বন্ধন - পর্ব ১১ - সুলতানা পারভীন - ধারাবাহিক গল্প


২১!! 

তিয়াশের সারাটা দিন কেটেছে বিরক্তিতে। খেতেও বিরক্ত লাগছে, কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলেও বিরক্ত লাগছে, যা করছে তাতেই বিরক্ত লাগছে। বিরক্তিতে বিরক্তিতে সারাটা দিন কাটিয়ে দিয়ে তাড়াতাড়িই ঘুমিয়ে পড়লো। ঘুম আসতেও অনেকটা সময় লাগলো। তিথিকে কল দিবে চিন্তা করেও আর দিলো না তিয়াশ। মেয়েটার তো একটু বোঝা উচিত ভালোবাসার শূন্যতাটা কেমন লাগে। আর দূরে থাকলে হয়তো ওর কাছেও ক্লিয়ার হবে আধো ভালোবাসে কিনা। কিন্তু এতো কিছু ভেবেও তিয়াশ নিজেকে শান্ত রেখেছে অথচ মেয়েটার কণ্ঠটা একবার শোনার জন্য ওর বুকের ভিতর আঁকুপাঁকু করতে লাগলো। 

তিয়াশের হুট করে ঘুম ভাঙলো মুখের উপরে টুপটুপ করে বৃষ্টির মতো পানির ফোঁটা পড়ায়। চোখ খুলতেই তিয়াশ দেখতে পেল কারো একটা মুখ ওর মুখের কাছে ঝুঁকে পড়ে কাঁদছে। আর মুখটা দেখামাত্রই তিয়াশের বুকের ভিতরটা ধ্বক করে উঠলো। তাড়াতাড়ি মুখটা দু হাতে তুলে ধরলো।

-তিথি? কি হয়েছে? এই? এভাবে কাঁদছ কেন? এই তিথি?

-তুমি---? তুমি-----?

তিথি আর কিছু বলতে পারলো না। তিয়াশের বুকে মুখ ডুবিয়ে ফোঁপাতে লাগলো। মেয়েটা এখন করে কোথা থেকে এলো সেটাই বুঝতে পারছে না তিয়াশ। কয়টা বাজে? স্বপ্ন দেখছে নাকি বাস্তবেই মেয়েটা এসেছে সেটাও বুঝে উঠতে পারছে না বেচারা। একটু অপেক্ষা করে তিথির শরীরের উষ্ণতা অনুভব করলো তিয়াশ। তারপর আলতো করে এক হাতে তিথিকে বুকে জড়িয়ে ধরে অন্য হাতে চুলে হাত বুলাতে লাগলো।

-তিথি? এই পিচ্চি? তাকাও না একটু? এতো কাঁদছ কেন? কি হয়েছে? আর এতো রাতে আমার রুমেই বা কি করছো পাগলিটা? এবার কেউ দেখবে না বুঝি?

-তুমি একটা খুব খারাপ লোক--। খুব খুব খুব খারাপ--। আমি আর আসবই না একদম। আর আসবো না। কক্খনো আসবো না---।

-আরে?

তিথি তিয়াশকে ধাক্কা দিয়ে সরে যাওয়ার চেষ্টা করতেই তিয়াশ আরো বুকে চেপে ধরলো তিথিকে। 

-নিজে থেকে এসে যখন ধরা দিয়েছেন আর তো ছাড়ছি না আপনাকে ম্যাডাম----।

-ছাড়ুন---। এখন একদম ঢং দেখাতে আসবেন না--। ছাড়ুন বলছি----।

-বাহ! তুমিই তো নাকি আমাকে একটুও মিস করবা না। এখন এতো রাতে কি করছো আমার রুমে? হুম? তাও একেবারে মুখের কাছে মুখ এনে! আমি না জাগলে তো তুমি আমার ঘুমের মধ্যেই---।

-অসভ্য লোক--। আমি মিস করি না। কক্খনো করবো না মিস কাউকে। কেন করবো!

-তিথি? এই পিচ্চি এমন করছ কেন? কি হয়েছে?

-তুমি ফোন অফ করে রেখেছিলে কেন? আমার কত টেনশন হচ্ছিলো জানো তুমি? 

-ওরে পাগলিটা! ফোন অফ করেছি তখন। তুমি তো আর মিস করবা না। মোবাইল অন রেখে আর কি করবো---।

-তুমি---তুমি---তুমি---সত্যি সত্যি খারাপ। 

-সরি পিচ্চি বউটা---। পরে খেয়াল ছিল না মোবাইল অফ করা যে---।

-সেটা খেয়াল করবা কেন! আমাকে একটুও মনে পড়ে না তোমার---।

-আহারে! তাই?

-আর আসবো না--। চলে যাব--। ছাড়ো---।

তিয়াশ হেসে তিথির মুখটা তুলে চোখ মুছিয়ে দিল। মেয়েটার চোখ মুখের অবস্থা দেখে আরেকবার চমকালো তিয়াশ। চোখ দুটো ফুলে লাল টকটকে হয়ে আছে৷ মনে হচ্ছে চোখ বুজলেই পানি না গড়িয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়বে। তিয়াশ থতমত খেয়ে তিথির চোখের পাতায় চুমো খেল। তিথি চোখ বুজে নিয়েছে তাই কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিয়ে খাটে হেলান দিয়ে বসে তিথিকে বুকে টানলো তিয়াশ।

-পাগলিটা? এতো কেঁদেছ কেন?

-এখন একদম ঢং করবা না। ফাজিল ছেলে আমাকে সারাদিন রাগ দেখিয়ে কাঁদিয়ে জিজ্ঞেস করতে আসছে এতো কেঁদেছ কেন! চুপ একদম।

-আচ্ছা বাবা--। চুপ করলাম। কিন্তু তুমি এতো রাতে বাসায় এলে কার সাথে!

-কেন? একা আসতে পারি না?

-একটা দিবো ধরে---। এতোরাতে একা আসবা কেন তুমি? সাহস বেশি বেড়েছে না তোমার? 

-এই না তো।---উহু---। ভাইয়া এসেছে তো---। আমি এত রাতে একা একা কি করে আসবো?

-আপনার তো ভরসা নাই---।

-ভালো হইসে--। ছাড়েন এখন। আমি বাসায় যাবো---।

-আমার বুকে এভাবে থাকো না প্লিজ? ভালো লাগছে---।

-ইশ! ভাইয়া ওয়েট করছে--। ছাড়ো---?

-কি বলে এনেছো ভাইয়াকে!

-বলেছি ভাবিকে নিয়ে একটা দুঃস্বপ্ন দেখেছি--। হি হি---।

-পাকা বুড়ি একটা---। 

-কচু---।

-সরি পিচ্চি বউটা আমার---। ভিষণ ভালোবাসি গো। সরি কাঁদানোর জন্য। আর কখনো কাঁদাবো না। প্রমিস---।

-ছাড়ো না?

-আবার ছোটার জন্য ছটফট করছ? আচ্ছা--। যাও---। অনেক রাত হয়েছে---। 

-হুম----।

তিয়াশ হাতের বাঁধন আলগা করে তিথির কপালে আরেকবার চুমো খেয়ে তিথিকে ছাড়লো। তিথি এক পা দু পা করে তিয়াশের রুমের দরজা পর্যন্ত গিয়ে আবার তিয়াশের কাছে ফিরে এলো। তিয়াশ ইশারায় কি হয়েছে জানতে চাইলে তিথি ঝুঁকে তিয়াশের গালে একটা চুমো খেয়ে ছুটে পালালো। তিয়াশ হতভম্ব হয়ে খাটের উপরে বসে থেকে তিথির ছুটে পালানো দেখলো। 

এদিকে আয়ানের কলে ঘুম ভাঙতেই তিথি এসেছে শুনে চমকে গেছিলো মায়রা। দরজা খুলে তিথিকে দেখে আরো একচোট অবাক হয়ে গেল মায়রা। সারাদিন তিয়াশের উদ্ভট উদ্ভট আচরণ দেখেছে। আর রাত ১১ টায় তিথি এসে হাজির। তাও চোখ মুখের অবস্থা দেখেই বুঝতে পারছে মেয়েটা সারাদিন কেঁদেছে। আয়ান নিচে আছে বলতেই মায়রা বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালো। আয়ান মায়রার নাম্বারে কল করছে। সেটা রিসিভ করেই মায়রা ওর নতুন গেস্ট রুমের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আয়ানের দিকে তাকালো।

-হ্যালো মিস লাজুক পরী? ঘুম ভাঙিয়ে দিলাম নাকি আমরা দু ভাই বোনে?

-আম---। আপনারা এতো রাতে! তিথির কি হয়েছে?

-কোথায় পিচ্চিটা?

-রুমেই তো---?

মায়রা পিছনে ঘুরে রুমের দিকে তাকিয়ে আর তিথিকে দেখতে পেল না। রুমটা খালি দেখেই মায়রার বুকের ধ্বক করে উঠেছে। তিথিটা গেল কোথায়! আয়ানকেই বা কি বলবে ও এখন!

-এই যে ম্যাডাম? তিথি কি করছে এখন?

-রুমে তো নেই। আমি এক্ষুণি দেখছি। ওয়াশরুমে গেছে হয়তো---।

-আরে আরে? ম্যাডাম? পিচ্চি ওয়াশরুমে নেই।

-তবে! তবে কোথায়?

-ও তো তোমার সাথে ছিল--। আমি কি জানি!

-আমি সত্যি জানি না। বিশ্বাস করুন প্লিজ---।

-হুম। করলাম বিশ্বাস। এখন একটু সামনের দিকে তাকান। মুখটা দেখতে পাচ্ছি না আমি---। কই? তাকাও?

-আপনি ২ মিনিট একটু দাঁড়ান? আমি তিথি কোথায় দেখে আসি।

-এই? না---। আমি জানি আমার পিচ্চি বোনটা কোথায় আছে---। 

-কো-কো-কোথায়!

-আছে আর কি--। ওদেরকে এখন ডিস্টার্ব করে লাভ নেই। পরে পাকড়াও করা যাবে৷ হা হা হা। 

মায়রা থতমত খেয়ে মোবাইল হাতে আয়ানের দিকে তাকিয়ে রইলো। লোকটার হাসি দেখে মায়রার বুকের ভিতরে ধ্বক ধ্বক করছে। লোকটা কি বললো! তিথি কার সাথে আছে? আর ডিস্টার্ব না করতে বললো কেন? কি চলছে এসব কিছুই মাথায় ঢুকছে না মায়রার।

২২!! 

মায়রা ভাবার চেষ্টা করছে এতো রাতে তিথির এখানে আসার কারণটা কি। মায়রার সাথে কাল সকালেই তো দেখা হবে। তাহলে তো নিশ্চয়ই এতো রাতে মায়রার সাথে দেখা করতে ছুটে আসে নি মেয়েটা। তবে কি তিয়াশের সাথে! আসলেই কি এই পিচ্চিটার সাথে তিয়াশের কিছু একটা চলছে! সকালে ওভাবে দুজনই দুজনের নাম্বার চাইলো। তার একটু পর থেকেই তিয়াশ মুখ অন্ধকার করে আছে। হুটহাট বাবা মার সাথে কথা-কাটাকাটি করছে সামান্যতেই। তিথির চোখ মুখ দেখেও বুঝা যাচ্ছে মেয়েটা সারাটা দিন কেঁদেছে। এখন কি ওরা একসাথেই আছে? গিয়ে দেখা উচিত মায়রার?

-এই যে ম্যাডাম? কোন ধ্যানে বসলেন?

-হুম? জি?

-বলি কি ভাবছেন?

-নাহ--। তেমন-তেমন কিছু না। 

-এই শোনো না?

-জি? বলুন?

-তোমাকে এই ঘুম মাখা মুখে খুব সুন্দর লাগছে। ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছে করছে খুব। 

মায়রা লাজুক হেসে চোখ নামিয়ে নিল। লোকটা হুটহাট কিসব বলে!

-এই এই? ভাইয়া ভাইয়া? চল চল?

-সব ডাবল ডাবল বলছিস কেন তিথুনি?

-চল না? সকালে ক্লাস আছে তো? ঘুমাবো বাসায় গিয়ে---।

-তোকে কি আমি নিয়ে এসেছিলাম জোর করে? নিজে আমাকে ঘুম ভাঙিয়ে টেনে টুনে কেঁদে কেটে আনলি---।

-আহহহহহ---। ভাইয়া চল না?

-নিজের কাজ হয়ে গেছে ওমনি চল চল শুরু কর দিলি? আমার কথা শেষ হয়নি-। আমি যাবো না। 

-কি? ওই ওই? কিসের নিজের কাজ হ্যাঁ? কিসের নিজের কাজ? আমি তো আসছি ভাবিকে নিয়ে খুব খারাপ একটা-----।

-সেটাই তো বললাম রে বাপ--। 

-তুই সত্যি এটাই মিন করসিস?

-কেন? অন্য কিছু ভেবে ভয় পেলি নাকি! হা হা হা।

-ভাইয়া?

-গাড়িতে গিয়ে বস--। আসছি--।

-হুম৷ আচ্ছা। 

তিথি গাড়িতে গিয়ে বসতেই আয়ান আবার মায়রার দিকে তাকালো। মায়রা এতোক্ষণ মুখ টিপে হাসছিল ওদের কথা শুনে। আয়ান একটু সময় নিয়ে মায়রার হাসি মুখটা দেখলো। 

-হ্যালো? চুপ করে আছেন কেন?

-ভাবছি---।

-কি?

-খুব শীগ্রি এই হাসিটা আমার হবে--।

-হুম?

-এই শোনো? তিয়াশ ভাইয়াকে কিছু বলতে যেও না এখন। ওরা ওদের মতো একটু সময় নিক। তারপর দেখা যাক কি হয়---।

-কিন্তু?

-কোন কিন্তু না ম্যাম। এ ব্যাপারে ভাইয়ার সাথে কোনো আলোচনা না। ওকে?

------আচ্ছা----।

-ওদের নিজস্ব সিদ্ধান্তগুলো ওদেরকেই নিতে দাও। আমরা আপাতত নিজেদের উপরে ফোকাস করি। কি বলো?

-জি?

-কাল সকালে দেখা হচ্ছে ম্যাডাম। ওকে?

-আচ্ছা----।

-বায় লাজুক পরী। গুড নাইট। 

-জি। সাবধানে যাবেন। 

-ওকে। টা টা।

মায়রা মিষ্টি করে হেসে কলটা কেটে হাত নাড়লো। আয়ানও হাত নাড়িয়ে গাড়িতে উঠে স্টার্ট দিলো। আয়ানদের গাড়িটা যতক্ষণ দেখা গেল মায়রা ততক্ষণ বারান্দায় দাঁড়িয়ে সেটার দিকে তাকিয়ে রইলো। পরে রুমে এসে ঘুমিয়ে পড়লো।

সকালে মায়রা আর তিথিকে কলেজে ড্রপ করে দিয়ে এসে আয়ান অফিসে গেল। অফিসে এসে নিজের কাজে মন দিল। বেশ অনেকক্ষণ এক মনে কাজ করে মুখ তুলে ভূত দেখার মতো চমকে উঠলো আয়ান। আরিশা এক দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে আছে আয়ানের ডেস্কের সামনে দাঁড়িয়ে। আয়ান সত্যি সত্যিই ভয় পেয়ে গেছিল আরিশাকে দেখে। মেয়েটা হুটহাট এভাবে ভয় দেখায় কেন কে জানে! আরেকটু হলেই হার্ট এ্যাটাক হয়ে যেত বেচারার। তবে মুখ দেখে মনে হচ্ছে মেয়েটা শুধু পারছে না ওর মাথাটা ফাটিয়ে দিতে। আয়ান একটু ভয়ে ভয়ে ঢোক গিললো।

-আরু? কি-কিরে! কি হয়েছে? এভাবে ভূতনীর মতো আমার দিকে তাকিয়ে আছিস কেন?

-এই তোর আসার সময় হলো!

-না মানে। আমি তো সেই কখন এসেছি----।

-ধুম করে কই ডুব মারসিলি তুই? আসবি না সেটা একবার বলবি না আমাকে তুই? কোম্পানিটা যে গোল্লায় যাচ্ছে সেদিকে খেয়াল আছে কারো!

-আরে! হুট করেই বাসায় প্ল্যানিং করেছিল--৷ আমি নিজেই জানতাম না। মায়রারা আর আমরা তিন চারদিনের মিনি পিকনিকে গেছিলাম---।

-ও আচ্ছা--। গিয়ে একটা কল করা যেত না?

-ওখানে নেটওয়ার্ক থাকে না। জানিসই তো।

-তুই একটা অসম্ভব ফাঁকিবাজ ছেলে----।

-যাব্বাবা! যে নিজে কোনদিন ১০ টা ১১ টার আগে অফিসে আসে না সে নাকি আামাকে বলে ফাঁকিবাজ! বাহ বাহ! গ্রেট!

-আয়াইন্না?

-রাগ করিস কেন আরু? মেয়েটাকে না দেখে এক দন্ডও শান্তিতে থাকতে পারি না। বুঝিস না কেন?

-সেটাই। তোরা সবাই থাক নিজের মতো ব্যস্ত৷ আমি কে! আমাকে নিয়ে কারো কেন ভাবতে হবে?

-কে ব্যস্ত!

-তুই ব্যস্ত তোর মায়রাকে নিয়ে। তাওহীদ ব্যস্ত ওর কাজ নিয়ে--। সবাই ব্যস্ত--। সবাই সবাই সবাই--।

-ও আচ্ছা। ম্যাডাম এই কারণে খেপেছে--। তাই তো বলি--। তা তাওহীদ ভাইয়ের সাথে বুঝি কথা হয়নি?

-তার সময় নেই। বললাম আগামী মাসে তোর বিয়ে। তার নাকি তখনও বিশাল বিজি সিডিউল।

-হা হা হা---।

-হাসবি না একদম-। দাঁত ভেঙে দিব বলে দিলাম আয়ান---।

-ভাইয়াকে বলেছিলি যে বিয়েটা তোর সাথে হচ্ছে না? মায়রার সাথে বিয়ে হচ্ছে আমার?

-মানে!

-হতে পারে উনি ভেবেছে তুই আমার গলায় ঝুলে পড়ছিস--। হা হা হা। 

-তো? তাতে ওরই বা কি হল! আর ওকে তো কার্ড পাঠিয়েছি। দেখছে তো তোর আর মায়রার নাম---।

-নাও তো দেখতে পারে!

-হ্যাঁ সেটাই--। কার্ড পেয়ে সেটা লকারে রেখে দিয়েছে যত্ন করে। তাই না? আজাইরা কথা বলবি না একদম---। 

-আরে নাহ--। শোন। তুই কল করে বলে দিস বিয়েটা তোর আর আমার না---।

-হুহ--। আমার বয়েই গেছে কল করতে-। আর নিজের কাজ কর--। প্রজেক্টটা তোর। আমার ডিজাইন করে দেয়ার কথা ছিল। করে দিয়েছি--। বাকিটা সামলা। নইলে ১ বছর কেন ১০ বছরেও কোনো পোগ্রেস হবে না। গট ইট জনাব আয়ান আহমেদ?

-ইয়েস ম্যাম---।

-ভাগ তো। কাজ কর। একটু পরে তো আবার ছুটবি---।

-হা হা। হুম----।

আরিশা হেসে বের হলো আয়ানের রুম থেকে। আয়ানও কাজে মন দিলো। আজ মায়রার ক্লাস শেষ ১ টার সময়। এর মধ্যে যতটা পারে কাজ গুছিয়ে নিতে চায় আয়ান। কয়েকদিনের মধ্যেই বিয়ের শপিং, এ্যারেঞ্জমেন্ট, ডেকোরেশন সব শুরু হবে। দেখতে দেখতেই মাস কেটে যাবে। তাই আগে ভাগেই কাজটা একটু গুছিয়ে রাখলে ভালো হয়। এসব ভেবে কাজে মন দিল আয়ান। বহু কাজ জমা পড়ে আছে কয়দিনের। সেগুলোই দুপুরের আগে সামাল দিতে মরিয়া হয়ে পড়লো আয়ান।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন