অনুভবে - পর্ব ১১ - নিলুফার ইয়াসমিন ঊষা - ধারাবাহিক গল্প


ইনারা চমকে উঠে। গতকাল সে রাগে জোহানের সদস্য দলে এমন পোস্টই করেছিলো। কিন্তু সে বুঝে নি এত বড় কোনো ঘটনা ঘটতে পারে। এমনকি সে এভাবে কিছুই লিখে নি। তাহলে কীভাবে এক ছোট সাধারণ পোস্ট এত বড় ঘটনায় পরিবর্তন হলো? 

ইরফান গম্ভীর ভঙ্গিতে বলে, "মানে কী? সভ্য এমন কিছু করতে পারে না তা আমরা সবাই জানি।"
"আমরাও জানি। আমরা নিজ চোখে দেখেছি। কিন্তু জনগণরা দেখে নি।"
"তাই বলে কি যা তা ছড়াবে?" আঁতকে উঠে সামিও। সে উঠে দাঁড়িয়ে উঁচু স্বরে বলে, "ঠিক আছে আমরা পাব্লিক ফিগার। সবার আমাদের নিয়ে অভিমত প্রকাশ করার অধিকার আছে কিন্তু আমাদের গান নিয়ে তারা মত দিক। ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কেন? ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে ঘাটাঘাটি তাও বুঝতে পারি কিন্তু এমন মিথ্যা খবর নিয়ে কীভাবে তারা একজনের চরিত্রে প্রশ্ন তুলতে পারে? আর ওই মেয়েটা কে যে এই পোস্ট করেছে?"
"আমি সোজা এখানে এলাম। মেয়েটার খোঁজ করার সুযোগ পাই নি। এখনই করছি। তাকে যথাযথ শাস্তি দেওয়া হবে।" 

ইনারা গতকাল রাতের ব্যাপারটা বলতে যাচ্ছিল কিন্তু সামি এবং ইরফানের এমন রাগ দেখেই সে চুপ হয়ে যায়। তারা দুইজন এমন রাগ দেখালে সভ্য তার সাথে কি করবে? ভয় লাগতে শুরু করে তার। যেন দম আটকে আসছে। সে ভয়ে ভয়ে তাকাল সভ্যের দিকে। দেখে সভ্য তার দিকেই তাকিয়ে আছে। ইনারা সাথে সাথে চোখ নামিয়ে নেয়। তার সভ্যের সাথে দৃষ্টি মেলানোর সাহস নেই। তার বিশ্বাস হচ্ছে না তার এইটুকু এক পোস্টের কারণে সভ্যের ক্যারিয়ার নষ্ট হতে পারে। দিনে হাজারোজন এমন পোস্ট করে কাওকে বকে, ঘৃণা করে। সে-ও আগে জোহানের পক্ষ নেবার জন্য এমন অনেক পোস্ট করেছে সভ্যের বিরুদ্ধে। অবশ্যই ব্যক্তিগত দিক থেকে না। তাকে বকা দিয়ে। তবে আজ এমন কেন হলো? মাথায় কিছু ঢুকছে না তার। আজ প্রথম সে সাহস দেখিয়ে নিজের দোষ স্বীকার করার ক্ষমতাও রাখছে না। 

হঠাৎ সভ্য বলল, "প্রয়োজন নেই। মেয়েটার খোঁজ করার পূর্বে প্রধান পোস্ট খুঁজে বের করো যে এই আরোপ লাগিয়েছিলো। এখানে এত হাইপার হবার কিছু নেই। একটা তুচ্ছ কোনো বিষয়কে বড় বানিয়েও মানুষ সমালোচনা করবে এটাই স্বাভাবিক। মেয়েটাকে খুঁজে সময় না নষ্ট করে বিষয়টা পরিষ্কার করো।"
সামি বলে, "কিন্তু সে তোর নামে..."
"সাইদ আমি যা বলেছি তা করবে।"
"ঠিকাছে।"
"এখন সবাই চুপচাপ বসে খাও। সাইদ তোমার জন্য নাস্তা বানাতে বলবো?"
সাইদ খানিকটা অবাক হওয়া ভঙ্গিতে বলে, "না, প্রয়োজন নেই।" 

নাস্তা শেষে সামি এবং ইরফান ড্রইংরুমেই তাদের পরবর্তী এলবামের ব্যপারে আলোচনা করতে শুরু করে। সাইদ চলে গেছে। ইনারা দেখে সভ্য আশেপাশে কোথাও নেই। রান্নাঘরে উঁকি মারে সে। সেখানে দুইজন মহিলা কাজ করছিলেন। সভ্য নেই। জিজ্ঞেস করায় জানতে পারে সে কফি নিয়ে তার রুমে গেছে। সে সভ্যের রুমে যায়। দেখে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আছে সভ্য। আসমানের দর্শন করতে করতে কফিতে চুমুক দিচ্ছে সে। ইনারার খুবই সংকোচবোধ হয়। ভয়ও লাগে। সে এত বড় এক ঘটনা ঘটিয়ে ফেলল। এতক্ষণ ধরে সে নিজেকে মানালো। বুঝালো যে ভুল করলে তা স্বীকার করার সাহস রাখা উচিত। এরচেয়ে বড় সাহসের প্রমাণ আর হয় না। অন্তত তার মা তাকে এটাই শিখিয়েছে। তাই সভ্যের কাছে সে নিজের দোষ স্বীকার করতে এসেছে। 

ইনারা সভ্যের পাশে যেয়ে দাঁড়ায় মাথা ঝুঁকিয়ে। ভয়ে হাতের আঙুল নিয়ে খেলা করছে সে। সে কাঁপা-কাঁপা বলায় বলে, "প্লিজ বেশি রাগ করেন না। আমি পোস্টটা করেছিলাম কিন্তু সত্যি বলছি আমি এমন কিছু লিখি নি যে, আপনি আমার সাথে বাজে কিছু করার চেষ্টা করছেন। আপনি চাইলে আমি আপনাকে পোস্ট দেখাতে পারি। আমি সত্যি আপনার ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে কিছু করি নি।"
"আমি জানি।" 

সভ্যের উওরে অবাক না হয়ে পারে না ইনারা। সে বিস্মিত গলায় বলে, "আপনি জানেন?"
"সাইদের কথাটা বলার সময় তোমার মুখ দেখেই বুঝে নিয়েছি।"
ইনারা এবার কেঁদেই দেয় শব্দ করে, "আমি আসলে তা লিখি নি। বিশ্বাস করেন। আমি এত বড় অপবাদ দেওয়া তো দূরের কথা কারও এত খারাপ চিন্তাও করতে পারি না। ভুল হয়ে গেছে। সরি।"
আরও শব্দ করে কেঁদে উঠে সে। 

সভ্য হতভম্ব। ইনারার কান্না দেখে সে কিছু মুহূর্ত অবুঝের মতো দাঁড়িয়ে রইলো। তারপর ইনারাকে চুপ করানোর জন্য বলল, "আমি জানি তুমি তেমন কিছু লেখ নি। এখন ইন্দুরনীর মতো তোমার এতটুকু ব্রেনে এত কঠিন ব্যাপার তো আসবে না।"
ইনারার কান্না আরও বাড়ে, "আমার জন্য আপনার ক্যারিয়ার নষ্ট হয়ে যাবে। আমি এখন কি করবো? আম্মু..." 
সভ্য উপায় না পেয়ে ইনারার মুখ চেপে ধরে। বলে, "গলা একটা মাইকের মতো। আশেপাশের সবাইকে ডেকে আনবে না'কি? কান্না বন্ধ করো। আমি একবারও তোমার দোষ বলেছি?"
ইনারার কান্না কমে একটু। সে তাকিয়ে থাকে সভ্যের দিকে। মধুর নয়নবন্ধনের মুহূর্তে দক্ষিণা শীতল বাতাস ছুঁয়ে যায় তাদের। সভ্য ধীরে ধীরে হাত নামায়। কান্নায় ইনারার চোখ, নাক, গাল, ঠোঁট সব গোলাপি হয়ে গেছে। চোখের পলকে জল জমেছে। কেমন মায়াবী দেখায় তাকে। কান্না করলে কাওকে এতটা মায়াবী দেখাতে পারে তার জানা ছিলো না। 

ইনারা ঠোঁট উলটে বাচ্চাদের মতো করে বলল, "আপনি চিন্তা করেন না। আমি প্রমাণ করেই ছাড়বো আপনি নির্দোষ। আপনার ক্যারিয়ারের কিছু হবে না। আই প্রমিজ।"
বহু কষ্টে হাসি থামায় সভ্য, "তুমি পিচ্চি একটা মেয়ে কি করবে শুনি।"
"আমি পিচ্চি না।"
"আয়না দেখাব? বাচ্চাদের মতো কাঁদছ। আচ্ছা শুনো," সভ্য খানিকটা ঝুঁকে তার গালে মুছে দিয়ে বলে, "থাক এখন আর এভাবে কাঁদতে হবে না। আমি সব সামলে নিব। তুমি চিন্তা করো না। এসব ব্যাপার না। আজকাল একটুখানি নাম হলেই মানুষ তাকে নিয়ে সমালোচনা করতে ভালোবাসে। মানুষ মানুষকে অকারণেই ঘৃণা করতে ভালোবাসে। কারণ ঘৃণা করাটা ভালোবাসা থেকে সহজ। এসব নিয়ে মাথা ঘামালে মিডিয়া জগৎ-এ আসা উচিত না।"
"কিন্তু আমিও তো আপনাকে হেইট করেছি। আপনার জন্য গতকাল পোস্ট দিয়েছি। আমার কারণে... "
''উফফ আবারও এক কথা। বললাম তো সব ঠিক করে নিব। কান্না বন্ধ কর তো। বিরক্ত লাগছে।" 

ইনারার কান্না আরও বাড়ে। সে সভ্যের বুকে মেরে বলে, "সব আপনার দোষ। আপনি আমাকে এত জ্বালিয়েছেন কেন? আপনার জ্বালায় আমি মেজাজ খারাপ করে পোস্ট করে ফেলেছি।"
ধমক দিয়ে উঠে সভ্য, "তোমার সাহস কত তুমি আমার উপর হাত তুলেছ?"
আরও বেশি কান্না করে দেয় ইনারা। সভ্য বিরক্ত হয়, আবার তার মায়াও লাগে। এক কথা এতবার বুঝানোটা তার কাছে আসলেই বেশ বিরক্তিকর। কিন্তু ইনারার এমন কান্না দেখে তার খানিকটা মায়াও লাগছে। সে বলে, "আচ্ছা ঠিকাছে বকা দিব না আর। কান্না বন্ধ করো।"
"আপনি এখনো আমাকে ধমক দিচ্ছেন।"
"আর দিব না।" 

ইনারা কান্না থামায়। সভ্যকে জিজ্ঞেস করে, "সত্যি আপনার বড় সমস্যা হবে না তো?"
সভ্য মাথা নাড়ায়। উওর না। আরও বলে, "আর তোমাকে কাওকে কিছু বলার প্রয়োজন নেই। আসল পোস্টের স্ক্রিনশট কেবল আমাকে দেও। আমি সাইদকে পাঠাচ্ছি।"
"আপনি তো আমার থেকে চরম রকমের বিরক্ত তাহলে কেন আমাকে সাহায্য করছেন?"
সভ্য বারান্দায় রেলিং-এ হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে তার দু'পকেটে হাত ভরে আর বলে, "দু'টো কারণ। এক, তোমাকে জ্বালিয়ে আমার ভালোই টাইমপাস হয়। দুই, এই'যে তুমি প্রথমদিন আর আজকে কান্ড করলে তার শাস্তি কিস্তিতে দিব না?"
ইনারার চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়, "কিন্তু আপনি বলেছেন আমার কোনো দোষ নেই।"
"এত বড় সমস্যায় তোমার দোষ না থাকলেও তুমি আমার বিরুদ্ধে একতো পোস্ট করেছ, আমাকে মেরেছ, এর উপর কানের সামনে এসে ভ্যা ভ্যা করে আমার মাথা ধরিয়ে দিয়েছ। " সভ্য ইনারাকে তার খালি কফির মগ দিয়ে বলল, "যাও শোভা আন্টিকে বলো কফি দিতে। নিয়ে আসো।"
ইনারা কতক্ষণ রাগে মুখ ফুলিয়ে তাকিয়ে থাকলো। তারপর কফির মগ নিয়ে বলল, "আমি অকারণে আপনার জন্য খারাপ অনুভব করছিলাম। আপনি... আপনি আস্ত এক অসভ্য!"
"কি বললে তুমি?"
ইনারা দৌড়ে পালায় সেখান থেকে। তার এমন পালিয়ে যাওয়া দেখে সভ্য হেসে দেয়। পিছনে ফিরে আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে, "মেয়েটা সত্যিই একটা জিনিস। বিরক্ত করার নতুন নতুন পদ্ধতি কোথা থেকে বের করে আনে বুঝি না।"
.
.
ইনারা সভ্যের কথায় স্বস্তি পায় তাই আগের মতোই হাসিখুশি ঘুরে বেড়াতে থাকে। কতগুলো ফাইল এনেছিলো তার কাজ শেষ করে। সামি এবং ইরফান ব্রেক নেবার পর তাদের সাথে যায় বাসায়। সাথে সভ্যকেও টেনে নিয়ে যায় সামি। তাদের বাসাও প্রায় সভ্যের মতো। কেবল অতিরিক্ত একটা বেডরুম রয়েছে। সামির রুমে অনেকটা ভরা। বিভিন্ন দেশের বিখ্যাত গায়কদের এলব্যাম, ম্যারচেন্ডাইজ, ফটো এলবাম আছে। এমনকি তাদের ছবিও দেয়ালে লাগানো। অন্যদিকে ইরফানের রুম একদম সাধারণ। চারদিকে কেবল বই এবং বাদ্যযন্ত্র। তার রুমে বিছানা, আলমারি, বুকশেলফ এবং টেবিল ছাড়া তেমন বিশেষ কিছু নেই। কেউ দেখে বলবেই না এটা দেশের সবচেয়ে বড় ব্যান্ডের সদস্যের রুম। 

ইনারা রুম দেখে বলে, "আমার তো রুমে ঢুকতেই মাথা ঘুরান দিয়ে উঠে। এটা কি আপনার রুম না লাইব্রেরি?"
"জীবনে লাইব্রেরীর চেহেরা দেখেছ?" ইনারাকে প্রশ্ন করে সভ্য।
এটা সত্য যে ইনারা আগে কখনো লাইব্রেরিতে যেয়ে পড়ে নি কিন্তু সভ্যের কথায় তো সে একমত হতে পারে না। এখন সভ্য তো আর এটা জিজ্ঞেস করে নি যে গিয়ে পড়েছ কি-না। তাই সে বলে, "যাই নি আবার? অনেকবার গিয়েছি।"
"গিয়ে কি করেছ?"
ইনারা আমতা-আমতা করে বলে, "বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়েছি।"
"তোমার মুখ দেখেই বুঝা যায়। বইয়ের সাথে তোমার সাত জনমের শত্রুতা আছে।"
ইনারা প্রতিরক্ষা করে বলে, "দেখুন আমার ইজ্জত মারার চেষ্টা করবেন না। বইয়ের সাথে সদা যুদ্ধ লেগে থাকলেও আমার রেজাল্ট ভালো হয়। সবসময় ভালো হয়। এইবারও এইচএসসিতে এ-প্লাস আসবে দেখে নিয়েন।"
"সব ঠিক আছে। এই ইজ্জত মারাটা আবার কী?"
"ইজ্জত মারা বুঝেন না। আহারে.... ইজ্জত মারা মানে ইজ্জত ছারখার করে দেওয়া।"
"ছাড়খার আবার কী?"
ইনারা আফসোসের নিশ্বাস ফেসে সামির কাঁধে হাত রেখে তার কানে ফিসফিস করে বলে, "বুঝদার মানুষকে তাও বুঝানো যায়। এমন নির্বোধকে কী বুঝানো যায়?"
আবার সে তাকায় সভ্যের দিকে, "ছাড়খার মানে ত্যানা ত্যানা করে দেওয়া।" 

আশাহত ভাবে সভ্য বলে, "তোমাকে কোন স্কুলে এসব ভাষা শিখিয়েছে জানতে খুব ইচ্ছে করছে।"
"আপনি শিখবেন? চাইলে আমি শিখাতে পারি। কেবল আপনি বেতন হিসেবে প্রতিদিন সকালে একবার এবং রাতে একবার বলবেন, 'ইনু তুমি মহান। তোমার মতো সুন্দরী, বুদ্ধিমান এবং সাহসী আর কেউ নেই।"' 

সভ্য বিরক্তর দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে ইনারার দিকে। তারপর বলে, "তোমার ইচ্ছা আমি এই জীবনের সব মিথ্যা একসাথে বলব?"
ইরফান এবং সামি হেসে দেয় এ কথায়। সভ্য আবার বলে, "আমি গেলাম। এ বাসায় থাকলে আমার দম বন্ধ হয়ে আসে।" 

"ওর ওসিডির রোগে আবার ধরেছে তাই চলে গেছে।" সামি সভ্য যাবার পর কথাটা বলে। আবার ইনারাকে বলে, "ডোন্ট ওয়ারি পার্টনার ওর মুখ দিয়ে যখনই কথা বের হয়, কঠিনই বের হয়। কিন্তু ওর আসল মতলব তা থাকে না।"
ইনারা মুখ ফুলিয়ে ছিলো। সে বিড়বিড় করে বলে, "অসভ্যটা ব্যবহার দেখে আমি নিজেও দ্বিধায় পড়ে যাই। কখনো করলার মতো তিক্ত আবার কখনো মধুর মতো মিষ্টি।"
সেদিকে মাথা ঘামায় না আর ইনারা। তার দৃষ্টি যেয়ে আটকায় টেবিলে। সেখানে সব ডায়েরি। একটি খোলা ডায়েরি দেখে সে যেয়ে তা হাতে নেয়, "এটা তো গল্প। আপনি গল্প লিখেন?"
"চেষ্টা করছি। ভবিষ্যতে ফিল্মের জন্য লেখার ইচ্ছা আছে। তাই আস্তে ধীরে লিখে যাচ্ছি।"
সামি জানায়, "আমাদের বেশিরভাগ গানও ইরফান লিখে। ওর ইচ্ছা রাইটার এবং ডিরেক্টর হওয়ার।"
"আমারও ইচ্ছা ছিলো অভিনেত্রী হবার। আব্বু জীবনেও দিবে না।" আফসোসের নিশ্বাস ফেলে ইনারা, "আপনি যখন অনেক বড় ডিরেক্টর হবেন তখন আমাকে অভিনেত্রী হিসেবে নিবেন ঠিকাছে?"
ইরফান কি উওর দিবে বুঝতে পারে না। সামিও তেমন কিছু বলে না। দুইজনকে চুপ দেখে ইনারা কপাল কুঁচকে জিজ্ঞেস করে, "আমাকে কী অভিনেত্রীদের মতো দেখা যায় না?"
ইরফান ও সামি ভালো করে দেখে ইনারাকে। টাউজার এবং ওভার সাইজ হুডি পরা সে। হুডির ক্যাপ সারাক্ষণ মাথায় দিয়ে রাখে। সবসময়ই তাকে এভাবে দেখা। এই প্রশ্নের উওর মুখোমুখি দেওয়াটা তাদের আচরণে পড়ে না। সভ্য হলে মুহূর্তে দিয়ে দিতো। তাই এই প্রশ্নটা এড়িয়ে গেল দুইজন।
.
.
পরেরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই ইনারা সাইদের মেসেজ পায়, "আজ অফিসে এসো না। মিটিং হচ্ছে। ওই সভ্যের ব্যাপার নিয়ে। তোমার আসার প্রয়োজন নেই। সভ্য বলেছে।"
সেদিন অফিসে না গেলেও তার মনে খুঁতখুঁত লেগেই থাকে কি হয়েছে মিটিং-এ। সভ্যকে কল দিলেও সে ধরে না। সাইদকে জিজ্ঞেস করলে সমস্যা হতে পারে বলে সে জিজ্ঞেস করে না। রবিবারে সকাল দশটা সোজা অফিসে আসতে বলা হয় তাকে। সময়ের আগেই পৌঁছায় সে। সেখানে যেয়ে দেখে রিহার্সাল রুমে অন্য কেউ নেই, জোহান ছাড়া। 
.
.
.
চলবে..................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন