মেঘফুল - পর্ব ৪১ - মিশু মনি - ধারাবাহিক গল্প


অর্ণবদের বাড়িটা বিশাল। শহর ছেড়ে খানিকটা দূরে, নির্জন একতলা বাড়ি। শীতল বাড়িটাতে প্রবেশ করেই এক ধরনের শান্তি শান্তি লাগতে শুরু করেছে। সামার চাইলেও রাগ করতে পারছে না। অথচ ওর খুব ইচ্ছে করছে অর্ণবের সঙ্গে কর্কশ স্বরে কথা বলে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিতে। 
ভায়োলেট সবচেয়ে আনন্দে আছে এখানে এসে। এমন নিস্তব্ধ পরিবেশ, পাখির কিচিরমিচির আর সবুজে ঘেরা বাড়ি ওর ভীষণ ভালো লাগে। জাহ্নবী সঙ্গে এলে দারুণ হতো। খুব খুশি হতো বড় আপা। 

দোতলায় ছাদ। ঝলমলে রোদে বসে সামার আচার খাচ্ছে। অর্ণবের মায়ের সঙ্গে তার তীব্র রাগ থাকলেও ওনার হাতে তৈরি আচারের বয়াম কোলে নিয়ে চেটেপুটে আচার খেতে তার মন্দ লাগছে না। মহিলা নিশ্চয়ই রান্নাও ভালো করেন। যারা ভালো আচার বানায়, তারা নিঃসন্দেহে ভালো রান্নাও জানে।
ছাদ থেকে অর্ণবকে দেখা যাচ্ছে। পরনে ট্রাউজার ও স্যান্ডো গেঞ্জি। গাছ থেকে কুমড়া পাড়ছে সে। সামার ইশারা করে ওপরে আসতে বলল অর্ণবকে।
গেঞ্জি পরে ওপরে যেতে লজ্জা করছিল অর্ণবের। সে একটা টি শার্ট পরে ওপরে এলো। 'এত রোদে বসে আছেন কেন?' জানতে চাইলো অর্ণব।
'চামড়া পোড়াচ্ছি। কালো হয়ে গেলে বিয়েটা ভেঙে যাবে।'
'বিয়ে তো ভাংবোই। এ নিয়ে আপনার নিজেকে কষ্ট দেয়ার প্রয়োজন নেই।'
'বিয়েটা দু একদিন পর ভাঙুন। ভেবেছিলাম জায়গাটা আমার ভালো লাগবে না। কিন্তু এখানে এসে আশেপাশের প্রকৃতি দেখে ইচ্ছে করছে দুটো দিন থাকি।'

অর্ণব খানিকটা অবাক হয়। সামারকে ঠিকঠাক বুঝে উঠতে পারেনি সে। অদ্ভুতুড়ে মেয়েটির কখন কী সাধ জাগে, তার মতো বোকাসোকা মানুষের পক্ষে বোঝা মুশকিল। সে বিভ্রান্ত চোখে চেয়ে রইল।
সামার বলল, 'আচারটা খুবই মজা হয়েছে।'
'আমি গোসল করতে যাবো, আসি।'
'শুনুন, আপনাদের এখান থেকে পাহাড় কতদূরে?'
'বেশ দূরে। আপনি যেতে চান?'
'হ্যাঁ। নিয়ে যাবেন পাহাড়ে?'
অর্ণব কিছুক্ষণ ভেবে উত্তর দিলো, 'একটা গাড়ি ঠিক করি। কাল সকালে সবাই মিলে যাবো।'
'সবাই মিলে যাবো না। আপনি আর আমরা দুইবোন যাবো।'
এবারও ভীষণ বিস্মিত হল অর্ণব। কখনো তীব্র রোদের মতো ঝাঁঝালো, আবার কখনো শীতের রোদেলা দিনের মতো মিঠে আচরণ করা মেয়েটাকে তার বিশ্বাস হচ্ছে না। একইসাথে মানুষ কীভাবে দুই ধরনের বৈশিষ্ট্য নিয়ে বাস করে, জানা নেই তার।

বিভ্রান্তি নিয়ে অর্ণব নিচে নেমে এলো। তিনজন মিলে ঘুরতে গেলে মেয়েটার জন্য ভালোই হবে, ইচ্ছেমতো চিৎকার চেঁচামেচি করতে পারবে অর্ণবের সঙ্গে। তার রাগ সহ্য করার জন্য তাকে আজ থেকেই মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে। 

নাদির স্যারের সঙ্গে বেশ কিছুদিন আগেই জাহ্নবী ফেসবুকে যুক্ত হয়েছে। আজ সারল্যকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি পোস্ট দিয়েছেন। জাহ্নবী কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থাকে। তারপর কোনোকিছু না ভেবেই সারল্য'র নাম্বারে একটা মেসেজ পাঠায়, শুভ জন্মদিন।
বিপরীতে আরেকটা মেসেজ এলো, 'ধন্যবাদ জাহ্নবী। আপনি কীভাবে জানলেন আমার জন্মদিন আজ?'
জাহ্নবী গম্ভীর মুখে বসে রইল। তার কী সারল্যকে আরও একটা টেক্সট পাঠানো উচিৎ? কিন্তু সে তো মানুষটিকে এড়িয়ে চলতে চায়। জাহ্নবী দ্বিধাগ্রস্ত মুখে আয়নার দিকে তাকিয়ে নিজেকে উত্তর দেয়, 'আমি ওনাকে বন্ধু ভাবছি। স্রেফ বন্ধু হিসেবেই শুভেচ্ছা জানাচ্ছি তাকে।'
পরক্ষণেই জাহ্নবীর মনে হল, ওনার সুন্দরী স্ত্রী যদি মেসেজ দেখে বিরক্ত হয়! না থাক। অযথা কারও ব্যক্তিগত জীবনে অনুপ্রবেশের ইচ্ছে তার নেই। আর কোনো ফিরতি মেসেজ দেয় না সে। ফোনটা নিঃশব্দে রেখে দেয়।

অফিস শেষ হবার কিছুক্ষণ আগে নাদির স্যার জাহ্নবীকে জানালেন, আজ সারল্য ভাইয়ার জন্মদিন। একটা কেক কাটবো। বাইরের কেউ থাকবে না, আমাদের টিমের কয়েকজন। আপনি থাকবেন কিন্তু।
সহজ হওয়ার চেষ্টা করলো জাহ্নবী। হাতমুখ ধুয়ে চুল আঁচড়ে নিলো। অফিস শেষে সারল্য'র জন্য একটা ছোট্ট উপহারও কিনলো সে। তারপর নাদিরের সঙ্গেই রওনা দিলো রেস্তোরাঁর উদ্দেশ্যে। 

সারল্যকে নিয়ে টিমের পাঁচজন মিলে কেক কাটা হল। আজ তার বিশুদ্ধ মুখে বিষাদের স্পষ্ট ছাপ। জাহ্নবীর কেমন যেন লাগে। এই মানুষটাকে মলিনমুখো মানায় না মোটেও। কী হল আজ তার? প্রিয়জনের সাথে ঝগড়া নয়তো?

জাহ্নবী হাসিমুখে সারল্য'কে জিজ্ঞেস করল, 'আপনার জন্মদিন খুব খারাপ কেটেছে?'
'না, খারাপ কাটবে কেন? এইযে আপনারা কেক কেটে শুভেচ্ছা জানালেন। ভালোই তো কাটল।'
'আর কেউ শুভেচ্ছা জানায়নি?'
'বন্ধু বান্ধব সবাই জানিয়েছে।'
'কেক কাটেনি আর কেউ?'
'না।'
'আপনার স্ত্রী, মেয়েও না?' তীব্র কৌতুহল থেকে জাহ্নবী প্রশ্নটি করে বসলো। মুহুর্তেই তার চোখের দিকে তাকালো সারল্য। তার নামের মতোই সরলতা ফুটে উঠেছে বদনে। নিষ্পাপ সারল্য!
সে বলল, 'আমার মেয়ে জানেই না আজ আমার জন্মদিন।'
'আপনার স্ত্রী জানেন না? সরি পারসোনাল প্রশ্ন করছি।'
'আমার স্ত্রী নেই।'
'আমি আপনার স্ত্রীকে দেখেছি, মিথ্যা বলবেন না।'
'সে এখন শুধুই আমার মেয়ের মা, আর আমার প্রাক্তন স্ত্রী।'

মুহুর্তেই জাহ্নবীর তনুমনে প্রচণ্ড শব্দে সবকিছু এলোমেলো হতে আরম্ভ করল। রেস্তোরাঁর নীল আলো, অভিজাত পরিবেশের ঘ্রাণকে ছাড়িয়ে চাপা বেদনা তাকে চেপে ধরল আষ্ঠেপৃষ্ঠে। যে মানুষটাকে এতদিন শুদ্ধতম পুরুষ বলে জানতো সে, সেই মানুষটির হৃদয় জুরে হাহাকার। তীব্র বেদনা নিয়েও কী অবলীলায় সবার সঙ্গে মিশছে সে! 

জাহ্নবীর কষ্ট হতে থাকে সারল্য'র জন্য। সারল্য ম্লান হেসে বলল, 'বাদ দিন আমার কথা। জন্মদিন এখন শুধুই একটা দিন, যেদিন আমার বয়স এক বছর বেড়ে যায়। এর বেশী কিছুই না। এখন আর কোনোভাবেই এটাকে স্পেশাল দিন বলে মনে হয় না।'
জাহ্নবী গম্ভীর মুখে বসে রইল। কিছু বলতে গিয়ে টের পেলো তার গলা দিয়ে কোনো স্বর আসছে না। সারল্য'কে এমন ব্যথাতুর বদনে দেখার কষ্টটা তাকেও সমান ব্যথায় ভরিয়ে তুললো।

সারল্য মুহূর্তেই মুখে হাসি টেনে এনে বলল, 'আজকে আমি ট্রিট দিবো। আপনি বসুন। কী খাবেন বলুন তো?'
জাহ্নবী একটা ছোট্ট নিশ্বাস ফেলল। অন্যদিকে গিয়ে বাকিদের সাথে সহজ ভঙ্গীতে কথা বলতে লাগল সারল্য। জাহ্নবী অবাক চোখে সেদিকে চেয়ে থাকে। একজন নিঃসঙ্গ মানুষের কষ্ট তাকে গভীরভাবে ছুঁয়ে যায়। 

খাবার খাওয়া শেষে সবাই আড্ডায় মেতে ওঠে। তাদের সঙ্গে হাসিতে যোগ দেয় সারল্য। জাহ্নবী'র হাসি আসে না। সে গম্ভীর হয়ে বসে থাকে। একসময় সারল্য নিজেই জানতে চায়, 'আপনার কী মুড অফ? অবশ্য সবসময়ই আপনি অফ মুডে থাকেন। আজকে সাইলেন্ট মুডে আছেন।'
'জেনারেল মুডে আসবো। আপনি আমার সঙ্গে এক জায়গায় যাবেন?'
'কোথায়?' চমকে উঠে জানতে চাইলো সারল্য। 
জাহ্নবী বলল, 'যাবেন? আমার খুব প্রিয় একটা জায়গায়।'
'কী হবে ওখানে গিয়ে?'
'গেলেই দেখতে পাবেন। চলুন।'

রেস্তোরাঁ থেকে বের হয়ে জাহ্নবী রিকশা ডেকে উঠে পড়ল। রিকশায় উঠতে উঠতে সারল্য বলল, 'দয়া দেখাচ্ছেন?'
'আপনাকে দয়া দেখানো যায় না।'
'কেন যায় না?'
'দয়া জিনিসটা সবার জন্য নয়। আপনি দয়ার অনেক উর্ধ্বে।'

সারল্য প্রত্যুত্তর দেয় না। রিকশায় উঠে পড়ে সে। ঢাকা শহরের উষ্ণ আবহাওয়ায় দুলে দুলে চলতে থাকে রিকশা। সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে জাহ্নবীর একটুও জড়তা বা সংকোচ বোধ হচ্ছে না। 
শাহবাগে সাড়ি সাড়ি ফুলের দোকানের সামনে এসে দাঁড়ালো রিকশা। ভ্রু কুঁচকে সারল্য জানতে চাইলো, 'এখানে কী হবে?'
'আসুন।'

জাহ্নবীর পাশে হাঁটছে সারল্য। তার চোখে ব্যাপক বিস্ময়। জাহ্নবী ফুলের দোকানে গিয়ে ঢুকল। ডানে বাঁয়ে, সবখানে ফুল। এত ফুলের মাঝে সে যেন আরেকটি ফুল হয়ে ফুটল। স্বচ্ছ হাসি দেখা গেল তার ঠোঁটে। সারল্যকে ডেকে বলল, 'ফুল দেখুন। কত রকমের ফুল আছে এখানে বলুন তো?'
'তা আমি কী করে জানবো?'
ওরা হাঁটতে হাঁটতে সবগুলো দোকান পেরিয়ে গেল। আবার উলটো পথে হাঁটা ধরলো জাহ্নবী। সারল্য মুচকি হেসে বলল, 'আপনি এখানে কেন পায়চারি করছেন?'
'আপনিও আমার সঙ্গে পায়চারি করুন।'

দুপাশে অজস্র ফুল রেখে ওরা হাঁটছে। হরেক রকম ফুলের ঘ্রাণে চারপাশ সুরভিত। থরে থরে রাখা লাল গোলাপ, হলুদ গাঁদা, সাদা কিংবা হলুদ ফুলের রকমারি বাহার। সারল্য এগিয়ে গিয়ে এক ঝাঁক ফুলের ঘ্রাণ নিলো। আবারও ঘ্রাণ নিলো। আহ! কী যে ভালো লাগছে...

কথাটা বলে তৃতীয়বারের মতো ফুলের ঘ্রাণ নিলো সে। মনটা বিশুদ্ধতায় ভরে উঠল। জাহ্নবী বলল, 'ফুল হচ্ছে আমার কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর আর সবচেয়ে পবিত্র জিনিস। এ জন্যই এটা আমার প্রিয় জায়গা।'
সারল্য কোনো উত্তর দিলো না। জাহ্নবী বলল, 'আজ আমি আপনাকে ফুল উপহার দেবো। কাউকে ফুল উপহার দেয়ার মানে কী জানেন?'
'না জানিনা। আমাকে আপনি পছন্দ করেন?'
জাহ্নবী ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে উত্তর দেয়, 'উফফ না। কাউকে ফুল উপহার দেয়া মানে হচ্ছে তাকে পবিত্র শুভেচ্ছা জানানো।'
'অন্যভাবে জানালে সেটা পবিত্র হয় না?'
'ফুলের মতো নিষ্পাপ, কোমল আর কিচ্ছু হতে পারে না।'
'মানলাম। দিন ফুল কিনে দিন।'
জাহ্নবী হেসে বলল, 'আপনার কোন রঙের ফুল পছন্দ?'
'জানিনা। বোধহয় সাদা।'
জাহ্নবী আবারও মুচকি হাসলো। একগুচ্ছ সাদা দোলনচাঁপা ফুল কিনলো সে। সবুজ পাতার ভেতর সাদা ফুল। ফুলগুলো সে এগিয়ে দিলো সারল্য'র দিকে। সারল্য ফুল হাতে নিয়ে বলল, 'থ্যাংকস। এই প্রথম কেউ আমাকে ফুল উপহার দিলো।'
'ওয়েলকাম।'

ফুলের টাকা শোধ করে জাহ্নবী নেমে এলো রাস্তায়। সারল্য বলল, 'আমিও আপনাকে ফুল উপহার দিতে চাই।'
'কেন? আজ তো আমার জন্মদিন না।' বিস্ময়ের সঙ্গে উত্তর দিলো জাহ্নবী।
সারল্য বলল, 'আপনার মনটা অনেক ভালো। যাদের মন ভালো, তাদেরকে ফুল উপহার দিতে হয়।'
'বাঃ আমার কাছ থেকে শিখে আমাকেই শোনাচ্ছেন এসব?'
হেসে ফেলল সারল্য। শব্দ করে হাসলো। এক হাতে দোলনচাঁপা ফুল নিয়ে সে দোকানে দোকানে ঘুরতে লাগল। জাহ্নবী বলল, 'আপনার পছন্দের ফুল দিন।'
'আমি আসলে কনফিউজড কোনটা নেবো।'

জাহ্নবী হেসে ফেলল। ফুলের ঘ্রাণে দেহমন জুরে এক ধরনের প্রশান্তি ছড়িয়ে পড়েছে ততক্ষণে। সারল্য বলল, 'আপনি ওইযে একটা চায়ের দোকান দেখতে পাচ্ছেন?'
'হ্যাঁ পাচ্ছি।'
'ওখানে গিয়ে বসুন। চা, ফুচকা মুচকা যা ভাল্লাগে অর্ডার দিন। আমি ফুল নিয়ে আসছি।'
জাহ্নবী মাথা দুলিয়ে বলল, 'আচ্ছা।' 

ধীরপায়ে এগিয়ে গেল সে দোকানের দিকে। পাশাপাশি কয়েকটা ফুচকার দোকান। চা-ও পাওয়া যায় এখানে। সে একটা বেঞ্চিতে এসে বসলো। দূর থেকে দেখল দুজন ছেলেমেয়ে ফুল কিনছে। ছেলেটা ফুল কিনে দিচ্ছে মেয়েকে। কী অপূর্ব! আজ তাকেও একজন ফুল উপহার দেবে, ভাবতেই অবাক লাগছে তার। 
জাহ্নবী এক প্লেট ফুচকা নিয়ে বসলো। সারল্যকে দেখা যাচ্ছে না। অগত্যা ফুচকা খেতে শুরু করল সে। এমন সময় একটা কিশোর ছেলে এক ডালি ভর্তি ফুল নিয়ে এসে রাখল জাহ্নবীর সামনে। ভীষণ অবাক হয়ে জাহ্নবী বলল, 'এসব কী?'
ছেলেটা দাঁত বের করে হাসলো। ফুল রেখে চলে গেল সে। সারল্যকে আসতে দেখা যাচ্ছে। নির্বিকার ভঙ্গীতে সারল্য এসে দোকানীকে চা দিতে বললো। জাহ্নবী'র বিস্ময় এখনো কাটেনি। সে বিস্মিত কণ্ঠে বলল, 'এত ফুল কেন এনেছেন!'

সারল্য মুচকি হেসে বলল, 'কোনটা নেবো কনফিউজড হয়ে পড়েছিলাম। হঠাৎ মনে হল সবগুলো ফুল কেন নিচ্ছি না।'
'এতগুলো ফুল আমি কী করবো?'
'এই দুইটা দোলনচাঁপা দিয়ে আমি যা করবো।'
'খুব সারপ্রাইজড হয়েছি। বসুন। ফুচকা খান।'
'না ম্যাডাম, আমি বাইরের ফুচকা খাইনা।'
জাহ্নবী কয়েক পলক সারল্য'র দিকে তাকিয়ে রইল। হঠাৎ কেঁপে উঠল সে। এই তো তার পান্নাবাহার। তার পাশে বসে চা খাচ্ছে। তাকে কিনে দিয়েছে এক ডালি ফুল! জাহ্নবী বুক ভরে নিশ্বাস নেয়। ফুলের ঘ্রাণে ভরে যায় বুক। 

একটা রিকশা নিয়ে উঠে পড়ল তারা। সারল্য'র কোলের ওপর ফুলের ডালি। সে জাহ্নবীকে বাসায় পৌঁছে দেবে বলেছে। জাহ্নবী এই প্রথম কোনো আপত্তি জানায়নি। রিকশায় মৃদু বাতাসে ফুলেল ঘ্রাণ ভাসছিল। জাহ্নবী'র কাছে এই সন্ধ্যা, এই রাত ঠিক স্বপ্নের মতো। 
.
.
.
চলবে.......................................................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

WhatsApp