মহুয়া - পর্ব ০৫ - শারমিন আক্তার সাথী - ধারাবাহিক গল্প


      প্রচন্ড মাথা ব্যথায় ছটফট কর‌ছে প্রিয়‌তি। শরী‌রে উঠে বসার শ‌ক্তি তো দূ‌রের কথা,‌ চোখ খু‌লে দেখার‌ বা মুখ খু‌লে কথা বলার পর্যন্ত শ‌ক্তি পা‌চ্ছে না। হঠাৎ একটা ঝড়ে রঙীন দু‌নিয়া নি‌মি‌ষেই এলো‌মে‌লো লাগ‌ছে। ঘন ঘন নিশ্বাস নি‌চ্ছে প্রিয়‌তি। রিদু ওর মাথায় হাত দি‌য়ে পা‌শে ব‌সে আছে। রিদু জ‌ানতো সন্তান হারা‌নোর ব্যথাটা প্রিয়‌তি সহ‌জে হজম কর‌তে পার‌বে না। সে জন্যই ভে‌বে‌ছি‌লো প্রিয়‌তি যখন সম্পূর্ণ সুস্থ হ‌বে তখন ধী‌রে সু‌স্থে ওকে স‌ত্যিটা জানা‌বে। কিন্তু তার আগেই প্রেমা সব শেষ ক‌রে দি‌লো। গতকাল নি‌জের বাবার সম্মান বাঁচা‌তে প্রিয়‌তির উপর থে‌কে কেস উঠা‌তে বাধ্য হ‌য়ে‌ছি‌লো রিদু। প্রিয়‌তির মা রিদুর বাবার না‌মে ধর্ষণ করার মামলা ক‌রতে গি‌য়ে‌ছি‌লেন। অবস্থা বেগ‌তিক দে‌খে র‌কিব রিদু‌কে ফোন ক‌রে। রিদু বিষয়টা জে‌নে র‌কিব‌কে বলল,
_" এখন কী করা যায়?
রকিব বলল,
_" আপাতত তুই প্রেমার উপর থে‌কে অভি‌যোগ তু‌লে নি‌য়ে একটা সম‌ঝোতায় চ‌লে যা। প‌রে কেসটা রিও‌পেন করে দিব আমি। কিন্তু বর্তমা‌নে ধর্ষন মামলা ভয়াবহ। খালু একবার ফেঁ‌সে গে‌লে বাঁচা মুস‌কিল হ‌বে। তুই বরং আগে প্রেমা‌র বিরু‌দ্ধে প্রমাণ জোগাড় কর। এবং খালু যে নি‌র্দোষ সেটা প্রমাণ কর। বা‌কি বিষয়টা আমি সাম‌লে নিব।

নিজ প‌রিবার আর বাবার সম্মান রক্ষা কর‌তে রিদু র‌কিবের কথামত কাজ ক‌রে। ‌জেল থে‌কে ছ‌াড়া পে‌য়ে প্রেমা হস‌পিটা‌লে আসে। রিদু তখন প্রিয়‌তিকে খাই‌য়ে দি‌চ্ছি‌লো। গত ক‌দি‌নে প্রিয়তি একটু সুস্থ বোধ কর‌ছি‌লো। প্রেমা কে‌বি‌নের ভিত‌রে গি‌য়ে বলল,
_" কি‌রে আপু কেমন আছিস?
‌প্রিয়তি কো‌নো কথা না ব‌লে মুখ ঘু‌রি‌য়ে ফেলল। তা দে‌খে প্রেমা রহস্যময় হা‌সি হে‌সে বলল,
_" বাহ্ চো‌রে উপর বাটপা‌রি। আমা‌কে দু‌দিন জেল খাটা‌লি। এখন জেল থে‌কে ফেরার পর জান‌তেও চাই‌লি না কেমন আছি আমি?
_" জেল খাঁ‌টি‌য়েছি মা‌নে?
_" কেনরে তুই জা‌নিস না বু‌ঝি তোর সোনা বরটি যে আমায় জে‌লে পু‌রে‌ছি‌লো। তো‌কে আর তোর বাচ্চা‌কে খুন করার জন্য। ওপস ভু‌লে গে‌ছিলাম তুই তো এটাও জা‌নিস না যে, তুই বেঁ‌চে গে‌লেও তোর বাচ্চাটা নেই আর। যা হোক শয়তা‌নের বংশধর পৃ‌থিবী‌তে এসে কি কর‌বে? তার চে‌য়ে বরং দু‌নিয়ায় আসার আগেই বিদায় নি‌য়ে‌ছে। 

‌প্রিয়তি প্রেমার কথা শু‌নে রিদুর দি‌কে তা‌কি‌য়ে বলল,
_" রিদু প্রেমা এসব কী বল‌ছে?
‌রিদু কী বল‌বে ভে‌বে পা‌চ্ছি‌লো না। এক রকম হরবর ক‌রে বলল,
_" ও মিথ্যা বল‌ছে প্রিয়‌তি। ওর কথা তু‌মি বিশ্বাস ক‌রছো?
‌প্রেমা তা‌চ্ছিল্য হে‌সে বলল,
_" আমার কথা বিশ্বাস না হ‌লে, ডাক্তার‌কে জি‌জ্ঞেস কর। এতটু‌কো তো নিজেরই বোঝার কথা। অশি‌ক্ষিত তো তুই নোস। এ কথা তোর অবশ্যই জানার কথা প্রেগ‌নে‌ন্সির শুরুর দি‌কে সামান্য স্লিপ কাটায়ও বাচ্চা নষ্ট হয়ে যায়, সেখা‌নে তোর এত বড় একটা ধাক্কা। তাছাড়া তোর মাথা ফে‌টে‌ছে প্রচুর রক্ত গে‌ছে, হাই পাওয়া‌রের পেইন‌কিলার, এন্টিবা‌য়ে‌াটিক দি‌তে হ‌য়ে‌ছে তো‌কে, আর এতে তোর বাচ্চা থাক‌বে ব‌লে ম‌নে হয় তো? যা হোক তোর নিম্নাঙ্গ থে‌কে তো ব্লাড লস হ‌চ্ছে তাই না? তারপরও বুঝ‌তে পার‌ছিস না? না‌কি না বোঝার ঢঙ কর‌ছিস? হ্যাঁ প্রেগ‌নেন্ট অবস্থায় কিছু মে‌য়ে‌দের মা‌সে মা‌সে বা দুই একবার ব্ল্যাড লস হয়, ত‌বে সেসব মে‌য়েদের ম‌ধ্যে তুই নেই। তোর তোরহর‌মোন জ‌নিত কো‌নো জ‌টিলতা ছি‌লো না। তাছাড়া শ‌ারি‌রীক দি‌ক থে‌কে তুই সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলি। এখন নি‌জের মাথা খা‌ঁটি‌য়ে ভাব বাচ্চাটা স‌ত্যি বেঁ‌চে আছে কিনা? দে তোর বু‌দ্ধির প‌রিচয়?

‌প্রিয়‌তি হতভম্ব হ‌য়ে প্রেমার দি‌কে তা‌কিয়ে ছি‌লো। চোখ দু‌টো একেবা‌রে স্থির হ‌য়ে ছি‌লো। ম‌নে হ‌চ্ছে কথা বলার শ‌ক্তি, চিন্তা ভাবনা করার শ‌ক্তি মুহূ‌র্তেই হা‌রি‌য়ে ফে‌লে‌ছে। 
‌রিদু প্রেমার দি‌কে রা‌গি চোখে তা‌কি‌য়ে রই‌লে, প্রেমা আবারও তা‌চ্ছিল্য হে‌সে বলল,
_" তোর বাচ্চা মরা নি‌য়ে আমার কো‌নো আফ‌সোস নেই। যেমন কর্ম তেমন ফল। তে‌ারা আমার সা‌থে যেমনটা ক‌রে‌ছিস তার ফল পা‌চ্ছিস। 
‌রিদু প্রেমার দি‌কে তা‌কি‌য়ে রা‌গে দাঁতে দাঁত চি‌বি‌য়ে বলল,
_" এত‌দিন জানতাম খারা‌পের কো‌নো শা‌রিরীক রূপ নেই, পু‌রোটাই মান‌সিক বিষয়। ত‌বে আজ ম‌নে হ‌চ্ছে খারা‌পের য‌দি রূপ থাকত ত‌বে তার চেহারা তোমার মত হ‌তো। একটা মানুষ এতটা খারাপ কী ক‌রে হয় প্রেমা?
‌প্রেমা হে‌সে বলল,
_" মিঃ হৃদয় আমার খারাপ হবার পিছ‌নের কারণটা আপনার থে‌কে বেটার কে জা‌নে?
কথাটা ব‌লে প্রেমা হালকা চোখ মারল রিদুকে। রিদু হতভম্ব হ‌য়ে তা‌কি‌য়ে রইল প্রেমার দি‌কে। আর এদি‌কে প্রিয়তি তীব্র কান্নায় ভে‌ঙে প‌ড়ে‌ছে। প্রেমা, প্রিয়‌তির কান্নার ফা‌কে রিদুর হা‌তে একটুক‌রো কাগজ ধ‌রি‌য়ে দি‌য়ে মৃদু হে‌সে চ‌লে যায়। রিদু কাগজ টুক‌রো প‌কে‌টে রে‌খে প্রিয়‌তি‌কে সামলা‌তে ব্যস্ত হ‌য়ে প‌রল। প্রিয়তি শব্দ ক‌রে কান্না কর‌তে থা‌কে। রিদু প্রিয়‌তি‌কে বু‌কে আগ‌লে রাখ‌লেও ওকে শান্তনা দেয়ার ভাষা পা‌চ্ছে না। একজন সন্তান হারা মা‌কে শান্তনা দেয়ার মত ভাষা বোধ হয় পৃ‌থিবীর কো‌নো গ্র‌ন্থে লেখা হয়‌নি। সন্তান হারা মা‌য়ের কষ্ট সেই মা ব্য‌তিত কেউ বুঝ‌বে না। 

ডাক্তার প্রিয়‌তির ঔষ‌ধের সা‌থে ঘু‌মের ঔষধ দেয়। ফ‌লে প্রিয়‌তি অল্প সম‌য়েই গভীর ঘু‌মে ত‌লি‌য়ে যায়। প্রিয়তি ঘু‌মি‌য়ে যাবার পর রিদু প্রেমার দেয়া চিরকুটটা বের ক‌রে পড়াতে নি‌লো। তা‌তে লেখা "হৃদয় আমার টা‌র্গেট কিন্তু তে‌ামার বাবা বা প্রিয়‌তি নয়, তু‌মি হৃদয়। তে‌ামা‌কে ক‌ষ্টে ক‌ষ্টে মে‌রে ফেলাই আমার উদ্দেশ্য।" আর তার জন্য যা কর‌তে হয় তা আমি করব।"

রিদু চিরকুটটা ছি‌ড়ে টুক‌রো টুক‌রো ক‌রে জানালা দি‌য়ে ফে‌লে দি‌লো। তারপর ম‌নে ম‌নে বলল,
_" আ‌মি জানতাম প্রেমা। আমি জানতাম। কু‌কু‌রের লেজ সোজা হ‌লেও তু‌মি ভা‌লো হ‌বে না। কয়লা‌কে সাবান, সোডা, শ্যাম্পু দি‌য়ে যতই ধৌত ক‌রো না কেন তার ময়লা যায় না। আর নিম পাতা যতই ঘিয়ে ভা‌জো তার তিক্ততা ছা‌ড়ে না। তুমি তেমনই প্রেমা তেম‌নিই। আগে যেমন ছি‌লে এখনও ঠিক তেমনই আছো। কি‌ঞ্চিৎ প‌রিবর্তন হয়‌নি তোমার মান‌সিকতার। কিন্তু‌ আমিও কাঁচা খিলা‌রী নই প্রেমা। তোমার জা‌লে তোমা‌কেই ফাঁসা‌বো ম‌নে রে‌খো।
‌রিদু প্রিয়তির কা‌ছে এসে ওর মাথায় হাত বু‌লি‌য়ে কপা‌লে চু‌মো খে‌লো। তারপর বলল,
_" ক্ষমা ক‌রো আমার জানটা। আমার কার‌ণে তোমা‌কে এত কষ্ট পে‌তে হ‌চ্ছে। আমি তো আমা‌দের সন্তান‌কে বাঁচা‌তে পারব না। ত‌বে আমি পারতে সা‌ধ্যে তোমা‌কে আর কষ্ট পে‌তে দিব না। আমার প্রিয়তি, খুব ভা‌লোবা‌সি তোমায়।

১৩!!

     সূর্য মামা ডুব দি‌য়েছে। রা‌তের আকা‌শে তারার মেলা ব‌সে‌ছে। মিট মিট তারার ভীড়ে প্রিয়তি খুঁজ‌ছে তার অনাগত সন্তান‌টি‌কে। প্রিয়‌তি জানালার পা‌শে ব‌সে আকাশ পা‌নে তা‌কি‌য়ে আছে। কেউ ব‌লে‌ছি‌লো, মানুষ ম‌রে গেলে তারা হয়, প্রিয়‌তি জা‌নে কথাটা ভি‌ত্তিহীন। তবুও নি‌জের অবুজ মন‌কে বোঝাবার বৃথা চেষ্টা। প্রিয়তি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। সন্তান হারা‌নোর দুই মাসের বে‌শি সময় হ‌য়ে গে‌লো। প্রিয়তি‌কে রিদু হস‌পিটা‌লে থে‌কে সোজা নি‌জের বা‌ড়ি‌তেই নি‌য়ে যায়। ওর বাবা মাও আপ‌ত্তি ক‌রে‌নি। প্রিয়‌তি নি‌জের বাবা মা, বো‌নের সা‌থে যোগা‌যোগ বি‌চ্ছিন্ন ক‌রে দি‌য়ে‌ছে। ওর বাবা মা, হস‌পিটা‌লে দেখা কর‌তে আস‌লে প্রিয়‌তি প‌রিষ্কার ব‌লে দি‌য়ে‌ছি‌লো, তারা যে‌নো তা‌দের ছোট মে‌য়ে‌কে নি‌য়েই থা‌কে। প্রিয়‌তি না‌মে তা‌দের কো‌নো মে‌য়ে নেই সেটা ভে‌বেই যে‌নো জীবন পার ক‌রে। তারপরও প্রিয়তির বাবা মা ওকে ক‌য়েকবার ফোন ক‌রে‌ছি‌লো, প্রিয়‌তি রাগ ক‌রে ফোনটা ভে‌ঙে ফে‌লে। যারা বাবা মা হ‌য়ে সন্তা‌নের কষ্ট বোঝে না তেমন বাবা মা‌য়ের কো‌নে প্র‌য়োজন প্রিয়‌তির নেই। তা‌দের সা‌থে সুস্থ হবারও পরও প্রিয়তি কেমন ঝি‌মি‌য়ে গে‌ছে। চারপা‌শের প‌রি‌বেশটা ওর কা‌ছে বিষময় লাগ‌ছে। দম বন্ধ বন্ধ লা‌গে সবসময়। কিন্তু নি‌জের এ অনুভূ‌তির কথা কাউ‌কে ব‌লেও না।

প্রিয়তি যখন আকাশ পা‌নে তা‌কি‌য়ে, রিদু তখন রুমে ঢু‌কে প্রিয়‌তিকে জ‌ড়ি‌য়ে ধ‌রে বলল,
_" আকাশ পা‌নে কা‌কে খুঁ‌জো?
_" আমার হৃদয়‌কে।
_" আমি তো তোমার কা‌ছেই।
_" তারার ভী‌ড়ে আমার সন্তা‌নের হৃদয়‌কে খুঁজি।
‌রিদুর মুখটা ম‌লিন হ‌য়ে গে‌লো। নি‌জে‌কে সাম‌লে প্রিয়‌তি‌কে আরও শক্ত ক‌রে জ‌ড়ি‌য়ে ধ‌রে বলল,
_" প্রিয়তি প্লিজ শক্ত হও।
_" চাই‌লেই কী সব পারা যায়?
_" ইচ্ছা থাক‌তে হয়। 
দীর্ঘশ্বাস ফে‌লে প্রিয়‌তি বলল,
_" সেটাই তো পার‌ছি না
_" কোথাও ঘুর‌তে যা‌বে। তে‌ামার জন্য হাওয়া বদল খুব জরু‌রি। 
_" কোথায় যা‌বে?
_" তু‌মি যেখা‌নে যে‌তে চাও।
_" নীল সমুদ্র‌ের গভীরতায়, নি‌জের কষ্ট বিসর্জন দি‌তে চাই। 
_" কুয়াকাটা না‌কি কক্সবাজার?
_" কুয়াকাটা।
_" আচ্ছা। ত‌বে শুক্রবার সকা‌ল ছয়টায় রওনা দিব কি ব‌লো?
_" তোমার ইচ্ছা।
_" ক‌য় দিন থাক‌তে চাও?
_" তু‌মি যে ক‌দিন ব‌লো।
_" এটা কেমন কথা? সব য‌দি আমার ইচ্ছামত হ‌বে তবে তোমার ইচ্ছা‌তে কী হ‌বে?
_" তোমার ইচ্ছাই আমার ইচ্ছা।

_" জি না। আমার ইচ্ছা কখ‌নো তোমা‌কে সে খু‌শি দি‌তে পার‌বে না, যতটা খু‌শি তোমার ইচ্ছা পূরন হ‌লে তু‌মি পা‌বে। প্র‌তিটা মানু‌ষের ইচ্ছা আলাদা, রু‌চি, পছন্দ আলাদা। আমি কা‌চ্চি ক‌ব্জি ডু‌বি‌য়ে খাই কিন্তু তু‌মি একদম পছন্দ ক‌রো না। ‌তোমা‌কে য‌দি আমি জোর ক‌রে কা‌চ্চি খে‌তে ব‌লি তখন তোমার কেমন লাগ‌বে? বিরক্ত লাগবে কিনা? তেম‌নি তু‌মি পাঁচ‌মিশালী সব‌জি খিচু‌রী পছন্দ ক‌রো, যা আমার অপছন্দ। প্র‌তিটা মানু‌ষের তার নিজ নিজ পছ‌ন্দের উপর খেয়াল রাখা জরু‌রি। হ্যাঁ কিছু কিছু ইচ্ছা পছন্দ যা সবসময় পূরন করা সম্ভব না তার কথা আলাদা। ত‌বে যেটা সা‌ধ্যে‌র ম‌ধ্যে যা পূরন‌যোগ্য তা কেন পূরণ করব না। প্র‌তি‌টি মানু‌ষের উচিত নিজের ছোট ছোট ইচ্ছ‌া, চাওয়া-পাওয়াকে সম্মান করা। কারণ ছোট ছোট খু‌শীগু‌লোই আমা‌দের সুন্দরভা‌বে বেঁ‌চে থাকার মুখ উপদান হিসা‌বে কাজ ক‌রে। বুঝ‌লে জান?

এবার হাসল প্রিয়‌তি। রিদু‌কে জ‌ড়ি‌য়ে ধ‌রে বলল,
_" বু‌ঝে‌ছি জান। শো‌নো কুয়াকাটা গি‌য়ে কম হ‌লেও সাত‌দিন থাকব। খুব ঘুরব, শ‌পিং করব, কাঁকড়া ভাজা খা‌বো কিন্তু। কিন্তু তু‌মি সাত‌দিন ছু‌টি পা‌বে তো? এম‌নি আমার অসুস্থতার কার‌ণে অনেক‌ দিন ছু‌টি নি‌য়ে‌ছি‌লে এখন আবার ছু‌টি পা‌বে?
_" সে আমি ম্যা‌নেজ ক‌রে নিব। হয়‌তো কষ্ট হ‌বে। বস ব্যাটা বকাব‌কি কর‌বে ত‌বে মে‌নে নি‌বে। 
_" দে‌খো ছু‌টি পে‌লে ব‌লো।
_" তু‌মি ব্যাগ গোছা‌তে শুরু ক‌রো।
_" বাবা মা, হৃ‌দিতা কি যা‌বে আমা‌দের সা‌থে?
_" জি না। আমরা হা‌নিমু‌নে যাব। বাবা মাকে নিব না। তাছাড়া তা‌দের বল‌লেও তারা যা‌বেন না। 
_" ওহ। 
_" আর হৃ‌দিতার পরীক্ষা চল‌ছে ভু‌লে গেলা?
_" ওহ হ্যাঁ।

‌রিদু প্রিয়‌তি‌কে জ‌ড়ি‌য়ে ধ‌রে কা‌নের কা‌ছে মুখ নি‌য়ে কা‌নে নাক ঘষতে ঘষতে বলল,
_" শরীর কেমন আজ?
‌প্রিয়‌তি কিছু একটা বুঝ‌তে পে‌রে বলল,
_" ভীষণ খারাপ। চ‌লো খাবার রু‌মে, ভাত খে‌তে চ‌লো। 
_" ভা‌লোবাসা খেকে চাওয়া, এতদিন যাবত অভুক্ত লোকটা‌কে তু‌মি বো‌রিং সব‌জি দি‌য়ে ভাত খে‌তে বল‌ছো?
_" জি বল‌ছি। ভা‌লোবাসা হোক বা ভাত দু‌টোই তো (ভা) আছে। ত‌বে একটা হ‌লেই হলো। এবার নি‌চে তোমা‌কে আলু বরব‌টির সব‌জি, আর ‌ঝি‌ঙে ভা‌জি দি‌য়ে ভাত খাওয়া‌বো।
_" একট‌ু মাছ, মাংস রাঁধ‌লে না আজ?
_" মাছ, মাংস আর আমিষ খে‌য়ে খে‌য়ে তো পেটটা‌কে ফ্যা‌মি‌লি সাইজ বানা‌চ্ছো। এ বয়‌সে ছে‌লেদের পেট এত বা‌ড়ে?
_" ইয়ে মানে তু‌মি তো জা‌নো আমি খে‌তে একটু ভা‌লোবা‌সি।
_" গা জ্বালা‌নো কথা বলবা না। পেট দেখ‌লে ম‌নে হয় পে‌টের ম‌ধ্যে ছয় মা‌সের বাচ্চা। আজ থে‌কে তোমার মাছ, মাংশ আর আমিষ খাওয়া বন্ধ, ফাস্টফুড তো তোমার জন্য হারাম ঘোষনা করলাম। রোজ রোজ সব‌জি খা‌বে। দুই বেলা সব‌জি রু‌টি, এক‌ বেলা ভাত, রোজ দুই বার শশা, গাজর খা‌বে।
_" ইয়াক।
‌প্রিয়‌তি রিদু‌কে ধমক দি‌য়ে বলল,
_" চুপ। চ‌লো খাবার রু‌মে।

‌প্রিয়‌তি রিদু‌কে টান‌তে টান‌তে খাবার রু‌মে নি‌য়ে গেলো। অপছন্দ স‌ত্ত্বেও রিদুকে ঝি‌ঙে ভা‌জি, বরব‌টি আর আলুর সব‌জি দি‌য়ে মাত্র দু‌টো রু‌টি খে‌তে দেয়া হ‌লো। ওর এখন মন চা‌চ্ছি‌লো জ‌মি‌য়ে মাংস কষা আর গরম ভাত খে‌তে। কিন্তু শুক‌নো রু‌টি আর সব‌জি ছাড়া কপা‌লে কিছু জুটল না।

—————

      খাবার পর রিদু আয়নার সাম‌নে দাঁ‌ড়ি‌য়ে ঘু‌রি‌য়ে ফি‌রি‌য়ে নি‌জে‌কে দেখ‌ছে বার বার। এবার শার্টটা খু‌লে আবার দেখল। নি‌জের পেটটা ভা‌লো ক‌রে দে‌খে নি‌জে নি‌জে বলল,
_" নাহ প্রিয়‌তি যতটা বল‌ছে ততটা কিন্তু পেটুক দেখা‌চ্ছে না। ছয় মা‌সের পেটের মত বুঝায় না। র্নিঘাত প্রিয়‌তির চো‌খের নাম্বার বাড়‌ছে। তাই আমা‌কে মটু দেখ‌ছে। একটু ভু‌রি বাড়‌ছে কিন্তু তা ব‌লে ছয় মাস? বড়‌জোড় পাঁচ মা‌সের মত লা‌গতে পা‌রে, তার বে‌শি না। যা হোক দে‌খি কমা‌তে পা‌রি কিনা! নয়ত সিক্স প্যাক স‌ত্যি স‌ত্যি ফ্যা‌মি‌লি প্যাক হ‌য়ে যা‌বে। ত‌বে রোজ রোজ সব‌জি খে‌য়ে কি থাকা যায়?

আড়াল থে‌কে এসব দে‌খে প্রিয়‌তি মুখ টি‌পে হাস‌ছে। চু‌পি চু‌পি এসে রিদুকে খা‌লি গায়ে জ‌ড়ি‌য়ে ধ‌রে বলল,
_" ফ্যা‌মি‌লি প্যাক কমা‌নোর জন্য জিমে যে‌তে পা‌রো। এখন আমা‌কে কো‌লে তু‌লে একটু ব্যয়াম ক‌রো তো। ম‌নে ক‌রো আমি একটা ডা‌ম্বেল।
হাসল রিদু। প্রিয়‌তি‌কে কো‌লে নি‌য়ে বলল,
_" বাহ্ এখন ৫৫ কে‌জি ওজ‌নের ডা‌ম্বেল ওঠাতে হ‌বে। 
_" এখন ৬০ কে‌জি।
_" কি ব‌লো? পাঁচ কে‌জি বাড়ল ক‌বে?
_" ঐ এক‌সি‌ডেন্ট হবার পর ডাক্তার কত কত ঔষধ দি‌লো। সেসব খাবার পর মু‌খের রু‌চি বে‌ড়ে গে‌ছে খুব। তাই হয়‌তো পাঁচ কে‌জি বে‌ড়ে গে‌ছে।
_" ওতে কো‌নো সমস্যা হ‌বে না।
_" তু‌মি জি‌মে ভ‌র্তি হ‌বে?
_" হু কুয়াকাটা থে‌কে ফি‌রেই ভ‌র্তি হ‌বো। আমার এক প‌রি‌চিত এর জিম আছে। সেখা‌নেই ভ‌র্তি হ‌বো।
_" মে‌য়েরাও কি সেখা‌নে ভ‌র্তি হ‌তে পার‌বে?
_" হ্যাঁ। ত‌বে ছে‌লে মে‌য়ে‌দের সময় আলাদা। আর মে‌য়ে‌দের জিম ইনস্ট্রাক্টরও একজন মে‌য়ে।
_" বাহ। তাহ‌লে আমিও যাব। ইদা‌নিং নি‌জে‌কে কেমন যে‌নো লাগ‌ছে। তলপেট হালকা বে‌ড়ে গে‌ছে। তাছাড়া নি‌জের কা‌ছে নি‌জে‌কে ভা‌লো লাগ‌ছে না। একটু ফিট হওয়া জরু‌রি।
_" আচ্ছা। ত‌বে কুয়াকাটা থে‌কে ফি‌রে দুজন একসা‌থে গি‌য়ে ভ‌র্তি হ‌য়ে আসব।
_" হুঁ।

বল‌তে বলতে প্রিয়‌তি হাই তুলল। রিদু প্রিয়‌তি‌কে ধ‌রে বিছানায় শুই‌য়ে বলল,
_" এখন ঘুমাও। 
_" দাঁড়াও হিসু ক‌রে আসি।
‌রিদু হে‌সে বলল,
_" বাচ্চাদের মত অভ্যাস তোমার। কোথাও যাওয়ার আগে, ঘুমাবার আ‌গে হিসু করা লাগ‌বেই তোমার। হা হা হা। যাও। ওহ ঔষধ খে‌য়ে‌ছো?
_" হ্যাঁ।

‌প্রিয়‌তি টয়লে‌টে গি‌য়ে রিদুর নাম ধ‌রে ডাকলো। রিদু ওয়াশরু‌মের দরজার পা‌শে গি‌য়ে বলল,
_" কী হ‌লো?
‌প্রিয়‌তি দরজা খু‌লে বলল,
_" সে‌লোয়া‌রের ফিতায় গিট্টু প‌ড়ে গে‌ছে। খুল‌তে পার‌ছি না। কাট‌তে হ‌বে মে‌বি।
‌রিদু শব্দ ক‌রে হাসল। ফিতরে গিট্টু দে‌খে বলল,
_" কাট‌তে হ‌বে না, আমি খুলে দি‌চ্ছি। রিদু হাত দি‌য়ে চেষ্টা ক‌রে ব্যর্থ হ‌য়ে দ‌াঁত দি‌য়ে খুলতে নি‌লে, রিদুর নাক, ঠোঁট‌ের স্পর্শ প্রিয়তির পে‌টে লাগ‌তেই প্রিয়‌তি কেঁ‌পে উঠে ব‌লে,
_" তোমার এভা‌বে খুল‌তে হ‌বে না। কে‌টে ফে‌লো।
‌রিদু দুষ্টু হে‌সে বলল,
_" হয়ে গে‌ছে মখম‌লী ম্যাডাম।
_" মা‌নে?
_" তোমার শরীর মখম‌লের মত, নরম, মোলা‌য়েম, ভেল‌ভেট কিনা তাই।
‌প্রিয়‌তি লজ্জা পে‌য়ে বলল,
_" যাও শু‌য়ে প‌ড়ো আর দুষ্টু‌মি কর‌তে হ‌বে না। আ‌মি আস‌ছি।

‌রিদু হাস‌তে হাস‌তে বিছানায় শু‌য়ে পড়ল। ম‌নে ম‌নে বলল,
_" যাক প্রিয়‌তি স্বাভা‌বিক হ‌চ্ছে ধী‌রে ধী‌রে। কিন্তু প্রেমার বিষয়টা প্রিয়‌তি‌কে বলা দ‌রকার। নয়ত প্রেমার থে‌কে জানলে প্রিয়‌তি কষ্ট পা‌বে। কুয়াকাটা থে‌কে ফি‌রে প্রিয়‌তি‌কে বু‌ঝি‌য়ে বলতে হ‌বে সবটা। আমা‌দের মা‌ঝে কো‌নো লুকোচু‌রি রাখা যা‌বে না।
‌প্রিয়‌তি ঔষধ খে‌য়ে বিছানায় শু‌তেই, রিদু আষ্টে পি‌ষ্টে জ‌ড়ি‌য়ে ধ‌রে বলল,
_" জান।
_" হুঁ। 
_" কখ‌নো য‌দি আমার বিষ‌য়ে এমন কোনো স‌ত্যি জা‌নতে পা‌নো, যা আমি পূ‌র্বে লু‌কি‌য়ে‌ছি ত‌বে তু‌মি কী কর‌বে?
_" আগে লুকা‌নোর কারণটা জানব। 
_" প্রথ‌মে অবিশ্বাস কর‌বে না তো?
_" নাহ। আগে কারণ জানব তার পর তোমার কথা শুন‌বো তারপর ভেবে চি‌ন্তে সিদ্ধান্ত নিব।
_" স‌ত্যি তো।
_" হ্যাঁ। ত‌বে হঠাৎ এ কথা কে‌নো?
‌রিদু কিছু একটা লু‌কি‌য়ে বলল,
_" নাহ এম‌নি।

১৪!!

     তি‌থি বিছানায় শু‌য়ে শু‌য়ে কার্টুন দেখ‌ছে আর হাস‌ছে। ডে‌া‌রেমন কার্টুন ওর সব‌চে‌য়ে পছ‌ন্দের। উবু হ‌য়ে শু‌য়ে পা দু‌টো নাচ্ছা‌চ্ছে। পর‌নের স্কার্ট অনেকটা হাঁটু পর্যন্ত প‌ড়ে আছে। দু‌ধে আলতা গা‌য়ের রঙ তি‌থির, মোলা‌য়েম শরীর। শরী‌রের গঠন মানু‌ষের, বি‌শেষ ক‌রে ছে‌লে‌দের মাথা ঘু‌রি‌য়ে দি‌তে পার‌বে কিছু সময়ের জন্য। তখন প্রিয়ম (প্রিয়তির বড় ভাই) হুট ক‌রে রু‌মে ঢু‌কে বলল,
_" তি‌থি চা বা‌নিয়ে আন তো। 
‌প্রিয়ম আর তি‌থি দুজনেই অপ্রস্তুত হ‌য়ে গে‌লো। প্রিয়ম এতক্ষণ তি‌থি‌কে ঠিকভা‌বে খেয়াল ক‌রে‌নি। এখন খেয়াল ক‌রে নি‌জেই লজ্জায় পড়ে গে‌লো। তি‌থি হরবর ক‌রে দাঁ‌ড়ি‌য়ে বলল,
_" প্রিয়ম ভাইয়া তু‌মি?
‌প্রিয়ম মাথা নিচু ক‌রে বলল,
_" কিছু কর‌ছিস তুই?
_" না। টি‌ভি দেখ‌ছিলাম।
_" আমি চা খা‌বো। মা বা চা‌চি‌কে কোথাও খুঁ‌জে পা‌চ্ছি না।
_" মা আর বড় চা‌চি তো একটু বাজা‌রে গে‌ছে। প্রেমা আপু ঘ‌রে আছে ম‌নে হয়।
_" প্রেমা‌কে বলে লাভ হ‌বে কি? ওর হাতের জঘন্য চা খাবার ‌চে‌য়ে বিষ ভা‌লো। তুই বা‌নি‌য়ে দি‌তে পার‌বি?
_" তু‌মি ব‌সো আমি নি‌য়ে আস‌ছি।

‌তি‌থি রুম থে‌কে বের হ‌য়ে যে‌তে প্রিয়ম দেয়া‌লে টানা‌নো তি‌থির ছোট‌বেলার ছ‌বির দি‌কে তা‌কি‌য়ে বলল,
_" সেই দি‌নের ছোট্ট পরীটা আজ কত্ত বড় হ‌য়ে গে‌ছে। কত কত বি‌য়ের প্রস্তাব আসে। ও কি জা‌নে আমি চাই ও সারা জীবন এ বা‌ড়ি‌তেই থাকুক। ত‌বে ওর থাকার রুমটা বদ‌লে আমার রুমটা হোক। ‌তি‌থি প্রিয়‌মের হোক। মে‌য়েটাকে সরাস‌রি বলা সম্ভব না। ভাব‌বে আমি ওর প্র‌তি কু নজর দি‌য়ে‌ছি। নজর তো দি‌য়ে‌ছি ত‌বে বদ মতল‌বে নয়, ভা‌লো উদ্দেশ্যে। আমার উদাসীন জীব‌নের রঙ তি‌থি।

‌তি‌থি চা নি‌য়ে এসে চা‌য়ের মগটা ‌প্রিয়‌মের হা‌তে দি‌য়ে বলল,
_" আর কিছু লাগ‌বে তোমার?
_" নাহ। তুই বোস তো। কথা হয় না ঠিকভা‌বে কত দিন। তা পড়ালেখা কেমন চল‌ছে?
_" ভা‌লো।
_" HSC ক‌বে?
_" এই তো মাস তিন বা‌কি আর।
_" ওহ। 
_" ঠিকভা‌বে পড়াশুনা ক‌রিস। তোর থে‌কে বেটার কিছু আশা কর‌ছি।
_" চেষ্টা করব তোমা‌দের আশা পূরন করার।

‌প্রিয়ম চা শেষ ক‌রে চ‌লে যে‌তে নি‌লে, তিথি বলল,
_" ভাইয়া কিছু কথা ছি‌লো।
‌প্রিয়ম বস‌লো আবার। তারপর বলল,
_" হ্যাঁ বল।
_" আমরা তো ক‌দিন যাবত আলাদা খা‌চ্ছি তা তো তু‌মি জা‌নো। 
_" হ্যাঁ। ক‌দিন আগে প‌রিবা‌রের সবাই কথা ব‌লেই তো সিদ্ধান্ত হ‌লো।
_" আমার HSC পরীক্ষা শেষ হ‌তে হ‌তে প্রায় পাঁচ মাস লাগবে। তারপর আমরা এ বা‌ড়ি থে‌কে চ‌লে যাব ভাড়া বা‌ড়ি‌তে। এ বা‌ড়িতে আমা‌দের অংশটা ভাড়া দি‌য়ে যাব। এখ‌নি যেতাম কিন্তু পড়ার ক্ষ‌তি হ‌বে তাই যাইনি।
_" আলাদা যখন খা‌চ্ছিস তখন, ভাড়া বা‌ড়ি‌তে যাবার কী দরকার?
_" ভাইয়া তু‌মি তো বা‌ড়ি থা‌কো না, তাই জা‌নো না, এ বা‌ড়ি‌তে মা‌কে কা‌জের লো‌কের চো‌খে দেখা হয়, আর আমা‌কে কা‌জের লো‌কের মে‌য়ে। তোমা‌দের মত টাকা পয়সা আমা‌দের নেই ত‌বে বংশ তে‌া এক তাই আত্মসম্মান বোধ কম নয়।
_" বুঝলাম। এখন আমা‌কে কী কর‌তে হ‌বে ?
_" মা ভাড়া বা‌ড়ি‌তে যে‌তে চা‌চ্ছেন না। তি‌নি চা‌চ্ছেন আমা‌কে এ‌কেবা‌রে বি‌য়ে দি‌য়ে শ্বশুর বা‌ড়ি পাঠা‌বেন। তার আমা‌কে নি‌য়ে একা থাক‌তে ভয় ক‌রে না‌কি।
_" স্বাভা‌বিক। তোর বয়সী মে‌য়ে‌দের নি‌য়ে বাবা মা‌য়ে‌দের চিন্তার অভাব নেই। তার ম‌ধ্যে তুই যা সুন্দর চিন্তা বে‌শি তো হ‌বেই।
_" আমি জা‌নি তা, কিন্তু আমি পড়‌তে চাই। মা অবশ্য এটাই চাই‌তেন যে আমি নি‌জের পা‌য়ে দাঁড়াই কিন্তু ক‌দিন আগে একটা বি‌য়ের প্রস্তাব এসে‌ছে ছে‌লের নাম রকিব। পু‌লিশ অফিসার। তারা মা‌কে ব‌লে‌ছেন আমি যতদূর পড়‌তে চাই পড়া‌বেন। ত‌বে বি‌য়েটা শীঘ্রই কর‌তে চান। কিন্তু আমি আপাতত বি‌য়ের জন্য প্রস্তুত নই। তু‌মি প্লিজ মা‌কে বোঝাও। মা তো ছে‌লের সম্প‌র্কে সব খোঁজ নি‌য়ে এ পা‌য়ে রা‌জি হ‌য়ে গে‌ছেন। তাছাড়া ছে‌লে হৃদয় ভাইয়ার খালা‌তো ভাই।
‌তি‌থির বি‌য়ের কথা শু‌নে প্রিয়‌মের মু্খটা চুপ‌সে গেলো। তি‌থি‌কে কিছুই বলতে পারল না। শুধু বলল,
_" আমি চা‌চির সা‌থে কথা বল‌ব।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন