আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুগ্রহ করে গল্প সম্বন্ধে আপনার মতামত অবশ্যই প্রকাশ করবেন। আপনাদের মতামত আমাদের এই ছোট প্রয়াসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগায়। শীঘ্রই আরও নিত্য নতুন গল্প আপডেট আসছে, সঙ্গে থাকুন। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখক/লেখিকা'র নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত গল্পের ডায়েরি’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখক/লেখিকা'র কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় গল্পের ডায়েরি কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ করলে তা কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

অচেনা অতিথি - পর্ব ০৯ - নাফিসা মুনতাহা পরী - ধারাবাহিক গল্প


- "মাহাদ আজ তিতিরকে খুব মনযোগ সহকারে দেখছে। যদিও দু-চোখ ছাড়া তিতিরের কিছুই দেখা যাচ্ছেনা। তবুও অনেক ভাললাগা সহকারে তাকিয়ে আছে মাহাদ। "


- "তিতির একবার চেয়ে দেখেছিল কিন্তু মাহাদের ওমন চেয়ে থাকা দেখে অনেক আগেই চোখ নামিয়ে নিয়েছে। তিতিরের মনে অনেক টেনশন কাজ করছে। আর আধাঘন্টা আছে সব ডিসিশন জানাবে স্যাররা। "


-" ওয়েটার এসে মাহাদের ধ্যান নষ্ট করল। ভাইয়া কি দিব!"


- " একটা বেবি কেক, ৪ টা মিষ্টি, আর ১ কাপ কফি। বেশি সময় নিবিনা। আমার তাড়া আছে বলে অন্য দিকে তাকাল মাহাদ।"


-" ম্যাম আপনার কি লাগবে!"


-" ম্যাডাম রোযা রাখছে শাহিদ। আমার জন্যই শুধু নিয়ে আয়। মাহাদের কথা শুনে তিতির তাজ্জব বনে গেল।


-" ওয়েটার চলে যেতেই তিতির বলল-" আমি রোযা রাখিনি। আপনি মিথ্যা কথা বললেন কেন? এবার তিতির ভাল করে মাহাদকে দেখল। অত্যাধিক হ্যান্ডসাম একটা ছেলে তার সামনে বসে আছে। তবে ছেলেটাকে দেখে মনে হচ্ছে অনেক অহংকারী।"


- " আমি চাইনা আপনি সবার সামনে মুখ খুলে খান তাই কথাটা বলছি। এর মধ্য শাহিদ কেক,মিষ্টি আর কফি এনে দিয়ে বলল ভাইয়া আপনিতো মিষ্টি একদমই খান না তাহলে আজ এসবের অর্ডার দিলেন? খাইতে পারবেন তো?"


-" আজ কারো খুঁশির খবর আসতে চলছে তাই সেলিব্রেট করলাম। মাহাদ কফির মগে চুমুক দিয়ে বলল এগুলো প্যাক করে দে।"


-" ভাইয়া আপনাকে বোঝা খুব কঠিন। এতদিন ধরে আপনাকে চিনি তবুও বুঝতে পারলাম না। শহিদ প্যাক করে দিয়ে মাহাদের কাছে দাড়িয়ে আছে। মাহাদ টাকা বের করে শহিদের হাতে দিয়ে বলল - তুষার ভাইকে বলিস আমি এসেছিলাম। সময় নাই তাই দেখা করতে পারলাম না।"


-" ভাইয়া আপনার থেকে টাকা নিলে স্যার আমাকে মেরেই ফেলবে। আমি টাকা নিতে পারবোনা। আমাকে মাফ করেন ভাইয়া।

পাশের টেবিলে এক জোড়া ক্যাপল বসে কথা বলছিল এমন সময় ছেলেটার কল বেজে উঠল........." পাগলী তোর পাগলা কই। পাগলা তোর পাগলী হতে চাই, তোর প্রেম অনলে পুইড়া হব ছাই। "


- গানের রিংটোন শুনেই মাহাদ কাপলদের দিকে তাকাতেই শহিদ বলে উঠল কি ভাই এগুলো গানের কেউ রিংটোন রাখে! নিজের তো সম্মান রাখেন না অন্যদেরও লজ্জায় ফেলে দেন।"


- "তিতির লজ্জায় লাল হয়ে গেল। কি সব অদ্ভুদ গান। মাহাদ শহিদকে বলল -" বাদ দে, টাকাটা ম্যাডাম দিয়েছে। আজ তার রেজাল্ট বেরিয়েছে। খুব ভাল রেজাল্ট করেছে তাই সে বাঁকি কিছু নিবেনা। টাকাটা রাখ বলে রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে আসল মাহাদ"


-" তিতিরও পিছে পিছে আসতে নিজেকেই নোটিস করল এই মানুষটা প্রচন্ড মিথ্যা কথা বলে। কার পাল্লায় পড়লাম। মনে হয় হ্যান্ডসাম পাগলের পাল্লায় পড়লাম।"


-" বাহিরে এসে দেখে আকাশে প্রচন্ড মেঘ করেছে। কেকের প্যাকেটটা তিতিরের হাতে দিয়ে মাহাদ বলল-" সামনে একটা বৃদ্ধা মহিলা দাড়িয়ে আছে তাকে এই প্যাকেটটা দিয়ে আসুন। মাহাদ কলেজ গেট দিয়ে ঢুকে ভিতরে চলে গেল।"


-" তিতিরের এবার আরো অবাক হওয়ার পালা। এই লোকটা বুদ্ধিমান পাগল। প্যাকেটি সেই মহিলার হাতে দিয়ে মাহাদের কাছে চলে গেল তিতির। মহিলাটি অনেক দোয়া করল কিন্তু তিতিরের শোনার সময় নাই কারন অলরেডি মাহাদ তার চোখের সামনে থেকে অদৃশ্যর পথে।"


- " পিন্সিপাল খুব খুঁশি হয়ে বলল-" মেয়েটার প্রচন্ড ট্যালেন্ট আছে। ওর অতীত ইতিহাসের রেজাল্ট গুলোও চমৎকার। সব রেডী করে রাখবো। আগামী ১২ তারিখে ওকে ক্লাসে পাঠিয়ে দিও।

মাহাদ তোমাকে আমার এই জন্য খুব ভাল লাগে যে, তুমি তোমার পাওয়ারের তেমন একটা দাপট দেখাওনা।"


-" স্যার বাঁকি কাগজপত্র সব কিছু পাঠিয়ে দিব আমি ১২ তারিখের আগেই। ভাল থাকবেন বলে সালাম দিয়ে বের হয়ে এসে দেখল তিতির দরজার বাহিরে দাড়িয়ে আছে।

ম্যাম ১২ তারিখ থেকে আপনার ক্লাস। অর্থনীতিতে আপনাকে সিলেক্ট করা হয়েছে বলে সিড়ি দিয়ে নামতে লাগল মাহাদ।"


-" বেচারা তিতির তাকে অনুসরন করে নিচে নামছে। গাড়ীর কাছে আসতেই বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। এই আষাঢ় মাসে এক ঝামেলা যখন তখনই বৃষ্টি নেমে যায়। রহমান আঙ্কেল ছাতা আছে?"


-" গাড়ীর ডাইভার রহমান একটা ছাতা বের করে দিয়ে বলল -" মাহাদ ছাতা কি করবা! কোথাও যাবা নাকি?"


-" ওনাকে বাসায় নিয়ে যান আমার কিছু কাজ আছে বলেই মাহাদ ছাতা মাথায় দিয়ে এই বৃষ্টির মধ্য বেরিয়ে পড়ল।"


-" এই ছেলেটা সাক্ষাত একটা পাগল বলেই মুচকি হাঁসি দিয়ে রহমান গাড়ী স্টার্ট দিল। তিতিরকে নিয়ে বাসায় চলে আসল।"

♦♦♦♦♦♦♦

- " তিতির বাসায় ঢুকতেই বাতাসি বেওয়া বলল-" ঐ মাইয়া খাড়া!"


-" তিতির বাতাসি বেওয়ার কাছে এসে বলল-" দাদী কিছু বলবেন?"


-" চান্স পাইছোস বলতেই লাবীবা কাছে আসল। তিতির মাহাদ কই! ও আসলনা যে?"


- "ওনার কি যেন কাজ আছে তাই ছাতা নিয়ে কোথায় যেন গেল। দাদী আমার ১২ তারিখ থেকে ক্লাস। আল্লাহর রহমতে সাফাল্য পাইছি।"

-" দেওয়ান মো. কামরান আহনাফ কেবল বাসায় এসে ঢুকছে ঐ সময়ই বাতাসি বেওয়া তার ছেলেকে ডাক দিল। এই কামু এদিকে আয় তো!


- " একরাশ বিরক্তি নিয়ে কামরান মায়ের কাছে এসে বসল। আম্মা কিছু বলবেন! আর এই কামু কামু বলে ডাকবেন না তো! আমার যথেষ্ট বয়স হয়েছে তাই সবার সামনে এভাবে ডাকাটা আমার কাছে লজ্জাজনক লাগে।"


- " তোরে আমি এই নামেই ডাকমু। দেখ মাইয়াটা এক চ্যান্সে অতবড় ভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে গেল আর তুই তিন ৩বার পরীক্ষা দিয়ে ম্যাট্রিক পাস করছোস।"


- "এবার তিতিরই লজ্জা পেয়ে গেল দাদীর কথা শুনে। দাদী আমি আসছি বলে তিতির চলে গেল। কামরানের মনে হচ্ছে এখুনি মাটির তলায় লুকিয়ে পড়তে। একটা ছোট মেয়ের সামনে তাই বলে এভাবে অপমান করবে তার মা!

মা সবার সামনে আমাকে অপমান করে কি সুখ পান আপনি!"


- "লজ্জা পাওয়া কার কথা আর কে পেয়ে এখান থেকে চলে গেল।

বাতাসি বেওয়া তার ছেলের দিকে তাকিয়ে বলল -" তোর বাপ আমারে কম জ্বালায়নি তার প্রতিশোধ নেই কারন তোর বাপ তোরে খুব ভালবাসত। তোরে কষ্ট দেওয়া মানে তারে কষ্ট দেওয়া আমি সেটাই বুঝি। বুইড়া বাইচা থাকতে কম জ্বালায়নি।"


-" আম্মা তাই বলে আব্বার রাগ আমার উপর ঝাড়বেন! আপনার আর আক্কেল হলনা বলে উঠে গেল কামরান। এদের মা-ছেলের বিরোধ দেখে হেঁসে গড়াগড়ি খাওয়ার অবস্থা লাবীবার ।এরা পারেও বটে।"


- লাবিবা হাঁসতাছো ক্যান! তোমারও কি মনে হয় আমারও মতিভ্রম হয়েছে না তোমাকেও নতুন নামে ডাকতে হবে!"


-" লাবিবার হাঁসি ঠুস করে হাওয়া হয়ে গেল। শাশুড়িকে তার একদম ভরসা নাই। নিজের একমাত্র ছেলেকে যদি এসব কথা বলতে পারে তাহলে আমি তো পরের মেয়ে। লাবিবা আর কোন কথা না বলে চলে গেল।"


-" ফাযিল পোলা মাইয়া বলে কি! কোন খানে কি কথা বলতে হয় সেটা নাঁকি আমাকে শিখতে হবে। এদের আর মানুষ করতে পারলাম না।"

♦♦♦♦♦♦♦♦♦

- "তিতির রুমের ভিতর বোরখা খুলছিল এমন সময় মৌ এসে বলল-" এই বাসায় একদম গেড়ে বসলি শেষ পর্যন্ত! "


-" কি বলছেন আপু! আমি ঠিক বুঝতে পারলাম না। কোথায় আর কিভাবে গেড়ে বসলাম?"


- " মুখে দেখছি খৈ ফুটেছে। তোর ব্যবস্থা যদি না করেছি তারপর দেখিস। আসছিস কাজের মেয়ে হয়ে আর এখন রানী হওয়ার শখ! "


-" তাহলে কি করবো আপু তুমি বলে দাও! আমি তো কাউকে কিছু বলি নাই। তারা নিজ থেকে আমার দায়িত্ব নিয়েছে।"


- " মরার আপদ আসছে আমার ঘাড়ে। না পারছি গিলে খেতে না পারছি উগলে ফেলে দিতে। রাতিশাকে তিতিরের কাছে দিয়ে মৌ রুম থেকে বের হয়ে গেল। কোন মতে বোরখাটা খাটে ফেলে দিয়ে রাতিশাকে কোলে নিল তিতির। পুরো শরীর ঘেমে একাকার তার উপর বৃষ্টিতে কিছুটা ভিজে গেছে গোসল না করলেই না। একটু পরে যদি বাচ্চাটাকে দিয়ে যেত আপু তাহলে খুব ভাল হত। কি আর করা আপু মনে হয় আমার উপর রাগ করেছে। রাতিশাকে বিছানায় রেখে কোনমতে গোসল সেরে এসে চেন্জ করে ওকে আবার নিল। ভাগ্গিস মেয়েটা খুব শান্ত। রাতিশার ফুফি আছে যে কিনা চিটাগাং এ মেডিকেল নিয়ে পড়ছে। তার আশার কথা আছে এ সপ্তাহে। বাসায় অনেকগুলো কাজের লোক থাকা সত্বেও তিতিরকে দায়িত্ব দিয়েছে রুমকির রুম গুছানোর জন্য। রাতিশাকে নিয়ে তিতির চলে গেল রুমকির রুমে।

♦♦♦♦♦♦♦♦

- রাত ৯ টার পর বিষ্টিতে ভিজতে ভিজতে বাসায় আসল মাহাদ। সাথে অনেক বড় একটা বক্স। কাজের লোককে বক্সগুলো ওর রুমে রাখতে বলেই ওয়াসরুমে ঢুকে পড়ল মাহাদ। আজ একটু বিষ্টিতে বেশিই ভেজা হয়ে গেছে। একটার পর একটা হাঁচি পড়ছে। গরম পানি দিয়ে গোসল সেরে টাওয়াল জড়িয়ে রুমে আসতেই বাতাসি বেওয়ার সাথে এক প্রকার ধাক্কাই খেল মাহাদ। কি ব্যাপার বাতাসি বিবি এই সময় আমার রুমে তুমি! তোমার কি লজ্জা শরম বলে কিছু নাই! না ইচ্ছা করেই এসেছো?


- " তোরে দেখতে মন চাচ্ছিল আমার সোয়ামী♥। তাই দেখতে এলাম। কিন্তু আপনি যে সব রেডী করে রাখবেন সেইডা বুঝবার পারি নাই।"


-" আকাম- কুকাম কথা একদম বলবেনা বলে দিচ্ছি বাতাসি বিবি। যাও এখান থেকে আমি চেন্জ করবো। পারলে গরম কিছু স্যুপ এনে দাও। বেশি বিষ্টিতে ভেজার জন্য মনে হয় জ্বর চলে আসবে বলে মাহাদ নাক টানল। "


-" তুই জানিস তোর বাপ আমার কথা শোনেনা। কি ছেলে পেটে জন্ম দিলাম যার জন্য এমন সন্তান আল্লাহ্ আমায় দিল। কেউ আমার দুঃখ বোঝেনা।"


-" বাতাসি বিবি তোমার ছেলে তোমাকে যথেষ্ট সম্মান করে কিন্তু তুমি তাকে জ্বালাতে এক চুল পরিমানও ছাড় দাও না। তোমার ছেলের জায়গায় অন্য কেউ হলে তোমার হাল যে কি করতো তা আল্লাহ্ ভাল জানে। তোমার ছেলে শুধু আমাদের দুই ভাইয়ের জন্যই কঠোর আর খারাপ। তাই বেশি কথা না বলে যাওতো!

গিয়ে মাকে পাঠিয়ে দাও বলে আর একটা টাওয়াল দিয়ে ঘাড়ের পানি গুলো মুছতে লাগল মাহাদ। "


-" মাহাদের কাছে প্রশয় না পেয়ে বাতাসি বেওয়া গাল ফুলিয়ে চলে গেল। খানিক পর লাবিবা এল গরম গরম স্যুপ নিয়ে ততক্ষনে মাহাদের চেন্জ হয়ে গেছে। লাবিবা মাহাদকে স্যুপ খাইয়ে দিচ্ছে।"


-" মাহাদ ফুয়াদ কেমন আছে রে!"


-" ভাইয়াকে কল দিয়ে জিঙ্গাসা করলেই তো তার খবর পাও। আমাকে ভাইয়ার কথা বলে কেন বার বার বিরক্ত করো মা!"


-" শুনেছি ওর নাকি একটা মেয়ে হয়েছে! ও দেখতে কার মত হয়েছে রে?"


- " মাহাদ ফোনটা বের করে ফুয়াদ কে কল দিতেই ওপার থেকে হ্যালো শব্দ শুনে লাবিবা উঠে দাড়াল এবং দ্রুত চলে গেল।

মাহাদ স্যুপের বাঁটিটা ছুড়ে ফেলে দিল ফ্লোরে। ভাইয়া বাসায় আর থাকতে মন চায়না বলেই কেঁদে উঠল মাহাদ।"


-" মাহাদ মাথা গরম করিস না। বাবা-মা দু'জনেই বিপদে আছে। একদিন সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে।

হ্যালো চাচ্চু বলে ফোনের ওপাশ থেকে ডেকে উঠল ফুয়াদের ৩ বছরের মেয়ে "নিধি"। নিধির শব্দ শুনেই মাহাদের বুকে এক টুকরো শান্তির পরশ চলে আসল। "


-" অস্পষ্ট শব্দে বলল -"চাচ্চু তুমি কেমন আছো?"


-" এইতো মা খুব ভাল আছি বলে চোখ মুছল মাহাদ। আজ আমার মা টা কি করছে! কি কি খেয়েছে?"


-" চাচ্চু আমি এত্ত গুলা আইসক্রীম আর চকলেট খেয়েছি। তুমি আমাদের বাসায় আসোনা কেন! নিধির কাছ থেকে ফোনটা কেড়ে নিল নিশা। এই মাহাদ আমাদের বাসায় আর আসিস না কেন! আর সিম বদলাইছিস যে আমাকে সে কথা বলেছিস!"


-" স্যরি নিশা তোকে জানানো হয়নি। কেমন আছিস বল!

নিশা মাহাদের ক্লোজ বান্ধবীদের মধ্য একজন। যে ফুয়াদের হাত ধরে বাসা থেকে বের হয়ে গিয়ে বিয়ে করে ৪ বছর আগে। তারজন্য কামরান আর লাবিবা দু'জনেই বিয়েটা মানেনি আর তাদের বাসায় আসতেও নিষেধ করে দেয়। তারপর থেকে তাদের সাথে বিচ্ছিন্ন। নিধি কোনদিন তার দাদা-দাদির সাথে কথা বলারও সুযোগ পায়নি।"


-" কোন কথা শুনতে চাইনা। আগামী সপ্তাহে তোর ভাইয়ার ছুটি পড়েছে ৩ দিনের এই সুযোগে আয় না! খুব মজা করবো আমরা।"(নিশা)


- " মাহাদ কিছু বলতেই তিতিরকে ওর দরজায় দাড়িয়ে থাকতে দেখল। নিসা রাখ পরে কল দিচ্ছি বলেই কল কেটে দিল মাহাদ।"


-" আমি কি আসতে পারি!"

!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

-" নিষেধও তো করি নাই বলে মাহাদ উঠে বক্সটা খুলতে লাগল।"

!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

- " এমন অপমান আগেও তিতির অন্যদের কাছে হয়েছে। তাই এই অপমানটা সহজে হজম করে রুমে প্রবেশ করল তিতির।"

!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

- "মাহাদ সব বইগুলো বের করে দিল। এখানে আপনার সব বই আছে। আপনি এগুলো নিয়ে যান। আপনি যদি বাসায় টিউশানি নেন তাহলে বাসায় স্যারকে আসতে বলব। আপনার যা ইচ্ছা।"

!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

- "আপনার টাকা বলে ৪২৫ টাকা মাহাদের দিকে বাড়িয়ে দিল তিতির।"

!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

-" কিসের টাকা!"

!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

-" রেস্টুরেন্টে ওগুলো কিনে দিলেন তার বিল। চিন্তা করেন না আপনার এই বইয়ের দাম গুলোও ইনশাল্লাহ্ কোন একদিন দিয়ে দিব।"

!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

- " মাহাদের এখন মন চাচ্ছে ঠাশশশ্ ঠাশশশ্ করে কয়েকটা থাপ্পড় লাগায় তিতিরের গালে। আমাকে টাকার গরম দেখাচ্ছে!

মাহাদ নিজেকে কন্টোল করে বলল-" টাকা কই থেকে পেলেন!"

!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

-" নিশ্চয় আমি ভিক্ষুক নয় যে, আমার কাছে টাকা থাকবেনা! আমার বাবা দিয়েছিল টাকা গুলো। তার থেকেই দিচ্ছি।"

!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

- " মাহাদ.....! সারা জিবন দুরে থেকে এরে দেখেছিস এখন কাছে থেকে দেখে বোঝ। সবার কাছে ভিজে বিড়াল আর তোর কাছে এসে কত সাহস দেখাচ্ছে দেখছিস! কথাগুলো মনে মনে বলল মাহাদ।

টাকাটা টেবিলের উপর রেখে চলে যান।"

!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

-" তিতির টাকাগুলো টেবিলে রেখে চলে যেতেই আবার দাড়াল। তারপর কাছে এসে বলল -" আমার কোন টিউশানির দরকার নাই আমি একা যথেষ্ট। আর হ্যাঁ আপনাকে দেখলাম বিষ্টিতে ভিজে ভিজে বাসায় এসেছেন। তাই মেডিসন নিন। আর এভাবে জিনিস পত্রের উপর রাগ না ঝেড়ে সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করেন।"

!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

-" উপদেশ দেওয়াটা আমি পছন্দ করিনা একদম। যেটা জানেন না সেটার জন্য তর্ক করতে আসবেন না। আপনি যেতে পারেন।"

!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

-" তিতির এবার খুবই অপমান বোধ করলো। টেবিল থেকে নতুন বই গুলো তুলতে টেবিলের উপর একটা নোটবুকের উপর কিছু লেখাতে চোখ গেল তিতিরের।

লেখাটা দেখে তিতিরে বুকের ভিতর হৃদপিন্ড টা জোড়ে জোড়ে ধক ধক করতে লাগল। বই দ্রুত রেখেই নোট বুকটা হাতে নিয়ে একের পর এক পৃষ্টা উল্টে -পাল্টে দেখতে লাগল। এই লেখাগুলো তার চিনতে এক দন্ডও দেরি হয়না। ৩ বছর, ৩টা বছর এই লেখাগুলো নিয়ে তিতির জিন্দা লাশ হয়ে আসায় প্রহর গুনছে। তিতির মাহাদের দিকে চেয়ে দেখে মাহাদ খাটে বসে ওর দিকেই তাকিয়ে আছে।"

!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

-" তিতির অনুমতি না নিয়ে কারো জিনিস যে ধরতে নাই সেই কথা কি তুমি জানোনা!"

!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

-" মাহাদের কোন কথায় তিতিরের কান পর্যন্ত পৌছালো না। রুমে যতগুলো নোট খাতা ছিল সব একের পর এক দেখছে আর ফ্লোরে ছুড়ে মারছে। তিতিরের আচরন অনেকটা পাগলের মত। কাঁদছে আর সব কিছু খুঁজেই চলছে।"

!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

-" তিতিরের পাগলামো দেখে শেষে মাহাদ উঠে গিয়ে রুমের দরজাটা বন্ধ করে দিল। কেউ দেখে ফেললে পরে সমস্যা হতে পারে।

মাহাদ এসে আবার খাটে বসে তিতিরে পাগলামো দেখছিল। একটা শান্তশিষ্ট মেয়ে এতটা পাগলামো তখনই করে যতক্ষন না সে কাউকে নিজের চেয়েও বেশি ভালবাসে।

!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

- " তিতির যতটা পাড়ল ততটা বুকসেলফ্ থেকে বইয়ের মাঝে থেকে নোটবুক গুলো খুঁজে খুঁজে বের করে সোফার উপর রাখছে আর একেকটার উপর চোখ বুলাচ্ছে।

!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

-" তিতির তোমার পাগলামো শেষ হলে সব কিছু গুছিয়ে রাখতে পারো। কথাগুলো মাহাদ বলতেই তিতির এসে মাহাদের পায়ের নিচে ফ্লোরে বসে পড়ল। মাহাদের দিকে অসহায়ের মত তাকিয়ে থাকে। ছোট্ট বাচ্চাদের মত চোখদিয়ে অঝোড়ে পানি পড়তে লাগল তিতিরের.......।

♥ ভাবনা তোর অর্থহীন, মনের অতলে...

মন আমার মানছেনা, আয়না রে কাছে..♥
Author, Publisher & Developer

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

উফ!
মনে হচ্ছে আপনার ইন্টারনেট সংযোগে কিছু সমস্যা আছে। অনুগ্রহ করে আগে আপনার ইন্টারনেটের সংযোগ ঠিক করুন এবং তারপর আবার ব্রাউজিং শুরু করুন৷
AdBlock সনাক্ত করা হয়েছে!
আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি আপনার ব্রাউজারে অ্যাডব্লকিং প্লাগইন ব্যবহার করছেন৷ আমরা আপনাকে আপনার অ্যাডব্লকিং প্লাগইন বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করছি, কারন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমরা যে রাজস্ব আয় করি তা এই ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।