পিট পিট করে চোখ খুললো কুহু। চোখ খুলতেই ভেসে উঠলো মাথার উপর ডিজাইন করা ছাদ। ঠিক মাথার উপর হলুদ জলজলে ঝাড়বাতি। ডানপাশে পিংক আর হোয়াট কালার পাতলা পর্দা বাতাসের সাথে ফরফর করে উড়চ্ছে।সুন্দর কামড়াটি। সে খাটে সটান হয়ে শুয়ে আছে। কুহু ধীরে ধীরে বাম পাশে তাকালো। তিথি বসে তার মাথার কাছে ঝিমুচ্ছে। দূরের সোফায় প্রিজমের কাঁধে মাথা দিয়ে শুয়ে আছে জয়ীতা।কুহু এবার নড়চড়ে উঠতেই তিথি চোখে খুলে, হাসি রেখা টেনে কুহুর গালে হাত রেখে বলল,,
--" আর ইউ ওকে কুহু? কেমন লাগচ্ছে তোর এখন? আল্লাহর কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া তোর জ্ঞান ফিরেছে।"
কুহু তিথির কথা কিছু বুঝলো না। তাকিয়ে রইলো। মাথায় এখন অন্য কথা ঘুরপাক খাচ্ছে! সে কোথায়? ওই তো সেই ব্রাইডালে ছিল! ডায়মন্ড? ও কই? সেই বা এখানে কিভাবে??
--" কুহু তুই ঠিক আছিস মা?"
বড় মামির কন্ঠে ভাবনার ভিতর থেকে বের হয় কুহু। তাঁর মুখ থেকে "মা" ডাক শুনে বিস্মিত হলো সে! বড় মামি তা বুঝতে পেরেই মাথা নত করে নেয়। কুহুর হাতটি তুলে মুখের সামনে তুলে সমানে চুমু খেতে থাকে। বিলাপ করতে করতে অপরাধীর সুরে বলে,,
--" কুহু মারে! আমাকে ক্ষমা করে দিস! আমি খুব বড় ভুল করেছি! খুব বড় ভুল! আমায় মাফ করে দে!"
কুহুর যেন মাথা উপর দিয়ে সব যাচ্ছে। মামির কান্নায় আর বিস্ময় ফেঁটে যাচ্ছে সে। তাও নিজেকে সামলে ধীরে ধীরে উঠে বসে বড় মামির হাত ধরে বলে,,
--"মামি এসব কি বলছো? প্লীজ এসব বলো না। আমি হয়তো তোমার জায়গায় থাকলে তাই করতাম। প্লীজ ক্ষমা চেয়ো না।"
বড় মামি ফুঁপিয়ে উঠলেন। কুহুকে কাছে টেনে জড়িয়ে ধরে বললেন,,
--" তোর মন খুব বড় মা! আমার মতো না! নির্ঘাত আমার জায়গায় তুই থাকলে, তোর সন্তান কোনটাতে খুশি তা দেখতি! আমি তো নিজের জেতকে প্রাধান্য দিয়ে তোদের খুশির বিসর্জন দিয়েছিরে মা!"
বলেই ডুকরে উঠলেন তিনি! কুহুর ও কান্না চলে এলো। ও তো ছোট থেকেই এমন। কারো চোখের পানি দেখলে নিজের চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনা। তখনি পিছন থেকে শুনতে পায় নুশরার কন্ঠ। সে গম্ভীর মুখে বলল,,
--"বড় মা, এখন এসব বলে কি লাভ বলো? তোমার অভিশাপ ঠিকি লেগেছে কুহু আপির।"
নুশরার কথায় চকিতে তাকালো সবাই তার দিক। কুহু নিজেও তাকালো।খাবার প্লেট নিয়ে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে সে! বড় মামি তার কথা বুঝতে না পেরে বলল,,
--" কি বলতে চাইছিস?"
নুশরা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল,,
--" এত জলদি ভুলে গেল? বড় মা? ভুলে গেল তোমার সেই অভিশাপের কথা?"
বড় মার মনে পড়লো! কুহু যেদিন পালিয়েছিল সেদিন কুহুকে তিনি অনেক কটু কথা বলে ছিলেন। পতিতালয়ের কথা বলে ছিলেন, সাথে এ ও বলে ছিলেন কুহুর যেন নরকেও জায়গা না হয়! এসব মনে পড়তেই তিনি অসহায় ভাবে তাকালেন কুহুর দিক।সত্যি তো মেয়েটা আজ নরকের মাঝেই ছিল। চোখ আবারো টলমল করছে তার। তিনি বললেন,,
--" আমার মতো নিকৃষ্ট মা হয়তো দুনিয়াতে আর একটিও নেই! মারে আমায় ক্ষমা করে দিস? নয়তো মরেও শান্তি পাবো না।"
চোখের জল ছেঁড়ে দিলেন তিনি! কুহুর খারাপ লাগচ্ছে খুব। কুহু বড় মামিকে সামলে বলে উঠে,,
--"বড় মামি! যা হয়েছে সব ভুলে যান। পাষ্টে কি হয়েছে না হয়েছে তা আর ভাববেন না।প্রেজেন্ট আর ফিউচারের কথা ভাবুন। আর সত্যি বলতে এখান থেকে না বের হলে আমি আমার ক্যারিয়ার গড়তে পাড়তাম না। যা হয় ভালোর জন্য হয়! সব ভুলে যান মামি!"
বড় মামি কুহু মাথায় স্নেহের সাথে হাত বুলিয়ে দেন। গর্বের সাথে বলেন,,
--" কুহু তুই প্রকৃত অর্থে খাটি মানুষ। মানুষের হাজার খারাপ গুনের মাঝেও ভাল গুনটি তুলে ধরিস। সত্যি তোর মতো মেয়ে, আর ছেলের বউ পেয়ে ভাগ্যবতী মনে হচ্ছে আমার!"
কুহু বড় মামির কথায় চমকে তাকায় তার দিক। বড় মামি হেসে বলে উঠে,,
--" খেয়ে নে আমি আসচ্ছি!"
মামি চলে গেল। তার যাওয়ার পানে চেয়ে রইলো কুহু। তা দেখে তিথি বলল,,
--" বড় মা খুব অনুতপ্তরে! তুই যাওয়ার পর থেকে ইউসুফ ভাই তার সাথে দূরত্ব বজায় রেখে চলত। কেমন অদৃশ্য দেয়াল বানিয়ে ফেলেছে তাদের মাঝে!"
কুহু অবাক হয়ে বলল,,
--" কি বলছিস? "
--" ঠিক বলছি!সে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে সব থেকে! আগের মতো ফুড়ফুড়ে সে নেই! গম্ভীরতা যেন চারদিক দিয়ে ঘিরে তাকে! এই এবার এসেছিস সব ঠিক হয়ে যাবে! নে খা!"
মুখের সামনে খাবারের নলা তুলে দিল।কুহু খাবার না খেয়ে তিথির কথায় অসহায় ভাবে তাকিয়ে থেকে ইতস্ত করে বলল,,
--" তিথি আমার যেতে হবে!"
তিথি অবাক হয়ে বলল,,
--"যেতে হবে মানে?"
তখনি পিছন থেকে জয়ীতা জবাব দিল,
--" তিথি ওর মেডিকেলের কোর্স এখনো কম্পলিট হয়নি! সামনে এক্সাম যেতে হবে!"
তিথি এসব শুনে কিছুটা ভয়ে ভয়ে বলে,,
--" আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না কুহু। যে তোকে এনেছে তাকে গিয়ে বল!"
কুহু ভ্রু কুঁচকে বলে,,
--" কে এনেছে!"
--" ইউসুফ ভাই!"
কুহু শুকনো ঢুক গিলে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলল,,
--" ডায়মন্ড? "
তিথি ছোট নিশ্বাস ফেলে বলল,,
--"লাইফ সাপোর্টে আছে!"
বিস্ফোরিত চোখ তাকিয়ে বলল কুহু,,
--"মানে?"
--" মানে ভাইয়া বেটাকে এমন কেলিয়েছে যে মরার সাথে পাঞ্জা লরছে!যে কোনো মুহূর্তেই উপরে।"
কুহু অবাক হয়ে বলল,,
--" ইউসুফ ভাই জানলো কিভাবে? আমি কই?"
তিথি হেসে বলল,,
--" তুই যেদিন আমার কেবিনে দেখতে গেছিলি সেদিনি তোকে চিনে ফেলেছে তোকে! এবং কি আমাকে অনেক শাসিয়েছে সত্য বলতে। যখন আমি মুখ না খুলি তখনি তোর পিছনে লোক পাঠিয়ে ফোলো করতো। যানিস তো তুই তার বাবুইপাখি! তোর সাথে ভাইয়ার আত্মার সম্পর্ক। সে তোকে অনুভব করে ফেলে তুই তার আশেপাশে থাকলেই!"
কুহুর চোখ ছল ছল করে উঠলো। মানুষটা তাকে কত ভালবাসে কিন্তু এ ভালবাসার কি দাম আছে? সে তো..! কুহু অভিমানী কন্ঠে বলল,,
--" এত ভালবাসা, কেয়ার করে কি লাভ তিথি সে তো আর আমার না!"
--" তোর না মানে? চকিতে ভ্রু কুচকে বলল তিথি!"
কুহু সুপ্ত শ্বাস ছাড়লো। তখনি গুটি গুটি পায়ে ভিতরে প্রবেশ করে অদ্রি! তার দিক তাকিয়ে বলে,,
--" সে তো বিবাহিত! তার লাইফে মুভড ওন করেছে! এখন আমাকে ভেবে কি লাভ?
কুহুর কথায় উপস্থিত সবাই যেন আকাশ থেকে পড়লো। এক সাথেই চেঁচিয়ে বলল,,
--" হোয়াট?"
কুহু ভয় পেয়ে গেল। সবার এভাবে চেঁচিয়ে উঠাতে ছোট অদ্রি ভ্যা করে কেঁদে দিল। নুশরা তাকে কোলে তুলি হাত করতে চাইছে। সবাই অবাকের শেষ চুড়ায়। কুহু তখন ক্ষীন স্বরে অদ্রিকে দেখিয়ে বলে উঠে,,
--" ইউসুফ ভাইয়ার বাবু না! দেখতে তার মতোই হয়েছে! কি সুন্দর। মাশাল্লাহ্।
তিথি বলল,,
--" আর ইউ মেড কুহু? ভাইয়া এখনো বিয়ে করে নি! আর তুই বলছিস বাচ্চা হয়ে গেছে?"
কুহু কাঁদ কাঁদ ফেইসে ঠোঁট উল্টে বলল,,
--" তো এ কে?ওই দিন হাসপাতালে ইউসুফ ভাইয়াকে পাপা বলছিল। আর একদম ইউসুফ ভাইয়ার মতো দেখতে গায়ের রংও সেইম দেখ!"
কুহুর কথায় সবাই খানিক চুপ থেকে হো হো করে হেসে দিল। তখন রুমে ঢুকলো ভাবি ।অদ্রিকে কোলে নিয়ে হাসতে হাসতে বলল,,
--" এটা তোর রাহুল ভাইয়ার মেয়ে ডাফার!"
কুুহু নিজের কাজে আহাম্মক বনে গেল। মুখটি কাচু মাচু করে বলল,,
--" আমি আরো ভেবেছি ইউসুফ ভাই বিয়ে..!"
কথার মাঝে ভাবি থামিয়ে দিয়ে বলল,,
--" যে তার বাবুইপাখি বলতে পাগল। সে কিভাবে অন্য কাওকে বিয়ে করবে! গাধা? এক কাজ তোর নেতা সাহেবের সাথে দেখা করে আয়! বেচারা তোর উপর বহুত নারাজ! যা এবার মনোমালিন্য দূর কর দুজনের!"
ভাবির কথায় খানিকটা লজ্জা পেল কুহু। আমতা আমতা করে বলল,,
--" আমি কিভাবে তার সামনে? তাছাড়া ভ..ভয় করছে!"
নুশরা কৌতুকের সুরে বলল,,
--" বাড়ি ছেড়ে পালাবার সময় এই ভয় কই ছিল আপি! এখন যাও! "
কুুহু অসহায় মুখ করে তাকিয়ে রইলো। তখন কোনো ভাবে পালিয়েতো ছিল সে! কিন্তু এখন তার সামনে যাওয়া আর মরণকে আমন্ত্রণ দেয়া এক। কুহু ভয়ে পেটে মোচড় দিয়ে উঠছে।
____________________________________________
ইউসুফের কামড়ার সামনে দাঁড়িয়ে কুহু। ভয় হাত-পা কাঁপছে। ভাবি, তিথি, নুশরা, জয়ীতা সবাই মিলে ঠেল ঠেলুয়ে পাঠিয়েছে তাকে। এ পর্যন্ত এসে রুমে ঢুকার মতো সাহস সঞ্চয় করতে পাড়চ্ছে না সে!মনে মনে সুরা কেরাত পরে বুকে ফু দিয়ে ডান পাশে তাকালো। তার রুম থেকে উঁকি দিয়ে তিথি আর জয়ীতা ইশরা করছে ভিতরে যাওয়ার জন্য। কুহু অসহায় মুখ করে যায়ে তাদের দিক। ওদিকে তারা ইশরায় শাসিয়ে যাচ্ছে তাকে! তখনি কেথা থেকে ছোট অদ্রি ছুটে এসে কুুহুকে এক ধাক্কা দিল। কুহু বেচারি হুড়ুমুড় করে দরজা ঠেলে ভিতরে পড়তে নিল। সাথে সাথে সামলে নিলো সে। দরজার দিক তাকাতেই ছোট অদ্রি ফিক করে হেসে ছুঁটে পালালো।
কুুহু নিজেকে সামলে ইউসুফের ঘরে উঁকি দিল। অন্ধকার রুম।ঘরের বড় জানালা সটান করে খোলা বাহির থেকে ধমকা হওয়া এসে উড়িয়ে এদিক ও দিক ফেলছে। পাশেই ইউসুফ দাঁড়িয়ে আছে। বাহিরের দিকে মুখ করে পিছনে দু হাত বেঁধে তাকিয়ে আছে শূন্য দৃষ্টি মেলে। বাহিরের মৃদু আলোতে সাদা পাঞ্জাবি পরিহিত ইউসুফকে যেন আরো সুন্দর লাগছে। কুহু ধীরে পায় ইউসুফের পিছনে দাঁড়ালো। ভয়ে গলা শুকিয়ে কাঠ। কি বলবে? কিভাবে শুরু করবে? ডাকবে তাকে? নাকি ছুটে পালিয়ে যাবে? ভেবে কূল পাচ্ছে না সে! যখনি মনে সাহস সঞ্চয় করে ঠোঁট নাড়াবে তখনি ইউসুফ বাহিরের দিক তাকিয়ে বলল,,
--" কি বলতে চাস বলে ফেল! ২ মিনিট সময়! এরপর রুম থেকে বের হো!"
ইউসুফের এ রূপ কঠিন কথায় দমে যায় কুহুু। মনের মাঝে কিছুক্ষণ আগের ডর ভয় গায়েব হয়ে গেছে! এক রাশ কষ্ট বুকের মাঝে জমা হয়ে গেছে। কুহু মন খারাপ করে বলল,,
--" আ..আপনি কি এ..খনো আমার উপর রেগে আছেন?"
কুহুর কথায় ইউসুফ পিছনে মুড়ে। হাত দুটি আড়াআড়ি ভাবে বাজ করে কুহুর দিক তাকায়।ইউসুফের দিক আর চোখে তাকায় কুহু বাহিরের হালকা আলোর ঝলক এসে পড়ে ইউসুপের মুখে। কুহু বুঝতে চেষ্টা করছে ইউসুফের ফেইস রিয়েকশন। কিন্তু কিছু বুঝতেই পারলো না সে। চোখ নামিয়ে নিল। ইউসুফ বলল,,
--" নাহ্ রাগ কেন করবো? বরং খুশি হয়েছি! এত খুশি যে বান্দরের মতো লাফাচ্ছি খুশিতে! "
কুহু কি বলবে বুঝতে পারলো না। চুপ করে রইলো।ইউসুফ আবার বললো,,
--"আর কিছু? তা না হলে যেত পারো! গো?"
কুহু এবার ছল ছল চোখে চেয়ে রইলো ইউসুফের দিক। ইউসুফ নির্বিকার ভাবে দাঁড়িয়ে! এদিকে কুহুর বুক চিড়ে যাচ্ছে, যদিও এসবি আশা করেছিল সে।তবু কষ্ট হচ্ছে! কুহু নিজেকে সামলে বললো,,
--" আমাকে ক্ষমা করা যায়..!"
কথা শেষ করার আগেই ইউসুফ ওর দু বাহু ধরে দেয়ালের সাথে চেঁপে দাঁতে দাঁত চেপে বলে,,
--" ক্ষমা চাইতে এসেছিস? ক্ষমা? তা কোন কোন কারণে ক্ষমা চাইবি? মন ভাঙ্গার জন্য?বিশ্বাস ভাঙ্গার জন্য? আমার অনুভূতি গুলো অগ্রাহ্য করার জন্য নাকি আমার ভালবাসাকে অপমান করে লাথি মেরে দূরে ফেলে দেয়ার জন্য? কোনটা? আনস মি? ডেমন ইট? লাষ্ট কথাটা চেঁচিয়ে বলল।"
কুহু ভয়ে কেঁপে উঠলো। কান্না করে দিল ব্যথায়। কুহু কান্না জড়িত ব্যথাতুর কন্ঠে বলল,,
--" লাগচ্ছে আমার!"
ইউসুফ আরো শক্ত করে চেপে ধরে। কুহু "আহ" করে উঠে। সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে ইউসুফ বলল,,
--"পাঁচটা বছর! পাঁচটা বছরে কতটা পুড়েছি হিসেব আছে তোর? নেই! কতটা কষ্টে ছিলাম? আর তুই? তুি স্বার্থপরের মতো আমায় ছেড়ে চলে গেলি! যখন তোকে আমার সব থেকে বেশী দরকার ছিল, সে তুই কি করলি? বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে চলে গেলি। আবার যখন ফিরে এলি? নিজেকে লুকিয়ে রাখতে চাইছিল? বাহ্ কি প্লেন? "
--" ভাইয়া আমার কথাটা শুনুন!
"
কান্না করতে করতে বললো কুহু। ইউসুফ ছেড়ে দিল।বলল,,
--"বল শুনি কি বলবি!"
কুহু চোখে পানি মুছে এদিক ওদিক তাকিয়ে বলল,,
--" আমি বাধ্য হয়ে ছিলাম!"
ইউসুফ হাসতে লাগলো। তাচ্ছিল্যের হাসি। হাসতে হাসতে বেড গিয়ে বসলো। কুহু অবাক হয়ে চেয়ে রইলো। ইউসুফ বলল,,
--" বাধ্য হয়ে ছিলি? কে করেছে আমার মা! তাই না।"
বলে তাকালো ইউসুফ কুহুর দিক! কুহু চমকে গেল। ইউসুফ এসব কিভাবে জানলো? এসব ভেবেই ঘাবড়ে গেল সে।ইউসুফ সাথে সাথে চোখ মুখ শক্ত করে কুহুর দিক তেরে গিয়ে তিন আঙ্গুল দিয়ে গাল চেঁপে ধরলো। বললো,,
--" এসব আজাইরা অজুহাত আমাকে দেখাবি না বুঝলি! ফালতু লিজক নিয়ে আমাকে কিছু বুঝাতে পারবি না তুই। মা বললো, ওমনি সে পালালো? বাহ্?
ছেড়ে দিল ইউসুফ কুহুকে। নিজের চুল দু হাতে পিছনে ঠেলে আবার বলল,,
--"প্রতিটা সময় তোর ডাল ছিলাম। তখন কি আমি মরে গেছিলাম? কেন এমন করলি? তোর জন্য নিজেকে কাপুরুষ মনে হয় এখন! বুঝলি!তোকে আর সহ্য হচ্ছে না যা এখান থেকে।"
কুহু ফুঁপিয়ে কেঁদে যাচ্ছে। সত্যি মানুষটিকে সে বড় কষ্ট দিয়ে ফেলেছে। কুহু বলল,,
--" প্লীজ আমাকে ক্ষমা করে দিন! দরকার পড়লে আমাকে মারুন কাঁটুন, পানিশমেন্ট দিন। তাও এভাবে রাগ করে থাকবেন না আমার উপর!"
ইউসুফ তাকালো কুহুর দিক!বাঁকা হেসে বলল,,
--" ঠিক তুই যা করেছিস! তার পানিশমেন্ট তোকে পেতেই হবে! আর (কুহুর কাছে এসে, এক আঙ্গুল দিয়ে কঁপালে চুল গুলো সরাতে সরাতে বলল) তোর শাস্তি হচ্ছে এটাই, না আমি তোকে কখনো আমার কাছ থেকে দূরে যেতে দিব! আর না কখনো কাছে টেনে আপন করে নিবো! কাছে থাকবি আমার না ছুঁতে পারবি না কাছে টানতে পারবি না ভালবাসতে পারবি। সারা জীবন তোর এভাবেই থাকতে হবে! "
বলে ঘটঘট করে চলে গেল ইউসুফ। এদিকে ইউসুফের কথায় ধ্রাম করে বসে পড়লো কুহু। চোখ থেকে অঝরে জল পড়তে লাগলো তার। কাঁদতে কাঁদতে বলল,,
--" এ কেমন শাস্তি ইউসুফ ভাই! এর থেকে মৃত্যুটাই যে কাম্য!"
—————
কুহু বসে আছে ছাদের কার্নিশ ঘেঁষে চোখ মুখে বিষণ্ণতার ছাপ। রাত বাড়চ্ছে। ঠিক কঁটা বাজে জানা নেই তার। না জানার ইচ্ছে আছে। আকাশের চাঁদ-তারা গুলোও যেন আজ লুকিয়ে গেছে।হয়তো কুহুর মতো তাদেরো মন খারাপ। তা ভেবেই দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লো সে। তখনি তিথি আর জয়ীতা এসে তার পাশ ঘেষে বসলো। কুহুকে মন খারাপ করে বসে থাকতে দেখে বলল তিথি,,
--"কুহু মন খারাপ করিস না। ভাইয়া রেগে তাই এমন করছে!"
কুহু শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,,
--"মন খারাপ করি নি! উনি যা করেছেন তা জায়েজ আছে! কিন্তু আমারও যে তাকে ছাড়া কষ্ট হয়েছে তা কিভাবে বুঝাই? সে তো আমার সাথে কথাই বলছে না।"
জয়ীতা বলল,,
--"কুহু মন খারাপ করো না রাগ কমলে দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে! বাই দ্যা ওয়ে(টুপনী কেঁটে) এমন গম্ভীর টাইপ মানুষের প্রেমে কেমনে পড়লা তুমি? নাকি হুমকি-ধামকি খেয়ে প্রেমে পড়ছো? হুম, হুম!"
কুহু লজ্জা পেল। লজ্জায় গাল দুটি লাল লাল হয়ে গেল। মাথা নিচু করে লাজুক হাসি দিল। তিথি বলল,,
--" সে অনেক মজার কথা জয়ীতা। আপনি শুনলে চমকে যাবেন?"
জয়ীতা নড়চড়ে আসন করে বসলো। কৌতূহল নিয়ে বলল,,
--" কি কথা? তাড়াতাড়ি বল!"
তিথি আড় চোখে কুহুর তাকিয়ে বলল,,
--"প্রেমে তোমার কায়া আগেই পড়ছিল! ইউসুফ ভাইয়াকে দেখে। মজার বিষয় কি জানো সে দিন ইউসুফ ভাই ওর দিকে তাকাতেই সে বেহুঁশ। বিশ্বাস করো বিশ্ব রেকর্ড হবে হয়তো! যে ক্রাশ তার দিক তাকাতেই সে শক্ড হয় বেহুঁশ! "
বলে হাসতে থাকলো তিথি। তাল মিলালো জয়ীতা বলল,,
--" ও এম জি! সত্যি কায়া তুমি ওয়ান পিস!"
বলে হেসে কুটকুট দুজন! কুহুও সেদিনের কথা মনে করে হেসে দিল। পরক্ষনেই সন্ধ্যার কথা মনে পড়তেই মুখটা ছোট করে নেয়। তা বুঝতে পেরে জয়ীতা বলে,,
--"কায়া প্লীজ আবার মন খারাপ কোরো না? দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে?"
কুহুর চোখে ততখনে জল জমা হয়ে গেছে। তা মুছে বললো,,
--" আই হোপ সো!"
তিথি বলল,,
--"আই হোপ সো বলে বসে থাকলে চলবে?
--"তো কি করবো?"
--" এমন কিছু কর? যাতে ভাইয়ার রাগ পড়ে যায়!"
জয়ীতাও তাল মিলিয়ে বলল,,
--"হে কায়া তিথি ঠিক বলছে! তোমার উচিত কিছু করার! আর যা করার সাত দিনের ভিতরে করতে হবে।অদ্রি বার্থ ডে পর্যন্ত টাইম!এরপর আমাদের বেক করতেই হবে এনি হাও!"
কুহু অসহায় ফেইস করে বলল,,
--" কিন্তু কি করবো?"
তিথি কিছু ভেবে বলল,,
--"পাগলামি টাইপ কিছু! দেখ ইউসুফ ভাই তোকে পাওয়ার জন্য কত পাগলামি করেছে!ঠিক তেমন টাইপ! সে তোর জন্য করেছে এবার তোর পালা! এমন কিছু করবি যেন ভাইয়া টাসকি খেয়ে বসে থাকে!"
তিথির কথায় জয়ীতাও সায় দিল। এদিকে কুহু ভাবতে লাগলো সে কি করবে? যে করেই হোক ইউসুফের রাগ সে কমাতেই হবে! বাই হুক ওর বাই কুক। এসব ভেবেই হাসলো কুহু।
কুহুকে আনমনে হাসতে দেখে তিথি আর জয়ীতা কুহুর অগোচরে হাত মিলালো। যা তারা করতে এসেছিল তাতে তারা সফল হয়েছে এবার ট্রেলার বাকি! যা কুহু করবে...! এখন কুহু কি করবে তাই দেখার পালা। তা ভেবেই খুশি খুশি লাগচ্ছে তাদের...!
এদিকে কুহু কিছু ভেবে হেসেই যাচ্ছে। শয়তানি হাসি। বিড়বিড় করে বলল,,
--"এবার শুরু কুহুর কেরামতি! তেরা কেয়া হো গা কালিয়া?? থুক্কু ইউসুফ ভাই সুন্দর! অতি মাত্রায় সুন্দর। কালিয়া বাদ। হবে সুন্দরী। উফ! এত খুশি লাগে কেরে।"
____________________________________________
সকালে ঘুম থেকে উঠে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে গেল কুহু। এমদম ফুড়ফুড়ে মেজাজ আজকে তার। নিজেকে আবার আয়নায় ভাল করে দেখে দৌড় লাগায় ইউসুফের ঘরের দিক! ইউসুফ ঘুমুচ্ছে ৮.৩০ এ উঠবে! সে সুযোগেই পা টিপে টিপে রুমে ঢুকলো সে! আলমারি খুলে কিছু একটা করলো সে।তারপর সুন্দর করে আস্তে ধীরে কাজ সম্পন্ন করে বের হতেই ইউসুফ ঘুমের মাঝে কুহুর দিক ঘুরলো। কুহু জড়সড় হয়ে ঠেসে দাঁড়িয়ে রইল আলমারির সাথে।ভয় প্রাণ পাখি তার যায় যায়।ইউসুফকে চোখ না খুলতে দেখে শান্তির নিশ্বাস নে! সেখান থেকে চলে আসতেই চোখ আটকে যায় ইউসুফের মুখে। বাহির থেকে সূর্যের এক ফালি আলো জানালা দিয়ে এসে পড়চ্ছে ইউসুফের মুখে।কতটা স্নিগ্ধ না লাগছে তাকে। ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছে করছে তার মুখখানা। কুহু নিজের ইচ্ছাটা দমন করে রুম ত্যাগ করলো।
সকালে ঘুম ভাঙ্গতেই চেঁচিয়ে ডাকলো রূপালীকে ইউসুফ,,
--" রূপালী আমার কফি কই?"
কুহু নিচেই ছিল সবার সাথে তখন। রূপালীকে কফি হাতে যেতে দেখে হুড়মুড় করে হেসে দাঁড়ালো তার সামনে। রূপালী তাতে ভয় পেল। বুকে থুতু লাগিয়ে ভয় ভয় বলল,,
--" আফামনি কি হইছে? এভাবে দৌঁড়াইন কেন! একটু জন্নি হার্ট ফেইল করতাম। আল্লাহ বাঁচাইসে!"
কুহু দাঁত কেলিয়ে বলল,,
--" সরি রূপালী তোরে ভয় দেখানোর কোন ইনটেনশন আমার ছিলনা। দে কফি আমাকে আমি নিয়ে যাচ্ছি!"
রূপালী দিয়ে দিল। কুহু চলে গেল ইউসুফের ঘরে। ইউসুফ তখন খাটে বসেই ফোন চেক করছিল। কুহু রুমে এসেছে সে দিকে খেয়ালি নেই তার। সে আপন মনে ভ্রু কুচকে ফোনের মাঝে ডুবে আছে। কুহুর রাগ লাগলো। সে হালকা চুড়ি নাড়ালো। ইউসুফ কুচকানো ভ্রু আরো কুচকালো বলল,
--" রূপালী ডিস্টার্ব করিস না! যা এখান থেকে!"
কুহু গেল না। কেন যাবে? সে রূপালীকে যেতে বলেছে। তাকে তো বলে নি। ভেবে মুখ টিপে আসলো! কুহু আবার চুড়ির শব্দ করলো। ঠিক ইউসুফের কানের কাছে! ইউসুফের বিরক্তি লাগলো।মেয়েটা এমন করছেন কেন? সে এবার কঠিন বকা দিবে! সে ভেবে রাগী লুকে তাকাতেই দেখে কুহু দাঁত বের করে হাসচ্ছে। ইউসুফের মাথায় দু গুন রাগ চেপে গেল। সে কফির কাপ ফ্লোরে ফেলে দেয়ে। কুহু ভয় পেয়ে যায় এমন কান্ডে। কুহু কিছু বলবে তার আগেই ইউসুফ রাগী গলায় বলল,,
--" তুই! তোকে না করেছিনা আমার কাছে আসতে? যা এখান থেকে! গো?"
কুহু মন খারাপ করে মিন মিন করে বললো,,
--" এত কষ্ট করে কপি করে আনলাম আর আপনি ফেলে দিলেন! এটা কি ঠিক? দোষ না হয় আমি করেছি বেচারা কফি কি দোষ কররো? বা এই কফির মগটা? তাদের কেন ভাঙ্গলেন?"
ইউসুফ কুহুর দিক এগিয়ে গিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলল,,
--" সত্যি ভাঙ্গাটা তোকে দরকার ছিল। মাথায় তুলে আছাড় মারতে পারলে ভাল হতো। দুর্ভাগ্যক্রমে বেচারা কফির মগ আঘাত পেল। যতসব! "
বলে তয়লা নিয়ে হন হন করে ওয়াশরুমে চলে গেল। তার কান্ডে ফিক করে হেসে দিল কুহু।
খাবার টেবিলে বসে আছে সবাই। বড় মামি, ছোট মামি মিলে খাবার সার্ভ করছে। কুহু মাত্রই খাবারটা মুখে দিয়েছে তখনি শোনা গেল ইউসুফ ভাইয়ার গগনবিদারী চিৎকার। সাথে সাথে নাকে মুখ খাবার উঠে গেল কুহুর।বড় মামি পানি দিল কুহুকে। রূপালী ভো দৌঁড় দিল তার ছোট সাহবের ঘরে।যেতেই ইউসুফ রাগী লুকে চেঁচিয়ে বলল,,
--" এ সব কি রূপালী? আমার প্রতিটা পাঞ্জাবির একটি করে বোতাম ছেড়া? কাপড় ধোয়ার সময় চোখ কই থাকে তোর? একটিও ঠিক নেই? এদিকে আমার মিটিং ১০ টায়। সময়ও নেই! কি পড়ে যাবো আমি? হে??"
ইউসুফের ধমকানিতে বেচারি রূপালী কেঁদে দিবে ভাব। সে এটাই বুঝতেছে না কে করলো এমন? কাল পর্যন্ত তো সব ঠিক ছিল! রূপালীর ভাবনার মাজে বেঘাত ঘটাল আবার ইউসুফের ধমকে,,
--" কি হলো? কই হারালি? কথার উত্তর দে!"
রূপালী কাঁদ কাঁদ কন্ঠে বলল,,
--" আমি কিছু করি নাই ছোট সাহেব। "
বলে ভ্যা করে কেঁদে দিলো। ইউসুফ বিরক্তি নিয়ে বলল,,
--" কান্না করছিস কেন? চুপ একদম কান্না বন্ধ কর! উফ!"
কিন্তু কান্না থামলো না রূপালীর। তখনি ঘরে ঢুকলো কুহু। বাহিরে দাঁড়িয়েই ছিল সে এতক্ষণ। একটি সুযোগের অপেক্ষা ছিল সে। সুযোগ পেতে রুমে ঢুকলো। অবাক হওয়ার ভান করে বলল,,
--" রূপালী কাঁদিস কেন?"
রূপালী হেচকী তুলে কাঁদচ্ছে। কি বলবে সে? এদিকে কুহুকে দেখে দু হাত বুকের উপর বেঁধে ভ্রু জোড়া কুচকে বলল,,
--"তোকে এখানে কে মাতব্বরি করতে আসতে বলছে? "
কুহু আমতা আমতা করে বলল,,
--"এদিক দিয়ে যাচ্ছিলাম ওর কান্না শুনে থামলাম! কি হয়েছে দেখার জন্য! কি হইছে রে তুই বল!"
রূপালী চোখ মুছলো বলল,,
--" কেডে জানি ছোট সাহবের পাঞ্জাবির বোতাম ছেড়া গেছে। তাও আবার প্রতিটা। কেম্নে হইসে জানি না মুই!"
--"ওহো এই ব্যাপার। তো কি হইছে শিলি করে দে তাহলেইতো হয়!"
--"আফা আমার হাতে দুক্কু কেমনে দেই কইন?"
কুহু চিন্তা করার ভান করে বলল,,
--"তাইতো! আচ্ছা যা তুই আমি করে দিচ্চি!"
রূপালী খুশি হয়ে চলে গেল! ইউসুফ বলল,,
--" আমার লাগবে না। তুই যা সারাদিন শুধু ঘুর গুর করিস কেন আমার পিছনে? যা ভাগ!"
কুহু গেল না। হাসলো। ইউসুফের শরীর ঝিম ঝিম করে উঠলো! এ কেমন হাসি তার? ঝিম ধরানো হাসি! ইউসুফ বলল,,
--" এভাবে হাসচ্ছিস কেন! যেতে বললাম না তোকে?"
কুহু সেই একি রকম হাসলো। ইউসুফের ঘোর লেগে গেল। কুহু বলল,,
--" কাজ শেষ হোক চলে যাবে!"
ইউসুফ চেয়ে রইলো। কুহু সুই সুতো নিয়ে খাটের উপর হাটু গেরে বসলো। তারপর হুট করে ইউসুফের পাঞ্জাবির কলার টেনে কাছে নিয়ে আসলো। এতোটা কাছে যে এক ওপরের নিশ্বাস শুন্তে পাচ্ছে। এমন করাতে ইউসুফ হতভম্ব হয়ে গেল। কুহু হাসলো সেই ঝিম ধোরানো হাসি!কুহু বোতাম লাগলো।ইউসুফের বুকে ঝুকে দাঁত দিয়ে সুতো কাটলো। সেই সুযোগে ইউসুফে বুকে টুপ করে চুমু খেয়ে বসলো সে।এদিকে ইউসুফ শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। কুহুকে এতো কাছে পেয়ে নিজেকে কন্ট্রোল লেস লাগছে। মন চাইছে বুকে ভেতর ঢুকিয়ে ফেলতে তার। তখনি কুহু চুমু খেয়ে বসতেই ইউসুফ হকচকিয়ে উঠে। সাথে সাথে ধাক্কা মেরে বেডে ফেলে দেয় কুহুকে। কুহু ধুপ করে বেডে পড়ে! ইউসুফের তখন রাগে চোখ-মুখ লাল হয়ে গেছে! কুহুর দিক রাগি চোখে তাকিয়ে সে দ্রুত রুম ত্যাগ করে! মাথা যেন পুড়ো আওলা ঝাওলা হয়ে গেছে।
ইউসুফকে এভাবে যেতে দেখে হেসে দেয় সে। মাথার নিচ এক হাত দিয়ে কাত হয়ে শুয়ে বলে,,
--" কতদিন এবাবে রেগে থাকুন আমিও দেখবো ই-উ-সু-ফ! পারবেন তো আপনার বাবুইপাখির লাভ টর্চার সহ্য করতে? হুম!"
বলে বিছানায় গড়াগড়ি দিয়ে হাসতে লাগল কুহু।