মায়াবতী (পর্ব ১৪)


২৭!! 

-রাহাত? কোথায় তুমি? ভয় করছে আমার---।

-মায়া? এক মিনিট দাঁড়াও--। প্লিজ? আর একটু--।

-হুম----।

নিকষ কালো অন্ধকারে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতেই হাতে আলতো একটা হাতের স্পর্শ পেয়ে চমকে উঠলো মায়া। আলতো করে হাতটা মায়াকে নিজের কাছে টেনে নিয়ে বুকে জড়িয়ে নিলো। তারপর এগিয়ে এসে কানের কাছে মুখ নিলো।

-মায়াবতী? একটা জাদু দেখবে?

-হুম-----। দেখবো----।

-আমার হাত ধরে থাকো--। বারান্দায় যাই একটু--- চলো। কেমন?

-আচ্ছা-----।

বারান্দার দরজাটা খোলার পর মায়া একেবারে হা হয়ে গেল। এতোক্ষণও মায়া রাহাতের হাতটা ধরা ছিল। অবাক বিস্ময়ে রাহাতের হাতটা আরো একবার জাপটে ধরে সামনে দেখতে লাগলো মায়া। খোলা বারান্দাটার দেয়ালের কার্নিশ ঘেষে জ্বলছে ছোট্ট ছোট্ট অসংখ্য প্রদীপ। মিটিমিটি প্রদীপের আলোয় মায়ার শখের গাছগুলোয় ঝুলে থাকা ছোট্ট ছোট্ট কিছু নোট, কার্ড আর বেলুন ঝুলতে দেখা যাচ্ছে--। মায়া একটু ছুটে এসে নোটে কি লিখা আছে পড়ার চেষ্টা করলো। আর কার্ডগুলো ধরে ধরে দেখতে লাগলো যেতে যেতে। কার্ড আর নোট সবগুলোতেই রঙ বেরঙের কালিতে লেখা শুধু একটা কথা--।

" I Love You"

মায়া হেসে ফেললো লেখাগুলো পড়েই। পিছন ফিরে দেখলো রাহাত বারান্দার দরজায় হেলান দিয়ে মায়ার দিকেই তাকিয়ে আছে। মায়াকে দেখে রাহাতেরও ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠেছে। মায়াকে লাল রঙের শাড়ি, লাল টিপ আর কালো কাজলে আরো বেশি মায়াবতী লাগছে। তার উপরে এই মৃদু প্রদীপের আলোয় আরো মোহনীয় লাগছে মেয়েটাকে। মনে হচ্ছে স্বর্গ থেকে কোনো অপ্সরা নেমে রাহাতের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। মায়ার ঠোঁটে হাসি ফুটতে দেখে ভালো লাগছে রাহাতের। রাহাত একটু একটু করে এগিয়ে এলো মায়ার দিকে। মায়ার লাজুক লাল টুকটুকে মুখটা দেখে একেবারে নেশা ধরে যাচ্ছে রাহাতের। এগিয়ে এসে মায়াকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে মায়ার চুলের মধ্যে মুখ ডুবিয়ে দিয়ে একেবারে ঘাড়ে মুখ গুঁজলো রাহাত।

-মায়াবতী? ও মায়াবতী? আই লাভ ইউ---।

-হুম---। আই লাভ ইউ টু---।

-মায়াপরী? একটা গান শুনবা?

-হুম---। শোনাও-----।

মায়ার কানের ঠোঁট ছুঁইয়ে দিয়ে ফিসফিস করে গান ধরলো রাহাত। গানের প্রত্যেকটা শব্দের সাথে রাহাতের নিশ্বাসগুলো মায়ার কানে এসে লাগছে। আর মায়ার ভিতরটা কাঁপিয়ে দিচ্ছে বারবার। 

-"Main toh bas teri chahat mein
Chahoon rehna sada
Main toh bas teri qurbat mein
Chahoon rehna sada
Saaya bhi tera main, hone na doon juda.
Maine tay kar liya
Tere ishq pe, tere waqt pe.

Bas haq hai ik mera
Teri rooh pe, tere jism pe
Bas haq hai ik mera
Bas haq hai ik mera
Bas haq hai ik mera
Main toh bas teri chahat mein
Chahoon rehna sada

Main toh bas teri qurbat mein
Chahoon rehna sada
Yaadon mein tujhko rakhun
Baatein bhi teri karoon

Itna deewana hoon tera
Ho ho raaton mein jaaga karoon
Din bhar bhatakta rahoon
Main toh yahaan se bas wahaan
Tere ishq pe, tere waqt pe.
Bas haq hai ik mera
Teri rooh pe, tere jism pe
Bas haq hai ik mera

Bas haq hai ik mera
Bas haq hai ik mera
Main toh bas teri chahat mein
Chahoon rehna sada
Main toh bas teri qurbat mein
Chahoon rehna sada
Baahon mein tujhko rakhun

Dhadkan mein teri sunoon
Aa itna nazdeek aa zara
Hoo jisme duaayein rahe
Har dum wafaayein rahe

Doon tujhko aisa ik jahan

Tere ishq pe, tere waqt pe.
Bas haq hai ik mera
Teri rooh pe, tere jism pe
Bas haq hai ik mera
Bas haq hai ik mera
Bas haq hai ik mera
Main toh bas teri chahat mein
Chahoon rehna sada
Main toh bas teri qurbat mein
Chahoon rehna sada
Saaya bhi tera main, hone na doon juda.
Maine tay kar liya......."

গানটা শেষ হতেই রাহাত মায়াকে পাঁজাকোলা করে তুলে নিলো। মায়া রাহাতের গলায় হাত ঝুলিয়ে রাহাতের চোখের দিকে তাকিয়ে লজ্জায় লাল হয়ে গেল। মানুষটার চোখে মুখে অনেক রকমের দুষ্টুমির জাদু একসাথে খেলা করছে। 

-রুমে চলো পরী?

-হুম-----।

রাহাত মায়াকে নিয়ে রুমে আসতে মায়া আরেকবার অবাক হলো। রুমটা তো একেবারে ঘুটঘুটে অন্ধকারে ঢাকা ছিল তখন। এখন রুমে অনেক রঙের মোমবাতি জ্বলছে। খাটটার স্ট্যান্ড বেয়ে কাঠবেলি, বেলি আর গোলাপ দিয়ে বানানো ফুলের শিকল ঝুলছে। বিছানার মাঝামাঝিতে গোলাপের পাপড়ি দিয়ে লাভ শেইপ করা। একেবারে ওদের বাসর রাতের আদলে রুমটা সাজানো। মায়া অবাক হয়ে কিছু বলতে রাহাতের দিকে তাকাতেই রাহাত একটা হাসি দিয়ে মায়াকে একেবারে বিছানায় নিয়ে গিয়ে নামালো। মায়ার পাশে বসে মায়ার একটা হাত টেনে নিলো রাহাত। 

-এসব কখন করলে?

-তুমি যখন চেইঞ্জ করছিলে তখন রুমের ডেকোরেশন করেছি। কিন্তু মোমগুলো জ্বালানোর সময় পাই নি। তাই যখন বারান্দার ডেকোরেশন দেখছিলে তখন মোম সাজিয়ে জ্বালিয়েছি---।

-আর? বা--বারান্দার? ডেকোরেশন?

-উম---। সেটা----। তোমার কাজিনদেরকে বলে করিয়েছি--। কার্ড আর নোটগুলো নিজেই নিয়ে এসেছিলাম চট্টগ্রাম থেকে আসার সময়--। কিভাবে দিবো বুঝতে পারছিলাম না--। তোমাকে লাল টুকটুকে বউয়ের সাজে স্টেজে দেখে প্ল্যানটা মাথায় এলো তখন----।

-তুমি ওদেরকে বলে-----?

-হুম--। তো কি হয়েছে? একটু রোমান্স করা শিখে নিলে ওদেরই ভালো------।।

-অসভ্য লোক------।

-জি---। আমি অসভ্য। তবে সেটা শুধু আপনার কাছে ম্যাডাম--।

-সরো-----।

-বাহ! আজকে ছাড়ছি না--। আজকে আমার মায়াবতীকে চাই মানে চাই----। কোন আপত্তি শুনছি না আজকে----। তবে ম্যাডাম আপনার কি কোন আপত্তি আছে? নিজেকে আমার রঙে রাঙাতে? আমার ভালোবাসার রাজ্যে হারিয়ে যেতে-----?

-উহু-----।

মায়া লজ্জা পেয়ে চোখ নামিয়ে নিলে রাহাত দু হাতে মায়ার মুখটা তুলে ধরে চোখে চোখ রাখলো।

-মায়াবতী?

-হুম-----------।

-ভালোবাসি-----।

-তোমাকেও ভিষণ ভালোবাসি--। তোমাকে ভিষণ করে চাই--। তোমার রঙে নিজেকে রাঙাতে চাই--। তোমার মতো করে নিজেকে সাজাতে চাই----।।

-আচ্ছা? তাই নাকি? তো কি করা যায়---?

-জানি না--। যাও-----।

-আহা! লজ্জাবতী? আসো আজকে লজ্জাবতীর লজ্জাটা ভাঙাই-----।

-ধ্যাত-------।

মায়া আরো লজ্জা পেয়ে রাহাতের বুকে মুখ ডুবিয়ে নিলো। ধীরে ধীরে রাহাতের ভালোবাসার উষ্ণতায় হারিয়ে যেতে লাগলো। মনের কোণের সমস্ত খচখচানিটা সরিয়ে রেখে রাহাতের মাতাল করা ভালোবাসায় গা এলিয়ে দিয়ে সেটা উপভোগ করার চেষ্টা করলো মায়া। আর রাহাতও নিজের সব ভালোবাসা উজাড় করে তার মায়াবতীকে ভরিয়ে দিতে লাগলো এক অজানা সুখে।

২৮!! 

সকালে ঘুম ভাঙতেই এক চিলতে আলো এসে চোখে পড়ায় মায়ার তাকাতে প্রথমে একটু কষ্ট হলো। একটু পরেই টের পেল আলোটা আর চোখে এসে লাগছে না৷ আলোর বদলে মিষ্টি একটা ছায়া এসে পড়েছে কোত্থেকে যেন। আবার চোখ খুলেই ছায়ার রহস্যটা দেখতে পেল মায়া। রাহাত মায়ার দিকে একটু ঝুঁকে হাত দিয়ে আড়াল করে রোদটাকে মায়ার চোখে মুখে পড়া থেকে আটকাচ্ছে। মায়া নিজের ঠোঁট কামড়ে হেসে ফেললো রাহাতের কাজ দেখে। রাহাতও আরেকটু ঝুঁকে মায়ার গালে চুমো খেল। 

-এভাবে হেসে আবার কেন আমার নেশা জাগাচ্ছে মায়াবতীটা? হুম? হুম?

-কি? 

-এভাবে হেসো না গো--। পাগল হয়ে যাবো--।

-ধ্যাত--। সরো--। কত বেলা হলো? 

-আরে?

মায়া গায়ে চাদরটা ধরে উঠে যাওয়ার আগেই রাহাত মায়াকে টেনে একেবারে বুকের ভিতরে নিয়ে শুয়ে গেল।

-আরে? কি করছ? কত বেলা হলো?

-এ আর এমন কি বেলা হলো বউ? আটটা বাজে--। পাশের রুমে দুজন সুখী মানুষ হয়তো একটু আগেই ঘুমিয়েছে--। আর তুমি এখনই উঠার জন্য লাফালাফি করছো---?

-এই এই? লজ্জা শরম কিছু নেই তোমার? মুখে কিছু আটকায় না?

-না আটকায় না--। আর তোমার লজ্জাটাও তো ভেঙে দিলাম রাতেই--।

-অসভ্য লোক একটা--। সরো?

-উহু-----। সারারাত আমি মায়াপরীটাকে আদর করেছি--। এখন মায়াবতীটা------।

-সরো? ছাড়ো।

-আহা! সেটি বললে তো হচ্ছে না গো মায়াবতী। 

-ছাড়ো না? কাজ আছে তো--। মা আর রহিমা খালা সবকিছু সামলাতে পারবে না তো-----?

-যতই বাহানা দিন না কেন, আপনার এতো তাড়াতাড়ি আমাকে ছেড়ে যাওয়া চলবে না। 

-হুহ---।

-নিজে তো পড়ে পড়ে এতোক্ষণ ঘুমাচ্ছিলে---। কি মায়াভরা মুখ--। আসলে ঠিকই বলে জানো? প্রথম বাসরের পর বউয়ের মুখ দেখে--।

মায়া লজ্জা পেয়ে চাদরটা গায়ে পেঁচিয়ে অন্য দিকে ফিরে গেল। রাহাত হেসে একটু সামনে এসে এক হাতে ভর দিয়ে শুয়ে অন্য হাতে মায়ার কোমড় পেঁচিয়ে ধরে পিঠে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিলো। মায়াও কেঁপে উঠে রাহাতের হাতটা শক্ত করে চেপে ধরলো। রাহাত মায়ার ঘাড়ে, কানে, চুলে মুখ গুঁজে দুষ্টুমিতে মাতলো।

-আহারে! এতো আদরেও লজ্জাবতীর লজ্জা ভাঙে নি?

-সরো? কি শুরু করেছ সকাল সকাল--?

-মায়া? একটা কথা জিজ্ঞেস করি? রাগ করো না প্লিজ?

-নাহ রাগ করবো না। বলো?

-আম---। গতকাল তোমার মাঝে ডুব দেওয়ার সময় অদ্ভুত একটা অনুভূতি হচ্ছিল। বারবার মনে হচ্ছিল এভাবে আগেও তোমাকে কাছে টেনেছি-। মনে হচ্ছিল তোমার শরীরের প্রত্যেকটা ভাঁজে আমার স্পর্শ এভাবে আগেও করেছি---। কিন্তু আসলে তো তা না বলো? তোমাকে এর আগে তো এতোটা আপন করে কাছে টানি নি---।

--------- কাল যখন বললে আমাকে নিজের করে চাও--- তখন শুধু প্রে করছিলাম যেন সেদিনের মতো এতোটা কাছে এসে ফিরিয়ে না দাও----।

-মানে? কবের কথা বলছো? আমি বুঝতে পারছি না কিছু-----।

-কিছু না-----। সরো? একটু ঘুমিয়ে নাও--। আজ কিন্তু অনেক কাজ আছে---। 

-মায়াবতী? কি লুকাচ্ছ আমার কাছে?

-আরে? কিছুই না--। সরো না? ছাড়ো--। আমি ফ্রেশ হয়ে আসি-।

-হুম---? আচ্ছা----। যাও--।

মায়াকে ছেড়ে দিতেই মায়া রাতের লাল শাড়িটা পেঁচিয়ে পড়ে আলমারি থেকে আরেকটা শাড়ি বের করে ওয়াশরুমে চলে গেল। রাহাত রাতের ছড়ানো ফুলের শিকল আঙুলে পেঁচাতে পেঁচাতে চিন্তা করতে লাগলো মায়া কি বলে গেল৷ কিছু মনেও আসছে না। ভাবতে ভাবতেই বেচারা একসময় ঘুমিয়েও গেল। 

মায়া শাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে দেখলো রাহাত ঘুমিয়ে গেছে। শাড়িটা ঠিক করে চুল মুছছে এমন সময় টুং করে একটা মেসেজের শব্দ হলো কোথাও। মায়া নিজের মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখলো কোন নোটিফিকেশন আসে নি। পাশে রাহাতের মোবাইলে আলো জ্বলছে দেখে হাতে নিতেই দেখলো একটা মেসেজ এসেছে। লিজা নামে সেইভ নামটা। মায়া ভ্রু কুঁচকে একটু চিন্তা করে মেসেজটা ওপেন করলো।

"স্যার প্রজেক্টের কাজটা আগামী সপ্তাহ থেকেই শুরু করতে হবে। অফিসে এসে আমাদের কাজটা বুঝিয়ে দিলে ভালো হতো।"

কয়েকবার মেসেজটা পড়েও ঠিক কি বুঝিয়েছে বুঝলো না মায়া। মোবাইল রেখে মায়া চিন্তা করলো একটু। হয়তো রাহাতের ড্রিম প্রজেক্টটার কাজ শুরু হবে। কিন্তু অফিসে কাকে কি বুঝাতে হবে! যাক গে! এমনিতেও লোকটা বহুদিন অফিসে যায় না। জোর করে না পাঠালে যাবেও না। এসব ভেবে মায়া নিজেই হেসে ফেললো রাহাতের ঘুমন্ত মুখটার দিকে তাকিয়ে। রাহাতের কাছে একটু এগিয়ে গিয়ে কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিলো মায়া। কিন্তু একটা কথা মায়ার মনে খচখচ করতেই থাকলো। এই লিজা টা কে? মায়ার ইচ্ছে করছে এখনই ঘুম থেকে ডেকে দিয়ে রাহাতকে জিজ্ঞেস করতে কে এই লিজা। ও কেন মেসেজ করবে রাহাতকে? কিন্তু কাজটা করা ঠিক হবে না। তাই আর জাগালো না। রাহাতেট মুখটা আরেকবার দেখে চাদরটা গায়ে ভালো করে জড়িয়ে দিয়ে রুম থেকে বের হলো মায়া। ভালো করে দরজাটা আটকে দিয়ে রান্নাঘরে মায়ের সাথে কাজ করায় মন দিলো।

 
নাস্তা বানানো শেষ হলে আবার রুমে এলো মায়া। রাহাত এখনো ঘুমাচ্ছে। মানুষটাকে জাগাতেও ইচ্ছে করছে না মায়ার। কয়টা দিন কত পরিশ্রম যাচ্ছে ওর উপর দিয়ে। প্রজেক্টের কাজ শেষ করে চট্টগ্রাম থেকে জার্নি করে ফিরেছে। আর রাতে! রাতের কথা মনে পড়তেই একা একাই লজ্জায় লাল হয়ে গেল মায়া। নিজেকে সামলে নিতেই একটা দুষ্ট বুদ্ধি মাথায় এলো মায়ার। নিজের এক গাছি ভিজা চুল নিয়ে রাহাতের কানে সুড়সুড়ি দিলো। প্রথমবারে রাহাতের নড়ন চড়ন নেই। আরেকবার সুড়সুড়ি দিতেই রাহাতের ভ্রু জোড়া কুঁচকে গেল।  মায়া হেসে একটু পরে আবারও রাহাতের কানের কাছে চুল নিতেই রাহাত দু হাতে মায়াকে টেনে বিছানায় ফেলে বুকে জড়িয়ে নিলো। মায়া ছোটার জন্য লাফালাফি করছে প্রচন্ডভাবে। রাহাতও মায়াকে আরো নিবিড় করে বুকে চেপে ধরলো। 

-আরেকবার ঘুমের ডিস্টার্ব করবা খবর আছে মায়াবতী--। চুপ করে বুকের মধ্যে শুয়ে থাকো। নড়াচড়া না একদম---।

-ছাড়ো----। আচ্ছা আর করবো না তো?

-বললাম না? নড়াচড়া না--। আর কথাও বলবা না--। চোখ মেলতে পারছি না--। প্রচন্ড ঘুমে চোখ টানছে--। সো ডোন্ট টক--। ওকে?

-এই? ছাড়ো না গো?

মায়া কিছু বুঝে উঠার আগেই রাহাত মায়ার ঠোঁট দুটো নিজের ঠোঁটের মাঝে চেপে ধরলো। একটু পরে ছেড়ে দিয়ে মায়াকে আলগা করে ছেড়ে দিয়ে শুয়ে পড়লো রাহাত।

-যাও----। এখন ছেড়ে দিলাম--।

মায়া রাহাতের বুক থেকে সরে না এসে মুখ ডুবিয়ে একটু লাজুক হাসলো। লোকটা এতো আজব কেন মাঝেমাঝে সেটা মায়া বুঝে ওঠে না৷ তবে এই আজব, অদ্ভুত মানুষটাকেই মায়া পাগলের মতো ভালোবাসে। এই মানুষটার থেকে দূরে গিয়ে কি করে থাকবে সেটাই মায়া বুঝে ওঠে না। তবু কেন জানি মনে হয় জীবন নামের রঙ্গমঞ্চে ওদের এইটুকুই একসাথে পথচলা ছিল। বাকি পথটুকু চলতে হবে আলাদা। আর যতই কষ্টের হোক না কেন পথটা ওদের আলাদাই চলতে হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন