আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুগ্রহ করে গল্প সম্বন্ধে আপনার মতামত অবশ্যই প্রকাশ করবেন। আপনাদের মতামত আমাদের এই ছোট প্রয়াসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগায়। শীঘ্রই আরও নিত্য নতুন গল্প আপডেট আসছে, সঙ্গে থাকুন। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখক/লেখিকা'র নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত গল্পের ডায়েরি’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখক/লেখিকা'র কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় গল্পের ডায়েরি কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ করলে তা কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

অচেনা অতিথি - পর্ব ১৮ - সিজন ২ - নাফিসা মুনতাহা পরী - ধারাবাহিক গল্প


সবার সামনে থাপ্পড় খেয়ে লাবীবা ফুসতে লাগলো। পুরো পরস্থিতিই যেন থমকে দাড়ালো। কামরান সাহেবও তার ভুল বুঝতে পেরে চুপ করে রইলো। আর যাই হোক পাবলিক প্লেসে পারিবারিক ব্যাপারগুলো তুলে আনা ঠিক হয়নি।

এমন পরিস্থিতির ফায়দা নিতে কেবল মকবুল আলম আগ বাড়িয়ে বলল-

~" স্যার আপনিও না! সবার সামনে ম্যাডামের গায়ে শেষ পর্যন্ত হাত তুললেন! সব জায়গায় মাথা গরম করলে কি চলে!"

এই চুপপপ....!  কথাগুলো খুব কঠিন ভাবে বলল লাবীবা। আমার স্বামী আমাকে মারুক কাটুক তাতে আপনি নাক গলানোর কে? যোগ্যতার ভিতর থাকুন। এর বাহিরে একদম আসবেন না। তাহলে আগাছা কিভাবে ছেটে দিতে হয় সেটা আমার খুব ভালো করে জানা আছে।

লাবীবার এমন রগচটা কথা শুনে মকবুল সহ আলতাব নাযীম একদম চুপসে গেল। আলতাব সাহেব এখানে এসেও বিশাল বিপদে পড়ে গেছেন। ছেলে যে কি অবস্থা আছে সেটা তিনি নিজেও জানেন না। শুধু একবার এখান থেকে বের হোক তারপর তার খেল দেখাবে। প্রয়োজনে দল থেকে বহিষ্কৃত হবে তবুও ছেলের কিছু হতে দিবেন না তিনি।


মাহাদ রুমে এসে কেবল পানির গ্লাসে হাত দিয়েছে পানি খাওয়ার জন্য এমন সময় কুসুম দৌড়ে এসে অস্থির গলায় চিল্লায় বলল-

~" ভাইজান, সাহেব খালাম্মরে সবার সামনে মারতাছে।"

কুসুমের কথা শুনে মাহাদ পানি না খেয়ে গ্লাস টেববিলের উপর রেখে ভ্রু কুচকে বলল-

~" কিহ্, পাগল হয়ে গেছিস? কি সব বাজে বকিস! তুই জানিস না, আমি এসব কথাবার্তা একদম পছন্দ করিনা।"

আমি সত্যি বলছি ভাইজান বলেই কুসুম মাহাদের হুইল চেয়ার টেনে ঠেলে ডাইনিংরুমে নিয়ে এল। হ্যা কুসুম মিথ্যা বলেনি। এখানে রিতিমত ঝগড়া বেঁধে গেছে। নিসা লাবীবাকে টেনে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে কিন্তু লাবীবা চিৎকার দিয়ে বার বার বলছে, আর কত? শুধু তোদের রাজনীতির খেলায় অবুঝ সাবিনার জিবন গেল। আর কত রক্ত ঝড়লে তোদের শান্তি হবে! ছেলেটা মরতে মরতে বেচে ফিরে এল। এখনো সে ঠিক হয়নি। জানিনা কবে ঠিক হবে কিনা! আর তোরা আবার সেই নাটক শুরু করেছিস! এবার যদি তোদের নিজেদের সন্তানের কিছু হয়ে যায় তখন তোরা থামবি? আমার এসব ভালো লাগছেনা। এত টাকা পয়সা আর সম্মান আমার চাইনা। এবার থাম তোরা। এত অশান্তি আর ভালো লাগছেনা। একটু শান্তিতে সবাইকে নিয়ে বাঁচতে চাই।

মা বলে জোড়ে ডেকে উঠলো মাহাদ। তারপর শান্ত ভাবে বলে উঠলো,  মা এসব কি হচ্ছে! বাচ্চামো ভাব করছো কেন! সমস্যা ছাড়া কি কারও জিবন আছে নাকি! সমস্যাও যেমন আছে তেমন সেটার সমাধানও রয়েছে। কথাগুলো বলতেই লাবীবা ক্ষেপে উঠে বলল-

~" সমস্ত নাটের গুরু হল তুই আর তোর বাবা। সাদ এখনো ঠিক হয়নি তারপরও তুই কোন সাহসে আবার এসব বিবাদে নামিস! তোর কি একটুও দয়া মায়া নেই মনে!"

~" মা, সাবিনাও আমার মেয়ের মত। ওর মৃত্যুর বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমি মাহাদ স্থির থাকতে পারবোনা। ঐ ছোট মেয়েটাকে নিয়ে ওরা বাপ বেটা যে নোংরামি খেলায় মেতেছিল, তার বিচার না করতেই আমি চুপ হয়ে যাব! কি মি. আলতাব নাযীম,  আমি ঠিক বলেছি তো!

মাহাদের কথা শুনে আলতাব সাহেবের গলা যেন কাঠ হয়ে গেল। কিছু বলতে যাবে এমন সময় মাহাদ বলে উঠলো-

~" University of Bedfordshire থেকে পড়াশুনা করা একটা ছেলে হঠাৎ সাবিনার মত মেয়েকে কেন টার্গেট করবে বলেন?"

আলতাব সাহেব মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে মুচকি হেসে বললেন-

~" কি বলছো বাবা! আমিতো কিছুই বুঝতে পারছিনা।"

বুঝতে পারবেন, পারবেন বলে মাহাদ মকবুল আলীমের দিকে চেয়ে বললেন,

~" তা আঙ্কেল আপনি ২৩ তারিখে কোথায় ছিলেন! সেদিন নিশ্চয় আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ মিটিং ছিলো তাই না আঙ্কেল? এতবড় একটা প্লান যে করতে হবে। তার জন্য মাথা খাটাতে হবেনা! আমার মত মানুষকে ফাঁদে ফেলাতো চাট্টিখানী কথা নয়! তাই না?"

আলতাব সাহেবের সাথে মকবুল আলীমও ভড়কে গেলেন। এসব কি বলছো বাবা! আমরা তোমার বাবার বয়সী! একটু বুঝে শুনে কথা বলতে হয়না!

অনেক সম্মান দিয়ে ফেলেছি। আরও সম্মান দিলে আপনাদের পেটে সইবেনা। কথায় আছে, কুকুরের পেটে কখনো ঘি হজম হয়না। আপনাদের অবস্থাও সেই একই রকম। আপনার প্লানতো আরও ভয়ংকর ছিলো। আমাদের দু'ভাইকে ফাসানোর জন্য সাবিনাকে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন তাই না! কথাগুলো বলেই মাহাদ ফুয়াদের দিকে চেয়ে বলল-

~" ভাইয়া এখনো কিসের অপেক্ষা করছো? মেরে ওদের পিঠের চামড়া তুলতে পারছোনা? সাবিনাকে যতটা কষ্ট দিয়ে মেরেছে এরা তার কিছুটা পরিশোধ তো এদের দিয়েই করতে হবে।"

ফুয়াদ আর দেরী না করে মকবুলকে গোটা কয়েক চড় মারতেই ওর শ্বাস কষ্ট শুরু হল। জোড়ে জোড়ে নিঃশ্বাস টানতেই অালতাব সাহেব মকবুলের পাশে বসে বলল-

~" তোমরা মানুষ না অমানুষ! একজন বৃদ্ধ মানুষকে এভাবে কেউ শাস্তি দেয়!"

ওনার কথা ছাড়ুন। আপনার জন্য আরও বিশাল কিছু আয়োজন করা হয়েছে বলে মাহাদ ওর ফোন বের করে ভিডিও কল দিতেই ওপাশে রিসিভ হলো। 
এই এখনো ও কি মুখ খোলেনি! কথাগুলো বলতেই সাজিদ বললো -

~" স্যার সে তো মুখই খুলছেনা। আমরা মনে হয় ভুল জনকে টার্গেট করেছি। তাছাড়া ওর গায়ের রং ও খুব কালো। এটা তো ওর অর্জিনাল গায়ের রং ।"

~" অর্জিনাল গায়ের রং তাইনা! ওর গায়ের রং অর্জিনাল কালো হলেও আমি ধবধবে ফর্সা করে প্রমাণ করে দিব ঐ তৌকির। টগবগে গরম পানি ওর মুখে ঢেলে দাও। দেখি কালো রং না উঠে কি ভাবে সেটা ছ্যাচড়ার মত ওর গায়ে লেপটে থাকে। যাও গরম পানি নিয়ে এসো। সাথে লবনও মিশ করবা। টর্চার তো টর্চার। এর কম বেশি বলতে আমার কাছে কিছু নেই।"

মাহাদের হুকুম পেয়ে একজন গরম পানি আনতে গেল। আলতাব সাহেব কিছু বলছেনা কিন্তু চোখে পানি ছলছল করছে। সেটা দেখে মাহাদ গম্ভীরমুখে আবার বললো-

~" ভালোই ভালো সব স্বীকার করেন। আপনি না স্বীকার করা অবদি আপনার ছেলের হাতের চিকিৎসা হবেনা। সঠিক চিকিৎসা না হলে সারা জিবনের জন্য হাত হারাতে পারে। একজনকে তো হারিয়েছেন, শেষে এই ছেলেকেও হারাতে চান?"

আলতাব সাহেব তবুও মুখ খোলেনা। শুধু বাসা থেকে একবার বের হতে পারলেই এদের বাপ-ছেলের যা অবস্থা করার দরকার করবে। শুধু সময় যাওয়ার অপেক্ষায় আছে সে। কিন্তু মাহাদও ভালো করে জানে এখান খেকে আলতাব সাহেব বের হলেই বড় রকম ঝামেলা পাকাবে। তাই যা করার  দ্রুত করতে হবে। এদিকে মকবুলের হাঁপের টান বেড়েই চলেছে। সেদিকে নজর না দিয়ে ওরা গরম পানি আনতেই সেগুলো তৌকিরের গায়ে ঢালার নির্দেশ দিল মাহাদ। মাহাদের এমন নির্দেশে আলতাব সাহেব ফ্লোরে বসে কাঁদতে কাঁদতে সব স্বীকার করে বলল-

~" আমার ছেলের চিকিৎসা দরকার। ওকে আর কষ্ট দিওনা তোমরা। আমি সব স্বীকার করে নিচ্ছি, আমি, মকবুল, আমার ছেলে সহ এই বাসার কিছু কাজের লোক এই কাজে অংশীদার ছিলাম। আমরা খুবই অন্যায় কাজ করেছি। হিংসার বশীভূত হয়ে এমন কাজ করেছি। আমাদের উচিত হয়নি এমন কাজ করার। আমাদের মাফ করে দাও।"

ব্যস এতটুকুর জন্য শুধু শুধু ছেলেটাকে এত কষ্ট করালেন আপনি বাবা হয়ে! আপনি এখান থেকে যাবেন কিন্তু এত আরাম আয়েশে এসি গাড়ীতে চড়ে নয়। বরং হ্যান্ডক্যাপ হাতে দিয়ে আপনাকে নিয়ে যাওয়া হবে। অনেক খেলা খেলেছেন আমাদের সাথে আপনারা বাপ ছেলে মিলে। কথাগুলো বলতেই আফতাব  কামরান সাহেবের পা চেঁপে ধরে ডুকরে কেঁদে উঠলেন। স্যার অনেক বড় ভুল করেছি। আমাকে ক্ষমা করে দেন। আমার ছেলেটাকে বাঁচতে দেন। ওর ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দিবেন না প্লিজ। ওকে আর দেশেই রাখবোনা।

জাষ্ট শ্যাট আপ....। সাবিনা এর থেকে করুন আর ভয়ার্ত অবস্থায় আপনার ছেলের কাছে জিবন ভিক্ষা চেয়েছিল। কই তখন কি ওর দয়া হয়েছিল সাবিনার উপর! আরে ওর রাগতো আমাদের উপর ছিল তাহলে সাবিনাকে কেন এত নিকৃষ্ট ভাবে মরতে হল! আমি দু'হাত জোড় করে নিরবে চোখের পানি ফেলেছি তবুও আপনার ছেলের দয়া হওয়া দুরে থাক, এতটুকু কম নির্যাতন করেনি সাবিনাকে মারতে। এত এত কষ্ট দিয়ে ওকে মেরেছে যে ওর রুহ পর্যন্ত কেঁপে উঠেছে। আর ঐ মানুষকে আমি মাফ করবো! কক্ষনও নয়। কোন মাফ নেই। এতটুকু দয়া বা আফসোসও আমার নেই। ভাইয়া ওদের আমার চোখের সামনে থেকে সরাও। ওরা জানোয়ারের থেকেও অধম। শরীরে শুধু  মানুষের চামড়া গায়ে দিয়ে ঘুরে বেড়াতো।

মকবুল সহ আলতাবকে সেদিন গ্রেফতার করা হয়। সমস্ত অপকর্ম তারা নিজের ঘাড়ে নেয়। 


সাবিনার মৃত্যুর পর মাহাদ ওকে দেখেনি। এমনকি ওর কবরে পর্যন্ত যায়নি। আজ ফুয়াদ, মাহাদ এবং ওদের বাবা সাবিনার কবর জিয়ারত করতে এসেছে। সবার চোখেই পানি। মাহাদের চোখের সামনে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ঘটনা সে এখনো ভুলতে পারছেনা। কবর জিয়ারত করে বাসায় আসলো তারা।

বাতাসি বিবি আজও সাবিনার জন্য গুন গুন করে কাঁদছে। সেটা দেখে কুসুম বাতাসির কাছে গিয়ে কিছুক্ষন দাড়িয়ে থাকলো। এতেও বাতাসির ভিতর কোন পরিবর্তন দেখতে পেলোনা। অবশেষে ফ্লোরে বসে একধানে বাতাসির দিকে চেয়ে রইলো। এবার বাতাসি তার আচল খানা দিয়ে চোখ নাক মুছে কুসুমের দিকে চেয়ে বলল-

~" কি রে অ্যার দিকে ওমন ড্যাপ ড্যাপ কইরা চাইয়া আছোস ক্যান?"

~" দাদী আপনি সাবিনা বুবুর জন্য হ্যাচা কান্দোন কানছেন! না অভিনয় করছেন কনতো!"

বাতাসি বিবি চোখ দু'টো রসগোল্লার মত করে রাগী গলায় বললো-

~" আই মিছা কান্দি! তুই কি কইবার চাস?"

~" কইবার তো অনেক কিছুই চাই। তয় আপনারা তো আমার চাকরি নট আউট কইরা দিবেন।"

~" দুদিনের মাইয়া আইসা গলার রগ ফুলাইয়া কতা কস অ্যার লগে?"

~" নাহ্ কিছু কইনাই তো! শুধু কইছি আপনি তো সুবিধাবাদী লোক। নিজের স্বার্থখান আগে দেখেন। তো এবার কোন স্বার্থে বুবুর জন্য কানছেন! বুবু কি আন্নেরেও স্বপ্নে দেহা দিছে! যেমনটা আমাকে দেহা দেয়!"

বাতাসি বিবি এবার থতমত খেয়ে গেল। সাবিনা স্বপ্নে আসে তোর! সাবিনা ক্যান আইবো! হেই তো মইরা গেছে। হেই কইত থাইকা আইবো!

~" ঐ তো মরে গিয়ে সে অহন ভূত হইয়া গেছে। আমি মনে হয় বুবুর জন্য চিন্তা বেশিই করি। তার জন্য আমারে দেহা দেয়। তো আপনে দেহা দেয়নাই এখনো! আপনি যে কান্দা কান্দেন তার জন্য! এতদিনে তো আপনার কাছে সে আলবাদ আসতো। বুঝলেন আমার আদি পুরুষগন বাইদার জাত ছিল। অনেক টুকটাকি জানতো। আমিও শিখছি। সেই অভিঙ্গতা থাইকায় কইলাম। "

বাতাসি নড়েচড়ে বসলো এবার। নাহ্ আর কান্দোন যাইবোনা। শেষে যদি সত্যি সত্যি সাবিনার ভূত আইয়া  অ্যার ঘাড় মটকায় তাইলে আই শেষ। আর কান্দোন যাইবোনা বলে চোখমুখ কটকটা করে মুছে কুসুমরে কাছে ডাকলো।

কুসুমও ভাবলেশহীন হয়ে বাতাসির কাছে গিয়ে পা তুলে বসে বললো-

~" কন কি কইবেন।"

~" তুই হ্যাঁচা কতা কইছোস?"

~" আমি তো সাবিনা বুবুরে দেখি আমার ঘরে। বুবুর মনে ম্যালা দুঃখ বুঝলেন দাদী। খালি কান্দে আর কান্দে। মনে হয় একা থাকতে পারছেনা কব্বরে। একজন সাথী লাগবো। তারেই প্রতিদিন লইতে আহে।"

বাতাসি ঢোক চিপে বলল-

~" যাহ্ কি কস! ওডা আবার হয় নাকি! তা যহন এতই সব কিছু জানতে পারোস আগে থাইকা তাইলে ক তো! মোর সোয়ামী কই আছে! হেই কি এহনো অ্যার আশে পাশে ভূত হইয়া ঘুরে বেড়াই!"

অহ্ আল্লাহ্, দাদী আপনি কি কন! আপনার সোয়ামী মরবো ক্যান! এত ভালা একজন মানুষ তারে মরতে কন কোন বেহুদা মুখে। মাহাদ ভাইজান মরবো ক্যান! আপনার মুখে চুলকানি পরুক দিনে-রাইতে এমন কথা আর একবার কইলে। কথাগুলো বলেই কুসুম মুখে ভেংচি কাটলো।

~" ঐ ছুড়ি ঐ, এতগুলো ছাওয়াল পাওয়াল পয়দা করচি মাহাদরে লইয়া! ওর বাপ অ্যার ছাওয়াল। তাইলে বোঝ ওর বাপের মা আই হলে অ্যারও একখান ঢকাল সোয়ামী ছিল। এহন কো হেই কইত থাকে। না কইতে পারলে কিন্তু তোরে পুষ্করিণীর পানিতে চুবাইমু।"

আমি সাতার জানি মতলব বাজ মহিলা। আপনি সব সময় ভাইজানরে সোয়ামী সোয়ামী করে ডাকেন তো আমি কি ভাববো হ্যা! আমিতো ভাবছি সেই আপনার সোয়ামী। আর আমার মনে হয় আপনার সোয়ামী মানে ভাইজানের দাদা সাবিনা বুবুরে বিয়া করছে। বুবু সেই দুঃখে কান্দে আর আপনারে লইতে আসে। আপনি কি খেমতাবাজ মহিলা নাকি! সাবধান থাইকেন বলে কুসুম উঠে রুম থেকে বের হয়ে গেল। 

এত জোড় দিয়ে যদি কথা কয় তাইলে মাইয়ার কথার ভিতর দম আছে। এই ভর খাড়া দুপুরে আবার ভূত প্রেত গনের আনাগনা বেশি বাড়ে। বাতাসি ভয়ে ভয়ে রুম থেকে বের হয়ে দেখলো, সবাই দুপুরের খাবার খাচ্ছে। এহানে মাহাদ নাই তার মানে ও এহন ঘরে।  বাতাসি পা টিপে টিপে মাহাদের রুমে উকি দিয়ে দেখে মাহাদ চোখ বন্ধ করে ঘুমাচ্ছে। আর পাশে দোলনায় অতিথী সুয়ে আছে। ডাইনিং রুমে তিতির কে ভাত খেতে দেখেছে বাতাসি। তারমানে রাস্তা ফকফকা। সে দ্রুত গিয়ে মাহাদের চাদরের ভিতর ঢুকে কাপটি মেরে সুয়ে পড়লো। এদিকে বেচারা মাহাদ ভাবলো তিতির এসে ওর পাশে শুয়েছে। তাই কিছু না ভেবেই বাতাসির কোমরে হাত দিয়েই ওকে টান দিয়ে বুকের ভিতর নিল।

বাতাসি তো আন্ডার মত চোখ করে থ মেরে রইলো। মাহাদও বাক্কেল সেজে গেল। এটা কে বলেই বাতাসির গা থেকে হাত সড়িয়েই চাদর নেমে বাতাসিকে দেখেই ভূত দেখার মত চিৎকার দিয়ে উঠলো........
Author, Publisher & Developer

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

উফ!
মনে হচ্ছে আপনার ইন্টারনেট সংযোগে কিছু সমস্যা আছে। অনুগ্রহ করে আগে আপনার ইন্টারনেটের সংযোগ ঠিক করুন এবং তারপর আবার ব্রাউজিং শুরু করুন৷
AdBlock সনাক্ত করা হয়েছে!
আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি আপনার ব্রাউজারে অ্যাডব্লকিং প্লাগইন ব্যবহার করছেন৷ আমরা আপনাকে আপনার অ্যাডব্লকিং প্লাগইন বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করছি, কারন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমরা যে রাজস্ব আয় করি তা এই ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।