আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুগ্রহ করে গল্প সম্বন্ধে আপনার মতামত অবশ্যই প্রকাশ করবেন। আপনাদের মতামত আমাদের এই ছোট প্রয়াসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগায়। শীঘ্রই আরও নিত্য নতুন গল্প আপডেট আসছে, সঙ্গে থাকুন। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখক/লেখিকা'র নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত গল্পের ডায়েরি’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখক/লেখিকা'র কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় গল্পের ডায়েরি কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ করলে তা কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

সাইকো ইজ ব্যাক - পর্ব ১১ - সিজন ২ - সুরাইয়া সাত্তার ঊর্মি - ধারাবাহিক গল্প


বারিশ এবার উঠে আমার সামনে এসে দাড়ালো। আমি ভয়ে দু কদম পিছিয়ে যেতেই সে আমার বাহু চেঁপে ধরে বলে লাগে,,
---কোনো ভদ্র মেয়ে এত রাতে বাড়ি ফিরে?
আমি তার হাত ছাড়াতে ছাড়তে বললাম,
---শেষ হতে দেরি হয়েছে।রিয়ান ভাইয়াও ছিল।
বারিশ আমাকে ঠাসস করে চর মেরে দেয়।আমি গালে হাত দিয়ে তাকিয়ে আছি বারিশের দিক।চোখ দিয়ে দু ফোটা পানি পরতে লাগলো আমার।তখনি বারিশ আমাকে ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে বলতে লাগে,
----এসব কত দিন ধরে চলছে বল..!
আমি অবাক হয়ে বললাম,,
----কি সব?
বারিশ আবার ধাক্কা মারে। আমি দেয়ালের সাথে বাড়ি খাই। তখনি সে আমার কাছে এসে গাল চেপে ধরে বলতে লাগে,
---অভিনয়ত ভালই জানিস দেখছি? তুই কি ভাবিসরে আমাকে ধোকা দিবি? রাত বিরাতে রঙোলিলা করবি? আর আমি টের পাবো না??
আমি বারিশের হাত গাল থেকে ছাড়িয়ে চিল্লিয়ে বলতে লাগি,,
----কি যাতা বলে যাচ্ছেন আপনি??
এবার বারিশ আমার চুলের মুঠি শক্ত করে ধরে বলতে লাগে,,
----একদম চিল্লাবি না।কণ্ঠনালী ছিড়ে ফেলবো তোর?ছাড় দিয়েছি বলে যা ইচ্ছা করে বেড়াবি..!
আমি এবার ব্যথায় কান্না করে বললাম,
---আমি কী করেছি বারিশ? প্লীজ আমায় ছেড়ে দিন কষ্ট হচ্ছে আমার।
বারিশ এবার আরো জোড়ে টেনে ধরে বলল,
----লাগুক ব্যথা। লাগার জন্যই ধরেছি তোরে। আরে তোরে কতটা ভালবসা দিয়েছি আমি।আর তুই অন্য পুরুশের সাথে ঢলাঢলি করবি আমি বুঝতে পারবো না ভেবেছিস?
----আমি কিছু করি প্লীজ বারিশ আমায় ছাড়েন।
----কিছু করিস নি না? তো টিনার পার্টিতে ওই ছেলের হাতে হাত ধরে বসেছিলিস কেন? সে তোকে কি বলছিল, আমাকে ছেড়ে দিতে, এত সাহস তোর? আমাকে ছেড়ে দিবি? 
----কি বলছেন আপনি? ও তো আমার ফ্রেন্ড ছিল। ও মাকে লাইক করতো ছোট থেকেই, আমি শুধু তাকে বুঝাচ্ছিলাম লাইফে মুভড ওন করতে..!
----আচ্ছা তাই নাকি তুই বড় এডভাইস্যার হয়েগেছিস হুম।
বলে আরো জোরে টান দিল চুল।
ব্যথায় কুকিয়ে উঠছি বার বার। 
তখন বারিশ আবার বলে,
----আচ্ছা ঠিক আছে মানলাম তুই ধোয়া তুলশী পাতা। তো মাত্র নীচে কি হলো? ও তোকে জড়িয়ে ধরলো..!আর তুই কোনো চুপ করে ছিল  কেন বল? কি হলো বল?
আমি কি বলবো বুঝতে পারছি না বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি আমি।শুধু নিরবে চোখের পানি ফেলছি..!
তখন বারিশ আবার বলল,
----ওই এখন কেন চুপ কেন বল? কি হলো বলিস না কেন??
লাষ্ট কথা গুলো ধমকের সুরে বলতে লাগে বারিশ,  কেঁপে উঠি আমি। আর কাঁদতে কাঁদতে বলি,
----বিশ্বাস করেন বারিশ আপনি যা ভাবচ্ছেন সব ভুল আমি কিছু করেনি। 
----আমি যা দেখেছি সব ভুল হুম?
----কখনো কখনো চোখের দেখা ভুল থাকে বারিশ!
----ওহো তাই? তুই রঙ লিলা করবি রাত বিরাতে আর আমি দেখলেই দোষ। এই সত্যি করে বলতো? এই যে দিন রাত ইউসুফ ইউসুফ করতিস? এত ভালবাসার তবজি জবতিস গেল কই সব? আমার টা নাহ বাদ দিলাম। কই গেল সেই সতী,  সাবিত্রী গিরি। হুম বল..! দাঁতে দাঁত চেপে বলল কথা গুলো বারিশ।
----প্লিজ বারিশ বিলিভ মি?
----তোকে বিলিভ করবো?আরো? 
আমি এবার ফুফাতে ফুফাতে বললাম,
----আমার কথা বিশ্বাস করছেন না তো। আপনি আমি আমি আশিকে কল করছি তাকে জিগ্যেস করে দেখুন।
বারিশ এবার আমায় ছেড়ে সোফায় গিয়ে বসে পরলো পা দুটো টেবিলের উপর দিয়ে, তখন বলল,
----কর ফোন দেখি তোর ভাতার কি বলে?
বারিশের কথা, ব্যবহার শোনে বুক ফেঁটে যাচ্ছে আমার।কিভাবে তার ভালবাসাকে সে অবিশ্বাস করতে পারে।আরিশ আবার ধমক দিয়ে বলে,
---কি হলো দাড়িয়ে আছিস কেন? কল দে?
আমি কাঁপা কাঁপা হাতে কল দেই আশিক কে..!
কিছুক্ষণ কল হতেই আরিশ বলল,
---লোউডস্পিকার ওন কর?
আমি তাই করলাম।ওপাশ থেকে আশিক বলতে লাগে,,
----জান কি হয়েছে? মিস করছিলে বুঝি? মাত্রই  না আসলাম।
আমি আশিকের কথা অাকাশ থেকে পরলাম। কি বলছে এসব ওই। আমি ইউসুফের দিক তাকালাম সে চোখ মুখ শক্ত করে বসে আছে।আমি সাথে সাথে বললাম,,
----কি বলছো এসব আশিক? মাথা খারাপ হয়ে গেছে নাকি?
----ওহো সরি? তোমার ওই তার ছিড়া বড় টা বুঝি আশেপাশে আগে বলবা না। 
----আশিক মিথ্যা কেন বলছো??
----আরে মিথ্যা কেন বলব?আর তুমি কাঁদছো কেন? ওই সাইকো কিছু বলেছে জান? কতবার বললাম চলে এসে আমার কাছে? কিন্তু তুমি..! যেহেতু কিছু দিন পর চলে আসবেই তো আজই এসে পর? জানো তোমার সাথে রাত কাঁটানোর পর আর একা থাকতে ইচ্ছে হয় না আমার..!!
-----কি বলছো তুমি আশিক এসব? তোমার মিথ্যা কথার জন্য আমার সংসার ভেঙ্গে যাবে?
-----শুন তুমি এত অভিনয় করতে পারো? কি বলবো? বুঝি না কখনো কোন চরিত্রে থাকো? তুমি নিজেই তো ওকে ডিভোর্স দিবে বলে ছিল। আর এখন..! যাই হোক আমি আর ওয়েট করতে পারছি না প্লীজ বেবী তাড়াতড়ি চলে আসোম কত দিন তোমার সাথে একান্ত সময় কাটাই না। উফ..! এখনো আমাদের সেই ফাস্ট নাইটের কথা মনে হলেই মরীরে আলাদা শিহরন দিয়ে উঠে, তোমার সেই পায়ের তিলটা উফ মাথা নষ্ট করে...!
আর কিছু বলার আগে বারিশ ফোন নিয়ে আছার মারে। সাথে সাথে দু খন্ড হয়ে যায়। আমি ভয়ে ভয়ে বারিশের দিকে তাকাই। বারিশ আমার দিকে ভয়ঙ্কর ভাবে তাকিয়ে আছে চোখ গুলো লাল হয়ে আছে। ঘারের আর মাথার রগ ফোলে গেছে। সে এবার শীতল কন্ঠে বলে উঠে,
----তো এই কারনে আমার কাছে আসি না তুই? বলে আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো। আমি পিছাতে পিছাতে বললাম,
----বিশ্বাস করুন বারিশ আশক সব মিথ্যা বলছে।
----তুই সত্যবাদী তাই না?  তাহলে তোর তিলের খবর ওই কেমনে জানে?
আমি কি বলবো বুঝতে পারছিনা। আরিশের এই ভয়ানক রূপ দেখে ভয়ে হাত পা কাঁপছে। জানা হয়ে গেছে আজ আমার রক্ষে নেই। আমি তাই পিছনে ঘুরে দরজার দিকে দৌড় দেই।তখনি বারিশ হেচকা টান মেরে ফ্লোরে ফেলে বেল্ট খুলে নেয়।
আমটি কাঁদতে কাঁদতে বলি,
----বারিশ আমাকে ছেড়ে দিন। বারিশ আহ্.!
বারিশ এবার বেল্ট দিয়ে মারতে লাগলো আমাকে।
আমি ব্যথা কুকিয়ে উঠতে লাগলাম। আর বলে যাচ্ছি,,
----প্লীজ ছেড়ে দিন বারিশ। আমি কিছু করি নি..!
কিন্তু বারিশের কানে যেন যাচ্ছেই না।
সে মেরেই যাচ্ছে।  
বারিশ মারছে আর বলছে,
----তোকে মনের মাঝে জায়গা দিয়েছি আর তুই?
তুই আজ আমার সব বিশ্বাস ভেঙ্গে দিলে?আজকের পর থেকে আমার থেকে মুক্তি পাওয়া চিন্তা ছেরে দে।তুই আমার কলিজা টুকরা টুকরা করে দিলি।এই জন্য তুই কখনও আপন করে নিতিস না..! নাহহহহহ! 
বারিশ এবার বেল্ট ফালিয়ে আমাকে টেনে তুলল। আর জড়িয়ে ধরে কাঁদে দিল। আর বলল,
----বাবুইপাখি কেন ঠাকালি আমায়?? কেন??
আমি কিছু বলব সে ক্ষমতা আমার নেই। শরীরের শক্তি নেই..!আমি লেপ্টে আছি। আর বুলি আওড়াচ্ছি।  আমি কিছু করিনি বারিশ।বারিশ আমাকে ধাক্কা দিয়ে বের হয়ে যায়। আমার সারা শরীর সহ্য যন্ত্রনা করছে। অনেক জায়গা কেঁটেও গেছে।ধীরে ধীরে চোখ বুঝে আসলো আমার।

এসব কিছু বাহির থেকে ফুপি দেখে মিটমিট করে হাসচ্ছে।যাক আজ তার শান্তি লাগচ্ছে।সম্পর্কের মাঝে যখন কোনো তৃতীয় ঢুকে যায়।তখনি সম্পর্কে ফাঁটল ধরতে শুরু করে।আর সন্দেহ যখন সম্পর্কে ঢুকে যায়, তখন সেই সম্পর্টা ভেঙ্গে গুড়ো করে দেয়।প্রতিটি মানুষের লাইফে একটি হলেও ভিলেন থাকেই। হোক গল্প,  কাহিনীতে, বা রিয়াল লাইফে।
এই কাজ গুলোই বেশীর ভাগ সময় আপন মানুষ গুলোই করে থাকে।তারা যেন এ সকল কাজে পৈশাচিক আনন্দ পেয়ে থাকেন।

—————

সেদিনের পর বারিশ আর বাসায় ফিরেনি। অনেক ফোন করে তাকে পাচ্ছিল না। দাদু কল দিলেও বন্ধ পেত। তার নিউ পি এ এসে অবশ্য বলে গেছেন তিনি দেশের বাহিরে চলে গেছেন।শুনে বুক ফেটে যাচ্ছিল আমার। বারিশ কিভাবে ভুল বুঝতে পারে আমায়?আমি সত্যিই খারাপ...!তাইতো কারো ভালবাসা কপালে জোটে না আমার। এসব ভেবেই কান্না করছি হাটুতে মুখ গুজে।কিছু ভাল লাগচ্ছে না আমার।তখনি হুট করে জেনি আর ফুপি এসে ঢুকেন ঘরে।

আমি চোখ মুছে তাকাতেই জেনি বলল,
---আহারে! জামাই ছেড়ে চলে গেল?
আমি তার কথা বুঝতে না পেরে তাকালাম তার দিক..! সে হা হা করে হেসে বলল,
----নাদান বাচ্চা এখনো বুঝে না..!
----কি বলতে চাইছেন?
তখন ফুপি বললেন,
----তুই এখনো এখানে পরে আছিস কি জন্য? আজই রুম খালি করবি..!
----কি সব বলছেন?  আমি কেন রুম খালি করবো এটা আমার স্বামীর রুম।
তখনি জেনি এসে আমার গাল চেপে দাঁত কিড়মিড় করে বলল,
----এটা বারিশের ঘর..! তোর স্বামীর না।।
আমি ছাড়িয়ে তাকে বললাম,
----এটা কি ধরনের অসভ্যতা?
ফুপি এসে আমার চুলে মুঠি ধরে বলল,
---এখনো সভ্যতা দেখাচ্ছি শুকুর কর..!
----আপনারা এমন কেন করছেন?
জেনি বলল,
----তুই আমার ভালবাসা করে নিবি আর আমি চুপ করে থাকবো ভেবেছিস??
----কি বলতে চাইছেন?
ফুপি শয়তানী হাসি দিয়ে বলল,
---জেনি কি বলিস রহস্য খুলে দেই?
জেনি মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিতেই বলতে লাগেন ফুপি,,
----শুন তাহলে।আশিক জেনির চাচাতো ভাই। সেদিন যা হয়েছে সব আমাদের প্লেন ছিল।
আমি তাদের কথায় হতবাক হয়ে গেলাম।আর চিল্লিয়ে বললাম,
----এ সব কেন করলেন আপনারা?
জেনি তেড়ে এসে বলল,
----কেন করবো না? তুই আমার ভালবাসা,  আমার স্বপ্ন আমার রাজত্ব কেড়ে নিয়েছিস তোকে ছেড়ে দিব কিভাবে ভাবলি?
আমি অবাক হয়ে বললাম,
----মানে...!
ফুপি ছল ছল চোখে বলল,
----বারিশকে মেরে ফেলার পর ভেবেছি, এবার হয়তো আমার রিয়ান এই বিরাট অট্টালিকার রাজা হবে কিন্তু বাবা কই থেকে এ ছেলেকে নিয়ে আসলো বারিশ বানিয়ে। তখন সব স্বপ্নে ফাঁটল ধরলো। তখন আবার প্লেন করি জেনিকে দিয়ে বারিশকে প্রেমের ফাঁদে ফালতে চাই।তাও হলো না নিয়ে আসলো তোকে..!

আমি তাদের কথা শুনে কি বলবো বুঝতেই পারছি না। সম্পত্তির লোভে মানুষ কত খারাপ হতে পারে। আমার চোখ থেকে জল গড়িয়ে পরছে।যাদের বারিশ এতটা আপন ভাবছে, তারা শুধুই তাকে স্বার্থপরতার জন্য ব্যবহার করে চলেছে।

তখনি জেনি বলে উঠে,
----কিছু দিন আগে আশিকের সাথে কথা হয়। ওই বাসায় তোর কথা বলে। ছবি দেখায়। দেন আমরা প্লেন করি।তোকে ফাঁদে ফেলি। আশিক তোকে পাওযার জন্য পাগল হয়েছে।তাই সেই পাগলামো কাজে লাগিয়ে তোকে বারিশের লাইফ থেকে বের করে দি..!

আমি এবার রাগে  বলি,
----সে তোমাদের বারিশ না আমার ইউসুফ। সে তোমাদের কাউকে ছাড়বে না।

জেনি আর ফুপি ঘর ফাটানো হাসি দিয়ে বলল,
----তাই নাকি। তা কে বলবে?
----আমি বলবো?
----ও মা..!  আন্টি আমার তো ভয় করছে খুব ভয়..! বারিশ যদি আমায় মেরে দেয়?? বলে আমার হাসতে লাগলো।

আমি কি বলবো বুঝতে পারছি না। ভাষা যেন হারিয়ে ফেলছি।তখনি দাদু এসে বলল,
----তোমরা তোমরা আমার দাদু ভাইয়াকে মেরে ছিলে। আমি তোমাদের কাউকে ছাড়বো না বলে বের হযে গেলেন দাদু।তখনি ফুপি বলল,
----জেনি বাবাকে থামা নয়তো সব খেলা শেষ করে দিবে।
তখনি জেনি দৌড়ে যেতে নেয় আমি পথ আটকাই।তখনি ফুপি এসে চুল টেনে হিচরে খাটে ফেলে দেয়। আমি খাটের কিনারায় গিয়ে বারি খাই।আর জেনি দৌড়ে গিয়ে দাদুকে ধরে বলল,
----উফ। বুড়ো হয়েছিস কিন্তু পা দুটোর শক্তি কমে নি হুম?
বলে ধাক্কা মেরে সিড়ি থেকে ফেলে দেয়। আর বলতে লাগে,
----নে এবার সারা জীবনের জন্য শক্তি হারিয়ে যাবে।
আমি রুম থেকে দাদুর চিৎকার শুনে দৌড়ে বের হয়ে আসি। দেখি দাদু নিচে পরে ছটফট করছে।
----দাদু..!বলে চিৎকার করে  আমি কাছে যাতেই তার আগেই ফুপি আমাকে টেনে হিচড়ে তার কাছে নিয়ে আসেন।আমি কাঁদতে কাঁদতে বললাম,
----ফুপি দাদুকে হাসপাতালে নিতে হবে প্লীজ ফুপি উনি তো আপনার বাবা। উনাকে বাচ্চান।
ফুপি হেচকি দিয়ে হাসতে হাসতে বললেন,
----উনি আমার সৎ বাবা। মরলেও আমার কিছু যায় আসে না। 
আমি অবাক হলাম।
----প্লীজ ফুপি দাদুকে বাঁচান। এতটা নিষ্ঠুর হোয়েন না।মানবাতা বলে কিছু তো আছে?
----এক শর্তে?
আমি চোখ মুছে বললাম,
----কি?
----এখাাে সাইন কর..! একটি কাগজ এগিয়ে দিয়ে।
আমি কাগজ দেখে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বলি,
----এটাতো ডিভোর্স পেপার?
জেনি বলল,
----হে। এখন সাইন কর।  আর বিদেয় হয়। যদি এই বুড়োকে বাঁচাতে চাস।
দাদু মৃদু আওয়াজে অনেক কষ্টে বলল,
---দাদু ভাই সাইন করিস না।

আমি দাদুর দিকে তাকালাম,
দাদুর মাথা ফেটে রক্ত ফ্লোর ভরে যাচ্ছে। কষ্ট লাগছে অনেক।তখন ফুপি বলল,
----উনার হাতে বেশি সময় নেই। সাইন কর নয়তো জেনি রান্না ঘর থেকে শিল নিয়ে আয়। মাথা এক কেঁচা মারলেই শেষ।
এমন কথায় আমি আত্মকে উঠলাম।
জেনি সাথে সাথে শিল নিয়ে এলো।
ফুপি বলল,
---তিন পর্যন্ত কাউন্ট করব...! তার মাঝে সাইন না করলে তোর দাদু ইদুর, চিকার খাবার হবে।
আমি কি করবো বুঝতে পারছি না। এক দিক আমার ভালবাসা অন্য দিকে একটি প্রাণ। আমি দাদুর দিকে অসহায়ের মতো চেয়ে রইলাম। দাদু ব্যথায় কাতরাচ্ছে। তখনি ফুপি কাউন্ট করতে লাগে।তিন বলার সাথে সাথে জেনি শিল দিয়ে কেঁচা দিতে নেয়।
তখনি আমি চিৎকার করি..!
---নাহহহহ। আমি সাইন করবো। সাইন করবো।
ফুপি মুচকি হেসে বলল,
----নেও আমার আদরের বউ মা সাইন কর..!
আমি সাইন করে দিলাম।দাদু আমাকে মাথা নাড়িয়ে বার বার না করে যাচ্ছিল।আমি কান্না করতে করতে সাইন করে দিলাম। তখন জেনি আমাকে বাসা থেকে বের করে দেয়।
Author, Publisher & Developer

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

উফ!
মনে হচ্ছে আপনার ইন্টারনেট সংযোগে কিছু সমস্যা আছে। অনুগ্রহ করে আগে আপনার ইন্টারনেটের সংযোগ ঠিক করুন এবং তারপর আবার ব্রাউজিং শুরু করুন৷
AdBlock সনাক্ত করা হয়েছে!
আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি আপনার ব্রাউজারে অ্যাডব্লকিং প্লাগইন ব্যবহার করছেন৷ আমরা আপনাকে আপনার অ্যাডব্লকিং প্লাগইন বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করছি, কারন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমরা যে রাজস্ব আয় করি তা এই ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।