আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুগ্রহ করে গল্প সম্বন্ধে আপনার মতামত অবশ্যই প্রকাশ করবেন। আপনাদের মতামত আমাদের এই ছোট প্রয়াসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগায়। শীঘ্রই আরও নিত্য নতুন গল্প আপডেট আসছে, সঙ্গে থাকুন। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখক/লেখিকা'র নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত গল্পের ডায়েরি’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখক/লেখিকা'র কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় গল্পের ডায়েরি কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ করলে তা কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

আমার অন্তরালে তুমি - পর্ব ০৬ - সিজন ২ - ফারহানা ছবি - ধারাবাহিক গল্প


অন্যদিকে বর্ণ রেগে আগুন হয়ে বাড়িতে ফিরে দেখে পুরো বাড়ি ডেকোরেট করা কিন্তু সামনে দারিয়ে থাকা মানুষটাকে দেখে বর্ণের রাগ সহ্যের সীমা অতিক্রম করে গেছে ৷ মিসেস বর্ণালি তার ছেলের রাগ সম্পর্কে অবগত থাকায় তিনি নিজে ছেলের কাছে এগিয়ে যান৷ 

"" এখানে কি হচ্ছে মম? " দাঁতে দাঁত চেপে বললো বর্ণ৷ তখনি মইনালের একমাত্র মেয়ে সামিরা এসে বর্ণের গলা জরিয়ে ধরে বলে..

" হেই ওয়াট আপ জান! এতো রেগে আছো কেন তুমি?""

প্রথমত ছন্দের করা অপমান দ্বিতীয় রাহুল কে খাইয়ে দেওয়া আর এই নেকু আঠার মতো চিপকে থাকা সামিরা কে দেখে বর্ণ তার রাগ আর ধরে রাখতে পারলো না ৷ গলা থেকে সামিরার হাত নামিয়ে ঠাটিয়ে এক থাপ্পোর মারে বর্ণ৷ বর্ণের হাতের থাপ্পোর খেয়ে সামিয়ে ফ্লোরে ছিটকে পরে ৷ মইনাল তার মেয়ের এমন অবস্তা  দেখে নিচ থেকে টেনে তুলে দার করিয়ে দেখে সামিরার ঠোট কেটে গেছে ৷ তা দেখে প্রচন্ড রেগে যায় মইনাল৷ 

"" এই সব কি হচ্ছে আয়মান? আমাদের ইনভাইট করে এভাবে অপমান ন করলেও পারতে ৷ আর বর্ণের এতো বড় সাহস কি করে হয় আমার মেয়ের গায়ে হাত তোলার?""

"" মইনাল দোস্ত বর্ণের হয়ে আমি তোর কাছে ক্ষমা চাইছি ৷ ""

"" আঙ্কেল প্লিজ আপনি ক্ষমা চাইবেন না ৷ আর ড্যাড এটা ওর আর আমার পার্সোনাল ম্যাটার এখানে তোমরা ইন্টারফেয়ার করবে না ৷ ""

"" বাট বেটা!""

"" কোন কিন্তু নয় ড্যাড ৷""

" ওকে তোমার ইচ্ছে তাই করো "" 

এদিকে বর্ণ সামিরাকে আঘাত করে আর ওখানে দারায় না কারন ওখানে দারালে হয়তো খুনোখুনি বেধে যেতে পারে ৷ অতএব এখন তার মাথা ঠান্ডা করতে হবে নাহলে সব কিছু এলোমেলো হয়ে যাবে৷ 

বর্ণ পা থেকে সু খুলে ওভাবে ওয়াসরুমে ঢুকে শাওয়ারের নিচে দারিয়ে থাকে ৷ যতোক্ষন না মাথা ঠান্ডা হচ্ছে ৷ কিন্তু চোখ বন্ধ করলে চোখের সামনে রাহুল কে খাইয়ে দেওয়ার দৃশ্য ভেশে উঠছে ৷ বর্ণ কয়েক বার দেওয়া ঘুশি মেরে রাগ নিয়ন্ত্রন করার বৃথা চেষ্টা করে যাচ্ছে ৷ এক ঘন্টা পর বর্ণ তোয়ায়ে পেচিয়ে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে বিছানায় সামিরা কে বসে থাকতে দেখে বর্ণের ঠান্ডা মেজাজ আবার গরম হয়ে যায়৷ 

"" হেই বেবি এতোক্ষন ধরে কোন ছেলে শাওয়ার নেয় জানা ছিলো না বাট তোমাকে শাওয়ার নেওয়ার পর এই তোয়ালেতে আরো হট লাগছে ৷ হাই গারমি!""

"" গেট লষ্ট সামিরা ৷ এই মুহূর্তে আমার চোখের সামনে থেকে চলে যা নাহলে তোকে খুন করতে আমি দ্বিতীয়বার ভাববো না ""

বর্ণের কথা শুনে সামিরা খানিকটা ভয় পেয়ে যায়৷ 

"" ওকে ফাইন চলে যাচ্ছি ৷ তোমাকে কষ্ট করে আমাকে খুন করতে হবে না ৷ তার চেয়ে বরং রেডি হয়ে নিচে এসো তোমার জন্য সারপ্রাইজ ওয়েট করছে ৷""

সামিরা আর এক সেকেন্ড না বসে দ্রুত বর্ণের রুম ত্যাগ করে ৷ সামিরা চলে যেতে বর্ণ দরজা টা জোড়ে লাগিয়ে দিয়ে চেন্জ করে নেয়৷ 

সামিরা নেমে যাওয়ার এক ঘন্টা পর বর্ণ নিচে নেমে আসে ৷ কারন টা সারপ্রাইজ দেখার উদ্দেশ্য নয় কারন হলো সামিরার আসার আসল উদ্দ্যেশ্য জানার জন্য...

বর্ণ নিচে আসতে দেখে পুরো বাড়িতে অনেক লোকজন ৷ তারমানে যে তারা ইনভাইটেড এটা বর্ণ বুজতে পারছে কিন্তু হঠাৎ এই পার্টির এরেন্জমেন্ট কেন করলো এটা বুজতে পারছে না বর্ণ৷ তখনি আয়মান চৌধুরী মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে বলতে লাগলো "" লেডিস এন্ড জেন্টেলমান আজ আমার এক মাত্র ছেলে আয়ান চৌধুরী বর্ণের সাথে আমার বিজনেস পার্টনার মইনালের একমাত্র মেয়ে সামিরার এঙ্গেজমেন্ট আজ ...."" কথা টা বর্ণের কানে পৌছানো মাত্র বর্ণ স্তব্ধ  ৷ এদিকে সামিরার মুখে হাসি ধরছে না ৷ বর্ণের চোখ জোরা অলরেডি লাল টকটকে হয়ে গেছে ৷ আয়মান তার ছেলের রাগ জেদ কে পাত্তা না দিয়ে দুজনের হাতে রিং ধরিয়ে দিয়ে একে অন্যকে পড়িয়ে দিতে বললেন ৷ বন্যা আর মিসেস বর্ণালি দুরে দারিয়ে  দেখছে সবটা ৷ কাছে যায়নি কারন তারা এটাকে সাপোর্ট করে না ৷ বর্ণ রিং টা হাতের মাঝে নিয়ে দুমরে মুচরে ফেলতে চায়৷ হঠাৎ করে সব লাইট অফ হয়ে যায় ৷ অন্ধকারে কারো পায়ের আওয়াজ ভেশে আসে সবার কানে তখনি নীল আলো পরে বর্ণের উপর বর্ণ কিছু না বুজতে পেরে সরে যেতে নেয় তখনি আরেকটা আলো এসে পরে ছন্দের উপর , হঠাৎ ছন্দ কে পার্টিতে দেখে পার্টির সকলে রিতিমতো অবাক ৷ সামিরা ছন্দ কে দেখে চোখে মুখে ভয়ের ছাফ ফুটে উঠলো ৷ এদিকে আয়মান চৌধুরী ছন্দ কে পার্টিতে মটেও আশা করেনি ৷ ছন্দ কে দেখে ঘাবড়ে যায় আয়মান৷ সবার ভাবনা চিন্তায় ব্যাঘাত ঘটিয়ে ছন্দ বলতে লাগলো.... 

"" মিস্টার আয়মান চৌধুরী আমার বাড়িতে মিস্টার চৌধুরীর এঙ্গেজমেন্ট হচ্ছে আর আমি তা জানি না ইট'স সো ব্যাড ৷ আর আমি এই এঙ্গেজমেন্টে থাকবো না এটা কি করে সম্ভব! বাট নেভার মাইন্ড এখন তো আমি এসে গেছি ৷ এখন অনুষ্ঠান শুরু করা যাক ৷ "" 

বর্ণ ছন্দের কথা শুনে পারে তো ছন্দ কে চিবিয়ে খেয়ে ফেলে ৷ কিন্তু পরক্ষনে রাহুল কে খাইয়ে দেওয়ার দৃশ্য চোখে ভাসতে বর্ণ দাঁতে দাঁত চেপে সামিরার হাত শক্ত করে ধরে  ৷ সামিরা প্রচন্ড ব্যাথা পাচ্ছে তবুও চুপ করে আছে ৷ বর্ণ এঙ্গেজমেন্ট রিং সামিরার হাতে পরিয়ে দেয় তারপর সামিরা রিং পরিয়ে দেয় বর্ণ কে ৷ সাথে সাথে চারিদিক আলোকিত হয়ে এলো ৷ প্রত্যেকে বর্ণ সামিরা কে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে ৷ 

ছন্দ বর্ণের দিকে তাকিয়ে রহস্যময় হাসি দিয়ে সিঙ্গেল সোফায় বসে ড্রিং করতে লাগলো৷ ছন্দের এমনগা ছাড়া ভাব দেখে মটেও ভালো লাগছে না ৷ বিশেষ করে ছন্দের মুখে বাকা হাসিটা ৷ ওটা দেখলে পিলে চমকে ওঠে ৷ মনে হয় ওই হাসি দিয়ে তার ভিতর কার সবটা পড়ে নিচ্ছে ছন্দ৷ 

আয়মান বড্ড খুশি তার একটা প্লান সাকসেসফুল হয়েছে তাও তার চির শত্রু সামনে থাকা অবস্তায় ৷ বিষয় টা তার কাছে ভিষন অহংকারের ৷ 

ছন্দ কিছুক্ষন ড্রিং করে সামিরার দিকে তাকাতে দেখে সামিরার চোখ মুখ শুকিয়ে গেছে ৷ ছন্দ বেশ ইনজয় করছে কারো শুকনো মুখ দেখে আবার কারো রাগি মুখ দেখে ৷ ছন্দের হঠাৎ মনে হলো কেউ তার হাত ধরে টানছে ঘাড় ঘুড়িয়ে তাকিয়ে দেখে বন্যা......

"" আমাকে রুমে কেন নিয়ে আসলি?"(ছন্দ)

"" কেন করছিস তুই এইসব?""

"" তার কৌফত আমি নিশ্চয় তোকে দিবো না বন্যা? আর একটা কথা এভাবে হুট হাট করে আমার হাত ধরে টানাটানি করবি না ৷ ভালো হয় আমার সামনে না আসিস""

" কেন রে আমি কি করেছি ? আমাকে জন্ম ওই লোকটা দিয়েছে তারজন্য..?""

" না তার জন্য না ৷ দেখ বন্যা আমি তোকে কোন এক্সপ্লেনেশন দিবো যাস্ট এতোটুকু বলবো আমার রাস্তায় কখনো আসার চেষ্টা করিস না ৷ মুরাদের সাথে বিয়ে করে সংসার কর ৷""

"" সংসার হাহ!  যে ব্যাক্তির জন্য আমার প্রিয় মানুষ গুলো এতোগুলো মাস কষ্টে কাটালো তার সাথে সংসার অন্তত এই বন্যা করতে পারবে না ৷ একট কথা জানিস ছন্দ আমরা যখন কাউকে ভালোবাসি তখন তার সবটা নিয়ে তাকে ভালোবাসি ৷ কিন্তু তারা যখন সে তার ভালোবাসার মানুষটার ভালোবাসার অমর্যাদা করে তার-ই প্রিয় মানুষ গুলোর ক্ষতি করে ফেলে তখন কি তাকে ভালোবাসা যায় ছন্দ?""

"" নিষিদ্ধ জিনিসের উপর মানুষের কিউরিসিটি একটু বেশি থাকে এটা নিশ্চয় তুই জানিস? মানুষ ভুল করে একটা কাজ করতে পারে কিন্তু আমাদের উচিত তাকে ক্ষমা করে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনা ৷ তাকে বুঝানো৷ তাকে একটা সুযোগ দেওয়া ৷ হয়তো সে মানুষ টা না জেনে এমন একটা ভূল করে ফেলেছে৷ পাপ কে ঘৃনা করো পাপিকে নয় ৷ আমি বলবো তাকে একটা সুযোগ দে বন্যা...""

"" সুযোগ! তা নয় দিলাম কিন্তু তুই কি একটা সুযোগ ভাইয়া কে দিবি না তার ভুলটা সুদরাতে?""

"" তাকে ভুল সুদরাতে দেওয়া যায় যে তার করা ভুলের জন্য অনুতপ্ত৷ তাকে নয় অনুতপ্ত না হয়ে ভুল বুঝে তাকে মেরে ফেলতে চাওয়া৷ ""

"" মানে ! ""

"" নাথিং , আই এ্যাভ টু গো ৷ বাই"" 

ছন্দ রুম থেকে বের হতে বর্ণের মুখোমুখি হয় ৷ 

"" Congratulations মিস্টার চৌধুরী "" 

"" Thanks মিস SJ... তো মিস SJ আপনি কবে বিয়ে করছেন?""

"" খুব শীগ্রই .."" 

"" ওহ আগাম শুভেচ্ছা রইল ৷""

""ধন্যবাদ মিস্টার চৌধুরী .." 

ছন্দ বর্ণ কে এরিয়ে সামিরার সামনে গিয়ে দারায়৷ সামিরা ভিত চোখে তাকিয়ে আছে ছন্দের দিকে তখনি ছন্দ ঠোটের কোনে হাসি ফুটিয়ে সামিরা কে বলে"" Congratulations মিস সামিরা..."" 

""    Thank you Miss SJ "" 

ছন্দ সামিরাকে কিছু বলতে যাবে তখনি ছন্দের ফোনটা বেজে ওঠে ছন্দ কলটা রিসিব করে কানে ধরতে ফোনের অপাশ থেকে বলে......

"" ম্যাম ছেলেটাকে কি করবো?""

"" সব কাজ করানো শেষ?"" 

"" জ্বি ম্যাম , ছেলেটার শারিরীক অবস্তা ভালো নয় ৷ প্রচুর ঝাল খেয়ে সেন্সলেস হয়ে গেছে৷ "" 

""  ওকে আমি আসছি..""

"" জ্বি ম্যাম..."" 

ছন্দ সানগ্লাস টা চোখে পড়ে বেরিয়ে যায় ৷ বর্ণ ছন্দের চলে যাওয়ার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে নিজের রুমে চলে গেল৷ 



"" ম্যাম সি ছেলেটার এখনো সেন্স ফেরেনি৷"" 

ছন্দ রাহুল কে একটু ভালো করে দেখে মুখ লাল হয়ে আছে হয়তো অতিরিক্ত ঝাল খাওয়ার জন্য৷ ভাঙা হাতের ব্যান্ডেজ খোলা ৷ শার্ট প্যান্টের অবস্তা খারাপ৷ 

" অনিল একে হসপিটালে এডমিট করে দে৷ আর আপনি ""

"" জ্বি ম্যাম.." রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার...

"" বিল যা হয়েছে আমার পিএ সবটা ক্লিয়ার করে দিবে ৷""

"" ওকে ম্যাম..."" 

অনিল রাহুল কে হসপিটালে এডমিট করে Md কে কল করে সবটা জানায় ৷ 

"" অনিল ছেলেটা যে বেঁচে আছে এটাই ওর কপাল ৷ কুইন যে এখনোও ওকে বাচিয়ে রেখেছে আমার বিশ্বাস হচ্ছে না ৷ ""

"" রাহুলের এখন খুব বাজে অবস্তা...."" 

"" আমি হসপিটালে আসছি.." 



আয়মান চৌধুরী আর তার পাটর্নার দুজনে মিলে নিজের রুমে বসে সেলিব্রেশন করছে নিজেদের প্লান সাকসেস হওয়ার জন্য,  বন্যা নিজের রুম আটকে বসে আছে ভাইয়ের উপর রাগ করে এদিকে বর্ণ রাগে নিজের রুমে বসে ড্রিং করছে ৷ আর ছন্দের ছবির দিকে তাকিয়ে আছে৷ 

"" কেন টিয়াপাখি কেন করলে এমনটা আমার সাথে? কি অপরাধ ছিলো আমার? সেদিন যদি তুমি এমন টা না করতে তাহলে হয়তো আজ এমন পরিস্তিতি থাকতো না সবটা অন্যরকম হতো৷ "

বর্ণ নিজের ডান হাতে অনামিকা আঙ্গুলে রিং টা নজরে পরতে বর্ণ রিংটা খুলে ছুড়ে মেরে বলে৷ 

"" অনেক হয়েছে নাটক আর না তুমি এবার নিজ থেকে সবটা বলবে আমাকে ৷ আই সায়ার এখানে যদি আমার ড্যাড ইনভ্লব থাকে তাহলে তাকেও আমি ছাড়বো না৷ " 

বর্ণ নিজের ফোন টা খুজে কাউকে কল করে বলতে লাগলো...

"" হ্যালো বর্ণ বলছি ৷ একঘন্টার মধ্যে আমি তাকে আমার সামনে চাই""

"" পেয়ে যাবেন বস.."

বর্ণ আর কথা না বাড়িয়ে কল কেটে দিয়ে ড্রিং করতে লাগলো... এদিকে বন্যা দরজার আড়ালে থেকে বর্ণের সব কথা শুনে ফেলে ৷ 

"" আমাকে এখুনি সবটা ছন্দ কে জানাতে হবে ৷ আমি খুব একটা ভুল না হলে ভাইয়া ছন্দ কে কিডন্যাপ করাতে চাইছে ৷ "" 

বন্যা দ্রুত নিজের রুমে গিয়ে ছন্দ কল করতে লাগলো কিন্তু কল রিসিব হচ্ছে না দেখে বন্যা ভয়টা দ্বিগুন বেড়ে গেল৷ তার ভাই যতোটা রেগে আছে মনে হয় না এতো সহজে রাগ থেমে যাবে৷  


অন্যদিকে ছন্দ রেস্টুরেন্ট থেকে একা বেরিয়ে গাড়িতে উঠতে যাবে তখনি পাশ থেকে কেউ মুখের উপর কিছু একটা স্প্রে করে দিতে ছন্দ সেন্সলেস হয়ে যায় .....

পিট পিট করে চোখ মেলে চারিদিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে যায় ছন্দ তখনি পাশ থেকে কেউ বলে ওঠে "" গুড মরনিং টিয়াপাখি......"

"" তু,,,তুমি....." অবাক হয়ে বললো ছন্দ...

"" ইয়েস বেইব ইট'স মি ইউর হাসবেন্ট  সুইটহার্ট ...."" 

ছন্দ উঠে বসে রুমের চারিদিকে তাকিয়ে দেখে পুরো রুম টা অন্য রকম ভাবে ডেকোরেট করা ৷ অদ্ভুত টাইপ ৷ ছন্দ বর্ণের দিকে না তাকিয়ে বলতে লাগলো...

"" আমাকে এখানে নিয়ে আসার কারন কি মিস্টার চৌধুরী ?""

"" কারন তো তুমি টিয়াপাখি! ""

"" আমি! দেখুন মিস্টার চৌধুরী আপনি কি কারনে আমাকে কিডন্যাপ করে এখানে নিয়ে এসেছেন জানি না ৷ তবে কাজ টা মটেও ঠিক করেন নি৷ ""

"" এই নিয়ে না হয় পরে কথা হবে তার আগে ফ্রেস হয়ে এসো ৷ লান্চ টা দু জনে এক সাথে করবো...""

"" লান্চ মানে! ওহ মাই গড গতকাল সন্ধায় আমায় কিডন্যাপ করেছো আর এখন দুপুর তার মানে আমি এতোটা সময় অজ্ঞান ছিলাম?""

"" হাম.. ""

ছন্দ বেড থেকে নেমে ছোট জানালা থেকে পর্দা সরাতে ছন্দ হতবাক ৷ চারিদিকে পানি আর পানি৷ 

"" সুইটহার্ট এটা সুইডেনের একটা দ্বীপ দেখে বুজতেই পারছো?""

"" এর মানে আমি দেশের বাইরে?""

"" ইয়েস , "" 

ছন্দ বুজতে পারছে সে নিজে পুরোপুরি বর্ণের হাতে বন্দী ৷ এখান থেকে বের হতে গেলে মাথা ঠান্ডা রেখে কাজ করতে হবে ৷ 

ছন্দ চুপচাপ ওয়াশরুমে ঢুকে শাওয়ার নিয়ে নেয়৷ শাওয়ার নেওয়ার পর ছন্দের মনে পড়ে সে সাথে কোন কাপড় আনে নি ৷ তখনি বর্ণ দরজায় নক করে ৷ 

ছন্দ দরজা কিছুটা মেলে বলে " কি হয়েছে মিস্টার চৌধুরী ?""

দরজার ফাক গলে বর্নের হাত ভিতরে প্রবেশ করে ৷ ছন্দ বর্ণের হাতের দিকে তাকিয়ে দেখে ড্রেস হাতে ৷ ছন্দের অজান্তে তার ঠোটের কোনে এক চিলতে হাসি ফুটে ওঠে ৷ ছন্দ ড্রেস টা নিয়ে দরজা আটকে দেয় ৷ বেশ কিছুক্ষন পর চেন্জ করে বের হয়ে দেখে বর্ণ অন্য ড্রেসে ওয়াইট প্যান্ট আর আকাশি রঙের শার্ট ৷ ব্রাউন রঙের চোখ এলোমেলো চুল , চকলেট কালার ঠোট সব মিলিয়ে বর্ণ প্রচন্ড সুন্দর লাগছে ৷ ছন্দ দ্রুত তার চোখ সরিয়ে নেয়৷ 

বর্ণ ছন্দ কে আসতে দেখে মুচকি হেসে বলে " ওয়াও জান তোমার আর আমার ড্রেসের কালার সেম ৷ সাদা আর আকাশি রঙের৷ " 

ছন্দ আয়নায় নিজের দিকে তাকিয়ে দেখে সত্যি সাদা আকাশি কম্মিনেশনের ড্রেস টি বর্ণের ড্রেসের সাথে ম্যাচিং হয়ে গেছে ৷ 

বর্ণ ছন্দের পিছুন থেকে কোমড় জরিয়ে ধরে ভেজা চুলে মুখ গুজে চুলে ঘ্রান নিতে থাকে ৷ এদিকে বর্ণের স্পর্শে ছন্দ যেন ফ্রিজড ৷ বর্ণ কে দেখে মনে হচ্ছে না আদো এতো গুলো মাস তাদের মধ্যেকার দূরত্ব ছিলো? ছন্দের বার বার মনে যাচ্ছে সেই দিনটির কথা  , তার ভালোবাসার উপর বর্ণের অবিশ্বাস ধোকা৷ ছন্দ শরীলের সবটুকু শক্তি দিয়ে বর্ণ কে ধাক্কা মারে৷ বর্ণ এটার জন্য প্রস্তুত না থাকায় নিজের ব্যালেন্স রাখতে না পেরে দুরে ছিটকে পরে ৷ হাতে ব্যাথা পায় বর্ণ তারপর ও ছন্দ কে কিছু বলে না ৷ উঠে দারিয়ে শান্ত গলায় ছন্দকে বললো" এসো খেয়ে নিবে দেরি হয়ে যাচ্ছে৷ "" 

ছন্দ আর কথা বারায় না ৷ গতকাল সকালে খেয়েছিলো দুপুরে রাহুল গর্ধবটার জন্য খাওয়া হয়নি আর তারপর বর্ণের কাছে কিডন্যাপ হওয়া ৷ পেটের ভিতর অলরেডি ব্যাথা শুরু হয়ে গেছে ছন্দের তাই চুপচাপ বর্ণের কথা মেনে নিলো৷ 

লান্চ করে ছন্দ রুম থেকে বের হতে নিলে বর্ণ ছন্দ কে আটকে ফেলে৷ 

"" এই রুম থেকে তুমি কোথাও বের হতে পারবে না টিয়াপাখি ""

"" ওহ রেইলি মিস্টার চৌধুরী আপনার মনে হয় আপনি আমাকে এখানে আটকে রাখতে পারবেন?""

"" পারবো আর আমি তা করেও দেখাবো যদি না আমার করা প্রশ্নের ঠিক ঠিক উওর পাই""

"" প্রশ্ন কিসের প্রশ্ন?""

"" তুমি ড্যাড কে কেন মারতে চেয়েছিলে? আর কেন বা তুমি তোমার চাচা চাচি আর নিজের ফুফু কে মেরে ফেললে?""

ছন্দ একরাশ বিস্ময় নিয়ে বর্ণের দিকে তাকিয়ে আছে৷ এই মানুষটা আজ এতো গুলো মাস পরে এই প্রশ্ন গুলো করলো ভাবতে ছন্দের বিতৃষ্ণায় মন ভরে গেল৷ ছন্দ রাগি চোখে বর্ণের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো"" মিস্টার চৌধুরী আপনি ভাবলেন কি করে আমি আপনার এই প্রশ্ন গুলোর উওর দিবো? হাহ! আপনি যদি সেদিন এই প্রশ্ন গুলো আমাকে করতেন তাহলে আমি তার উওর দিতাম ইভেন প্রস্তত ছিলাম বাট আজ উওর গুলো আপনি পাবেন না আমার কাছে৷ যে তার ভালোবাসার উপর বিশ্বাস রাখতে পারে না ৷ তার কাছে অন্তত এই SJ কোন উওর দিবে না৷ ""

"" এটাই তোমার শেষ সিদ্ধান্ত?" ঠান্ডা গলায় বললো বর্ণ ...

"" ইয়েস মিস্টার চৌধুরী এটাই আমার শেষ সিদ্ধার্ন্ত৷"" 

"" ওকে ফাইন ৷ যতোদিন না তুমি সবটা আমাকে জানাচ্ছো ঠিক ততোদিন তুমি আমার কাছে এখানে বন্ধি থাকবে..."" 

বর্ণের কথা শুনে ছন্দ পাগলের মতো হাসতে থাকে ৷ বর্ণ কপাল কুচকে ছন্দের দিকে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করছে ছন্দের এমন হাসার কারন টা? 

ছন্দ এবার হাসি থামিয়ে রাগি কন্ঠে বর্ণকে বলতে লাগলো "" মিস্টার চৌধুরী আমাকে বন্দি করে রাখার ক্ষমতা আপনার নেই ৷ আমি আপনাকে ২৪ ঘন্টা সময় দিলাম এর ভিতর আমি আপনার বন্ধন থেকে বেরিয়ে যাবো ""

"" চেষ্টা করে দেখতে পারো ৷ " 

"" চ্যালেন্জ রইল মিস্টার চৌধুরী ""

"" চ্যালেন্জ এক্সেপ্টেড..""

বর্ণ আর কিছু না বলে ছন্দ কে রুমে আটকে রেখে বেরিয়ে যায়৷ 

"" মিহির দরজার লক যেন কেউ না খোলে ৷ আর হ্যা টাইড সিকিউরিটির ব্যাবস্তা কর ৷ টিয়াপাখি যেন কোন ভাবে এখান থেকে বের হতে না পারে""

"" ওকে বস "" 

এদিকে ছন্দ তার হাতের ব্রেজলেট টার দিকে নজর পরে ৷ ব্রেজলেটটার ছোট বাটন টা চেপে ধরে রহস্যময় হাসি দিলো ছন্দ৷ 



"" Md কুইনের লোকেশন ট্রাক করা গেছে ৷"" (অনিল)

"" কোথায় আছে কুইন?"" 

"" ম্যাম দেশের বাইরে আছে Md, আর একটু সময় প্রয়োজন তাহলে বোঝা যাবে কুইন কোন দেশে কোথায় অবস্থান করছে ৷ ""

"" গুড দ্রুত কুইন কে ট্রেস করো ৷""

"" Md আয়ান চৌধুরী যে কুইন কে কিডন্যাপ করেছে এটা শিওর কারন আয়ান চৌধুরী ও এখন দেশে নেই৷ ""

Md আর অনিলের কথার মাঝে কাব্য রাহুল এসে হাজির হয় ৷ 

"" আঙ্কেল বনুর কোন খোজ পেয়েছেন?""(কাব্য)

"" কুইন এখন দেশের বাইরে আছে একযেক্ট লোকেশন ট্রেস করা যায় নি তবে খুব শীগ্রই ট্রেস করা যাবে৷"" 

"" যা করার তারাতারি করুন আঙ্কেল রুনা কাল থেকে অসুস্থ হয়ে পরেছে বনুর নিখোজ সংবাদ শুনে৷ ""

"" ডোন্ট ওয়ারি কাব্য কাল সকালের মধ্যে কুইন রুনা মায়ের সামনে থাকবে৷"" 

Md কথা শুনে কাব্য নিশ্চিত হলো৷ এদিকে রাহুল হাসফাস করছে এটা ভেবে বর্ণের সাথে যদি তার কুইন থাকে তাহলে কুইনের মাইন্ড চেন্জ হয়ে যায়! তার সাথে থাকতে চায়? এই ভয়টা পেয়ে বসেছে রাহুলের.....



আয়মান চৌধুরী চারিদিকে লোক লাগিয়ে দিয়েছে বর্ণ আর ছন্দ কে খুজতে ৷ পুরো শহরে চিরনী তল্লাসি চালিয়েও ছন্দ বর্ণের কোন খোজ না পেয়ে আয়মান চৌধুরী রেগে ভাঙচুর শুরু করে দেয়৷ মিসেস বর্ণালি বন্যা দারিয়ে দারিয়ে দেখছে ৷ না আয়মান কে থামাচ্ছে আর না কিছু বলছে ৷ শুধু দেখে যাচ্ছে ৷ আয়মান চৌধুরীকে থামাতে মইনাল এসে হাজির হয় সাথে সামিরা৷ 

"" আরে আরে আয়মান কি করছিস টা কি?"" আয়মানের হাত ধরে বললো  মইনাল ...

"" ছাড় মইনাল আমাকে ,  সব কিছু আমি ধ্বংস করে দিবো ৷ আমার সব প্লান আমার এই ছেলে নষ্ট করে দিবে ৷ ""

"" শান্ত হো দোস্ত ৷ তোর কোন প্লান নষ্ট হবে না আমি কথা দিচ্ছি ৷ তোর প্লান মতো সবটা হবে ৷ ""

"" কি করে সম্ভব মইনাল ? বর্ণ কে এখনো কোথাও খুজে পাই নি আমি আর না ওই মেয়েটাকে , আমি শিওর বর্ণ মেয়েটাকে নিয়ে কোথাও লুকিয়ে আছে৷..""

"" আয়মান আমার কাছে একটা প্লান আছে ""

"" কি প্লান?"" 

"" বর্ণ আর ওই মেয়েটাকে খুজতে ওই মেয়ের লোকদের ফলো করবো""

"" তাতে লাভ?""

"" আরে বোকা যেখানে তোর ভাবনা চিন্তা শেষ হয় সেখান থেকে ওদের ভাবনা শুরু হয়৷ ওরা ঠিক ওই মেয়েটাকে খুজে বের করবে ৷ ""

"" বাহ দারুন আইডিয়া তো""

"" হুম এখন মাথা শান্ত করে বাকি প্লান টা শোন..""

"" হুম....."" 

আয়মান চৌধুরীকে নিয়ে মইনাল রুমে গিয়ে দরজা আটকে ফেলে৷ এতোক্ষন সামিরা বন্যা বর্নালি সবটা দেখছিলো ৷ যখন তারা রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয় তখন বন্যা সামিরার দিকে এক নজর তাকিয়ে কিচেনে চলে গেল ৷ 

সামিরা এসেছিলো বর্ণের সাথে সময় কাটাতে ৷ কিন্তু এসে এই সব দেখে বুজতে পারলো তার প্লান আর আজ কাজে লাগবে না ৷ তাই সে সারবেন্ট কে জুস দিতে বলে বর্ণের রুমে যেতে নিলে বন্যা সামিরাকে আটকে দেয়৷ 

"" পথ আটকালে কেন বন্যা..?""

"" ভাইয়ের রুমে তার অনুমতি ব্যাতিত  রুমে ঢুকা নিশেধ ৷""

"" আমি তোমার ভাইয়ের উডবি ওয়াইফ  এটা নিশ্চয় জানো?""

"" উডবি ওয়াইফ বাট ওয়াইফ হওনি এখনো ...""

"" তুমি কি আমাকে বর্ণের রুমে যেতে দিবে না?""

"" নাহ ! ""

"" ওকে ফাইন তাহলে আমি আঙ্কেল কে জানাচ্ছি""

"" এ্যাজ ইউর  ইচ্ছা সামিরা ..""

"" ওয়াট! "

"" সামিরা এখানে সিনক্রিয়েট না করে ড্রইংরুমে বসো .."" পিছুন থেকে মিসেস বর্ণালি বলে উঠলো .. মিসেস বর্ণালির কথা শুনে সামিরা আর কিছু বললো না রাগে ফোস ফোস করতে করতে ড্রইংরুমে গিয়ে বসে৷ 



পা দুলিয়ে গুন গুন করে গান গাইছে ছন্দ ৷ এতো সুন্দর প্রকৃতি দেখে কারো মন যে খারাপ থাকবে সে ইয়োতা নেই ৷ সূর্যের নরম রোদ গায়ে মেখে ছন্দের মন বেশ ফুর ফুরে ৷ গুন গুন করে গান গাইতে লাগলো ছন্দ ....  

    এতো রোদ্দুর তুই 
এনে দিলে তাই
    তোর বৃষ্টি আমি 
একটু পেতে চাই

মেঘলা হয়ে যাক 
      আর পাচঁ বারো মাস
কোন বিকেল বেলাতে
     তুই আমার হয়ে যাস ...

শুধু তুই শুধু তুই 
  আর চাইছি না কিছু ই
শুধু তুই শুধু তুই
আর চাইছি না কিছুই

মন তোর ওলিতে গলিতে ঘোরে 
  আর কুড়ায় অভিমান
এই মন তোর আকাশে বাতাসে ঘোরে 
গায় ঘুম পারানো গান

মেঘলা হয়ে যাক 
  আর পাচঁটা বারো মাস
কোন বিকেল বেলাতে 
   তুই আমার হয়ে যাস 

শুধু তুই শুধু তুই 
  আর চাইছি না কিছুই
শুধু তুই শুধু তুই 
   আর চাইছি না কিছুই...

ছন্দ গান গাইতে গাইতে অন্য কারোর উপস্তিতি অনুভব করে পিছু ঘুড়ে দেখে বর্ণ পকেটে হাত ঘুজে টেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে ছন্দের দিকে ৷ বর্ণের ঠোটের হাসি দেখে ছন্দের বুকের ভিতর কেমন যেন করে উঠলো ৷ দ্রুত চোখ সরিয়ে নেয় ছন্দ ৷ 

"" এই হাসি এই মুখ আমি দেখতে চাইনা ৷ একদম না ৷ "" বির বির করে কথা গুলো বলে শূন্য চোখে আকাশের দিকে তাকিয়ে রইল ৷ পুন্জ পুন্জ সাদা মেঘের সমারহ আকাশে ৷ পরিষ্কার সাদা পানির বুকে যেন আকাশ নেমে এলো ৷ 

হঠাৎ বর্ণ দুটো কাঁপ নিয়ে এসে ছন্দের দিকে এগিয়ে দেয়৷ 

"" কফি!""

 ছন্দ বর্ণের হাত থেকে কফিটা নিয়ে চুমুক দেয়৷ 

"" কেমন হলো কফি টা?""

"" ভালো৷ তো মিস্টার চৌধুরী হঠাৎ কফি কেন?""

"" কেন নিজের বউয়ের জন্য এতোটুকু তো করাই যায়?""

"" বউ! হাহ! মিস্টার চৌধুরী আপনি আপনার লিমিট ক্রস করবেন না ৷ আমার কারো বউ না ৷ তবে হবু বউ রাহুলের ....""

রাহুলের নাম টা শুনে বর্ণের রাগ যেন মুহূর্তে বেরে গেল৷ হাতের কফির কাঁপটা ছুড়ে মেরে ছন্দের বাহু চেপে ধরে বুকের সাথে মিশিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলতে লাগলো"" তুই শুধু আমার , শুধু আমার বউ তুই ৷ আমার ভালোবাসা তুই ৷ আর কারো না বুজতে পেরেছিস? তুই শুধু আমার বউ ৷ অন্য কাউকে বিয়ে করার শখ মিটিয়ে দিবো আজ তোর ৷.." বর্ণ প্রচন্ড রেগে ছন্দ কে ভিতরে টেনে নিয়ে যেতে নিলে ছন্দ তার হাতের কুনুই দিয়ে বর্ণের পেটে আঘাত করে ধাক্কা মারে৷ 

"" হাউ ডেয়ার ইউ মিস্টার চৌধুরী ৷ আপনার সাহস কি করে হয় আমার সাথে জোবরদস্তি করার হাহ! দুশ্চরিত্র ছিঃ ৷ আর একটা কথা কান খুলে শুনে রাখুন আমি আপনাকে আমার স্বামী হিসেবে মানি না ৷ আর না আপনি আমার ভালোবাসা ৷ আমার ভালোবাসা সে দিন শেষ হয়ে গেছে যেদিন আমার আমাকে আমার ভালোবাসা অবিশ্বাস করেছেন ৷ সে দিন আপনার প্রতি আমার সব ভালোবাসা শেষ হয়ে গেছে ৷ আর এখন আসছেন আমার প্রতি স্বামীর অধিকার আদায় করতে ৷ এমন টা ভুলেও করতে যাবেন না মিস্টার চৌধুরী ৷ আপনি যাকে ভালোবাসতেন সে মরে গেছে ৷ কান খুলে শুনে রাখুন সে মারা গেছে ৷ আপনার অবিশ্বাসে খুন করেছেন ৷"" 

বর্ণ রাগে নিজের মাথার চুল টানতে লাগলো ৷ ছন্দের প্রত্যেকটা কথা ছুড়ির মতো আঘাত করছে বর্ণের কলিজায়৷ বর্ণ সহ্য করতে না পেরে ছন্দের দিকে এগিয়ে ছন্দের গলা চেপে ধরে বলে"" দুনিয়া ধ্বংস হয়ে গেলেও তুই শুধু আমার থাকবি ৷ তুই আমাকে ভালোবাসিস আর নাই বাসিস তুই শুধু আমার থাকবি৷ ""

ছন্দের দম বন্ধ হয়ে আসছে ৷ চোখ দিয়ে পানি বেরিয়ে গেছে ৷ বর্নের হিংস্রতা বিন্দু মাত্র কমেনি ৷ হঠাৎ ছন্দের চোখ জোরা বন্ধ হয়ে আসতে বর্ন ছন্দের গলা ছেড়ে দিয়ে....
Author, Publisher & Developer

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

উফ!
মনে হচ্ছে আপনার ইন্টারনেট সংযোগে কিছু সমস্যা আছে। অনুগ্রহ করে আগে আপনার ইন্টারনেটের সংযোগ ঠিক করুন এবং তারপর আবার ব্রাউজিং শুরু করুন৷
AdBlock সনাক্ত করা হয়েছে!
আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি আপনার ব্রাউজারে অ্যাডব্লকিং প্লাগইন ব্যবহার করছেন৷ আমরা আপনাকে আপনার অ্যাডব্লকিং প্লাগইন বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করছি, কারন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমরা যে রাজস্ব আয় করি তা এই ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।