আড়ালে আবডালে - পর্ব ১২ - মুন্নি আক্তার প্রিয়া - ধারাবাহিক গল্প


ড্রয়িংরুমে বসে পত্রিকা পড়ছিলেন নিজাম ইসলাম। নিহি ধীরপায়ে তার দিকে এগিয়ে যায়। পত্রিকা পড়ার সময় তিনি কারো দিকে নজর দেন না এটা সত্যিই। কিন্তু মেয়ের উপস্থিতি তিনি টের পেয়েছেন। নিহি চুপ করে পাশের সোফায় বসে। অপেক্ষা করতে থাকে, কখন নিজাম ইসলামের পত্রিকা পড়া শেষ হবে। প্রায় ২০ মিনিট ধরে তিনি পত্রিকা পড়েন। পত্রিকা ভাঁজ করতে করতে সালেহা বেগমের উদ্দেশ্যে বলেন,
"বাজারে যাচ্ছি আমি। তোমার কিছু লাগবে?"
"না।" রান্নাঘর থেকে উত্তর দেন সালেহা বেগম।
নিহি কথা বলতে গিয়েও কথা বলতে পারছে না। সাহসে কুলাচ্ছে না। বাবার সামনে দাঁড়াতেও এখন পা কাঁপে। সাহস সঞ্চয় করে বলেই ফেলে,
"আমার জন্য আইসক্রিম নিয়ে এসো আব্বু।"

নিজাম ইসলাম তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে নিহির দিকে তাকান। পকেট থেকে টাকা বের করে টেবিলের ওপর রেখে বলেন,
"যার যা ইচ্ছে এনে খেতে পারে।"
বাজারে না গিয়ে তিনি ঘরে চলে যান। নিহি মাথা নিচু করে বসে থাকে। চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে আসছে। তমা খেয়াল করে নিহির পাশে বসে। নিহির দু'গালে হাত রেখে বলে,
"কাঁদবেনা একদম।"
"আব্বু আমার সঙ্গে কথাও বলছে না ভাবি।" ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে বলে নিহি।
"রাগ কমেনি তো। রাগ কমলে সব ঠিক হয়ে যাবে।"
"আমি খুব বড় ভুল করে ফেলেছি ভাবি। আমার কারণে আব্বুকে অপমানিত হতে হয়েছে। আমি খুব বাজে ভাবি। খুব বাজে।"
তমা নিহিকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলে,
"তুমি অনেক লক্ষী নিহি। নিজেকে এতো ছোট কখনো ভাববে না। মানুষ মাত্রই ভুল। তুমিও একটা ভুল করে ফেলেছ। একটা কথা মনে রাখবে, মানুষ কিন্তু ভুল থেকেই একদিন শিখে। তোমার বয়স কম। সাফল্যর দিকে যত এগিয়ে যাবে, ততই হোঁচট খাবে। আর ততই শিখবে। ব্যর্থতার পরই সফলতা আসে। তোমার ওপর বাড়ির সবাই এখন রেগে আছে। তবে এই রাগটা ক্ষণিকের। তোমাকে বাবা-মা যতই দূরে ঠেলে দেবে, তুমি ততই ঘেঁষে থাকবে। মনে রাখবে, এরা তোমার আপনজন। তোমার বাবা-মা। একদিন, দু-দিন তোমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে হয়তো। কিন্তু তৃতীয় দিন ঠিকই তোমায় বুকে টেনে নেবে। আদর্শ বাবা-মা কখনো সন্তানদের ঠকায় না নিহি। তুমি মানো তো তাদের আদর্শ বাবা-মা?"

নিহি ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে উপর-নিচ মাথা ঝাকায়। যার অর্থ 'হ্যাঁ।'তমা নিহির চুলগুলো হাত-খোঁপা করে দিতে দিতে বলে,
"ব্যস! তাহলেই হবে। এখন মায়ের কাছে যাও। শক্ত করে গিয়ে জড়িয়ে ধরবে।"

নিহি রান্নাঘরে যাওয়ার পথে থেমে যায়। পিছনে ঘুরে আবার ভাবির দিকে এগিয়ে যায়। ভাবিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে,
"মায়ের পরে তুমি আমার দ্বিতীয় অনুপ্রেরণা। যারা মনে করে, ননোদ-ভাবি মানেই ঝগড়া, হিংসা তাদেরকে উদাহরণ হিসেবে তোমাকে দেখানো উচিত। ভালোবাসি ভাবি।"
তমা নিহির কপালে চুমু খেয়ে বলে,
"পাগলী! তুমি কি শুধুই আমার ননোদ? আমার বোন তুমি। আমার লক্ষী।"

নিহি তমার গালে চুমু দিয়ে রান্নাঘরে যায়। সালেহা বেগম রান্না করছিলেন। নিহি পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলে,
"মা।"
তিনি নিশ্চুপ। নিহি জিজ্ঞেস করে,
"কী রান্না করছ?"
"মাছ।"
"আমার নুডুলস্ খেতে ইচ্ছে করছে। বানিয়ে দেবে?"

সালেহা বেগম নিহির থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে নুডুলস বানানোর জন্য পানি বসায়। নিহি মায়ের হাত জড়িয়ে ধরে বলে,
"আমার সাথে কথা কেন বলো না মা? আমায় কি ক্ষমা করা যায় না? একটা সুযোগ দেওয়া যায় না আমায়?"
সালেহা বেগম নিহিকে বুকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেন। কাঁদতে কাঁদতে বলেন,
"কেন এমন ভুল করলি মা?"
নিহি নিজেও কেঁদে ফেলে। কাঁদতে কাঁদতে বলে,
"আর করব না মা। আমি বুঝতেও পারিনি অনল এমন কিছু করবে।"
"আমায় বল তো, শুরু থেকে কী হয়েছিল?"

সালেহা বেগম তমাকে রান্নাঘর সামলাতে দিয়ে নিহিকে নিয়ে নিহির রুমে যান। বিছানায় নিজে বসে নিহির মাথা কোলে নেন। এরপর বলেন,
"এবার বল।"
নিহি শুরু থেকে সবটা বলে তাকে। সব শুনে তিনি শান্তস্বরে বলেন,
"অনলকে যা বলেছিস একদম ঠিক বলেছিস। এখন শোন, মাত্র এক সপ্তাহ্ তুই এই কলেজে পড়বি। তারপর নিজে গিয়ে টিসি চাইবি।"
নিহি শোয়া থেকে উঠে বসে। অবাক হয়ে তাকায় মায়ের দিকে। মায়ের চোখে দৃঢ়তা বিদ্যমান। সালেহা বেগম বলেন,
"ঠিকই বলছি। এই কলেজ তোকে রিজেক্ট করতে চেয়েছিল না? তুই নিজেই এই কলেজকে রিজেক্ট করবি এবার। আর এক সপ্তাহ্ কেন পড়তে বলছি সেটাই ভাবছিস তো? এই এক সপ্তাহ্ তুই অনলকে দেখিয়ে দিবি, ও'কে ছাড়া তুই দিব্যি ভালো থাকতে পারিস। ওর প্রতারণা ক্ষণিক সময়ের জন্য তোকে আটকে রাখতে পারলেও সারাজীবনের জন্য কখনোই আটকে রাখতে পারবে না। আমি তোর মামার সঙ্গে কথা বলব। তোর মামার বাসায় সিলেটে থেকে তুই পড়বি। পারবি না?"
নিহি মায়ের দু'হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বলে,
"তুমি যা বলবে, আমি তাই শুনব।"


সন্ধ্যার দিকে পড়তে বসেছে নিহি। পড়ার টেবিলটা জানালার সাথে। জানালা বন্ধ করাই ছিল। কী মনে করে যেন জানালাটা খুলে দেয় নিহি। সঙ্গে সঙ্গে শাঁ শাঁ করে বাতাস প্রবেশ করে ঘরে। সারা শরীরে কম্পন তুলে যায়। এমনিতেই ঠান্ডা পড়েছে খুব তার মধ্যে আবার জানালা খুলে দেওয়ায় বাতাসও যোগ হয়েছে। তবুও নিহির মন্দ লাগছে না। জানালা দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখে মৃদু স্বচ্ছ আকাশ। তারাদের মেলা আজ নেই। তবে ঘোলা চাঁদ রয়েছে। সম্ভবত হালকা কুয়াশা বা মেঘের জন্যই চাঁদটাকে ঘোলা মনে হচ্ছে। মনোযোগ সহকারে প্রকৃতিকে দেখে উপলব্ধি করছে। মুহূর্তেই একরাশ বিষণ্ণতা নিহিকে ঘিরে ধরে। অনলের কথা মনে পড়ে যায়। অনলের এমন প্রতারণা করাটা নিহির ভাবনা-চিন্তার বাহিরে ছিল। কিন্তু এটাই হলো। দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে চেয়ারের সঙ্গে হেলান দিয়ে বসে। সকলের সামনে যতই শক্ত হয়ে থাকুক না কেন, দিনশেষে ঠিকই একাকিত্ব চেপে ধরে। অনলের কথা মনে পড়ে বুক চিরে কান্না আসে। কিছুতেই মেনে নিতে পারে অনলের এহেন প্রতারণা। তবুও মেনে নিতে হয়। যত যাই হোক, কারো সামনে ভেঙে পড়া চলবে না। নিজেকে শক্ত রাখতেই হবে। চোখের কোণে হাত দিয়ে দেখে, কার্ণিশে কিছু অশ্রুজল জমা হয়েছে। ক্লেশকর হাসিতে ঠোঁটকে মুখরিত করে অশ্রুটুকু মুছে নেয়। মনের অজান্তেই বিড়বিড় করে বলে, 'জানি না, কবে কাটিয়ে উঠতে পারব এসব ক্লেশময় যন্ত্রণা!'
পড়ায় মন বসাতে না পেরে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ে। ঘুমানোর চেষ্টা করেও কোনো লাভ হচ্ছে না। বিছানায় একবার এপাশ আরেকবার ওপাশ করেও যখন ঘুম এলো না তখন কম পাওয়ারের একটা ঘুমের ওষুধ খেয়ে শুয়ে পড়ে। আস্তে আস্তে ঘুমেরা ধরা দিতে বাধ্য হয় নিহির আঁখিদ্বয়ে।
______________________

কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে বসে আড্ডা দিচ্ছে অনল ও ওর বন্ধুরা। ক্লাস শুরু হওয়ার ঘণ্টা দিয়েছে মিনিট বিশেক হবে। অনলদের ক্লাস শুরু হতে এখনো দেরি আছে। তবুও আড্ডা দেওয়ার জন্য আরো আগেই বন্ধুরা মিলে চলে আসে। আড্ডার এক পর্যায়ে কথা ওঠে নিহিকে নিয়ে। লিসা বলে,
"অনল, তোমার মাঝে যে এত প্যাঁচ তা কিন্তু বুঝাই যায় না। আমাদের বন্ধুত্ব এতদিনের, আমরাই বুঝতে পারিনি আর তো পরে রইল ঐ পিচ্চি মেয়ে!"
অনল হাসে। সাকিব বলে,
"তুই একটা মেয়ে হয়ে আরেকটা মেয়ের এত খারাপ পরিস্থিতিতেও হাসছিস? এটা যদি তোর সাথে হতো?"
"ফালতু কথা বলিস না তো। ঐ মেয়েকে আমার এমনিতেও পছন্দ নয়।"
সুমাইয়া করুণস্বরে বলে,
"নিহি আজ কলেজে আসেনি। খেয়াল করেছিস?"
উত্তরে অনল বলে,
"না আসলে নাই। তোর এতো মাথা ব্যথা ক্যান? দেখ গিয়ে কোথায় লুকিয়ে আছে। কাল কত বড় বড় কথা বলে গেছে শুনিসনি? শুধু বড় কথা বললেই হয় না। কাজে প্রমাণ করতে হয়। আর তার জন্য থাকতে হয় সাহস।"
"সেই সাহস নিহির আছে!" গেইটের দিকে তাকিয়ে বলে সুমাইয়া। সকলেই সুমাইয়ার দৃষ্টি অনুসরণ করে গেইটের দিকে তাকায়। নিহি দৌঁড়ে দৌঁড়ে আসছে। রাতে ঘুমের ওষুধ খাওয়ার জন্য সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে গেছে। তাই কলেজে আসতেও দেরি হলো। নিহি কোনোদিকে না তাকিয়েই ক্লাসে চলে যায়। অর্ধেক ক্লাস হয়ে গেল প্রায়। এখন গেলে স্যার বকবে। তাই প্রথম ক্লাসটা করবে না ভাবে নিহি। পাশের খালি ক্লাসে গিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে ক্লাস শেষ হওয়ার। পরের ক্লাসের বই বের করে পড়তে থাকে। কাল তো এমনিতেও পড়তে পারেনি। প্রথম ক্লাস শেষ হওয়ার পর নিহি ক্লাসে যায়। নিহিকে দেখে কয়েকজন মেয়ে বেশ হাসাহাসি করছে। কিছু ছেলে নিজেদের মধ্যে বাজে মন্তব্যও করছে নিহিকে নিয়ে। উপমা নিহিকে বসার জায়গা দিয়ে বলে,
"এত দেরি হলো কেন?"
"ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে গেছে।"

পেছন থেকে, সামনে থেকে সকলের কানাঘুষা করে বলা কথা উপমা আর নিহির কানে আসছে। উপমা জবাব দিতে গেলেও নিহি আটকাচ্ছে। ক্লাস চলাকালীনও শুনতে হয়েছে সকলের ফিসফিস। স্যার,ম্যামরাও অন্য দৃষ্টিতে দেখছে নিহিকে। সম্মান এমন একটা জিনিস যা হারিয়ে গেলে ফিরে পাওয়া দুষ্কর। টিফিন টাইমে ক্যান্টিনে গেছে দুজনে খেতে। কলেজের প্রায় সবাই ক্যান্টিনে খায়। কয়েকজন আবার বাইরে গিয়ে হোটেলে খায়। ক্যান্টিনে ঢোকার সময়ই নিহির এক ক্লাসমেট ছেলে বলে,
"বান্ধবী আমাদেরও তো একটু জড়িয়ে ধরতে পারো? আমরা অবশ্য প্রিন্সিপালকে বিচার দেবো না।"

ছেলেটার সঙ্গে আরো কয়েকজন ক্লাসমেট ছেলে শব্দ করে হাসে। অপমানে নিহির কান্না চলে আসছে। মনের ভেতর প্রবল দৃঢ়তা এনে ভাবে, 'ভেঙে পড়লে চলবে না। ভাঙা হৃদয় কাউকে দেখানোও যাবে না। নরম হওয়া যাবে না কারো সামনে।' নিহি নিশ্চুপ থাকতে থাকতে আরো কিছু বাজে কথা শুনিয়ে দিয়েছে ওরা। তখন ক্যান্টিনের দরজায় এসে দাঁড়িয়েছে অনল, সাকিব, মিলন, সুমাইয়া, লিসা ও ওদের ক্লাসের আরো কয়েকজন। বেশকিছু ছেলে নিহির চারপাশে দাঁড়িয়ে নিহিকে উক্তক্ত করছে। যেই ছেলেটা নিহিকে বাজে কথা বলেছে তার দিকে তাকিয়ে নিহি নিজের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে থাপ্পড় বসায় ছেলেটার গালে। চিৎকার করে বলে,
"কাউকে কিছু বলার আগে ভেবে বল। কোনো মেয়েকে অসম্মান করার আগে তার জায়গায় নিজের বোনকে, নিজের মাকে, নিজের প্রিয়তমাকে ভেবে দেখ। তাকে পারবি তো এভাবে অসম্মান করতে? কোনো মেয়ে যদি খারাপও হয় তবুও তাকে অসম্মান করিস না। মা নিশ্চয়ই মেয়েদের অসম্মান করতে শেখায়নি? কতটুকু চিনিস আমাকে? কতটুকু জানিস ঐ সত্যটা? একটা কথা শুনলি তো সেটা নিয়েই পড়ে গেলি! কীভাবে, কতভাবে অসম্মান করা যায় সেটা নিয়ে ভাবতে শুরু করেছিস তোরা। একটা কথা কান খুলে শুনে রাখ, আমায় নিয়ে বাজে মন্তব্য করার আগে দশবার ভাববি। নয়তো আজ তো হাত দিয়ে মেরেছি। এরপর জুতো খুলে মারব। জানোয়ার!"
আচমকা এসব হওয়ায় সব হাসি-ঠাট্টা, ফিসফিসানি থেমে যায়। সব ছেলে-মেয়েরা চুপসে যায়, যারা নিহিকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেছিল।

কথাগুলো বলতে বলতে নিহির কান্না চলে আসে। দৌঁড়ে ক্যান্টিন থেকে বের হওয়ার সময় অনলকে দেখে থমকে দাঁড়ায়। কন্ট্রোল করে নেয় অশ্রুগুলোকে। অনলকে বলে,
"খুশি তো এবার আপনি? আপনি যা চেয়েছিলেন, তার চেয়ে অনেকগুণ বেশি অপদস্থ হতে হচ্ছে আমায়। ভালো লাগছে না আপনার? জানি আমি! আপনার ভীষণ ভালো লাগছে এখন। ভেতরে ভেতরে আপনি পৈশাচিক আনন্দ পাচ্ছেন। ভাববেন না, আজ যারা আমায় অপমান, অপদস্থ করছে একদিন তারাই তাদের ভুলটা জানতে পেরে অনুতপ্ত হবে। আর ভুলটা যে কতটা ভুল সেটা সবচেয়ে ভালো জানেন আপনি। আমার অনুভূতিকে নরম ভাবার কোনো কারণ নেই। মেয়েদের অনুভূতি ভীষণ শক্ত। শুধু পাত্রভেদে অনুভূতির প্রকাশ ঘটায়। সময় একদিন কথা বলবে।"

অনলকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে নিহি মাঠের এক কোণায় গিয়ে বসে। নিহির পিছনে পিছনে যায় উপমা আর দীপ্ত। নিহির দু'পাশে দুজনে বসে। উপমা বলে,
"আমি তোর পাশে সবসময়ই আছি নিহি। আমি সেদিন সেখানে উপস্থিত না থেকেও বলতে পারি তোর কোনো দোষ ছিল না। তার উপযুক্ত শাস্তি সে একদিন ঠিক পাবে দেখিস।"
"ওদের জন্য আমায় তুমি ভুল বুঝো না। ওরা আমার ক্লাসমেট হলেও, আমি ওদের পছন্দ করতাম না। আজকের পর তো আরো নয়। সব ছেলে খারাপ হয় না। আমায় তুমি বন্ধু হয়ে পাশে থাকতে দিও। তোমার বিশ্বাসের অমর্যাদা আমি করব না, মা কালীর দিব্যি।" বলে দীপ্ত।
উপমা আর দীপ্ত নিহির দু'হাত জড়িয়ে ধরে অপর হাত দিয়ে নিহির চোখের পানি মুছে দেয়। হোঁচট খেয়ে ফের আবার পথ চলতে সব মানুষের দরকার হয় না। কিছু প্রকৃত মানুষ থাকলেই চলে।
.
.
.
চলবে.....................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন