১৫!!
ভোরে মৃদু মৃদু আলোতে বাড়ির বাইরে দাড়িয়ে প্রেমার অপেক্ষায় রয়েছে অভ্র। চারপাশের হীমশিতল বাতাস শরীরে মাখিয়ে নিচ্ছে। পাখির কিচির-মিচির ডাক ও কানে ভেসে আসছে। সবকিছুতে অভ্র বিমোহিত হয়ে যায়। নিজেকে বেশ হালকা লাগছে অভ্রের।
ফোনের স্ক্রিনের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে আরেকবার। সাড়ে পাঁচটা বেজে আরো পনেরো মিনিট হয়েছে।অর্থাৎ পাঁচটা পয়তাল্লিশ মিনিট এখন। প্রেমাকে যখন ফোন দিয়েছিলো তখন সাড়ে পাঁচটা ছিলো। অথচ প্রেমার আসার কোনো নামগন্ধ নেই। আস্তে আস্তে সূয্যিমামার আলোক রশ্মি ছড়িয়ে পরছে চারদিকে। ভোরের মৃদু আলোটা কেটে এখন পরিপূর্ণ স্নিগ্ধ সকালে রুপান্তর হয়।
ফোন নিয়ে প্রেমাকে কল দিলেই কলের টিউন কানে ভেসে আসে। ঘাড় ঘুরিয়ে পেঁছন ফিরে তাকাতেই অভ্রের চোখ আটকে যায় প্রেমাতে। মোহনীয় দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে তার ফুলরানীর দিকে। প্রেমা অভ্রের দিকে এগিয়ে আসছে সে অবস্থায় অভ্রেক চোখ যায় প্রেমার পেঁছনে।
রাগ আর বিরক্তিতে চোখ মুখ কুঁচকে ফেলে মুহুর্তেই।বিরবির করে বলে উঠে-
"কাবাব মে হাড্ডি!
প্রেমা তখনি অভ্রের সামনে এসে দাড়ায়। মুচকি হাসি দিয়ে জানায়-
" শুভ সকাল!!
প্রতিউত্তরে অভ্রও মুচকি হেসে বলে-
"শুভ সকাল!!
তারপর মাথা হালকা বাঁকা করে অভ্র প্রেমার পেঁছনে তাকাই। দেখে আদ্র লুকানো অবস্থায় দাড়িয়ে আছে।
" কিরে এতো সকাল সকাল এখানে কী??(অভ্র)
"আমিও যাবো তোমাদের সাথে"! (আদ্র)
" যেতে হবে না যা বাসায় যা "(চোখ লাল করে বলে)
" আরে থাকনা! আদ্র ও যাবে আমাদের সাথে সমস্যা কী তাতে??(প্রেমা)
প্রেমার কথাটা শুনে আদ্র একটা বড় করে হাসি দেয়।কিন্তু অভ্রের মুখটা চুপসে যায়। এসব তোয়াক্কা না করে আদ্র প্রেমার হাত ধরে টেনে সামনের দিকে এগিয়ে যায়। একবার পেঁছন ফিরে আদ্র অভ্রের দিকে তাকিয়ে চোখ টিপ দেয়। এতে অভ্রের রাগ টগবগিয়ে উঠে। কোনো রকম মাথা ঝাকিয়ে রাগ কমানোর চেষ্টা করে।এবং তাদের পেঁছনে হাঁটা দেয়।
একসময় অভ্র এসে প্রেমার পাশে দাঁড়ায়। প্রেমা অভ্রের দিকে তাকাল। আকাশী রঙের টি-শার্ট, চুল থেকে টপটপ পানি পড়ছে। এবং ঠোঁটের দিকে প্রেমার দৃষ্টি আঁটকে যায়। কারণ অভ্রের ঠোঁট লাল। অসম্ভব সুন্দর লাগছে। প্রেমার এভাবে খুঁটিয়ে দেখা অভ্রের বেশ মজা লাগছে। সামনের দিকে চোখ থাকলেও প্রেমার একটু পর পর তাকানো অভ্রের চোখ এড়াইনি। ঠোঁটে মৃদু হাসি রেখে প্রেমাকে মৃদু স্বরে জিজ্ঞেস করে অভ্র-
"হাবলির মতো তাকিয়ে কী দেখছেন?
প্রেমার থমথম খেয়ে যায়।পরক্ষনে নিজেকে সামলে উত্তর দেয়-
" হাবলাকে দেখছি!
প্রেমার কথা শুনে অভ্র একটু শব্দ করে হেসে দেয়।সাথে প্রেমাও। ওদের হাসির কারন উপলব্ধি করতে না পেরে মাঝখান থেকে আদ্র অনুসন্ধানী গলায় মাথা চুলকিয়ে জিজ্ঞেস করে-
"তোমরা হাসছো কেন?? আমাকেও বলো? আমিও হাসবো! "এবার আদ্রের কথা শুনে প্রেমা আর অভ্র হেসে উঠে একসাথে।
" ধূর'" অভিমানী গলায় কথাটা বলে আদ্র প্রেমার হাত ছেড়ে সামনের দিকে এগিয়ে যায়।
" সকাল সকাল গোসল করেছো?? "প্রেমা প্রশ্ন করে অভ্রকে!
" হ্যাঁ,,
"শীত করে না??
" আমি তো রোজ সকালেই গোসল করি! সকালে গোসল করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। (অভ্র)
" কি যে বলো প্রচুর শীত লাগে!
" অভ্যাস হয়ে যাবে।
"কী??
অভ্র আচমকা কথাটা বলে থমথম খেয়ে যায়। পরে মুচকি একটা হাসি দিয়ে বলে-
" আপনি রোজ সকালে গোসল করার চেষ্টা করলে অভ্যাস হয়ে যাবে। সেটা বললাম!
"ওহ"
এরপর আর কোনো কথা বলেনি দু'জনে। প্রেমা একটু হেঁটে সামনে গিয়ে আদ্রের কাছে যায়। এবং আদ্রের হাত ধরে হাঁটতে লাগে। আর অভ্র ওদের পেঁছনে পরে যায়।
অনেক দূর পর্যন্ত হাঁটে তারা।প্রায় দু'ঘন্টা। আটটার দিকে তারা বাড়ি ফিরে আসে। পুনরায় ফ্রেস হয়ে নাস্তার টেবিলে বসে পরে তিনজনে। হঠাৎ প্রেমার দৃষ্টি যায় তার সোজা সাইকার দিকে। কেমন করে যেনো ওর দিকেই তাকিয়ে ছিলো। চোখে মুখে কঠিন্য একটা ভাব। মনেমনে প্রেমা কারণটাও হয়তো কিঞ্চিৎ উপলব্ধি করতে পারে। প্রেমার চোখে সাইকার চোখ পরলেই সাইকা অস্বস্তিতে পরে যায় এবং চোখ নামিয়ে ফেলে।
আরো কিছুসময় পর প্রেমা সাইকার দিকে তাকালেই দেখে সাইকার দৃষ্টি অভ্রের দিকে। এবং মুচক মুচকি হাসছে।এবার প্রেমার কাছে সব জলের মতো পরিষ্কার হয়ে যায়। এবং সাইকার তখনের মুখের কঠিন্য ভাবটার কারনটাও আঁচ করে পারে।।
এরপর প্রেমা আবার অভ্রের দিকে তাকাল। দেখে সে নিজের মনে নাস্তা করে যাচ্ছে। তখনি অভ্র মাথা তুলে প্রেমার দিকে তাকাল।এবং জিজ্ঞেস করে-
"কিছু লাগবে?? (অভ্র)
প্রেমা ডানে বামে মাথা নাড়িয়ে জানায় " না"!
সে সময় সাইকা একটা গ্লাস এগিয়ে দিয়ে বলে-
"ভাইয়া পানি দাও তো এক গ্লাস!(সাইকা)
অভ্র সাইকার কথাটা শুনতেই জগটা সাইকার দিকে এগিয়ে দেয়। এবং দাঁড়িয়ে যায়। টিস্যু দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে চলে যায়। আচমকা প্রেমার হাসি চলে আসে।কোনো রকম ঠোঁট চেপে হাসি আটকায়। এবং নাস্তা শেষ করে অাদ্রকে সাথে নিয়ে চলে যায়।
প্রেমা তার দাদি যেখানে আছে সেখানে যায়।দেখে প্রিয়া সেখানে। বাকি সবাই দাদির বয়সের।সবাই নানা রকম গল্পে মেতে উঠেছে। এখানে প্রেমার আরো বিরক্ত লাগবে তাই রুমে না ডুকেই অন্যদিকে হাঁটা দেয়।
ফোনে মেসেজ টিউন বেজে উঠলে মেসেজটা প্রেমা সিন করে এবং দেখে এটা অভ্রের মেসেজ।-
" ছাদে আসতে পারেন মন চাইলে!"
প্রেমা মেসেজটা দেখেই প্রেমা ছাদে যাওয়ার জন্য পা বাড়াই। গিয়ে দেখে অভ্র চেয়ারে বসা। পাশে একটা চেয়ার খালি। প্রেমা সেখানে গিয়ে বসে পড়ে।
" খুব বোরিং লাগছে তাইনা??(প্রেমা)
"হু" (অভ্র)
অভ্রের ছোট করে কথা বলাই প্রেমা অভ্রের দিকে তাকাল।দেখে আঙুলের সাথে খেলছে। প্রেমার হাসি পেয়ে যায়। সেই অবস্থায় বলে উঠে-
"বাচ্চাদের মতো আঙুল দিয়ে খেলছো?? (প্রেমা)
অভ্র প্রতিউত্তরে কিছু না বলে প্রেমার দিকে তাকাল। প্রেমার অভ্রের দিকে নজর পড়তেই আতকে উঠে। আকর্ষনীয় চোখ দু' দুটো লাল বর্ণ ধারন করেছে। হঠাৎ এমন হওয়ার কারনে প্রেমা ভয় পেয়ে যায়।ভাবে? একটু আগে তো স্বাভাবিক ছিলো। তাহলে এখন কী হয়েছে।
" আচ্ছা তুমি বোধহয় বিরক্ত হচ্ছো?
আমি যায় পরে কথা হবে।(প্রেমা দাঁড়িয়ে যায় চলে যাওয়ার জন্য)
অভ্র আলতো হেসে বলে-
"তেমন কিছু না, বসেন। (অভ্র)
অভ্রের কথা শুনে প্রেমা চুপচাপ বসে যায়।
তখনি অভ্র প্রেমার দিকে প্রশ্ন ছুড়ে মারে-
" হাতের বেসলেট কোথায়?? (অভ্র)
সাথে সাথে প্রেমা হাতের দিকে তাকাল।তখনি মনে পড়ে একটু আগে আসার সময় খুলে এসেছিলো হাতে জ্বালা করছিলো তাই।কিন্তু এটা অভ্রকে বলা যাবে না তাই ভ্রু হালকা উঁচু করে অসহায় দৃষ্টি নিয়ে তাকাল অভ্রের দিকে। অভ্র তখন প্রেমার দিকে তাকিয়ে ছিলো।প্রেমার অসহায় দৃষ্টি দেখে হেসে দেয়। তারপর বেসলেটটা হাতের মুঠ থেকে বের করে। আবারও প্রেমার দিকে তাকাল।
প্রেমা ইনিয়েবিনিয়ে বলে উঠে-
"আরে পড়ে গিয়েছিলো মনে হয়। আমি খেয়াল করিনি। দাও আমি পড়ে নিচ্ছি! (প্রেমা)
অভ্র কিছু না বলে বেসলেট পকেটে রেখে দেয়। তারপর উঠে চলে যায়।প্রেমা হতবুদ্ধি হারিয়ে অভ্রের যাওয়ার পানে তাকিয়ে থাকে।
" নিজের চোখেই তো দেখলাম খুলে রেখে দিয়েছিলেন। কাজটা কী ঠিক করেলেন??(অভ্র মনেমনে কথাটা বলে)
প্রেমাকে মেসেজ দেওয়ার পরেই অভ্র প্রেমাকে ডাকতে আসে। তখনি দেখে প্রেমা বেসলেটটি খুলে রেখে দিয়েছে এবং ওয়াসরুমে ঢুকে। রাগ হলেও নিজেকে সামলে অভ্র বেসলেট নিয়ে ছাদে চলে যায়।
১৬!!
প্রেমা শূন্য দৃষ্টিতে অভ্রের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ছিলো। মনেমনে কয়েকটা প্রশ্ন ও করে ফেলে নিজে নিজে। হঠাৎ অভ্রের এমন আচরণ প্রেমার মাথার উপর দিয়ে যায়। তখনি ফোনে কল আসতেই প্রেমার ধ্যান ভাঙে।
ফোনের দিকে তাকাতেই দেখে আসিফের কল। হালকা অভিমান নিয়ে কলটা রিসিভ করে।
"এতোদিন পর মনে পড়লো আমার কথা? (প্রেমা)
" থাপ্পর খাবি! ফাজি মেয়ে আমাকে আর মিমকে ব্লক করছিলি কেন?(আসিফ)
"আরে আমি কখন ব্লক দিলাম তোরাই তো ফোন দিলি না আমাকে। কেমন আছি খোঁজ নিছিলি একবারো??(প্রেমা)
" এ্যাহ! ব্লক মেরে এখন ন্যাকামী করছিস! তোর জন্য না চাইতেও আগের সিম টা অন করতে হলো।(আসিফ)
"সত্যি বলছি বিশ্বাস কর! আমি ব্লক দেই নি তোদের(প্রেমা)
এভাবে দুজনে আরো টুকটাক কথা বলে।
________
অভ্র ছাদ থেকে নেমে রুমে চলে যায়। রাগ করতে ইচ্ছে করছিলো কিন্তু পারছেন। বার বার নিজেকে রাগ করা থেকে বিরত রাখতে চাইছে কিন্তু ব্যার্থ হচ্ছে।
ওয়াসরুমে গিয়ে ঝাপটা দিয়ে চোখ মুখ ধুয়ে ফেলে। তাতেও শান্ত হতে পারছেনা। পকেটে হাত দিয়ে বেসলেটটি জোরে চেপে ধরে। আচমকা মুখ দিয়ে চাপা আর্তনাদ বেড়িয়ে আসে অভ্রের। পকেটে থেকে হাত বের করতে আৎকে উঠে, নিজের জন্য না প্রেমার জন্য।
" সিট...(অভ্র)
দ্রুত পায়ে রুম থেকে বের হয়ে ছাদে যায়। গিয়ে দেখে প্রেমা বসে আছে চেয়ারে। অভ্র প্রেমার কাছে গিয়ে হাত ধরে হ্যাচকা টান দিয়ে দাড় করাল। অভ্রের অপ্রত্যাশিত আগমনে প্রেমা ভয় পেয়ে যায়। অভ্র আবার আসবে ভাবেনি।
বারবার প্রেমার হাত দু'টো এ পৃষ্ঠ ও পৃষ্ট উল্টিয়ে দেখতে লাগল অভ্র। ডান হাতে হালকা ছিঁড়ে গেছে এবং তাতে সামান্য রক্ত দেখা যাচ্ছে। সাথে সাথে চোখ লাল করে এবং নাক ফুঁলিয়ে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিয়ে প্রেমার দিকে তাকাল অভ্র। প্রেমা নিজেও কথা বলতে পারছে না। হয়তো অভ্রের তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে চোখ রেখে কথা বলার সাহস পাচ্ছে না। নিজের এহেন আচরণে প্রেমা নিজেও হতবাক।
"ওয়েন্টমেন্ট লাগিয়েছিলে?? ( কর্কশ কন্ঠে)
" নাহ, মানে...(প্রেমা)
"কেয়ারলেস।
কথাটা বলেই অভ্র প্রেমার হাত ঝাড়া মেরে ফেলে দেয় এবং নিচে নেমে যায়। যাওয়ার আগে প্রেমাকে শাসিয়ে যায় যাতে সেখান থেকে এক পা ও না নড়ে। প্রেমার মাথা নেড়ে সায় দেই এবং চেয়ারে বসে পরে।
" কী রাগ রে মাইরি! (প্রেমা)
কিছু সময় পর অভ্র দৌড়ে আসে। এবং প্রেমার সামনে চেয়ারে বসে প্রেমার হাত টেনে নিজের হাতের উপর রাখে।তারপর আলতো করে ওয়েন্টমেন্ট লাগানো শুরু করে। ছোট ছোট ফুঁ দিচ্ছিলো।
" এতোটাও ব্যাথা পায়নি যে মলম লাগাতে হচ্ছে।(প্রেমা) " অভ্র মাথা তুলে প্রেমার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলেই প্রেমা একটা হাসি দেয়। যাতে অভ্রের রাগটা একটু কমে। কিন্তু অভ্র আবারও হাতের দিকে তাকিয়ে ফুঁ দিতে শুরু করে।
" হাত ছাড়ো আমি নিচে যাবো।(প্রেমা)
"কখনোই না!
" কী না??
" হাত ছাড়বো না! (দাঁত কটমট করে বলে)
"দেখো আমি...
" তুমি চুপ থাকবা?(অভ্র)
অভ্রের মুখ থেকে তুমি শুনে কেমন অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছিল প্রেমার। কারন অভ্র কথাটা বলার সময় এতো সুন্দর করে বলেছে যে প্রেমার কানে বারি খাচ্ছে।অভ্রের কেন যেনো প্রেমার মুখ দেখলেই বুঝে যায় প্রেমা কী ভাবছে।সেদিকে খেয়াল না দিয়ে অভ্র প্রেমার হাত ছেড়ে উঠে দাড়ায়।
" রুমে যাও আর বের হওয়ার দরকার নেই। (অভ্র)
"আমি এখানেই থাকবো রুমে বো...
"যেতে বললাম যাও।
" তোমার কথা শুনতে আমি বাধ্য নয়।(প্রেমার হঠাৎ রেগে যায় তাই কথাটা বলে)
" অবশ্যই বাধ্য। বলেছিলাম তো আমার সাথে ফ্রেন্ডশীফ করলে আমার দেওয়া রুল'স ও মানতে হবে। এখন যাও..(অভ্র)
প্রেমার আচমকা এতো রাগ হয় যে পাশের চেয়ারটা হাতে নিয়ে জোরে আছাড় মারে এবং নিচে নেমে যায়। একটু পেঁছন ফিরে তাকালেই দেখতে পারতো ওর রাগ দেখে অভ্র হাসছিলো।
প্রেমা নামতেই অভ্র চোখ মুখ আবারও কুঁচকে ফেলে। এবং ছাদের দরজার সামনে গিয়ে দাড়ায়। দরজাটা প্রচন্ড জোরে ধাক্ক দেয়। সাথে সাথে কারো চিৎকার অভ্রের কানে ভেসে আছে। ঠোঁটের কোণার হাসিটা নিজেনিজে বড় হয়ে যায়। অন্যদিকে সাইকা ব্যাথায় ছটপট করতে লাগে।
"লুকিয়ে কথা শুনার অভ্যাস গুলোতে আমি খুবই বিরক্ত! এখনো সময় আছে শুধরে যা।(অভ্র)
"আম আমি তোমাকে ভালোবাসি! বিশ্বাস করো ভাইয়া!(সাইকা)
" সময় আছে শুধরে যা বললাম তো! আর যদি তোর মুখ থেকে এসব কথা শুনি তাহলে আমি ভুলে যাবো তুই আমার ফু্ফির মেয়ে।(অভ্র)
" তারমানে এটাই ধরবো যে তুমি ওই প্রেমাকে ভালোবাসো?? (সাইকা)
"তোর ধরা তুই যেভাবে ইচ্ছে সেভাবে ধর! আই ডোন্ট কের...(বলেই অভ্র নেমে যায়)
_________
সন্ধ্যায় সবাই গায়ে হলুদের অনুষ্টানের জন্য সাজে-সজ্জায় ব্যাস্ত হয়ে পরে। আর অন্যদিকে আরিয়ানের গলা ফাটিয়ে চিৎকার করছে।সবাই রীতিমতো ভয়ে কাঁপছে।অভ্র বাদে। বেশ আয়েশ করে সোফায় বসে ফোন গুতাচ্ছে অভ্র। শান্তি লাগছে তার এখন অনেক।
" এতো কষ্ট করে পছন্দ করে শাড়ি কিনলাম। দেখো তোমরা কী অবস্থা করেছে শাড়িটার।(আরিয়ানের মা)
" বুঝতে পারলাম না শাড়ির উপরে এতো রাগ হলো কার? যে এভাবে শাড়িটাকে কুচিকুচি করে কেটেছে?(অভ্রের দাদু)
"এখানে তো বাইরের কেউ আসেনি! করলো কে এমনটা?(অভ্রের মা).
অভ্র আস্তে করে সবার মাঝখান থেকে উঠে ছাদে চলে যায়। আকাশের দিকে তাকায়। গভীরভাবে একটা শ্বাস নেয় এবং ছাড়ে।
" শাড়ি এবং সাজে প্রেমাকে শুধু আমিই দেখবো।আর কেউ না! আর কেউ না!!"(মনে মনে)