আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুগ্রহ করে গল্প সম্বন্ধে আপনার মতামত অবশ্যই প্রকাশ করবেন। আপনাদের মতামত আমাদের এই ছোট প্রয়াসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগায়। শীঘ্রই আরও নিত্য নতুন গল্প আপডেট আসছে, সঙ্গে থাকুন। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখক/লেখিকা'র নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত গল্পের ডায়েরি’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখক/লেখিকা'র কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় গল্পের ডায়েরি কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ করলে তা কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

আমার অন্তরালে তুমি - পর্ব ২৪ - ফারহানা ছবি - ধারাবাহিক গল্প


গাড়ি কোন ভাবে পার্ক করে মুরাদ দৌড়ে চৌধুরী ম্যানশনে ঢুকে চমকে গেল বন্যা কে দেখে ডিপ ব্লু রঙের লেহেঙ্গা পড়া ৷ সাথে ভারি সাজ ৷ অসম্ভব সুন্দর লাগছে বন্যা কে ৷ মুরাদ একদৃষ্টিতে বন্যার দিকে তাকিয়ে আছে তখনি বর্ণ গলা খাকাড়ি দিয়ে বলল"" দোস্ত অনেক সময় পাবি আমার বোন কে দেখার এখন আপাদতো মুখ টা বন্ধ কর সবাই দেখছে...""

বন্যা মুরাদ কে এভাবে ওর দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে প্রচন্ড লজ্জা পায় ৷ এদিকে মিস্টার আর মিসেস চৌধুরী মুখ টিপে হাসছে৷ 

মুরাদ বর্ণের দিকে তাকিয়ে রাগি চোখে তাকিয়ে বলতে লাগলো "" এই সব কি বর্ণ আর ফোনে তুই এভাবে আমার কথা কেন বললি?""

"" তুই কি আমার কাছে কৌফত চাইছিস ?" গম্ভির মুখ করে বললো বর্ণ ৷ বর্ণ কে সিরিয়াস হতে দেখে মুরাদ শুকনো ঢোক গিলে মনে মনে বলতে লাগলো " তুই যদি কোন ভাবে জানতে পারিস আমি তোর টিয়াপাখিকে সন্ধেহ করছি তাহলে তুই যে আমার সাথে কি করবি এটা ভাবতেও আমার পুরো শরীল শিউরে উঠছে ৷ তবে কোন প্রমান ছাড়া আমি তোর সামনে ছন্দ ভাবিকে ফলো করার বিষয় টা  কোন ভাবেই জানতে দেওয়া যাবে না৷ " 

মুরাদের ধ্যান ভাঙে মিস্টার চৌধুরী কথায়..

"" মুরাদ আমি তোমার বাবা মায়ের সাথে কথা বলেছি তাদের কোন আপত্তি নেই তোমার আর বন্যার বিয়েতে৷ তাই আমরা ঠিক করেছি আজ তোমাদের এঙ্গেজমেন্ট হবে ৷ বিয়েটা হবে তোমার বাবা মা দেশে ফিরে আসার পর..."

"" ড্যাড এই সব কথা পড়ে হবে আমি মুরাদ কে নিয়ে যাচ্ছি ও চেন্জ করবে তো..""

"" হুম .."" বর্ণ মুরাদ কে নিজের রুমে নিয়ে এসে বন্যার ড্রেসের সাথে ম্যাচিং ওয়াইট শার্ট ব্লু কোট প্যান্ট মুরাদের হাতে ধরিয়ে দেয়৷ 

" ঝটপট চেন্জ করে আয় তারপর তোর প্রশ্নের উওর দিবো....""

মুরাদ ঝটপট চেন্জ করে এসে বর্ণ কে বলে "" এবার সবটা খুলে বল প্লিজ , আঙ্কেল আন্টি বনপাখি আর আমার কথা জানলো কি করে?""

"" ইট'স ভ্যারি সিমপিল আমি বলেছি এন্ড রাজি করেছি""

"" আহা একে বলে বেস্টফ্রেন্ড ওহ ব্রেস্টফ্রেন্ড বলাতে মনে পড়লো ভাবি কে বলেছিস?""

"" এগুলো তো তারই প্লান ছিলো মুরাদ..""

"" ওয়াট!"

" হ্যা ওই তো আমাকে প্রথমে কনভেস করে মমের সাথে কথা বলে তারপর আমি আর মম ড্যাড কে বুঝিয়ে বলাতে রাজি হয়ে যায়৷ ""

"" বাহ ! তো ভাবি আমাদের এঙ্গেজমেন্টে আসবে না?""

"" নাহ ওর ভাবির নাকি শরীল ভালো না তাই ওকে ওর ভাবির কাছে থাকতে হবে ৷ অবশ্য ভিডিও কলে পুরো অনুষ্ঠান টা রুমে বসে দেখবে সে ব্যাবস্তা আমি করে দিয়েছি...""

মুরাদ কথা না বারিয়ে চুল গুলো সেট করে পারফিউম দিয়ে নিচে চলে আসে ৷ বন্যা এতোক্ষন মুরাদের জন্য অপেক্ষা করছিলো ৷ মুরাদ কে নামতে দেখে বন্যার ঠোটের কোনে হাসি ফুটে উঠলো ৷ সুন্দর ভাবে বন্যা আর মুরাদের এঙ্গেজমেন্ট হয়ে গেল৷ ছন্দ পুরো অনুষ্ঠান টা ভিডিও কলে দেখে কল ডিসকানেক্ট করে নিজে তৈরি হয়ে নিলো ৷ সুতি কাতানে জাম কালার একটা শাড়ি পড়ে ম্যাচিং জুয়েলারি পরে নিলো ৷ কারন কিছুক্ষনের মধ্যে তার যে নিচে যাওয়ার জন্য ডাক পড়বে এটা ছন্দ খুব ভাবলো করেই জানে কারন তার সো কল্ড বাবার পরিচিতরা অলরেডি এসে পড়েছে৷ 

৮৫

মাথায় ঘোমটা দিয়ে পাত্রের সামনে বসে আছে ছন্দ তবে মাথা নিচু করে নয় ৷ ছন্দ ছেলেটির পা থেকে মাথা পর্যন্ত স্কান করছে৷ ছেলেটি বার বার রুমাল দিয়ে কপালের ঘাম মুচছে ৷ ছন্দ এটা ভেবে পাচ্ছে না এয়ারকন্ডিশনের ভিতর থেকে কি করে এতো ঘামছে লোকটা? 

"" বাহ মেয়ে তো দেখতে মাশাআল্লাহ তা মামুনি রান্না বান্না কিছু জানো তো?""

"" জ্বি আন্টি আমি অনেক রকম রান্না করতে জানি""

"" তা কি কি পারো শুনি?"

"" এইতো ব্যাংঙের ফ্রাই , ইদুরের কাটলেট, কাকের মোরব্বা, আড়শোলার ঝোল, টিকটিকি বিরয়ানি আর... বাকিটা বলতে পারলো না পাত্রের মায়ে চিৎকারে...

"" সাব্বির ভাই এই সব কি আপনি আমাদের আগে জানাতে পারতেন তো আপনার মেয়ে পাগল...""  বসা থেকে উঠে দারিয়ে বললো পাত্রের মা..

"" না না আপনি ভূল বুজছেন? "

"আমরা কেউ ভূল বুজছি না সাব্বির তোর মেয়ে কি সব রান্নার কথা বললো শুনতে পেলি না .." (পাত্রের বাবা)

সাব্বির আহাম্মেদ রেগে ছন্দের দিকে তাকাতে ছন্দ বেচারা টাইপ মুখ করে আছে৷ যেন কিছুই বুজতে পারছে না কি হচ্ছে ৷ 

"" ছন্দ রুমে যাও .."" ছন্দ সাব্বির আহাম্মেদ এর কথা শুনে গোমড়া মুখ করে বলে উঠলো "" আব্বু আমার কি বিয়ে হবে না? এই খচ্চর মহিলা এমন করে কথা বলছে কেন ? " ছন্দ পাত্রের হাত ধরে বলতে লাগলো এই ছেলে তোমার নাম কি ?"

"" আ..আশিক.."" ভয়ে ভয়ে বললো..

"" আব্বু আমি এই আশিক কে বিয়ে করবো ৷ ""

"" ছন্দ আমি বলেছি রুমে যাও"" কড়া গলায় বললো সাব্বির আহাম্মেদ ...

"" যাচ্ছি যাচ্ছি এতো বকার কি আছে বুঝি না বাপু..." পাগলের মতো বক বক করতে করতে উপরে নিজের রুমে চলে গেল ছন্দ ৷ এদিকে মুন্নি কিয়ারা বেগম কায়রা বেগম হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ছন্দের চলে যাওয়ার দিকে... ছন্দ যে এমন ব্লান্ডার করবে এর বিন্দু মাত্র ধারনা কারোর ছিলো না ৷ এখনো যেন শকের ভিতর আছে তিন জন ৷ ছেলে পক্ষ রেগে চলে যেতে সাব্বির আহাম্মেদ রাগে বক বক করতে করতে নিজের রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়৷ অন্য দিকে ছন্দ রুমে এসে ফোনে গান ছেড়ে দিয়ে উড়াধুরা নাচতে লাগলো...

দুদিন পর....

মুরাদ পুরো দমে লেগে পরে ছন্দের পিছুনে গোয়েন্দা গিড়ি করতে কিন্তু বিশেষ কিছু উপকার পাইনি মুরাদ কারন ছন্দ ভার্সিটি টু বাড়ি যাতায়াত করে অন্য কোথাও যায় না৷ 

রাত দুটো ছন্দ রেডি হয়ে পিছুনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে দেখতে পায় মুন্নি সে দিনের মতো কারো সাথে লুকিয়ে কথা বলছে ছন্দ আজ আগে থেকে অন্ধকারে দারিয়ে আছে ৷ ছন্দ দুর থেকে দেখতে পারছে মুন্নি সেই ব্যাক্তির কাছে হাত জোর করে আকুতি মিনুতি করছে ৷ সেই ব্যাক্তি মুন্নির কোন কথা না শুনে রিভালবার বের করে মুন্নি কে শাশিয়ে চলে যেতে লাগলো... মুন্নি চোখ মুছে চলে যেতে ছন্দ অন্ধকার থেকে বের হয়ে সেই ব্যাক্তির পিছু যেতে যেতে লাগলো ৷ ছন্দ আগে থেকে অনিল কে বলে দিয়েছিলো বাড়ির পিছুনে গাড়ি রেখে যেতে  অনিল তাই করে ৷ কালো কোট পড়া ব্যাক্তিটা নিজের গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়তে ছন্দ ও পিছু নেয় গাড়িটার... বেশ কিছুক্ষন পর গাড়িটা   গাড়িটা একটা বিশাল বহুল বাড়ির সামনে এসে দারায়৷ বাড়িটা দেখে ছন্দ চমকে ওঠে ... 

ছন্দ তাকিয়ে আছে গাড়ি দিকে কে নামবে তাকে দেখার জন্য তখনি হঠাৎ চোখ পড়ে গেটে পাহাড়া দেওয়া গার্ডদের উপর তারা প্রত্যেকে অজ্ঞান হয়ে চেয়ারে বসে আছে৷ ছন্দ অপেক্ষা করছে গাড়ি থেকে বের হবে সেই মানুষটাকে দেখার জন্য ৷ সেই কাক্ষিত সময় এসে পড়ে ৷ কালো কোট মাক্স খুলে ব্যাক্তি গাড়ির ডিকিতে রেখে খুব সাবধানে গার্ডদের পাশ কাটিয়ে ভিতরে চলে যায়৷ 

" বাহ এই মানুষটাও যে আমার শত্রু হতে পারে তা কখনো কল্পনা ও করে নি বাট নেভার মাইন্ড ৷ তুমি যদি চলো ডালে ডালে তো আমি চলি পাতায় পাতায় ৷ শেষ তো তোমাকে করবো-ই তবে সে মুহূর্ত টা আসতে বেশি দেরি নয়৷ "" ছন্দ কথা গুলো বলে গাড়ি ঘুড়িয়ে নিলো ...

________________

পরেরদিন ......
সাব্বির আহাম্মেদের কিছু লোকজন রুনার বাড়িতে গিয়ে হামলা করে কিন্তু সেখানে গিয়ে লোক গুলো বোকা হয়ে ফিরে আসে কারন বাড়ি পুরো ফাকা রুনা কাব্য বা রুনার বাবা মা কেউ নেই বাড়িতে ৷ লোক গুলো ফোন করে কথা বলে সাব্বির আহাম্মেদ কে সব টা জানাতে সাব্বির আহাম্মেদ চিন্তায় পড়ে যায়৷ তখনি কায়রা রুমে আসে আর সাব্বির কায়রা কে দেখে রেগে যায়...

"" তুমি তোমার এখানে কি চাই?"

"আমার কি চাই তুমি সেটা ভালো করেই জানো সাব্বির...তুমি কতোটা নিচ তুমি তা নিজেও বুজতে পারছো না? "" কায়রার কথা বলার মাঝে সাব্বির আহাম্মেদ কায়রার গলা চেপে ধরে বলে "" চুপ একদম চুপ কিয়ারা রান্না ঘরে আছে তোর কথা যদি ওর কানে যায় তাহলে তোকে এখানে পুতে ফেলবো...""

কিয়ারা তার সর্বশক্তি দিয়ে সাব্বির কে ধাক্কা মারে সাব্বির টাল সামলাতে না পেরে বিছানায় পরে যায়৷ 

"" অনেক সহ্য করেছি সাব্বির অনেক কিন্তু এখন আর সহ্য করবো না ৷ তুমি কি ভেবেছিলে তুমি আমাদের দু বোন কে নিয়ে খেলবে আর আমি কিছুই বলবো না ৷ হাহ মানছি এতো গুলো বছর কিছু বলেনি কিন্তু তার মানে এই নয় যে আজ কিছু বলবো না ৷ তুমি কতোটা নিকৃষ্ট বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষ তা কি তুমি জানো হা পরিবারে দুটো মেয়ে ছিলাম আমরা দু-বোন কিয়ারা বড় আমি ছোট ৷ তুমি আমাকে প্রেমের জালে ফাসিয়ে ঠিকি বিয়ে করে নিলে ৷ আর পালিয়ে বিয়ে করার অপরাধে তাজ্য কন্না করলো বাবা আমাকে ৷ আপার তো দু বছর আগে বিয়ে হয়েছিলো তাদের কোল আলো করে জন্ম নেয় কাব্য ৷ দু বছর পর সিয়ামের যখন জন্ম হয় ৷  ভালোই চলছিলো সব কিন্তু তোমার ভিতর লোভ লালসার জন্য সব শেষ করে দিলে৷  আমার বাবার সব সম্পত্তি তুমি একা পাওয়ার লোভে দুলাভাই কে মেরে ফেললে ৷  ছেলে নিয়ে ফিরে আসতে হলো আপাকে ৷ আপাকে কটু নোংরা কথা শোনানোর জন্য তুমি  লোক পাঠাতে  আর তুমি তাদের মাঝে উপস্তিত হয়ে প্রতিবাদ করতে ৷ বাবা মা আপা তোমাকে না দেখার সুর্বন সুযোগ তুমি নিলে একজন সৎ নিষ্ঠা বান ছেলে হয়ে তাদের পাশে দারালে ৷ বাবা তোমার সৎচরিত্র দেখে আপার সাথে তোমাকে  বিয়ের প্রস্তত দেয়  যেটার জন্য তুমি এতোদিন অপেক্ষা করছিলে৷ আর আমাকে আমার ছেলে সহ অন্য শহরে পাঠিয়ে দিলে ৷ আমি কিছু বলতে গেলে তুমি আমাকে আর সিয়াম কে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে চুপ করিয়ে রাখতে কিন্তু এখন এখন কাকে শেষ করবে তুমি? ""

"" কায়রা তুমি কিন্তু একটু বেশি কথা বলছো কিয়ারা যদি কোন ভাবে কথা গুলো জানতে পারে তাহলে তোকে তো শেষ করবোই সাথে তোর বোনের ছেলে বউকেও শেষ করে দিবো "" দাঁতে দাঁত চেপে বললো...

"" তোর মতো জানোয়ার এর থেকে আর কি বা ভালো কিছু করতে পারে? তবে মনে রাখিস তোর পাপের ঘড়া যে দিন পূর্ন হবে সেদিন তোর এমন ভয়ঙ্কর মৃত্যু হবে যেটা দেখে তোর মতো পাপীদের ভয়ে আত্তা শুকিয়ে যাবে৷ আমি সে দিনের অপেক্ষায় আছি৷ "" কায়রা চোখের পানি মুছে রুম থেকে বেরিয়ে গেল৷ 

কিয়ারা রান্না ঘরে ছিলো বাধায় কোন কথাই তার কানে আসেনি৷ কায়রা রুম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ছন্দ আড়াল থেকে বেরিয়ে আসে৷ 

কায়রা যখন ছুটে সাব্বির আহাম্মেদের রুমে ঢুকে তখন ছন্দ রুম থেকে বেরোনো সময় দেখতে পায় কায়রাকে৷ ছন্দ তখনি দরজার আড়ালে দারিয়ে পড়ে সবটা শোনার জন্য........

"" কাব্য ভাইয়ের বাবাকেও খুন করেছে এই লোকটা ৷ আর আম্মু কিছুই জানে না? নেভার মাইন্ড আমি না হয় কাব্য ভাইয়ের হয়ে এই লোকটাকে শাস্তি দিবো ৷ কিন্তু তার আগে মুন্নির সাথে আমাকে কথা বলতে হবে৷..." ছন্দের ভাবনার ছেদ ঘটে কিয়ারা বেগমের চিৎকারে ছন্দ হন্তদন্ত হয়ে ছুটে যায় রান্না ঘরে , সেখানে গিয়ে দেখে কিয়ারা বেগম হাত ধরে আছে ৷ গরম তৈল পড়ায় হাতে ঠোসকা পরে গেছে ছন্দ দ্রুত ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা পানি বের করে কিয়ারা বেগমের হাতে ঢালতে লাগলো... সাব্বির আহাম্মেদ ও ইতি মধ্যে রান্না ঘরে এসে পরে কিয়ারার হাতের অবস্তা দেখে মলম নিয়ে আসে ৷ ছন্দ কিয়ারাকে ড্রইংরুমে নিয়ে আসে৷ সাব্বির আহাম্মেদ কিয়ারার হাতে খুব যত্ন সহকারে হাতে মলম লাগিয়ে দিচ্ছে৷ 

" আম্মু তুমি রেস্ট করো আমি আর মুন্নি মিলে বাকি সব রান্না করে ফেলবো""

"" তুই পারবি ?"

"" ট্রাস্ট মি আম্মু আমি তোমার থেকেও ভালো রেধে দেখাবো ৷ তুমি রুমে গিয়ে রেস্ট করো..""

"" হ্যা কিয়ারা রুমে চলো তোমাকে কিছু করতে হবে না৷ ছন্দ আর মুন্নি মিলে বাকিটা সামলে নিতে পারবে"" 

সাব্বির আহাম্মেদ জোর করে কিয়ারা কে রুমে নিয়ে যায় ৷ এদিকে ছন্দের হাতে চাঁদ পাওয়ার মতো অবস্তা ছন্দ মুন্নি কে একা পেল ৷ 

"" মুন্নি চল বাকি রান্নাটা আমরা দুজনে মিলে করে ফেলি.."

"" হ আফা চলেন "" 

ছন্দ মাছ তৈলে ছাড়তে ছাড়তে মুন্নি প্রশ্ন করে.."" হেরে মুন্নি তোর মা বোন এখন কোথায় থাকছে?"

ছন্দ মুন্নির মা বোনদের কথা জ্বিগাসা করতে মুন্নির মুখে অন্ধকার নেমে আসে ৷ 

"" কি হলো বল কোথায় থাকে?""

"" ওই তো সামনে এক বস্তিতে""

"" ওহ তাহলে আজ তোর মা বোনদের সাথে দেখা করবো ঠিক আছে?""

দেখা করার কথা শুনে মুন্নি ঘাবড়ে যায় কারন তার মা বোন যে বস্তিতে নেই অনেক আগে কেউ একজন তাদের তুলে নিয়ে আটকে রেখেছে তা ছন্দ জানতে পারবে৷ আর ছন্দ সব টা জানতে পারলে তার মা বোনদের হারাতে হবে এটা মুন্নি কিছুতেই হতে দিতে পারে না তাই মুন্নি হুট করে বলে উঠলো " আফা মায় আর বইনেরা তো এখন বস্তিতে নাই তারা গ্রামে গেছে..""

"" তাই কিন্তু এই তুই না বললি তারা বস্তি তে আছে?"

"" ভুল করে বলে ফেলছি আফা.""

"" আচ্ছা ঠিক আছে তুই মাছ গুলো উলটে দে আমি সবজি টা চরিয়ে দিচ্ছি..""

"" আচ্ছা..." 

"" আমি খুব ভালো করেই বুজতে পারছি মুন্নি তোকে সে জোর করে আমার ক্ষতি করানোর চেষ্ট করতে বাট তুই চিন্তা করিস না আমি তোর মা বোনদের ফিরিয়ে আনবো যাস্ট কিছু সময়ের অপেক্ষা ...""( মনে মনে )

___________________
৮৬

"" স্যার আমরা নতুন প্রজেক্ট টা পাওয়ার আগে একটা অন্য কোম্পানি সে প্রজেক্টটা নিয়ে নিয়েছে"" আয়মান চৌধুরীর পিএ আখি বললো...

"" কিহ কোন কোম্পানী এই সাহস টা দেখালো আখি নাম কি সে কোম্পানির?" রেগে বললো আয়মান চৌধুরী...

"" A M কোম্পানী ...""

"" A M কো কোম্পানী ? " বসা থেকে উঠে দারিয়ে বললো আয়মান চৌধুরী..

"" জ্বি স্যার...""

"" এই কোম্পানির এমডি কে?"

"" SJ নাম স্যার তবে আমরা এখনো এই নামের ফুল মিনিং জানি না আর সে এমডি কে দেখেছি...স্যার সব থেকে ইম্পটেন্ড কথা হচ্ছে ওই কোম্পানি বেছে বেছে আপনার প্রজেক্ট গুলো নিয়ে নিচ্ছে৷ "

"" খোজ নেও কে এই এম ডি তার পুরো ডিটেইলস আমার চাই...""

"" ওকে স্যার, ""

"" নাউ লিভ ," আখি চলে যেতে আয়মান চৌধুরী রুমাল দিয়ে কপাল মুছে ভাবতে লাগলো কে এই কোম্পানিকে আবার দার করালো? ওর জানামতে আফাজের মৃত্যুর পর ওই কোম্পানি কেউ একজন কিনে নিয়েছিলো নাম পাল্টে ফেলেছিলো কিন্তু হঠাৎ করে আবার ... আয়মান চৌধুরীর ভাবনার মাঝে তার ফোন বেজে ওঠে আয়মান চৌধুরীর তার ফোন নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে........


কায়রা কিয়ারাকে রাতে দেখে চলে যাওয়ার পর ছন্দ রুমে এসে দেখে কিয়ারা বেগম ঘুমিয়ে পরেছে ৷ ছন্দের চোখ পরে পাশে টেবিলের উপর  কিয়ারার ফোন ভাইব্রেট হচ্ছে ছন্দ কি ভেবে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে একটা আননোন নাম্বার থেকে মেসেজ এসেছে ছন্দ মেসেজ টা দেখে মেজাজ খারাপ হলো কারন একটা ওয়ার্ড ও লেখা ছিলো না তাতে পুরো ব্লান্ক ৷ ছন্দ নাম্বার নিজের ফোনে সেভ করে নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়৷ 

মুন্নি রান্না ঘরে ঘুমানোর জন্য চাদর পেতে বিছানা করে নিয়ে শুতে যাবে তখনি তার কোমরে লুকিয়ে রাখা ছোট্ট ফোন টা ভাইব্রেট  হতে থাকে..মুন্নি দ্রুত ফোন টা বের করে কল রিসিব করে কানে ধরে....

"" কাজ কতোদুর এগোলো ?" পুরুশালি ভরাট গলায় প্রশ্ন করলো...

"" স্যার আমি পারতাছি না আফার কোন ক্ষতি করতে..."" কাদো কাদো গলায় বললো মুন্নি..

"" চুপ একদম চুপ নেকা কান্না করবি না আমার সামনে তোর মতো বস্তির মেয়েদের আমার জানা আছে ৷ শোন আগামি দুদিনের ভিতর যদি আমি ছন্দের মরার খবর না পাই তাহলে তোর মা বোন কে তুই হারাবি...""

ফোনের অপাশ থেকে কথা গুলো শুনে মুন্নি ভয়ে আঁতকে ওঠে বলে"" না না আপনি আমার মা বোনরে কিছু কইরেন না আমি আপনার সব কথা শুনমু...""

"" গুড গার্ল তবে সময় মাত্র দু দিন মনে থাকে যেন..."" 

ফোনের অপাশ থেকে আর কোন আওয়াজ না পেয়ে মুন্নি ফোন টা কান থেকে নামিয়ে ফুফিয়ে কাদতে লাগলো... ছন্দ পিছুনে দারিয়ে মুন্নির প্রত্যেকটা কথা শুনতে পায়৷ মুন্নি ওর উপস্তিতি বুজতে পারার আগে ছন্দ রান্না ঘর থেকে চলে যায়৷ 

৮৭

ছন্দ নিজের রুমে এসে অনিল কে ফোন করে..

"" অনিল আমি একটা নাম্বার সেন্ড করেছি ৷ ফোন নাম্বার টা কার লোকেশন আমাকে ইমিডিয়েটলি জানাও আর মুন্নির মা বোন কে খুজে বের কর ৷ বস্তি থেকে ওদের কে তুলে নিয়ে গেছে?" 

"" কুইন আমাকে যাস্ট টুয়েন্টি মিনিট দিন আমি সবটা আপনাকে জানাচ্ছি..""

"" ওকে.."" ছন্দ কল কেটে দিয়ে পাইচারি করতে লাগলো তখনি বেলকনিতে কিছু একটা পরার শব্দ হতে ছন্দ এগিয়ে যায় দেখার জন্য .. বেলকনিতে নীল আলোয় বর্ণ কে দেখে ছন্দ চমকে যায়...

"" তুমি এখানে..." অবাক হয়ে জানতে চাইলো ছন্দ, বর্ণ ছন্দের প্রশ্ন শুনে এক হাত দিয়ে ছন্দের কোমর জরিয়ে ধরে আর একহাত দিয়ে ছন্দের চোখ মুখ ঠোট ছুয়ে দিয়ে বলতে লাগলো " কেন আমাকে বুঝি আশা করো নি টিয়াপাখি ?"

"" উহু তা নয় তুমি না  জানিয়ে এসেছো তাই তাই প্রশ্ন করলাম..""

"" তার আগে তুমি বলো আমার রাখা সিগরেট ক্যামেরা গুলো তুমি খুজে পেলে কি করে?"

" আমার রুম আমার অজান্তে তুমি ক্যামেরা সেট করে যাবে আর আমি তা টের পাবো না কি করে সম্ভব বনরাজ?"" 

বর্ণ ছন্দের কোমর জরিয়ে ধরে বেলকনির ডিভানে বসে ছন্দের কাধে মুখ গুজে বুলতে লাগলো"" আমি জানি টিয়াপাখি তোমার সবটা মনে পড়ে গেছে ৷ তুমি আমাকে চিনতে পেরেছো যে আমি তোমার ছোট বেলার খেলার সাথী তোমার বনরাজ..""

ছন্দ একটু চুপ থেকে নিজ থেকে বলতে লাগলো "" হ্যা বনরাজ আমার সবটা মনে পড়ে গেছে ৷ তোমার বাবা আমার বাবার বেস্টফ্রেন্ড ছিলো ছোট বেলা থেকে আমাদের বাড়িতে তোমাদের যাতায়াত ছিলো ৷ আমি এটাও জানতাম আঙ্কেল আন্টি আর আম্মু আব্বু তোমার সাথে আমার বিয়ে ঠিক করে রেখেছিলো ৷ কিন্তু আমি বন্যা কে কেন চিনতে পারি নি?""

"" কারন বন্যার সাথে তোমার ছোট বেলায় একবার মাত্র দেখা হয়েছিলো তাই ৷ বন্যা ক্লাস যখন ফোর তখন ড্যাড মম ওকে ইউ এস ছোট মামার কাছে পাঠিয়ে দেয় ৷ ওখানে স্কুল শেষ করে দেশে ফিরে কিন্তু তার আগে ঘটে যায় সেই এক্সিডেন্ট ৷ আঙ্কেল আন্টি  গ্যাস সিলিল্ডার ব্লাস্ট করে মারা যান ৷ তুমি তা দেখে সর্ট মেমোরি লস হয় ৷ সে সময় তোমার চাচা যাকে বাবা বলে জানো তিনি তোমাকে নিয়ে লুকিয়ে কোথায় চলে যায় তার খোজ আমরা কেউ পাই নি৷ সবাই রটিয়ে দেয় সেই আগুনে পুরে তুমি ও শেষ.."" বাকিটা আর বললো না বর্ণ...

"" বনরাজ তুমি কিচ্ছু জানো না যে দিন সবটা জানতে পারবে সেদিন তুমি কি রিয়েক্ট করবে আমি জানি না তবে তোমার জানার আগে আমি এই চাপ্টার শেষ করে ফেলবো ৷ আমাকে শেষ করতে দুদিন সময় দিয়েছে না! আমি কথা দিচ্ছি এই দুদিনে আমি আমার সব শত্রুদের শেষ করে ফেলবো তবে তুমি কখনোই আমার দ্বিতীয় রুপের কথা জানতে পারবে না ৷ একটা কয়েনের তুমি শুধু একপিট দেখে যাবে "" মনে মনে কথা গুলো আওড়াতে লাগলো ছন্দ...

"" কি ভাবছো টিয়াপাখি ?""

"" একটা কথা দিবে আমায় বনরাজ!"

"" কি কথা?""

" আমার যে সবটা মনে পড়ে গেছে এটা তুমি কাউকে জানাবে না ৷ কাউকে মানে কাউকে না""

"" কিন্ত... ওকে জানাবো না ৷ কিন্তু তার বিনিময়ে আমি কি পাবো?"" 

"" কি চাও তুমি ?"
"" যা চাই তা দিবে তো?""

"" উমম ভেবে দেখবো কিন্তু কি চাও সেটা তো বলবে?""

"" তোমাকে....."" 

"" ধ্যাত এখন উঠো আর ফ্রেস হয়ে এসো ""

"" ওকে সুইটহার্ট .." ছন্দের কানের লতিতে ঠোট ছুইয়ে উঠে পড়লো বর্ণ... বর্ণ ওয়াশরুমে ঢুকতে ছন্দের ফোনটা বেজে ওঠে ছন্দ কল রিসিব করে বেলকনিতে দারায়..

"" হ্যালো কুইন আপনি যে নাম্বার টা দিয়েছিলেন নাম্বার টা হলো আ... বাকিটা বলার আগে ছন্দ বলে ওঠে "" স্টপ অনিল এটা বলার আগে বলো যে মুন্নির মা বোন কোথায় আছে?""

" ওদের কে রুপসা নদীর পাড়ে পুরনো ফ্যাক্টোরিতে আটকে রাখা হয়েছে ৷ আপনি বললে ওদের সবাই কে রেসকিউ করতে পারি যাস্ট আপনার অনুমতি প্রয়োজন..""

"" হ্যা করবে ওদের রেসকিউ করে সেইভজনে রেখো আর ... বাকিটা বলার আগে ওয়াশরুমের দরজা খোলার শব্দ পেয়ে ছন্দ কল কেটে দিয়ে রুমে এসে দেখে বর্ণের ছাই রাঙা শার্টের বোতাম বুক পর্যন্ত খুলে রাখা ৷ ভিজে চুল গুলো তোয়ালে দিয়ে মুছতে মুছতে বের হচ্ছে বর্ণ... 

পানির বিন্দু বিন্দু কোনা গুলো বর্ণের বুকে যেন চিক চিক করছে ৷ ছন্দের ইচ্ছে করছে বর্ণের ওই বুক মাথা রেখে জরিয়ে ধরতে ৷ ছন্দ ঠোট কামড়ে সে ইচ্ছে দমিয়ে রেখে বর্ণ কে প্রশ্ন করলো.." ডিনার করবে তো?"

"" উমম না ডিনার করে এসেছি তবে কফি হলে মন্দ হতো না ৷ " 

ছন্দ রান্না ঘরে না গিয়ে কাবার্ডের পাশে ছোট টেবিলের নিচের পার্ট খুলে ইলেকট্রিক কেতলি বের করে তারপর কফি চিনি গুড়ো দুধ বের করে ঝটপট কফি বানিয়ে দেয় বর্ণ কে ... 

"" বাহ টিয়াপাখি তো রুমে সব ব্যাবস্তা করে রেখেছে দেখছি ""

"" জ্বি সব-ই আপনার জন্য.." ছন্দ বর্ণের গলা জরিয়ে ধরে বললো..

"" রিয়েলি? "

"" জ্বি বিলাই ব্যাটা এখন ঝটপট কফি টা খেয়ে বলুন কেমন হয়েছে?""

বর্ণ কফি টা টেস্ট করে চোখ মুখ কুচকে ফেললো ৷ ছন্দ বর্ণের চোখ মুখ কুচকে থাকতে দেখে ভেবে নেয় যে তার কফি টা খেতে জঘন্য হয়েছে ৷ তখনি হঠাৎ বর্ণ ছন্দের বা হাত ধরে ঘুড়িয়ে কোলে বসিয়ে কানের কাছে ঠোট এনে ফিস ফিস করে বলে"" আমার লাইফে খাওয়া বেস্ট কফি এটা টিয়া পাখি ৷ অসম্ভব ভালো হয়েছে কফিটা...""

বর্ণের ফিস ফিস করে প্রত্যেকটা কথায় ছন্দের পুরো শরীল শিউরে উঠছে ৷ ছন্দ বর্ণের কোল থেকে উঠে যেতে নিলে বর্ণ আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরে ছন্দ ৷ ছন্দ কে জরিয়ে ধরে পুরো কফি টা খেয়ে বেডের পাশে টেবিল ল্যাম্প অফ করে দেয়.....

___________________
৮৮

পরের দিন দুপুরে ছন্দ ভার্সিটির পিছুনের গেট দিয়ে বের হয়ে দেখে অনিল দারিয়ে আছে তবে আজ গাড়ি নিয়ে নয় বাইক নিয়ে..ছন্দ কাছে যেতে অনিল বলে ওঠে " কুইন ওড়না দিয়ে মুখ ঢেকে নিন কারন এর পরের রাস্তায় মুরাদ গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছে আপনাকে ফলো করার জন্য...

"" অনিল মুরাদের সম্পূর্ন পরিচয় নিশ্চয় জানো?""

"" জ্বি কুইন মুরাদ একজন সিগরেট পুলিশ অফিস্যার আর এই কথা শুধু জানে বর্ণ স্যার আর কেউ জানে না ইভেন ওনার বাবা মা ও জানে না..."" 

" হুম মুরাদের থেকে সাবধানে থাকতে হবে ৷ এখন যাওয়া যাক সেই ফ্যাক্টোরিতে"

"ওকে কুইন" অনিল ছন্দ কে বাইকে নিয়ে দ্রুত বেরিয়ে যায় ৷ ফুল স্পিডে থাকায় মুরাদের সামনে দিয়ে যাওয়ায়  খেয়াল করে নি মুরাদ ৷ 

"" আজ তো আমি ভাবির পিছু নিবো-ই ৷ আজ আর ভূল করবো না ৷ কিন্তু ভাবি এখনো বের হচ্ছে না কেন? ক্লাস টাইম তো শেষ তাহলে?" 

মুরাদ ভার্সিটির বাইরে দারিয়ে ছন্দের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো...অন্যদিকে অনিল ছন্দ কে দশ মিনিটে পৌছে যায় সেই ফ্যাক্টরিতে ...

"" কুইন আপনি এখানে দু মিনিট ওয়েট করুন প্লিজ কারন আমরা কেউ ওই ফ্যাক্টরির ভিতরে ঢুকবো না ঢুকবে ওরা হাতের ইশারায় করতে ছন্দ দেখে দানবের মতো লম্বা লম্বা অনেক লোক তাদের হাতে মেশিন গান৷ অনিলের ইশারা পেতে তারা সবাই ভিতরে ঢুকলো ৷ ওরা ঢুকার এক মিনিটের মাথায় কয়েকটা ফায়ারিংয়ের শব্দ ভেষে আসে ৷ তার পাচঁ মিনিট পর লোক গুলো একজন বয়স্ক মহিলা আর দুটো দশ বারো বছরের মেয়েদের সাথে নিয়ে বের হয়৷ প্রত্যেকের চোখে কালো কাপড় বাধা ৷ ছন্দের নির্দেশে ওদের সেইফজনে পাঠিয়ে দেয়৷ "

" কুইন গতকাল রাতে আপনাকে আর একটা নিউজ দিতে পারেনি ৷ ওই নাম্বারটা হলো.. বাকিটা বলার আগে ছন্দ বলে উঠলো " আই নো ওই নাম্বার টা কার অনিল.... এখন আমাকে ফিরতে হবে ৷ বাইকের চাবিটা ..""

"" কুইন আপনি চালাবেন বাইক ?"" চাবিটা ছন্দের হাতে দিয়ে প্রশ্ন করলো অনিল..

" হুম চালাবো আর আমার সাথে তুমিও যাবে..." 

" ওকে কুইন.." ছন্দ বাইক স্টাট দিয়ে ফুল স্পিডে রাইড করতে লাগলো ৷ এতো স্পিডে চালাতে দেখে  অনিল ভিতরে ভিতরে ভয় পেতে লাগলো ৷ ওর থেকে বেশি স্পিডে বাইক রাইড করছে ছন্দ....

ছন্দ বাইক নিয়ে ভার্সিটির পিছুনের রাস্তায় এসে থামে..

ছন্দ বাইক থেকে নেমে দ্রুত ভার্সিটির  ভিতরে চলে যায়৷ পিছুনের গেট দিয়ে ঢুকে সামনের গেট দিয়ে বের হয়ে আসে ছন্দ ৷ এতোক্ষন পর ছন্দ কে বের হতে দেখে মুরাদের ঠোটের কোনে হাসি ফুটে উঠলো এটা ভেবে ছন্দ কে সে এবার ফলো করে সবটা জানবে ... কিন্তু মুরাদের সে খুশিতে পানি ঢেলে ছন্দ রিকসা নিয়ে বাড়িতে চলে আসে ৷ এবারো হতাস হয় মুরাদ...

_______________

টেবিলের উপর থেকে ফাইল ছুড়ে ফেলে রাগে ফুসতে লাগলো সেই ব্যাক্তি , তার হাতের মুট থেকে তার বন্দিকে কে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে তার কূলকিনাড়া করতে না পেরে রেগে ভাঙচুর করতে লাগলো...

"" বস শান্ত হন দয়াকরে.."

" বেরিয়ে যা আমার চোখের সামনে থেকে বেরিয়ে যা" হাতের গ্লাস টা ছুড়ে মারলো তার লোকের দিকে... লোকটি ভয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়৷  

"" কে কে আমার পরিকল্পনা ভেস্তে দিলো তাকে আমার সামনে চাই ৷ তাকে আমি নিজের হাতে শেষ করবো ৷ হাহ তার আগে বেবিকে সব টা জানাতে হবে কিন্তু ও কেন মেসেজের কোন রিপলে দিলো না ? নাহ এবার সহ্য হচ্ছে না আমার ... বলে ফোন বের করে তাকে কল দিলো......
Author, Publisher & Developer

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

উফ!
মনে হচ্ছে আপনার ইন্টারনেট সংযোগে কিছু সমস্যা আছে। অনুগ্রহ করে আগে আপনার ইন্টারনেটের সংযোগ ঠিক করুন এবং তারপর আবার ব্রাউজিং শুরু করুন৷
AdBlock সনাক্ত করা হয়েছে!
আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি আপনার ব্রাউজারে অ্যাডব্লকিং প্লাগইন ব্যবহার করছেন৷ আমরা আপনাকে আপনার অ্যাডব্লকিং প্লাগইন বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করছি, কারন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমরা যে রাজস্ব আয় করি তা এই ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।