০৬!!
বাচ্চাটাকে বাঁচানো গেল না। আট সপ্তাহ, চার দিনের ভ্রুনটা প্রিয়তির গর্ভ থেকে বিদায় নিল। পৃথিবীর মুখ, পৃথিবীর আলো তার দেখা হল না। দেখা হল না বাবা মা পরিবারকে। অনুভব করা হল না সুন্দর ধরনীর নির্মল, বাতাস গন্ধ। ভ্রুনটির মাঝে কেবল হৃদস্পন্দনের সঞ্চার হয়েছিল কিন্তু সে হৃদস্পন্দের টিপ টিপ শব্দ কেউ শুনতে পেল না। তার আগেই বিদায় নিল। ডাক্তার আল্ট্রাস্নোগ্রাফী করে বললেন বাচ্চাটা নষ্ট হয়ে গেছে। রিদু কেমন রিয়াক্ট করবে তা ঠিক বুঝতে পারল না। হতবাগ হয়ে ডাক্তারের দিকে তাকিয়ে বলল,
_" কিন্তু ডাক্তার প্রিয়তি তো বলল ওর পেটে কোনো আঘাত লাগেনি।
ডাক্তার মৃদু স্বরে বললেন,
_" দেখুন হৃদয় সাহেব পেটে আঘাত লাগলেই যে বাচ্চা নষ্ট হবে, বা আঘাত না লাগলে যে বাচ্চা ঠিক থাকবে, তেমন কথা কিন্তু নেই। আঘাত তার পেটে না লাগলেও সে যখন পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পায় তখন তার সারা শরীরে প্রচন্ড একটা ঝাকুনি লাগে। আর এটা নিশ্চয়ই জানেন কনসিভ করার শুরুর তিনমাস সামান্য সামান্য কারণে মিসক্যারেজ হয়। এমনকি কনসিভ করার পর প্রথম দিকে সামান্য জ্বরে, হালকা স্লিপ কাটলে বা বেশ ভয় পেলেও বাচ্চা নষ্ট হয়। এখানে উনি তো পড়ে গিয়েছেন, পুরো শরীর বেশ বড় বড় ধাক্কার সম্মুখীন হয়েছেন, মাথায় প্রচন্ড আঘাত পেয়েছেন। প্রচুর ব্ল্যাড লস হয়েছে। রক্ত দিতে হচ্ছে তাকে।
এত বড় আঘাতে বাচ্চা টেকার চান্স মাত্র ২০% ও না। তাও যদি উনি তিন মাস প্লাস হত তবে বলা যেত যে বাচ্চা টিকতে পারে। বাট এখন আপনার বাচ্চার হার্টাবিট নেই। অনেক্ষণ আমরা পর্যবেক্ষণ করেও বাচ্চার হার্টবিট পাইনি। তাছাড়া মাথা ফাটার কারণে আপনার ওয়াইফকে এখন হাই ডোজের ইনজেকশন প্লাস ঔষধ দিতে হবে। তাতে বাচ্চা এমনিও মিসক্যারেজ হত। এত হাই ডোজের মেডিসিন প্রেগেনেন্ট মহিলারা নিতে পারে না। আপনি জানেন সামান্য মাথা ব্যথার ঔষধে পর্যন্ত বাচ্চা নষ্ট হয়! সেখানে তো ওনার মাথা ফেটে গেছে। বেশ কয়েকটা সেলাই লেগেছে। আমরা যদি না জানতাম উনি প্রেগনেন্ট তবে ঐসব ওষুধের ফলে উনি পেটে ভয়াবহ যন্ত্রনার স্বীকার হতেন। প্রচুর ভুগতে হত তাকে। এখন ওনাকে যে ওষুধ দিয়েছি তাতে মৃত ভ্রুনটা নিজে নিজে পড়ে যাবে। তারপর যদি ভিতরে ময়লা বা অবশিষ্ট কিছু থাকে তবে ডি এন সি করে পরিষ্কার করতে হবে। আপাতত আপনার ওয়াইফের জ্ঞান নেই। ফিরতেও সময় লাগবে। আমরা তো এটা ভেবে অবাক হচ্ছি এত আঘাত পাবার পর, এত ব্ল্যাড লস হবার পরও কিভাবে বেশ ক্ষানিকক্ষণ হুসে ছিল, আর আপনাদের এত কথা কিভাবে বলল? যাই হোক হয়ত ওনার মনের জোর অনেক। তবে সে জোরও আপনাদের অনাগত সন্তানকে বাঁচাতে পারেনি। এখন সৃষ্টিকর্তাকে ডাকুন। আমরা অলরেডি তার চিকিৎসা শুরু করে দিয়েছি।
ডাক্তারের কথাগুলো একধ্যানে শুনছিল হৃদয়। আজ বলার মত সব ভাষা ও হারিয়ে ফেলেছে। আজই তো জানতে পারল ও বাবা হবে আর আজই নিজের সন্তানকে হারাল। এমন হতভাগ্য মানুষ বোধ হয় পৃথিবীতে দ্বিতীয় আরেকটা নেই। রিদুর চোখ দুটো ভিজে আসতে চাইছে কিন্তু বেশ কষ্টে দাঁতে দাঁত চেপে নিজের চোখের জল আটকাচ্ছে। ডাক্তারের চেম্বার থেকে বের হতেই দেখল ওর বাবা আর বোনও হসপিটালে এসেছে। রিদুকে দেখে দিলারা বেগম বললেন,
_" কী হলো হৃদয়? ডাক্তার কী বললেন?
রিদু কেন জানি এবার নিজেকে সামলাতে পারল না। ওর মাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগল। কান্না করতে করতে বলল,
_" মা আমার বাচ্চাটাকে বাঁচাতে পারল না। আমার বাচ্চাটা পৃথিবীতে আসার আগেই বিদায় নিল মা। সব শেষ মা, সব শেষ।
দিলারা বেগম ছেলেকে শান্তনা দিতে দিতে বললেন,
_" সব শেষ কিভাবে? আল্লাহ সব ঠিক করে দিবেন। প্রিয়তি সুস্থ হলে, আল্লাহ চাইলে তোরা আবার বাবা মা হতে পারবি। কান্না করিস না বাবা। আল্লাহ সব ঠিক করে দিবেন। তা প্রিয়তি কেমন আছে?
_" ওর অবস্থাও তেমন ভালো না। ডাক্তার বলছেন আল্লাহর নাম নিতে। চিকিৎসা চলছে।
হারুন সাহেব বললেন,
_" চিন্তা করিস না। প্রিয়তির কিছু হবে না।
রিদু খানিক রেগেই বলল,
_" এখন কেন আসছ বাবা? আমার সন্তান তো আর আসবে না। আমার স্ত্রীর অবস্থাও ভালো না। কিন্তু তোমার সন্তান তো ঠিকই বেঁচে আছে। সেদিন যদি প্রিয়তিকে নিয়ে যেতে না দিতে তবে আমার সন্তান আজ বেঁচে থাকত।
হারুন সাহেব মাথা নিচু করে রইলেন। হৃদিতা রিদুকে জড়িয়ে ধরে বলল,
_" ভাই শান্ত হ। ভাবীর কিছু হবে না। আল্লাহ সব ঠিক করবেন।
পলাশ আর রেহেনা বেগম মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছেন। তারাও যেনো বাকরুদ্ধ এমন ঘটনায়।
০৭!!
প্রেমা ঘরে পায়চারি করছে। তখন রাগের মাথায় যে কান্ডটা করে বসল তারপর থেকে মাথা কাজ করছে না। এদিকে ওর বাবা মাও ফোন তুলছে না। রাগটা যেনো আরও বাড়ছে তাতে। তিথি প্রেমার রুমের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। তিথিকে দেখে প্রেমা জোরে ডাকল।
_" তিথি!
তিথি এমনি প্রেমাকে প্রচন্ড ভয় পায়। তার উপর আর প্রেমার যা মেজাজ, দেখা যাবে রাগের বশে তিথিকে দু চারটার চড় দিয়ে বসবে। তিথি বেশ কেঁপে কেঁপে প্রেমার রুমে ঢুকে বলল,
_" আপু কিছু বলবে?
_" আমার বাবা মায়ের সাথে কথা হয়েছে?
_" না।
_" ছোট চাচির? (তিতির মা)
_" জানি না।
প্রেমা রাগি গলায় বলল,
_" তবে কি জানিস আমার মাথা? যা এখান থেকে।
তিথি রুম থেকে বের হয়ে কিছুটা আড়ালে গিয়ে, ওর হাতে থাকা পানির বোতল থেকে কিছুটা পানি প্রেমার রুমের সামনে ঢেলে দিল। আর মনে মনে বলল,
_" কুত্তি প্রেমা তুই যেনো এখানে পিছলা খেয়ে পড়িস। তোর মাথা ফেটে যেনো তোর মাথার মধ্যের সব শয়তানগুলা বের হয়ে যায়। প্রিয়তি আপু একা কেন কষ্ট পাবে? তোর মত ইবলিসের কষ্ট পাওয়া উচিত। একদিন সুযোগ বুঝে তোর সব জামায় বিলাই চিমটা, বিচুটি পাতা দিব। যাতে চুলকাতে চুলাকাতে মরিস। শালী শয়তানের নানি। আল্লাহ এত লোক দমন করে তোরে কেন চোখে দেখে না। বেচারা আমার মাটির মত প্রিয়তি আপু।
প্রিয়তির কথা মনে হতেই তিথি ফোনটা হাতে নিয়ে রিদুকে কল করল।
—————
তিথি রিদুকে কল করলেও, ফোনটা হৃদিতা রিসিভ করল। তিথি বলল,
_" হ্যালো ভাইয়া।
হৃদিতা বলল,
_" তিথি আমি হৃদিতা।
_" কেমন আছেন আপু?
_" ভালো তুমি?
_" জি ভালো। আপনি কি হসপিটালে?
_" হ্যাঁ।
_" ভাইয়া কোথায়?
_" সেও হসপিটালে।
_" প্রিয়তি আপু কেমন আছে?
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে হৃদিতা বলল,
_" অবস্থা ভালো না।
_" মাথা কি বেশি ফাঁটছে।
_" হ্যাঁ পাঁচটা সেলাই লাগছে। প্রচুর ব্লাড গেছে। তাছাড়া ভাবির বাচ্চাও নষ্ট হয়ে গেছে।
_" কী বাচ্চা মানে?
_" ভাবি প্রেগনেন্ট ছিল। ভাবির এ অবস্থা দেখে ভাইয়া এমনিতেই ভেঙে পড়েছে, এখন বাচ্চা নষ্ট হবার কথা শুনে বেচারা একেবারে ভেঙে পড়েছে।
তিথির খুব কষ্ট হচ্ছে। গলা আটকে আসছে। জিজ্ঞেস করল,
_" আপু ঠিক হবে তো?
_" হ্যাঁ ঠিক হবে। তবে যখন তিনি জানতে পারবে তার বাচ্চাটা নেই তখন কী করবে আল্লাহই জানেন। মাথায় আঘাত লেগেছে তাই ডাক্তার আপাতত বাচ্চা নষ্ট হবার কথা বলতে নিষেধ করছেন। সুস্থ হলে তারপর বলতে বলছে।
_" আপু একটা কথা বলি?
_" হ্যাঁ বলো।
_" ভাইয়াকে বলো আপুকে আপনাদের বাড়ি নিয়ে যেতে। এখানে থাকলে হয়ত দেখা যাবে প্রেমা আপু একদিন আপুকে মেরেই ফেলবে। ও তো মেয়ে না ডাইনী।
কথাটা বলে শেষ করতে পারল না, এর মধ্যে তিথির গালে সজোরে একটা চড় পড়ল। হাত থেকে মোবাইলটা পড়ে গিয়ে বন্ধ হয়ে গেল। তিথি চোখ বড় করে সামনে থাকা মানুষটার দিকে তাকাল। দেখল প্রেমা রাগী চোখে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। প্রেমার চোখ থেকে আগুন ঝরছে। তিথির চোখ থেকে বড় বড় আকারের জলকনা ঝরতে লাগল। প্রেমা চিৎকার করে বলল,
_" আমি ডাইনী? আমার বাবার খাস, আমাদেরটা পরিস আবার আমাকেই যা তা বলিস? তোর বাবা তো দিনের পর দিন বিছানায় পড়ে আছে। আমার বাবা না দিলে কি খাইতি তোরা? ভিক্ষা করতে হত।
প্রেমার চিৎকার শুনে তিথির মা দৌড়ে আসল। তারপর বলল,
_" কী হয়েছে প্রেমা চিৎকার করছ কেন?
_" চাচি তোমার মেয়েকে বলো আশ্রিতা আশ্রিতার মত থাকতে। আমাদের খাবে, পরবে আবার আমাকে যা তা বলবে?
তিথির মা কিছু বুঝতে না পেরে বলল,
_" কিন্তু হয়েছেটা কী?
তিথি এবার মুখ খুলল। বলল,
_" আপু ভুলে কেন যাচ্ছ এ বাড়ি তোমার বাবার নয়, দাদাজানের। তো এ বাড়িতে তোমার যতটা অধিকার ততটা আমাদের। বাবা নাহয় দু বছর যাবত অসুস্থ তা বলে তোমারা আমাদের কোনো খরচ বহন করো না। সেটা বললে তোমরা মিথ্যা বলবে। হ্যাঁ চাচাজান আমাকে কাপড় দেন, পড়ার খরচ দেন কিন্তু তা তো তার আয়ের টাকা নয়! অামাদের ধানী জমি থেকে, আর সবজির চাষ করে তো কম টাকা আসে না। তাতে চাচার যতটা ভাগ ততটা বাবারও। চাচা পুরোটা নেয়, আমাদের ভাগ দেয়না। শুধু খাওয়া পড়ার খরচ দেয়। হিসাব করলে তোমরা আমাদের টাকা মেরে খাচ্ছ, তোমার বাবার টাকায় আমারা খাই না।
প্রেমা তিথির কাছে তেড়ে গিয়ে বলল,
_" যত বড় মুখ নয় তত বড় কথা। আজ তোর মুখ ভেঙে ফেলব।
তিথির মা ঠাস করে প্রেমার গালে চড় বসিয়ে বলল,
_" তোর সাহস তো কম নয়। আমার সামনে দাঁড়িয়ে আমার মেয়ের গায়ে হাত তুলছিস? ও তো ভুল কিছু বলেনি? আসুক তোর বাবা তাকে বলব, তিথির বাবার ভাগ বুঝিয়ে দিতে। তোর মত দজ্জাল যে বাড়িতে আছে সে বাড়িতে থাকব না। এ বাড়িতে আমাদের ভাগের অংশ ভাড়া দিয়ে চলে যাব এ নরক থেকে। যে বাড়িতে, এক অসভ্য মেয়ে নিজের রক্তের বড় বোনকে মারে, তার সন্তানকে খুন করে, তেমন খুনির মুখ দেখাও পাপ। তোর মুখে থু। চল তিথি ঘরে চল। এই জানোয়ারটার মুখ দেখলে আমাদের অমঙ্গল হবে। অলক্ষী জানি কোথাকার।
প্রেমা গালে হাত দিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে রইল। এমন ঝটকা অনেকদিন পর পেল ও। ওর নীরিহ চাচি, যে কিনা মুখের উপর কথা পর্যন্ত বলে না সে এমন করবে তা চিন্তাও করতে পারেনি ও।
০৮!!
রিদু প্রিয়তির ডানহাতটা নিজের দু হাতের মাঝে নিয়ে ওর পাশে বসে আছে। কেবিনে দেয়া হয়েছে প্রিয়তিকে। বেশ কয়েকদিন হসপিটালে থাকতে হবে। বেহুশ অবস্থায়ই ইনজেকশন দিয়ে ডি এন সি করেছে ডাক্তার। সাথে মাথায় সেলাই করেছে। দুটো প্রেশারে প্রিয়তির শরীরটা নিস্তেজ হয়ে আছে। চোখ পিটপিট করে মেলে আবার বন্ধ করে ফেলছে। মাথা যন্ত্রনায় তাকানোর মত শক্তি পাচ্ছে না। পেটেও প্রচন্ড যন্ত্রনা হচ্ছে। মনে হচ্ছে পেটের মধ্যে কেউ কাটাছেড়া করে ক্ষতবিক্ষত করেছে। প্রিয়তি বাম হাতটা পেটে দিতে চাইল কিন্তু ক্যানোলার কারণে পারল না। টান লাগল। শরীরে রক্ত দেয়া হচ্ছে। প্রচন্ড যন্ত্রনায় অনুভূতি শক্তি নষ্ট হয়ে গেছে। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। পানি খেতে ইচ্ছে করছে কিন্তু বলার মত শক্তি নেই। আবার চোখের পাতা ঝাপসা হয়ে আসল। ঘুমাতে ইচ্ছা করছে। মাথা যন্ত্রনায় ঘুমটা ঠিকভাবে আসছে না। যন্ত্রনায় শরীরের প্রতিটা অংশের অনুভূতি ভোতা হয়ে গেছে। প্রিয়তি মনে মনে ভাবছে,
_" মন ভরে ঘুমালে আমি সুস্থ হব। আমার ব্যথা কমবে। হে আল্লাহ আমাকে ঘুম দাও, প্রচুর ঘুম।
রিদু প্রিয়তির কপালে চুমো খেয়ে বলল,
_" আমার কলিজাটার কি বেশি কষ্ট হচ্ছে?
প্রিয়তি হালকা মাথা নাড়ার চেষ্টা করল। কিন্তু না পেরে ঠোঁট নেড়ে বলল,
_" হুঁ।
রিদু ঠোঁটে আলত চুমো খেয়ে বলল,
_" এইত কদিন তারপর সুস্থ হয়ে যাবে জান। একটু সহ্য করো।
রিদু প্রিয়তিকে সহ্য করতে বলছে কিন্তু নিজেই প্রিয়তির কষ্ট সহ্য করতে পারছে না। প্রিয়তি ডান হাতের একটা আঙুল দিয়ে নিজের ঠোঁট দেখাল। তারপর মলিন মুখে হালকা হাসল। রিদু বুঝল প্রিয়তির কী চাই? রিদু প্রিয়তির ঠোঁটে আরও দুটো আলত চুমো খেল। তারপর বলল,
_" সুস্থ হও তখন হাজার, লাখো চুমোতে ভরিয়ে দিব। এখন ছটফট না করে ঘুমানোর চেষ্টা করো তো।
প্রিয়তির বাবা মা কেবিনে আসল। রিদু নিচু গলায় বলল,
_" বাইরে চলুন।
তারা নিঃশব্দে বাইরে গেল। রিদু তাদের দিকে তাকিয়ে বলল,
_" আপনারা দয়া করে আর আমার স্ত্রীর চার পাশে আসবেন না।
পলাশ রেগে বলল,
_" তোমার স্ত্রীর আগে ও আমার মেয়ে।
_" আপনার মেয়ে ছিল এবং থাকবে কিন্তু বর্তমানে আমি ওর স্বামী। আর আইনি মতে আমি এখন ওর অভিবাবক। আমার স্ত্রীর সাথে আমি আপনাদের দেখা করতে দিব না। আপনারা আসতে পারেন। আর হ্যাঁ আপনাদের ঐ কাল নাগিনী মেয়েকে শিক্ষা দেবার সব ব্যবস্থা হয়ে গেছে। পুলিশ বোধ হয় আপনাদের বাড়ির পথে। আমার স্ত্রীকে মেরে, আমার সন্তানকে খুন করে ও রক্ষা পাবে ভেবেছেন? নো নেভার। ওর নামে আমার সন্তানকে হত্যার, স্ত্রীকে প্রাণে মেরে ফেলার এবং আমার সংসার ভাঙার মামলা করেছি অামি। ঐ খুনি জেলে যাবে এখন?
রেহেনা বেগমের মুখ ভয়ে চুপসে গেল। তিনি পলাশকে বললেন,
_" প্রেমাকে ফোন করো।