অস্পষ্ট প্রেমাবেগ - পর্ব ১৪ - সুলতানা পারভীন - ধারাবাহিক গল্প


২৭!! 

প্রায় ছয় সাত মিনিট চলার পর গাড়িটা থামালো কিশোর। তারপর এসে হাত ধরে প্রথমে দীপ্তিকে নামালো আর পরে তামান্নাকে। তামান্নার চোখ বাঁধা। তাই বুঝতে পারছে না কোথায় এনেছে কিশোর ওদেরকে। এদিকে ও কিশোরের একটা হাত আলতো করে ধরে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। আর অন্য হাতটায় দীপ্তির ছোট্ট কোমল হাতটা ধরা। এ যেন কোন এক স্বর্গীয় অনুভূতি তামান্নার কাছে। ঠিক এই মূহুর্তে তামান্নার মনে হচ্ছে ওর পৃথিবীর সবচেয়ে সুখি আর পরিপূর্ণ একজন নারী। যার জীবনে না পাওয়ার কোন বেদনা নেই, আছে শুধু স্বামী সন্তানের অফুরন্ত ভালোবাসা। এসব ভেবে তামান্নার ঠোঁটের কোণে মিষ্টি একটা হাসি ফুটে উঠেছে। আর কিশোর সেটাই দেখছে দু চোখ ভরে। এই হাসিটা এভাবে এতো সহজে ফিরিয়ে আনা যাবে জানলে সে কিছুতেই ঢাকায় যেতো না কখনোই।

মিনিট কয়েক হাঁটার পর কিশোর আর দীপ্তি দুজনেই প্রায় একই সাথে তামান্নার হাতটা ছেড়ে দিলো। তামান্না একটু ঘাবড়ে গিয়ে একটু হাতড়ালো এদিক ওদিক। কিন্তু কিশোর বা দীপ্তি কারোরই নাগাল পেল না। আধো তারা সামনে আছে কিনা সেটাও বুঝতে পারলো না মেয়েটা। 

-কিশোর? দীপু? কোথায় আপনারা? দীপু? কিশোর?

কারো কোন জবাব এলো না। শেষে আর থাকতে না পেরে তামান্না চোখে বাঁধা কাপড়টা খুলে ফেলে একেবারে হতবাক হয়ে গেল। এই মূহুর্তে তামান্না দাঁড়িয়ে আছে দীপশিখার একটা বড় অডিটোরিয়াম টাইপের খোলামেলা ঘরে। আর দীপশিখা অনাথ আশ্রমের ছোট বড় আশ্রিত সব কজন শিশু তামান্নাকে ঘিরে গোল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু তামান্নার চোখ সেদিকে না। ওর চোখ মানব বৃত্তের ভিতরে হাঁটু গেড়ে একটা গোলাপ হাতে বসা কিশোরের দিকে। কিশোরের পাশেই দাঁড়ানো দীপ্তি। তামান্না একবার কিশোরকে দেখছে আর একবার দীপ্তিকে, আর একবার আশেপাশের কৌতূহলী জনতাকে। কিশোর ঠিক কি করতে চাইছে সেটা তামান্নার মাথায় ঢুকছে না। কিশোর এবার ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটিয়ে হাতের গোলাপটা তামান্নার দিকে বাড়িয়ে দিলো।

-তমা? কি এক অস্পষ্ট ভালোবাসার বাঁধনে আমাকে তুমি বেঁধেছ আমি জানি না। তবে এই বাঁধনে আজীবন,  আমৃত্যু তোমার পাশে থাকতে চাই। তমা? অতীতের সমস্ত তিক্ত স্মৃতি ভুলে নতুন একটা জীবন শুরু করতে চাই। তুমি কি এই নতুন পথচলার আজীবনের সঙ্গী হবে? অসীম শূন্যতা থেকে বের হতে হাতটা বাড়িয়ে দিয়েছি তোমার দিকে। তুমি হাতটা ধরে আমাকে আলোর পথে আনবে? আমার অস্পষ্ট প্রেমাবেগের স্পষ্টতা হবে প্লিজ? তুমি কি আমার হবে তমা? প্লিজ?

তামান্না হতভম্ব হয়ে কিশোরের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। হাত বাড়িয়ে যে কিশোরের হাতে ধরা গোলাপটা নিবে সেটারই শক্তি পাচ্ছে না তামান্না। কিছু বলা তো পরের কথা। কিশোর যে ওকে ভালোবাসা নিবেদন  করলো, ওরা যে আজ দীপশিখায় এসেছে সবটাই তামান্নার কাছে স্বপ্ন বলে মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে ঘুমের মাঝে পাশ ফিরলেই এই সুন্দর স্বপ্নটা হারিয়ে যাবে, মিলিয়ে যাবে অতল আঁধারে। কিন্তু তামান্নার খুব ইচ্ছে করছে বহুবছর ধরে এই সুন্দর স্বপ্নটা দেখতে। তাই মেয়েটা একেবারে স্ট্যাচুর মতো থ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পাছে না ওর এই সুন্দর স্বপ্নটা ভেঙে যায়।

কিশোরের কথাটা শেষ হওয়ার বড় জোর দুই মিনিটের মাথায় তামান্নার মাথার উপর থেকে ছোট্ট একটা শব্দ হয়ে অনেকগুলো জরি কাগজ এসে তামান্না আর কিশোরের গায়ে মাথায় ছিটিয়ে পড়লো। আর সেই শব্দে তামান্নার হুঁশ হলো। আসলে ব্যাপারটা স্বপ্নে দেখছে না। ঘটনাটা বাস্তবেই ঘটছে। কিশোরের চোখে চোখ পড়তেই তামান্নার খেয়াল হলো মানুষটা কাতর চোখে ওর দিকেই তাকিয়ে আছে। তামান্না তাড়াতাড়ি একটু এগিয়ে এসে কিশোরের হাতে ধরা গোলাপটা নিজের হাতে নিয়ে এক হাতে আলতো করে টেনে কিশোরকে তোলার চেষ্টা করলো। কিশোর নিজেই উঠে দাঁড়িয়ে তামান্নার দিকে তাকিয়ে একবার হাসলো। তারপর এক পা এগিয়ে এসে তামান্নার কপালে চুমো খেল ছোট্ট করে।

-হ্যাপি বার্থডে তমা। উইশ ইউ মেনি মেনি হ্যাপি রিটার্নস অব দা ডে।

-এসব কি? আমি কিছুই বুঝতে পারছি না---।

দীপ্তিও কিশোরের পিছন থেকে বেরিয়ে এসে তামান্নার দিকে একটা গোলাপের কলি এগিয়ে দেয়। তামান্না কলিটা ওর কাছ থেকে নিতেই দীপ্তি তামান্নাকে জাপটে ধরে।

-হ্যাপি বাড্ডে মামনি---।

-থ্যাংক ইউ দীপুসোনা---।

তামান্না খেয়াল করলো দীপশিখার সব কয়জন বাচ্চাই হাতে ফুল নিয়ে তামান্নার চারপাশে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে। তামান্না ওদের দিকে তাকাতেই সবগুলো বাচ্চাকাচ্চা ছুটে এসে তামান্নাকে একটা একটা করে ফুল দিতে লাগলো। সবার ফুল দেয়া শেষ হলে তামান্না হাত ভর্তি ফুল নিয়ে হাসছে। কিশোর একমনে ওকে দেখছে খেয়াল হতেই তামান্নাও কিশোরকে ইশারায় দেখালো ফুলগুলো।

-এসব কি হলো?

-ভাবলাম আমার তো এতো ডেইট মনে টনে থাকে না৷ তাই দুইদিন আলাদা আলাদা পালন করার চেয়ে একই ডেইটে নিয়ে আসি---।

-হুম?

-এই যে তোমার বার্থডে, আর প্রপোজ ডে---। তুমি কিন্তু আনসার দাও নি--। আজ মাঝরাতের আগে আমার আনসার চাই কিন্তু ম্যাডাম-।

তামান্না লজ্জায় লাল হয়ে ব্যাপারটা এড়িয়ে যাওয়ার জন্য অন্য কথা শুরু করলো।

-আপনি কি করে জানলেন আজ আমার বার্থডে?! আপনি তো---।

-হুম--৷ ঢাকায় ছিলাম। ম্যাডাম কল করে জানালেন সবটা--। যে আপনি প্রতি বছর এই দিনটা আশ্রমে সবার সাথে কাটান। এই বছর তাহলে বাদ যাবে কেন?

-আমার একদমই খেয়াল ছিল না-।

-তাই তো দুটো দিন এক করে দিলাম---।

তামান্না একবার লজ্জায় লাল টুকটুকে মুখটা নামিয়ে নিতেই কিশোর তামান্নার মুখের সামনে তুড়ি বাজালো। 

-এখানে এভাবে লজ্জায় লাল হয়ে আমাকে পাগল করো না প্লিজ। বাসায় গিয়ে যত ইচ্ছে লজ্জা পেও। আমি মানা করবো না ----।

-কিসব বলছেন?

-আপাতত লজ্জা বাদ দিয়ে কেক কাটতে চলুন ম্যাডাম---। বাচ্চাগুলো তোমার জন্য সেই কখন থেকে না খেয়ে এতো ডেকোরেশন করেছে---।

-আপনি এসবও জানতেন?

-জানবো না কেন!? এখন তাড়াতাড়ি করো। আজ তুমি নিজ হাতে ওদের খাবার খাওয়াবে-। সব ব্যবস্থা হয়ে গেছে--। শুধু তোমার অপেক্ষা---।

তামান্না একেবারে অবাক হয়ে কিশোরের দিকে তাকিয়ে কথাগুলো শুনছিল। কিশোর তামান্নার থতমত মুখটা দেখে হাত ধরে টেনে এক পাশের রাখা টেবিলের সামনে এনে দাঁড় করিয়ে দিয়ে হাতে কেক কাটার ছুরি ধরিয়ে দিলো। তবুও তামান্নার হেলদোল নেই দেখে কিশোর এগিয়ে এসে তামান্নার হাতটা ধরলো। আর সাথে সাথে দীপ্তিও কোথা থেকে এসে তামান্নার আর কিশোরের মাঝখানে এসে হাত ধরলো। তারপর তিনজনে মিলে কেকটা কাটলো। কেক কাটা শেষ হলে কিশোর তামান্নাকে আর দীপ্তিকে একটু কেক খাইয়ে দিয়ে বাকি সবাইকে এক টুকরো করে কেক দেয়া শুরু করলো। আর তামান্না দীপ্তির হাত ধরে দাঁড়িয়ে সব দেখছে। আর অবাক হয়ে ভাবছ।  জীবনটা যেন স্বপ্নের চেয়েও সুন্দর।

২৮!! 

দীপশিখার সবাইকে কেক আর মিষ্টি দেয়া শেষ হলে কিশোর তামান্না আর দীপ্তির কাছে ফিরে এলো। তামান্নার দিকে তাকিয়ে একটু হাসলো কিশোর।

-তমা? চলো তোমাকে সবার খাওয়ার ব্যাপারটা বুঝিয়ে দেই--। তারপর আমি একটু বের হবো--।

-কোথায় যাবেন?

-একটা কাজ বাকি রয়ে গেছে আমার। কাজটা শেষ হলেই ফিরে আসবো---।

-যেতেই হবে?

কিশোর কিছু না বলে আবার একটু হেসে দীপ্তির দিকে তাকালো।

-দীপু? বাবাইয়ের সাথে যাবে তুমি?

-উঁহু---৷ আমি মামনির কাছেই থাকবো--।

-আচ্ছা--। আসছি তমা--। তাড়াতাড়ি আসার চেষ্টা করবো--।

তমা কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না। মানুষটা চলে যাচ্ছে দেখে তামান্নার একটু ভালো লাগছে না। বুকের ভিতরে কেমন একটা কু গাইছে যেন। মনে হচ্ছে উনি যদি আর ওকে ফিরিয়ে নিতে না আসে! কিশোর তামান্নার চিন্তিত মুখের দিকে একটু তাকিয়ে থেকে এগিয়ে এসে তামান্নার কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিলো। তামান্না একটু লজ্জা পেয়ে মুখ নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলো। কিশোর দীপ্তিকেও একবার আদর করে দিল। তারপর আবার তামান্নার লজ্জা রাঙা মুখটার দিকে তাকালো।

-আমি তাড়াতাড়ি ফেরার চেষ্টা করবো। দেরি হলেও টেনশন করো না পাগলি-। আসছি--। 

-সাবধানে যাবেন---।

-হুম।

কিশোর তামান্নাকে খাবারের ব্যবস্থাটা বুঝিয়ে দিয়ে বেরিয়ে এলো দীপশিখা থেকে। ওর ফিরতে দেরি হলে তামান্না আর দীপ্তি দুজনকেই খেয়ে নিতে বললো কিশোর। তামান্নাও সবার খাবারের কি ব্যবস্থা হচ্ছে সেসব দেখতে লাগলো। কাজের ফাঁকেও মনটা কিশোরের ফেরাট জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো তামান্নার। মানুষটা কোথায় গেছে, কখন ফিরবে কিছুই জানে না। অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিইবা করার আছে ওর! আর এদিকে দীপ্তি দীপশিখার বাচ্চাদের সাথে একবার একটা নিয়ে দুষ্টুমিতে মেতেছে। এতোগুলো খেলার সাথী পেয়ে মেয়েটা আজ অনেক খুশি।

কিশোরের ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। ওকে দেখেই তামান্নার চোখ জোড়ায় খুশির ঝিলিক দেখা দিলো যেন। দুপুরে একটু মনমরা হয়েই সবাইকে নিজ হাতে খাবার বেড়ে দিয়েছে তামান্না। দীপ্তিকেও খাইয়ে দিয়েছে। নিজে অনিচ্ছা সত্ত্বেও একটু খেয়েছে। কিশোর যে ওর জন্য দীপশিখার সবার জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেছে। সেই খাবার একটু হলেও তো খাওয়া চাই তামান্নার। নইলে কিশোরের মন খারাপ করবে না? খাওয়া দাওয়া পর্ব শেষ হলে দীপশিখার ৫০ জন বাচ্চা, বড়আপা, অন্য আপারা, পিয়ন, আয়া, সবাই মিলে তামান্নার সাথে এটা ওটা নিয়ে গল্প করছে। কখনো দুষ্টুমি করে কিশোরের পাগলামি ভরা ভালোবাসার কথা বলে হাসাহাসি করছে। আর তাদের কথায় তামান্না লজ্জায় লাল হয়ে শুধু অপেক্ষা করছে কিশোরের ফেরার। 

কিশোরের গাড়ির হর্নের আওয়াজ শুনে তামান্না দীপশিখার গেইটে ছুটে এসেছিল৷ এসেই কিশোরের হাতে অনেক জিনিসপত্র ধরা দেখে তামান্না এগিয়ে এসে কিছু জিনিস নিজে নিলো। কিশোর একবার তামান্নাকে দেখে হেসে আবার কাজে মন দিলো। আরো কতোগুলো ব্যাগ হাতে নিয়ে দারোয়ানকে কিছু একটা বলে তামান্নার সাথে দীপশিখার হলরুমটার দিকে পা বাড়ালো কিশোর।

-আপনি লাঞ্চ করেন নি? মুখটা কেমন শুকনো লাগছে?

-নাহ। সময় পাই নি---। 

-খাবার নিই তাহলে আমি---।

-একটু করে নাও--। সন্ধ্যা হয়ে গেছে। বেশি খাওয়া যাবে না--।

-আচ্ছা--। 

-তোমরা খেয়েছ?

-হুম--। 

-গুড। আমি খেয়ে নিচ্ছি--। তুমি এই জিনিসগুলো বাচ্চাদেরকে দিয়ে দাও---। 

-কি এগুলো?

-নিজেই দেখো--।

কিশোর ঠোঁটের কোণে একটা হাসি ফুটিয়ে চলে যেতেই তামান্না ভ্রু কুঁচকে একটা ব্যাগ খুললো। আর ব্যাগ খুলেই একেবারে হা হয়ে গেল তামান্না। অনেকগুলো নতুন জামায় ভরা ব্যাগটা৷ তামান্না অবাক হয়ে প্রত্যেকটা জামা ধরে ধরে দেখছে। বেশ ভালোই দাম হবে জামাগুলোর। কিন্তু এতোগুলো নতুন জামা আনার কি দরকার ছিল লোকটার সেইটাই তামান্না বুঝতে পারছে না। তামান্না একমনে এসব ভাবছিল এর মধ্যেই কিশোর খেয়ে ফিরে এলো।

-ও হ্যালো ম্যাডাম? আপনাকে বলেছিলাম বাচ্চাদেরকে জিনিসগুলো দিতে--। আপনি এমন হা করে কি ভাবছেন?

-এসব কি?

-এতোক্ষণ দেখেও বুঝতে পারলে না? হায় রে! বাচ্চাদের জন্য নতুন জামা---।

-এতো সব কেন করছেন?

-কি করলাম!! বাচ্চারা নতুন জামা পেয়ে নিশ্চয়ই খুশিই হবে---। তাই আনলাম। কেন কোন সমস্যা? ওদের পছন্দ হবে না?

-পছন্দ হবে না কেন? সুন্দর ড্রেসগুলো। কিন্তু দামও নিশ্চয়ই অনেক---।

-আপনাকে কি দাম নিয়ে কেউ ভাবতে বলেছে? আমার ইচ্ছে হয়েছে আমি ওদেরকে গিফট করছি--। হাজার হোক ওদের একটা মাত্র দুলাভাই--।

----------------------

-কি সমস্যা তোমার আমি তো সেটাই বুঝলাম না--। কি হয়েছে হ্যাঁ?

-ওদের আজকে এতো ভালোমন্দ খাবারের ব্যবস্থা করলেন দুপুরে। এখন দামি পোশাক--। কেন করছেন এমনটা?

-করছি এরা সবাই আমার বউটাকে ভিষণ ভালোবাসে। আর আমার বউটাও ওদের ভিষণ ভালোবাসে। তাই আমি একটু ওদের দায়িত্ব নেয়ার চেষ্টা করছি--।

কিশোরের বলা কথাটা তামান্নার ভিতরে একটা আলোড়ন তৈরি করলো। বউ শব্দটা কিশোরের মুখে শুনে এতো ভালো লাগছো তামান্নার যে ও কি বলবে খুঁজেই পাচ্ছে না। 

-হ্যালো ম্যাডাম? আবার কি ভাবতে বসলেন? আরো জিনিস আসছে-। আপাতত এখনই এতো ভাবতে বসবেন না---।

-কি আসছে?

-সেটা তো বলা যাবে না এখন। সারপ্রাইজ---।

-আরে!! আচ্ছা?  আপনি যে এতো কিছু করছেন সোলেমান শেখ কিছু বলছে না? উনাকে না জানিয়ে বাচ্চাদের এসব দিলে পরে যদি বাচ্চাদের উপরে অত্যাচার করে শয়তানটা?

-সেসব নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না। চলুন। আপাতত এখনকার মতো কাজটা শেষ করি---।

-এতো রহস্য করছেন কেন? আশ্চর্য তো!

-চলো?

তামান্না এবার বিরক্তই হলো একটু। লোকটা কিসব কান্ড করছে তার আগামাথা কিছুও বুঝতে পারছে না ও। আর লোকটা সারপ্রাইজের উপরে সারপ্রাইজ দিচ্ছে তামান্নাকে। একটু বললে কি এমন হয়! হুহ। তামান্না এসব ভাবছে আর কিশোরের বাচ্চাদেরকে নতুন জামা বিতরণ করা দেখছে। বাচ্চারা নিজের পছন্দ মতো জামা নিচ্ছে। দীপ্তিও কিশোরের সাথে জামা দিচ্ছে ওদেরকে। বাচ্চাদেরকে নতুন জামা বিতরণ করা হয়ে গেলে আরো বেশ কয়েকজন লোক হাতে বড় সাইজের বক্স নিয়ে হলরুমে আসা শুরু করলো। বেশ অনেকগুলো বড় বড় বক্স হলরুমটার মাঝখানে জমা করে লোকগুলো চলে গেছে। আর তামান্না ভ্রু কুঁচকে কিশোরকে দেখছে আর ভাবছে এই বক্সগুলোর মধ্যে কি থাকতে পারে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন