আমার একটাই যে তুই - পর্ব ১০ - সিজন ২ - সুরাইয়া সাত্তার ঊর্মি - ধারাবাহিক গল্প


---" আপনিকি সত্যি তাকে ডিভোর্স দিতে চান?"

কুহুর বুক চিঁড়ে দীর্ঘ শ্বাস বের হলো।রূপা সাথে কুহু এ শহরের বেষ্ট উকিলের সাথে দেখা করতে এসেছে।  ইউসুফের সাথে সে সম্পর্ক শেষ করবে বলে।আফতাব সাহেব আবার একই কথা বললেন।ঠিক সেই মুহূর্তে   চোখের সামনে ভেসে উঠলো তার ইউসুফ ভাইয়ার হাস্যজ্বল মুখখানা। জল নয়নে টলমল কুহুর। দৃঢ় কন্ঠে বলল,,

---"হে আমি উনাকে ডিভোর্স দিতে চাই!"

আফতাব সাহেব চশমার উপর দিয়ে কুহুর দিক আবার তাকালেন। হালকা কেশে বললেন,,

---"কিন্তু আপনার বিয়ে ৬ মাস হয়নি! তার উপর আপনি একা এ ডিসিশন কিভাবে নিতে চাইছেন? আপনার পরিবার পড়ে ঝামেলা করবেন না তো?"

কুহুর চোখের জল গড়িয়ে পড়লো টুপ করে হাতের উপর। রূপা কুহু হাতটি আকড়ে ধরে বলল,,

---" কুহু আরেকবার ভেবে নে!"

কুহু চোখের জল মুছে নিলো। বলল,,

---" আমি ঠিক আছি। আপনি কাগজ ঠিক করুন স্যার। যেভাবে পারুন করুন। আই নিড এ ডিভোর্স।"

আফতাব সাহেব ছোট শ্বাস ছেড়লেন। তার ৫০ বছর বয়সে এমন কেশ প্রথম দেখলেন। যেখানে ডিভোর্স দিতে এসে কেউ কেঁদে কুটে শেষ হচ্ছে। ভারবাসার গভীরতাটাই হয়তো এমন।খুব জানতে ইচ্ছে করছিলো এদের ভালবাসার গভীরতাটা কতো। কিন্তু জানা হলো না। জানতে চাইলেও জিগ্যেস করার ইচ্ছে হলো না। তিনি  বললেন,,

---"ঠিক আছে বসুন আমি কাগজ তৈরি করে নোটিশ পাঠিয়ে দিব।"

আফতাব সাহেব কিছু মুহূর্তের মাঝে ফিরে এলেন।ডিভোর্সের নোটিশ এগিয়ে দিয়ে বললেন,, 

---"পড়ে দেখুন!"

কুহু ঢুকরে উঠলো। রূপা কুহুর পিঠে হাত বুলিয়ে শান্ত হতে বলল।  কুহু কাগজটির দিক তাকিয়ে ভাবছে। কি অদ্ভুত তাদের সম্পর্ক। চার মাস আগেই যাকে বিয়ে করতে চাইলো না তার সাথেই হলো। প্রেমে পড়লো। নতুন করে ভালোবাসলো।  সেই কি না?? কুহু কাঁদতেই থাকলো। কাগজটি তুলে নিয়ে পড়তেই থমকালো।বলল,,

---" আপনি এসব কি লিখেছেন? উনি মোটেও নেশা করেন না, আমার গায়েও হাত তুলেন না, অত্যচারো করে না। বরং আমার অনেক খেয়াল রাখেন।"

---" দেখুন আপনি ডিভোর্স তাড়াতাড়ি চাই? তাহলে এসব লিখতেই হবে!"

কুহু মুখে হাত চেপে কাঁদতে লাগলো। এসবে যে ইউসুফের গায়ে দাগ লেগে যাবে? তবুও মনকে ঠিক করলো। বলল,,

---" অন্য কোনো উপায় নেই?"

আফতাব সাহেব বিরক্তিতে নাক মুখ কুচকে ফেলেন বললেন,,

---" আপনি কি সত্যি ডিভোর্স চান? তাহলে এভাবেই হবে! নয় তো আমি কেন কেউই এ সম্পর্ক থেকে মুক্ত করতে পারবে না।"

কুহু হাউ-মাউ করে কেঁদে দিলো। সে কিছুতেই পাড়বেনা ইউসুফের শুভ্র মনে কাঁদা লাগাতে।

----------

কুহু তার মায়ের কোলে শুয়ে আছে। আজ পাঁচদিন সে বাপের বাড়ি। কুহুর মা মেয়ের মাথায় আলতো করে হাত বুলিয়ে বললেন,,

---"ইউসুফের ফোন কেন ধরছিস বলতো? সংসারে ছোট খাটো মনমালিন্য তো হয়ই! তাহলে কেন এসব রাগ গুস্সা করে বসে আছিস?"

কুহু নিরবে চোখের জল ফেললো। মার কথা এড়িয়ে গিয়ে বলল,,

---"মাথা ব্যথা করছে মা টেনে দাও তো চুল গুলো!"

সুমি হতাশ হলেন। মেয়ে তার এ বিষয় কিছুই বলছে না। না বলছে তাদের মাঝে কি এমন হলো? যে কুহু এমন মুর্ছে যাচ্ছে ভিতরে ভিতরে?"

কুহুর মা চুল টেনে দিতে লাগলো। তখনি দৌড়ে এলো কুহুদের বাসার কাজের মেয়ে।  বলল,,

---" দুল্লা ভাই আইছে!"

কুহু ভ্রু কুচকালো। ইউসুফ এখানে কেন এলো? ভেবেই পেলো না।

ইউসুফ এক গাদা মিষ্টি নিয়ে হাজির হয়েছে। সাথে সবার জন্য গিফট। কুহুর মা খুশিতে গদ গদ হয়ে বললেন,,

---" কুহু ইউসুফকে চা, পানি দে!এত দূর থেকে এলো ছেলেটা!"

ইউসুফ বলল,,

---" না খালামনি আমি ফ্রেশ হবো তার পর কিছু মুখে দিবো। ধোলা-বালিতে শরীরটা জর্জরিত। "

---" কুহু ঘরে নিয়ে যা ইউসুফকে!"

কুহু দাঁড়িয়ে  রইলো। ইউসুফ আড় চোখে দেখে নিলো কুহু ভার করে রাখা মুখটা। ইউসুফ হেসে বলল,,

---" আমি রুমে যাচ্ছি।  তুই বরং চা টা নিয়ে আয়!"

কুহু গেলে আধ ঘন্টা পর চা ছাড়াই। ইউসুফ তখন খাটের মাঝে দু হাত পিছনে দিয়ে মাটিতে পা রেখে হেলে বসে আছে। কুহুকে দেখে সে বলল,,

----" আমার ফোন কেন ধরছিস না?"
----" এমনি!"
----" আমাকে ইগনোর কেন করছিস?"

কুহু ইউসুফের তিক পূর্ণ দৃষ্টি মেলে তাকালো। মনে পড়ে গেলো সেদিন রাতে কথা। সে মেয়েটি কিভাবে ইউসুফকে ঝাপটে ধরে ইউসুফ পিঠে চুমু খেয়েছিলো তার কথা। কুহু সেদিন মনে হয়ে ছিলো মেয়েটির চুল টেনে ধরে কত গুলো লাথি গুতো দিতে। তারপর যে ঠোঁট দিয়ে চুমু খেয়েছিলো তা কেঁটে কুচিকুচি করে কুকুরকে খাওয়াতে।  কিন্তু হায়! নিজের প্লেটে গর্ত সে কি করবে? সেদিনের কথা মনে 
কথা মনে পড়তেই কুহু চোয়াল শক্ত হয়ে গেলো। তীক্ষ্ণ দৃষ্টি মেলে বলল,,

---" আপনি কোন দেশের রাজা, মহারাজ যে ইগনোর করা যাবে না?"

ইউসুফ ভ্রু কুচকালো,,

---" কিভাবে কথা বলছিস তুই?"

---" আপনি এটারি প্রাপ্য শুকরিয়া করুন আপনাকে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দি নাই!"

ইউসুফ হা করে রইলো। এতো রাগ, এত ক্ষোভ কুহুর মনে।

---" আমি তোকে এক্সপ্লেইন করতে চাই? সেই সুযোগ টা তো দিবি?"

---" না আর কোনো সুযোগ আমি দিবো না আপনাকে! আমি আপনাকে ঘৃণা করি। আপনি আমাকে ঠকিয়েছেন।  আপনি ঠকবাজ।"

ইউসুফ রেগে গেলো। কুহু টেনে কাছে নিয়ে এলো। মুখ টিপে বলল,,

---" একদম বাজে কথা বলবি না। আমি তোকে ঠকাইনি। "

কুহু ইউসুফের হাত ছাড়িয়ে নিলো।

---" সেটা সেদিন আমি স্ব চোখে দেখে এসেছি!"

ইউসুফ  কুহুকে আবার কাছে টেনে নিলো। কুহুর গালে হাত রেখে আদুরে কন্ঠে বলল,,

---" বিশ্বাস কর বাবুইপাখি আমি তোকে ঠকাইনি। সব সময় আমরা চোখে যা দেখি তা সত্যি নয়!"

---"আমি আপনাকে বিন্দু মাত্র বিশ্বাস করি না ইউসুফ ভাই। আই হেইট ইউ। আপনি আমাকে পুতুল ভেবে শুধু ইউস করে গেছেন। আপনার আমাকে নয় আমার শরীরটাই চাই। আপনার কামনা-বাসনার জন্যই শুধু আমাকে চাই!" 

ইউসুফের রাগ এবার মাথায় উঠে গেলো। কুহুর গালে থাপ্পড় লাগলো। কুহু ফ্লোরে পরে গেল। ঠোঁট কেঁটে রক্ত বের হয়ে গেলো। গালে হাত দিয়েই চেঁচিয়ে বলল,,

---" আপনি একটা কাপুরুষ ইউসুফ ভাই। আপনি আমার জীবনটা শেষ করে দিলেন।  আমি থাকবো না  আপনার সাথে। আমি ডিভোর্স দিবো আপনাকে বুঝলেন!"

ইউসুফের কানে ডিভোর্সের কথা যেতে চোখ মুখ আগুনের পিন্ড হয়ে গেলো। কুহুর দু হাতে বাহু চেপে ধরে তুললো। বলল,,

---" আমি বেঁচে থাকতে তুই  কখনো ছাড়া পাবি না।"

পাঁজা কোলে করে কুহুকে নিয়ে বেরিয়ে গেলো ইউসুফ।  কুহু এদিকে চিৎকার করতে লাগলো। সে যাবে না ইউসুফের সাথে কখনো যাবে একদম যাবে না।

—————

ঘরের ভিতর পিনপতন নিরবতা মাঝে  ঘড়ির শব্দ শুধু বলে যাচ্ছে টিক টিক টিক। চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটে থাকা আসবাবপত্র।  কাঁচের দামি সো পিস টাও ভেঙ্গে গড়াগড়ি খাচ্ছে উল্টে থাকা কাঠে টেবিলের পাশে। কাচেঁর জানালা ভেদ করে বাহির থেকে শেষ বিকেলের কমলার মতো আলো ফুটিয়ে ঘরের মেঝেতে পড়ছে। কুহু ফোলা চোখ জোড়া নিয়ে তাকিয়ে আছে মেঝেতে। চোখের কোনে এক রত্তি জল এখনো উঁকি দিচ্ছে। বুক-পিঠে মাঝে মাঝে উঠানামা করে ছাড়ছে দীর্ঘ শ্বাস।কিছুক্ষণ আগেই হয়ে যাওয়া তান্ডবের লেশ যেন কেঁটে উঠতে পারেনি কুহু। ইউসুফ  কুহুকে তার বাবা বাড়ি থেকে নিয়েতো এসেছে। কিন্তু কুহুর মন? তা কি আর ফিরে পেয়েছে ইউসুফ? 

ইউসুফ কোলে করে কুহুকে তার রুমে এনে বসিয়ে দেয়। গাড়িতে চিৎকার চেঁচামেচি আর বার বার নেমে যেতে চাওয়ায় বেঁধে দেয়ে হাত আর মুখ খুলতেই কুহুর চেঁচিয়ে উঠে বলল,,

---" হাউ ডের ইউ? আপনি আমাকে আমার মতে বিরুদ্ধে কোথায় নিয়ে যেতে পারেন না। সে অধিকার আপনি হারিয়ে ফেলেছেন! ডোন্ট টাচ মি!"

কুহুকে কোলে করে নিয়ে আসায় ইউসুফ ক্লান্ত। ঘামে সাদা পাঞ্জাবি লেগে উঠেছে শরীরের সাথে।ইউসুফ কুহুর সামনে বসে হাত দুটি ধরতেই কুহু সরিয়ে নেয়। ইউসুফ আহত হয়। কুহুর দিক তাকিয়ে অনুনয় করে বলে উঠে,

---"হাই এক্সপ্লেইন এভরিথিং টু ইউ? "

কুহু মুখ ফিরিয়ে নিলো। ইউসুফ গাল ফুলিয়ে ছোট শ্বাস নিলো। কুহুর হাত জোড়া তার হাতে শক্ত করে টেনে নিয়ে ইউসুফ বুকে মাঝে ধরলো। বলল,,

---" অনেস্টলি, হোয়াট ডু ইউ থিংক? আমি এমন কিছু করেছি তোর মনে হয়?"

কুহু হাসলো। বিদ্রুপের হাসি। বলল,,

---"আমার মনে হচ্ছে, আই ডোন্ট নো ইউ!"

কুহুর অবিশ্বাস করা বুঝি মানতেই পাড়লো না ইউসুফ।  গুলিকে বুঝি কেউ বুক ঝাঝরা করে দিয়েছ এমন অনুভূতি হচ্ছে ইউসুফের। তার বাবুইপাখির কি সত্যি বিন্দু মাত্র বিশ্বাস নেই তার ভালোবাসা মানুষটির উপর?? ইউসুফের চোখের কোনে জ্বল টলমল করে উঠলো। এদিক ওদিক চোখ বুলিয়ে ধরে আসা গলায় বলল,,

---" পৃথিবীর সব মানুষ আমাকে ভুল বুঝুক আই ডোন্ট কেয়ার। কিন্তু তোর অবিশ্বাসী চোখ জোড়া আমায় পুড়িয়ে দিয়ার জন্য যথেষ্ট। "

কুহু শক্ত চোখে তাকালো ইউসুফের দিক। কাটকাট করে বলল,,

---" অন্য নারী শরীরে বুঁদ হওয়ার সময় বুঝি মনে পড়ে নি এই আমিটার কথা?? সেই পর নারী শরীর বুঝি আপনার বাবুইপাখির ভালবাসা ভুলিয়ে দিয়ে ছিলো? এ কেমন ভালোবাসা ছিলো আপনার? হুহ! বলুন না চুপ করে কেন আছেন??"

ইউসুফ থমকে গেলো যেন। কুহু বুলিতে ধংস হয়ে গেল তার অনুভূতি। কুহুর হাত দুটি ছেড়ে দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো।  কুহুর ভালোবাসা ঠুনকো মনে হতে লাগলো।  কেন নেই ইউসুফের প্রতি এক ফুঁটো বিশ্বাস কেন নেই?ইউসুফের পাগলাটে ভালোবাসার মাঝে কি এক বিন্দু সত্য খুঁজে পায়নি কুহু?? অভিমানের ঘড়া যেন ভাড়ি হওয়ার পালা ইউসুফেরও। ইউসুফ স্বগাতোক্তি করে বলল,,

---" আমি তোকে সেদিনি সবটা বলবো যেদিন তোর চোখে আমার জন্য বিন্দু পরিমান বিশ্বাস,  ভালোবাসা আর হারানোর ভয় দেখবো।"

ইউসুফ বেড়িয়ে গেলো। কুহু চেয়ে রইলো তার যাওয়ার দিক। ইউসুফের ছায়া নাই হতে ফুপিয়ে উঠে কাঁদতে লাগে কুহু। ভালোবাসার মানুষটা কি সত্যি সে হারিয়ে ফেললো!

ঘন্টা খানিকের মাঝে ইউসুফ আবার ফিরে এলো রেগে মেগে। হাতে একটা সাদা কাগজ।  কুহুর তখন তন্দ্রা লেগে ছিলো মাত্র। ইউসুফ কুহুর চুলের মুঠি ধরে টেনে তুললো। রাগে গা যেন কিড়মিড় করছে তার। কুহু ব্যথায় "আহ " শব্দটি বের হয়ে গেল আপনা আপনি। ইউসুফের দিক বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে রইলো ইউসুফ লাল চোখ মুখের দিক। ভয়ে যেন কাঠ হয়ে এলো কুহুর। কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলল,,

---" ক-কি ক--করছেন ইউসুফ ভাই? ব্যথা লাগছে আমার ছাড়ুন! "

ইউসুফ আরো জোড়ে টেনে ধরে কাছে আনলো,, 

----" আমার ধৈর্যের বাঁধ তুই ভেঙে চুরমার করে দিলি তুই কুহু! আমাকে ডিভোর্স পেপার পাঠাস?"

কুহু বিস্ময়ে হতবুদ্ধি।  মাথায় ঘুরছে শুধু! " আমি তো ডিভোর্স পেপার সই করি নাই!তাহলে উনি পেলো কিভাবে??"

কুহুর ভাবার মাঝেই ইউসুফের তান্ডব সব তছনছ করে দিলো। কুহুকে ছেড়ে ঘরের আসবাব ভাঙ্গতে লাগলো। ইউসুফ রাগে যেন ভস্ম করে দিবে সব।এদিকে কাজের ফুলদানিতে হাত লেগে কেঁটে চুয়ে চুয়ে রক্ত পড়ে ভেসে যাচ্ছে ইউসুফের শুভ্র পাঞ্জাবি,  আর ফ্লোর সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই তার।  ইউসুফ শুধু চিৎকার করে বলছে শুধু,,

----" আমার ভালোবাসার এই দাম দিলি তুই?এর থেকে বরং আমাকে তোর হাতেই খুন করে ফেলতি। এ জীবন যতক্ষণ আছে।  মুক্তি তুই কখনো পাবি না। কখনো না। এমন কি এ বাড়ির বাহিরেও আজ থেকে তুই যেতে পাড়বিনা।"

কুহু আত্মকে উঠলো। ইউসুফের কথায় নয়। তার নেতা সাহেবের ভেসে যাওয়া রক্ত দেখে। কুহু দৌড়ে গেলো ইউসুফ হাত ধরতেই ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিলো ইউসুফ৷ চোখে তার আজ পানি। কুহুর দিক আঙুল তুলে বললো,,

---" তোর জন্য আমি মারা গেছি কুহু৷ মারা গেছি। যেদিন এ শরীরটা পঁচে যাবে সেদিন তুই মুক্ত!"

ইউসুফ দরজায় ধামাড়াম করে বন্ধ করেই চলে গেলো। কুহু গেলো পিছন পিছন।  কিন্তু লাভ হলো না। ইউসুফ বাহির থেকে লক করে গেছে। কুহু কড়া ঘাত করলো৷ চেচিয়ে ডাকলো ইউসুফকে।  কাঁদতে কাঁদতে বলল,,

---" আমি কিছু করি নি। আপনি হাতে রক্ত বেন্ডেজ।  প্লীজ!"

এলোমেলো কথার বুলি আওরায় যাচ্ছে কুহু। বুক ফেঁটে যাচ্ছে কষ্টে। এ আবার নতুন কোন পরীক্ষার লক্ষণ।  সে তো তার ইউসুফ ভাইকে ডিভোর্স দেই নি।  না দিবে। তাই তো সেদিন নাকোচ করে চলে এলো।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন