উপল নূড়ি - পর্ব ০২ - সুলতানা পারভীন - ধারাবাহিক গল্প


০৩!!

উপল নূড়ি আজ যেন উৎসবের আমেজে সাজছে। তানিশা আর জীবন দুজনেই অফিস থেকে ছুটি নিয়েছে বাড়িটা সুন্দর করে গুছিয়ে রাখার জন্য। বাবা মায়ের পছন্দ মতো করে বাড়িটা সাজানোর চেষ্টা করছে ওরা। যাতে অন্তত কোন খুঁত থাকার কারণে তানিশাকে বাবার কাছে অপমানিত হতে না হয়। হ্যাঁ। আজ জীবনের বাবা মা আসবে। এই পুরো মাস জুড়ে চেষ্টা করে, কান্নাকাটি করে, রীতিমতো ব্ল্যাকমেইল করে তবেই জীবনের মা জীবনের বাবাকে উপল নূড়িতে আসতে রাজি করাতে সমর্থ হয়েছে। এখন সবাই মিলে দোয়া করছে যেন কোন গোলমাল না হয়। 

তানিশা ঢিপঢিপে বুকে কাজ করছে। জীবন একটা ফুলদানি ড্রইং রুমে নিয়ে রাখতে এসে দেখলো তানিশা কাঁপা হাতে ফটো এ্যালবামগুলো ঠিক করে মুছে দেয়ালে টাঙাচ্ছে। জীবন হাতের ফুলদানিটা রেখে তানিশাকে জড়িয়ে ধরে কাঁধে মাথা রাখলো।

-এই তানু? কি হয়েছে? এমন করছো কেন? 

-তুমি? ওহ! এভাবে ধরে কেউ! উফফ!

-আরে বাবা! কি হয়েছে? এমন কাঁপছিলে কেন? 

-জীবন? আমার না ভিষণ ভয় করছে। বাবা এলে কি যে হবে!

-কি হবে ম্যাডাম?

-বাবা যদি কিছু নিয়ে আবার রেগে যায়! 

-আরে পাগলি! রিল্যাক্স? টেইক এ ডিপ ব্রেথ। নাও নাও? রিল্যাক্স লাগবে---।

তানিশা বুক ভরে শ্বাস নিয়ে আস্তে আস্তে শ্বাসটা ফেললো। জীবন আলতো করে তানিশাকে নিজের দিকে ফিরিয়ে কপালে চুমো খেল।

-শোনো? এতো টেনশন করে তো কিছু হবে না তাই না? বাবা মা আসুক। তারপর যা হবে দেখা যাবে। তুমি আমি যতটুকু পারি করব তো তাই না? এর বেশি আউট অব দা বক্সে গিয়ে তো কিছু করা পসিবল না বলো? 

-এই? তুমি ড্রাইভারকে কল করেছ? এতো দেরি হচ্ছে কেন আসতে?

-তানু?

-আরেকবার কল করে দেখো তুমি। ইশ! আমার কতো কাজ বাকি এখনো। আর বাবার জন্য একটু পায়েস করেছি। সেটা কেমন হয়েছে---।

-তানিশা? রিল্যাক্স। এভাবে টেনশন করলে সব আরো বেশি এলোমেলো হয়ে যাবে। এর চেয়ে ধীরে সুস্থে কাজ করো-। 

-কিন্তু---।

-শশশশশশ। চুপ। তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও যাও। মাথা থেকে টেনশনটা আপাতত ঝেড়ে ফেলো। সব কিছু ঠিকমতো হবে ম্যাডাম। নো টেনশন-।

-হুম। তাই যেন হয়--।

জীবনের বাবা মা আসতে আসতে দুপুর হয়ে গেল। জীবনের বাবা গাড়ি থেকে নেমে বাড়ির গেইটটা ভালো করে খেয়াল করলেন, বাড়ির নেইম প্লেটে "উপল নূড়ি" দেখে খানিকটা বিরক্ত হয়ে ভ্রু কুঁচকে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকলেন। মেইনডোরে এসে কলিংবেল বাজাতেই জীবন এসে দরজাটা খুলে দিলো। বাবা মাকে দেখে সালাম করলো জীবন।

-তানু? কই গেলা? দেখো আব্বু আম্মু চলে আসছে---।

-আসছি।

তানিশা তাড়াহুড়ো করে এসে শ্বশুর শাশুড়িকে সালাম করলো। জীবনের মা তানিশার মাথায় হাত বুলিয়ে দোয়া করলেন। আর জীবনের বাবা বিরক্ত হয়ে 'হয়েছে হয়েছে থাক থাক' বলে একটু উশখুশ করলেন। তানিশা সরে দাঁড়াতেই জীবনের বাবা বিরক্ত হলেন।

-এখানে দরজার সামনেই দাঁড়িয়ে কথা বলতে হবে? নাকি চলে যাবো?

-না না বাবা। সরি। ভেতরে আসুন আপনারা?

-হুম---।

জীবনের বাবা মা ড্রইং রুমের সোফায় বসে আশেপাশে চোখ বুলিয়ে দেখলেন। ড্রইংরুমের দেয়ালের একটা অংশ জুড়ে জীবনের আর তানিশার ছবি দিয়ে সাজানো। জীবন আর তানিশার আলাদা আলাদা ভিন্ন ফ্যামেলি পিকচার, জীবনের স্কুল জীবনের ছবি, বাবা মায়ের সাথে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ছবি, তানিশার স্কুল, ক্যাম্পিং এসবের ছবি, ওদের বিয়ের ছবি। তানিশা ঢোক গিলে শ্বশুরের মুখভঙ্গি দেখছিল। হঠাৎ কি খেয়াল হতে উঠে দাঁড়ালো।

-এই তানু? কই যাও?

-না মানে! আমি নাস্তা কিছু নেই বাবা মায়ের জন্য---।

জীবনের বাবা তাচ্ছিল্যের একটা হাসি দিলেন। 

-এখন নাস্তার সময়? ২ টো বাজতে চললো?

-না মানে বাবা! আপনারা ফ্রেশ হয়ে আসুন? আমি খাবার-খাবার নিচ্ছি---।

-হুম--। 

-এই? তুমি বাবা মাকে রুমে নিয়ে যাও---। আমি ডাইনিল টেবিলে খাবার নিচ্ছি---।

-ওকে---। বাবা এসো? মা এসো?

জীবন বাবা মায়ের ব্যাগ নিয়ে একটা বড় রুমে গেল। সাথে জীবনের বাবা মাও গেলেন। রুমটার চারদিকে একবার চোখ বুলিয়ে দেখলেন জীবনের বাবা। কিছু বললেন না। রুমটা সুন্দর সাজানো গোছানো। আলাদা করে আলমারি, ছোট্ট একটা বুকশেলফ, একটা টেবিল, বেড সাইড টেবিল আছে রুমটায়। 

-বাবা? আসতে কোন সমস্যা হয়নি তো তোমাদের?

-তোমার বউ তো গাড়ি পাঠিয়েই দিয়েছিল! গাড়িও নিয়ে ফেলেছে সেটা একবারও বলাট প্রয়োজন বোধ করে নি সে?

-বাবা! গাড়িটা ও নেয় নি। আমার এ্যাকাউন্টে কিছু সেভিংস ছিল আর ব্যাংক থেকেও কিছু লোন নিলাম। আর গাড়িটা গতকালই কিনলাম। বলিনি সারপ্রাইজ দিবো বলে--।

-বাহ! তবে তো হয়েই গেল---।

-বাবা! মা? তোমরা ফ্রেশ হয়ে আসো--। আমি দেখি তানিশা কি করছে----।

-হুম--। যাও যাও---।

জীবন একটা হাসি দিয়ে রান্নাঘরের দিকে চলে গেল। তানিশাকে হাতে হাতে কাজে হেল্প করতে লাগলো।

এদিকে জীবনের মা ফ্রেশ হয়ে এসে দেখলেন জীবনের বাবা চুপ করে বিছানায় বসে কিছু একটা ভাবছে। তিনি মুখ মুছতে মুছতে স্বামীর পাশে গিয়ে বসলেন।

-কি ভাবছো এতো? ছেলের বউয়ের দোষ খুঁজতে বসলে নিশ্চয়ই---।

-জীবনের মা? তোমার কি মনে হয় এই মেয়ের দোষ ধরা ছাড়া আমার আর কোন কাজ নেই? কিন্তু তুমি কি দেখলে মেয়েটার কাজ! আমাদের ছেলেটাকে একেবারে বশে করে রেখেছে--।

-আবার শুরু করলে তুমি? বউমা এখানে আবার কি করেছে?

-ছেলেটা আমাদের না জানিয়ে গাড়ি নিয়ে ফেললো---। আমার এক কথায় বাড়ি ছেড়ে চলে এলো--। তবুও বলবে কি করেছে!

-এখানে তো আমি তানিশার কোন দোষ দেখছি না। তুমি ওকে পছন্দ করো না বলেই--।

-হ্যাঁ করি না। তবু তো তোমরা মা ছেলে মিলে সেই মেয়েটাকেই বউ করে আনলে? এখন শান্তি হয়েছে? ছেলেটার যে মাথা বিগড়াচ্ছে মেয়েটা? খুশি তো এখন তুমি?

-উফফ--। তুমি যে কখন কি বলো আমি বাপু বুঝি না---।

-আর বাড়িটার নামের শ্রী দেখলে! উপল নূড়ি! এটাও দেখবে এই মেয়েটারই কাজ!!

-তুমি থামো তো! ফ্রেশ হয়ে খেতে এসো--। ওরা খাবার নিয়ে বসে আছে----।

-আমার কথা কে শোনে! এমন একটা মেয়েকে এনে আমার পরিবারটাকেই ধ্বংস করে দিলো---।

জীবনের বাবা গজগজ করতে করতে একটা টাওয়াল নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকলেন। যদিও বাড়ির প্রত্যেকটা আসবাব, ডিজাইন, কালারই উনার খুব পছন্দ হয়েছে, তবু কিছু একটা মনের মধ্যে কাঁটা হয়ে বিঁধছে উনার। এটার কারণটাও উনি বেশ ভালো করেই জানেন। কারণটা হলো তানিশা।

০৪!!

ফ্রেশ হয়ে জীবনের বাবা মা ডাইনিং রুমে এসে বসলেন। নানান রকমের খাবারে ডাইনিং টেবিলটা ভরা। সবগুলো খাবারই দেশি ধাঁচে রান্না করা, জীবনের বাবার পছন্দ মতো। সাথে জীবনের বাবার পছন্দের পায়েস। জীবনের বাবা কিছু না বলে চেয়ার টেনে বসলেন। জীবনের মা ও বসলো পাশে৷ জীবন তানিশাকে খাবার সার্ভে হেল্প করছে দেখে আরেকবার বিরক্ত হলেন জীবনের বাবা।

-এখন কি খাবার সময়ও তোমাদের এই নাটক দেখতে হবে? অন্তত শ্বশুর শাশুড়ির সামনে নিজের হাজবেন্ডকে দিয়ে কাজ না করালে চলছে না? নাকি এটা দেখাতে চাও যে ছেলেটাকে নিজের ঠিক কতোটা বশ করে ফেলেছ!

-বাবা! কি বলছ এসব? সকাল থেকে ও কাজ করছে। আমি কি একটু ওর কাজে সাহায্যটাও করতে পারব না?

-নিজের বাসায় তো এক গ্লাস পানিও নিয়ে কখনো তোকে খেতে দেখলাম না জীবন? আর আজ একে তো বউয়ের কাজটা হাতে হাতে করছিস। আবার বাবার মুখের উপরে বউয়ের হয়ে সাফাই গাইছিস? এতোটা নির্লজ্জ তো ছিলি না তুই??

-বাবা! ওর কাজ কোনটাকে বলছ? তোমরা তো আমার বাবা মা। তাই তোমাদের কি লাগবে না লাগবে সেটা তানিশার পাশাপাশি আমারও খেয়াল রাখা উচিত। তাই নয় কি? আর পানি ঢেলে খাওয়ার কথা বলছ? ছোট্ট কয়েকটা কাজ করলে হয়তো বাড়ির বউ মেয়েদের খুব বেশি সাহায্য করা হবে না, কিন্তু একটু কাজের চাপ ও কমবে তাদের উপরে। একসময় এই সহজ কথাগুলো জানতাম না বা মানতাম না৷ এখন মানার চেষ্টা করছি---।

-কেন যে মানছ বা কি করে জানছ সেটা তো দেখাই যাচ্ছে---।

-বাবা??

তানিশা জীবনের দিকে কাতর চোখে তাকিয়ে আর কিছু বলতে নিষেধ করলো ইশারায়। জীবনও কিছু না বলে চোখ বুজে নিজেকে একটু সামলে নিয়ে চেয়ারে বসে পড়লো। বাবাকে কিছু বলার মানেই হলে তানিশাকে আরো বেশি অপমান করা। জীবন এখন যাই বলবে তার সব দোষ গিয়ে পড়বে তানিশার ঘাড়ে। তানিশাও কিছু না বলে সবাইকে খাবারটা সার্ভ করলো। সবার প্লেটে খাবার তুলে দিলো। জীবনের বাবা এক লোকমা মুখে দিয়ে এক মিনিট চুপ করে খাওয়াই বন্ধ করে দিলো। একটু পরে কিছু না বলেই চুপচাপ খাওয়ায় মন দিলেন। জীবনের মা কিছু না বলে মুচকি হেসে খাওয়ায় মন দিলো। 

খাওয়া শেষ হলে জীবনের বাবা কিছু না বলেই চুপ করে উঠে হাত ধুয়ে চলে গেল রুমে। জীবনের মা খাওয়া শেষ করে তানিশার চুলে হাত বুলিয়ে দিলো। 

-তোর শ্বশুরের মন ঠিক গলবে মা৷ তুই মনে কষ্ট রাখিস না। দেখলি না খাবার ভালো হয়েছে সেটা মুখে বলতে পারছে না বলে দম মেরে চলে গেছে---। একসময় ঠিক তোকে মেনে নিবে--৷ তুই আশা ছাড়িস না--।

তানিশা লাজুক হেসে শাশুড়িকে পা ছুঁয়ে সালাম করলো। শাশুড়িও হেসে রুমের দিকে চলে গেল। জীবন তানিশাকে টেনে বসিয়ে দিয়ে খাইয়ে দিতে লাগলো। তানিশাও হেসে জীবনকে খাইয়ে দিলো। 

জীবনের মা রুমে এসে দেখলেন জীবনের বাবা রুমে পায়চারি করছে সারা রুম জুড়ে৷ জীবনের মা খাটে পা ঝুলিয়ে বসে বসে হাসছে দেখে জীবনের বাবা বিরক্ত হলেন আরো। 

-হাসছ কেন এভাবে? মজা লাগছে তোমার?

-কই নাহ! আমি তো হাসছি না। হাসব কেন?

-----------------------

-তা খেয়ে কিছু না বলেই চলে এলে যে? খাবার ভালো হয়নি? বউমা এতো কষ্ট করে রাঁধলো---?

-আর কষ্ট করে রেঁধেছে! কি এমন রেঁধেছে? এসব কোন রান্না হলো? আর পায়েসটা? 

-ভালো হয়নি? আমি তো আরো ভাবলাম পছন্দ হয়েছে বলে সবটুকু খেয়ে নিলে---। 

-হাহ----। এই খাবার আবার নাকি পছন্দ হবার মতো---!

জীবনের বাবা গজগজ করতে করতে আবার পায়চারি করতে লাগলেন। আর জীবনের মা খাটে বসে হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ছেন যেন। বিরক্ত হলেও থামছেন না জীবনের বাবা। জানে তিনি ধরা পড়ে গেছেন। তাই আরো রাগ লাগছে জীবনের বাবার। তানিশার উপরে আরো রাগ হচ্ছে। 

এক সপ্তাহ পর। 
গত সাতটা দিন ধরেই তানিশা হাজার রকমের চেষ্টা করছে শ্বশুরের মন জুগিয়ে চলতে। কিন্তু তবু কোন না কোন ভুল হয়েই যাচ্ছে। আর তার ফলস্বরূপ আরো এক গাট্টি কথা শুনতে হচ্ছে তানিশাকে। অফিসে থেকে একটু তাড়াতাড়ি ফেরার চেষ্টা করছে তানিশা। বসও খানিকটস বিরক্ত এই ব্যাপারটায়। তানিশা সেটা বুঝতে পারলেও চুপ করে থাকে। কিছুই যে করার নেই ওর। আজ বাসায় ফিরতে সন্ধ্যা পার হয়ে গেছে তানিশার। জীবনের বাবাও অনেক কথা শুনিয়ে দিলেন। বাড়ির বউ হয়ে সন্ধ্যার পর বাড়ি ফিরা! এটা কি যে সে অন্যায়? তানিশাকে অনেকগুলো কথা শুনিয়ে জীবনের বাবা নিজের রুমে চলে গেলেন। 

তানিশাও আর কি করবে! একটু মনটা খারাপ হয়ে গেল। একটা জরুরি মিটিং ছিল। সেটাও কোন রকমে তাড়াহুড়ো করে শেষ করেই অফিস থেকে বের হয়েছে। বসও আজকে তানিশার সিনসিয়ারিটি নিয়ে অনেক লেকচার দিয়েছে। আর বাসায় ফেরার পর শ্বশুর মশাই তো---!!

তানিশার শ্বাশুড়িও তানিশার সাথে কথা বলতে বলতে রান্নার কাজ করতে লাগলেন। মেয়েটার মন খারাপ দেখছেন। তবু কিছু করতে পারছেন না বলে তার নিজের কাছেও খারাপ লাগছে। 

রাতে তানিশা আবার কাঁপা কাঁপা হাতে ডাইনিং টেবিলে খাবার সার্ভ করছে। আর তানিশাকে হেল্প করছে ওর শাশুড়ি। জীবন আজ সকালেই অফিসের একটা কাজে দুদিনের জন্য শহরের বাইরে গেছে। তাই তানিশার আরো বেশি ভয় ভয় করছে। গত একটা সপ্তাহ তানিশার হাজার ভেঙে পড়ায়, বা কোন ছোটখাটো ভুল হলেও সেটাকে সুন্দর করে সামলে দিয়েছে জীবন নিজেই। কিন্তু আজকে কোন ভুল হলে কি হবে! তখন যদি বাবা আরো রেগে যায়! এমনিতে তো দেরিতে ফেরায় রেগে আছেন প্রচন্ড। 

ডাইনিং টেবিলে খাবার সাজিয়ে দেয়াল ঘড়িটার দিকে তাকালো তানিশা। ওর আজও পাঁচ মিনিটের মতো দেরি হয়ে গেছে। অন্য দিন হলে জীবনের বাবা রেগে একেবারে যা তা শুনিয়ে দিতেন। কিন্তু আজকে ঘড়িতে ১০ টা বেজে ৫ মিনিট। অথচ উনি এখনো এলেনই না। তানিশা আর তানিশার শাশুড়ি মুখ চাওয়াচাওয়ি করলেন। উনি লি রাগ করে খেতে আসছেন না? আজ কি যে লঙ্কাকান্ড বাঁধে বাসায় কে জানে?
তানিশা ঢোক গিললো। বেচারি বেশ টের পাচ্ছে যে আজ ওর কপালে শনিই আছে। তবু সাহস করে গুটিগুটি পায়ে শ্বশুরকে ডাকতে গেল। যা থাক কপালে। কিন্তু বয়স্ক মানুষটাকে তো না খাইয়ে রাখা যায় না। নাহয় আজ একটু বেশিই কটু কথা শুনলো! তবু মানুষটা কিছু অন্তত মুখে দিক।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন