চোখ মেলে দেখি,
একটি ছায়ামূর্তি।। যা আমার পাশে বসে!মুহূর্তেই চোখ বন্ধ করে ফেললাম ভয়ে।গলা দিয়ে আওয়াজ আসছে না আমার।। ঘামতে শুরু করেছি রীতিমতো।। আবার মিটমিট করে চোখ খুলে দেখি।। আমার পাশে কেউ নেই।। সাথে সাথে পাশে থাকা টেবিল ল্যাম্প জ্বালিয়ে দেখি, আসলেই কেউ নেই।। ভয় করতে লাগলো জিন, টিন নয়তো।। আশেপাশে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করলাম, না কেউ নেই? হয়তো মনের ভুল তাই চোখ বন্ধ করে চাদর নাকে মুখে দিয়ে শুয়ে পরলাম দোয়া ইউনুস পড়তে লাগলাম।।কিন্তু মনের মাঝে সংশয় রয়ে গেল! আমি স্পষ্ট কারো নিঃশ্বাস আমার ঘাড়ে পেয়েছি।। তাহলে সে গেল কই? আর ওই ছায়ামূর্তি টাই কই গেল?? আচ্ছা এ বাসায় ভূত নাই তো??
ভয়ে গলা শুকিয়ে কাঠ আমার।।এই সাইকো থাকতেও আবার ভূতের উপদ্রব,, বাচাও আল্লাহ।।এসব বিড়বিড় করতে করতে ঘুমিয়ে গেলাম একপর্যায়ে।।
আর এদিকে তখন ইউসুফ দরজার আড়াল থেকে এসব শুনে হাসতে লাগলো।।তখন ইউসুফ এসেছিল তার ঘরে।।এটি কুহু আসার পর থেকে রোজ এর কাজ।। কুহু ঘুমিয়ে যাওয়ার পর ওর রুমে এসে, ওর পাশে বসে থাকা।।আর তার মুখখানি বসে বসে দেখা।।এই মুখখানিতে যে কত মায়া কেউ গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ না করলে বুঝতেই পারবে না।।কখন কখন ওর অজান্তেই অনেক বার চুমুও খেয়েছে ইউসুফ।। কিন্তু বেচারি এতই ঘুম কাতুরী যে কিচ্ছু বুঝতে পারে না।।
ইউসুফ এসব ভেবে হেসে দিল।।
----পাগলী মেয়ে!! বলে মুচকি হাসলো।।তারপর নিজের রুমের দিক পা বাড়ালো।।
সকাল বেলা,
আজ খুব সকালে ঘুম ভাঙলো।। তাই নামাজ পড়ে নিলাম।। আজ আমার রেজাল্ট পাবলিস্ট হবে।। ভয় লাগছে খুব।।দোয়া করছি যেন 4.সামথিং পাই।।তাহলে পাবলিক ভার্সিটিতে এপ্লাই করতে পারবো।। তার সাথে আনন্দও যে এইখান থেকে আজ চলে যাবো।।
ইয়াহু!!!! 😁😁
তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে ব্যাগ পত্র নিয়ে নিচে নেমে আসলাম।।
-----নানু মা কই চল? এখন না বের হলে ২ টার আগে পৌঁছাতে পারবো না!!
----হে বুড়ি আসচ্ছি।।
আন্টি মার কাছে আর মামার কাছে বিদায় নিয়ে গাড়িতে উঠে বসলাম।।আসার সময় সাইকো কে দেখলাম না।।হয়ত ঘুমুচ্ছে।।আমার জন্য ভালই হইসে।।ভাল হয়েছে বেঁচে গেছি।।মনে মনে খুব খুশি হয়েছি।।এবার কাকে জালাবি সাইকো হি হি।।
এদিকে ইউসুফ মাত্রই বাসায় ঢুকে জানতে পারে তার দাদু চলে গেছে।।সাথে সাথে তার মেজাজ খারাপ হয়ে গেল।।তারপর কিছু একটা ভেবে তার মার ঘরে পা বাড়ালো।।
----মম আসতে পারি?
----আরে এসে ইউসুফ।। ইউসুফের বাবা বললেন।।
---আ..পাপা আমি কিছু বলতে চাই?
----হুম বল?
----আচ্ছা আমরা যেহেতু বিদেশে ছিলাম তাই হয়তো দাদু আমাদের সাথে থাকেন না,বা কুহুর জন্য যেতে চান নি।।তো এখন আমরা বিডিতে আছি।।উনি কেন আলাদা থাকছে??
----আমিও কাল মাকে এ কথা অনেক বুঝিয়েছি।।তিনি কুহুর পড়াশুনার জন্য আসতে চাইছেন না।।
----তো এখন কুহুর এক্সাম শেষ।। ওই এখানে ভার্সিটিতে ভর্তি করে দিবোনি আমরা তাহলেই তো হয়।।
----হুম তাও ঠিক।।আচ্ছা আমি মার সাথে কথা বলছি।।
----পাপা তোমার বলতে হবে না।।তুমি বললে হয়তো না করে দিবে।। যা করার আমি করছি।।
ময়মনসিংহে ঢুকে গেছ অনেকক্ষণ।। কিন্তু জ্যামের কারণে আটকে গেছি ব্রিজের মোড়ে।।এই জায়গায় সব সময় জ্যাম থেকাই।হুহ!!!
কলেজে এসে গেছি।।নানুমা আমাকে কলেজে নামিয়ে বাসায় চলে গেছে।।গেটের সামনে যেতেই আমার ফ্রেন্ডসরা দাড়িয়ে ছিল।। আমাকে দেখে দৌড়ে সবাই কাছে এলো আর আমরা গ্রপ হাগ করলাম।।রেজাল্ট যেনে বাসায় চলে আসলাম।।সাথে লিজাকে নিয়ে আসলাম পার্টি করব আজ তাই।।
-----ওমা এতো ডেঞ্জারাস সাইকো তোর ভাই!!আমার তো দেখতে ইচ্ছা করছে তোর ভাইকে!!
লিজাকে সাইকোর কথা সব বললাম শুনার পর এসব বলতে লাগলো।আমি বললাম,,
----হে দেখলে অবশ্য ক্রাশ খেয়ে যাবি গ্যারান্টিসহ।।যাই হোক আজ আমি মুক্ত।। আর খুব ভালোও লাগছে।।
বলে গান ধরলাম,,
আজ মে উপার
আসমা নিচে
আজ মে আগে
জামানা হে পিছে।।
আমার গান শুনে খিল খিল করে হাসতে লাগলো।।সাথে আমিও।।তখনি কলিংবেল বেজে উঠলো।।
----তুই বস হয়তো নানু মা আসচ্ছে।। বাজারে গিয়েছিল তখন কি জানি আনতে।।
----আচ্ছা যা।
আমি লাফাতে লাফাতে গেট খুললাম আর বলতে লাগলাম,,
----নানু মা তোমার ওত দেড়ি,,,,,বাকি কথা আর বলতে পারলাম না সামনের ব্যাক্তিটির দিকে তাকাবার পর গলায় কথা আটকে গেছে।। তবদা লেগে গেলাম।।
আমি ভুত দেখার মতো তাকিয়ে আছি তার দিক।।
আর উনি এক রহস্য ময় হাসি ঠোটে লাগিয়ে বলতে লাগে,,,
----কিরে কুহু ভয় পেয়েছিস বুঝি??
আমি এক ঢোক গিলে বলতে লাগলাম,,,
--- আপনি? কাপা কাপা কন্ঠে।।
তিনি এবার বিরক্তিভাব নিয়ে আমাকে ধাক্কা দিয়ে বললেন ভিতরে ঢুকতে ঢুকতে বললেন,,
----সর সামনে থেকে ঢুকতে দে।।
আমি এখন তার দিকে তাকিয়ে আছি।।আর ভাবছি উনি এখানে কিন্তু কেন??
মাথা ভন ভন ভন করে ঘুরছে।।
যার কাছ থেকে পালালাম সে এসে হাজির।। এখন কি হবে???
আমাকে এভাবে দেখে তিনি ধমক দিয়ে বললেন,,
----দাঁড়িয়ে আছিস কেন?? যা পানি নিয়ে আয়।।
আমি মাথা নাড়িয়ে পানি আনতে চলে গেলাম।।
পানি এনে তার হাতে দিতেই তিনি উঠে দাড়ালেন।। আর বলতে লাগলেন,,
----দাদু কই গেছে?
----বাজারে।।
----কি ব্যাপার! আমাকে দেখে তোর চেহারার বারোটা বেজে গেছে কেন।।
আমার কানের কাছে ফিসফিসে বলতে লাগলেন,,
----আমাকে দেখে বুঝি খুশি হোসনি।।
উনি আমার এত কাছে আসাতে কেমন জানি ফিল হতে লাগলো।।কিন্তু ভাল লাগছিল সেই ফিলিংসটা।।টিভিতে দেখেছি,, যখন নায়ক তার নায়িকার কাছে আসে।। তখন নায়িকা কেমন ব্লেসিং করে।। আমারো তেমন হচ্ছে।। তার সাথে কান যেন গরম হয়ে যাচ্ছে।।তখনি তিনি ঝাঁঝালো কন্ঠে বলে উঠে,,,
----এই তুই এমন করছিস কেন?
উনার কথা শুনে আমার সব ভাললাগার ফিলিংস ফুস হয়ে গেল।।আসলেই সাইকো শালা এইটা।।আমি চেঁচিয়ে বললাম,,
----আমার ইচ্ছা আপনার কি হে?? এত দিন আপনার বাসায় ছিলাম তাই আপনাকে কিছু বলি নি বুঝলেন??এটা আমার বাসা।।এ বাসার গুন্ডি বুঝলেন।।আর হে যে কদিন এখানে আছেন আমার ধারে কাছে আসবেন না।। নয়ত আপনার খবর আছে বুঝলেন।।হুহহহহ।।
ভাব নিয়ে চলে আসলাম আমার রুমে।।
এদিকে কুহুর কথা শুনে ইউসুফ ভ্যাবলা কান্তের মত তাকিয়ে আছে কুহুর যাওয়ার দিক।।কিছুক্ষণ পর যখন বুঝতে পারল,, কুহু তাকে দাপট দেখিয়ে চলে গেছে।। মেজাজ বিগ রে গেল তার।।
----কি সাহস এই মেয়ে গুন গুনে ৭ বছর বড় তার আমি।।আর আমাকে এত ডায়লগ দিয়ে গেল।। তাউ আবার আমার দাদু বাড়ি দাড়িয়ে।।সে কি ভুলে গেছে তার থেকে আমার এই বাড়িতে অধিকার বেশী।।খুব ঝাঁজ না তোর।।দাড়া বের করবো তোর ঝাঁজ।।
রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে সোফায় বসে পড়লো ইউসুফ।। তখনি তার দাদু আসে।।দাদুকে আগেই কল করেছিল সে।।তার দাদু তাকে রুমে দিয়ে মাগরিবের সালাত আদায় করতে যায়।।
আর ওই দিকে লিজা কুহু আর ইউসুফের কথা শুনে হাসতে হাসতে শেষ।।সন্ধ্যে হয়ে আসছে দেখে সেও বেরিয়ে যায়।।
মধ্য রাতে,,
ঘুমের মধ্যে মনে হলো আমি হাওয়ায় ভাসছি।। পিটপিট করে চোখ মেলে দেখি।। আমার মাথার উপর খোলা আকাশ।। আর আমি কারো কোলে।।ভাল করে তাকিয়ে দেখি আমি সাইকোর কোলে।।আর আমরা এই মধ্যরাতে ছাদে।।কিছু বলব তার আগেই ধড়াম করে ফেলে দিল আমাকে।।
----আহ্্্! অসভ্য লোক এমন করলেন কেন? আর আমাকে এখানে কেন আনচ্ছেন এত রাতে??
উনি আমার কথা শুনে দাত কেলিয়ে বলতে লাগলেন।।তোর শরীরে অনেক ঝাঁজ তো তাই দূর করতে আনছি।।
আমি কিছুই বুঝলাম না তার কথা তিনি উঠে চলে যেতে লাগলেন।।তখন আমি উঠে তাকে বললাম,,
----এসবের মানে কি? ফাজলামো করেন??
তিনি কিছু না বলে সোজা ছাদের দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়ান।। আর আমার দিকে ফিরে বাঁকা হেসে দরজা লাগিয়ে দিলেন।।আমি দৌড়ে দরজার কাছে গিয়ে দরজা ধাক্কাতে লাগলাম।।আর চিল্লিয়ে বলতে লাগলাম,,
----শালা সাইকো তোরে পাইলো তোর চুল ছিড়মু।। হারামি আমার জানডা কয়লা কইরা ফেলাইতেসোস।।খোল তুই।।নানু মা নানু মা।।
তখনি সাইকো বলে উঠে,,
----তুই তো ভারী বেয়াদব।। ভেবেছিলাম তোকে একটু শিক্ষা দিয়ে ছেড়ে দিব এখন দেখি চলবে না সকাল পর্যন্ত আটকে রাখব।। আর এখন তুই এখানে বসে বসে মশার কামড় খা।।তাহলে তোর শরীরে ঝাঁজ টা কমবে।।বলেই চলে গেল সাইকোটা।।
আর আমি এদিকে কেঁদে শেষ।।সত্যই মশা আমারে কামড়ে ফালা ফালা করে দিচ্ছে।।এইটা আসলেই সাইকো😭😭😭😭।।আর হাত,, পা কামড়ে দিচ্ছে মশা।।
----আমি তোকে ছাড়াবো না সাইকো😭😭😭😭।।
—————
চোখে তীব্র মাত্রায় আলো পড়ায় ঘুমটা ভেঙে গেল আমার।।চোখ মেলে দেখি আমি খোলা আকাশের নিচে শুয়ে আছি।।ধীরে ধীরে উঠে বসলাম।।সারা শরীর অনেক ব্যথা করছে।।ভালো তরে করে তাকিয়ে দেখি আমি ছাদে।।পরক্ষণে কাল রাতের কথা মনে পড়ে গেল সব।। সাইকো শালাটা আমায় এখানে আটকে রেখে চলে গেছে।।বসে বসে সাইকোকে বকছি।।তখনি আমার কপালে কিছু একটা পরল ঠান্ডা ভারী তরল জাতীয়।। কাঁপলে হাত দিয়ে সামনে এনে দেখি পাখি শালা হাগু করে দিসে কঁপালে।।শালার পাখি আর জায়গা পেলিনা সব রেখে আমার কপালে।। মেজাজটা আরো খারাপ হলো।।
শালা আমার ভাগ্যটাই খারাপ এই জন্য তোরে ছাড়ুম না আমি।।হুহহহহ।। রাগে গজ গজ করতে করতে রুমে চলে আসলাম।।তারপর ওয়াশ রুমে ঢুকে গেলাম।। পানির নিচে দাঁড়িয়ে আছি পুরা শরীর জ্বলতেছে।। সাথে সারা শরীরের জায়গায় জায়গায় মশার কামড়ে ফুলে গেছে।। শালা কত বড় হেনস্ত ডা করলো আমারে।। এর শাস্তি তোরে রাতে দিমু আমি।।নয়তো আমার নাম কুহু না।।হুহহহহ!!
গোসল শেষে রেডি হয়ে নিচে নেমে আসলাম।।
খাবার টেবিলে নানু মা, আর সাইকো বসে খাচ্ছে আর গল্প করছে।। বাহ নাতিকে পেয়ে নাতনীকে ভুলে গেছে।।আমাকে নিচে নামতে দেখে নানু বলতে লাগে,,
-----আরে বুড়ি কই ছিলি? রুমেও পেলাম না।।আর তোর সারা শরীরে এমন ফোলা কেন? হাম হলো না তো??
নানুমার কথায় বিরক্ত লাগছে নাতিকে পেয়ে আমাকে ভুলেই গেল হুহ।।মুখ ভার করে উওর দিলাম,,
----মশা কামড়িয়েছে।।
----মশা আসলো কই থেকে? তুই রাতে কয়েল জালাস নাই।।
তখনি আমার মুখের কথা কেরে নিয়ে বলতে লাগে সাইকো টা,,
-----মশার সাথে ডেটে গিয়েছিল মনে হয়! বলে হেসে কুট কুট হচ্ছে।।
এর হাসি দেখে গা টা আরো জালা করছে।।মন তো চাইছে ওকে মৌমাছির কামোড় খাওয়াইতে।।
নানু মা হাসচ্ছেন।।
আমার রাগ আরো বাড়ছে।।তাই ব্যাগ কাঁধে নিয়ে বের হয়ে গেলাম।।আর নানু মা চিল্লিয়ে বলে যাচ্ছে পিছন থেকে,,
---- বুড়ি কই যাস,, নাস্তাতো তো করে যা।।
আমি আর পিছনে তাকালাম না।।না তার ডাকে সারা দিলাম।।খাওয়া তোমার গুনধর নাতিকে বসিয়ে বসিয়ে।।আমি কে? আমি তো এখন পর হয়ে গেছি হুহ।।।
বের হয়ে কল দিলাম লিজাকে,,
----আর কতখন?
----এসে গেছি।।
-----তাহলে ফোনটা ধরলি কেন আর ২ টা টাকা কেটে নিলো।।
-----কি কিপটেরে তুই।।এভাবে তাকাছিস কেন? আচ্ছা সরি! কই যাচ্ছি আমরা তা তো বল।।
----বলছি....!!সামনের বস্তিতে যাবো!
-----কিন্তু কেন?
-----হি হি হি হি হি।।
-----পাগলের মতো হাসচ্ছিস কেন? এই তোর মাথা ঠিক আছে তো??
-----হুম চল! গেলেই বুঝবি।।
রাতের বেলা🌌
ইউসুফ মাত্রই এসেছে বাহির থেকে।।
ময়মনসিংহ শহরটা আজকে ঘুরে দেখেছে।।সাথে সাথে তার বিদেশে থাকাকালীন তার কিছু বন্ধু হয়।।তার একজন ময়মনসিংহের মেয়রের ছেলে উদয়।।সেও এসেছে।।ভালই কেটেছে দিনটি তার।।এখন অনেক ক্লান্ত সে।।তাই বাহির থেকে এসেই বিছানায় গা এলিয় চোখ বন্ধ করে নেয়।।
কিছুক্ষন যাওয়ার পর উপলব্ধি করে তার শরীরে কিছু হাটছে।।প্রথমে গুরুত দিলনা সে পর মুহুর্তে মনে হচ্ছে কিছু কামড় দিচ্ছে।।এক দুইবার ইগনোর করার পর যেখন দেখলো নাহ ক্রমসেই বাড়ছে।।ততখনে দড়িয়ে হয়ে যায়।।সারা শরীর চুলকাতে শুরু করে সাথে কামরের।।দ্রুত বিছানা ত্যাগ করলো ইউসুফ।। চুলকাতে চুলকাতে খেয়াল করলো তার বিছানায় লাল পিঁপড়ে ভড়া।।সাথে সাথে দাদু বলে চিৎকার করতে লাগলো ইউসুফ।।
তখনি ইউসুফের দাদু দৌড়ে রুমে আসে,,,
----কি হলো ইউসুফ।।
ইউসুফ রাগে বলতে লাগে,,
----দেখ বিছানায় তাকিয়ে।।
-----হায় আল্লাহ এতো লাল পিঁপড়া কই থেকে আসলো।।আচ্ছা দাড়া দাদু ভাই বেড শীট চেন্জ করিয়ে দিচ্ছি।। তোর তো সারা শরীরে লাল করে ফেলেছে কামড়িয়ে তুই বরং গোসল করে নেয়।।
ইউসুফ রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে কেবিনেটের ভিতর থেকে তয়লা নিতে গেল।।তখনি শুনলো তার দাদুর বিড়বিড় করে কিছু কথা বলা,,
----বুঝালাম কি হচ্ছে কাল আমার নানু ভাইকে মশা কামড়ে দিছে।।আজ আমার দাদু ভাইকে পিঁপড়া কামড়াচ্ছেম।কি হচ্ছে না জানি কার নজর লাগচ্ছে আমার নাতিদের।।
বেডশীট চেঞ্জ করে তিনিও চলে গেলেন।। আর ইউসুফ এখন বুঝতে পারছে এ আর কারো না বরং কুহুর কাজ।।রাগ উঠে গেল তার মাথায়।।এত টুকু মেয়ে তার সাথে পাঙ্গা নিচ্ছে।।এর বিহিত সে করেই ছাড়বে।।যেন পরবর্তীতে আর চোখ তোলার সাহস না পায়।।রাগে গজ গজ করতে করতে ওয়াশ রুমে চলে গেল সে।।
-----হে জানিস সবটা দেখছি আমি দরজার আড়াল থেকে।। বাঁদরের মতো লাফাচ্ছিল আর চুলকাচ্ছিল নিজের-শরীর।। আমার কলিজা আজকে ঠান্ডা হয়ে গেছে।। বইন তুই থাকলে দেখতে পাইতি।।
-----তুই পারিসও।। বেচারার কি হাল করেছিস না জানি।।
-----কোন বেচারা না বুঝলি।। পুরাই সাইকো।। জানলা কয়লা বানাইছে এই কয়দিনে।। আর তুই বেচারা কস।। যা তোর সাথে কথা কমু না।। রাখ ফোন।।
বলে কল কেটে দিলাম।।এহে কি দরদ সবার।।
সবাই সাইকেল পক্ষে কথা কয়।। হুহহহহ।।
দরজার উল্টোপাশে বসে ফোনে কথা বলছিলাম।।
তখনি হুট করে দরজা লাগানোর শব্দে পিছনে পিছনে পড়ে তাকাতেই চক্ষু আমার ছানাবড়া।।
সাইকো দরজা আটকিয়ে দরজার সাথে হেলে দাড়িয়ে আছে।।আর আমার দিকে ভয়ানক দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে আছে।।
----আপনি আমার রুমে কেন? আর দরজা লাগিয়ে ছেন কেন??কাঁপা কাঁপা কন্ঠে জিগাসাা করতে লাগলাম।।
তিনি আমার কথা উওর না দিয়ে বাঁকা হাসলেন।।আর আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগলেন।।আমি তার এভাবে এগিয়ে আসতে দেখে খাটের একদম শেষ প্রান্তে চলে আসি।।আর উনি সাথে সাথে আমার হাতটি টান দিয়ে তার কাছে নিয়ে আসে।।তারপর খাট থেকে নামিয়ে আমাকে উল্টো দিক ঘুড়িয়ে তার বুকের সাথে আমার পিঠ চেপে ধরলেন।।ঘটনাটা মুহুর্তে হওয়াতে আমি কি বুঝে উঠার আগেই এমন হয়ে গেল।।আর আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে কাপতে লাগলাম।। আর উনি আমার কানের কাছে মুখ এনে বলতে লাগলেন,,
----খুব সাহস তোর।। আমার সাথে পাঙ্গা নিতে আসিস।।তোর সাহসের তারিফ করতে হয়।। কিন্তু আমার যে এত সাহস পছন্দ না।।তুই ভুলে গেলি কি করে আমি তোকে ধরতে পারলে আমি কি করবো??
আমি কাঁদে দিলাম ভয়ে, সত্যই মজার ছলে ভুলেই গেছিলাম।। আমি একটা সাইকোর সাথে লেগেছি।।যে কিনা উঠতে বসতে বন্দুক আমার নাকের ডগায় ধরে রাখে।।আমি কাদঁতে কাঁদতে বললাম,,,
----ভাইয়া প্লিজ ছেড়ে দেন।। আর করবো না আর আপনার সামনেও আসবো না।।ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলাম তাতে যেন কোনো কাজই হলো না উল্টো উনি আমাকে ধাক্কা দিয়ে বিছানায় ফেলে দিলেন আর উনিও আমার উপর চড়ে বসলেন।।আমি তাকে সরাতে চাইছি তাই উনি আমার হাত দুটো বিছানার সাথে চেপে ধরে আর আমার বুকের ঠিক উপরে একটা কামড় বসিয়ে দিলেন জোড়ে।।আমার যেন বের হয়ে যাচ্ছে।।আমি চিল্লাতে লাগলাম।।আমার চিল্লানো শুনে আরো জোড়ে একি জায়গায় আবার কামোড় বসিয়ে দিলেন।।এদিকে ব্যথায় আমার জান যায় যায়।। কিছুক্ষণ পর তিনি আমাকে ছেড়ে উঠে পরলেন আর বলতে লাগলেন,,
----নেক্সট টাইম আমার সাথে লাগতে আসার আগে আজকের রাতটা মনে করে নিস।।
বলে তিনি হন হন করে বের হয়ে গেলেন।।আমি এদিকে কামোড়ের জায়গায় হাত চেপে কাঁদতে লাগলাম।।খুব ব্যথা করছে।।মনে মনে পণ করলাম বেঁচে থাকলে কখনো তার মুখোমুখি হবে না।।আমি তো ভুলেই গিয়ে ছিলাম এ যে সাইকো।।
কাঁদতে কাঁদতে এক পর্যায় ঘুমিয়ে যাই।।
সকালে,,