ভোরের রোদ - পর্ব ০৯ - সুলতানা পারভীন - ধারাবাহিক গল্প


১৭!! 

-রোদ?

অস্ফুট স্বরে আরেকবার রোদের নামটা নিয়েই নিরব হয়ে গেল ভোর। ভোরের কণ্ঠে নিজের নামটা শুনেই যেন হুঁশ ফিরলো রোদের। পাগলের মতো স্পিডে গাড়িতে করে কোথায় যাচ্ছে নিজেও জানে না। এবারে নিজেকে শান্ত করে কিছু ভাবার চেষ্টা করলো রোদ। এর মধ্যেই মোবাইলের অপর পাশ থেকে কর্কশ কণ্ঠস্বরটা ভেসে আসার গাড়ি থামিয়ে সেটা শোনার চেষ্টা করলো রোদ। 

-এই মেয়ে? বলেছি না চুপচাপ পড়ে থাক? তবু বিড়বিড় করা হচ্ছে? সাহস তো কম না তোর? দিবো নাকি গলাটা নামিয়ে? বস অবশ্য তোকে কিছু করতে নিষেধ করেছে। যা করার উনি নিজেই করবেন। হা হা হা। একি? এই মেয়ে দেখি বেহুঁশই হয়ে গেছে! যাক। এবারে অন্তত জ্বালাতন করতে পারবে না আর। কি চ্যাঁচানোটাই না চ্যাঁচাচ্ছিল! উফ! মরে টরে গেল নাকি আবার ভয়ে! বসকে কল দিয়ে ব্যাপারটা জানাবো? সেটাই করি। পরে আবার উল্টোপাল্টা কিছু হলে হয়তো আমাকেই জানে মেরে দিবে----।

লোকটার কথাগুলো শুনে কেন জানি রোদের শরীরটা একবার শিউরে উঠলো। লোকটা তার বসকে কল করে কি বলে সেটাই শোনার অপেক্ষায় দু মিনিট সময় নিলো রোদ। কর্কশ কণ্ঠী লোকটা এবারে কাউকে কল করলো। কণ্ঠস্বরে এবারে কর্কশ ভাবটা কেটে গিয়ে কেমন যেন গদগদ একটা ভাব এসেছে লোকটার। সেটা ভেবেই আবার একবার চমকালো রোদ। 

-স্যার? মাইয়াডা তো বেহুঁশ হইয়া গেসে। এহন কি করুম? ---না না স্যার। মরে নাই। আল্লার কসম আমি তারে কিসু করি নাই। ভয়ের চোটে মনে হয় বেহুঁশ হইসে। ---একবার কি চেক কইরা দেখুম স্যার?---আইচ্ছা স্যার। আমি তাইলে সোজা আপনার গোডাউনে লইয়া আসি?--- না না স্যার। আশেপাশে কেউ নাই। আমি গাড়ি সাইড কইরা কল দিলাম আপনেরে। এইডার কিসু হইলে তো আপনি আমারে মাইরা ফেলবেন। হে হে। ----। জে স্যার। বকশিস পাই বইলাই তো আপনার কাম কইরা দিই। নইলে আমাগো মতো ছোটো মানুষগো কামে রাখে কেডা? জে জে স্যার। আইতেসি। রাখি স্যার? সালাম।

লোকটা কল কেটে আবার গাড়ি স্টার্ট দিচ্ছে। রোদ কি করবে বুঝতেই পারছে না। লোকটা ভোরকে নিয়ে কোনো একটা গোডাউনে নিয়ে যাবে। কিন্তু কোথায় সেই গোডাউন? কতোদূরে? কথা শুনে মনে হচ্ছে এরা এমন কাজ আরো বহুবার করেছে। অন্তত ভোরই তাদের প্রথম শিকার নয়! এতো ভয়ংকর লোকদের হাত থেকে নিজের ভালোবাসার মানুষটাকে মুক্ত করতে পারবে তো রোদ? নাকি হারিয়ে ফেলবে চিরদিনের মতো? কথাটা ভাবতেই রোদের চোয়াল শক্ত হয়ে গেল নিজে থেকেই। ভোরের কোনো ক্ষতি রোদ বরদাস্ত করবে না। মেয়েটাকে সুস্থভাবে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনে মৃত্যুর সাথেও লড়াই করবে রোদ। তবু তার ভোরের গায়ে একটা আচড়ও লাগতে দিবে না। কিছুতেই না। এই বিপদে কি করবে ভাবতেই প্রথম যে নামটা রোদের মাথায় এলো সেটা হলো- মেঘ। পৃথিবীর কেউ এই মূহুর্তে যদি রোদকে সাহায্য করতে পারে তবে সেটা মেঘ ছাড়া আর কেউই নয়। কথাটা মনে পড়তেই রোদ ভোরের কলটা না কেটেই মেঘের নাম্বারে কল দিলো। আর প্রায় সাথে সাথেই কলটা রিসিভও হলো।

-হ্যালো মেঘ? কি করছিস তুই? ফ্রি আছিস?

-এই সময়টায় আমার স্মৃতিচারণ ছাড়া আর কি কিছু করার আছে বল? কি হয়েছে বল? এবারে কি করেছিস? বকেছিস নাকি------।

-মেঘ? আই নিড ইওর হেল্প। একটা নাম্বার ট্র্যাক করতে হবে। এজ সুন এজ পসিবল তুই আমাকে লোকেশনটা বের করে দে। প্লিজ ভাই।

-ওকে। নাম্বারটা দে। আমি ট্রাই করে তোকে ২ মিনিটের মধ্যে জানাচ্ছি।

-ওকে। আমি তোকে নাম্বারটা সেন্ড করেছি মেসেজে। চেক কর। 

-ওকে। লেট মি চেক।

রোদ মেঘের কলটা কেটে আবার ভোরের লাইন থেকে কোনো শব্দ আসছে কিনা শোনার চেষ্টা করলো। আশেপাশের গাড়ির শব্দগুলো হতাশ করলো রোদকে। কিন্তু ২ মিনিট শেষ হওয়ার আগেই মেঘের কল আসলো। রোদ তাড়াহুড়ো করে কলটা রিসিভ করলো।

-কি রে রোদ? তোর কল ওয়েটিং কেন? কারো সাথে কথা বলছিস? আমি কি একটু পরে----?

-না না মেঘ? ওয়েট। লোকেশনটা ট্র্যাক করতে পেরেছিস? কোথায় আছে ফোনটা? একজ্যাক্ট লোকেশনটা আমাকে পাঠাতে পারবি?

-রোদ রোদ! ওয়েট এ সেক ইয়ার! এই নাম্বারের লোকেশন কি করে বের করবো বল? ফোনের জিপিএস ওফ, ডাটা কানেকশন অফ, লোকেশন রিডিং অফ! কার নাম্বার! এতো প্যারা নিচ্ছিস কেন?

-মেঘ..... আমার এই নাম্বারের লোকেশনটা যে কোনো মূল্যেই লাগবে ভাই। নয়তো আমি আমার ভোরকে হারিয়ে ফেলবো চিরদিনের মতো। প্লিজ হেল্প মি মেঘ! প্লিজ?

-রোদ! কি হয়েছে? বল আমাকে? ভোরকে হারিয়ে ফেলবি মানে কি? এটা ভোরের নাম্বার?

-হ্যাঁ ভাই। ভোরকে কেউ কিডন্যাপ করেছে। কোথাও একটা গোডাউনে বসের কাছে নিয়ে যাচ্ছে। ভোরের নাম্বারটা কলে আছে। মেয়েটা সেন্সলেস হয়ে গেছে মেঘ। প্লিজ এই হেল্পটা করে দে। আমি আজীবন তোর কেনা গোলাম হয়ে থাকবো ভাই।

-রোদ! রোদ কাম ডাউন। ব্যাপারটা পুলিশ কেইস। তাই মোবাইল কোম্পানি কতোটা হেল্প করবে আম নট শিওর। বাট আমার এক ফ্রেন্ড আছে। তবে ট্র্যাক করতে সময় লাগবে। 

-সময়ই তো নেই রে ভাই। ওদের গাড়িটা এখনো চলছে। কিন্তু কতোক্ষণ? ভোরের কিছু হলে আমি মরে যাবো মেঘ।

-রোদ? গিভ মি সাম টাইম ইয়ার। তুই পরিচিত কোনো অফিসারের সাথে কথা বল। আর আমার নাম্বারটাও কনফারেন্সে নে। আমি নিজেও ট্রাই করি ট্র্যাক করার। 

-ইয়াপ। আর ওর নাম্বারটা আমার নাম্বারের সাথে সিংক করা আছে মেঘ। তুই দেখ সেখান থেকে কিছু করতে পারিস কি না। 

-ওকে। দ্যাটস গুড। তুই অফিসারের সাথে কন্টাক কর। ওয়েট। আমি আরহান আঙ্কেলকে কল করি? বাবার বন্ধু। ভালো পজিশনেও আছে। তুই একটু রিল্যাক্স কর। আমারে আধা ঘন্টা সময় দে। ততক্ষণে প্লিজ ভাব কে করতে পারে ভোরের কিডন্যাপিং। তাহলে ভোরকে খুঁজে পেতে সুবিধা হবে আমাদের। 

-ওকে।।

রোদ মেঘের কলটা কনফারেন্সে দিয়ে মোবাইলটা পাশে রেখে নিজের মাথা স্টিয়ারিংয়ের উপরে রেখে যত দ্রুত সম্ভব ভাবার চেষ্টা করলো। কে হতে পারে! কে ভোরকে কিডন্যাপ করাতে পারে! আর কেন? সম্ভাব্য সব ক'জনের চেহারাই রোদের লিস্ট করা হয়ে গেছে মনে মনে। তবু কেন যেন হিসেব মিলছে না রোদের। হঠাৎ কিছু একটা মনে পড়তেই রোদ নিজের মোবাইলটা তুলে নিয়ে বাড়িতেই করলো। হয়তো একটু বেশিই ভাবছে রোদ। তবু সম্ভাব্য একটা অপশনও বাদ দিতে চায় না রোদ। অন্তত যখন ভোরের সেইফটির কথা তখন তো।একদমই নয়।

এদিকে ভোরের জ্ঞান ফেরার পর টের পেল ওর হাত পা শক্ত কিছুর সাথে বাঁধা রয়েছে দড়ি দিয়ে। চোখের সামনে অথৈ অন্ধকারের রহস্যটা বুঝতে ভোরের বেশি সময় লাগলো না। কালো কাপড় দিয়ে চোখ আর মুখ দুটোই শক্ত করে বাঁধা হয়েছে। ভোর ভয়ে আতঙ্কে নিজেকে ছাড়ানোর জন্য ছটফট করতেই শক্ত করে বাঁধা প্লাষ্টিকের দড়ির ঘষায় সম্ভবত হাত আর পায়ের বেশ কিছুটা ঘষা খেয়ে রক্ত পড়া শুরু হয়েছে। প্রচণ্ড যন্ত্রণা স্বত্বেও ভোর ছাড়া পাওয়ার জন্য আরো মরিয়ে হয়ে চেষ্টা করতে লাগলো। অবশ্য তাতে ছাড়া পাওয়ার বদলে হাত পা কেটে গেল আরো। হঠাৎ কারো স্পর্শে চমকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করতেই টের পেল মুখে শক্ত করে বাঁধা কাপড়টা সরিয়ে নিয়েছে কেউ একজন। লোকটা বিশ্রিভাবে গাল ছুঁয়ে দেয়াটাই জানান দিচ্ছে লোকটার কি মতলবে ভোরকে এখানে এনেছে। প্রচন্ড ভয়ে, ঘৃণায়, আতঙ্কে কান্না পেল ভোরের। কিন্তু কাঁদলেও কখনো কি মুক্তি পাবে এই গুরুতর বিপদটা থেকে?

-হেই বিউটিফুল? কাঁদছ কেন? আর এসব কি করছ? এভাবে নাচানাচি করেও ছাড়া পাবে না। অযথাই নিজের ফর্সা শরীরে রক্ত জমিয়ে ফেলছ! ইশ! কতোটা কেটে গেছে? দেখি একটু----।

খবরদার আপনি আমাকে ছোঁবেন না। কে আপনি? কেন ধরে এনেছেন আমাকে? দেখুন---প্লিজ আমাকে যেতে দিন। আমি হাত জোড় করছি আপনার কাছে----।

-এসব অসম্ভব কথা বলো না তো ভোর। হাত জোড় করার ক্ষমতা তোমার আছে? আর তুমিইবা হাত জোড় করবে কেন? হাত জোড় করার হলে অন্য কেউ করবে। আর সেই কেউ একজনটা হলো তোমার পেয়ারের আশিক। মিস্টার রোদ। 

-দেখুন প্লিজ আমাকে যেতে দিন। আমরা কি ক্ষতি করেছি আপনার বলুন? কিছুই না তো---। প্লিজ?

-কিছুই করো নি?! উমমমম! তুমি আর তোমার মিস্টার রোদ আমার কত বড় ক্ষতি করেছ সেটা তো তুমি কল্পনাও করতে পারবে না। এন্ড আমি সেসব তোমাকে ব্যাখ্যা করার মুডেও নেই এখন।আমি আপাতত তোমার আশিকের চোখে ভয় দেখতে চাচ্ছি। তাকে আমার পায়ের কাছে বসে আমার পা ধরে ক্ষমা চাইতে দেখতে চাচ্ছি। তোমাকে মুক্তি দেয়ার জন্য আমার সামনে মাথা নুইয়ে নাকে খত দিবে-এই দৃশ্যটা দেখতে চাচ্ছি। তবেই ওই শয়তানটার উপরে আমার রাগটা কমবে। 

-কক্খনো না। আপনার এসব প্ল্যান কখনোই সফল হবে না। তার আগেই রোদ আমাকে এখান থেকে নিয়ে যাবে। দেখবেন আপনি---।

-হা হা হা। তাই নাকি?

ভোরের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটা আবার এসে ভোরের গালের উপরে পড়া চুলগুলো আঙ্গুল দিয়ে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে টের পেতেই ভোর মুখ সরিয়ে নিলো। লোকটা এবারে ভোরের চুলের মুঠি ধরে ভোরের মুখের দিকে তাকালো। এতো জোরে চুলের মুঠি ধরে রেখেছে লোকটা যে ভোর হাজার চেষ্টা করেও নড়তেও পারছে না এক বিন্দুও।

-আই লাভ ইওর কনফিডেন্ট বিউটিফুল। ইউ নো? একটা সিক্রেট শেয়ার করি তোমার সাথে। হাজবেন্ড ওয়াইফের মাঝে এসব লুকোচুরি থাকতে হয় না। বুঝলে?

-হোয়াট! কি বলতে চাইছেন আপনি? হাজবেন্ড মানে?

-উফ! সারপ্রাইজটাই নষ্ট করে দিলাম না? ইশ! আচ্ছা বলেই যখন ফেলেছি তখন তো সারপ্রাইজ রইলো না ব্যাপারটা। বলেই ফেলি তাহলে?

--------------------------------------------

-দিস ইজ নট ফেয়ার বিউটিফুল। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমার লিগ্যাল ওয়াইফ হবে তুমি। এখনও আমাকে এতো ইগনোর করছ? তাও আবার ওই রোদের জন্য?

-ওয়াইফ হবো মানে! জোর করে আমাকে বিয়ে করবেন ভেবেছেন? আমি মরে গেলেও আপনাকে------।

-তুমি মরছ না ডিয়ার। মরবে তো তোমার রোদ। তুমি বিয়েতে রাজি না হলে আমার লোকেরা তোমার রোদকে---এই বেশি কিছু না। জাস্ট একটা বা দুটো গুলি করে দিবে---।

-নাহ!

-আর বিয়েটা করলেও রোদ মরবে। হা হা হা। আমার হাতে না মরুক। নিজে নিজেকে শেষ করে দিবে অবশ্যই। আর এর মধ্যে এখানে চলে এলে তো! হা হা হা। আর কথাই নেই। প্রেমিকার বাসর দেখবে নিজের চোখের সামনে----।

-জাস্ট শাট আপ! রোদ এলে তোকে খুন করে ফেলবে শয়তান--।

-তোমার তেজ কমানোর ব্যবস্থা করেই ফিরছি। একটা প্রশ্নের উত্তর দাও তো মিস-সরি মিসেস বিউটিফুল? তোমার এতো তেজ ওই রোদের সামনে কোথায় হারিয়ে যায়? না--ওর সামনে তো এই রূপটা দেখাই যায় না। তা কি কি হয়েছে এ কয়দিনে বলো তো? একই বাড়িতে আছো। একে অন্যকে একেবারে চোখে হারাও তোমরা--। আর?

-আপনার মতো নর্দমার কিটের সাথে কথা বলারও ইচ্ছে নেই আমার। ভালোয় ভালোয় যেতে দিন আমাকে। নইলে রোদ আসার পর নিজের জীবনের ভিক্ষা চাইবেন আপনি। ঠিক যেভাবে পায়ে।ধরানোর কথা বললেন রোদকে----।

-আহ!

ভোরের কথাগুলো শেষ হওয়ার আগেই একটা প্রচন্ড চড় এসে পড়লো ভোরের গালে। চেয়ারসহ উল্টে পড়ে গেল ভোর। লোকটা দুহাতে শক্ত করে চেয়ার সুদ্ধ ভোরকে টেনে উঠালো আবার। 

-আমার উড বি ওয়াইফের মুখে আমি আর কারো নাম শুনতে চাই না। আর এই যে এতো রোদ রোদ করছ? এর শাস্তি তো তুমি পাবে ভোর। আজীবন ভর পাবে। আর সেটার সূচনা হবে আজই। একটু পরেই। আর এসব বাচ্চাদের স্কুলড্রেস বদলে বেনারসিটা পড়ে নাও। বদি আপাতত হাত পা খু্লে দিয়ে যাবে। খাবার দিয়ে যাবে। লক্ষী মেয়ের মতো খাবারটা খেয়ে নিয়ে বিয়ের জন্য রেডি হও। আমি ফিরে এসে যদি দেখি চেইঞ্জ করো নি তাহলে আধ ঘন্টার মধ্যে তোমার পায়ের কাছে তোমার রোদের লাশটা এনে ফেলে যাবো। আর তার পরে বিয়ে শব্দটা ব্যবহার করার প্রয়োজনও হবে না। তোমার মরার পর হলেও তাহলে তোমার শরীরটা আমার হবে--। নাউ তুমি চুজ করো---।

-কে আপনি? কি চাইছেন? কেন করছেন এমন? কে আপনি?

ভোরের প্রশ্নগুলোর জবাব দিলো না কেউ। কয়েক মিনিট পরেই ভোরের চোখের উপর থেকে কালো কাপড়ের বাঁধনটা সরে যেতেই আগের লোকটাকে দেখতে পেল ভোর। লোকটার নামই সম্ভবত বদি। লোকটা একটা টু শব্দও না করে ভোরের হাত পায়ের বাঁধন খুলে দিয়ে আর খাবার আর বিয়ের সাজপোশাক রেখে রুমটা থেকে বেরিয়ে গেল। আর ভোর সব ভুলে বিয়ের পোশাকের দিকেই তাকিয়ে রইলো। এই কি ছিল তাহলে ওর কপালে! এই জীবনে কি আসলেই ভোরের রোদেরা নিজেদের ভালোবাসাটা পাবে না? এভাবেই হেরে যেতে হবে নিয়তির কাছে?

১৮!! 

-রোদ!

বদি নামের গুন্ডা টাইপের লোকটা ভোরের জন্য শাড়ি, গয়না আর খাবার রেখে রুমটা থেকে বেরিয়ে সবার আগে রোদের কথাই মাথায় আসলো ভোরের। ভীত চোখে একবার চারপাশটা দেখে নিয়ে দরজার কাছে এগিয়ে এলো ভোর। হালকা হাতে দরজাটা টেনে বুঝতে পারলো বাইরে থেকে লক করে দিয়ে গেছে লোকটা। ভোর দরজার কাছ থেকে কিছুটা সরে এসে স্কুলড্রেসের পকেট থেকে রোদের দেয়া মোবালটা বের করলো। মোবাইলটা হাতে নিয়ে এতোক্ষণে একটু শান্তি লাগছে ভোরের। সেন্সলেস হওয়ার পর লোকগুলো মোবাইলটা নিয়ে ফেলেছিল ভেবে রীতিমতো হাত পা ঠান্ডদ হয়ে আসছিলো মেয়েটার। তাই এতোক্ষণে মোবাইলটা হাতে পেয়ে যেন আটকে থাকা চাপা নিঃশ্বাসটা ফেলার সাহস হলো ভোরের। কলটা তখনো চলছে দেখে ফোনটা শক্ত করে নিজের কানে চেপে ধরলো ভোর। কেন জানি মনে হচ্ছে কাঁপা কাঁপা হাত থেকে এই বুঝি পড়ে যাবে মোবাইলটা। 

-রোদ? রোদ? তুমি শুনতে পাচ্ছ? কোথায় তুমি? আমাকে এখান থেকে নিয়ে যাও না প্লিজ? ওই লোকটা---ওই লোকটা শাড়ি দিয়ে গেছে পড়ার জন্য। আমি পড়বো না। প্লিজ? আমি শুধু তোমার জন্য এই রঙে সাজতে চাই। আর কারো জন্য না। প্লিজ নিয়ে যাও আমাকে এখান থেকে? রোদ?

-ভোর? প্লিজ কাম ডাউন। আমি--------।

-কে? কে আপনি? রোদ কোথায়? রোদের মোবাইল আপনার কাছে কেন? কে আপনি?

মোবাইলের অপর প্রান্ত থেকে অন্য কারো কণ্ঠস্বর শুনে আবার ভয় পেয়ে গেছে ভোর। 

-ভোর? আমি মেঘ। রোদের সাথে কনফারেন্স কলে আছি আমি। ভয় পেও না। আমার কথা শোনো? তুমি ঠিক আছো?

-মেঘ ভাইয়া? রোদ? রোদ ভাইয়া কোথায়? উনাকে বলুন না আমাকে এখান থেকে নিয়ে যেতে? 

-ভোর? শান্ত হয়ে আমার কথাটা শোনো আগে। রোদ আমাকে তোমার লোকেশন ট্রেস করতেই বলেছে। ও কারো সাথে কথা বলছে। এক্ষুণি লাইনে পাবা। তুমি তোমার ফোনের জিপিএস আর ডাটা অন করে নাও। জলদী। হাতে কিন্তু বেশি সময় নেই ভোর। 

-করছি ভাইয়া।

-আর তুমি আমাকে বলো তো লোকটাকে কি তুমি চেনো? এতোক্ষণ কথাগুলো শুনে তো মনে হলো লোকটা তোমাকে আর রোদকে চেনে ভালো করেই। তুমি ভালো করে একবার মনে।করার চেষ্টা করো তো লোকটাকে কোথায় দেখেছ। 

-আমার চোখ বাঁধা ছিল ভাইয়া। আমি এই লোকটাকে চিনি না। জানি না কে ও। কেন এমন করছে---।

-রিল্যাক্স ভোর। এখন কান্নাকাটির সময় নয়। নিজেকে শক্ত করো। রোদ আর আমি দুজনে মিলে তোমাকে খুঁজে সহীহ সালামতে নিয়ে আসবো প্রমিস। বড় ভাই হিসেবে এটা আমার প্রমিস। তুমি শুধু আমার কথাগুলো শোনো মন দিয়ে---।

-হ্যাঁ ভাইয়া।

-প্রথম কাজ হলো একদম ভয় পাবে না। যত ভয় পাবে ততই দুর্বল হয়ে পড়বে। আর তুমি ভয় পেয়ে ভেঙ্গে পড়লে লোকটার কাজ আরো সহজ হয়ে যাবে। বুঝেছ? সো একদম ভয় পাবে না। নিজেকে শান্ত করো।

-জি---জি ভাইয়া। আম ট্রাইং----।

-গুড। নাউ পয়েন্ট নাম্বার টু। তুমি যেখানে আছো তার আশপাশটা ভালো করে দেখো। কি দেখতে পাচ্ছে? দেড় দু ঘন্টা সময়ে তোমাকে শহরের বাইরে কোথাও নিয়ে যেতে পারে নি নিশ্চয়ই। তুমি চারপাশটা দেখে কি দেখছ আমাকে বলো। তাহলে হয়তো আমাদের তোমাকে খুঁজে পাওয়া একটু হলেও সহজ হবে---।

-এখানে? এখানে রুমের মধ্যে ভাঙাচোরা কতোগুলো ফার্নিচার পড়ে আছে শুধু। লোহার একটা দরজা আছে। বাইরে থেকে আটকে দিয়ে চলে গেছে ওরা। 

-ওহ শিট! ভালো করে চেক করো ভোর। কোনো জানালা, কোনো ফাটল কিছু দেখতে পাও কিনা দেখো। তাহলে বাইরে বের হতে না পারলেও অন্তত বাইরে কি আছে কিছু যদি দেখতে পাও--।

-সবই তো অন্ধকার ভাইয়া।

-ইয়া আই নো। সন্ধ্যা হয়ে গেছে। তবু একটু চেষ্টা করো ভোর। 

-জি ভাইয়া।

ভোর এবারে গুটিগুটি পায়ে দেয়ালে হাত হাতড়ে জানালা বা কোনো ফাঁকফোকর কিছু আছে কিনা সেটা খোঁজার চেষ্টা করলো। রুমটায় কম পাওয়ারের একটা বাতি জ্বলছে শুধু। তাও আবার রুমের ঠিক মাঝামাঝিতে যেখানে একটা চেয়ারে ভোরকে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এতো কম আলোয় দেয়ালের ধারগুলো প্রায় কিছুই দেখা যাচ্ছে না ভালো করে। তবু ভোর হাতের ছোঁয়ায় সামনে এগিয়ে যেতে সম্ভাব্য মুক্তির আলোর খোঁজ করছে। অবশ্য আলোর খোঁজ পাওয়া হলো না মেয়েটার। তার আগেই দেয়ালের ধার ঘেঁষে থাকা একটা টেবিলের সাথে ধাক্কা খেয়ে পায়ে প্রচন্ড ব্যথায় কঁকিয়ে উঠলো ভোর। গাঢ় অন্ধকারে ভাঙা টেবিলটা দেখতেই পায় নি বেচারি। এতো জোরে পায়ে লেগেছে যে উঠে দাঁড়াতে গিয়ে ব্যথায় কেঁদে ফেললো মেয়েটা। 

-ভোর? কি হয়েছে? কিসের আওয়াজ হলো? ভোর? টক টু মি ড্যাম ইট। ভোর।শুনতে পাচ্ছ? ওরা কি চলে এসেছে?

-না ভাইয়া। অন্ধকারে দেখতে পাই নি টেবিলটা----।

-বেশি ব্যথা পেয়েছ তুমি? 

-না ভাইয়া। 

-শোনো ভোর। আজকের দিনটার জন্য ব্যথাটা ভুলে যাও। যত কষ্টই হোক কয়েকটা ঘন্টার জন্য সেটা হজম করে নাও। শুধু তোমাকে সুস্থ অবস্থায় বের করে আনি এই জায়গা থেকে, তারপর এর হাজার গুণ বেশি কষ্ট দিবো ওই অমানুষ দুটোকে। বি ব্রেইভ ওকে?

-আমি ঠিক আছি ভাইয়া।

-ওকে। চেক করো রুম থেকে বের হওয়ার আর কোনো রাস্তা আছে কিনা। 

-জি------।

-ভোর? হ্যালো? হ্যালো? তুই ঠিক আছিস?

-রোদ--। 

মেঘ ভোরের সাথে কথাগুলো বলার মাঝেই রোদের কলটা আবার একটিভ হলো। ভোরের কণ্ঠস্বরটা শুনে রোদের বুকের উপর থেকে যেন এক টনের পাথরটা একটু হালকা হয়ে এলো। 

-ভোরপাখি? আমার কথাটা শোন? একদম ভয় পাবি না ওকে? আমি এক্ষুণি তোকে নিতে আসছি। ওকে? তুই শুধু কলটা কাটবি না ওকে? মেঘ ভাইয়া তোর কলটা তাহলে ট্রেস করতে পারবে। বুঝেছিস? এখন একদম কান্না না কিন্তু। তাহলে কিন্তু খুব বকবো আমি তোকে--।

-প্লিজ তাড়াতাড়ি এসো। আমাকে এখান থেকে নিয়ে যাও। ওই লোকটা এক্ষুণি চলে আসবে---। আমাকে বেঁধে রেখেছিল জানো? আমার হাত কেটে গেছে কতোটা। আর ওই লোকটা---ওই লোকটা আমাকে বলে গেছে শাড়ি পড়ে রেডি হয়ে নিতে----। আমি পড়বো না শাড়ি। তুমি তাড়াতাড়ি এসে আমাকে নিয়ে যাও না প্লিজ?

-শাড়ি? শা-শাড়ি কেন? তুই-তুই ঠিক-ঠিক আছিস ভোর? তোর কিচ্ছু হবে না পাখি---। আমি আসছি-----।

রোদের গলা শুনে ভোর কাঁদতে কাঁদতে বাচ্চাদের মতো বিচার দিচ্ছিলো। তাই খেয়াল করে নি কখন পিছন দিক থেকে একটা ছায়ামূর্তি ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছিলো ওর দিকে। ছায়ামূর্তিটা একদম ভোরের ঠিক পিছনে এসে দাঁড়িয়ে নিঃশব্দেই বাঁকা হাসলো। 

-কি? আমার নামে কমপ্লেইন করা হচ্ছে মিস বিউটিফুল? তাও আবার ওই রোদকে? হা হা হা। মজার ব্যাপার তো। 

পিছন থেকে কণ্ঠটা শুনে চমকে ফিরে তাকিয়েছিল ভোর। কোনোমতে মোবাইলটা হাতে চেপে লুকিয়ে ফেলার চেষ্টা করলো। কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে। লোকটা ভোরের দিকে এগিয়ে এসে ভোরকে হাত থেকে মোবাইলটা ছিনিয়ে নিজের হাতে নিয়ে নিলো। আবছা অন্ধকারে লোকটার চেহারাটা ভালো করে দেখতে পেল না ভোর। আলোর দিকে পিঠ করে থাকায় লোকটার মুখটা অন্ধকারে ঢাকা। ভোর তবু ভালো করে লোকটার চেহারাটা দেখার চেষ্টা করলো।

-আমার মোবাইল? আমার মোবাইলটা ফিরত দিন? আপনি----। কেন এমন করছেন?

-হা হা হা। বাহ! তোমার রোদের তো বেশ ভালোই বুদ্ধি! তা পরীক্ষার তো বিশ দিনও বাকি নেই। কোন আক্কেলে এই সময় তোমাকে মোবাইল দিয়েছে বলো তো? আর এই যে ভোর? বাসায় জানে তোমার এই মোবাইলের কথা? কি সাংঘাতিক প্রেমিক প্রেমিকা যুগল! 

-আপনি? স্যা---------।

ভোরের পরের কথাটা শোনার আগেই কলটা ডিস্কানেক্টেড হয়ে গেল। রোদ মরিয়া হয়ে আবার ট্রা করলো ভোরের নাম্বারে কল করার। কিন্তু ফোনটা সুইচইড অফ আসছে বারবার। রোদের ইচ্ছে করছে নিজের সবগুলো চুল টেনে ছিঁড়ে ফেলতে। কেন ভোরের পরীক্ষা চলাকালীন সময়টা ভোরের অপেক্ষায় স্কুলের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকলো না সেটা ভেবেই নিজের উপরে রীতিমতো রাগ আর ঘৃণা দুটোই হচ্ছে রোদের। ওর এতোটা স্বার্থপরের মতো একটা কাজের জন্যই ভোর আজ এতো বড় একটা বিপদে পড়েছে ভাবতেই মরে যেতে ইচ্ছে।করছে রোদের। আজ ভোরের কিছু হয়ে গেলে নিজেকে কোনোদিন মাফ করতে পারবে না ছেলেটা। অবশ্য মাফ করার জন্য বেঁচেও থাকবে না ভোরের কোনো ক্ষতি হলে।

-রোদ? আমাদের যা করার তাড়াতাড়ি করতে হবে। লোকটা মে বি ভোরের মোবাইলটা ভেঙ্গে ফেলেছে। এখন যা ইচ্ছে হতে পারে। 

-মেঘ? আমার ভোর? ওই লোকটা কেন এমন করছে? আমার ভোরকে কিছু করেনি তো মেঘ? আমি------।

-রোদ? আমি কলটা রেকর্ড করে রেখেছি। তোকে সেন্ড করছি। তুই শোন। আর একটু শান্ত হ তুই। এখন পর্যন্ত ভোরের কিছুই হয়নি। তবে কতোক্ষণ মেয়েটা সেইফ আম নট শিওর। 

-মানে?

-যা করার তাড়াতাড়ি করতে হবে রোদ। এক্সাক্ট লোকেশনটা ট্রেস করা সম্ভব হয়নি রোদ। শহরের বাইরেই ইন্ড্রাস্টিয়াল এরিয়ার কোনো একটা গোডাউনে আটকে রাখা হয়েছে ভোরকে। এতোগুলো গোডাউন খুঁজে কি করে ভোরকে খুঁজে পাবো বুঝতে পারছি না আমি। কিম্তু আমরা হাল ছাড়বো না রোদ। উই উইল ফাইন্ড হার আউট। ওকে? রোদ? শুনতে পাচ্ছিস তুই?

-মেঘ? আমি---আমি--।

-রোদ? আল্লার উপরে ভরসা রাখ। আমরা ইনশাল্লাহ ভোরকে পাবোই পাবো। আর সেটা সুস্থ স্বাভাবিক অবস্থাতেই পাবো। তুই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যা লোকেশনে। আমি ফোর্স নিয়ে আসছি---।

-ওকে---। 

মেঘের পাঠানো অডিও রেকর্ডিংটা শুনতে শুনতে শহরের অদূরের ইন্ড্রাস্টিয়াল এরিয়ার দিকে গাড়ি ছোটালো রোদ। যেতে বেশ কিছুটা সময় লাগবে, যেটা আপাতত রোদের হাতে নেই এইমূহুর্তে। শহরের ব্যস্ত রাস্তায় যত দ্রুত সম্ভব গাড়ি ছুটিয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে রোদ। আর কানে লাগানো ব্লুটুথে চলছে ভোর অজ্ঞাত সেই ব্যক্তির কথোপকথন। বেশ কিছু সময় পর অডিওটা মাঝপথেই থেমে যেতেই রোদ হাত বাড়িয়ে নিজের মোবাইলটা হাতে নিলো। মোবাইলের স্ক্রিনে বাবার নাম্বারটা ভেসে ওঠা দেখে ভ্রু জোড়া আপনাআপনিই কুঁচকে গেল রোদের। গাড়িটা রাস্তার পাশে পার্ক করে কলটা রিসিভ করলো রোদ। 

-হ্যাঁ আব্বু বলো।

-তুমি কি শুরু করেছ বলো তো রোদ? নিজেকে কি আজকাল ভোরের গার্জেন ভাবতে শুরু করেছ তুমি? না মানে কি চাইছ কি তুমি? কি চাইছ? ভোরের কথায় তোমাকে ওই বাড়িতে রেখে এসে আমি কতো বড় ভুল করেছি সেটা প্রমাণ করতে চাইছ রোদ? স্পিক আপ। 

-বাবা? কি বলছ এসব? আমি কি করেছি? কি হয়েছে বলো প্লিজ?

-আবার জিজ্ঞেস করছ কি করেছ? ভোরকে কোথাকার কার বিয়েতে যাওয়ার পারমিশন দেয়ার তুমি কে? কোন সাহসে তুমি ওকে কার না কার বিয়েতে দিয়ে এসেছ? কে দিয়েছে তোমাকে এই অধিকার? 

-বাবা? কিসব বলছ? আমি পারমিশন দিয়েছি, আমি ভোরকে বিয়ে বাড়িতে দিয়ে এসেছি এসব কে বললো তোমাকে বাবা? আর ভোর তো--।

-শোনো রোদ। সবাই তো আর তোমার মতো এতোটা ইরেসপনসিবল না তাই না? আর ভোরকে নিয়ে তোমার অহেতুক বাড়াবাড়িটা আমাদের যেমন নজরে পড়ছে ঠিক তেমনি অন্যরাও সেটা বেশ ভালোই দেখতে পাচ্ছে। এটাই তোমার লাস্ট ওয়ার্নিং রোদ। আজ দশটার মধ্যে ভোর না বাসায় না ফিরলে আমি কি করবো সেটা তুমি কল্পনাও করতে পারছ না। 

-বাবা?

অপরপ্রান্ত থেকে কলটা কেটে যাওয়ার পরেও রোদ থতমত খেয়ে মোবাইলের দিকে তাকিয়ে রইলো। ভোরের অডিও রেকর্ডিংটা আবার অটো প্লে হয়ে রোদের কানে বাজছে। কিন্তু রোদের যেন সেদিকে হুঁশই নেই। এদিকে সময়ও যে পেরিয়ে যাচ্ছে। প্রতিটা মিনিটের সাথে ভোরকে ফিরে পাওয়ার সম্ভবনাও যে হু হু করে কমছে-সেই খেয়ালও কি আছে রোদের?

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন