রাত দের-টায় ছন্দ রেডি হয়ে পিছুনের দরজা দিয়ে বের হতে যাবে তখনি ছন্দ দেখতে পায় ওর-ই মতো সাজে একজন ব্যাক্তি দরজার পাশে দারিয়ে আছে আর মুন্নি লোকটার সাথে খুব চাপা স্বরে কথা বলে যাচ্ছে ৷ ছন্দ দরজার পিছুনে লুকিয়ে পড়ে ওদের দেখার আগে...
"" কাজটা যতো তারাতারি সম্ভব করে ফেল নাহলে তোর মা বোনের কি অবস্তা হবে বুজতে পারছিস তো?"(অজানা ব্যাক্তি )
"" হ আমি জানি আপনেরা আমারে ছাড়বেন না যতো দিন না আপনাগো কাজ কইরা দি ৷ কিন্তু বিশ্বাস করেন আমি ছন্দ আপার কোন ক্ষতি করতে পারুম না ওনার মতো মানুষ হয় না ৷ আমাকে কত্তো ভালোবাসে কন!"
"" এই এখানে থেমে যা মুন্নি তুই ভুলে যাচ্ছিস তোকে আমি একটা কাজ দিয়েছি যদি কাজ টা না পারিস তাহলে তোর মা বোনদের মরতে হবে আমার হাতে...""
"" না আমার মা বইনগো কিছু কইরেন না আমি আমি আপনার সব কথা শুনমু""
"" গুড গার্ল এখন ভিতরে গিয়ে ঘুমিয়ে পর বাকি কাজ কাল করবে ""
"" আচ্ছা" মুন্নির কথা শেষ হতে সেই মাক্স পড়া ব্যাক্তিটা উধাও হয়ে গেল ৷ মুন্নি কে ভিতরে আসতে দেখে ছন্দ অন্য জায়গায় লুকিয়ে পরে বাড়ির সব লাইট অফ থাকায় লুকাতে ছন্দের কোন অসুবিধা হয় না ৷ মুন্নি দরজা আটকে চলে যেতে ছন্দ ধিরে ধিরে দরজা খুলে বেরিয়ে পরে সে ব্যাক্তি কে খুজতে থাকে কিন্তু কোন ভাবে সেই ব্যাক্তি কে খুজে পায় না ছন্দ৷ ছন্দ কাউকে না পেয়ে অনিলের দিকে যেতে লাগলো ৷ অনিল ছন্দ কে দেখে গাড়ির দরজা খুলে দেয় ছন্দ ভিতরে গিয়ে বসে৷
"" কুইন আগে কোথায় যাবেন Rk কে শেষ করতে নাকি যার ইনফরমেশন কালেক্ট করতে বলেছিলেন তার কাছে ?"
"" এড্রেস ফোন নাম্বার সব জোগার করা হয়ে গেছে?"
""একদম কুইন এই দেখুন তার পুরো লাইফ হিস্ট্রি এই ফাইলে আছে৷""
ফাইলটা ছন্দের হাতে দিয়ে গাড়ি স্টার্ট দেয় অনিল.... ছন্দ পুরো ফাইলটার দিকে চোখ বুলিয়ে বির বির করে বলতে লাগলো" আ'ম কামিং মিসেস সাগরিকা বিশ্বাস৷"
দুটো দশে ছন্দ অনিল মিসেস সাগরিকার বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থামায়...
"" কুইন এতো রাতে যাওয়াটা কি ঠিক হবে ? হয়তো আপনাকে এই বেশে দেখে ভয় পেয়ে যেতে পারে ৷ ভালো হয় আপনি কাল সকালে ওনার সাথে দেখা করেন৷""
"" হুম ঠিক বলেছো তাহলে দেরি কেন চলো আজ RK জীবনের শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করার সময় এসে গেছে ৷ গাড়ি স্টার্ট দেও"
"" শিওর কুইন""
অনিল গাড়ি ইউট্রার্ন নিয়ে তাদের সেই সিকরেট প্লেসে চলে আসে ৷ চারিদিক ঘন অন্ধকার এক বিন্দু আলোর দেখা নেই ৷ এতোটাই অন্ধকার যে সামনের মানুষ টাকে পর্যন্ত দেখা যায় না ৷ ছন্দ সেই অন্ধকারে ভিতরে প্রবেশ করতে চারিদিক আলোকিত হয়ে গেল ৷ প্রত্যেকে দারিয়ে ছন্দ কে স্বাগতম জানাতে লাগলো৷ ছন্দ ভিতরে তার বাবার রাজকীয় শিংহাসনে বসে পায়ের উপর পা তুলে ৷ তখনি এক জন ব্যাক্তি ছন্দের দিকে এগিয়ে সামনে হাটু গেরে বসে হাতে থাকা একটা খাম ছন্দের দিকে এগিয়ে দেয় ৷ ছন্দ খাম টা হতে নেওয়ার পর লোকটা উঠে সাইডে দারালো...
"" কুইন এই খামের ভিতর আড়াই কোটি টাকার...""
"" তাহলে এটা আমাকে কেন দিলেন Md ?""
"" কারন এই টাকা টা আপনার কাছে থাকবে যখন আপনার প্রয়োজন হবে আপনি টাকাটা খরচ করতে পারবেন ইভেন কিং মানে আপনার বাবার সব একাউন্টের টাকা আপনার একাউন্টে ট্রান্সেফার করে দেওয়া হয়েছে৷ ""
"" এটা কেন করলেন Md? এটার তো কোন প্রয়োজন ছিলো না""
"" ছিলো কুইন টাকার লোভ বড় লোভ বলা যায় না কার আবার এই টাকার উপর লোভ করে বেইমানি করে""
"" যখন কেউ বেইমানি করবে তখন সে দিন তার জীবনের অন্তিম দিন হবে Md "
"" গুড এটাই তোমার থেকে আমি এসপেক্ট করছিলাম...""
"" আমি এখন টর্চার সেলে যাবো Md"
" বুজতে পেরেছি আজ Rk জীবনের অন্তিম সময় ঘনিয়ে এসেছে তাই তো?" ছন্দ কিছু বললো না মুচকি হাসি দিয়ে সিরি দিয়ে পাতাল ঘরে চলে গেল৷
Rk অরফে রেহান খানের অবস্তা দিনকে দিন ভিষন খারাপ হচ্ছে ৷ কাটা হাতে পচন শুরু হয়ে গেছে অলরেডি ৷ হাতের যন্ত্রণায় বেশিক্ষন সময় বেহুস পরে থাকে রেহান ৷ ছন্দ ভিতরে ঢুকতে অন্ধকার রুমে আলো জ্বলে উঠলো ৷ চোখে আলো পড়তে চোখ মুখ কুচকে ধিরে ধিরে চোখ মেলে তাকিয়ে চমকে যায় রেহান তার চোখের সামনে দারিয়ে থাকা মানুষ টাকে দেখে যাকে মেরে ফেলেছে ভেবে শান্তিতে ছিলো এতো বছর ..
"" হ্যালো মিস্টার রেহান খান সর্ট করে Rk অরফে সাদিক কোন নামে ডাকবো তোকে?"" চেয়ারে বসতে বসতে বললো ছন্দ...
"" তু,,তু,,তুমি বে,,চে আছো হাউ ইজ ইট পসিবেল? তোমাকে তো সে দিন মেরে ফেলেছিলাম""
"" কিন্তু মরিনি কারন আল্লাহ যাকে বাচিয়ে রাখে তাকে কেউ মারতে পারে না তোর মত নরপিশাচ তো নয়-ই""
রেহান ছন্দের দিকে তাকিয়ে দেখতে লাগলো গত তিন বছরে ছন্দের পরিবর্তন ৷ আগের থেকে আরো সুন্দরী হয়ে গেছে ছন্দ ৷ রেহান এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ছন্দের দিকে ছন্দ বুজতে পেরে মরিচের গুড়ো ছুড়ে মারে রেহানের দিকে মরিচের গুড়ো চোখে পড়তে জ্বলতে লাগে চোখ জোড়া ৷ মরিচের গুড়ো রেহানের কাটা হাতে কিছুটা পরে যায় ৷ রেহান পাগলের মতো চিৎকার করতে থাকে ৷ ছন্দ অনিলের দিকে ইশারা করতে ড্রাম ভর্তি বরফ পানি রেহানের শরীলে ঢালতে থাকে ৷ এতো ঠান্ডা পানি যে রেহান মুহূর্তে যেন বরফে পরিনত হলো৷
ছন্দ দেরি না করে রেহানে অন্য হাতটা কেটে দেয়৷ অনিল রেহানের শরীরের কাপড় টেনে খুলে দিয়ে একটা বোয়ম নিয়ে আসে ছন্দের আদেশে বোয়মের ভিতরে থাকা লাল বড় বিশ্বাক্ত পিপড়া গুলো রেহানের শরীলে ছেড়ে দেয়৷ ক্ষুদার্থ পিপড়া গুলো মাংশের সাদ পেতে রেহান কে কামড়াতে লাগলো ৷ অনিল ছন্দের কথা মতো রেহানের প্যান্টের ভিতর বাকি পিপড়া ঢুকিয়ে দেয়৷ রেহান অর্ধমৃত অবস্তায় ছটপট করতে থাকে ৷
"" আমার বাবা যতোটা কষ্ট দিয়ে মেরেছিস তার দ্বিগুণ কষ্ট আমি তোকে দিবো রেহান খান ৷ মরার জন্য ভিক্কা করবি আমার কাছে কিন্তু মরতে পারবি না ৷ সব কিছুর হিসেব আজ আমি তোর থেকে নিবো... খুব সখ না মেয়েদের কে বেডে নেওয়ার হাহ.. অনিল ওর এমন অবস্তা কর যেন বাচ্চা জন্ম দেওয়ার মতো ক্ষমতা ওর না থাকে ...""
"" ইয়েস কুইন ..."" অনিল ছন্দের কথা মতো ধাড়ালো একটা নাইফ নিয়ে রেহানের দিকে এগিয়ে যেতে রেহান গড়িয়ে গড়িয়ে সরে যেতে লাগলো ৷ এক দিকে দুটো হাত কাটা পরেছে অন্য দিকে শরীল বিষের মতো ব্যাথা পিপড়া গুলো যেন ওর শরীল ফুটো করে ভিতরে ঢুকে গেছে ৷ এখন অনিলের হাতে নাইফ দেখে রেহানের পিলে চমকে গেছে ৷ অনিল বাকি দুজন গার্ড কে ডাকতে তারা এসে হাজির হয় হাতে গ্লোবস পরে ৷
"" ধর সালা কে আজ ওর ইয়েটা কেটে দিবো..""
"" একদম, এ-ই তুই ওর পা দুটো চেপে ধর আমি মাথা টা চেপে ধরছি ৷ বাল সালা কে ধরতেও ঘৃনা করছে দেখ হাত দিয়ে পোকা বের হচ্ছে ৷""
""যেমন কর্ম তেমন ফল বুজতে পেরেছিস ৷ ধর সালা কে.."" দুজন গার্ড রেহানের পা আর মাথা চেপে ধরে অনিল সে সময়ে রেহানের গোপনাঙ্গ কেটে ফেলে ৷""
"" কুইন কাজ শেষ ..""
"" গুড যাও ফ্রেস হয়ে আসো আমি বের হবো আর এটাকে এখানে রেখ মরার আগ পর্যন্ত ""
"" ওকে কুইন..""
ছন্দ রেহানের দিকে থু থু ফেলে টর্চার সেল থেকে বেরিয়ে এসে চোখে মুখে পানি দেয়৷ জীবনে প্রথম বার কারো শরীলে আঘাত করলো ছন্দ ৷
"" শুধু আঘাত নয় এই সব জানোয়ারদের আমি নিজের হাতে শেষ করবো এখন থেকে ৷ আমাকে দূর্বল হলে চলবে না ৷ আমাকে শক্ত হতে হবে নিজের বাবা মায়ের খুনের বদলা আর বিশ্বাসঘাতকার শাস্তি দিতে হবে...""
" হ্যা কুইন তোমাকে লোহার মতো শক্ত হতে হবে ৷ পাথরের মতো মন কে শক্ত করতে হবে নাহলে তুমি তোমার বাবার চেয়ারে বসার যোগ্যতা কখনোই অর্জন করবে না৷""
"" Md আমি আমার বাবার উত্তরাধিকারী ৷ আমাকে যে পারতে হবে সব অন্যায়কে শেষ করতে নতুন এক ছন্দ জন্ম নিবে এবার যার মনে নর পিচাশদের জন্য থাকবে না কোন মায়া না ভালোবাসা তাদের কে মৃত্যুর দোয়ারে পৌছে দিবে তোমাদের ডার্ক কুইন ""
"" দ্যাটস লাইক আ কুইন , তুমি এগিয়ে যাও যখনি নিজেকে একা মনে করবে পিছুনে তাকিয়ে দেখবে তোমার সেনারা প্রত্যেকে তোমার সাথে আছে৷ তোমাকে সাপোর্ট দিবে এগিয়ে যাওয়ার....""
"" থ্যাঙ্কিউ Md "
""""ওয়েলকাম , আজ আমি গাড়ি ড্রাইব করে তোমাকে পৌছে দিবো""
ছন্দ মিষ্টি করে হেসে মাথা নরিয়ে " হ্যা " বলে...
"" তাহলে দেরি কেন চলো যাওয়া যাক...""
"" হামম ...."
______________________________________
৭১
পরের দিন সকালে ছন্দ বর্ণ কে ফোন করে বর্ণ ফোনে ছন্দের নম্বর দেখে মিটিং থেকে বেরিয়ে এসে কল রিসিব করে....
"" এই মিস্টার দুরে গিয়ে তো একদম আমাকে ভুলে গেছেন ছন্দ নামে যে কেউ আপনার জীবনে এক্সিট করে সেটা তো আমার মনে হচ্ছে না"" অভিমানি গলায়
"" আমার টিয়াপাখি টা বুঝি খুব বেশি অভিমান করেছে আমার উপর?" ফোনের অপাশে নিরবতা.. বর্ণ আবার বলতে লাগলো.
" আমি আজকেই ব্যাক করছি টিয়াপাখি ৷ আমি আসছি আমার জানের সকল অভিমান ভালোবাসা দিয়ে মুছে দিবো টিয়াপাখি ""
" থাক আর মিথ্যে ভালোবাসা দেখাতে হবে না আপনাকে আপনি থাকুন আপনার বিজনেস নিয়ে .." বলে খট করে কল ডিসকানেক্ট করে দিলো ৷ বর্ণ কয়েক বার কল দিলো কিন্তু রিসিব হয়নি৷
"" আমি খুব তারাতারি আসছি টিয়াপাখি আজ আমি আর কোন বাধা কোন নিশেধ মানবো না আমার ভালোবাসার চাদরে তোমায় মুরিয়ে নিবো" কথা গুলো বলে মুচকি হেসে মিটিং রুমে ঢুকে পরে বর্ণ.....
_____________________________________
কায়রা গতকাল থেকে নিজেকে রুমে বন্দি করে ফেলে কিয়ারা বেগম শতপ্রশ্ন করলেও কোন উওর আসে না কায়রার থেকে ৷ কিয়ারা বেগম ছন্দ কে দেখে বলতে লাগলো" ছন্দ দেখ না তোর খালামনির কি হয়েছে গতকাল থেকে একটা দানাও মুখে তুলেনি আর এখনো কিছু খাচ্ছে না কি করবো বল তো?""
"" আম্মু তুমি টেবিলে খাবার বারো আমি খালামনি কে নিয়ে আসছি..""
"" দেখ পারিস কিনা গতকাল রোদের লাশ দেখার পর থেকে কেমন অদ্ভুত আচরন করছে৷ এখন তুই দেখ কি করবি""
"" অদ্ভুত আচরন তো করবেই নিজের একমাত্র সন্তানের লাশ দেখে কোন মা খেতে পারে তার গলা দিয়ে খাবার নামে? "" কথা গুলো মনে মনে বলতে বলতে গেস্ট রুমের দিকে হাটতে লাগলো...
ছন্দ দুবার দরজায় নক করেও যখন কায়রা দরজা খুললো না তখন ছন্দ আবার দরজায় নক করে বলতে লাগলো " খালামনি আমি ছন্দ দরজা খোল..." ছন্দ নামটা শুনার সাথে সাথে দরজাটা খুলে যায়৷ ছন্দ বাকা হাসি দিয়ে রুমের ভিতরে ঢুকে বিছানার উপর বসে পায়ের উপর পা তুলে....
"" কি চাও তুমি কেন আমাকে বিরক্ত করছো ছন্দ?"" চিৎকার করে বললো কায়রা ...
"" গলার আওয়াজ নিচে রেখে কথা বলুন মিসেস আহাম্মেদ .. নাহলে না আপনার ওই মুখ থাকবে না আওয়াজ বুজতে পেরেছেন?""
ছন্দের কথা শুনে কায়রা কিছুটা ভয় পেয়ে যায় ৷ ইতোমধ্যে ছন্দের যে রুপ দেখেছে এর পর বুজতে আর বাকি নেই যে তার স্বামী সাব্বির আহাম্মেদ এর থেকেও ভয়ঙ্কর এই মেয়েটি....
"" শুনুন এখানে আমি আপনার ভাষন শুনতে আসিনি আমার সাথে নিচে চলুন আর নাস্তা করুন ""
ছন্দ কথাটা বলে রুম থেকে বের হতে নিলে কায়রা বলতে লাগলো" তুমি কি মানুষ একজন সন্তান হারা মায়ের সাথে তুমি এভাবে কথা বলছো একটু কি দয়ামায়া অবশিষ্ট নেই তোমার মাঝে?" ছন্দ যেতে যেতে কায়রার কথা শুনে ঘাড় বাকিয়ে কায়রার দিকে তাকিয়ে ধিরে ধিরে কায়রার দিকে এগিয়ে কায়রার গলা চেপে ধরে ... "" কি যেন বলছিলি একজন সন্তানহারা মায়ের সাথে কি করে এভাবে কথা বলছি রাইট! তাহলে শোন তোদের মতো জানোয়ার যারা সামান্য সম্পত্তির লোভে একটা মেয়ে এতিম করে দিতে পারে ৷ আবার সেই এতিম মেয়ের ভালো মানুষির সুযোগ নিয়ে একটা নোংরা খুনির হাতে তুলে দিতে বাধে না সামান্য তম দয়ামায়া দেখায় না ৷ সে মেয়েটি কেন তাদের দুয়া মায়া দেখাবে মিসেস আহাম্মেদ ?"" কথা গুলো বলে ধাক্কা মেরে কায়রা কে ফেলে দিয়ে সরে এসে দরজার কাছে এসে দারিয়ে বলে " দু মিনিটের মধ্যে আপনাকে আমি ডাইনিং টেবিলে দেখতে চাই মিসেস আহাম্মেদ...নাহলে ..."" কথা অসম্পূর্ণ রেখে নিচে চলে গেল ছন্দ...
কায়রা কাশতে কাশতে পাশে টেবিলে গ্লাসে পানি দেখতে পেয়ে দ্রুত পানিটা খেয়ে নিয়ে দ্রুত রুম থেকে বের হয়ে নিচে ডাইনিং টেবিলে চলে আসে৷ কায়রাকে নিচে দেখে ছন্দ বাকা হেসে নিজের রুমে গিয়ে রেডি হয়ে বেরিয়ে যায়৷
আগের মতো আগে রিকশা চড়ে তারপর অটো নিয়ে পৌছে যায় সেই ঠিকানায়৷ ছন্দ দরজায় কাছে এসে কলিং বেল বাজায় পাচঁ মিনিট পর একটা অল্প বয়সি ছেলে এসে দরজা খুলে দেয়৷
"" কাকে চাই?""
"" আমি মিসেস সাগরিকা বিশ্বাসের সাথে দেখা করতে এসেছি""
"" ওহ আচ্ছা ভিতরে আসুন ম্যাডাম বাড়িতে আছে""
ছন্দ ভিতরে ঢুকতে একজন মহিলার গলার আওয়াজ শুনতে পেল ছন্দ..
"" কে এলো কামাল?"(সাগরিকা বিশ্বাস)
—
"" আপনার নাম টা কি ?"
"" সুবহা জাহান ছন্দ ..:"
"" আচ্ছা আসুন আমার সাথে.." কামাল ছন্দ কে নিয়ে ভিতরে ড্রইং রুমে প্রবেশ করে ৷ মিসেস সাগরিকা পেপার পড়ায় ব্যাস্ত থাকায় ছন্দ কে খেয়াল করেনি তখনি ছন্দ বলে ওঠে.."" ফুফি...!""
৭২
ফুফি ডাক টা শুনে সাগরিকা বিশ্বাস পেপার রেখে দরজার দিকে তাকায়... ছন্দ কে দেখে উঠে দারায় সাগরিকা ...
"" কে তুমি? আমাকে কেন ফুফি বলে ডাকছো তুমি?""(সাগরিকা)
"" কারন তুমি আমার অন এন্ড অনলি ফুফি তাই আমি তোমাকে ফুফি বলে ডাকছি৷""
সাগরিকা বিশ্বাস এবার চোখের চশমাটা খুলে শাড়ির আচল দিয়ে কাচ পরিষ্কার করে চোখে দিয়ে ছন্দের দিকে তাকিয়ে আছে...
"" সে মুখের আদল , সেই মুখ তার মানে তুমি কি আমার ..."
"" হ্যা ফুফি আমি ভাইয়ের মেয়ে আমি...""
"" আফাজ ভাই আর শৌহিনি ভাবির মেয়ে তুমি কিন্তু কি করে সম্ভব ?" কথা গুলো বলতে বলতে চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে এলো সাগরিকার....
"" হ্যা ফুফি আমি তোমার আফাজ ভাইয়ের মেয়ে ছন্দ বেঁচে আছি আমি""
সাগরিকা আর এক মুহূর্ত দেরি না করে ছন্দ কে জরিয়ে ধরে কাদঁতে লাগলো... " আমার সোনা মা বেঁচে আছে ৷ আমি বিশ্বাস করতে পারছি না ৷ ওই জানোয়ার তোকে যে বাচিয়ে রেখেছে এটা আমার ধারনায় ছিলো না৷ ওই জানোয়ারটার থেকে আমি পালিয়ে এসেছে শুধু মাত্র আমার একমাত্র মেয়ে কে বাচাতে ৷ "
"" ফুফি ফুফা কোথায়?" ফুফার কথা জ্বিগাসা করতে সাগরিকা বিশ্বাস কেদে ফেলে ৷
"" নেই তাকে সাব্বির মেরে ফেলেছে সেদিন..."
"" ফুফি আমাকে প্লিজ সবটা খুলে বলো আমাকে সব টা জানতে হবে....""
"" আমি জানি না তুই তোর বাবার (আফাজ) অন্য রুপটার কথা জানতি কিনা! তবে আজ বলছি তোর বাবা সাধারন কেউ ছিলো না আফাজ ভাই আন্ডারওয়ার্ল্ডের মাফিয়া ছিলো৷ আড়ালে থেকে পুলিশদের সাহায্য করতো ৷ আইন যাদের শাস্তি দিতে পারতো না তোর বাবা তাদের নিজের হাতে শাস্তি দিতেন৷ কিন্তু তোর বাবা আস্তিনের সাপ পেলেছিলো সেই সাপ তোর বাবার পিট পিছে ছুড়ি মারে ৷ সাব্বিরের হাতে হাত মিলিয়ে৷ সেই রাতে যখন ভাই ভাবি কে গ্যাস সিলিল্ডার ব্লাস্ট করিয়ে মেরে ফেলা হয় সেদিন আমি তোর ফুফা ছুটে যাই ভাই ভাবি কে বাচাতে তখনি জানতে পারি ওদের নোংরা পরিকল্পনা ৷ ভাইয়ের বিশ্বস্ত লোক ভাই কে মেরে ফেলে ক্ষমতার লোভে ৷ আমি আমির ওদের বাধা দিতে নিলে আমির কে আমার সামনে খুন করে ওই সাব্বির ৷ ভাই হয়ে নিজের বোন কে বিধবা করে দেয় ৷ আমাকেও খুন করতে চেয়েছিলো কিন্তু আমি পালিয়ে আসি শুধু মাত্র আমার মেয়ের টার জন্য ৷ আমি পারি নি ভাই ভাবি কে বাচাতে সোনা মা পারি নি ৷ ""
চোখের পানি মুছে সাগরিকা বিশ্বাস আবার বলতে লাগলো.."" আমি সেদিন আমার মেয়েটাকে নিয়ে পালিয়ে যাই ৷ অন্য শহরে সেখানে ছোট্ট একটা চাকড়ি করে মা মেয়ের চলে যেত৷ ওখানে সাহনাজ নামের একটা মেয়ের সাথে দেখা হয়৷ এতিম ছিলো মেয়েটা ৷ আমরা একি বয়সি হওয়ায় ভালো বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে ৷ কিন্তু হঠাৎ একদিন একটা গাড়ি এক্সিডেন্টে ও মারা যায় ৷ তারপর ওর সব সম্পত্তি আমি দেখা শুনা করি ৷ এটা অবশ্য ওরই ইচ্ছে ছিলো ৷ ওদের পারিবারিক উকিল এসে আমাকে সব টা বুঝিয়ে দেয়৷ তারপর আমি ওখানে মেয়ে কে নিয়ে থাকতে শুরু করি ৷ দু মাস হলো আমি এই শহরে ফিরে এসেছি৷ ""
"" বনু কোথায়?""
"" সায়মা , সায়মা ওর রুমে, কামাল তোর আপাকে ডেকে আন বল আমি ডাকছি..."
"" জ্বি ম্যাডাম""
"" সোনা মা তোকে আমার কিছু দেওয়ার আছে ৷ তুই একটু বস আমি এখুনি আসছি"" সাগরিকা দ্রুত রুমে গিয়ে কাবার্ডের লকার থেকে একটা ফাইল বের করে নিয়ে আসে...
"" এই নে এটাতে আফাজ ভাইয়ের সমস্থ সম্পত্তির দলিল আছে ৷ এতো দিন আমি আগলে রেখেছিলাম আজ থেকে আমি দ্বায়িত্ব মুক্ত হলাম""
"" নাহ ফুফি আজ থেকে তোমার আরো দ্বায়িত্ব বাড়লো কারন তোমার একটা মেয়ে না দুটো মেয়ে ..."" ছন্দের কথার মাঝে সায়মা এসে হাজির হয়৷ ছন্দ তার ছোট বোনটাকে দেখছে ৷ ধবধবে সাদা গায়ের রঙ ৷ ব্রাউন কালার চুল ৷ বড় বড় চোখ ৷ আগের থেকে বেশ মিস্টি দেখতে ৷
"" মাম্মা ডেকেছো আমায়?"" (সায়মা)
"" হ্যা মা দেখ কে এসেছে তোমার সাথে দেখা করতে..." সায়মা খেয়াল করে ছন্দ কে ৷ সায়মা এক দৃষ্টিতে ছন্দের দিকে তাকিয়ে ছুটে গিয়ে ছন্দ কে জরিয়ে ধরে বলতে লাগলো " আই নো তুমি আমার আপু আমার ছন্দ আপু রাইট?""
ছন্দ অবাক হয়ে জানতে চাইলো " তুমি কি করে জানলে সায়মা আমি তোমার আপু...?"
" ওহ কামওন আপু আমি তোমাকে ছোট বেলা থেকে দেখে আসছি মাঝে কিছু বছর তোমার সাথে দেখা হয়নি কিন্তু তাতে কি আমি তোমায় ভূলে গেছি? ""
"" পাকা বুড়ি আয় বুকে আয় .."" ছন্দ সায়মা টাইট একটা হাগ করে সাগরিকার দিকে এগিয়ে এসে বলে"" ফুফি পেপারস গুলো এখন তোমার কাছে থাকুক সময় হলে আমি তোমার থেকে নিয়ে নিবো ৷ কিন্তু তার আগে একটা কাজ আছে ৷ তুমি আর সায়মা আমার সাথে যাবে এখানে আর থাকবে না ৷ ""
"" কোথায় যাবো আমরা?"
"" তোমার ভাইয়ের বাড়ি""
"" অসম্ভব আমি ওই জানোয়ারটার বাড়িতে পা রাখবো না""
"" আহা ফুফি আমার সব কথা না শুনে রিয়েক্ট করছো কেন?"
"" আচ্ছা বল""
"" তুমি তোমার ভাই আফাজের বাড়ি থাকবে বুজতে পেরেছো"
"" কিন্তু সে বাড়িতো পুড়ে.." বাকিটা বলার আগে ছন্দ বললো " বাবার ওই একটা বাড়ি আছে এমন তো না আরো চারটা বাড়ি আছে যেখানে দুটো বাড়ির খোজ ওই লোকটা জানে না ৷ তুমি ওখানে থাকবে ৷ আজ সব কিছু প্যাক করে নেও কাল আমি তোমাদের নিতে আসবো""
"" ঠিক আছে কিন্তু তুই কি এখনি চলে যাবি ?""
"" হ্যা ফুফি আমাকে যেতে হবে কারন আমাকে যে অনেক কাজ করতে হবে "
"" আপু তুমি যেও না আমাদের সাথে থেকে যাও না"
" থাকবো বনু তোমাদের সাথে থাকবো কিন্তু আজ না ৷ পথের কাটা গুলো এক এক করে উপরে ফেলি তারপর নাহলে যে তোমাদের বিপদ হবে...""
"" কথা দিচ্ছো তো আপু তুমি আমাদের সাথে থাকবে?""
"" হুম কথা দিচ্ছি... ফুফি আমাকে এখুনি বের হতে হবে তোমরা সাবধানে থেকো আল্লাহ হাফেজ ""
সাগরিকা বিশ্বাস ছন্দের কপালে চুমু দিয়ে বলল"" তুই ও সাবধানে থাকবি ""
ছন্দ তার ফুফির বাড়ি থেকে বের হয়ে রিকসার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে তখনি কেউ পিছুন থেকে ছন্দের মুখ চেপে ধরে ছন্দ কে সেন্সলেস করে সাদা মাইক্রো তে তুলে নিয়ে যায়.....
_______________________________
৭৩
"" কাব্য একরার বাইরে আয় তো তোর সাথে আমার কথা আছে ""(সাব্বির আহাম্মেদ )
কাব্য রুনাকে মেডেসিন দিচ্ছিলো তখনি সাব্বিরের গলা পেয়ে কাব্য কিছুটা বিরক্ত হয়ে বলল" আসছি আব্বু"
" জান তুমি মেডেসিন টা খেয়ে রেস্ট করো আমি আব্বুর সাথে কথা বলে আসছি....""
"" হুম..""
কাব্য বাইরে এসে দেখে তার বাবা এখনো বাইরে দারিয়ে আছে..কাব্য কে দেখে সাব্বির আহাম্মেদ বলতে লাগলো " Rk কোন খবর জানিস তুই?"
"" নাহ আমি Rk খবর জানবো কি করে?""
"" আমি অনেক বার কল করেও Rk কোন খবর পাইনি ৷ ""
" Rk কে কেন প্রয়োজন তোমার? "
"" পাগলের মতো কথা বলিস না ডাইমন্ড সাপ্লাইয়ের দু কোটি টাকার ভাগ আমরা পাবো ৷ সে টাকা এখনো হাতে পাই নি"
"" Rk পিএ কি যেন নাম এপেক কে ফোন করো নাহলে আনিস কে ফোন করে জেনে নেও কোথায় Rk""
"" প্রত্যেকের ফোন বন্ধ ইভেন Rk বাড়িটা পুরো খালি ৷ কোন মানুষের চিন্হ নেই ওখানে৷ ""
"" আমি এই বিষয় কিছু বলতে পারবো না আব্বু তুমি অন্য ভাবে খোজ করো ৷ ""
"" অকর্মা ছেলে সব কাজ এই বুড়ো কে দিয়ে না করালে চলছে না তাই না ? " রাগে ফুসতে ফুসতে চলে গেল সাব্বির আহাম্মেদ ...
কিয়ারা বেগম দুদিন ধরে কেমন যেন অস্বাভাবিক আচরন করছে ৷ বেশ খুশি খুশি লাগছে ওনার কিন্তু কেন এটা কাউকে বলছে না ৷ রুনা কয়েকবার তার শাশুড়ীকে জ্বিগাসা করলে প্রত্ততরে হাসি দিয়ে চলে গেছে৷ রুনা কিছুই বুজতে পারছে না আর না এ বাড়িতে কি চলছে ভিতরে ভিতরে তা বুজতে৷
______________________________________
চোখ মেলে পিট পিট করে চারিদিক তাকিয়ে উঠে বসে ছন্দ ৷ চারিদিক খেয়াল করে দেখে ছন্দ অবাক কারন পুরো দেয়ালে জুরে শুধু ওর ছবি ৷ এভাবে নিজের ছবি দেয়ালে টাঙানো দেখে ছন্দ রিতি মতো ক্ষেপে গেছে ৷
" কার এতো বড় সাহস যে আমাকে এখানে তুলে আনে৷ আর আমার ছবি বা এখানে কেন ? নিশ্চয় কোন ঘাপলা আছে ৷ কিন্তু কে আমাকে কিডন্যাপ করলো? " ছন্দ বির বির করে কথা গুলো বলতে বলতে কারো পায়ের আওয়াজ পেয়ে ঘাড় ঘুরে তাকিয়ে চমকে যায় ছন্দ.....
"" ঘুম ভাঙলো আমার জানপাখির " টেডি স্মাইল দিতে দিতে ছন্দের দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো আমান....
"" হাউ ডেয়ার ইউ মিস্টার আমান খান ৷আমাকে এখানে তুলে আনার সাহস কি করে হয় আপনার..?"
"" ওহ মাই ডিয়ার আমার সাহস সম্পর্কে তোমার কোন ধারনা নেই ৷ এই আমান খান ঠিক কি কি করতে পারে তা তোমাকে হাতে কলমে দেখিয়ে দিবো বাট তার আগে তোমাকে যে এই ড্রেস গুলো পড়তে হবে৷ " ছন্দ আমানের হাতে লাল রঙের বেনারসী শাড়ী আর কিছু অর্নামেন্টস দেখতে পেল...
"" এগুলো আমি পড়বো কেন ? " কপাল কুচকে জ্বিগাসা করলো ছন্দ...
"" কারন আজ আমরা বিয়ে করবো তারপর অস্ট্রোলিয়া চলে যাবো...""
আমানের কথা শুনে অট্টহাসিতে ফেটে পরে ছন্দ ৷
"" কি কি বললে বিয়ে তাও তোমাকে ? দুজন খুনি রেপিস্ট কালো বাজারির ভাই কে আমি বিয়ে করবো লাইক সিরিয়াসলি ?""
"" যাস্ট শ্যাটয়াপ জানপাখি ৷ তোমার জায়গায় অন্য কেউ হলে এতোক্ষনে তার লাশ ফেলে দিতাম বাট তোমাকে ভালোবাসি বিধায় এখনো তোমায় কিছু বলেনি...""
"" ওহ গড আমি তো ভয় পেয়ে গেছি আমান ৷ কি হবে এখন ? ভয়ার্থ মুখ করে আবার হাসতে লাগলো ছন্দ .. ছন্দের মুখের এই হাসি যেন আমানের পছন্দ হলো না ৷ হাতের শাড়ি অর্নামেন্টস গুলো বিছানা ছুড়ে মেরে ছন্দের চুলের মুঠি চেপে ধরে দাঁতে দাঁত চেপে বলতে লাগলো"" খুব হাসি পাচ্ছে তাই না ?হেসে নে কিছুক্ষন পর যখন আমার হয়ে যাবি তখন তোর এই দেমাক আমি কি ভাবে ভেঙে দি শুধু দেখিস৷ ""
"" রেইলি তো আমার বর্ণ কি তোকে ছেড়ে দিবে ভেবেছিস? তোকে চিড়ে ফেলে দিবে ৷ যদি ও ঘুনাখরে জানতে পারে...""
"" তোর বর্ণ আমার কিচ্ছু করতে পারবে না কারন তার আগে আমি তোমাকে বিয়ে করে নিবো তারপর বর্ণ কে শেষ করে দিবো৷ ""
"" পারবে না আমান কারন বর্ণ তোর ভাইয়ের মতো তোকেও মেরে ফেলবে যদি জানতে পারি তুই আমাকে টার্চ করেছিস ৷ বিয়ের কথা তো বাদ-ই দিলাম ৷ ""
আমান ছন্দ কে ছেড়ে দিয়ে হাতে তালি দিতে দুজন মেয়ে রুমে এসে হাজির হয়৷
"" ওকে সাজিয়ে নিয়ে আয় এক ঘন্টার ভিতর""
"" জ্বি স্যার.."" আমান রুম থেকে বের হয়ে বাইরে থেকে দরজা লক করে দিয়ে যায়৷ ছন্দ আসে পাশে তাকিয়ে ওর পার্স টা খুজছে ৷ পেয়েও যায়৷ ছন্দ পার্স থেকে ফোন বের করে বর্ণের নম্বরে ডায়াল করতে গিয়ে থেমে যায়৷
"" এই চুনুপুটি আমান কে তো আমি শেষ করতে পারি তাহলে বর্ণ কে কেন ফোন করছি আমি হুয়াই ম্যান..!" ছন্দ ফোন পার্সে রেখে লাল বেনারসি শাড়িটা নিয়ে ওয়াসরুমে ঢুকে যায় ৷ মেয়ে দুটো ছন্দের কান্ড দেখছিলো এতোক্ষন ছন্দ বের করে কাউকে কল করতে দেখে ভেবে ছিলো কারো কাছে সাহায্য চাইবে আর ওদের কাছে সাহায্য চাইলে ওরা সাহয্য করবে কিন্তু ছন্দ ফোন হাতে নিয়েও কল করলো না উলটো বউ সাজার জন্য তৈরি হতে গেল ৷ মেয়ে দুটো সত্যি বেশ অবাক হলো ছন্দের কান্ডে....
ছন্দ ওয়াশরুম থেকে শাড়ি পরে বের হয়৷ মেয়ে দুটো ছন্দ কে হা করে তাকিয়ে আছে ৷ মেকাপ ছাড়াই ছন্দ কে অসম্ভব সুন্দর লাগছে ৷ ছন্দ হেটে বিছানায় গিয়ে বসে পড়ে মেয়ে দুটোর উদ্দ্যেশ্য বলে উঠলো " কি হলো এরকম বোকার মতো হা করে তাকিয়ে কি দেখছো হাহ ৷ সাজাতে শুরু করো নাহলে তোমাদের স্যার আবার রাগ করবে...
মেয়ে দুটো ছন্দ কে সাজাতে শুরু করলো চল্লিশ মিনিটের মাথায় ছন্দ কে সাজানো শেষ করে ৷
" ম্যাম একবার আয়নায় নিজেকে দেখুন ৷ ইস আমি যদি ছেলে হতাম না এখুনি আপনাকে কিডন্যাপ করে বিয়ে করতাম..."" (প্রথম মেয়েটি)
"" হুম একদম ঠিক বলেছিস মনে হচ্ছে সামনে কোন হুর পরী দারিয়ে আছে৷""
ছন্দ মেয়ে দুটোর কথা শুনে ফিক করে হেসে দিয়ে আয়নায় নিজেকে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখতে লাগলো...
"" ইস এরকম কিউট বউ সাজে হাত আবার রক্তে রাঙাতে হবে ধ্যাত ভাল্লাগে না ৷ "" মেয়ে দুটো ছন্দের কথা শুনে চমকে ওঠে...
"" ম্যাম আপনি ঠিক আছেন তো?" দ্বিতীয় মেয়েটি বলে উঠলো ....
"" ইয়াহ আ'ম ফাইন চলো যাওয়া যাক..""
"" হাম চলুন..."
মেয়ে দুটো ছন্দ কে নিয়ে বের হওয়ার জন্য দরজায় দু বার টোকা দিতে দরজার লক খুলে যায়৷ ছন্দ বাইরে এসে দেখে পুরো বাড়ি আর্টিফিসিয়াল ফুল আর মরিচ বাতি দিয়ে সাজানো ৷ সামনে সাদা পান্জাবি পরে বর সেজে দারিয়ে আছে আমান ৷
আমান ছন্দের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ৷
আমানের ধ্যান ভাঙে কাজী সাহেবের কথায়...
"" বিয়েটা শুরু করবেন কখন আমান স্যার ? আমাকে আরো বিয়ে পড়াতে যেতে হবে...""
"" বিয়ে পড়ানো শুরু করুন আপনি..."
ছন্দ খুব সর্তকতার সাথে গার্ডের কোমড় থেকে রিভলবার নিয়ে আচলের তোলে লুকিয়ে ফেলে৷ ছন্দের এক হাত আচলের তোলে লুকানো লিভারবার যেটা আমানের চোখে পরেনি এখনো ৷ ছন্দ কে বসিয়ে কিছুটা দ্রুরত্ব নিয়ে আমান বসে ৷ কাজি বিয়ে পড়ানো শুরু করতে ছন্দ আচলের তোল থেকে রিভলবার বের করে আমানের দিকে তাক করতে বাইরে ফায়ারিংয়ের আওয়াজ শুনতে পায় ছন্দ ৷ সবার নজর বাইরের দিকে ৷ ছন্দ অবাক হয়ে দরজার দিকে তাকিয়ে হাতের রিভলবার লুকিয়ে ফেলে তখনি .......