আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুগ্রহ করে গল্প সম্বন্ধে আপনার মতামত অবশ্যই প্রকাশ করবেন। আপনাদের মতামত আমাদের এই ছোট প্রয়াসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগায়। শীঘ্রই আরও নিত্য নতুন গল্প আপডেট আসছে, সঙ্গে থাকুন। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখক/লেখিকা'র নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত গল্পের ডায়েরি’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখক/লেখিকা'র কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় গল্পের ডায়েরি কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ করলে তা কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

আমার অন্তরালে তুমি - পর্ব ০১ - সিজন ২ - ফারহানা ছবি - ধারাবাহিক গল্প


ধাড়ালো ছুড়ি দিয়ে হাতের আঙ্গুলের ফাঁকে ফাঁকে আঘাত করে খেলে যাচ্ছে ছন্দ ৷ পাশে অনিল ভিতু চোখে তাকিয়ে আছে ছন্দের দিকে... ছন্দ ছুড়ি চালাতে চালাতে অনিল কে প্রশ্ন করলো..." মিস্টার ডেবিডের ডিল কনর্ফাম হয়েছে?""

"" নো কুইন মিস্টার ডেবিড কোন কিছুর বিনিময়ে ডিল টা করতে রাজি হচ্ছে না ৷ "" অনিলের মুখে না শব্দটা শুনে ছন্দের হাত থেমে যায় ৷ ভয়ে চমকে ওঠে অনিল ৷ গত তিন মাস আগের  মানুষটার সাথে আজকের এই মানুষ টাকে অনিল একদমি চিনতে পারে না ৷ তিন মাস আগের ছন্দ ছিলো কোমল হৃদয়ের আর আজকের ছন্দ যেন কোন কঠিন ধাতু দিয়ে তৈরি না আছে কোন হৃদয় আর না আছে কোন কোমলতা সবটাই রুক্ষতায় বিরাজমান যেন কোন মরুভূমি যেখানে কোন পানির চিন্হ পর্যন্ত নেই৷ 

ছন্দ হাতের ছুড়িটা নিয়ে ছুড়ে মেরে অনিলের দিকে আগুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে উঠলো "" না শব্দটা আমার ডিকশনারীতে নেই এটা তুই খুব ভালো করে জানিস অনিল""

" ইয়েস কুইন বাট ডেবিড কিছুতেই রাজি হচ্ছে না ৷ ""

"" ঠিক পাঁচ মিনিটের ভিতর আমি ডেবিড কে আমার সামনে দেখতে চাই ""

"" ওকে কুইন..."" অনিল এক সেকেন্ড লেট না করে ৷ ফোনে কাউকে ফোন করে তার ঠিক চার মিনিট ঊনষাট সেকেন্ডের ভিতর ডেবিড ছন্দের সামনে হাটু গেরে বসে আছে... ডেবিড হ্যা করে তাকিয়ে আছে ছন্দের দিকে ওয়াইট শার্ট তার উপর ব্লাক কোট , ব্লাক জিন্স , চুল গুলো উচু করে ঝুটি বাধা , কানে বড় গোল ইয়ারিং , হাতে রিচওয়াচ , পায়ে পেন্সিল সু তার চেয়ে বড় কথা ডেবিড ছন্দের চোখের দিকে তাকিয়ে যেন সম্মহোন হয়ে গেছে ৷ ডেবিড তার পয়ত্রিশ বছরে এতো সুন্দর মায়াবী চোখ দেখেনি বলে তার ধারনা ৷ এক কথা এক বার চোখের দিকে তাকালে ছন্দের মায়াবী  চোখের গভিরতায় হারিয়ে যায়৷ 

 ছন্দ তার হাতের গরম টকবগে ফুটানো কফিটা ডেবিডের হাতে ঢেলে দিতে ডেবিড বাস্তবে ফিরে আসে৷ তখনি ছন্দ ডেবিডের গাল চেপে ধরে বলে..."" আমি না শব্দ শুনতে অভস্ত নই ডেবিড ৷ ডিল টা আমার চাই মানে চাই ""

"" আপনি কি বিজনেসওম্যান নাকি কোন মাফিয়া লেডি ?এভাবে কেউ ডিলের কথা বলার জন্য তুলে আনে ? আর গরম কফি ওটার কথা না হয় বাদ দিলাম...."

ছন্দ ডেবিড কে বাংলায় কথা বলতে দেখে বেশ অবাক হয় ৷ 

"" মিস্টার ডেবিট আপনি বাংলা ভাষা বলতে পারেন?""(অনিল)

"" ইয়েস অফকোর্স কজ আমার মম একজন বাংলাদেশি ছিলো আর ড্যাড আমেরিকান ৷ মম আমাকে ছোট বেলা থেকে বাংলা ভাষা শিখিয়ে এসেছে ৷ "

"" অনিল ...""

"" ইয়েস কুইন "" অনিল পেপারস গুলো টেবিলের উপর রাখতে ছন্দ পেন মিস্টার ডেবিডের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে"" সাইন ইট""

ডেবিড বিনা বাক্যে সাইন করে দেয়৷ ডেবিড ছন্দ সম্পর্কে সব খোজ খবর নিয়ে এসেছে ৷ ছন্দ যে লন্ডনের বড় বড় বিজনেস ম্যানদের হাতের আঙ্গুলের ইশারায় নাচায় এটা খুব ভালো করেই জানে ৷ ছন্দ যে কোন সাধারন বিজনেসওম্যান নয় এটাও খুব ভালো করে জানে মিস্টার ডেবিড ... 

সাইন করার পর দুজন লোক ফাস্ট এইড বক্স এনে ডেবিডের পোড়া হাতে  মলম লাগিয়ে দিয়ে চলে যায়৷ ডেবিড কে ছন্দ সোফায় বসার অনুমতি দিতে ডেবিড সোফায় বসতে বসতে ছন্দ কে বলতে লাগলো" মিস ছন্দ আপনি যে ডিল টা করেছেন ওটা যে এ দেশের কাজ নয় এটা আপনি নিশ্চয় জানেন..? এটার জন্য আপনাকে বাংলাদেশে যেতে হবে ৷ ওখানে রাজধানীতে সব চেয়ে বড় কন্সট্রাকশনের কাজ হবে আর সেটা আপনার আন্ডারে ৷ এখানে আপনার লাভ মাত্র দুইশ কোটি টাকা....""

ছন্দ তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মিস্টার ডেবিডের দিকে কোন কথাই বলছে না মিস্টার ডেবিডের সাথে ৷ 

"" মিস ছন্দ আই সুড লিভ নাউ ..." 
মিস্টার ডেবিড দ্রুত উঠে যেতে নিলে ছন্দ পিছুন থেকে মিস্টার ডেবিটের পায়ে শুট করে ৷ 

"" আমার অনুমতি বিহিন একটা প্রানি ও এখান থেকে একচুল নরতে পারে না মিস্টার ডেবিড ৷ সেখানে আপনি একটু বেশি সাহস দেখিয়ে ফেলেছিস আর কুইনের সংবিধানে এর শাস্তি হচ্ছে মৃত্যু দন্ড ...."" কথা শেষ করে ছন্দের হাতে থাকা রিভালবারের আর একটা গুলি মিস্টার ডেবিডের কপাল ঢুকে যায়.... 

অনিল একটা শুকনো ঢোক গিয়ে সোজা হয়ে দারিয়ে আছে তখনি একজন ছোট্ট  বাচ্চা একটা শিশুকে কোলে নিয়ে রুমে প্রবেশ করে বলতে লাগলো"" ছন্দ রানী সন্ধা হতে চল্লো তোমার নিশ্চয় মনে আছে আজ আমাদের এক সাথে ডিনার করার কথা...?""

রুনার কথা শুনে ছন্দ হাতের রিভালবার টা কোমরে গুজে নিয়ে হাত সেনিটাইজার করে নিয়ে রুনার কোল থেকে কিরন কে কোলে তুলে নিয়ে আদর করতে লাগলো...

"" ছন্দ রানী আমি তোমাকে কিছু বলেছি?""

"" শুনেছি ভাবি , ভাইয়া কোথায়?""

"" কাব্য সকালে বিজনেসের কাজে কানাডা গিয়েছে তোমাকে ফোন করেছিলো কিন্তু তুমি রিসিব করোনি""

"" আমি রাতে ঠিক সময়ে পৌছে যাবো ভাবি তুমি কিরন কে নিয়ে বাড়িতে ফিরে যাও.....""

"" কায়রা খালামনি আজ তোর জন্য তোর পছন্দ মত রান্না করেছে ৷ আর সায়মা তোর জন্য অপেক্ষা করছে তুই নাকি ওকে বলেছিস ওকে নাকি অনেক টেডি বিয়ার এনে দিবি? তার জন্য দুপুর থেকে কেদেঁ যাচ্ছে৷""

ছন্দ তার ভাবি কে কিছু বললো না অনিলের দিকে তাকাতে অনিল বুঝে যায় তাকে কি করতে হবে ৷ অনিল দ্রুত ফোনে কাউকে মেসেজ করে ৷ 

"" ভাবি টেডিবিয়ার কিছুক্ষনের মধ্যে সায়মার কাছে পৌছে যাবে ৷ আর ওর ডক্টর আজ ওকে চেকয়াপ করে আসবে ৷""

"" ঠিক আছে আমি যাচ্ছি তবে ... বাকি টা বলার আগে ছন্দ বলে উঠলো আমি ঠিক নয়টায় পৌছে যাবো ..""

"" থ্যাংকিউ ননোদিনি .."" 

"" অনিল ভাবি আর কিরন কে বাড়ি পৌছে দিয়ে আসো..""

"" ইয়েস কুইন...""

অনিল রুনা আর কিরন কে নিয়ে বেরিয়ে যায়৷ ছন্দ কাঁচের দেয়ালে হাত রেখে লন্ডনের সন্ধে বেলার পরিবেশ দেখছে ৷ নানা রকমের আলোয় ধিরে ধিরে সেজে উঠছে লন্ডন ৷ ছন্দের সেই সিগ্ধ চোখ জোড়া  আজ সেই সিগ্ধতা নেই ৷ আছে একরাস ঘৃনা আর প্রতিশোধের নেশা ....

"" আমি আসছি আয়ান চৌধুরী তোমার ধ্বংসের কারন হয়ে আসছি ৷ তৈরি থেকো...."


"" ড্যাড এখন কেমন আছো তুমি?"(বর্ণ)

"" ম্যাচ বেটার বর্ণ , কিন্তু তোমার চোখ মুখের একি হাল হয়েছে ৷ মনে হয় তুমি নিজের কোন কেয়ার করছো না ৷""(আয়মান চৌধুরী )

"" ড্যাড ভাইয়া কে দেখে মনে হয় কোন জঙ্গল থেকে উঠে এসেছে ৷ মুখ টা একে বারে জঙ্গল হয়ে গেছে ৷ না সেভ করে আর নিজের টেককেয়ার করে...""(বন্যা)

"" বন্যা আমি ড্যাডের সাথে আলাদা কথা বলতে চাই সো....""

 বর্ণের কথা শুনে বন্যা ভেঙচি কেটে হসপিটালের স্পেশাল কেবিন থেকে বেরিয়ে আসে ৷ 

"" বর্ণ বাবা তুমি এখনো ওই ছলনাময়ী খুনি মেয়েটা কে ভালোবাসো যে তোমার ড্যাড কে মেরে ফেলতে চেয়েছিলো?""

"" নো ড্যাড আমি টি... ছন্দ কে ভালোবাসি না ঘৃনা করি শুধু মাত্র ঘৃনা করি ....""

"" তাহলে তোমার আর আমাদের বিজনেসের এই হাল কেন?"" 

"" ড্যাড কোন রাইভেল গ্রপ আমাদের কম্পানির কন্ফিডেন্টশিয়াল ফাইল গুলো চুরি করে নিয়ে গেছে ৷ আর আমি যখন দেশে ছিলাম না তোমায় নিয়ে বিজি ছিলাম তখন ...""

"" এখন আমি ঠিক আছি বর্ণ আর একটা এন্টিডোর প্রয়োজন তারপর আমি একে বারে সুস্থ হয়ে যাবো ৷ তুমি এখন আমাকে নিয়ে টেনশন না করে কম্পানিকে বাচাও ৷ আমার তিলে তিলে গড়া চৌধুরী এম্পায়ার ৷ আমি কিছুতেই এটাকে ডুবে যেতে দেখতে পারবো না বর্ণ...""

"" আই প্রমিজ ইউ ড্যাড আমি আমাদের কম্পানি ডুবতে দিবো না ৷ ড্যাড ভিজিটিং আওয়ারস শেষ এখন আমাকে উঠতে হবে "" বর্ণ উঠতে নিলে আয়মান চৌধুরী বর্ণের হাত ধরে বলে"" বর্ণ ছন্দ আর বেঁচে নেই৷ তুমি ওই খুনী মেয়েটার জন্য নিজের মম ড্যাড কে কষ্ট দিও না ৷ আগের মতো হয়ে যা না বাবা.....""

"" আমাকে যেতে হবে ড্যাড ..."" বর্ণ তার অন্য হাত দিয়ে আয়মানের হাত ছাড়িয়ে কেবিন থেকে বেরিয়ে গেল ৷ বর্ণের চলে যাওয়ার পর আয়মান চৌধুরী উঠে বসে বলতে লাগলো"" হা হা হা আমার বোকা ছেলে কি সুন্দর সে দিন আমার কথা গুলো বিশ্বাস করে ছন্দ কে শুট করে দিলো ৷ মেরে ফেললো ৷ নিজের অজান্তে আমার পথ ক্লিয়ার করে দিলো ৷ এবার আমার বিজনেস পার্টনার মইনালের এক মাত্র মেয়ে সামিরার সাথে তোর বিয়ে দিয়ে রাজ্য আর রাজ কন্যা হাতিয়ে নিবো ৷ বাহ বাহ কি প্লান আই প্রাউড অফ মি ..."" নিজের কাধ নিজে চাপরে নিজের বুদ্ধির প্রশংসা করতে লাগলো আয়মান চৌধুরী .....


"" অফিসে নিজের কেবিনে বসে একের পর একটা ফাইল দেখে যাচ্ছে বর্ণ ৷ রাগে মাথা যেন ফেটে যাচ্ছে বর্ণের ৷ কারন টা হলো বর্ণের প্রত্যেকটা ডিল M A নামক কম্পানি ছিনিয়ে নিচ্ছে গত তিনমাস ধরে ৷ কিন্তু আজ পর্যন্ত এই কম্পানির এমডি কে তা জানতে পারেনি শুধু এতোটুকু জানতে পেরেছে তাকে সবাই SJ নামে চিনে ৷ আজ পর্যন্ত কেউ তাকে দেখেনি৷ বর্ণ লোক লাগিয়েও কিছু জানতে পারেনি ৷ বর্ণ রেগে ফাইল গুলো ছুড়ে ফেলে দু হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরে তখনি কেবিনে প্রবেশ করে মুরাদ....

"" বর্ণ এতো রেগে আছিস কেন ? কি হয়েছে?""

বর্ণ কিছু না বলে নিজের চুল গুলো খামচে ধরে মুরাদ কে বলে উঠলো "" আমি কিছুক্ষণ একা থাকতে চাই মুরাদ.."

"" ওকে ফাইন আমি বাইরে আছি প্রয়োজন হলে ডাকিস আমি চলে আসবো..."" মুরাদ কেবিন থেকে বের হতে হতে মনেমনে বলতে লাগলো"" আ'ম স্যরি বর্ণ আমার জন্য তোর আজ এই অবস্তা ৷ ট্রাস্ট মি দোস্ত আগে যদি সব টা জানতে পারতাম তাহলে তোকে ওই জায়গায় কখনো নিয়ে যেতাম না ৷ আর না আজ এই পরিস্তি হতো ৷ হয়তো এমন টা না করলে এই দিন এই মাস গুলো অন্য রকম হতো ৷ তোরা হয়তো আজ সুখে  শান্তিতে সংসার করতি...."" দীর্ঘ শ্বাস ফেলে কেবিন থেকে বেরিয়ে গেল মুরাদ.... 

বাইরে এসে মুরাদ বন্যা কে ফোন করে কিন্তু বন্যা বার বার মুরাদের কল কেটে দেয় ৷ মুরাদও বার বার কল করতে থাকে এক পর্যায়ে বন্যা বিরক্ত হয়ে কল রিসিব করে কর্কশ ভাষায় বলতে লাগলো"" কি সমস্যা তোমার কেন বার বার কল করে বিরক্ত করছো তুমি?""

"" আমার কল এখন তোমার কাছে বিরক্তির কারন বনপাখি ?"

"" ডোন্ট কল মি বনপাখি ৷ মরে গেছে তোমার বনপাখি৷ আর তুমি ও মরে গেছো আমার কাছে সো ফার্দার আমাকে কল করে একদম বিরক্ত করবে না""

"" বাট বাট আই লাভ ইউ বনপাখি ""

"" রিয়েলি ইউ লাভ মি মুরাদ তাহলে আমার বেস্টুকে ফিরিয়ে দেও? ফিরিয়ে দেও আমার সেই হাস্য উজ্জ্বল ভাইয়াকে যার ঠোটের কোনে সব সময় হাসির রেখা ফুটে থাকতো ৷ ফিরিয়ে দেও দুটো মানুষের ভালোবাসা যেটা তুমি কেড়ে নিয়েছো""

"" বনপাখি বিশ্বাস করো আমি সত্যি টা জানতাম না ""

"" স্টপ মুরাদ তোমার এই ফালতু কথা শোনার আমার কোন ইচ্ছে নেই ৷ আমাকে কল দিয়ে আর ডিসট্রাব করবে না ৷ তোমার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই যা ছিলো সব শেষ হয়ে গেছে আমার বেস্টু শেষ হওয়ার সাথে সাথে....""
 
বন্যা মুরাদ কে বলার আর সুযোগ না দিয়ে কল কেটে দিয়ে কান্নায় ভেঙে পরে ৷ বালিশে মুখ গুজে কাদঁছে বন্যা তখনি কাধে কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে   থেমে যায় বন্যা.....


পুরো রুম জুরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে টেডিবিয়ার ৷ সায়মা পুরো রুম দাপিয়ে বেরিয়ে টেডিবিয়ার নিয়ে খেলছে ৷ ছন্দ দরজার কাছে দারিয়ে সায়মার কান্ড দেখছে ৷ মানুষিক ভারসাম্য হারিয়ে সায়মা পাঁচ বছরের বাচ্চাদের মতো বিহেব করছে ৷ ছন্দের দৃষ্টি স্থির শীতল ৷ যে চাউনি দেখলে যে কোন ব্যাক্তির মনে হবে এই মেয়ে টা হয়তো তার ভিতর টা পড়ে নিচ্ছে ৷ ছন্দ কিছুক্ষন দারিয়ে দরজা লক করে ড্রইংরুমে ঢুকতে রুনা আর কায়রা ছন্দের সামনে এসে দারায়...

"" ছন্দ মামুনি তুমি এসেছো ! আজ কাল তো তুমি বাড়িতে আসো না ৷ ভূলে গেছো তোমার একটা খালামনি আছে হু "" অভিমানি কন্ঠে বলল কায়রা......

"" ভুলেনি খালামনি তবে কাজের প্রেশার ছিলো তাই বাড়ি ফেরা হতো না"" 

"" ঠিক আছে তুমি ফ্রেস হয়ে এসো আমি ডিনার সার্ব করছি ৷"

ছন্দ সিড়ি দিয়ে উপরে উঠতে উঠতে সবার উদ্দ্যেশ্য বলতে লাগলো...


"" ছন্দ মামুনি তুমি এসেছো ! আজ কাল তো তুমি বাড়িতে আসো না ৷ ভূলে গেছো তোমার একটা খালামনি আছে হু "" অভিমানি কন্ঠে বলল কায়রা......

"" ভুলেনি খালামনি তবে কাজের প্রেশার ছিলো তাই বাড়ি ফেরা হতো না"" 

"" ঠিক আছে তুমি ফ্রেস হয়ে এসো আমি ডিনার সার্ব করছি ৷"

ছন্দ সিড়ি দিয়ে উপরে উঠতে উঠতে সবার উদ্দ্যেশ্য বলতে লাগলো..."" ভাবি ভাইয়া কে জানিয়ে দিও আমি কিছুদিনের জন্য বিডিতে যাচ্ছি..."" 

ছন্দের মুখে বিডির কথা শুনতে রুনার হাত পা কাপতে লাগলো ৷ এদিকে কায়রা ও ঘাবড়ে যায় কারন ছন্দের বিডিতে যাওয়া মানে নতুন যুদ্ধের শুরু ৷ 

"" খালামনি ছন্দ কে কি করে আটকাবো বাংলাদেশে যাওয়ার থেকে?""

"" মা তোমার বা আমার হাতে কিচ্ছু নেই ৷ ছন্দের ইচ্ছে অনুযায়ী সবটা হবে ৷ আমরা কেউ ওর পথে বাধা হয়ে দারাতে পারবো না ৷ ""

"" খালামনি ওই আয়মান চৌধুরী যদি জানতে পারে ছন্দ বেচেঁ আছে তাহলে ওকে আবার মারার চেষ্টা করবে আর আমি আমার বোনের কিছু হতে দিতে পারি না, তুমি কিরন কে একটু ধরবে...""

 রুনা ছোট্ট কিরন কে কায়রার হাতে তুলে দিয়ে ছুটে গেল ছন্দের রুমের দিকে... 

ছন্দ আয়নার সামনে দারিয়ে বা কাধে বুলেটের চিন্হটা দেখছে ৷ যে চিন্হটা তার ভালোবাসার মানুষটা দেওয়া...

"" ভালোবেসে ছিলাম তোমায় বনরাজ ৷ কিন্তু তুমি আমার ভালোবাসার যোগ্য ছিলে না ৷ আমার ভালোবাসায় তোমার বিন্দু মাত্র বিশ্বাস ছিলো না যা ছিলো সব টাই অবিশ্বাস ৷ অবিশ্বাসের সম্পর্ক কখনো টিকে না ৷ আর না ভালোবাসা বেচে থাকে৷ হৃদয়ের ভালোবাসা যখন সব টুকু মরে যায় তখন সৃষ্টি হয় একবুক ঘৃনা ৷ সেই ঘৃনার ভালোবাসা হয়ে থাকবে তুমি৷ আমি থাকবো তোমার চোখের সামনে আমাকে দেখেও না পারবে ছুতে আর না পারবে ভালোবাসতে কারন আমি নিজের হাতে সে পথ চিরোদিনের জন্য বন্ধ করে দিয়েছি..."

"" ভালোবাসা দিয়ে সেই পথ খোলা যায় ছন্দরানী .."" রুমে ঢুকতে ঢুকতে বললো রুনা, রুনা কে দেখে ছন্দ শার্ট টা ঠিক করে নিয়ে বলে " তুমি এখানে !"

" কেন আসতে পারি না?"
" পারো..তবে এখন যেটা বলতে এসেছো সেটা বলো আমি ফ্রেস হতে যাবো..." 

" বাংলাদেশে না ফিরলে হয় না ছন্দ?"

ছন্দ তার ভাবির মুখের দিকে তাকিয়ে  গম্ভির গলায় বললো" যদি এটা বলার এসেছো তাহলে বলবো হ্যা আমাকে ওই দেশে ফিরতে হবে কারন আমি কারোর ধার বাকি রাখে না এই সুবহা জাহান ৷ সুদে আসলে ফিরিয়ে দেয় ৷ কিছু মানুষের এখন প্রাপ্য শাস্তি দেওয়া হয়নি পুরো তিন তিনটে মাস আরামে কাটিয়েছে এবার তার আরামের শান্তি কে হারামে পরিনত করতে আমাকে যেতে হবে ৷ যে ভালোবাসায় অবিশ্বাস দিয়ে তৈরি সে ভালোবাসাকে শিকড় থেকেতুলে ফেলতে যেতে হবে আমাকে৷ আমাকে  আটকানোর চেষ্টা করে লাভ নেই ৷ এই ছন্দ কে এক উপর ওয়ালা ছাড়া আর কেউ আটকাতে পারবে না ৷ .."" ছন্দ টাওয়াল নিয়ে সোজা ওয়াসরুমে ঢুকে গেল ৷ রুনা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে রুম থেকে বেরিয়ে গেল ৷ 


"" এখন কাঁদছিস কেন তুই ৷যখন জানিস তুই মুরাদ কে নিজের থেকে বেশি ভালোবাসিস.." 

বন্যা তার মম কে জরিয়ে ধরে কাদঁতে কাদঁতে বলতে লাগলো" পারছি না মম পারছি না মুরাদ কে কাছে টেনে নিতে পারছি আর না দুরে ঠেলে দিতে পারছি ৷ "

"" ক্ষমা করে দে মুরাদ বন্যা..""

"" অসম্ভব মম আমি পারবো না ওকে ক্ষমা করতে ৷ সেই রাতের দৃশ্য এখনো আমাকে পোড়ায় মম এখনো আমাকে পোড়ায় ৷ ড্যাডের ভালো মানুষির মুখোশের পিছুনে যে কুৎচিত  চেহারা টা লুকিয়ে আছে সেটা আমি সে দিন দেখেছি ৷ সবটা নিনের ভিতর লুকিয়ে রেখেছি কারন হলো ভাইয়া ৷ ভাইয়া যখন জানতে পারবে সে কতো বড় অন্যায় করেছে তখন হয়তো নিজেকে কখনো ক্ষমা করতে পারবে না ৷ হয়তো নিজেকে শেষ করে দিতে পারে  মম ৷""

"" এভাবে বলিস না বন্যা আমার বর্ণের কিছু হবে না ৷ আর ওই জানোয়ার টাকে কিছু জানতে দিস না যে তুই ওর আসল রুপ টা দেখে নিয়েছিস ৷ জানলে হয়তো তোকেও ছন্দের মতো প্লান করে খুন করে দিবে৷""

"" মম সত্যি করে বলো তো তুমি কি ড্যাডের এই নোংরা রুপটার কথা জানতে না?"

নিজের মেয়ের কথা শুনে বর্ণালি দীর্ঘ শ্বাস ফেলে চোখ বন্ধ করে বলে " জানতাম . বন্যা আর কিছু জানতে চাস না আমার কাছে আমি বলতে পারবো না " 

বর্ণালি বন্যা কে ছেড়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল৷ 


রক্তাক্ত অবস্তায় পরে আছে দুজন লোক ৷ লোক দুটোর সামনে লোহার রড ঘুরাতে ঘুরাতে বর্ণ লোক দুটো কে প্রশ্ন করল"" বল কাকে দিয়েছিস ফাইল গুলো ..?"

"" স্যার বিশ্বাস করুন আমরা কিচ্ছু জানি না "" (প্রথম লোক)

"" এভাবে বলবি না তাই তো ? "" 

"" মিহির..""

" ইয়েস বস..""

"" আমার রিভালবার ..""

মিহির এক সেকেন্ড লেট না করে রিভালবার টা বর্ণের হাতে দিলো.. বর্ণ রিভালবার লোকগুলোর দিকে তাক করে আবার বলে "" লাস্ট বার বলছি সত্যি টা বলবি কি না?"" 

 লোক দুটোর মধ্যে একজন বলে উঠলো " স্যার আমরা মরতে প্রস্তুত কিন্তু নিজেদের  কুইনের সাথে বৈইমানি করতে প্রস্তুত নয় ৷ আপনি আমাদের শুট করে দিন ৷ আমরা মরার আগ পর্যন্ত ভেবে নিবো আমরা আমাদের কুইনের সাথে বৈইমানি করেনি ৷ "" 

বর্ণ খানিক টা অবাক হলো নিজেদের প্রান দিবে কিন্তু  কুইন সাথে প্রতারনা বৈইমানি করবে না ৷ এতোটা সন্মান শ্রদ্ধা ভালোবাসে নিজেদের বস কে কিন্তু কে এই কুইন? বর্ণ লোক দুটো কে প্রশ্ন টা করতে যাবে তার আগে লোক দুটো নিজেদের পায়ে জুতার পিছুন থেকে ছোট্ট একটা ছুড়ি বের করে নিজেদের গলায় চালিয়ে দেয়৷ সাথে সাথে সাদা টাইলস এর ফ্লোর লাল রক্তে তলিয়ে গেল৷ কিছু মুহূর্তের  জন্য বর্ণ হতবম্ব হয়ে গেল৷ মিহির দু হাত দিয়ে নিজের চোখ দুটো ঢেকে আছে ৷ ভয়ে চোখ মেলছে না ৷ বর্ণের চোখ মিহিরের উপর পড়তে প্রচন্ড বিরক্ত হয় বর্ণ ৷ এতো বছর ওর সাথে কাজ করার পর ও মিহির এক বিন্দু পাল্টায় নি আজ তার আবার প্রমান দিলো৷ বর্ণ রেগে মিহিরের নাম ধরে ডাকতে  মিহির চোখ থেকে হাত নামিয়ে সোজা হয়ে দারায়"" ইয়েস বস ""

"" লাশ দুটোর ব্যাবস্থা কর ৷ ""

"" ইয়েস বস .... " 

বর্ণ গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে এদিকে মিহিরের অবস্তা নাজেহাল ৷ ইদানিং রক্ত দেখলে তার শরীল খারাপ করে ৷  তার উপর গার্লফ্রেন্ডের প্যারা ৷ সারাদিন ফোন করে জ্বালিয়ে মারে ৷ মিহির মুখে রুমাল বেধে নিয়ে মৃত লোকটাকে ধরতে যাবে তখনি ফোনটা বেজে ওঠে৷ মিহির বিরক্তি নিয়ে পকেট থেকে ফোন টা বের করে  ফোনের স্কিনে বড় বড় অক্ষরে মায়া নাম টা ভেষে উঠতে দেখে শুকনো ঢোক গিললো মিহির.....

_________________________________

শাওয়ার নিয়ে চেন্জ করে বেরিয়ে ছন্দ নিচে ডাইনিং টেবিলে এসে উপস্থিত হয় ৷ টেবিলে সবাই যেন ছন্দের অপেক্ষা করছিলো যেন ৷ ছন্দ  চেয়ারে বসে রুনা কে প্রশ্ন করে"" ভাবি সায়মা খেয়েছে?""

" হ্যা, ডক্টর এসে চেকয়াপ করে মেডেসিন বদলে দিয়ে বলে গেছে ৷ সায়মাকে খাবার খাইয়ে যেন মেডেসিন দিয়ে দিতে ৷ "

" ওহ .." ছন্দ নিঃশব্দে খাবার খাচ্ছে ৷ কায়রা ছন্দ কে কিছু একটা বলতে গিয়ে ও সাহস করে বলে উঠতে পারছে না ৷ ছন্দ বুজতে পারছে কায়রা তাকে কিছু একটা বলার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না ৷ ছন্দের অর্ধেক খাওয়া শেষ হতে ছন্দের ফোনটা বেজে ওঠে ৷ ছন্দ ফোনের স্কিনে Md লেখা ভেষে উঠতে দেখে হাত ধুয়ে উঠে পরে ৷ 

"" মামুনি হাত ধুয়ে উঠলে যে খাবার ভালো হয়নি বুঝি?""(কায়রা)

" নাহ খালামনি খাবার টা ভালো হয়েছে ৷ আমাকে একটা আর্জেন্ট কল এটেন্ড করতে হবে এখন আসছি.. গুড নাইট.."" কথা বলে ছন্দ কল রিসিব করে কানে ধরে কথা বলতে বলতে উপরে চলে গেল....

"" দেখলি রুনা মা মেয়েটা ঠিক করে খেতে পারলো না। ""

"" মন খারাপ করো না খালামনি ৷ তুমি তো ছন্দ কে চিনো ...""

"" হুম ভারি অদ্ভুত মেয়েটা ৷ নাহলে নিজের মা বাবার খুনির বোন কে নিজের কাছে এতো যত্নে ভালোবেসে ঠাই দেয় কেউ...?"

"" এভাবে বলছো কেন খালামনি ? তুমি জানো তুমি এই জরিত ছিলে না ৷ তুমিও একটা দাবার গুটি ছিলে তাদের কাছে আর এটা ছন্দ খুব ভালো করে জানে তাই তো তোমাকে আর একটা বাঁচার সুযোগ করে দিলো  ৷""

"" এই জন্য মেয়েটার কাছে সারা জীবন কৃতজ্ঞ থাকবো৷ ""

"" হুম... কিন্তু সায়মা মেয়েটা যে মানুষিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেললো খালামনি ৷ মেয়েটা কি আর কখনো সুস্থ হবে না?""

"" হবে রুনা মা একটু ধৈর্য ধরো ৷ সায়মা ঠিক সুস্থ হয়ে যাবে৷ ""

__________________

'' ওয়াট কে মেরেছে ওদের Md..?" প্রচন্ড ক্ষিপ্ত  হয়ে প্রশ্ন করলো ছন্দ.

"" কুইন ওরা নিজেরা সুইসাইড করেছে যাতে ওদের মুখ থেকে তাদের কুইন সম্পর্কে কোন খবর বের করতে না পারে .." (Md)

"" ওদের কে ধরে নিয়েছিলো?""

"" চৌধুরী কম্পানির এমডি আয়ান চৌধুরী বর্ণ ...""

বর্নের নাম টা শুনে ছন্দের হৃদয়ে যেন ধপ করে আগুন জ্বলে উঠলো ৷ বুকটা প্রচন্ড জ্বালা করছে ছন্দের ৷ 

"" হ্যালো কুইন শুনতে পাচ্ছো? হ্যালো..""

"" হ হ্যা শুনতে পাচ্ছি Md ""

"" এখন কি নির্দেশ আছে আমার উপর?""

"" লাশ দুটো দাফনের ব্যবস্তা করুন ৷ আর ওদের পরিবারের ভরন পোশনের দ্বায়িত্ব আজ থেকে আমার৷ দুই পরিবারে এক কোটি করে টাকা দিয়ে দিন ৷ ""

"" ওকে কুইন আর কন্সট্রাকশনের কাজ দুদিন পর থেকে শুরু হয়ে যাবে ৷"

"" আমি আসছি আগামিকাল Md আপনি ওখান কার সব কিছু রেডি রাখুন আর একটা কথা নেক্টস প্রজেক্ট টা যেটা MR কম্পানি আমাদের দিতে চেয়ে ছিলো ওই ডিল টা চৌধুরী কম্পানি যেন পায়..""

"" কিন্তু কুইন তাহলে যে ওরা উপরে উঠার জন্য এক ধাপ এগিয়ে যাবে"

"" Md একটা কথা নিশ্চয় জানেন! কখনো কখনো বড় কিছু এর্চিপ করতে গেলে দুপা পিছিয়ে যেতে হয় ৷""

"" ইয়েস কুইন , তাহলে আমি এখান কার বাকিটা দেখে নিচ্ছি আপনি নিশ্চিন্তে আসুন৷""

"" হুম ...""  ছন্দ কল কেটে ইজি চেয়ারে বসে চোখ বন্ধ করে বির বির করে বলতে লাগলো"" ইউ এ্যাভ টু পে ফর দিস বর্ন ৷ তোমাকে ও আমি ছাড়বো না ৷ আয়মান চৌধুরী যেমন তার করা পাপের শাস্তি পাবে ঠিক তুমি ও শাস্তি পাবে আমার ভালোবাসায় সন্ধেহ অবিশ্বাস করার৷ আমি আসছি তোমার সাজানো জীবনটা ধ্বংস করে দিতে ৷ " 

ছন্দ ফোনের গ্যালারি তে ঢুকে বর্ণের গত তিন মাসের ছবি গুলো দেখতে লাগলো ৷ একটা পুরনো ছবিতে আটকে যায় ছন্দ যেটাতে বর্ণ প্রচন্ড রেগে হাত নারিয়ে কথা বলছে মিহিরের সাথে আর পাশে বন্যা গাল ফুলিয়ে দারিয়ে আছে ৷ ছন্দ বন্যার গাল ফুলিয়ে থাকতে দেখে হেসে ফেলে ৷ 

"" পাগলি একটা এখনো রাগ করে গাল ফুলানো অভ্যাস যায় নি ৷ খুব মিস করি তোকে বন্যা ৷ হয়তো তুই ও সবার মতো আমাকে ঘৃনা করিস এটা ভেবে আমি তোর ড্যাড কে মেরে ফেলতে চেয়েছি তাই.... "" ছন্দ দীর্ঘশ্বাস ফেলে ফোন টা ডিভানে ছুড়ে ফেলে চোখ বন্ধ করে ফেলে....


বেলকনিতে দারিয়ে বর্ণ আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে ৷ দক্ষিনা হাওয়া এসে বার বার বর্ণ কে ছুয়ে দিয়ে যাচ্ছে ৷ বর্ণ এক দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো"" টিয়াপাখি আমি তোমাকে খুন করেছি৷ কিন্তু আমার এমন কেন মনে হচ্ছে তোমার কিচ্ছু হয়নি তুমি একদিন হুট করে আমার সামনে দারিয়ে বলবে "" বনরাজ আমি ফিরে এসেছি"" কিন্তু কবে সে দিন আসবে ? বলতে বলতে চোখের কার্নিশ বেয়ে নোনা জল গড়িয়ে পড়তে লাগলো.... 

নিজের হাতে নিজের ভালোবাসার মানুষটার প্রান নেওয়াটা যে কতোটা কষ্ট কর সেটা আমার থেকে ভালো আর কেউ জানে না ৷ বেঁচে থেকেও মরা লাশের মতো বেঁচে আছি শুধু তোমার জন্য টিয়াপাখি ৷ কেন টিয়াপাখি তুমি যদি সেদিন ওমনটা না করতে তাহলে আজ দিন টা অন্য রকম হতো ৷ এমনটা কেন করলে সেদিন ড্যাড কে কেন মারতে চাইলে ? কি দোষ ছিলো আমার ড্যাড এর বলো ....?"" আকাশের দিকে তাকিয়ে কথা গুলো বলতে লাগলো বর্ণ ..

"" আমি জানি না কেন তারপর ও তোমাকে আমি এক বিন্দু ঘৃনা করতে পারি না ৷ আর না নিজের মন থেকে সরাতে পেরেছি ৷ নিজেকে বড্ড অসহায় মনে হয় কেন সেদিন তোমার সাথে মরে গেলাম না সেই ব্লাস্টে কেন?"" 

" কারন তোর এখনো পুরো সত্যিটা জানা হয়নি তাই..."" 

বর্ণ পিছুন থেকে কারো গলা পেয়ে তাকিয়ে দেখে বন্যা হাতে কফির মগ নিয়ে দারিয়ে.....

"" তুই..?""

"" স্যরি তোর পারমিশন না নিয়ে রুমে ঢুকার জন্য ... এই নে তোর কফি ৷ আমি যাচ্ছি৷"" বন্যা যেতে নিলে বর্ণ বলে ওঠে "" দারা বন্যা..."

"" হুম বল.."

" ফাস্টে তুই কি যেন বললি ওহ আমার এখনো পুরো সত্যিটা জানা বাকি ! কি সেই সত্যি?""

"" জানি না আমি নিজে খুজে নে সেই সত্যি টা ৷ "" বন্যা যেতে নিলে আবার থেমে গিয়ে বর্ণ কে বলে " জানিস তো ভাই অল্প বিদ্যা ভয়ঙ্করী ৷ ঠিক তেমন অর্ধেক সত্য মানুষের জীবনে এক ভয়ঙ্কর পরিস্তিতি এনে দেয় ৷ আর মানুষ তা যাচাই বাচাই না করে সেটা বিশ্বাস করে নিয়ে ভয়ঙ্কর কাজ ঘটিয়ে ফেলে...""

"" কি বলতে চাইছিস তুই?" 

"" নাথিং..."" বর্ণ কে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে বন্যা রুম থেকে বেরিয়ে গেল....

বর্ণ তার বোনের কথা গুলোর মানে বুজতে না পারলেও এটা বুজতে পেরেছে কোন একটা রহস্য লুকিয়ে আছে যে বন্যা জানে অথচ ও জানে না ৷ আর এই সত্যি টা ওকেই খুজে বের করতে হবে৷.....


 হসপিটালের বেডে শুয়ে শুয়ে আয়মান চৌধুরী টিভিতে নিউজ দেখছিলো হঠাৎ একটা নিউজে জানতে পারে AM কম্পানির এমডি আগামিকাল দেশে ফিরছে ৷ কথাটা জানার পর থেকে আয়মানের মুখের ভাব ভঙ্গি পাল্টে গেল ৷ কে এই এই এমডি এটা জানার জন্য প্রচন্ড উৎগ্রীব  আয়মান ৷ বালিশের পাশ থেকে ফোনটা বের করে কাউকে ফোন করে আয়মান...

"" হ্যালো হ্যা আমি আয়মান চৌধুরী বলছি ৷ 

"..............................""

"" তোমাকে একটা কাজ করতে হবে হ্যা টাকা নিয়ে চিন্তা করো না টাকা তোমার একাউন্টে পৌছে যাবে তবে কাজ টা হওয়া চাই... কাজ টা হলো ............"

"" .........................""

"" তবে সাবধান বর্ণ যেন জানতে না পারে ৷ রাখছি......" কল কেটে বাকা হাসলো আয়মান চৌধুরী.......

__________________

পুরো এয়ারপোর্ট জুরে সাংবাদিক শুধু  এটা জানার জন্য কে এই SJ ৷ যার কম্পানির শাখা প্রশাখা দেশে থেকে অন্যান্য দেশে পৌছে গেছে ৷ বাংলাদেশের টপ বিজনেসওম্যান দের প্রথম নম্বরের যার নাম তাকে দেখার জন্য উদগ্রীব সবাই ... সবার জল্পনা কল্পনা ছেদ ঘটিয়ে সবার নজর সামনের দিকে .....
Author, Publisher & Developer

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

উফ!
মনে হচ্ছে আপনার ইন্টারনেট সংযোগে কিছু সমস্যা আছে। অনুগ্রহ করে আগে আপনার ইন্টারনেটের সংযোগ ঠিক করুন এবং তারপর আবার ব্রাউজিং শুরু করুন৷
AdBlock সনাক্ত করা হয়েছে!
আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি আপনার ব্রাউজারে অ্যাডব্লকিং প্লাগইন ব্যবহার করছেন৷ আমরা আপনাকে আপনার অ্যাডব্লকিং প্লাগইন বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করছি, কারন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমরা যে রাজস্ব আয় করি তা এই ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।