সাইকো ইজ ব্যাক - পর্ব ১২ - সিজন ২ - সুরাইয়া সাত্তার ঊর্মি - ধারাবাহিক গল্প


বারিশ রাগের মাথায় লন্ডন চলে আসে। এখানে 
তার অফিস আছে। অফিসের বড় জানালার সামনে দাড়িয়ে বাহিরে দৃশ্য দেখছে। এখন শেষ বিকেল। আর শেষ বিকেলের লাল,  নীল, হলুদ আলো এসে  পরতেসে তার মুখে। এতখন মন খারাপ থাকলেও প্রকৃত রূপ দেখে মনটা ভাল লাগতেসে তার।কুহুর কথা খুব মনে পরতেসে তার। ইসসস..! কুহু এমন না করলে আজ তার পাশে থাকত সে। ভেবেই ছোট শ্বাস ফেললো।তখনি হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজ টিউন বাজলো।ফোনটা হাতে নিতেই ফোনের ওয়াল পেপারে ভেসে উঠলো কুহু হাসি হাসি মুখটা।যা দেখলে সব ভুলে যেত সে। কিন্তু সেই কুহুকে সে মেরে এসেছে।তার জন্য অবশ্য সে নিজেকেও শাস্তি কম দেয়নি। যে হাত দিয়ে কুহুকে মারছে সে হাত বারিশ দরজার সাথে লাগিয়ে বারি মারছে।হাত পুরো থেতলে গেছে।বারিশ মেসেজটি ওন করলো।সাথে একটি কাগজের ছবি ভেসে উঠলো যেখানো মোটা মোটা অক্ষরে লিখা ডিভোর্স পেপার। তার সাথেই কুহুর হাতের সাইন।বারিশের রাগ এক দম সপ্তম আসমানে উঠে গেল। 
-----এতো বর স্পর্ধা আমাকে ডিভোর্স দেয়ার। এরে সামনে পেলে মাথা তুলে আছাড় মারতে মন চাইতেসে। কতো বড় বেয়াদব।
সাথে সাথে কল আসলো ওই নাম্বার থেকে।
বারিশ রিসিভ করতেই ওই পাশ থেকে কান্নার আওয়াজ ভেসে আসলো।
---- বাবা বারিশ..!
বারিশ ফুপির এমন কান্না কাটি শুনে বুকে মোচড় দিয়ে উঠলো।
----কি হইছে ফুপি কান্না করছো কেন?সব ঠিক তো?
----কিছু ঠিক না বাবা। কিছু না, প্যারালাইজড হযে গেছে বাবা।
বারিশ চিৎকার দিয়ে বলল,
---কিভাবে?
ফুপি মরা কান্না জুড়ে বলতে লাগে,
---বউ মা..!
----কি করছে কুহু?
----আমার হাতে ডিভোর্স পেপার ধরিযে দিয়ে বলল। তোরে দিয়ে দিতে। বাবা যখন বুঝাইতে গেছিল। তখন সে ধাক্কা দিয়ে বাবারে ফেলে দিসে..!
বলে হেচকি তুলে কাঁদতে লাগলো।
এসব শুনে বারিশের মাথা গরম হয়ে গেল।সে সাথে কুহুকে কল দিল..!

তখন বাসা থেকে বের করে দেয়ার পর টিনা ফ্লেটে উঠি আমি। টিনা না থাকলে কি হতো আমার? মামা জানলে মেরে ফেলবে যে বিয়ে করছি আবার ডিভোর্স হয়ে গেছে।

এ সময় টিনা বলল,
----আমি রিয়ানের সাথে কথা বলতেসি। ওর মা এত ফালতু মহিলা।বিয়ের পর আমার সাথেও আবার এমন না করে বসে। তাই ব্রেকআপ করে দিব।
----পাগল হইসোস? তোর সাথে কেন হবে?
----যার মা এমন তার কি গ্যারান্টি?
আমি চুপ..!
তখনি আমার ফোন বেঁজে উঠে, আমি রিসিভ করতেই ও পাশ থেকে চিল্লিয়ে বলল বারিশ,
----কুত্তা তোর সাহস তো কম না? আমার অনুপস্থিতে তুই আমারে ডিভোর্স দেস?খুব পাখনা গজাইসে তোর হুম। আসতেসি আমি তোর পাখনা কাঁটবো। সেদিন রাতে ডোজ কম হইসে না এবার বাথরুমে স্যান্ডেল দিয়ে পিটাবো তোরে।
আমার রাগ উঠলো দিগুন চিল্লায়ে বললাম,
--- আপনার সাহস তো কম না? আমারে গালি দিতেসেন? এত সাহস কই পাইলেন হে? সে দিন হাত তুলছেন তো তুলছেন আর কখনো হাত তুললে আপনার হাত ভাঙ্গি দেব।
বারিশ অবাক হলো, কুহু তর্ক করতেসে তার সাথে। আরো রেগে গেল রেগে এবার বোম হয়ে বলতে লাগে,
----তোর দেখি সাহস খুব বাড়ছে আমার সাথে তর্ক করিস? আসতে দে বাংলাদেশে। এবার গাছের সাথে বেঁধে পিটাবো তোরে আমি।
----কঁচু করবেন আপনি আমার। আপনারে আর ভয় করে না বুঝলেন? যে অন্য কারো কথা বিশ্বাস করে আমার জবানের দাম নাই এতন মানুষের সাথে কথা বলতে রুচিতে বাঁচতাসে।
বলে খট করে ফোন কেঁটে দিলাম।
এতে যেন আরো রেগে গেল বারিশ। 
---নাহ এই অবস্থা  অনেক দূর গড়ায় গেছে। এরে অন্য ভাবে হেন্ড্যাল করতে হবে। কত বড় সাহস আমার কল কাঁটে?
বারিশ আবার কল করল। কুহু কেঁটে দিল।
আবার দিল আবার কেঁটে দিল। এতে বারিশ আরো হিংস্র হয়ে যাচ্ছে।

তারপর আবার কল করলো এবার ধরল, এবার ঠান্ডা মাথা কথা বলল,
----ডিভোর্স কেন দিস?
----আমি দেয় নি!
----আমাকে ফুপি ছবি পাঠাইসে যেখানে তুমি সাইন করসো।
----আমি ইচ্ছে করে করি নি।
বারিশ তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল,,
----এখন বলো না তোমাকে কেউ জোড় করে সাইন করাইসে?
----যখন বিশ্বাস করবেন না তো এত কথা কিসের? আপনার কাছে আমি মিথ্যুক, চরিত্র খারাপ, প্রতারক। তো আমার কথা কেন বিলিভ করবেন। ভালো হইসে ডিভোর্স পেপার ফুপি দিছিল এনে। নয়তো আমি নিজেই দিতাম আপনাকে।।
কুহুর কথায় ভরকে গেল বারিশ,
----কি যাতা বলছো এসব? ফুপি বলল তুমি তার হাত পেপার ধরিয়ে চলে আসছো আর সাথে দাদুকে ধাক্কা তিস, তোমার জন্য দাদু আজ প্যারালাইজড..!
আমি অবাক হয়ে বললাম,
----আপনার ফুপি একটা ফালতু তার সাথে তার চামচি জেনি..!
বারিশ ধমক দিয়ে বলল,
----বড়দের এসব কি বলতেসো?
----একদম ঠিক বলতেসি। আমার ক্ষমতা থাকলে তাদের দুজনকে মুখে কালি মেরে পুরো এলাকাড জুতার মালা পরিযে ঘুরাতাম।
----কুহু তুমি কিন্তু বেয়াদবি করতেস!
----ভাল করসি। আর হে আমি দাদুকে ফালাই নাি। দাদুকে জেনি ধাক্কা দিসিল।  আর সাথে দাদুকে মারার ভয় দেখিয়ে ডিভোর্স পেপার সাইন করাইসে।
বারিশ এসব শুনে দু টানায় পরে গেল। সে বলল,
----ফুপি কেন করবে?
----কেন আবার বারিশের সম্পত্তির জন্য।
বারিম কপাল কুচকে বলল,
----আমার সম্পত্তির জন্যে?
----জি না.! আপনাকে তারা বারিশের ফেিস দিসে আপনি ইউসুফ। বারিশকে ফুপি নিজ হাতে মেরে ফেলছে।
বারিশ সব শুনে হতভম্ব। এ সব শুনে তার শরীর কাঁপতেসে, 
----তুমি মিথ্যা বলতেস?
----আমার কি লাভ?
বারিশ নিজেকে স্বাভাবিক করে বলল,
----ওই আশিকের কাছে চলে যাবা,
কুহু এবার অট্টহাসিতে ফেটে পরলো,,
----আপনাকে কে মাফিয়া বানাইছে তারে পাইলে পাছার মধ্যে লাথি মেরে পানিতে ফেলে দিতাম।
----কুহু...!
----কি কুহু হে? কি!  পারেন খালি মানুষরে বিশ্বাস করতে কোনো কিছু যাই করছেন জীবনে হে? 
বারিশ চুপ।
---আশিক জেনির চাচাতো ভাই। সবাই মিলে প্লেন করে আমারে বাড়ি থেকে বের করে দিসে। জেন আপনার আর জেনির বিয়ে দিযে সব সম্পত্তি রিযানের নামে দিযে দেয়।
বারিশ এবার বাকরুদ্ধ। আসলেই তো কখনো সেতো যাচাই করে নি কিছু।
বারিশ বলল,
---আমি তাদের ছেলে না হলে আমাকে বলতেই পারতো আমি দিয়ে দিতে বাধ্য। তাহলে  এসব কেন করবে?
----কারন দাদু..!
----আমার বিশ্বাস হচ্ছেনা তারা এমন করতে পারে?
----আমার কাছে সব কিছুর প্রুব আছে কিন্তু আতি আপনাকে দিব না। কুঁজে বের করে নেন কে সত্য আর কে মিথ্যা। যখন সত্য বের হবে অনেক আফসোস করবেন কারণ আমিরতখন আপনার পাশে থাকবো না। বলে আবার কজট করে কল কেটে দিলাম। ওি দিকে কুহুর ফোন কাটায় আবার কল দেয় বারিশ ফোন বন্ধ।  কি করবে বারিশ কিভাবে যাচাই করবে সত্য তাই ভাবতেসে।

----তুই মিথ্যা কেন বললি তোর কাছে প্রুব আছে?
আমি মুচকি হেসে বললাম,
----এ জন্য যে সে এবার সত্যিটা খুঁজবে।
----পরে যদি যানে তোর কাছে নেই।
----ততদিনে সে সব নিজেই বের করে নিবে..!
----তুই রিয়ানকে বলিস না কিছু। ওর তো দোস নাই।
টিনা বলল,
----আমি ওরে ব্লক মারছি।
----এটা ঠিক করলি না।
----দেখ আমি চাই না ওর মায়ের হাত মার খেয়ে বের হই।
----তুই বেশী  বেমী ভাবতেছিস।
----হো নয় তো তোর মতো বাশ খাবো।
আমি হেসে দিলাম।
সেদিন রাতটা কোনো মতে কেঁটে গেল। খুব ভোরে বারবার কলিংবেলের শব্দে ঘুম ভাঙ্গে আমার। আমি চুল গুলো হাত খোঁপা করতে করতে দরজা খুলেতেই ঠাসসসস করে পরলো আমার গালে কিছু বুঝে উঠার আগেই। সামনে তাকাতেই আমার চোখ বড় বড় হয়ে গেল। কারন বড় মামা আর রাহুল ভাই দাড়িয়ে ছিল।কিছু বলব তার আগেই আরেকটা থাপর পরলো গালে।তখন মামা চিল্লিযে বলল,
----তোর সাহস কেমনে হয় আমার ভাগ্নি হয় একা একা বিয়ে করিস। শরীরে রস বাড়ছে তাই না। আমি গালে হাত দিযে চোখের পানি ফেরতে লাগলাম মাটির দিক তাকিযে তখন মামা চেচিযে বলল,
----এখানে দাড়িয়ে আছিস কেন যা ব্যাগপত্র নিয়ে আজ আমার সাথে ময়মনসিংহ যাবি। এখানে আর এক মুহুতেও না..!
আমি ফুপাতে ফুপাতে বললাম,
----মামা আমি যাবো না।
তখনি মামা আমাকে মারতে হাত তুলরো রাহল ভাইযা মামাকে আটকিযে বলল,
---বোন আপাদত বাসা চল বাকি কথা পরে হবে।
আমি রাহুল ভাইয়ার দিক ছল ছল চোখে বললাম,
----ভাইয়া উনি দেশে নেই। আমি কিভাবে? তখনি বড় মামা বলে,,
----কেমন লজ্জা ছাড়া হেয়েছে। আমার সামনে এসব ন্যাকামি করছিস?  আয় তুই তোর কিছু নেয়া লাগবে না..!
বলে মামা আমার হাত টেনে বাহিরে নিয়ে যেতে লাগল, এর মাজে টিনা এসে বলল, 
----আঙ্কেল কিভাবে নিয়ে যাচ্ছেন কেন?
তখন মামা টিনাকে ধমক দিয়ে বলল,
----তোমরাই ওর মাথা খেয়েছো। ও এসব করছে তাতে সাত দিচ্ছিলে একবার আমাদের জানালে কি হতো? তোমার বাসায আমি বিচার দিব দাড়াও। বলে আমাকে টেনি নিযে যেতে লাগলম টিনা সেখানেই মন খারাপ করে দাড়িযে রইল।
আর আমি চিল্লিয়ে বলছি,
---আমি যাবো না মামা প্লীজ মামা। 
কিন্তু তারা কোনো কথাই শুনলো না।

ময়মনসিংহের বাসায় আসতেই মামা আমাকে রুমে নিয়ে লক করে দিলেন আর মামী আর ভাবীকে বললেন,
---আমি না বলা পর্যন্ত এ দরজা কেউ খুলবে না? তাহলে তার জন্য এ বাড়িতে জায়গা নেই। সবাই চুপ হয়ে গেল।
আর আমি দরজা ধাক্কাতে লাগলাম সবাইকে গলা ফাটিয়ে ডাকতে লাগলাম কিন্তু কেউ আসলো না..!  কেউ না..!আমি সেখানেই কাঁদতে কাঁদতে বসে পড়লাম।

—————

কপালে দু আঙ্গুল ঠেকিয়ে, পায়ের উপর পা তুলে সোফার উপর বসে আছে বারিশ। তার সামনেই চেয়ারের সাথে বাঁধা জেনি, আর ফুপি।তাদের মুখে ভয়ের ছাপ।বারিশ ছোট একটা শ্বাস নিয়ে বলে উঠে,

----যার বাসার খাবার খেলি তার ক্ষতি করতে একটু দ্বিধা হলো না?

জেনি ন্যাকা কান্না করে বলল,

----বিশ্বাস কর বারিশ আমি কিছু করি নাই। যা করেছে এই বুড়ি করেছে।আমি তোমাকে অনেক লাভ করি। আমি কি এসব করতে পারি বল..!তুমি তোমার জেনিকে তো চিনো তাই না..!!

-----ভালবাসা না পাছা দিয়ে ঠেলে দেব তোর ভালবাসা।ন্যাকামি  বন্ধ কর। একদম বন্ধ।

তখনি ফুঁপি পাশ থেকে খিস্তি দিয়ে বলল,

----হারামজাদী! তুই তো বড় শেয়ানারে! মিথ্যা বলে আরিশ বাবার কাছে আমাকে খারাপ বানাতে চাইচ্ছিস! এটা কখনো হবে না...।

তারপর বারিশের দিক তাকিয়ে হেজকি তুলে কান্না করে বলল,

----বাবা,  তুমি বিশ্বাস করতো তোমার ফুপিকে? এই ফুপি তোমাকে ছোট বেলায় এই হাতে কত ভাত খাওয়াইছি..!

বারিশ তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল,

-----বাহ্ এত দিন শুনেছি মানুষ নাকি গিরগিটীর মতো রং বদলায়। আজ দেখা হয়ে গেল।আলাদ দেখাও,  না। তা যে হাত দিয়ে বারিশকে ভাত খাইয়ে দিয়েছো, সেই হাত কাঁপে নাই একবারও বারিশকে খুন করার সময়?

এই কথা শুনার পর হকচকিয়ে যায় ফুপি।সাথে সাথে কঁপালে বিন্দু বিন্দু জমা হতে লাগলো ঘাম।আমতা আমতা করে বলে,,

----তুমিই তো বারিশ। আমার আব্বা বারিশ। আমি আবার তোমাকে মারবো অত সাহস এই বুড়ির আছে নাকি বল বাবা। তুমি মসকরা করছো তাই না। শেষের কথা টুকু হালকা হাসার চেষ্টা করে বলল।

তখনি জেনি বলল,

----আরিশ এই বুড়ি ধাম্রীর কথায় কান দিবে না। এই খাইশটা মহিলা নিজের হাতে শ্বাস আটকিয়ে মেরেছে।

ফুপি সাথে সাথে চিল্লিয়ে বলল,

-----মাগি তুই আমারে ফাসেয়তে চাইতেসোস..!

বারিশ এবার সটান হয়ে দাঁড়াল। তারপর তাদের সামনে এসে একজন গার্ডকে ইশারা করল। তারপর   ফুঁপি আর জেনিকে উদ্দেশ্য করে বলল,

-----তোরা  কতটা নিচ তা আমার জানা হয়ে গেছে। তোদের এ বাসায় যেদিন থেকে পা ফেলেছি সেদিস থেকেই অসহ্য লেগেছে। কেন লেগেছে? কারণটা আজ ধরতে পারলাম।শয়তানদের দেখলে আর কেউ না হোক মনটা ভাল করে বুঝতে পারে রে হারামির দল।

তারপর ফুপির পাশে গিয়ে বলল,

----দাদু তো আপনাকে নিজের মেয়ের জায়গায় বসিয়ে ছিল। আর আপনি? আপনি তার শেষ বয়সের সম্বল তার চোখের মনি আরিশকে মেরে দিলেন? কেমন মা আপনি? কারো সন্তানকে মারতে হাত কাঁপলো না? আপনাকে চৌরাস্তার মোরে দাড় করিয়ে কংকর মারা উচিত।

এবার জেনির সামনে গিয়ে ঠাসস করে থাপর মেরে দিল। তারপর বলল,

-----তোরে তো আমার এই মুহুর্তে দুই পা টান দিয়ে চিড়ে ফেলতে ইচ্ছা করছে। তুই কেমন মেয়ে হে? তোর থেকে ব্যশ্যা পাড়ার মেয়েরাও শত গুনে ভাল।তোদের মতো মেয়েদের জন্য পুরো মেয়ে জাতীর নাম বদনাম।

কিছুক্ষণ পর গার্ড আমলো তার সাথে লেডি পুলিশ। পুলিশ দেখেই কান্নায় ভেঙ্গে পরলো দুজন।আর বলতে লাগলো মাফ করে দিতে। পুলিশদের মদ্য একজন অফিসার আসতেই তার হাতে দুটো পেইনড্রাইভ এগিয়ে দিয়ে বলল,

----মেম একটিতে বারিশকে মারার ভিডিও আর একটিতে আজকে দাদুকে মারতে ট্রাই করেছিল তার ভিডিও।

পুলিশ বলল,

---- আমি যথা সম্বভ চেষ্টা করবো তাদের কঠিন শাস্তি হোক।বলে চলে গেলেন।

সবাই যেতেই সোফার উপর বসে পরে বারিশ। এ চাপ্টার শেষ হলেও মাথায় এখন চলছে অন্য চিন্তা সেদিন কুহুর সাথে কথা বলার পর থেকে কুহুকে ফোনে আর পাচ্ছে না।টিনার সাথে কথা বলে জানতে পেরেছে কুহুকে তার মামা টেনে হিচরে নিয়ে গিয়েছে। এখন তার লক্ষ কুহু। বারিশ জানে না কুহু কেমন আছে? ওর মা ওকে কিছু করেনি তো আবার? নাহ আর সময় নষ্ট করা যাবে না। এখনি বের হতে হবে তাকে। এই ভেবে উঠে দাড়ালো বারিশ আর চলে গেল তার গাড়ির উদ্দেশে।
------------------------------------
কুহুর বড় মামা আর আশিক মুখোমুখি  বসে আছে স্টাডি রুমে। তখন কুহুর বড় মামা বলে উঠে,

-----তো তুমি কুহুকে বিয়ে করতে চাও!

আশিক মুচকি হেসে বলল,

-----যে কোনো মূল্য আঙ্কেল।

মামা কিছুক্ষণ চিন্তা করলেন। তারপর বললেন,

----ঠিক আছে। কিন্তু আমার একটা শর্ত আছে?

----আমি যে কোনো শর্তে রাজি আঙ্কেল।

----আগে শুনেতো নেও..?

----বললামতো আমি রাজি।

----ঠিক আছে। বলে একটি কাগজ এগিয়ে দিয়ে বললেন,
----এখানে সাইন কর!

আশিক হালকা ভ্রু কুচকে বলল,

----এটা কিসের পেপার আঙ্কেল।

-----প্রপার্টির পেপার।

----ঠিক বুঝলাম না।

----বলছি। এখানে লিখা আছে, যে বিয়ের পর কুহুর সহায়সম্পদের উপর তোমার কোনো ইচ্ছে নেই।তুমি সেচ্ছায় তা আমার নামে করে দিচ্ছো।

এ কথায় মুচকি হেসে সাইন করে বলে উঠে আশিক,,

-----এ সবে আমার এমনিতেও কোনো ইন্টারেস্ট নেই।আমি শুধু কুহুকে চাই। আল্লাহর রহমতে আমার কম তো কিছু নেই।

এবার যেন মামা শান্তি  নিশ্বাস নিলেন।
তখন আশিক বলল,
----বিয়েটা আমি আজ আর এই মুহুর্তে করতে চাই। আর তার আগে ওর সাথে দেখা করতে চাই।

মামা হাসি হাসি মুখে বলল,

----কুহু তোমার যা ইচ্ছে কর।আমার কোনো বাঁধা নেই।

আশিক বের হয়ে গেল রুম থেকে। তখনি রুমে ঢুকলেন মামি।আর বলতে লাগেন,,

-----এসব কি করছো তুমি?

মামা গম্ভীর কন্ঠে বলল,

----যেটাতে আমার ভাল।

----আমি এসব কিছু হতে দিব না। কুহু বিবাহিত।

----তো?

----তো মানে? ওর সাথে তুমি এটা কিভাবে করতে পারো? ওকে আমরা ামাদের মেয়ের মত মানুষ করেছি? ওকে তো ছেড়ে দেও। নয়তো?

ভ্রু কঁচকে বললেন মামা,
-----নয়তো কি?

চোখ মুখ শক্ত করে বললেন মামি,
----আমি সবাইকে সব বলে দিব?

বলেই মামি বাহিরে পা বাড়াতেই। মামা পিছন থেকে মামিকে ফুলের টব দিয়ে বাড়ি মারে সাথে সাথে মাটিতে লুটিয়ে পরে তিনি। মাথার পিছন থেকে রক্ত পরে ভেসে যাচ্ছে ফ্লোর।  তখন মামা বাঁকা হেসে মামির কাছে বসে। মামি এখনো আধ আধ চোখ খোলা।মামা সে হাসি ধরে বলতে লাগে,

----আমার পথে যে কাঁটা হবে তাকে আমি ছাড়ি না। সে আমার মা, ভাই, ভাইয়ের বউ, আর তার ছেলে হোক না কেন। টাকা আমার সব।  টাকা থাকলে বাগের চোখও পাওয়া যায়। আর তোমাকে মারতাম না তুমি সব সময় কানের কাছে পেক পেক কর তাই তোমাকে মেরে দিলাম।
এবার শান্তি।তোমারো আমারো। মামি ততক্ষনে চোক বন্ধ করে ফেলেছেন।
----------------------------------
কুহু খাটের মাঝে হাটুতে মাথা গুঁজে কান্না করছে। তখনি আশিক রুমে ঢুকলো। দরজার আওয়াজে চোখ মেলে তাকায়  কুহু। আশিককে দেখে মাথায় রাগ চেপে বসে তার। সাথে সাথে উঠে কলার চেপে ধরে বলে কুহু,

-----তুই আমার বাসায় কেন? বের হো।  তোর মুখ দেখতে চাইনা আমি। তুই একটা শয়তান।

আশিক মুচকি হেসে। তার কলার থেকে হাত নামিয়ে তার হাতে মুঠে আবদ্ধ করে বলে উঠে,,

----আমার এ মুখ যেন তুমি প্রতিটি সময় দেখতে পারো তার ব্যবস্থা করতেই এসেছি।

কুহু ভ্রু কুঁচকে বলল,

-----মানে?

আশিক আলতো করে কুহুর গালে স্পর্শ করে বলে উঠে,
-----মানে তুমি আর কিছুক্ষণের আমার অর্ধাঙ্গিনী হতে চলেছো।

আশিকের কথায় চোখ বড় বড় করে তাকায় কুহু। আশিক এখনো মুচকি হাসচ্ছে। এ হাসি যে পুরো শরীর জালিয়ে দিচ্ছে তার।সাথে কষে চর মারলো আশিককে। আর বলতে লাগলো,
-----তোর মত প্রতারককে করবো আমি বিয়ে কখনো না। বের হও আমার রুম থেকে এখনি।

থাপর খেয়ে মাথা রক্ত উঠে যায় আশিকের। সে নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে।  কুহুকেও মারলো চর।তারপর দু বাহু চেপে ধরে বলল,
-----আজ এ দুঃসাহস করেছিস তো করেছিস এর পর এমন করলে জানে মেরে ফেলবো তোকে।

কুহু যেন থাপর খেয়ে তবদা হয়ে গেছে। কি করবে এই মুহুর্তে কি বলবে মাথা আসচ্ছে না।তখনি আশিক কাউকে বলল,
----ভিতরে আসুন।

সাথে সাথে দুটো মেয়ে এসে হাজির।

----ওকে রেডি করিয়ে দিন ৩০ মিনিট সময়। বলে বের হয়ে গেল আশিক।

মেয়ে গুলো কুহুকে অনেক ট্রাইক করলো কিন্তু ব্যর্থ। এই মেয়ের মাঝে একটি বলল,
----স্যার কে ডেকে আন।
মেয়েটি চলে গেল। তখন কুহু ওই মেয়েটিকে বলল, 
ওয়াশরুম থেকে তাকে তয়লা এনে দিতে। 
মেয়েটি যেতেই বাহির দিক দিয়ে দরজা লাগিয়ে দিল কুহু। আর আশিকের দিয়া বিয়ের শাড়ি বলকনির স্টিলের সাথে বেঁধে তা দিয়ে নিচে নেমে দিল ভৌ দৌড়। 

দৌড়াতে দৌড়াতে মেন রোডে এসে পরে কুহু। সেখানের আশেপাশে তাকাতেই চোখে পরে বারিশকে যে ফোন বের করে কি জানি দেখাচ্ছিল দোকানদারকে।কুহু শইতে না পেরে বারিশ বলে জোরে ডাক দেয়। বারিশ সেদিকে তাকাতেই স্তব্ধ হয়ে যায়। মুখে ফুঁটে উঠে মৃদু হাসির ঝলক।সাথে সাথে দৌড়ে চলে আসে কুহুর কাছে। যখনি কুহুকে জড়িয়ে ধরবে নিজের বাহু ডোরে তখনি...ঠাসসসস...!!!!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন