মায়াবতী (পর্ব ১০)


১৯!! 

গত সাতটা দিন মায়াকে সম্ভাব্য সব কটা জায়গায় হন্যে হয়ে খুঁজেছে রাহাত। প্রথমদিন যে গলিটায় মায়াকে নামিয়ে দিয়ে এসেছিল সেই গলিটায়ও পাগলের মতো খুঁজলো মায়াকে। কিন্তু গোটা একটা সপ্তাহ কেটে যাওয়ার পরও মায়ার দেখা পেল না। রাহাত শুধু পারছে না প্রত্যেকটা বাড়িতে গিয়ে গিয়ে মায়াকে খুঁজতে। পারলে হয়তো ছেলেটা সেটাও করতো। এখনও রাহাত মায়াকে ড্রপ করে দেয়া সেই গলিটার সামনে গাড়ি পার্ক করে বসে আছে৷ মায়া বা মিহান কাউকে যদি একটা বার দেখতে পেত! এতো মানুষের সাথে দেখা হয়, শুধু তাদের কারো সাথেই দেখা হয় না। রাহাতের প্রত্যেকটা দিন এই ছোট্ট একটা আশায় শুরু হয় যে আজ সে তার মায়াবতীর দেখা পাবে। তার কাছে ক্ষমা চেয়ে তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনবে৷ মায়াবতীটা না ফিরলেও অন্তত প্রতিদিন কাছ বা দূর থেকে একবার হলেও পাগলিটাকে দেখতে পাবে। দিনশেষে ব্যর্থ নয়ে ঘরে ফিরে রাহাত টের পায় তার আশাটা আর পূরণ হয় না। মায়াবতীকে পেতে আর কতদিন বাকি এই ভেবে নির্ঘুম রাতগুলো কাটে রাহাতের।

এসব ভাবতে ভাবতেই রাহাতের মোবাইলটা সশব্দে বেজে উঠলো। হাতে নিতেই লিজার নামটা দেখে রিসিভ করলো রাহাত। 

-হ্যাঁ লিজা--। বলো?

-স্যার? আর্জেন্ট একটা কাজ পড়ে গেছে---। একটু অফিসে আসবেন প্লিজ?

-তোমরা নিজেরা কিছু ম্যানেজ করতে পারো না কেন বলো তো? আজব! জানো আমি আমার মায়াবতীটাকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না----। তার মধ্যে এটা ওটা আর্জেন্ট বলে খোঁজায় বাগড়া দিবে তোমরা? কি পেয়েছ কি এক একজন! হ্যাঁ?

-স-সরি-সরি স্যার-। স্যার আসলেই আর্জেন্ট। একটু তাড়াতাড়ি আসুন প্লিজ-----?

-এসে যদি দেখি কিচ্ছু আর্জেন্ট না তবে তোমার চাকরি শেষ-দিহানের শেষ-সবার শেষ চাকরি আজকে--। অফিসে তালা মেরে দিবো সবাইকে দূর করে দিয়ে---। অসহ্য------।

-সরি স্যার------।

রাহাত গাড়ি ছুটিয়ে অফিসে এসে নিজের রুমে গিয়েই লিজা আর দিহানকে পেল। চেয়ারে বসেই অগ্নিদৃষ্টিতে তাকলো দুজনকের দিকে। ওরাও ঢোক গিলে চোখ নামিয়ে নিল। কপালে যে কি শনি আসতে চলেছে সেটা ভালোই টের পাচ্ছে দুজনে। ছোট্ট একটা মনের খচখচানি সিওর হওয়ার জন্য রাহাতকে এতো জরুরি তলব করে এনেছে ওরা। ব্যাপারটা সে রকম না হলে সত্যিই শনি আছে কপালে। 

-কি সমস্যা তোমাদের? আর্জেন্ট বলে আনলে আর এখন মুখে কুলুপ মেরে বসে আছো! কাহিনী কি?

-স্যার? দিহান---দিহান অফিসের এখন পর্যন্ত সব স্টাফদের সব ইনফরমেশন কম্পিউটারে সেইভ করার কাজ করছিল--। 

-হুম--। তো? ও অফিসের সিকিউরিটির ইনচার্জে আছে--। করতেই পারে---। সমস্যা কি এখানে?

-না মানে স্যার---। কাজটা করার সময় ও আপনার পি.এ এর নামের মধ্যে মায়া নামের একজনের নাম পায়-----।

-আমার মায়াবতী!

-স্যার---? আমরা আসলে ঠিক বুঝতে পারছি না উনিই ম্যাডাম কিনা--। না মানে--। লিজার কাছে শুনলাম আপনি ম্যামকে মায়াবতী নামে ডাকছিলেন--। আর পিয়ন ও নাকি ম্যামের কোন খোঁজ দিতে পারে---। তাই-- তাই আসলে স্যার আমরা একটু কনফিউশনে আছি--।

-ইয়েস----। শি ইজ ইউর ম্যাম--। আমার মায়াবতী----। ছয়মাস মেয়েটা আমার পি.এ হয়ে ছিল--। একটা ভিষণ বাজে সিকিউরিটি ইস্যু হয়েছিল--। ও নিজে থেকেই ঝামেলা বড় হওয়ার আগে রিজাইন করে দেয়---। আর সেইম সমস্যা যেন কাউকে ফেইস করতে না হয় তাই অফিসে মেয়েদের জন্য এতো টাইট সিকিউরিটির ব্যবস্থা করেছি--। 

-স্যার?

-কি হয়েছিল দয়া করে জানতে চেও না প্লিজ--। জাস্ট এটা জেনে রাখো যতটা নিরাপত্তা মেয়েটাকে দেয়ার দরকার ছিল তা আমি প্রোভাইড করতে পারি নি--। তবে ব্যাপারটায় আমার একটা সুবিধা হয়েছিল--। মায়া রিজাইন করলেও ওকে নিজের রাণী করে পেয়েছিলাম--। বাট ওকে ধরে রাখতে-----।

-সরি স্যার---। স্যার একটা কোশ্চেন ছিল----। অফিস থেকে ম্যামকে যে বাড়িটা দেয়া হয়েছে সেখানে ম্যামকে পান নি?

-নাহ---। বিয়ের সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই মায়ার মা আর ভাই বাড়িটা থেকে শিফ্ট করে আগের বাড়িতে চলে গেছে----। 

-সেখানে?

-বাড়ির ঠিকানা জানলে কি গত একটা সপ্তাহ আমি পাগলের মতো ওদের গলিটার সামনে বসে থাকি?

-স্যার---। আমি হয়তো আপনাকে ম্যামের ঠিকানাটা দিতে পারবো---।

-কি! কি করে দিহান?

-স্যার--। ম্যাম তো একটা ফরমাল ওয়েতে এখানে জব করেছিলেন--। তাই ম্যামের সিভিতে ম্যামের পারমানেন্ট আর প্রেজেন্ট এ্যাড্রেসটা থাকবে----।

-আর ইউ সিওর দিহান! প্লিজ? আমাকে মায়ার এ্যাড্রেসটা জোগাড় করো দাও প্লিজ। আমি আমার মায়াবতীকে যে করেই হোক ফিরিয়ে আনতে চাই---।

দিহান অফিসের কম্পিউটার সিস্টেম থেকে মায়ার প্রোফাইল খুলে মায়ার ঠিকানাটা রাহাতকে জানালো। রাহাতও এরিয়াটার মিল খুঁজে পেল। কোনমতে উঠে এসে দিহানকে জড়িয়ে ধরে একটু আবেগি হয়ে গেল বেচারা। মায়াকে খোঁজার এতো সহজ উপায় ওর নিজের এতো কাছে ছিল-সেটা রাহাত কল্পনাও করতে পারে নি। 

-থ্যাংকস বোথ অফ ইউ। তোমাদের এই উপকার আমি জীবনেও ভুলব না।

অফিস থেকে গাড়ি ছুটিয়ে রাহাত আবার গলিটার সামনে এলো। আস্তে আস্তে গাড়ি নিয়ে মায়ার বাসার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে রাহাত। বুকের ভেতরটা ধুকপুক করছে। বাসাটা খুঁজে পেয়ে দরজার সামনে এসে কলিংবেল চাপলো রাহাত। আর দুরুদুরু বুকে পরিচিত মুখটার দরজার ওপাশে থাকার প্রার্থনা করতে লাগলো। একটু পরেই শব্দ করে দরজাটা খুলে গেল। একজন মাঝবয়েসী মহিলা দরজা খুলে দিলেন। জুবুথুবু করে শাড়ি পড়নে। মানুষটাকে দেখে রাহাত কি রিএ্যাকশন দিবে বুঝতে পারছে না। মুখটা পরিচিত না হলেও একেবারে অপরিচিতও লাগছে না। কোথায় যেন দেখেছে উনাকে রাহাত। মনেই করতে পারছে না। মনে পড়তে গিয়েও মনে পড়ছে না রাহাতের। 

-জে? বলেন? কারে খুঁজতিসেন?

২০!! 

বয়স্ক মহিলাটাকে দরজায় দেখে রাহাত দ্রুত ভাবার চেষ্টা করছে। কোথায় দেখেছে সে এই মহিলাকে! কিছুতেই মনে পড়ছে না। স্মৃতিরা কোনভাবেই হেল্প করছে না রাহাতের। 

-জে? সাহেব? কারে খুঁজেন?

-আম? এটা মায়াদের বাসা না?

-মায়া! কুন মায়া! এই নামে এই বাসাত কেউ নাই--। আপনে ভুল বাসাত আইছেন সাহেব--।

কথাটা শেষ করেই দরজাটা ধুম করে বন্ধ করে দিল মহিলা। রাহাতও হতাশ হয়ে গাড়িতে ফিরে এলো। মায়াদের বাসা এটা না? তবে গেল কোথায় মায়া! আর কোথায় খুঁজবে সে তার মায়াকে! আরেকবার গাড়িটা পুরো গলিটায় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে মায়াকে খোঁজার চেষ্টা করলো রাহাত। ফলস্বরূপ আরেকটা বিফল দিন কাটলো ওর। মায়াকে খুঁজে তো পেলই না। যে ছোট্ট একটা আশা ছিল সেটাও হারিয়ে গেল। 

রাতে রাহাত শুয়ে শুয়ে মায়ার সাথে কাটানো প্রত্যেকটা ঘটনা ভাবছে।  তার মন বলছে মায়াটা তার আশেপাশে কোথাও আছে। হয়তো ওই মাঝবয়সী মহিলা মিথ্যে বলেছে ওকে। যদিও মহিলাটার ওকে মিথ্যে বলার কোন কারণ রাহাতের মাথায় আসছে না। তবুও মন বলছে ওই মহিলা মিথ্যে বলছে। আসলে ওটাই মায়াদের বাসা। ভাবতে ভাবতেই রাহাতের চোখ ক্লান্তিতে বুজে এলো। সারাদিনের এতো দৌঁড় ঝাপের পর শরীরে আর এক বিন্দুও শক্তি অবশিষ্ট নেই। এভাবে না খেয়ে কয়দিনই বা আর কার শক্তিতে কুলোয়!

-মায়া???

------------------------------

-মায়ায়য়য়য়য়াআআআআআআ?

-আরে? কি মুশকিল? এভাবে চেঁচাচ্ছেন কেন জনাব?

-কাছে এসো? বলছি----।

-জি না---। মা রহিমা খালাকে দিয়ে খাবার রান্না করে পাঠিয়েছে আজকে আপনার জন্য--। আমার ওদিকে মেলা কাজ পড়ে আছে-----।

-আরে! এটা কিন্তু ঠিক না মায়াবতী। সকাল সকাল এভাবে কথা শুনবে না---? আমি মানবো না এসব---। এসো বলছি?

-কি?

মায়া বিরক্ত হয়ে খাটের কাছে আসতেই রাহাত মায়াকে টেনে বিছানার শুইয়ে দিয়ে হাত দুটো চেপে ধরলো। রাহাত চোখ মেলে মায়াকে অনেকক্ষণ দেখলো। তারপর মায়ার ঘাড়ে মুখ গুঁজলো। মুখ ডুবিয়ে মায়ার ঘ্রাণ নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো।

-সরো? কি করছো?

-বাহ! এখন সরব কেন? ঘুম ছুটতে আজকে তোমাকে পেলাম না কেন? এখন শাস্তি ভোগ কর--। সারাদিন আমি এভাবে তোমার বুকে ডুব দিয়ে থাকবো--। কোথাও যাবো না---। হুহ--।

-আরে? কি করছ? পাগল হলে?

-হুম হুম--। পাগল ই হয়েছি--। না জাগিয়ে দিয়ে চলে গেলে কেন? জানো না ঘুম ভাঙতেই তোমাকে বুকে চাই আমার--। চোখ খুলে প্রথম আমার মায়াবতীর মুখটা দেখতে চাই---।

-হুহ---। মায়াবতীর মুখ দেখতে চাই না? আজ আমি মরে গেলে কালই বিয়ে করে নতুন বউ আনতে ছুটবে---। জানি জানি-----।

-কি বললা তুমি?

-ঠিকই তো--। বউ মরলে স্বামীর কি যায় আসে বলো! না মরে ধরো কোমায় চলে গেলেও আরেকটা সুন্দরী বউ নিয়ে চলে আসবে--। ছেলেদের কিছু থাক না থাক- বউ থাকা চাই ই চাই--। ঘর খালি রাখা চলবে না-----।

-মায়া?

-কি মায়া! আমি এখন ধুম করে মরে গেলে তুমিও আমাকে কবরে পাঠানোর আগে নতুন বউ ঘরে আনার ব্যবস্থা করবে- জানি না ভেবেছ?-- সবাই একই তোমরা ---।

মায়া আর কিছু বলার আগেই রাহাতের ঠোঁট দুটো মায়ার নিচের ঠোঁটটা আঁকড়ে ধরলো কামড়ে। মায়া রাহাতের এমন আচমকা স্পর্শে কেঁপে উঠে চোখ বুজে নিল। রাহাতও গভীরভাবে মায়ার ঠোঁট আঁকড়ে ভালোবাসার পরশ বুলিয়ে দিতে লাগলো। বেশ অনেকক্ষণ পর রাহাত মায়াকে থেকে সরে এসে বিছানায় গা এলিয়ে দিলো। মায়া লাজুক হেসে চোখ খুলতেই রাহাতের সাথে চোখাচোখি হলো। বিছানা থেকে উঠে পালানোর আগেই রাহাত আবার মায়াকে টেনে বুকে জাপটে ধরলো।

-কি করছো?

-উল্টাপাল্টা কথা বলে কেন আমাকে ঘাবড়ে দাও বলো তো মায়াবতী? তোমার কিছু হলে আমি নেচে নেচে বিয়ে করতে যাবো -এটা সত্যিই তোমার মনে হয়?

-সবাই তো করে-------।

-হু-----। সবাই করে বলে তোমার বরটাকেও করতে হবে? ---আমার তো তুমি আছো---সারাজীবন আছো--। তোমারও কিছু হচ্ছে না- আর আমিও বিয়ে-টিয়ে করছি না-। বোঝা গেল?

-তবুও---। কখনো মরে টরে গেলে-----।

-আবার শুরু করলে? ধ্যাত----।

-আরে?

রাহাত আর কিছু না বলে রাগ করে উঠে ওয়াশরুমে ঢুকে গেল। ফ্রেশ হয়ে ডাইনিং রুমে এসে দেখলো একজন মধ্যবয়স্ক মহিলা ঘোমটা মাথায় জবুথবু হয়ে মায়ার পাশে বসা। কে কি জানতে না চেয়ে রাহাত গাল ফুলিয়ে খাওয়ায় মন দিল। দেশি অনেক পদের রান্না রাহাতের প্লেটে। সব কিছুই চেটেপুটে খেল রাহাত। খাওয়ার মাঝে একটাও কথা বললো না। মায়াও রাহাতের দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হেসে প্লেটে এটা ওটা উঠিয়ে দিচ্ছে। খাবার শেষ হতে হাত ধুয়ে বয়স্ক মহিলার দিকে তাকালো রাহাত। 

-খালা--। মা কে বলবেন উনার হাতের রান্না অসম্ভব ভালো খেতে--। নয়তো এখানে তো তিত করলা গিলছি প্রতি সেকেন্ডে-----।

-কি যে কন সাহেব--------!

রাহাতের কথায় রহিমার খালা খিল খিল করে হেসে ফেললেন। এর মধ্যে একবার মহিলার মুখটা দেখেছে রাহাত। পরিচিত মুখটা। আর তার হাসির সাথে মায়াও হাসিতে যোগ দিয়েছে। সেই সাথে গলা ছেড়ে হাসছে রাহাতের বাবাও। সবার হাসি দেখে রাহাত নিজেও ফেললো। 

হাসতে হাসতেই ঘুমটা ছুটে গেল রাহাতের। হাসির কারণটা ২ সেকেন্ডের মধ্যে ভুলে গেলেও একটা চেহারা চোখের সামনে এখনো স্পষ্ট হয়ে ফুটে আছে রাহাতের। আর সেটা হলো রহিমা খালার। খাট থেকে প্রায় লাফ দিয়ে উঠে বসেছে রাহাত। এই মহিলাই দরজা খুলেছে। ইচ্ছে করেই মিথ্যে বলেছেন উনি। আসলে ওটাই ওর মায়াবতীর বাসা। রাহাত কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। মায়াবতীটাকে খুঁজে পেয়েছে সে। অনেক বাধা পেরিয়ে সে তার মায়াবতীকে পেয়েছে। আর কিছুক্ষণের অপেক্ষা মাত্র। কথাটা ভাবতে ভাবতেই ঘড়ির দিকে চোখ গেল রাহাতের। ঘড়িতে দুটো বাজে। 

রাত দুটো। বেশ গভীর রাত। সকালে মায়াবতীটাকে দেখতে হলে আরো চার-পাঁচ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে৷ ভাবতেই গলা শুকিয়ে এলো রাহাতের। আরো পাঁচ ঘন্টা! অসম্ভব। ছুটে গিয়ে আলমারি থেকে একটা টি শার্ট নিয়ে সেটা পড়তে পড়তে রুম থেকে বেরিয়ে এলো রাহাত। আর একটা সেকেন্ডও অপেক্ষা করা তার পক্ষে অসম্ভব। মায়াবতীকে যে তার এখনই চাই।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন