সারল্য খাবার টেবিলের পাশে এসে দাঁড়ায়। জাহ্নবীর পরনে তার মায়ের শাড়ি৷ মায়ের পরিহিত কোনো শাড়িতে এর আগে মা ছাড়া আর কাউকেই দেখেনি সারল্য। তার মনে হচ্ছে মায়ের শাড়ি শুধুই মায়ের। শাড়িটাতেই যেন একটা মা মা ব্যাপার আছে। জাহ্নবী শাড়িটা পরায় তার চেহারায় অন্যরকম মায়া এসে ভর করেছে৷
ম্লান হেসে সারল্য বলল, 'আপনাকে শাড়ি পরতে দেখিনি কখনো।'
'দেখেছেন। মনে নেই হয়তো।'
'হয়তোবা। আমার খেতে ইচ্ছে করছে না। আমি রুমে গেলে আপনি কি কিছু মনে করবেন?'
'না।'
মুখে 'না' বললেও জাহ্নবী অবশ্যই কিছু মনে করবে। পান্নাবাহার তার সঙ্গে না বসলে ভালো লাগবে না তার। এত সুন্দর রাতটা সারল্য বিষণ্ণতায় কাটিয়ে দেবে, সেটা কী করে হয়!
পান্নাবাহার নিজের ঘরের দিকে পা বাড়ালে জাহ্নবী বলল, 'আপনি আজ সারাদিন কিছু খাননি।'
থমকে দাঁড়াল সারল্য। পেছন ফিরে বলল, 'খেয়েছি তো। দুপুরে বাসা থেকে খেয়েই বেরিয়েছি।'
'আমার তো মনে হচ্ছিল আপনি সারাদিন কিছু খাননি।'
শুকনো হাসি দিয়ে সারল্য বলল, 'কেন? আমার শাশুড়ী অসুস্থ বলে আমি খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দিয়ে বসে আছি ভেবেছেন?'
সারল্য'র মা ছেলের হাত ধরে বললেন, 'রাগ করিস না সোনা আমার। মাথা ঠাণ্ডা রাখ।'
সারল্য আবারও ম্লান হাসলো। ছোট্ট দীর্ঘশ্বাসে ভেতরে জমা রাগটাকে ঝেড়ে ফেলে দিলো সে। তারপর নিজের ঘরে চলে গেল। বাকি খাবারটুকু নিঃশব্দে খেয়ে নিলো জাহ্নবী। সারল্য'র জন্য মন কেমন করছে। লোকটার জন্য সে কিছু একটা করতে পারতো যদি! এই ভেবে আক্ষেপ হয় তার।
খাওয়া শেষে সারল্য'র মা জাহ্নবীকে নিয়ে নিজের ঘরে এলেন। বললেন, 'বসো মা। শার্লিন এসে তোমাকে রুমে নিয়ে যাবে। গেস্ট রুমে কেউ থাকে না। ভ্যাপসা গন্ধ হয়ে আছে। কিছু মনে করো না '
'না খালা। অসুবিধা নেই। আমি আপনার সঙ্গে শুলে আপনার অসুবিধা হবে?
'না না, আমার অসুবিধা নেই। তুমি অতিথি মানুষ। আমার সঙ্গে শুতে তোমার আপত্তি হয় কী না।'
'আমার কোনো অসুবিধা নেই খালা। আপনি ঘুমিয়ে পড়ুন। আমি কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে তারপর শোবো।'
'আজকালকার মেয়েরা সবাইকে আন্টি বলে ডাকে। তুমি আমাকে খালা বলছো দেখে খুব অবাক হয়েছি জানো?'
কথাটা বলেই হাসলেন মহিলা। জাহ্নবী মুচকি হেসে বলল, 'আপনাকে দেখেই আমার খুব আপন আপন লাগছিল। খালা খুব আপন একটা ডাক। আন্টি ডাকে সেই আপন আপন লাগাটা আসেনা।'
'ঠিকই বলেছো। আমি শুয়ে পড়ি তাহলে মা?'
'হ্যাঁ শুয়ে পড়ুন। আমি একটু ওনার সঙ্গে কথা বলতে চাচ্ছিলাম।'
ইতস্তত করতে করতে শেষ অবধি কথাটা বলেই ফেলল জাহ্নবী। মহিলা বললেন, 'ওর রুম তো ওপরে। আমার সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে কষ্ট হয় মা৷ শার্লিনকে ডেকে দেই দাঁড়াও।'
'থাক তাহলে। কালকে কথা বলবো।'
'কথা যখন বলা দরকার তখন না বলে পরে কী সেই কথার আনন্দ থাকে। তুমি ওপরে যাও। দ্বিতীয় রুমটাই সারল্য'র। খুঁজে না পেলে ডাকবে।'
জাহ্নবী বিস্মিত হয়। এই বয়সী একজন মায়ের অপূর্ব ভাবনা ওকে মুগ্ধ করেছে। মা নিশ্চয় তার ছেলের একাকীত্বে কষ্ট পান। নয়তো জাহ্নবী কথা বলতে চাওয়া মাত্রই ওনার মুখে এক ধরনের আলোর বিস্ফোরণ হল কেন!
'ধন্যবাদ খালা। আপনাকে কষ্ট দিলাম।' আমি দুইটা জরুরি কথা বলেই চলে আসবো।'
মহিলা কয়েকবার চোখ পিটপিট করলেন। চুলগুলো পরম যত্নে কাঁধের ওপর দিয়ে সামনে দুলিয়ে রেখে জাহ্নবী ঘর থেকে বের হল। ছোট্ট ডুপ্লেক্স বাড়ি। তবে আধুনিক যুগের বাড়িগুলোর মতো চাকচিক্যময় নয় মোটেও। অনেকটা হাল আমলের ডিজাইনে করা। সবখানে আভিজাত্যের ছাপ।
সারল্য'র ঘরের দরজায় শব্দ করে জাহ্নবী। সারল্য বলল, 'দরজা খোলা আছে।'
দরজা ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করল সে। বিছানায় বসে থাকা সারল্য চমকে উঠে দাঁড়িয়ে পড়ল। তার পরনে হাফপ্যান্ট ও খালি গা। বিব্রত ভঙ্গীতে সারল্য বলল, 'আপনি!'
'সরি বিরক্ত করলাম বোধহয়?'
'না। আমি শুয়ে পড়েছিলাম।'
'তাহলে চলে যাই।'
'দাঁড়ান। বসুন।'
সারল্য একটা টিশার্ট পরতে পরতে জাহ্নবীকে বসতে বললো। তার রোমশ বুকের দিকে চোখ যেতেই জাহ্নবী অন্যদিকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নেয়। সারল্য বলল, 'বসুন।'
বিছানার এক কোণায় বসলো জাহ্নবী। পুরো ঘরে একবার দৃষ্টি বুলিয়ে নেয় সে। বেড সাইট টেবিলের ল্যাম্প থেকে মৃদু আলো উৎসারিত হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে ঘরজুড়ে। জাহ্নবী'র খুব মন কেমন করে। এই ঘরটাকে তার খুব আপনার বলে মনে হয়।
সারল্য বলল, 'চা খাবেন?'
'না, এত রাতে আর চা খেতে চাই না।'
'আমার রুমেই আছে চায়ের সরঞ্জাম। আপনি বসুন, আমি বানিয়ে দিচ্ছি।'
সারল্য চায়ের জন্য পানি গরম করতে লেগে গেল। জাহ্নবী বলল, 'আপনি এখানেই থাকেন?'
'হ্যাঁ। ডিভোর্সের পরে এখানে চলে এসেছি। মা একা থাকতে দেয় না।'
'ডিভোর্সের পর একা থাকাই উচিৎ। নিজের জন্য যথেষ্ট সময় পাওয়া যায়।'
সারল্য চমকে উঠে বোকার প্রশ্ন করে বসলো, 'আপনারও কী ডিভোর্স হয়েছে?'
'না। আমি বিয়েই করিনি।'
'ওহ সরি। ভুলেই গিয়েছিলাম।'
চায়ের কাপে গরম পানিতে একটা টিব্যাগ ছেড়ে দিয়ে সারল্য কাপটা এগিয়ে দিলো জাহ্নবীর দিকে। জাহ্নবী কয়েক মুহুর্ত সারল্য'র দিকে তাকিয়ে রইল। মনে হল সারল্য'র চাহনিতে তীব্র বিষাদ। লোকটা ভেতরে ভেতরে গুমরে মরছে। ওর বুকে দহন শুরু হয়। কেন এই মানুষটার কষ্ট ওকে এত পীড়া দেয়?
জাহ্নবী বলল, 'আপনি রং চা বেশী পছন্দ করেন?'
'ঝটপট বানানো যায় বলে পছন্দ করি।'
'আপনার ঘরটা খুব সুন্দর। ছিমছাম, পরিপাটি।'
সারল্য চোখ তুলে তাকালো। তার চোখে বিস্মিত হওয়ার ছাপ স্পষ্ট। জাহ্নবী কিঞ্চিৎ ভ্রু কুঁচকে ফেলল। সারল্য বলল, 'সে বলতো আমার রুমটা তার একটুও পছন্দ নয়। এই বাসায় এলে সবসময় রুমের ডেকোরেশন চেঞ্জ করা নিয়ে ঝগড়া হতো আমাদের।'
মাথা নিচু করে ফেলল জাহ্নবী। এর উত্তরে কীইবা বলা যায়। উদাসীন চোখে বিশাল জানালার দিকে তাকিয়ে থেকে সারল্য বলল, 'আমার পুরনো ট্রেডিশনাল জিনিস ভালো লাগে। আর ওর ভালো লাগে মডার্ন ঝকঝকে ডিজাইনের সবকিছু। এটাই হয়তো স্বাভাবিক। আমি হলাম ক্ষ্যাত বাঙাল আর সে আমেরিকান স্মার্ট লেডি।'
'উনি আমেরিকায় থাকতেন বুঝি?'
'ওর জন্ম আমেরিকায়। ক্লাস সেভেনে পড়াকালীন ঢাকায় চলে আসে। তবে ও সবসময় আমেরিকায় সেটেল্ড হতে চাইতো।'
'এখন কোথায় থাকেন উনি?'
'নিউ ইয়র্ক। ঢাকায় বেড়াতে এসেছে ওর মায়ের অপারেশনের জন্য। ও চেয়েছিল মাকে ওখানে নিয়ে গিয়ে অপারেশন করতে। কিন্তু আম্মা দেশ ছেড়ে যেতে চান না। ওনার স্বামীর কবর এখানে। উনি শেষ দিন পর্যন্ত এখানেই থাকতে চান।'
জাহ্নবী চা শেষ করে বলল, 'ধন্যবাদ চায়ের জন্য।'
সারল্য'র পাশে এসে দাঁড়াল জাহ্নবী। তার বিষণ্ণ মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, 'আপনি এই কষ্টটাকে এখনো কেন আঁকড়ে ধরে আছেন? ছেড়ে দিন না তাকে। যাকে ছেড়ে দিয়েছেন, তার কষ্টটাকে কেন পুষে রেখেছেন মনে? ছেড়ে দিন। মনের বাঁধন খুলে দিন। ছোট ছোট ব্যাপার গুলোতে কষ্ট পাবেন না। নিজেকে হারাতে দেবেন না প্লিজ।'
'আমি নিজেকে হারাই নি। মাঝেমাঝে সময় আমাকে খুব একাকী করে তোলে জাহ্নবী। আমার তো এমন হবার কথা ছিল না।'
'আমাদের ভাগ্যে তাই ঘটে, যাতে আমাদের ভালো হয়। আমি একটা কথা বিশ্বাস করি, আল্লাহ যা করেন, সবসময় আমাদের ভালোর জন্যই করেন। এখানে কোনো দ্বিধা নেই। আপনি মনকে বেঁধে রেখেছেন। ছেড়ে দিন। পাখির মতো উড়তে দিন তাকে। দেখবেন সব ঠিক হয়ে যাবে। আবার নতুন করে বাঁচতে শিখুন। জীবন সবসময় একরকমভাবে চলবে না। মেনে নিতে শিখুন।'
সারল্য চুপ করে আছে। জাহ্নবী'র মনে শঙ্কা, পাছে বেশী বেশী বলে মানুষটাকে কষ্ট দিয়ে ফেলে কী না!
সারল্য বলল, 'সেই চেষ্টাই করি সবসময়।'
'জানেন আমি কত একা?'
সারল্য'র চোখে চোখ রেখে কথাটা বলে জাহ্নবী। সারল্য স্থিরচোখে জাহ্নবী'র চঞ্চল হয়ে ওঠা চোখ দুটোর দিকে তাকিয়ে থাকে। জাহ্নবী বলল, 'আমি জন্মের পর থেকে কোনো বন্ধু পাইনি। আমার মা কোনোদিনও আমাদের সঙ্গে মন খুলে কথা বলেননি। একটা দেয়াল সবসময় আমাকে আর মাকে আলাদা করে রেখেছে। সেই দেয়াল কখনো ভাংবে না। এই একাকী আমি কিন্তু বেশ ভালো আছি। আমার অভাব, শূন্যতা গুলো তাদের মতো আছে। আমি ওদেরকে নিজের অঙ্গ বানিয়ে চলেছি এতদিন। কিন্তু এখন আমার সেই ধারণা ভেঙেছে। শূন্যতাকে আঁকড়ে ধরে বাঁচা যায় না। মনের বাঁধন খুলে দিয়েছি আমি।'
সারল্য বলল, 'আপনার কথাগুলো ভালো লাগল। বারান্দায় যাবেন?'
'চলুন।'
দুজনে এসে দাঁড়ায় সারল্য'র ঘরের বারান্দায়। হঠাৎ ভীষণ চমকে ওঠে জাহ্নবী। সে বিস্মিত চোখে চারপাশে তাকায়। একি! এ তো তার কল্পনার সেই বারান্দা। যেখানে সে রোজ বৃষ্টিতে ভেজে, যার ওপরে খোলা আকাশ। একটা বড় আরাম কেদারায় হেলান দিয়ে বসে থাকা তার একটা আপন মানুষ। চেয়ারের হাতলে থাকে পত্রিকা আর সিগারেটের অ্যাস্ট্রে। এই বারান্দায় এমন একটা চেয়ার থাকলেই হতো। আর মানুষটা? তার প্রিয় মানুষ তার নয়, তবে সেই মানুষটাই এখন তার সম্মুখে দাঁড়িয়ে!
জাহ্নবী শিহরিত হয়। তার কল্পনার বারান্দাটা পেয়ে গেছে সে। শুধু মানুষটাকে পেয়ে যেত যদি! আর কক্ষনও জীবনে কিচ্ছু চাওয়ার ছিল না তার।
সারল্য বলল, 'আমার যখন দমবন্ধ লাগে, এখানে এসে দাঁড়াই।'
'কী সুন্দর বাতাস এখানে!'
'জাহ্নবী, আপনাকে একটা কথা বলি?'
'হুম, বলুন না।'
'এই বয়সে এসে জীবনকে আপনার কী মনে হয়?'
'কী মনে হয় বলতে?'
'আমার কাছে জীবনটা চলে যাচ্ছে যাক, দিনগুলো ফুরাতে পারলেই হল, এমন মনে হয় আজকাল।'
'একটা সময় আমারও এমন মনে হতো। আর এখন কী মনে হয় জানেন? নিজের পছন্দ অপছন্দকে গুরুত্ব দিয়ে যে কাজটা করতে আমার ভালো লাগে, সেটা করতে ইচ্ছে করে। যে জিনিসে আমি আনন্দ পাই, সেটা করি। নিজেকে একটু ভালো রাখতে না পারলে দিনশেষে জীবনকে আর কী দিলাম?'
'জীবনকে দিতে হবে? জীবন আমাদের কিছু দেবে না?'
'না। নিজের জন্য নিজেকেই করতে হবে। নিজের ভালো লাগার কাজগুলো করুন, ভালো লাগবে। আচ্ছা, আপনার কী করতে ভালো লাগে?'
সারল্য খানিক্ষন চুপ থেকে বলল, 'কী জানি! কী ভালো লাগে ভুলেই গেছি।'
'টি মিট টোস্টে গিয়ে চা খেতে ভালো লাগে?'
'হ্যাঁ লাগে।'
'গান শুনতে?'
'না।'
'কবিতা ভালো লাগে?'
'লাগে।'
'আচ্ছা, আপনাকে একটা কবিতা শোনাই?'
' শোনান।'
জাহ্নবী ভাবে কোন কবিতা'টি সে শোনাবে সারল্যকে। ভাবতে ভাবতে পেয়েও যায় একটা কবিতা। ময়ূখ চৌধুরীর লেখা কবিতাটি আবৃত্তি শুরু করল জাহ্নবী-
তোমাকে দেখবো বলে একবার কী কাণ্ডটাইনা করেছিলাম
‘আগুন আগুন’ বলে চিৎকার করে
সমস্ত পাড়াটাকে চমকে দিয়ে
তোলপাড় ক’রে
সুখের গেরস্তালিতে ডুবে-যাওয়া লোকজনদের
বড়শি-গাঁথা মাছের মতো
বাইরে টেনে নিয়ে এলাম
তুমিও এসে দাঁড়ালে রেলিঙে
কোথায় আগুন?
আমাকে পাগল ভেবে যে-যার নিজের ঘরে ফিরে গেলো।
একমাত্র তুমিই দেখতে পেলে
তোমার শিক্ষিত চোখে
আমার বুকের পাড়ায় কী-জবর লেগেছে আগুন।
সারল্য মৃদু হেসে বলল, 'ভালো লাগল শুনতে।'
কম্পনরত বুকে জাহ্নবী বলল, 'জীবনে এই প্রথম আবৃত্তি করেছি।'
'এ জন্যই গলাটা কাঁপছিল।'
'শুধু গলার কাঁপুনিটাই দেখলেন?'
'নাহ। আরও দেখলাম, একজন মানুষ আমার মন ভালো করে দিতে কী প্রচেষ্টাই না করছে। জীবনে প্রথমবার কবিতা আবৃত্তি করেছে। মন খারাপ করে থাকলে এখন আমার অপরাধ হবে।'
জাহ্নবী হাসলো। হাসির আওয়াজ নেই, তবে তার রেশ জাহ্নবীকে আন্দোলিত করলো। ভালো লাগছে তার। সে পেরেছে! সে পেরেছে সারল্য'র মন ভালো করে দিতে। নিজের জন্যই তার বিস্ময় জাগছে। নিজেকে বদলাতে পেরেছে সে। যে মেয়েটা সর্বক্ষণ মন খারাপ করে থাকত, আজকে সেই মেয়েটাই একজন মানুষের মন ভালো করে দিতে পেরেছে!
.
.
.
চলবে.......................................................................