আমি কুহু!! ভাল নাম কায়নাত কুহু।। আমি সপ্তম শ্রেনীর ছাত্রী!!আমার রোল নাম্বার ৩৭!!আমি মোটেও ভাল স্টুডেন্ট নই,, তাই বলে সব কিছুতে আমার মামাতো ভাই সাথে কম্পেয়ার করতে থাকে যা মোটেও আমার পছন্দ না,,,আই হেট দিস গায়!! আমার বাসা ময়মনসিংহ বিভাগের কালিবাড়িতে।।আমি প্রিমিয়ার আইডিয়াল হাই স্কুলে পড়ি।। আজ আমাদের ক্লাসে মাসিক টেষ্ট।।তাই তাড়াহুড়ো করছি।।
কারণ আমি বরাবরই লেট লতিফ।।যেদিন মাসিক পরীক্ষা থাকে তখন এমনিতেই লেট হয় কেন জানি"" আই ডোন্ট নো""।। এই মাসিক নামটা শুনলে কেমন ঘেন্না ঘেন্না লাগে।। তারপরও না চাইতেও বলতেই হয়।।আর তার উপর যখন অংক করতে যাই সেখানেও এক!! উফ!! মাসিক বেতন,, মাসিক আয়,, মাসিক ব্যয়।। অসহ্য।।যেই নামটি বইয়ে ছাপিয়েছে তাকে মাঝে মাঝে মনে হয় যে পাছায় লাথী দিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদীতে ফেলে দেই।।হুহ!!
কথা বলতে বলতে স্কুল গেটের কাছে এসে হাজির হয়ে গেলাম তখনি লাফাতে লাফাতে ইনা এসে হাজির।।ইনা আমার ফ্রেন্ড,,ইনা ছাড়া আরো অাছে,,মিনা, টিনা, রিনা।।আমাকে ভাল করে পর্যবেক্ষণ করে হাসতে লাগলো ইনা।।বরাবরই এর হাসি আমার কাছে বিরক্তির প্রধান কারণ।।
আমি ধমক দিয়ে বললাম,,
__"" ওই এভাবে ক্যালচ্ছিস কেন""
সে হাসি থামিয়ে বলল,,
__আজ কি পড়ে এসেছিস??
__কেন স্কুল ড্রেসেই পড়েছি, বরাবরের মতো!!
ইনা তার মাথা চাপর দিয়ে বলল,,
__জুতো কি পড়েছিস??
আমি বললাম,,
__কি আর পড়বো স্কুলের জুতা।।বলে পায়ের দিক তাকালাম।।ইয়া আল্লাহ আমি জুতা পড়তে ভুলে গেছি 😖।।
ইনা হাসতে হাসতে বলল,,
__আজকে বেবি তুমি শেষ।।বলে হাত দিয়ে গলায় ইশারা করলো।।
আর আমি মনে মনে ভাবচ্ছি,,
__এতো বড় ভুল কেমনে করলাম!! আমি তো নরমাল জুতা না টয়লেটের স্যান্ডেল পড়ে আসচ্ছি।।ভাগ্যিস কেউ বুঝেনি😥😥!!এখন তো আর ফিরার সময়ও নেই কি করবো 😓।।
ভয়ে ভয়ে ক্লাসের সামনে আসলাম।।ক্লাস ওল রেডি শুরু হয়ে গেছে।।আমি ক্লাসের সামনে দাড়ালাম।।রিপন স্যার ক্লাসে ঢুকেছেন।।
আমি বললাম,,
__মে আই কাম ইন স্যার!!
স্যার বলল,,
__নো ইউ নট কামিং।।
আমি মাথা নিচু করে বললাম,,
__হোয়াই স্যার??(জানি এখনি শুরু হবে সেই ইউসুফ নামের ভাষণ!! উফ লাইফটা আমার তেজপাতা))
__আপনার জুতা কই স্কুলের।।যখন আপনার ভাই স্কুলে পড়তো কতটা ডিসিপ্লিন মেন্টেন করে চলত জানেন।।আর আপনি!!
__স্যার সরি!! তাড়াহুড়া করতে গিয়ে ভুলে গেছি 😥😥!!
__ওকে আমিও ভুলে গেছি আপনি এই ক্লাসের।।গেট আউট।।
__সরি স্যার😕
__আমিও সরি।।
__প্লিজ স্যার।।ওকে যেহেতু আপনি আমাদের শহরের মেয়রের ভাগ্নি আর সাবেক আমাদের প্রিয় স্টুডেন ইউসুফের বোন তাই আপনাকে একটু শাস্তি দিয়ে ক্লাসে ঢুকতে দিবো।।
__কি স্যার।।(মনে মনে বললাম,, শালা ইউসুফ ভুত তোর জন্য আমার লাইফ হেল হইয়া গেল তোর কথা শুন্তে শুনতে)
__মাঠে মধ্যখানে যাবেন আর ১০ বার উঠ বস করে চলে আসবেন।।যান!!
__স্যার 🤭🤭
__গো বলে জোড়ে ধমক দিলেন আমি সোজাসুজি দৌড়ে মাঠে এসে কানে ধরে উঠ বস করতে লাগলাম।।যেহেতু আমাদর স্কুলে ছেলে মেয়ে সবাই আছে।।সবাই খিল খিল করে হাসতে লাগলো।। বাট আমি মাথা নত কনে ধরে আছি কারণ এটা নতুন নয় ।।কানে ধরে উঠ বস করে যখন ক্লাসে আসবো তখনি মুহিত স্যার হাজির।।ইনিও ওই ইউসুফের ভকত😖।।
__কিরে আবার কি করেছিস তুই??
__স্যার সমস্যা হয়ে গেছে।। স্কুলের জুতা পড়তে গেছি ভুলে স্যান্ডেল পরে চলে আসচ্ছি!!🙁
স্যার বললেন,,
__মানুষ সমস্যায় পড়ে,, আর তোর পিছে সমস্যা ঘুর ঘুর করে।। তোর ইউসুফ ভাই যখন স্কুলে ছিল সবার নাম রেখেছে কত গড়ব আমাদের।।আর তুই সব ডুবাচ্ছিস।।বলে চলে গেলেন।।
এবার কান্না পাচ্ছে🥺🥺!!
_____
স্কুল ছুটির পর বাসায় আসচ্ছিলাম তখনি আমার ফ্রেন্ডরা বলতে লাগলো,,
----জানিস আজকে আমাদের ক্রাশ আসবে!!
ইনা বলল,,
----কেরে??
মিনা বলল,,
----তুই চিনিস না?
ইনা বলল
----আমি তো নতুন কেমনে চিনবো !!
----কি যে বলিস!!উনাকে টিভি খুললেই দেখা যায়।।ওই যে দেখ (সামনের পোষ্টারে দিক দেকিয়ে)তার কথাই বলছি।। আমাদের স্কুলের সভাপতি, +মেয়র + আর আমাদের কুহুর লাইপে ভিলেন ও বটে।।বলে কিটকিটেয়ে হাসতে লাগলো তারা।।
আমি সেদিকে খেয়াল না দিয়ে বললাম,,
----হুম তো কি হইছে??
ইনা বলল,,
----দোস্ত আমিও তার অনেক বড় ফেনরে।।ইশ!!! এবার সামনে থেকে দেখবো।।বিশ্বাস হচ্ছে না এত বড় মডেল আমাদের শহরের।।তাও কুহুর ভাই!!
মিনা বলল,,
----বুদ্ধু!! ইয়াং মডেল বল,, ,কত গুলো কম্পানি তাকে হায়ার করে রাখছে জানিস না?? তার উপর এত অল্প বয়সে সে কত খ্যাতি অর্জন করেছে।। চলচ্চিত্র জগত থেকে কত ওফার আসে জানিস।।
আমি বললাম,,
----হুম জানি সব জানি!! এবং আমেরিকার অনেক বড় মডেলও বটে।।তো তুই এসব কেমনে জানিস??
ইনা বলল,,
----তুই এতো কিছু জানিস আর আমাদের বলিস নি কেন?? আর তোর তো রাজ কঁপাল।। সে তোর ভাই।।আর আমি যতটুকু জানি!! তার ফেইসবুক, পেইজ, ইন্সটাতে ফোলো করা। জানিস কবে থেকে রিকু দিয়ে রাখিছি।। এখনো কনফার্ম করে না..!!
আমি বললাম,,
---কচু!! আমার এরে একদম ভাল লাগে না।।আর আমি বুঝ হবার পর এরে দেখিও নাই,,শুধু ফোটো ছাড়া।।ভাল হইছে করে নাই😂আর আমি ওরে ব্লক করে রাখচি🤣।।
----কি যাতা বলিস তুই!!
----সুত্যই বলছি এরে আমার ভাললাগেনা।।😏
সবাই থ মেরে রইল।।আমি এদের পাত্তা না দিয়ে চলে আসলাম।।ছোট থেকেই এই বেটা নাম শুনতে শুনতে আমি ফেড আপ।। যেমন,,
----কুহু দেখ ইউসুফ কত ভদ্র এর মত হও।।ইউসুফ স্কুলের ফাস্ট বয় ছিল তোকেও ওর মতো হতে হবে।।ইউসুফ ওমুক, ইউসুফ তমুক অসহ্য।।স্কুল, বাসা, বান্ধবী সবাই তার জপনী করতেই থাকে।। আর ভাল লাগে না।।🤬🤬
______♣
বাসায় আজ সবাই আনন্দে আটখানা হয়ে কাজ করে চলছে।।চারিদিকে নানা রকম খাবারের আইটেমের গন্ধে মোঁ মোঁ করছে।।আমি দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখছি।।
নানুমা এসে বলল,,
----কুহু দাড়িয়ে আছিস কেন?? যা তাড়াতাড়ি রেডি হো আমরা এখনি বের হবো।।
মামি এসে বললেন,,
-----কুহু এই ফ্রক টা পড় তোরে সেই লাগবে।।একদম বেবি ডলের মতো।।
----মামী আমরা কি কোথাও যাবো??🙄
----ভুলে গেলি!! আজ তোর ভাইয়া আসবে তো চল চল।।
----মামী আমি যামু না।।
----মারবো এক চড়!! যা রেডি হ!!
----ওকে 😕
_____♣
এয়ারপোর্টে দাঁড়িয়ে আছি।। মামার হাতে ইয়া বড় গলার মালা।।তার সাথে তার চেলাপেলার হাতেও।।আজ বুঝি এরে মালা পড়িয়েই বিদায় দিবে সবাই।।হা হা।।
প্লেন হয়তো লেন্ড করেছে সবাই এক এক করে বের হচ্ছে।। তখনি কিছু বডিগার্ড সহ তার আগমন ঘটে।।ইউসুফরে দেখে আমার চোখ চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছি।।আর মুখ দিয়ে শুধু বের হইছে,, মাশাআল্লাহ 😳😳😳😳😳😳😳!!
এতো জিনের মত সুন্দর।।
কিন্তু আমিতো জিন দেখি নাই🙄।।
হুহ!!!যাই হোক না না করতে কারতে মে ক্রাশ খা গাই😌😌।।আমি আড় চোখে দেকতে লাগিলাম তারে।।আহ্ কি নূরানি চেহেরা তার।।লাল লাল টমেটোর মত টোল পড়া গাল,, বিড়াল চোখ,,ফর্সা রং।।আহ্ পুড়াই শসা, টমেটোর মত🤤🤤।।ছবি তে কত দেখেছি কিন্তু তখন ভাল একদম লাগে নি।। বাট মানতে হবে বেটা অতি সুন্দর।।যাকে বলে ভয়ানক সুন্দর।।
তিনি এসে মামাকে জড়িয়ে ধরলেন,,সাথে সাথে সবাই মামা মালা পড়ালেন।।সাথে বাকি সবাই।।তার মাথাই দেখা যাচ্ছে না।।তা দেখে আমার হাসি পাচ্ছে।।
সবার সাথে কথা বলে আমাকে দেখে জিগাসা করলেন,,
----মা এই পুচকি টা কে??
মামী বললেন,,
----তোর ফুপুর মেয়ে!!
----ওমা কত বড় হয়ে গেছিসরে।।তোকে সেই লেংটা কালে দেখছিলাম তখন তুই খালি গায়ে,, হাফ পেন্ট পরে,, সারা এলাকা চড়ে বেড়াতিস।।আর মানুষের পিছনে তোর ছোট ছোট দাঁত দিয়ে কুটুস কুটুস কামড়াতিস।।বলে হাসতে লাগলো।।
সাথে আমাদের সদ্য সবাই হাসতে লাগলো।।
নিজের সম্পর্কে এত সুন্দর কথা শুন আমার হাসি মুখটি চুপসে গেল।।শালা খাচর কি বলে।। বেটা অসভ্য🤬🤬।।আমার নিজের উপর ঘেন্না হতে লাগলো,,ছি!!! এর উপর নাকি কিছুক্ষণ আগে ক্রাশ খেয়েছি।।হুহ।।গাটা জলে যাচ্ছে।। এর প্রতি শোধ আমি নিবই।।সবার চোখের মনি, জেন্টলম্যান,, সবার গড়বরে না ঘোল খাইয়েছি তো আমার নাম কুহু নয় হুহ!!!!
______♣♣
কখন থেকে আমার ফোন টা ঘেন ঘেন করেি যাচ্ছে আল্লাহ।।না পরে ফোনটা নিলাম স্ক্রিনে লিখা বাটপাড় নং ৭...!!! বাট এ কেন কল করে?? ভাবতে ভাবতে আবার রিং হলো।।
কল ধরতেই বলল,,
----আমার বাবুটা কি করে??
----জাহিদ ভাই!! আমি আপনার বাবু হলেতো আপনাকে বাবা ডাকতে হয়?? অবশ্য আমার অনেক শখ ইয়াং বাবার তা আজ পেয়ে গেলাম।। এখন থেকে আপনাকে আব্বা ডাকবো জাহিদ আব্বা।🐸
তিনি ভরকে গেলেন,,আর ধমকের সুরে বললেন,,।
----এই চুপ!! আমি তোর কোন মারে বিয়ে করছি যে তুই আমাকে আব্বা ডাকবি।।
-----তো কি ডাকবো?? আপনিতো বার বার বাবু ডাকেন?? আমি কি করবো আব্বা???
তিনি রাগে কল কেঁটে দিলেন।।আর আমি বেডে বসে গড়া গড়ি খাচ্ছি হাসতে হাসতে😂😂।।বেটাকে ভাল জব্দ করেছি।।
তখনি পিছন থেকে কেউ এসে আমার কান টেনে ধরে,, আর বলতে লাগে,,
----কারে আব্বা বানাচ্ছিস তুই??
----কাুকে না ভাইয়া।। প্লিজ ছাড়েন।।
___তোর ফোনটা দে আমাকে দেখি।।
----আমার ফোন আপনাকে কেন দিব?? আর আপনি আমার রুমে কি করছেন।।
----আমার বাড়ি আর আমার কাছে কৈফত চাস হুম!!
বলে জোড়ে কান মলে দিলেন তিনি।। আর আমার ফোনটা নিয়ে গট গট করে চলে গেলেন।।
আমি অবাক হয়ে রইলাম।। আসচ্ছে একদিনও হয়নি আমার হাতিয়ে নিল।।এখন আমার সব রহস্য খুলে যাবে ইয়া আল্লাহ বাঁচাও???😖😖😖
—————
ইউসুফ সোফার উপর আরাম করে বসে আছে।।তার হাতে আমার ফোন।।তার পাশেই মামা-মামী, নানুমা বসে আছেন।।আর আমি দু হাত মুচড়াই তেসি।।
আমার দিক তাকিয়ে ইউসুফ মুখ খুল্লো...!!
-----মা ওকে তোমরা এই বয়সে ফোন দিসো কেন?? মাত্রতো ক্লাস সেভেনে পড়ে??
মামী বললেন,,
-----ছোট মানুষ জিদ ধরছে তাই দিছি!!আর তাছাড়া সিম টিম তো দেই নাই।।আর শুধু ইউটিউবে কার্টুন দেখে আর গেমস খেলে।।কেন কি হইছে??
ইউসুফ বাঁকা হাসলো আমার দিকে তাকিয়ে পরে বলল,,
-----কিছু না!!
আমি সেই সুযোগে বললাম মামীকে,,
-----মামী প্লিজ দিতে বল না,, ফোনটা??
মামী বলল,,
-----কান্না করাস না তো দিয়ে দে!!
ইউসুফ আমাকে হাতে ইশারায় কাছে ডাকলো!!
আমি যেতেই বলল,,
----পাসওয়ার্ড বল!!
আমি আমতা আমতা করে বললাম,,
----পাসওয়ার্ড কেন??
ইউসুফ ফিসফিস করে বলল,,
-----বলবি নাকি সব বলে দেব??
আমি বললাম,,
-----দিমুনা!!
তিনি আবার বললেন,,
----পাসওয়ার্ড দে না হলে তোর খবর আছে।।
আমি আবার বললাম,,
----দিমুনা বললাম তো!!
উনি এবার ধমকে উঠলেন,,
-----মারবো এক চড় চাপার দাঁত যে কয়টা না পড়ছে সব পড়ে যাবে।।
আমি কাঁদো কাঁদো হয়ে বললাম,,,
-----কল দিতাছি পাসওয়ার্ড দিমু না।।
তিনি এবার চেঁচিয়ে বলতে লাগেন,,
-----তোর সাহস তো কম না,, তুই আমার মুখের উপর কথা বলিস!!! যা তুই আর ফোন পাবি না।।
আমি এবার হিচকি তুলে কেঁদে বললাম,,,
-----পাসওয়ার্ড আমি বলছি দিবেন না কেন?? আমার ফোন দেন!!!
তিনি তার ভ্রু কুঁচকে বললেন,,
-----কখন বললি?? কখন থেকেই এক কথাই জপিতেছিস দিমুনা দিমুনা!! পাসওয়ার্ড কখন বললি।।
আমি এবার কান্না থামিয়ে বললাম,,
----পাসওয়ার্ড হচ্ছে দিমুনা।।
এবার ইউসুফ থম মেরে বসে বললো সোফায়।।আর ড্যাব ড্যাব করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।।তার তাকানো দেখে ভয় করছে তাই দৌড়ে পালালাম।।
কিছুক্ষণ পর,,
কেউ আমার ঘরের দরজায় নক করল।। খুলতে ইউসুফ ঘরে ঢুকে বলল,,
-----এই নে তোর ফোন।।
বলে গট গট করে বেরিয়ে গেল।।
ফোন হাতে নিতেই আমার চোখ কঁপালে।। আমার ফোনের সিম নাই।। আমি দৌড়ে তার ঘরে গেলাম।।তিনি তয়লা কাঁধে ওয়াশরুমে ঢুকছিল।। আমাকে দেখিয়ে থামল।।
আর বলল,,
----কিছু বলবি??
আমি মাথা নাড়ালাম।।
তিনি বললেন,,
---দুই মিনিট সময় দিচ্ছি যা বলার বলে ফেলো।।
আমি কোন ভনিতা না করে ডাইরেক্ট জিজ্ঞেস করলাম,,
--- আমার সিম কই??
তিনি বললেন,,
----মা না বলল তোর ফোনে সিম নেই!!
আমি আমতা আমতা করে বললাম,,
----দেখুন ওটা আমার ২ মাসের টিফিনের টাকা জমানোর পর কিনা সিম...!!! প্লিজ দিয়ে দেন??
তিনি বুকের মাঝে দুই হাত বেঁধে বললেন,,,
-----সিম কেন চাই তোর?? আবার কারো সাথে টাংকি মারতে আব্বা বলে ডাকি!! তোর কললিস্টে ক্রাশ তো অভাব নাই!! সব কিছু কপি মাইরা রাখছি আমার কাছে।। এখন বলছেন লাগবো তাহলে আমি মাকে বলি।।
আমি রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে চলে আসলাম🤬🤬।। এখন বেশী কিছু বললে হিতে বিপরীত হবে।। দেখা যাবে আমার শখের ফোনটাও হাত ছাড়া হবে।।😥😥
রুমে এসে ফোনের লক খুলে ওয়াইফাই কানেক্ট দিয়ে ফেসবুকে ঢুকতে নিলাম ,, একি বেটা সাইকো, আমার ফেইসবুক, টিউটর, ইনস্টাগ্রাম, সবকিছুর পাসওয়ার্ড চেঞ্জ।।। কান্না পাচ্ছে🥺🥺।।
নিউ খুলবো তার কোন ওয়ে নেই।।সিম ছাড়া কেমনে ঢুকমু😭😭।।পরক্ষনেই মনে পড়ল আমার তো একটা ফেক আইডি আছে।। সাথে সাথে সেই আইডি অন করে ফেসবুকে ঢুকলাম এখন একটু শান্তি লাগতাছে।। আমার আগের আইডির পাসওয়ার্ড চেঞ্জ করে ফেলছে।। কত ছবি ছিল আমার 🙁🙁।।
শালা আমি অভিশাপ করলাম,, তোর শরীরে কিড়া পড়বে, তেলাপোকা পড়বে, মাকড়শা জাল বুনবে🤬🤬।।
________________🖤
পরেদিন,,
বাহিরে মিডিয়ারা মাথা নষ্ট করে ফেলতেছে।। তার সাথে এলাকার মানুষের ভিড় জমিয়েছে ইউসুফ সাহেবের সাথে দেখা করার জন্য।। ইউসুফ আর মামা বাহিরে মিডিয়া আর বাকি সবার সাথে কথা বলে ভিতরে চলে আসে।।
এদিকে এসব দেখে গা আমার জলে যাচ্ছে।।তাই আমার লম্বা চুলগুলো দুটো বেনি করে নিলাম ।। কাঁধে করে দড়ি লাফ নিয়ে দুলতে দুলতে বেরিয়ে গেলাম।। উদ্দেশ্য মাঠে যাব ইনা, মিনা, রিনা সাথে খেলবো।। বাহিরে যেতেই মিডিয়াগুলো আমাকে জেঁকে বসলো।।
বরাবরের মতো আমার মাথাও দুষ্টবুদ্ধি চলে এলো এবং শায়েস্তা করার জন্য একটা চাল চেলে দিলাম...!!
মিডিয়াদের মধ্য একজন বলল,,
----আম্মু তুমি মডেল ইউসুফের কি হও?
আমি দাঁত কেলিয়ে উত্তর দিলাম,,
-----সে আমার মামাতো ভাই।।
আরেক জন বলল,,
----তো তোমার ভাইয়ের সম্পর্কে কিছু বল আমরা শুনি।।
আমি হাসতে হাসতে বললাম,,
----অবশ্যই বলব কেন বলব না!!! আমার ভাই এত বড় মডেল বলে কথা!! উনার বিষয়ে আপনাদের সিক্রেট কিছু কথা বলি??
সবাই যেন মনোযোগ আমার দিকে দিল।। আর কতগুলো মাইক আমার মুখের সামনে ধরল।। আমিও শয়তানি হাসি দিয়ে শুরু করলাম বলা।।
-----জানেন আপনাদের মডেল সাহেব অনেক ভাল!! কিন্তু উনি ৭ দিন পর পর গোসল করে,, মাসে একবারও দাঁত মাজে না।। যখন ঘুমায় তখন মুখ দিয়ে লালা পড়তে থাকে।।
আমার কথা শুনে কলরব সৃষ্টি হল।।
সবাই এ কথা সে কথা বলাবলি করতে লাগল।। তারপর সবাই বলল তারপর তারপর...!!
আমি হালকা একটু কেশে গলা টা পরিষ্কার করে নিয়ে আবার বললাম,,
-----জানেন উনি না তেলাপোকার খায়,, কেঁচো খায়,, যত যত পচা খাবার আছে সব খায়।
এভাবে আরো বানিয়ে বানিয়ে অনেক কিছু বলে সেখান থেকে ছুটে চলে গেলাম।।
এদিকে ইউসুফ টিভিতে লাইভ দেখতে পেল ইউসুফের নামে এত কিছু ফালতু কথা কুহু বলছে।।ইউসুফের রাগ উঠে গেল চিল্লি এককে ডাকতে লাগলো।। মামা মামি এসব দেখে বলতে লাগে,,
----ছোট মানুষ!! দুষ্টমি করে বলে ফলছে।। দাড়া আমি এই নিউজ বন্ধ করতেছি।। ভিডিওর মানুষগুলো কেমন ছোট মানুষদের কাছ থেকে যা শুনচ্ছে তা টিভিতে দেখাচ্ছে আজিব সব।।
-----আমার ক্যারিয়ার নষ্ট করে দিয়েছে তোমার ভাগ্নি!! আর তুমি দুষ্টামি বলতেছো!! ওরে আমি ছাড়বো না।। বলে রুমে চলে গেল ইউসুফ।।
ইউসুফের রুমে গিয়ে দেখি ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আছে।।আর বারবার নিজের চুল টানতে সে রাগে!!
আমি বললাম,,
----কি হইছে ভাইয়া??আপনি কি কোন কারনে চিন্তিত??
তিনি বললেন,,
----তুই আমার ঘুম হারাম করে দিছিস!!
আমি এবার তার পিছনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বললাম,,
-----আপনি আমার সিম হাতিয়ে নিছেন আমি আপনার ঘুম হাতিয়ে নিয়েছি।। হিসাব বরাবর।।
তিনি আমার দিকে রাগান্বিত দৃষ্টিতে তাকালেন,,,
----তবে রে দাঁড়া!!
আমারে আর পায় কে, আমি এক দৌড়ে রুমে চলে গেলাম।।গিয়ে দরজা আটকে দিলাম।। না জানি আবার কি করে😣।।