তিতির ফক্কিনির বাচ্চা আর তুমি মনে হয় জমিদারের বাচ্চা তাই না বাতাসি! কথা গুলো বলেই মাহাদ পিছন থেকে বাতাসির সামনে এসে দাড়াল।"
বাতাসি পিছন ফিরে চমকে উঠল। বাতাসি স্বপ্নেও ভাবেনি মাহাদ এতদুর পর্যন্ত খোঁজ রাখবে।
তুই এখানে কি করোস মাহাদ?"
ঃ-" আমি কি করি সেটা দেখার বিষয় না। তুমি তিতিরকে এখানে এনে কি দরবার বসাইছো সেটাই আসল কথা! ও কাঁদছে কেন?"
ঃ-" ও কেন কাঁদছে আমি কিভাবে কইবো। ঐ ছুড়ি আমি তোরে কিছু কইছি বলেই বাতাসি কঠিন চোখে তিতিরের দিকে তাকালো।"
ঃ-" বাতাসি খুব ভুল করছো ওর সাথে লেগে। ও নিশ্চয় মনে সুখে আর কাঁদছেনা! তুমি অবশ্যই ওকে শাসন করেছো আমার ঐ কথার ভিত্তিতে তাইনা! তোমাকে আমার বলা উচিত হয়নি। বলে যখন ফেলেছি তখন এর ব্যবস্থা নিয়েই ছাড়ছি।
তোমারে তো আজ দেখেই ছাড়বো। আগেই বলছি তোমার পাগলামি বাসার সবার সাথে চালালেও আমার কাছে কিন্তু চালাইবেনা। সেই একই ভুল তুমি আবার করলা!"
ঃ-" ঐ ছুড়ি কথা কস না ক্যান! বল আমি তোরে কি কইছি? নাটকতো দেখছি তুই কম জানিস না! মুখে কি কুলুপ এঁটে দাড়াইয়া রইছোস?"(বাতাসি)
ঃ-" দাদী আমাকে কিছু বলেনি। আমার মায়ের কথা খুব মনে পড়ছে। যদি বাসায় যেতে পারতাম তাহলে খুব ভাল হত।"(তিতির)
ঃ-" দেখছোস আমি ওরে কিচ্ছু কইনি। শুধু শুধু আমার উপর চেতোস।"
ঃ-" কি হইছে না হয়নি সেটা এবার আমি দেখবো।তিতির বাহিরে উত্তর কোনায় যে ব্লাক কালার কার আছে ওখানে গিয়ে বসো। আমি ১০ মিনিটের মধ্য আসছি।
এখুনি যাও। আমি কিন্তু বেশি কথা বলা একদম পছন্দ করিনা।"(মাহাদ)
তিতিরের মন চাচ্ছে এখুনি ছাদ থেকে ঝাঁপ দিতে। এরা পাইছেটা কি! আমি কি মানুষ না? আমারও তো সম্মান বলে কিছু আছে নাকি! যা বলবে তাই শুনতে হবে!
আমার কি অভিমান থাকতে পারেনা? সব সময় আমিই কেন সার্কিফাইস করবো?
কিন্তু কথা বাড়ালেই আরো কথা বাড়বে তাই তিতির হাতের উল্টা পিঠ দিয়ে চোখ মুছে মাহাদের কথা মেনে চলে গেল।
তিতির চলে যেতেই মাহাদ ক্ষেপে উঠল। তুমি দু'তলাতে উঠতে পারোনা বলে বাবার সাথে সেদিন খুব ঝগড়া করছিলা তাইনা! আমার বাবা তোমাকে প্রচন্ড সম্মান করে বলে তোমার মত বাতাসিরে সে হজম করে। কিন্তু আমাকে ভুলেও ওমন ভাববানা। দু'তলা তে উঠতে পারোনা কিন্তু তিকিরকে বকাঝকা করার জন্য ঠিকি ছাদে আসতে পারো তাইনা? তোমার ভিমরতি যদি আজ আমি না ছুটাইছি তাহলে আমিও তোমার নাতী না। চল নিচে বলেই বাতাসির হাত ধরে নিচে টেনে নিয়ে এল মাহাদ।
দেখ মাহাদ ভাল হবেনা কিন্তু! তুই আমায় কই নিয়ে যাচ্ছিস? আমি কিন্তু বাড়ির সগ্গলরে বলে দিমু তোর আর ঐ মাইয়ার পীরিতের লীলা। তখন কিন্তু সব শেষ হইয়া যাইবো। তাই ভালয় ভাল আমায় ছেড়ে দে।
আমার ভাল হবে কি মন্দ হবে সেটে আমি জানিনা। কিন্তু তোমার আর কারো ভাল করতে হবেনা বলে মাহাদ সোজা ওর রুমে ঢুকে কিছু কাগজ পত্র বের করে এবার বাতাসিরে কোলে নিয়েই নিচে নামল। বাতাসি তো আর কম না। তাই রিক্স না নিয়েই মাহাদ ওকে ওভাবেই নিচে নামিয়ে নিয়ে বাহিরে চলে গেল।
ভয় কাকে বলে এবার বাতাসি বুঝে গেছে। আধা কান্না করে বলল -" ভাই আমারে কই নিয়ে যাস্! আমি কিন্তু এত তাড়িতাড়ি তোর দাদার কাছে যাইতে পারমু না। আমারে ছাইড়া দে।
বাসার সবাই রিতিমত অবাক হয়ে গেছে মাহাদ আর বাতাসির কর্মকান্ডে। আর যাই হোক রুমকি বেশ খুঁশি। বুড়ি নিশ্চয় দোস করছিস। এবার শক্ত হাতে পড়ছিস। তোর ব্যান্ড বাজাবে মাহাদ। সাবিনা তো হাত তালি দিয়ে উঠল সবার সামনে। ভাইজান সেই হচ্ছে। দাদী এবার বুঝবে ঠেলার নাম বাবাজি।
লাবীবা আর রুপালী পিছন থেকে অনেকবার চিল্লাচাটি করে বলল -" মাহাদ আম্মারে কই নিয়ে যাচ্ছিস?"
ঃ-"তোমাদের আম্মারে জাহান্নামে নিয়ে যাচ্ছি বলেই মাহাদ বাতাসিরে নিয়ে এসে গাড়িতে তুলেই পিছনে চেক করল তিতির আছে কিনা! সব ঠিক দেখে গাড়ী স্টার্ট দিয়ে অজানা পথে রওনা দিল ।"
♦♦♦♦♦♦♦♦♦
২০ মিনিট হল বাতাসি বিবি মাথা নিচু করে বসে আছে। বাতাসি তো বসে থাকার মানুষ নয় তাহলে ওমন করে বসে আছে কেন! কারনটা হল মাহাদের ১২ টা ফ্রেন্ড বাতাসিকে মধ্য রেখে গোল হয়ে বসে গল্পগুজব করছে। সেই লজ্জায় বাতাসি মাথা নিচু করে বসে আছে। এতগুলো পুরুষের মাঝে বাতাসি মাথায় তুলতে পারছেনা। বাতাসিকে কিভাবে টাইট দিতে হয় সেটা মাহাদের থেকে আর ভাল কেউ জানেনা।
মাহাদ তিতিরকে নিয়ে কিছু দুরে দাড়িয়ে ফুয়াদকে কল দিল।"
ঃ-" হ্যালো মাহাদ! কেমন আছিস?"
ঃ-" ভাইয়া নিসাকে নিয়ে আসতে পারবা? একটু দরকার ছিল।"
ঃ-" নিসা তো নেই। ওর বাবার বাসায় গেছে। আমি অফিসেই আছি এখনো বাসায় যাওয়া হয়নি। খুব কি জরুরি!"
ঃ-" খুব জরুরি ভাইয়া। নিসা থাকলে আরোও ভাল হইত। লোকেশানটা বলে দিয়ে মাহাদ কল কেটে দিল।"
♥
ঃ-" আপনি কি করতে চাচ্ছেন বলুন তো!"
ঃ-" তিতির তুমি আমার সম্পদ ও সম্পত্তি দুটাই! তুমি আমার জন্য বরাদ্দ জমিন। যেখানে আমি যখন ইচ্ছা তখন চলাচল করতে পারি। আমি তোমাকে কোন অবস্থায় হারাতে চাইনা কথাগুলো এক নিঃস্বাসে বলেই থেমে গেল মাহাদ। "
ঃ-" তিতির প্রচন্ড বুদ্ধিমতি একটা মেয়ে তাই সহজেই সব কিছু ধরে ফেলল নিমিষেই।
বাবা-মার ভালবাসা যে কতটা অমূল্য সেটা তিতির ভাল করেই বোঝে। সাথে সাথে মাহাদের কথার প্রতিবাদ জানিয়ে বলল-" আমি বাসায় যাবো। "
ঃ-" বাসায় যাবা কিন্তু আমার সাথেই কিছু কাজ সমাধান করে তারপরই যাবা। আর একটা কথাও শুনতে চাইনা।"
ঃ-" আমি বলছিনা আমি বাসায় যাবো! কতবার বলতে হবে আপনাকে! সহ্যর একটা সীমা আছে। আমারও বাড়াবাড়ি একদম পছন্দ না।"
ঃ-" সবার সামনে তিতিরের এমন বাজে ব্যবহার মাহাদের আর সহ্য হলনা। একটা রুমের ভিতর টেনে নিয়ে গিয়ে বলল -" আর একবার বল কি বললি?"
ঃ-" আমি বাসায় যাবো।"
ঃ-" মাহাদের চোখ লাল হয়ে গেল নিমিষেই। মাহাদ তিতিরে ঠোঁটের দিকে তীক্ষ্ণ মনযোগ দিয়ে তাকালো যা রিতিমত ভয় পাইয়ে দিল তিতিরকে।"
ঃ-" এই আপনি এভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন কেন? আপনার মতি গতি ঠিক লাগছেনা। আপনার কি আমাকে রেপ টেপ করার চিন্তা ভাবনায় আছে নাকি!"
ঃ-" হুম প্রয়োজন হলে সেটাও করবো। আমার কথা না মানলে সেটাও বাদ যাবেনা। তিতির মাহাদকে একটু বেশিই ভয় করতে শিখ। মাহাদ মোটেও অপমান আর অবহেলা সহ্য করতে পারেনা।"
ঃ-" তিতির চট করে মাহাদকে জড়িয়ে ধরে বলল-" কালকে আমাকে মারলেন কেন? আমার বুঝি কষ্ট হয়না?"
ঃ-" আজ যদি কথা না শুনিস তাহলে দরজা বন্ধ করে মারবো। তখন কিন্তু একটু বেশিই মার খাবি। এখানে কেউই তোরে বাঁচাতে আসবেনা। একদিন ম্যার খাইলেই পরের দিন এমনি সোজা হয়ে যাবি।"
ঃ-" তিতির আর কথা বলেনা। এই কয়দিনে ও মাহাদকে বেশ চিনে গেছে। মাহাদ এক কথার মানুষ।ওর কথার বিরুদ্ধে যাওয়া মানেই যুদ্ধ ঘোষনা করা। "
♦♦♦♦♦♦♦♦
-" আরো আধাঘন্টা পর ফুয়াদ চলে আসল। প্রথমে ব্যাপারটা বুঝতে পারেনি কিন্তু পরে সব বুঝতে পেরে বলল-" মাহাদ কাজটা কি ভেবে চিন্তে করছিস?"
ঃ-" সব ভেবেই করছি। দেখছোনা বাতাসিরে সঙ্গেই নিয়ে আসছি।
বাতাসি ফুয়াদকে দেখেই চিৎকার করে উঠল -" তুই.....! তুই এখানে কি করছিস? প্রতিশোধ নিচ্ছিস! সব তোর বুদ্ধিতে কাজ হচ্ছে তাইনা!"
ঃ-" ভাইয়ার বুদ্ধিতে কেন! তোমার বুদ্ধিতে সব হচ্ছে। একটু সবুর করো বাতাসি! সবুরে মেওয়া ফলে।
-"মাহাদের সব ফ্রেন্ডরা মিলে সব কাজ কমপ্লিট করে রেখেছে। কাজী, মোওলানা সহ আরো দুজন কাগজ পত্র নিয়ে বসে আছে। মাহাদের এক ফ্রেন্ডের বাসায় বিয়ের সব কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে।"
ঃ-" মেয়ের পক্ষে থেকে কে কে সাক্ষী আছেন বলতেই মাহাদ বাতাসীরে দেখে দিয়ে বলল-" মেয়ের দাদী সয়ং এখানে উপস্থিত আছে। উনিই মেন সাক্ষী। রিয়াদ দাদীর হাতের ছাপ নে তো?"
ঃ-" মাহাদ শেষে আমারে ঐ ছুড়ির দাদী বানাইয়া দিলি? আমি তোর কেউ না! ও আমার কামু রে............
দেখে যা বাপ, তোর দুইডা দামরা পোলা মিলে আমার ইজ্জত কিভাবে নিচ্ছে। "
ঃ-" মাহাদ জোড়ে একটা ধমক দিয়ে বলল-" তোমার আবার ইজ্জত কে নিচ্ছে বাতাসি! ইজ্জত নেওয়ার মত তোমার শরীরে এখনো অবশিষ্ট কিছু আছে নাকি তাই ইজ্জত নিব!
ঃ-" জুয়ান বয়স থাকলে কম করতিনা। কামু আর লাবীবা দুই দুইডা লুচ্চারে জন্ম দিছে। আমারে ছাইড়া দে কইচি। আমার মন আর দেহ দুইডাই ছাইড়া দে ভাই।
বাতাসির কথা শুনে রুমের সবাই হেঁসে অস্থির হয়ে গেল। সরোয়ার আর ওর ওয়াইফ নুসরাত হাঁসিতে গড়াগড়ি দেওয়ার মত অবস্থা।
ঐ তোরা সবাই আমায় সার্কাসের বান্দর পাইছোস তাই এমন করে হাসিস!
-" মনে পড়ছে বাতাসি! ভাইয়ার বিয়ের কথা শুনে তুমি কেমন রিয়াক্ট করছিলা? সেদিন যদি বাবাকে একটু বুঝাইয়া বলতা তাহলে এতকিছু হত না। সব নষ্টের মূল তুমি। তাই তোমাকে দিয়েই এমন আরও একটা বিয়ের সাক্ষী করে রাখবো। যাতে তোমার উচিত শিক্ষা হয়। বাসার এমন পরিস্থিতির জন্য তুমিও কম দায়ী না।"
ঃ-" ফুয়াদ একটা মুচকি হাঁসি দিয়ে বলল-" মাহাদ তুই পারিস ও বটে। তা মেয়ে কোথায়?"
ঃ-" তিতির কিছুটা দুরে মাথায় কাপড় দিয়ে দাড়িয়ে আছে। বুকের ভিতর অজানা ভয়ে শরীরটা বার বার কেঁপে উঠছে। মাহাদ সব বুঝতে পেরে তিতিরের কাছে এসে নিচু গলায় বলল-" তিতির......! মাঝে মাঝে তুমি আমার খুব কাছে আসতে চাও; সেটা বৈধ্য করতে হবেনা? তাই এই ব্যবস্থা। "
ঃ-" তিতির সাথে সাথে মাহাদের হাত চেঁপে ধরে বলল-" আমি এভাবে কিছুই চাইনি। আপনি ভুল করছেন? কাউকে ঠকিয়ে সুখী হওয়া যায়না।"
ঃ-" আমার জিবন আর সেটা আমি কিভাবে চালাবো সেটা শুধু মাত্র আমারই অধিকার আছে তাই কথা বাড়িও না। ভাইয়া আছে, এ্যাট লাষ্ট তার সামনে আমাকে অপমান করোনা তিতির।"
তিতির কেমন আছো বলেই ফুয়াদ এসে তিতিরের সামনে দাড়ালো।
মাহাদ এটাই কি সেই মেয়ে! যার কেসের ব্যাপারে আমার সাথে কথা বলেছিলি! আমি কি জানতাম এটাই তোর পছন্দের পাত্রী! আগে জানলে চেয়ারম্যান কে আরো অপদস্ত করতাম।"
ঃ-" তিতির সালাম দিয়েই বলল-" আলহামদুলিল্লাহ্ ভাল আছি। আপনি কেমন আছেন? বাসার সবাই কেমন আছে?"
ঃ-" তিতির তুমি কি জানো উনি তোমার নিজের ভাসুর হোন। মাহাদের বড় ভাই ফুয়াদ ভাইয়া বলে মাহাদের আর এক ফ্রেন্ড আশিক এসে দাড়াল।"
ঃ-" তিতির এতদিন ধরে আছে বাসায় আর সে জানেইনা মাহাদের আরও একটা ভাই আছে। তাকে নিয়ে কখনো আলোচনাই করা হয়না বাসায়।"
-" বাতাসির চিল্লাচাটির মধ্যই মাহাদ আর তিতিরের বিয়ের কার্য শেষ হয়ে গেল। বাতাসি ফুয়াদের সাথে আর একটা কথাও বলল না। ফুয়াদ অনেক কথা বলল কিন্তু বাতাসির মুখ দিয়ে একটি কথাও বের হলনা।"
♦♦♦♦♦♦♦♦
-" মাহাদের বিয়ে উপলক্ষ্য ফুয়াদ রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার অর্ডার করে সবাইকে খাওয়ার নিমন্ত্রণ করলো। ভবিষ্যত টা হয়ত খারাপ হবে তাই বলে এখনকার আনন্দ নষ্ট করার কোন মানেই হয়না। আজ অনেক দিন পর দাদীর সাথে খাবার খাওয়াটা মিস করতে চায়না ফুয়াদ।"
ঃ-" বাড়িত খালি চল, আজ তোরে যদি নাক ছিছুড় না দিয়াইছি মাহাদ তাহলে আমিও ইমতিয়াজ চেয়ারম্যানের বউ না।"
ঃ-" সবাই মজা করে খাচ্ছে । সারপ্রাইজেরর উপর সারপ্রাইজ দিয়েই যাচ্ছে মাহাদ। গতকালের থাপ্পড়ের কথা মনে করার আর সুযোগই দিল না মাহাদ তিতিরকে।
ভাইয়া দাদীকে তোমাদের বাসায় নিয়ে যাও। আমাদের আসতে একটু দেরী হবে।(মাহাদ)
ঃ-" আমি যামুনা। আমারে বাড়ীত লয়ে চল মাহাদ। আমারে অনেক অত্যাচার করছো আর কিন্তু সহ্য করমু না।"
ঃ-" বাতাসি যদি বাসায় গিয়ে মুখ খুলছো তাহলে তোমারে কান্দিয়ে ছেড়ে দিব। কারন আগে কিন্তু তুমি ফাঁসবা। তোমার হাতের ছাপ নিয়েছি সাদা কাগজে। যা বলবা হুস করে বইলো। বৃদ্ধ বয়সে জেলের ভাত খাওয়ার যদি সখ থাকে তাহলে সবাই কে ঢাক ঢোল পিটিয়ে বলে বেড়াইও।"
ঃ-" আমারে ভয় দেহাস্। আমি ভয় পাচ্ছিনা। চল একবার বাড়িতে তারপর দেখিস আমি কি করি।"
ঃ-" আমি কি জিনিস সেটা তুমি ভাল করেই জানো। তিতিরকে বকাবকি করার জন্য যদি এতকিছু করতে পারি তাহলে নিজের স্বার্থের জন্য এই মাহাদ কি করতে পারি সেটা একবার ভাবো। এই কথাগুলো মাথায় ঢুকে নাও।
ভাইয়া তাহলে তোমার বাসায় আর যাবোনা। এমনি আজ অনেক দৌড়াদৌড়ি করা হয়েছে। আজ বরং বাসায় চলে যাই। বাতাসির উপর দিয়ে কম ঝড় যায়নি। ওনার রেষ্ট দরকার বলে ওখান থেকে মাহাদ তিতির আর বাতাসিকে নিয়ে বাসায় রওনা দিল।"
♦♦♦♦♦♦♦♦♦
-" মাহাদকে প্রায় ৫০ বার কল করা হয়েছে বাসা থেকে কিন্তু সেদিকে মাহাদের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। রাত ২ টার দিকে বাসায় হাজির হয় ওরা।
বাসায় ঢুকেই ৩ জন দেখল ডাইনিং রুমে সবাই বসে টেনশন করছে শুধু কামরান আর রেজওয়ান ছাড়া। "
ঃ-" লাবীবা সোজা এসে মাহাদের গালে চড় বসিয়ে দেয়। তারপর শার্টের কলার ধরে হাউমাউ করে কেঁদে উঠল। কতবার তোকে কল দিয়েছি? একবারও রিসিভ করতে তোর মন চায়নি? আমার চিন্তা হয়না! আমার কষ্ট হয়না? কেন এত কষ্ট দিস আমাকে?"
-" মা ফুয়াদ ভাইয়াকে এভাবে তোমার মনে পড়ে না? তোমার কি একবারও চিন্তা হয়না! তোমার ছেলে কতবড় রিক্সের কাজ করে যেখানে সর্বদা মৃত্যুর ভয় তাকে তাড়িয়ে বেড়ায়! তার শত্রুর অভাব নাই। তোমার একবারও মনে পড়েনা সে যেকোন মূহুত্তে রাস্তায় দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে পারে। তার একটা ৩ বছরের মেয়ে আছে তার কথা তোমার ভাবনায় ছেদ পড়েনা!
এভাবে মানুষ দেখানো ভালবাসা আমাকে একদম দেখাতে আসবেনা। আমার নামই মাহাদ। যার অর্থ মৃত্যু। আমাকে নিয়ে তোমার এত ভাবতে হবেনা। যে নিজের সন্তানকে ভুলে যেতে পারে তার জন্য সব কিছু ভোলা সহজ।
তিতির আপনি আপনার রুমে চলে যান। এখানকার কাজ আপাতত শেষ। আপনাকে আর কোন দরকার নেই। এদের প্রশ্নর জবাব দেওয়ার জন্য বাতাসি তো রয়েছে।"