি,,

--"তোর মতো কুত্তাকে না আমি আমার কুত্তার ঘরে জায়গা দেই! আবার দেখে রাত্রিযাপনের স্বপ্ন।"

সে মুখের থুতু মুছে কিড়মিড়ি করে আমার দিক তাকিয়ে বলল,

--"কাজটা ভাল করলি না তুই!  ওই রমিন, সেলিম ধর ওরে,  ওর তেজ এই রাস্তায় কমামু আমি।"

আমি এসব শুনে গাভরে যাই। সাথে সাথে পিছনে যেতে নেই অমনি ধরে ফেলে তারা আমায়।আর পূর্ন আমার গায় হাত দিতে নিতেই  হুংকার করে উঠে পিছন থেকে কেউ..! পিছনে তাকিয়ে দেখি...!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন