আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুগ্রহ করে গল্প সম্বন্ধে আপনার মতামত অবশ্যই প্রকাশ করবেন। আপনাদের মতামত আমাদের এই ছোট প্রয়াসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগায়। শীঘ্রই আরও নিত্য নতুন গল্প আপডেট আসছে, সঙ্গে থাকুন। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখক/লেখিকা'র নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত গল্পের ডায়েরি’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখক/লেখিকা'র কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় গল্পের ডায়েরি কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ করলে তা কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

আড়ালে আবডালে - পর্ব ২৩ - মুন্নি আক্তার প্রিয়া - ধারাবাহিক গল্প


৪৫!!

ফোনের লক খুলে দিয়েছে উপমা। খুলতে বাধ্য হয়েছে। যেই মেয়ে অন্য মেয়েকে কিডন্যাপ করাতে পারে সেই মেয়ে ঐ ছোট বাচ্চা দুটোর ক্ষতিও করতে পারবে অনায়াসে।

সামনের চেয়ারে বসে খুবই উত্তেজিত হয়ে কন্টাক্ট লিস্ট চেক করছে সামিয়া। সেখানে নিহির কোনো নাম্বার নেই। মানে নিহি নাম দিয়ে কোনো নাম্বার সেভ করা নেই। কল লিস্ট চেক করেও কোনো নাম্বার পাওয়া যায়নি। বিরক্তের চরম পর্যায়ে পৌঁছে গিয়ে দাঁত কটমট করে জিজ্ঞেস করে,
"নিহির নাম্বার কোথায়?"

উপমা সরল কণ্ঠে বলে,
"আমি জানি না। ওর সঙ্গে অনেক আগে থেকেই আমার কোনো যোগাযোগ নেই।"
"মিথ্যা বলবে না একদম আমার সঙ্গে।"
"মিথ্যা কেন বলব আমি? নিজেই তো ফোন চেক করলেন।"
স্বল্পক্ষণ চুপ থেকে সামিয়া হাসলো। তারপর পাশের ছেলেটিকে বলল,
"যতগুলো নাম্বার ফোনে আছে সবগুলোতে ফোন দিয়ে দেখো। অন্য কোনো নামে ওর নাম্বার সেভ করা থাকতে পারে। কাল সকালের মধ্যে নিহির নাম্বার চাই আমার।"
"জি, আচ্ছা।"

সামিয়া চলে যাওয়ার পর ছেলেটি চেয়ারে বসলো। আলস্য নিয়ে ফোন চেক করতে করতে উপমার দিকে তাকালো। তারপর ফোনের টর্চ অন করে উপমার মুখের ওপর তাক করতেই চোখ বন্ধ করে ফেলে উপমা। চেঁচিয়ে বলে,
"কী সমস্যা? আমায় ছেড়ে দিন।"
ছেলেটি আহতস্বরে বলল,
"ফোনে যখন নাম্বার নেই তখন লকটা খুলে দিলে কী হতো? এই থাপ্পড়টা তো আর খেতে হতো না!"
"মায়া দেখাচ্ছেন?"
"মায়া হচ্ছে।"
ছেলেটি উপমার হাত-পায়ের বাঁধন খুলতে খুলতে বলল,
"ভোরের আলো ফোঁটার আগেই পালিয়ে যাও।"
"হোয়াট? কী বললেন? পালিয়ে যেতে?" চোখ দুটো বড় বড় করে জিজ্ঞেস করল উপমা।
বাঁধন খোলা হলে ছেলেটি সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বলল,
"এখান থেকে বের হয়ে সোজা দৌঁড়াবে। বাগানের শেষ মাথায় দেখবে একটা গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। কোনো কিছু না ভেবেই সেই গাড়িতে উঠে পড়বে। সে তোমায় তোমার বাড়িতে পৌঁছে দেবে।"

সবকিছুই কেমন যেন স্বপ্নের মতো লাগছে উপমার কাছে। কিডন্যাপ করে এনে এখন বলছে পালিয়ে যেতে! কী অদ্ভুত! লোকটার মাথায় কি কোনো সমস্যা আছে? উপমা তখনো ঠায় বসে আছে। এবার ছেলেটি মৃদু ধমক দিয়ে বলল,
"কী হলো? বসেই থাকবে? নাকি পালাবে?"
"আপনি কি আমার সাথে মজা করছেন?"
"মজা করার মতো সময় এখন না। তুমি যাও।"

উপমা কী করবে না করবে ভেবে পেলো না ঠিকই৷ তবে মনস্থির করে নিলো সে পালাবে। ছেলেটি তখন বলল,
"যাওয়ার আগে তোমাকে যেভাবে বেঁধে রাখা হয়েছিল আমাকেও সেভাবেই বেঁধে রাখো।"
"কিন্তু কেন?"
"প্রশ্ন করবে না। বাঁধো।"

ছেলেটি চেয়ারে বসে পড়ল। উপমাও আর কিছু না ভেবে ওকে বেঁধে পালালো। বাহিরে ঘন জঙ্গল। তবে চাঁদের আলোয় সবটা পরিষ্কার। বাগানটা দেখে মনে হচ্ছে কেমন যেন ভূতুরে ভাব। শরীর শিউড়ে উঠে গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যায়। এরপর প্রাণপণে ছুটে চলে সামনের দিকে। তবুও বাগান শেষ হয় না। দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে দূর থেকে একটা গাড়ি দেখতে পায়। পা ব্যথা হয়ে গেছে। তবুও উপমা দৌঁড়ায়। গাড়ির সামনে গিয়ে কিছুক্ষণ হাঁপায়। তারপর দরজা খুলে পিছনে বসে পড়ে। সামনে যিনি বসে আছে তিনি কোনো কথা না বলে গাড়ি চালানো শুরু করে।


খাঁ খাঁ দুপুরের তপ্ত রোদ মাথার ওপর। ভ্যাপসা গরমও পড়েছে। অস্থির অস্থির লাগছিল খুব। পাশাপাশি সিটে বসে আছে আমান এবং নিহি। গাড়ি ড্রাইভ করছিল নিরব। নিহির কান্নার বাঁধ মানছে না। হাউমাউ করে কান্না করছে বাচ্চাদের মতোন। আমানের নিজের চোখেও পানি। নিহিকে সামলানোর মতো শক্তিও যেন লোপ পেয়েছে।

সকাল দশটার দিকে নীলমের ফোন এসেছিল। নিজাম ইসলাম এক্সিডেন্ট করেছেন। হাসপাতালে ভর্তি এখন। অবস্থা খুবই ক্রিটিকাল। খবরটা শোনার পর থেকেই নিহির কান্না শুরু হয়েছে। কোনোভাবেই ওর কান্না থামানো যাচ্ছে না। তখনই ওরা রওনা দিয়েছে ঢাকার উদ্দেশ্যে। শিশির তরুকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে। নিহি এখনো বাচ্চাদের মতো কাঁদছে। আমান ওর মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলে,
"শান্ত হও নিহু।"
কান্নার গতি বাড়ে আরও। হেঁচকি উঠে যায়। হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বলে,
"আব্বুর কিছু হবে না তো? ভাইয়া কী বলেছে বলেন?"
আমান কয়েক মুহূর্ত চুপ করে থেকে বলল,
"তেমন কিছু হয়নি৷ তুমি শান্ত হও।"

মনে মনে ব্যথিত হলো আমান। নিহিকে মিথ্যে বলতে হলো। অবস্থা অনেক গুরুতর নিজাম ইসলামের। কিন্তু নিহিকে সেটা বলা যাবে না। গোপনে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো তার।
_____________

জানালা দিয়ে রোদ ঘরে প্রবেশ করছে। জানালার পাশাপাশি বিছানা হওয়ায় রোদ বিছানাতেও ছড়িয়ে পড়েছে। যার ফলে কিছুটা গরম অনুভব হয় বিছানায় বসলে। অনল বারান্দায় বসে সিগারেট খাচ্ছে। ইদানীং ওর নতুন সঙ্গী হচ্ছে সিগারেট। আগে সিগারেটের ধোঁয়া সহ্য না হলেও এখন এটা খুব প্রিয়। বলা যায় ভালো থাকার টনিক। আগের অনলের মাঝে আর এখনকার অনলের মাঝে বিস্তর তফাৎ। কলেজেও যায় না। কারো সঙ্গে প্রয়োজন ছাড়া কোনো কথাও বলে না।

'আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে দেখতে আমি পাই নি।
তোমায় দেখতে আমি পাই নি।
বাহির-পানে চোখ মেলেছি, আমার হৃদয়-পানে চাই নি॥
আমার সকল ভালোবাসায় সকল আঘাত সকল আশায়
তুমি ছিলে আমার কাছে, তোমার কাছে যাই নি॥
তুমি মোর আনন্দ হয়ে ছিলে আমার খেলায়–
আনন্দে তাই ভুলেছিলেম, কেটেছে দিন হেলায়।
গোপন রহি গভীর প্রাণে আমার দু: খসুখের গানে
সুর দিয়েছ তুমি, আমি তোমার গান তো গাই নি॥'

ফোনে রবীন্দ্র সঙ্গীত শুনছিল আর সিগারেট ফুঁকছিল। তখন দরজায় জোরে জোরে করাঘাতের শব্দ হয়। বিরক্ত হয় অনল। বারান্দা থেকে ঘরে যেতেই শুনতে পায় মিলন আর সাকিবের গলার স্বর। দরজা খুলে দিতেই মিলন স্থিরতা হারিয়ে বলে,
"দোস্ত তাড়াতাড়ি চল।"
চরম বিরক্ত হয়ে অনল জিজ্ঞেস করে,
"কোথায় যাব?"
"সুমাইয়ার বাসায়।"
"আমি এখন কোথাও যাব না। ভালো লাগছে না আমার। তোরা এখন যা।"
"দোস্ত সুমাইয়ার বোন সামিয়া মারা গেছে।"

এবার একটু সিরিয়াস হয় অনল। কপালে ভাঁজ টেনে বলে,
"সামিয়া না লন্ডনে পড়ত? দেশে ফিরেছে কবে?"
"অনেক আগেই। যখন নিহিকে নিয়ে তোদের ঝামেলা চলল। তখনই ফিরেছে।"
"কিন্তু মারা গেল কীভাবে?"
"কার এক্সিডেন্ট।"
"শীট!"
"দোস্ত চল যাই। বিপদে-আপদে সুমাইয়া সবসময় আমাদের পাশে থেকেছে। ওর খারাপ সময়ে এখন আমাদেরও ওর পাশে থাকা উচিত।"
"বস একটু। আমি ফ্রেশ হয়ে নিই।"

অনামিকা রহমান বাড়িতেই ছিলেন। দরজায় দাঁড়িয়ে কথা বলতে দেখে তিনি বললেন,
"আরে দাঁড়িয়ে কেন তোমরা? বসো।"
ওরা সালাম দিয়ে বলল,
"না ম্যাম। বসব না। সুমাইয়ার বোন যে এক্সিডেন্টে মারা গেছে শুনেছেন ম্যাম?"
"কী বলো?" অবাক হলেন তিনি৷ আবার বললেন,
"কবে হলো এক্সিডেন্ট?"
"আজই।"
"তোমরা কি ওর বাসাতেই যাচ্ছো?"
"জি ম্যাম।"
"আচ্ছা আমিও যাব।"


বাড়ির সামনে মানুষজন গিজগিজ করছে। সকল আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, প্রতিবেশীরা ছুটে এসেছেন। সবাই আহারে আহারে করছেন। বাড়ির ভেতর ঢোকা মুশকিল প্রায়। ঢেলেঢুলে ভেতরে ঢুকে দেখে সুমাইয়া আর ওর বাবা-মা আহাজারি করে কান্না করছেন। সামিয়ার লাশটি সাদা কাপড় দিয়ে ঢাকা। এক্সিডেন্টে পুরো শরীর থেঁতলে গেছে। পুলিশ এসেছিল। পোস্টমর্টেম করতে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু সামিয়ার পরিবার রাজি হয়নি। শরীরের যেটুকু অংশ বাকি আছে সেটুকু অংশ কাটাকাটি করতে চান না তারা। সুমাইয়ার পাশে বসে আছে লিসা। শান্তনা দেওয়ার বৃথা চেষ্টা করছে।

অনল, মিলন আর সাকিবও গিয়ে পাশে বসল। ওদেরকে পেয়ে সুমাইয়া আরো হাউমাউ করে কান্না শুরু করে। কান্নার জন্য কথাই বোঝা যাচ্ছে না। আর্তনাদ করে বলে,
"কেন এমন হলো বল তো? কেন ওকে এভাবে আমাদের ছেড়ে যেতে হলো!"
কেউই পারছে না শান্তনা দিতে। এই সময়ে কি কারো কোনো শান্তনা কাজে লাগে?


দুপুর গড়িয়ে গেলে নিহি আর আমান বাড়িতে পৌঁছায়৷ এর মাঝে নীলম একবার ফোন করেছিল আমানকে। কী কথা হয়েছে তা নিহি জানে না। জিজ্ঞেস করলেও আমান এড়িয়ে গেছে। প্রথমে ওদের হাসপাতালে যাওয়ার কথা ছিল। আমান যখন নিরবকে নিহির বাড়ির রাস্তা ধরতে বলল তখন নিহি জানতে চেয়েছিল কেন আমান হাসপাতালে না নিয়ে বাড়িতে ফিরে যাচ্ছে। মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হয়নি আমানের। সারা রাস্তা নিহি প্রশ্ন করে গেছে। এক পর্যায়ে আমান ধমক দিয়ে বলেছিল, "একটু শান্ত হয়ে বসো তো। পেইন দিও না। ভালো লাগছে না।"

নিহি চুপসে গিয়েছিল। ছলছল দৃষ্টিতে আমান নিহির দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলেছিল, "ক্ষমা করে দিও নিহু৷ তোমার সাথে এখন খারাপ ব্যবহার করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না আমার। সত্যটা আমি বলতেও পারতাম না। তুমি সইতে পারবে না!"

বাড়ির মেইন দরজা খোলা। নিহি দৌঁড়ে ভেতরে যায়। আমান তার করা শপথ রাখতে পারেনি। নিহিকে একেবারে নিয়ে যাওয়ার আগেই এই বাড়ির ভেতরে আসতে হয়েছে। একটা কঠিন সত্যর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে এই শপথ অতি তুচ্ছ!

ড্রয়িংরুমে গিয়ে থমকে দাঁড়ায় নিহি। সাদা কাপড়ে শরীর ঢাকা নিজাম ইসলামের। শুধু মুখটা বের করা। সাহেলা বেগম অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছেন। কয়েকজন মহিলা তার জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করছেন। তিতির তমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে আর বলছে, 'মাম্মাম, দাদু উঠে না কেন? দাদুকে ডাকো? সবাই কাঁদছে কেন?' মিহি হাত-পা ছড়িয়ে বসে কাঁদছে। সৈকত ওকে মানানোর চেষ্টা করছে। পাশের এক মহিলার কোলে মাহির। সেও কাঁদছে। এত মানুষ দেখে ভয়ে কাঁদছে নাকি মিহিকে কাঁদতে দেখে কাঁদছে তা বোঝা যাচ্ছে না।

নিহির মনে হচ্ছে সে হাওয়ায় ভাসছে। অন্ধকার লাগছে সবকিছু। নীলম কাঁদতে কাঁদতে নিহির দিকে এগিয়ে এসে নিহিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। নিহি তখনও কিছু বুঝতে পারছে না। ওর মস্তিষ্ক কাজ করছে না। ঠোঁট কাঁপছে। ভাইকে কাঁপা কাঁপা স্বরে জিজ্ঞেস করে,
"আব্বু! আব্বু এভাবে শুয়ে আছে কেন ভাইয়া?"

নীলম নিহিকে ছেড়ে দিয়ে অন্যদিকে মুখ করে দাঁড়ায়। শার্টের হাতায় চোখ মুছে। বুক ফেঁটে কান্না আসে নিহির। জোরে চিৎকার দিয়ে ওঠে। আমানও তখন ভেতরে চলে আসে। নিহিকে ধরতে গেলে ছিটকে সরিয়ে দিয়ে নিজাম ইসলামের পাশে বসে। তার বুকে মাথা রেখে বলে,
"ও আব্বু! আব্বু রে তুমি এভাবে কেন শুয়ে আছো আব্বু? কথা বলো আমার সাথে। তুমি এভাবে কেন চলে যাবে বলো?"

নীলম নিহির পাশে বসে টেনে নিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলে,
"শান্ত হ বোন! শান্ত হ!"
চেঁচিয়ে কাঁদতে কাঁদতে নিহি বলল,
"কীভাবে শান্ত হতে বলো? আমার আব্বু কেন কথা বলে না? আব্বুকে কথা বলতে বলো ভাইয়া প্লিজ!"

৪৬!!

সকালের পত্রিকা বাড়িতে এসেছে পাঁচ মিনিটের মতো হবে। তবে এখন নিজাম ইসলামের পত্রিকা পড়তে ইচ্ছে করছে না। নিহি আজ বাড়িতে ফিরবে তাই তিনি বড্ড খুশি। বেশি দেরি করে বাজারে গেলে তাজা শাকসবজি পাওয়া যাবে না। বড়ো বড়ো মাছও আনবেন আজ। আর আমানের কোনো বাহানা তিনি আজ শুনবেন না। প্রয়োজনে টেনে নিয়ে আসবেন বাড়িতে। জামাই আর মেয়েকে সামনে বসিয়ে খাওয়াবেন। তাই পত্রিকা বিছানার ওপর রেখেই তিনি সালেহা বেগমকে ডাকলেন। রান্নাঘর থেকে ডাকের উত্তর নিতে নিতে ঘরে এসে উপস্থিত হন সাহেলা বেগম। জিজ্ঞেস করেন,
"কী হয়েছে?"
"কিছু হয়নি। বাজারের ব্যাগ দাও। বাজারে যাব।"
"এত সকালে?"
"হ্যাঁ, দরকার আছে।"
"আচ্ছা যাও সমস্যা নেই। নাস্তা তো করে যাও।"
"না, না। বাজার করে আমি দোকানেই খেয়ে নেব।"
"বাসি মুখে বাইরে কেন যাবে?"
"আহা! কথা বাড়াচ্ছো শুধু। বাসি মুখে বাইরে না গেলে আমার মেয়েকে বাসি তরকারি খেতে হবে। শোনো,আজ সব নিহির পছন্দের খাবার রান্না করবে।"

মেয়ের জন্য নিজাম ইসলামের পাগলামি দেখে হেসে ফেললেন সাহেলা বেগম। বাজারের ব্যাগ এনে হাতে দিয়ে বললেন,
"বাইরে থেকে খেয়ে নিও কিছু।"
"আচ্ছা। যাই তাহলে।"
"সাবধানে যাবে।"

ঘর থেকে বের হতেই নীলম ডাইনিং রুম থেকে ডাকে।
"আব্বু? কোথায় যাচ্ছো?"
"আরে, সবাই এত দেরি করাচ্ছিস কেন তোরা? বাজারে যাচ্ছি।"
"দাঁড়াও। আমি তো অফিসে যাব। বাজারে নামিয়ে দিবোনি।"
"তুই তো খাচ্ছিস।"
"খাওয়া শেষ আমার।" হাত ধুয়ে তাড়াতাড়ি ড্রয়িংরুমে আসে। তমা তখন বলে,
"আব্বু আসার সময় জলপাইর আচার নিয়ে আসিয়েন। নিহির তো খুব পছন্দ।"
নীলম তখন হাস্যরসাত্মকভাবে বলে,
"নিহির একার নাকি তোমারও? নাকি নিহির নাম আর তোমার কাম!"

তমা চোখ পাকিয়ে তাকায়। নিজাম ইসলাম,নীলম আর সালেহা বেগম হেসে ফেলেন।
বাইকে করে নীলম বাবাকে বাজারে পৌঁছে দিয়ে অফিসে চলে যায়। বাজারের ভেতর গিয়ে সব তাজা তাজা সবজি কিনেন তিনি। নিহির ইলিশ মাছ খুব পছন্দ। বড়ো দেখে তিনটে ইলিশ মাছ নেন। আমান যেহেতু আজ প্রথম শ্বশুরবাড়িতে খাবে সেহেতু ভালো ভালো রান্নাবান্না তো ওর জন্যও করতে হবে। তাই গরুর মাংস, মুরগিও কিনেন। সব বাজার শেষ হলে আসার সময় লাউশাক দেখে আবার দাঁড়িয়ে যান। শাকের মধ্যে একমাত্র লাউ শাকটাই বেশি পছন্দ নিহির। তাজা শাক দেখে মন বলল নিয়ে যেতে। তাই শাকও নিয়ে নিলেন। সব তাজা জিনিস নিয়ে মনটা এখন ফ্রেশ লাগছে তার।

বাজার করা শেষ হলে পাশের চায়ের দোকানে বসেন। চাওয়ালা উনার পরিচিত। বাজার করতে এলে এই দোকানে অন্তত এক কাপ চা খাওয়া হয়ই। চা পান করা শেষ হলে তিনি বাড়ির উদ্দেশ্যে উঠে পড়েন। রাস্তা পার হয়ে গাড়িতে উঠতে হবে। রাস্তা পার হতে গিয়েই ঘটে গেল দূর্ঘটনা। ঝড়ের গতিতে একটা গাড়ি রাস্তার সাথে তাকে পিষে দিয়ে চলে গেল। এত দ্রুত পুরো ঘটনাটা ঘটল যে কেউ কিছু করতেও পারেনি। গাড়িটাকেও আটকাতে পারেনি। এক্সিডেন্ট করে কোনো ড্রাইভার নিশ্চয়ই চাইবে না পাবলিকের গণপিটুনি খেতে! তাই ড্রাইভারও আর গাড়ি থামায়নি। জানের ভয়ে চলে গেছে।

রাস্তায় পড়ে তখনো দপরাচ্ছিল নিজাম ইসলাম। শরীরে প্রাণ ছিল তখনো। রক্ততে রাস্তা ভেসে যাওয়ার মতো অবস্থা। চাওয়ালাসহ আরো পথচারীরা দৌঁড়ে এসে ধরাধরি করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতাল থেকে চাওয়ালা নিহিদের বাসায় গিয়ে খবর দেয়। এরপরের ঘটনা আপনাদের জানা!


ড্রয়িংরুমের এক কোণে সোফার সাথে হেলান দিয়ে বসে আছে নিহি। লম্বা চুলগুলো এলোমেলো হয়ে ফ্লোর ছুঁয়েছে। ঘড়ির কাঁটা টিকটিক করে বেজে চলেছে। পাঁচটা প্রায় বাজতে চলল। সালেহা বেগম এবং নিজাম ইসলামের শোবার ঘর থেকে সালেহা বেগমের চিৎকার করা আর্তনাদ শোনা যাচ্ছে। পাগলের মতো কাঁদছেন তিনি। সঙ্গে মিহিরও কান্নার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিবেশী মহিলাদের গলা শোনা যাচ্ছে। শান্তনা দিচ্ছেন সবাই। নিহির থেকে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে তরু কাঁদছে। ছেলেরা সবাই গেছে জানাজার নামাজ পড়তে। নিহি আর সবার মতো এখন আর চিৎকার করে কাঁদতে পারছে না। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। গলার স্বর ডেবে গেছে। গলায় ব্যথা করে শব্দ করে কাঁদতে গেলে। বুকের ভেতর চাপা আর্তনাদ নিয়ে নিশ্চুপে চোখের পানি ফেলছে। আগের খুনসুটিগুলোর কথা মনে পড়ছে। কিছুক্ষণ আগে ভাবি কাঁদতে কাঁদতে বলল কত খুশি নিয়ে বাবা বাজার করতে গিয়েছিলেন।

মেইন দরজায় ঢকঢক আওয়াজ হচ্ছে। যে কাজটা করছে সে নিশ্চয়ই এখন হতবুদ্ধি অবস্থায় আছে। নয়তো কলিংবেল রেখে কেন দরজায় করাঘাত করে, ধাক্কা দিয়ে ডাকবে?
তরু গিয়ে দরজা খুলে দিতেই উপমার বাবা-মা হুড়মুড় করে ভেতরে ঢোকে। উপমার মায়ের পাগলের মতো দশা। নিহি চোখের পানি মুছে ভ্রু কুঁচকে তাকায়। বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে তার সামনে দাঁড়াতেই তিনি হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বলেন,
"নিহি!"
"কী হয়েছে আন্টি? কাঁদছেন কেন আপনি?" অস্থির হয়ে জিজ্ঞেস করে নিহি।
কান্নার গতি বাড়িয়ে তিনি বলেন,
"উপমাকে খুঁজে পাচ্ছি না নিহি! কাল রাত থেকে ওর কোনো খবর নেই।"
"মানে? কীভাবে কী হলো?"
"কাল রাতে ওর বাবার ওষুধ আনতে গিয়েছিল। এরপর থেকেই নিখোঁজ। পুলিশের কাছে গিয়েছি তারা বলেছে ২৪ ঘণ্টার আগে কোনো কেস নিবে না। আমরা কী করব বুঝতে পারছি না মা!"
"অবিশ্বাস্য!"

পরক্ষণেই নিহির মনে হলো যারা উপমাকে থ্রেট করেছিল তারা কিডন্যাপ করেনি তো আবার? এত কঠিন সিচুয়েশনে কেন পড়তে হয় নিহিকেই! একদিকে বাবা মারা যাওয়ার কষ্ট অন্যদিকে উপমা নিখোঁজ হওয়ার চিন্তা। উপমার তো কোনো ক্ষতি হতে দেওয়া যাবে না। উপমা যেরকম মেয়ে সে কখনোই পালিয়ে যাওয়ার মতো কাজ করবে না। ওর নিখোঁজ হওয়ার পেছনে যারা আছে তারা উপমার নয় বরং নিহিরই শত্রু। শুধুমাত্র নিজের জন্য নির্দোষ কারো ক্ষতি কী করে হতে দেবে! বাবাকে হারানোর যন্ত্রণা সাথে নিয়েই উপমার জন্য কিছু একটা করতে হবে।
নিহি জিজ্ঞেস করে,
"কখন গিয়েছিলেন পুলিশের কাছে?"
"কাল রাতেই।"
"এখন চলেন। আমিও যাচ্ছি।"

তরুকে বলে তাদেরকে নিয়ে নিহি পুলিশের কাছে যাওয়ার জন্য বের হয়। বাড়ি থেকে বের হতেই নিরবের সঙ্গে দেখা হয়। আমানই নিরবকে পাঠিয়েছে। কারণ বাড়িতে কোনো ছেলে মানুষ নেই। এদিকে নীলমকে রেখে আগে আগে আসাও যাবে না। আমান এবং সৈকত নীলমকে সামলাচ্ছে। সঙ্গে লিমনও আছে।
নিরব জিজ্ঞেস করে,
"কোথায় যাচ্ছেন ম্যাম?"
"পুলিশ স্টেশন।" তাড়াতাড়ি করে উত্তর দেয় নিহি।
নিরব পাল্টা আর প্রশ্ন না করে বলল,
"চলুন৷ আমিও যাব।"

নিহি বাঁধা দিলো না। চারজনে একটা সিএনজিতে উঠে বসলো। জানাজায় গিয়েছিল বলে সাথে কেউই ফোন নেয়নি। তাড়াহুড়োয় নিহিও নেয়নি ফোন। উপমার মায়ের কান্না আর আহাজারি শুনেই নিরব বুঝে গেছে উপমার কিছু একটা হয়েছে। খবরটা আমানকে দেওয়া দরকার। কিন্তু ফোন সাথে নেই। তাছাড়া আমানের কাছেও তো এখন ফোন নেই। পুলিশ স্টেশন গিয়ে পরে কারো ফোন থেকে ফোন করে জানিয়ে দিলেই হবে।
_______________

আবছা আবছা দৃষ্টিতে উপমা চোখ মেলে তাকায়। কোথায় আছে বোঝার চেষ্টা করে। শোয়া থেকে উঠে বসতে গেলেই মাথা চক্কর দিয়ে ওঠে। দু'হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরে কিছুক্ষণ বসে থেকে নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে। অন্ধকার লাগছে সবকিছু। মনে পড়ে যায় কাল রাতের ঘটনার কথা।

ফ্লাশব্যাক
গাড়ির সিটের সাথে গা এলিয়ে দিয়ে বসে আছে উপমা। গলা শুকিয়ে কাঠ। শরীরে শক্তি নেই একবিন্দুও। সামনের সিট থেকে লোকটা পানির বোতল এগিয়ে দেয়। অন্ধকার বলে মুখটা দেখা যাচ্ছে না। উপমা পানি পান করল।

গাড়িটা কিছুদূর গিয়ে থেমে গল। গাড়ির হেডলাইট অন রাখল লোকটি। ভড়কে তাকায় উপমা। ছেলেটি পিছন দিকে ঘুরে বসল। জিজ্ঞেস করল,
"খুব অসুস্থ লাগছে?"
গলার স্বর শুনে চিনতে অসুিধা হলো না উপমার। অনলের গলার স্বর! অস্পষ্টভাবে উপমা বলে,
"অনল ভাইয়া!"

অনল একটু যেন হাসলো। আবছা আবছা বোঝা গেল হাসির রেখা। হাসিটা আরো চওড়া করে মৃদু হেসে বলল,
"ঠিকই চিনেছ।"
উত্তেজিত হয়ে উঠল উপমা। মনের মাঝে অসংখ্য প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে। সামিয়া কিডন্যাপ করালো। ঐ ছেলেটা ছেড়ে দিলো। আর এখন এখানে অনল। কী রহস্য লুকিয়ে আছে এর মাঝে? অস্তিরতা কাজ করছে উপমার মাঝে। অস্থিরতা আটকিয়ে রাখতে না পেরে অনর্গল প্রশ্ন করা শুরু করে।
"এসবের মানে কী? আপনি এখানে কীভাবে? আমায় কি আপনিই কিডন্যাপ করিয়েছেন? ঐ সামিয়া...সামিয়া মেয়েটা আপনার কী হয়? আমি কিচ্ছু বুঝতে পারছি না। আমায় বলেন প্লিজ!"

অনল রহস্যজনকভাবে মৃদু হাসলো। উপমার চোখ ছোটো ছোটো হয়ে যাচ্ছে। ঘুমেরা জেঁকে বসেছে চোখে। অনল চুপচাপ কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল। উপমা বিড়বিড় করে পূণরায় প্রশ্নগুলো আওড়াচ্ছে। তখন অনল বলে,
"অস্থির হয়ো না। সব বলব। আগে তোমার ঘুম প্রয়োজন। পানিটুকু তোমায় ঘুম পাড়িয়ে দেবে। ঘুমাও।"

এতক্ষণে উপমা সিটে শুয়ে পড়েছে। বিড়বিড় করাও কমে আসছে। অনল আবারও রহস্যজনক হাসি দিয়ে ড্রাইভ করা শুরু করে।

--------------

পুলিশ স্টেশনে গিয়ে উপমার বাবা-মা মিসিং ডায়েরি করে। পুলিশের সঙ্গে কথা বলল নিরব। সব কথাবার্তা শেষ করে পুলিশ স্টেশন থেকে বের হয়ে অনেকভাবে বুঝায় ও শান্তনা দেয় নিরব এবং নিহি। তারপর উনাদের বাড়ির রাস্তার ঐ পাড়ে গিয়ে রিক্সায় উঠিয়ে দেয় নিরব।

সন্ধ্যার অন্ধকার আচ্ছন্ন চারদিক। আনমনা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে নিহি। বাবার কথা মনে পড়ছে অনেক। বুক ফেঁটে কান্না পাচ্ছে। ঠোঁট কামড়ে কান্না আটকানোর চেষ্টা করে। নিরব এসে বলে,
"ম্যাম বাড়িতে চলুন।"
চোখের পানি লুকিয়ে নিহি বলল,
"হ্যাঁ, চলুন।"

সামনেই একটা সিএনজি ছিল। ঐ সিএনজিতেই ওরা উঠে পড়ে। আকাশের অবস্থা ভালো নয়। বৃষ্টি হবে মনে হচ্ছে। বাতাস হচ্ছে খুব। নিরব প্রশ্ন করে,
"স্যারের নাম্বার কি মুখস্থ আছে ম্যাম?"

নিহি উপরনিচ মাথা নাড়ালো। যার অর্থ 'হ্যাঁ'। নিরব এবার ড্রাইভারকে বলল,
"ভাই আপনার ফোন থেকে একটা ফোন করা যাবে?"
"আমার মোবাইলে চার্জ নাই ভাইজান। বন্ধ হইয়া গেছে।" ড্রাইভারের উত্তর।
নিরব একটু হতাশ হলো। ড্রাইভার অন্য রাস্তায় যাচ্ছে দেখে নিরব বলে,
"ভাই এদিক দিয়ে যাচ্ছেন কেন?"
"বৃষ্টি হইতাছে ভাইজান। ঐ রাস্তায় অনেক পানি জমব। গাড়ি নিয়া যাওন যাইব না।"
"যাওয়া না গেলে আপনি গাড়ি থামান। আমরা অন্য গাড়িতে যাব।"

ড্রাইভার সিএনজি থামালো না। উল্টো গাড়ির স্পিড আরো বাড়িয়ে দিলো। নিরব বারবার গাড়ি থামানোর কথা বলা সত্ত্বেও সে গাড়ি থামায়নি। অজানা ভয়ে মনের ভেতর দানা বাঁধছে নিরবের। কোনদিক থেকে কোনদিকে নিয়ে গিয়ে গাড়ি থামায় সে সেটা বোঝা গেল না। জায়গাটা অনেকটা জঙ্গলের মতো। রেইনকোট পরা কয়েকজন লোক ঘিরে ধরে। নিরব নিহির হাত শক্ত করে ধরে অন্যপাশ দিয়ে নেমে দৌঁড়াতে থাকে। কিন্তু সফল হতে পারে না। আরো কয়েকজন সেখান থেকে বেরিয়ে আসে। নিরবের হাত থেকে নিহির হাত ছাড়ানোর জন্য জোড়াজুড়ি করে। অন্য একজন কয়েক ঘা লাগিয়ে দেয় নিরবকে। তবুও নিরব হাত ছাড়ে না। নিহি পুরো ঘটনায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে আছে। কান্না চলে আসছে। আকুতি করে বলে,
"আপনারা ওকে মারছেন কেন? ছাড়েন প্লিজ!"
নিহি অন্য হাত দিয়ে লোকটার পিঠে কিল-ঘুষি দিতে থাকে। পাশের থেকে আরেকজন বলে,
"ঐ ছেলেটা ছাড়বে না সহজে। কেউ বাঁধা দিতে আসলে তাকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতে বলেছে। বসের আদেশ!"

ছেলেটা এবার ছুরি বের করতেই নিহি চিৎকার দিয়ে বলে,
"না, না। কিছু করবেন না! যেখানে নিয়ে যাবেন আমি যাব।"
নিহির কথা আমলে নিলো না তারা। নিরবের পেটের ভেতর চকচক করা ছুরিটা ঢুকিয়ে দিলো। গলগল করে রক্ত বের হচ্ছে। নিহি জোরে চিৎকার করে। সাহায্যর জন্য আর্তনাদ করে। প্রবল বৃষ্টির শব্দে নিহির শব্দ মিলিয়ে যায়। কেউ আসে না সাহায্যর জন্য। নিহি আর্তনাদ করে কাঁদে। নিরবের রক্তে ভেসে যাচ্ছে মাটির ঢাল বেয়ে নামা পানিতে। নিরবের চোখের পানি মিলিয়ে যাচ্ছে বৃষ্টির পানিতে। ঝাপসা হয়ে আসে দু'চোখ!
Author, Publisher & Developer

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

উফ!
মনে হচ্ছে আপনার ইন্টারনেট সংযোগে কিছু সমস্যা আছে। অনুগ্রহ করে আগে আপনার ইন্টারনেটের সংযোগ ঠিক করুন এবং তারপর আবার ব্রাউজিং শুরু করুন৷
AdBlock সনাক্ত করা হয়েছে!
আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি আপনার ব্রাউজারে অ্যাডব্লকিং প্লাগইন ব্যবহার করছেন৷ আমরা আপনাকে আপনার অ্যাডব্লকিং প্লাগইন বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করছি, কারন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমরা যে রাজস্ব আয় করি তা এই ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।