২৩!!
বেশ অনেক রাতে ঘুমটা ভাঙলে দীপ্তির মুখের দিকে তাকালো তামান্না। লাল সবুজ বাতির মৃদু আলোয় দেখতে পেল মেয়েটার গা থেকে চাদরটা অনেকখানি সরে গেছে। তামান্না একটু দীপ্তির গায়ে চাদরটা ঠিক করে টেনে দেয়ার জন্য সরে আসার চেষ্টা করতেই টের পেল ব্যাপারটা৷ কারো একজোড়া হাত পিছন থেকে তামান্নাকে জড়িয়ে ধরে আছে। মূহুর্তেই যেন তামান্নার হাত পা ঠান্ডা হয়ে অবশ হয়ে আসতে লাগলো। তবু নিজেকে সাহস দিয়ে একবার মানুষটার মুখটা দেখার জন্য পাশ ফেরার চেষ্টা করলো। কিন্তু সফল হলো না৷ তামান্নার নড়াচড়ায় হাতদুটো আরো শক্ত করে ওকে জড়িয়ে ধরে একেবারে তামান্নার ঘাড়ে মুখ ডুবালো।
-আরে? তুমিও দেখছি তোমার মেয়ের মতোই বেশিবেশি নড়াচড়া করো---। উফ--তমা? ঘুমাতে দাও প্লিজ---। অনেক টায়ার্ড লাগছে-।
-কিশোর? আপনি----? আপনি কি করে আসলেন? রুমে----!
-আরে!! বাবা! সেসব পরে শুনো-। এখন ঘুমাও---।
-না মানে--। বলছিলাম কি--?
-কিছু বলতে হবে না ম্যাডাম--। এখন ঘুমাতে দিন--। সারাদিন অফিস করে ফিরে তারপর ড্রাইভ করে এসেছি এতোটা পথ---।
-ওপসস। সরি সরি--। ঘুমান আপনি-।
-তুমিও ঘুমাও---।
-হুম----।
-তমা?
-জি? বলুন?
-কি হয়েছিল বলো তো? কেঁদেছ কেন এভাবে?
-না মানে---। কাঁদি নি----।
-আমার কাছে লুকাতে পারবে ভেবেছ? আমি এখানে ছিলাম না ঠিকই, কিন্তু তোমাদের সব খবরই আমার কাছে এসে পৌঁছায়, বুঝসো?
-না মানে----।
-বলো না কি হয়েছে? ঘুমাচ্ছ, তখনও চোখ ভেজা--। কি হয়েছে না বললে আমি---।
-কিছু হয়নি---।
-ঠিক আছে। বলো না। আমি নিজের মতো করেই খুঁজে বের করে নিবো--। তখন কিন্তু-----। এই এতো কথা বলো কেন? ঘুমাতেও দিচ্ছ না একটু---।
-আরে? আমি কি করলাম?
-দেখেছ? এখনো---।
-ধ্যাত----।
-হা হা। তমা?
-একটু ছাড়ুন না?
-কেন? খারাপ লাগছে?
------------------------------
-তুমি তো বলেছিলে, হাত বাড়ালে অধিকার নিয়েই বাড়াতে। তাই অধিকার নিয়েই ধরেছি। ছাড়তে বলো না।
-ঘুমান-ঘুমান---।
-হুম---। তুমি জেগে জেগে পাহারা দাও--।
কিশোর তামান্নাকে আরেকটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরে তামান্নার কানে ছোট্ট করে একটা চুমো খেয়ে ঘাড়ে মুখ গুঁজলো। তামান্না একবার কেঁপে উঠে চুপ করে রইলো। মানুষটা হুট করে এসে এভাবে কোথা থেকে এসেছে বা কেন এসেছে কিছুই বুঝতে পারছে না মেয়েটা। কিন্তু মানুষটার এমন অদ্ভুত কান্ডগুলো কেন জানি ভিষন ভালো লাগছে তামান্নার৷ ইচ্ছে করছে পাশ ফিরে মানুষটার ঘুমন্ত মুখটা একবার দেখতে। কিন্তু ক্লান্ত মানুষটার ঘুমের ডিস্টার্ব করতে আর সাহস পেল না তামান্না।
সকালবেলা তামান্নার ঘুম ভাঙতে বেশ বেলা হয়ে গেল। দীপ্তিকে পাশে না দেখে তাড়াতাড়ি বিছানায় উঠে বসলো। কিশোরকেও কোথাও দেখতে পেল না। তবে কি রাতে ও স্বপ্নে দেখছিল যে কিশোর এসেছে? হতেও পারে। নইলে যে মানুষটা তিনমাস আগে ঢাকায় চলে গেছে, সে হঠাৎ কেন না বলেই চলে আসবে৷ আর কেনই বা এভাবে জড়িয়ে ঘুমাবে! তবে স্বপ্নেও কেমন ঘোর লাগছিল মানুষটার স্পর্শে। ভাবতেই তামান্নার মুখে হালকা আভা ছড়ালো।
হঠাৎ ঘড়ির ঘন্টা বাজতেই দেয়ালের ঘড়িটার দিকে চোখ পড়তে আঁতকে উঠলো তামান্না। কাঁটায় কাঁটায় ন'টা বাজে। তামান্না তাড়াতাড়ি উঠে ওয়াশরুমে, বারান্দায় দীপ্তিকে খুঁজে এলো। কোথাও দীপ্তিকে না পেয়ে বেশ ভয় পেয়েই ফালেহা চৌধুরীর রুমের দিকে ছুটে গেল তামান্না। ফালেহা চৌধুরী বিছানায় হেলান দিয়ে একটা বই পড়ছিলেন। তামান্নাকে এভাবে হন্তদন্ত হয়ে ছুটে আসতে দেখে বইটা পাশে রাখলেন।
-এসো তামান্না। তোমাকে এমন দেখাচ্ছে কেন? কিছু কি হয়েছে?
-মা?? মা দীপু কোথায়?
-ওকে তো কিশোর স্কুলে নিয়ে গেছে---।
-উনি সত্যি এসেছেন?
-শোনো পাগল মেয়ের কথা! কিশোর তো সেই রাতেই এসেছে--৷ তোমার সাথে দেখা হয় নি ওর?
-না মানে। রাতে একবার মনে হলো---।
-তোমার শরীর এখন কেমন বউমা?
-আমি ঠিক আছি মা--। কিন্তু উনি কেন দীপ্তিকে নিয়ে গেলেন? আমিই নিয়ে যেতাম---।
-সন্তানের দায়িত্ব কি শুধু মায়ের একার? বাবাকেও মাঝেমাঝে সন্তানের দায়িত্ব পালন করতে হবে তো।
-মা? কিন্তু----।
-কেন তামান্না? নিজেকে কি দীপ্তি মা মানতে পারো না? কতোদিন ওর গভর্নেস হয়ে থাকবে?
-দীপ্তি আমার মেয়ে মা----।
-তাই যদি ভেবে থাকো তাহলে নিজের সংসারের দায়িত্বটা নিজের কাঁধে নাও--। এতোটাও দেরি করে ফেলো না যে পরে নিজের বোকামির জন্য নিজেকেই পস্তাতে হয়-৷
-মা?
-জীবন সবাইকে সুযোগ দেয় না তামান্না। তাই সুযোগ পেলে সেটার সদ্ব্যবহার করতে হয়। কিশোর তো নিজের ভুলগুলো শুধরে নতুন করে জীবনটা শুরু করতে চাইছে-। তুমি কি ওর সেই পথ চলার সাথী হতে পারবে না মা?
-----------------------
-কিশোর ঢাকায় যাওয়ার আগে আমাকে একটা কথা বলেছিল। বলেছিল, তোমার সাথে আমরা অন্যায় করেছি৷ তোমার মতামত না জেনে নিজেদের লাভের জন্য সিদ্ধান্তটা তোমার উপরে চাপিয়ে দিয়েছি। আসলেই কি তুমি কিশোরের সাথে বাধ্য হয়েই আছো মা? সেরকম হলে বলো৷ জোর করে তোমাকে আটকে রাখবো না।
-মা?
-এখনই কিছু বলতে হবে না। তুমি ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নাও। আমাকে জানিয়ো সময় করে---। তবে ভয় পেও না। তোমার ক্ষতি হবে এমন কিছু করবো না।
-মা--আমি----।
-ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে নাও যাও। তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে অনেক ক্লান্ত তুমি--। একটু রেস্ট করো-।
-না মা। আমি ঠিক আছি--। আমি এক্ষুণি নাস্তার ব্যবস্থা করছি---।
-তামান্না। বাড়িতে অনেক লোক আছে। তোমার আজ রান্নার চিন্তা না করলেও চলবে--। আর শোনো, কে কি করবে, সেটা ওদেরকে বুঝিয়ে দিলেই চলবে৷ এখন যাও। নাস্তা করে নাও।
-জি মা----।
তামান্না আবার রুমে ফিরে এসে বিছানায় বসে পড়লো। কিশোর সত্যি রাতে বাড়ি এসেছে। মানুষটাকে নতুন করে জীবন শুরু করতে ও নিজেই বলেছিল। তবে মানুষটা নতুন করে জীবনটা শুরু করায় ওর কেন এতো কষ্ট হচ্ছিল! আর লোকটা হুট করে কি করে এলো? তার তো এখন অন্য কোথাও থাকার কথা!? তাহলে সেই মানুষটা বাড়ি ফিরেছে কি করে!! ভাবতে ভাবতে মাথা যেন ধরে আসছে তামান্নার। আপাতত একটা লম্বা শাওয়ার নেয়া দরকার।
২৪!!
তামান্না অনেকক্ষণ ধরে বেশ লম্বা একটা শাওয়ার নিয়ে গায়ে শাড়িটা কোনমতে পেঁচিয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হলো। টাওয়াল দিয়ে চুলটা একটু মুছে নিয়ে এবার শাড়িটা ঠিক করে পড়ায় মন দিলো। একা একা শাড়ি পড়তে এখনো বেচারিকে একটু হিমশিম খেতে হয়। যদিও সাধারণত কুঁচিগুলো অগোছালো হলেও সেটা নিয়ে ততটা মাথা ঘামায় না তামান্না। তবে আজ খুব করে চাইছে একদম পরিপাটি করে শাড়িটা পড়তে। ইশ! দীপ্তিটা থাকলে ভালো হতো। মেয়েটা অনেক গুছিয়ে শাড়ির কুঁচি সামলে দেয় সবসময়। এসব ভেবে শাড়ির আঁচলটা গায়ের উপরে টেনে নিয়ে কুঁচি করায় মন দিল তামান্না। কিন্তু একটু পরেই মুখটা কালো হয়ে গেল ওর। কুঁচিগুলো কিছুতেই এক সমান হচ্ছেই না। ধুর।
-শাওয়ার নিয়ে তোমাকে একেবার স্নিগ্ধ লাগছে তমা।
কথাটা শুনেই থতমত খেয়ে বিছানার দিকে তাকালো তামান্না। এতোক্ষণ ড্রসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে শাড়ি পড়ায় মগ্ন ছিল মেয়েটা। তাই চুলের ভেজা টাওয়ালটা বিছানার উপরে ছুঁড়ে ফেললেও বিছানার দিকে খেয়াল করে নি। কিন্তু কিশোরের কণ্ঠ শুনে আর তাকে খাটে হেলান দিয়ে আধ শোয়া হয়ে থাকতে দেখে একবারে বিষম খাওয়ার জোগাড় হলো ওর। দরজা ভিতর দিক থেকে লক করে ওয়াশরুমে ঢুকেছিল তামান্না। তাহলে উনি রুমে আসলেন কি করে?
-এই যে ম্যাডাম? হেল্প লাগবে কোন?
-আপ-আপনি!! আপনি রুমে-রুমে এলেন কি করে?
-কাল রাতে যেভাবে এসেছি, সেভাবে---।
-কাল!! রাতেই বা কি করে রুমে আসলেন? আমি তো ভেতর থেকে লক করেছিলাম---।
-কথায় আছে না ম্যাডাম, ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়? সেরকম আর কি ব্যাপারটা।
-আপনি---!
-বলছি যে হেল্প লাগবে ম্যাডামের?
-হুম? না না---। আম--। আপনি একটু বাইরে যাবেন প্লিজ?
-কি আশ্চর্য! আমার রুম!! আমি কেন বাইরে যাবো!
-আসলে--। আসলে আমি তো শাড়িটা-- পড়ছিলাম---।
-হুম--। দেখছি তো। কেমন শাড়ি পড়ছেন---।
-আপনি যান না?
-পারছি না সরি---। তবে হেল্প করতে পারি--।
-লাগবে না৷ আমিই যাচ্ছি----।
কিশোর চট করে খাট থেকে উঠে গিয়ে দরজার সামনে এসে দাঁড়ালো। তামান্নাও শাড়ির অগোছালো কুঁচিগুলো দু হাতে শক্ত করে ধরে রেখে দরজার দিকে এগিয়ে আসছিল। কিশোরকে এভাবে হুট করে দরজা আগলে দাঁড়াতে দেখে একেবারে থতমত খেয়ে গেল বেচারি। তামান্নাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কিশোর তামান্নার দিকে একপ এক পা করে এগিয়ে আসতে শুরু করলো। আর তামান্নাও পিছাতে পিছাতে একসময় শাড়িতে পা পেঁচিয়ে পড়ে যেতে লাগলেই ভয় পেয়ে চোখ বুজে ফেললো। কিন্তু একটু পরেই পড়ে গিয়ে ব্যথা পায় নি টের পেলে চোখ পেলে কিশোরের মুখটা দেখতে পেল। আর কিশোরের দুষ্ট হাসি খেলানো মুখটা দেখে অবাক চোখে তাকিয়ে রইলো তামান্না।
কিশোর তামান্নাকে আরো একটু নিজের কাছে টেনে নিয়ে শক্ত করে কোমড় পেঁচিয়ে ধরলো।
-তমা? এতো ছটফট করার কি আছে বলো তো? আমিই তো---।
-আপনি--!!
-নাস্তা তো করো নি এখনো? চেইঞ্জ করে নাস্তা করে নাও--। দীপু স্কুল থেকে ফিরলে বের হবো আমরা--।
-কোথায়!?
-সেটা পরে দেখা যাবে--। খাটের উপরে একটা প্যাকেট রাখা আছে--। একটু দেখে নাও পছন্দ হয়েছে কিনা---।
-হুম----।
-----------------------
-ছাড়ুন না?
-উঁহু----। তোমার সাথে কিছু কথা ছিল তমা--। কিভাবে শুরু করবো বুঝতে পারছি না--।
-পরে বলবেন নাহয়--।
-হুম---।
-আপনার কি হয়েছে বলুন তো?
-তোমার এই স্নিগ্ধ মুখটা দেখে কেমন নেশা ধরছে--। এই যে টুপটুপ করে তোমার চুল বেয়ে পানি ঝড়ছে, অপূর্ব লাগছে দেখতে?
-হুম?? আপনি!!
-কি আমি? বলো?
-কিছু না--। সরুন---। চেইঞ্জ করবো---।
-ও হ্যাঁ--। তাই তো--।
কিশোর তামান্নাকে ছেড়ে দিয়ে একটু সরে এসে দাঁড়িয়ে মাথা চুলকালো। তামান্না খাটের উপরে রাখা প্যাকেটটা খুলে দেখলো রয়েল ব্লু রঙের একটা ভারি শাড়ি রাখা আছে। সাথে ব্লাউজ, টিপ, কাজল এসব খুঁটিনাটি সাজের জিনিস। শাড়িটা তামান্নার এতো পছন্দ হয়েছে যে এখনই পড়তে ইচ্ছে করছে। কিন্তু আগের নরমাল শাড়িটাই পড়তে হিমশিম খাচ্ছে, এই শাড়িটা পড়বে কি করে, আর পড়ে সামলাবে কি করে সেটাই ভাবেই তামান্নার মুখটা ছোট হয়ে গেল। কিশোর সেটা খেয়াল করে এগিয়ে এসে তামান্নার মুখের সামনে দু আঙুলে তুড়ি বাজালো।
-এই যে ম্যাডাম? শাড়িটা পড়তে হবে তো নাকি? আনুষাঙ্গিক যা লাগবে পড়ে আসো--। যাও?
-এই শাড়িটা পড়ছিলাম তো?
-অন্য কারো শাড়ি আপনাকে আর পড়তে হবে না ম্যাডাম--। এবার নিজের শাড়ি পড়বেন--। যাও না?
-আমি তো শাড়ি পড়তেই পারি না--। মায়ের কাছ থেকে---।
-এখন এই রুম থেকে বের হওয়ার কথা ভুলে যান ম্যাডাম--।
-আপনি---।
-নাকি আমার হেল্প লাগবে চেইঞ্জ করতে---? ওয়েট---।
-আপনি একটা যাচ্ছেতাই লোক--।
-হা হা হা। জি ম্যাডাম--। এখন যান--।
কিশোর তামান্নাকে এক প্রকার ঠেলে ওয়াশরুম পাঠিয়ে দিলো চেইঞ্জ করতে৷ তামান্নাও ব্লাউজ আর পেটিকোটটা বদলে দাঁড়িয়ে চিন্তা করতে লাগলো। এবার বের হবে কি করে? এর মধ্যে কিশোর দরজায় নক করলো।
-তমা? তুমি কি বের হবা? নাকি আমি আসবো?
-আপনি আসবেন কি করে?
-রুমে যেভাবে আসলাম। ম্যাজিক করে?
-হুম?
-বের হবা নাকি আমি আসবো বলো?
-না---। আমি যান না?
-জি না--। আপনি আসুন না?
-ধ্যাত--।
-বের হও বলছি তমা। ভালো হবে না নইলে--। সারাদিন তো আর ওয়াশরুমে বসে থাকতে পারবা না। এক না এক সময় কিন্তু আমার সামনে আসতেই হবে। সো এসব বাদ দিয়ে বের হও---।
-জি?
-দেরি হচ্ছে কিন্তু এবার।
-আস-আসছি তো!
তামান্না একবার ঢোক গিলে ওয়াশরুমের দরজাটা হালকা করে ফাঁক করে বেরিয়ে আসতেই কিশোর তামান্নার হাত ধরে টেনে ড্রেসিং টেবিলের সামনে নিয়ে এলো। তারপর রয়েল ব্লু রঙা শাড়িটা গুঁজে দিতে লাগলো। শাড়ি পড়াতে গিয়ে মাঝে মাঝে তামান্নার পেটে আঙুল ছুঁইয়ে দিয়ে মিটিমিটি হাসছে কিশোর। আর তামান্না শক্ত করে চোখ বুজে দাঁড়িয়ে আছে। কিশোর তামান্নার শাড়ির কুঁচিগুলো ঠিক করে গুঁজে দিয়ে শাড়িটার ভাঁজগুলো ঠিক করে টেনে দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে তামান্নার দিকে তাকালো। ওকে এভাবে চোখ বুজে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে হেসে ফেললো কিশোর। তামান্নার কাছে এগিয়ে গিয়ে কানে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিলো কিশোর।
-ম্যাডাম? এভাবে আর কতক্ষণ স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবেন? শাড়ি পড়ানো তো শেষ?
তামান্না লজ্জায় লাল হয়ে চোখ খুলতেই পারছে না। একটু পরে খুঁট করে একটা শব্দ হতে তামান্না চোখ খুলে তাকালো। দেখলো কিশোর দরজা খুলে দিয়েছে। আর প্রায় সাথে সাথেই দীপ্তি ছুটে এসে তামান্নাকে জড়িয়ে ধরলো। আর দরজায় সামনে দাঁড়িয়ে কিশোর হাসি মুখে তামান্না আর দীপ্তির দিকে তাকিয়ে আছে৷ লোকটা এমন করে কেন পাগল করছে ওকে তার আগামাথা কিছুই বুঝতে পারছে না তামান্না। তবে নতুন একটা অনুভূতি হচ্ছে ওর৷ ভিষণ সুখে থাকার অনুভূতি। অস্পষ্ট প্রেমাবেগ যেন ধীরে ধীরে নিজের স্পষ্টতা খুঁজে পাচ্ছে আজ।