বসন্তের ফুল - পর্ব ১৯ - তারিন জান্নাত - ধারাবাহিক গল্প


৩৭!!

আবছা আলোতে বসে আছে অভ্র। রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে। অসহ্য যন্ত্রণা অনুভব হচ্ছে বুকের মধ্যে। সব রাগ আরিয়ানের উপরে হচ্ছে। আরিয়ানকে ইচ্ছে মতো পিঠাতে পারলেই অভ্র শান্তি পেতো। কিন্তু এখন তা এখন সম্ভব না।তাই পিঠানোর বদলে অন্যভাবে শাস্তি দিবে আরিয়ানকে।
" প্রেমা আমার,ওর রন্ধ্রে রন্ধ্রে শুধু আমার অস্তিত্বের বিচরণ হবে।(অভ্র)
ঘন শ্বাস নিয়ে বসা থেকে উঠে অভ্র। টেবিলের পাশে থেকে একটা ছোট্ট প্যাকেট নিয়ে রুম থেকে বের হয়।এবং আরিয়ানের রুমে চলে যায়।
অভ্র তার কাজ সমাপ্ত করে ছাদের দিকে পা বাড়ায়।

-কাল আমাদের বিয়ে,নতুন জীবণ শুরু করতে যাচ্ছি আমরা। তুমি হ্যাপি তো?

-(হ্যাপি গোষ্ঠীরে কিলাই হালার-বেডা। হ্যােপি কি না এখন জিজ্ঞেস করতে আসছে,)
মনেমনে কথাটা বলে প্রেমা রাগে ফুঁসছে। তখন রুম থেকে বের হয়ে অভ্রের কাছে যাওয়ার জন্য পা বাড়াচ্ছিলো,ঠিক সেই মুহুর্তে আরিয়ান প্রেমার সামনে চলে আসে। এবং প্রেমার হাত ধরে টেনে ছাদে নিয়ে যায়।ভাগ্য খারাপ হওয়ায় দৃশ্যটা অভ্রের চোখে পড়ে।যেটা অভ্র সহ্য করছিতে পারেনা সেটাই হয়েছে আজ।

-কি হলো কিছু বলছো না কেন?(আরিয়ান)
প্রেমা দাঁত কটমট করে আরিয়ানের 
দিকে তাকিয়ে বছলে,
"-ভাবছি সত্যি বলবো নাকি মিথ্যে? (প্রেমা)
-মানে? সত্যি মিথ্যের কথা কেন আসছে?(আরিয়ান)
-" আপনি কোনটা শুনতে চান?(রেগে)
-" অবশ্যই সত্যিটা শুনতে চাই,
প্লিজ রাগ করো না(আরিয়ান)
-আমি সত্যিই হ্যাপি না,আপনাকে বিয়ে করার ইচ্ছেও নেই আমার।বাধ্য হয়ে করছি বুঝেছেন?(চেঁচিয়ে) 
প্রেমা কথাটা বলে ছাদ থেকে নেমে যাওয়ার জন্য দরজার কাছাকাছি চলে আসে। দরজা পার হতেই অভ্র প্রেমার হাত ধরে টেনে মুখ চেপে ধরে।এবং দরজার কোণায় গিয়ে নিজেদের আড়াল করে।
প্রেমার কথা শুনে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে চেয়ে থাকে।ভাবছে পিয়াস বলেছিলো প্রেমা মত দিয়েছে তাই বিয়ের কথা আগে বাড়িয়েছিলো।এখন প্রেমার কথা শুনে বেশ চিন্তায় পরে যায় আরিয়ান। এসব ভাবতে ভাবতে ছাদ থেকে প্রস্থান করে। 
এভাবে টেনে কেউ মুখ চেপে ধরায় প্রেমা বিষণ ভয় পেয়ে যায়।আতংকে সর্ব শরীর কাঁপুনি দিয়ে উঠে প্রেমার।কিন্তু পরিচিত ঘ্রাণ নাকে আসতেই প্রেমার চোখেমুখে হাসির ভাবভঙ্গি ফুটে উঠে।কিন্তু মুখ অভ্রের হাত দ্বারা আবদ্ধ হওয়ায় সেই হাসিটা আর প্রকাশ করা সম্ভব হয়ে উঠেনি।তাই চুপ মেরে থাকে।প্রেমা আলতো করে নিজের হাতটা অভ্রের হাতের উপর রাখে। তখনি অভ্র তার হাত আলগা করে প্রেমার মুখ থেকে হাত সরিয়ে ফেলতে নেয়।কিন্তু প্রেমা আটকায়।মুখের সাথে অভ্রের হাতটা চেপে ধরে আবারও। 
প্রেমা নিজের প্রেমময় অনুভুতিতে ডুবে যাচ্ছিলো।কিন্তু অভ্রের সেদিকে হুস নেই। সে অপেক্ষায় আছে আরিয়ান যাওয়ার। আরিয়ান যেতেই অভ্র প্রেমাকে ছেড়ে দূরে সরে আসে। একবার নিচের দিকে তাকিয়ে দেখে নেয়। কারোছ উপস্থিতি আছে কি না। নিচ থেকে চোখ সরিয়ে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে প্রেমার দিকে তাঁকায় অভ্র। 
নিজের গরম নিঃশ্বাসের উত্তাপে নিজেই পুড়ে যাচ্ছে।তাহলে প্রেমা কীভাবে সহ্য করবে।এটা ভেবে নিজেকে শান্ত করা চেষ্টা করে।তার ক্রোধের সাথে প্রেমাকেও অভ্যস্থ হতে হবে। নীরব নিস্তব্ধতা ভেঙে অভ্র দূর থেকেই প্রেমার উদ্দেশ্যে মৃদু শব্দে বলে উঠে,
-প্রেমা এটা লাস্টবার।এবারের মতো ছাড় দিলাম। 
-" আমি কী করেছি? (প্রেমাও মৃদু শব্দে জিজ্ঞেস করে)
-রুম থেকে বের হয়েছিলে কেন? কোনো প্রয়োজন ছিলো? আর থাকলেও আমি তো জেরিনকে পাঠিয়েছিলাম।তোমার প্রয়োজনটা জেরিনকে বলোনি কেন? বের হয়েছো কেন রুম থেকে? (অভ্র)
-ঘু...ঘুম আসছিলো না তাই তোমার কাছে যাচ্ছিলাম। (প্রেমার গাল ফুলিয়ে বলে)
প্রেমার কথা শুনে অভ্রের রাগ কমার  
বদলে আরো বাড়ে।
"- মানুষ ভুল বলে না,মেয়েদের বুদ্ধি হাঁটুর নিচে।নাহলে তুমি রুম থেকে বের হতেনা।আমি বলেছি তোমাকে আমার কাছে আসলে তোমার ঘুম হবে।(অভ্র)
মন দিয়ে অভ্রের কথা শুনে প্রেমার আঁখিজোড়া ভিজতে শুরু করে দেয়।একরাশ অভিমান এসে ঝেঁকে ধরে।প্রেমা এতোসব ভাবেনি।ভালো লাগছিলোনা ঘুম আসছিলো না বলেই রুমের বাহির হয়েছিলো।কিন্তু এজন্য অভ্র ওকে এভাবে বকবে ধারনাও ছিলোনা।
হাতের পিঠ দিয়ে চোখ মুছে ফেলে।অভ্রকে পাশ কেটে নেমে যেতে চাইলে অভ্র প্রেমার সামনে এসে দাঁড়ায়। এতোক্ষণের রাগ এখন উবে গেছে। আর যাই হোক প্রেমার অভিমান সে সহ্য করবেনা। 
"-চলে যাচ্ছো? (অভ্র)
- নিশ্চুপ থাকে প্রেমা। 
- ঠিক আছে যাও,আমি কাল সকালে চলে যাবো 
এখান থেকে। বিয়ে করে নিও। (অভ্র)
অভ্র কথাটা বলে মিটিমিটি হেসে পেঁছন ফিরে চলে যাওয়ার জন্য। তখনি শার্টে টান অনুভুব করে। নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে মৃদু হাসে অভ্র। ঘাঁড় বাঁকা করে পেঁছন ফিরে তাঁকায়।অভ্রের দৃষ্টিতে নিবদ্ধ হওয়ার আগেই প্রেমা সরে যায়।ঠোঁটে দু্ষ্ট হাসির রেখা। প্রেমার মজা করা দেখে অভ্র একটা শ্বাস ছাড়ে।প্রেমা যত দ্রুত রাগ হয় তত দ্রুত রাগ কমেও যায়। প্রেমার দিকে ফিরে অভ্র তার হাত প্রেমার চুলে চালান করে। নিভু স্বরে বলে,
-ইউটিউব থেকে ভিডিও দেখেছিলাম, হাত খোঁপা কীভাবে করে শিখে নিয়েছি। শুধু তোমার জন্য।
বলেই অভ্র প্রেমার অগোছালো চুলের গুচ্ছ ধরে খোঁপা করে দেয়। 

প্রেমার রুমে কাছাকাছি আসতেই অভ্র বলে উঠে,
- কালকের জন্য আইডিয়াটা কেমন? 
-সুপার-ডুপার। (প্রেমা)
হেসে দেয় অভ্র। প্রেমাকে রুমে যাওয়ার জন্য ইশারা করে।এবং নিজে রুমের দিকে পা অগ্রসর করে।

যেতে যেতে অভ্র মনেমনে বলে উঠে,
-সত্যিটাকে মিথ্যেভাবে দেখানো হবে। উফ্ ভাইয়া আমাকে বিশ্বাস করাটা কী খুব জরুরি ছিলো? 
কিন্তু আমি কি করতাম। "ইউ নোউ না?  হাউ মাচ আই ওয়েন্ট হার?"
________________

সকাল ছয়টা। সবাই আজ তাড়াতাড়ি বিছানা ছেড়েছে।বিয়ে বাড়ির হবে সকাল থেকেই হৈ-চৈ এ ভরপুর।নানা রকমের খাবারের সুভাস-গন্ধ। এতোদিনের তুলনায় আজ গরমরে রেশ বেশি।এই মুছে তো আবার এই ঘেমে যাচ্ছে সকলে। আজকের গগনে কালো মেঘে ছেঁয়ে আছে। যেনো বৃষ্টি পড়ে বন্যা বয়ে আনবে।কিন্তু গরমের কেমন এমন ভাবনা কারো মনে আসছেনা। জড়ো হাওয়াও বইছে না।
প্রেমা আর জেরিন বসে গল্প করছে।পাশে প্রিয়া আর আদ্র। দু'গালে হাত দিয়ে প্রিয়াকে দেখতে ব্যস্ত আদ্র। আর প্রিয়া বারবার প্রেমার পেঁছনে লুকাচ্ছে। হঠাৎ প্রিয়ার লুকানো দেখে অাদ্র রেগে চেঁচিয়ে উঠে,
"-এই শু্টকি আরেকবার লুকালে 'মামা উয়েফার' দিবো না। বলে দিলাম। (আদ্র)
আদ্রের চিৎকারে প্রেমা আর জেরিনের কান যেনো ফেটে যাওয়ার উপক্রম।হতবাক হয়ে প্রেমা আদ্রকে জিজ্ঞেস করে,' এভাবে চেঁচাচ্ছো কেন?"
এবার আদ্রও হকচকিয়ে যায়। আঁড়চোখে প্রিয়াকে দেখে নেয় একবার।এরপর বলে,
"বলছি আমার সাথে খেলার জন্য যেতে।প্রিয়া যাচ্ছে না।আমি কিন্তু রাগ করবো প্রিয়া।চলো,(আদ্র)
"প্রিয়ামণি আংকেলের সাথে গিয়ে খেলো।যাও,(প্রেমা)
"আমি যাবো কেন? আংকেলের গালপেন (গার্লফ্রেন্ড) আছে।তার সাথে গিয়ে খেলতে বলো।আমি যাবোনা প্রেমুফুফি। (প্রিয়া)
প্রেমা একবার প্রিয়ার দিকে একবার আদ্রের দিকে তাকায়।এবং বলে,
" দুজনে বের হও রুম থেকে। (প্রেমা)
প্রেমার ধমক শুনে আদ্র-প্রিয়া দুজনে পালিয়ে যায়।
ওদের কান্ডে প্রেমা-জেরিন দুজনে হেসে উঠে।
________

এগারোটা হওয়ার সাথে আরিয়ানের মা প্রেমা আর জেরিনকে পার্লারে যাওয়ার জন্য রেডি হতে বলে। 
নিচে হলরুমে আসতেই প্রেমার চোখ পাগলের মতো অভ্রকে খোঁজতে শুরু করে।যেনো সেখানেই শ্বাস আটকে অন্তিম ঘটবে প্রেমার।অবশেষে অশান্ত দৃষ্টিতে শীতলতার ছোঁয়া নামে।অভ্রের স্নিগ্ধময় চেহারা দেখে।সদ্য গোসল সেরেছে অভ্র। চোখমুখে এখনো বিন্দু বিন্দু জল জমে আছে। চুল থেকেও টপটপ পানি পড়ছে।
অভ্র মৃদু হেসে প্রেমার দিকে তাকিয়ে ফোন দেখায়। প্রথমে প্রেমা অভ্রের ইশারা বুঝেনি তাই আবারও ফোন দেখায়।প্রেমা দ্রুত নিজের ফোন আনলক করে।তখনি দেখে অভ্রের মেসেজ। দ্রুত মেসেজটা পড়তে শুরু করে,

"অতিরিক্ত সাজার দরজার নেই। ওদের বলে দিও তোমার মুখে জ্বালা করছে। এলার্জিক প্রবলেম।"(সাথে একটা নাকের ইমুজি দেয়)
নাকের ইমুজি দেওয়ার মানে উদ্ধার করতে অক্ষম প্রেমা।প্রশ্নাত্বক দৃষ্টিতে অভ্রের দিকে তাকায়।তখনি অভ্র নিজের আঙুল দ্বারা নাক স্পর্শ করে।এবং মুচকি হাসে।

তখনি আবার মেসেজ আসে।তাতে লেখা ছিলো "পরে বলবো।"
প্রেমা এবার হেসে মাথা নাড়ায়। এরপর সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে পার্লারের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
_______________________

ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের নিয়ে বিয়ে সারার কথা থাকলেও,আরিয়ান বিয়ের কথা শুনে অনেকে চলে আসে। মেহমানে গিজগিজ করছে।আরিয়ানের মা খুশী হবেন নাকি রাগ করবেন ভেবে পাচ্ছেনা। কারণ উনার ভয় হচ্ছে প্রেমা যদি কোন তুলকালাম বাঁধায় তাহলে সব শেষ।
মেহমানদের সমাগম দেখে প্রেমার কিঞ্চিৎ ভ্রু কুঁচকায়।তবে চুপচাপ সোফায় বসে থাকে। অভ্রের কথায় নরমাল একটা সাজ দিয়েছে।কিন্তু সেই অভ্রকেই দেখতে পাচ্ছেনা।ইতিমধ্যে প্রশংসার সমুদ্রের ভাসছে প্রেমা।সবাই বেশ খু্ঁটিয়ে দেখছে প্রেমাকে।যার ফলে প্রেমা এখন একঝাঁক বিরক্তি নিয়ে বসে আছে।

একটু বাদেই দুলার বেশে সিঁড়ি বেঁয়ে নেমে আসে আরিয়ান। তার পাশেই অভ্র।অভ্রকে দেখেই প্রেমার স্পন্দন কেঁপে উঠে। হৃদপিন্ডের দুরুদুরু শব্দে হারিয়ে যাচ্ছে প্রেমা। বহু কষ্টে নিজের দৃষ্টি সরায়। বধু বেসে বসে থাকা কোনো মেয়ে এভাবে যদি তাঁকায়।তাহলে লোকে গালমন্দ করবে।

আরিয়ান আসার পরেই কাজী সাহেব আসেন। আরিয়ান প্রেমার হাত ধরে স্টেজে নিয়ে যায়।তখন প্রেমা অভ্রের দিকে তাকিয়েছিলো একবারের জন্য। অভ্রের দৃষ্টি অন্যদিকে। যার অর্থ অভ্র এ দৃশ্য দেখতে চাই না।

কাজী সাহেব একবার প্রেমা এবং একবার আরিয়ানকে দেখে নেয়।এবং সাথে সাথে তীক্ষ্ণ স্বরে বলে উঠলেন,

-এই বিয়ে হবে না। (কাজী সাহেব)
মুহুর্তে লোক সমাগমের মধ্যকার সব কথাবার্তা মৌনতায় রুপ ধারন করে। নীরব-নিস্তব্দতায় ছেঁয়ে যায়।কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে সকলে তাঁকিয়ে থাকে কাজী সাহেবের দিকে।

৩৮!!

কাজী সাহের কথায় সকলে চুপ থাকলেও এবার তীব্র আলোচনায় মেতে উঠে।কেউ মেয়ের দোষ খোঁজছে আবার কেউ ছেলোর দোষ খোঁজছে।রীতিমতো কানাঘোঁসা শুরু হয়ে গিয়েছে। মানুষের এটা মহৎ গুন। কথার আগা-গোড়া উদ্ধার না করে বলবে সব নষ্টের মূল শেকড়। 
বিরক্তিতে মুখ কোঁচকায় অভ্র।যাইহোক এখন ওর লক্ষ্য বিয়ে ভাঙা।বিয়ে ভেঙেই সে ক্ষ্যান্ত হবে।আঁড়চোখে প্রেমাকে একবার দেখে নেয় অভ্র। প্রেমার চমকিত চোখজোড়া দেখেই বুঝতে পারছে প্রেমা কিছুই বুঝতে পারছেনা। কারণ প্রেমাকে কাল রাতে শান্তনা দোওয়ার জন্য যা বলেছে আর আজ যা হবে তার সাথে আকাশ-পাতাল দূরত্ব। অভ্র মুচকি হাসে। আরিয়ানের দিকে তাঁকায়। হাসি পাচ্ছে বিষণ অভ্রের। আজ তো সবার সামনে অস্বীকার ও করতে পারবেনা।
একবার আশেপাশে তাঁকায় অভ্র।আজকের বেশিরভাগ অতিথিকে অভ্রই আমন্ত্রণ জানিয়েছে।সবার অজান্তে।

টিস্যু দিয়ে মুখের ঘাম মুছে অভ্র ইনোসেন্ট রুপ ধারন করে।সবার মতো সেও এখন বিস্মিত চাহনি নিয়ে তাঁকিয়ে আছে কাজী সাহেবের দিকে।
আরিয়ানের বাবার কপালে ভাঁজ স্পষ্ট। উনি বড় একটা ধম নিয়ে কাজী সাহেবের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ে মারেন,
-বিয়ে হবে না মানে? আমি কিছু বুঝতে পারছি না আলামিন সাহেব?
কাজী সাহেব আরিয়ানের থেকে দৃষ্টি সরিয়ে আরিয়ানের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন। কলম পকেটে রেখে রুমার দিয়ে মুখ মুছেন। আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে উঠেন,
-এ ছেলে বিবাহিত।  (কাজী সাহেব)
হঠাৎ কাজী সাহেবের কথা শুনে আরিয়ান সহ উপস্থিত সকল মেহমান আরেকধপা ঝাঁটকা খায়।যা শুনেছে তা তাদের ভাবান্তরেও ছিলোনা। প্রেমারও বড়সড় একটা ধাক্কা খায়। অভ্রের দিকে তাঁকানোর প্রবল চেষ্টা বারবার বিফলে যাচ্ছে।করন কেউ না কেউ সামনে চলে আসছে।তাই বাবা-ভাইয়ের দিকে দৃষ্টি নিক্ষিপ্ত রাখে। তাদের চোখেমুখে রাগ স্পষ্ট। তা দেখে প্রেমা আলতো হাসে।আজ যাইহোক বিয়ে ভাঙানোটা বেশ জরুরি। এবার প্রেমার কষ্টের বদলে আনন্দ হচ্ছে।হয়তো পরবর্তী সময়ে অভ্র এবং তার পথ পরিষ্কার হবে তাই।

ঠোঁটের কোণায় হাসির রেখা নিয়ে অভ্র একবার তাঁর বাবার দিকে তাঁকায়।এই সেই ব্যক্তি যার দ্বারা অভ্র এতোটা পথ নির্ভয়ে চলে এসেছে।সব বাঁধা-বিপত্তিতে এই একমাত্র ব্যক্তি অভ্রের জন্য ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলো। অভ্রের কৃতজ্ঞতার দৃষ্টি দেখে আশরাফ কবির চোখ গরম করে তাঁকান।যা দেখে অভ্র হেসে দেয়। বড় একটা নিশ্বাস নিয়ে সামনে দিকে তাঁকায়।

-আরে কীসব বলছেন? আমার ছেলে অবিবাহিত। আজকেই ওর বিয়ে হওয়ার কথা যেখানে আপনি বলছেন আমার ছেলে বিবাহিত। (অারিয়ানের মা)
-"আমি সত্যিই বলছি।আমি নিজেই আপনার ছেলের বিয়ে পড়িয়েছি। (কাজী সাহেব)
-আপনি মিথ্যে বলছেন কেন?আমি তো আপনাকে চিনি না। আজকে প্রথম দেখলাম। (আরিয়ান)
-"আমি মিথ্যে বলবো কোন দুঃখে। গত পরশু রাতেই তো তোমাদের বিয়ে পড়িয়েছি।আর তোমার স্ত্রী সে কোথায়? (কাজী সাহেব)

-আমি এখানে, 

অপরিচিত মেয়েলি কন্ঠের স্বর শুনে সবাই বিস্ফোরিত দৃষ্টি নিয়ে মেয়েটির দিকে তাঁকায়। সবার ফিসফিস কথার শব্দে আরিয়ানের মায়ের রাগ উঠে যায়।কিন্তু দরজার দিকে তাকিয়ে উনার দৃষ্টিতেও বিস্ময়ে ছেঁয়ে যায়।

আরিয়ান নিজও হতবাক।মেয়েটিকে কখনো দেখেছে কী না সন্দিহান সে। নিজেকে পাগল পাগল মনে হচ্ছিলো তার। অসহায় দৃষ্টিতে অভ্রের দিকে তাঁকায়।তখন অভ্রও নিজের অসহায় এবং চিন্তিত দৃষ্টি ফিরিয়ে দেয় আরিয়ানকে। দুঃখে চোখে পানি চলে আসছে তার। কী হবে পরে ভেবে পাচ্ছেনা।

লাল রঙের জামদানি শাড়ি।এবং গায়ে গহনা ভর্তি।হাতে লাগেজ এগিয়ে নিয়ে আসে।মেয়েটি এগিয়ে এসে আরিয়ানের মায়ের সামনে দাঁড়ায়। উনার হঠাৎ রাগ কমতে শুরু করে। শীতল চাহনিতে তাঁকায়। মেয়েটা তড়িৎ গতিতে আরিয়ানের মা-বাবার পা ছুঁয়ে সালাম করে। 

কাজী সাহেব দ্রুত স্টেজ থেকে নেমে বলে উঠলেন,
-এই সেই মেয়ে,এই মেয়ের সাথে আরিয়ান! আপনাদের ছেলের নিয়ে করিয়েছিলাম। আমার কাছে প্রমাণ আছে। কেমন ছেলে আপনাদের? প্রথমে বিয়ে করে গোপন রেখে এখন আবার বিয়ের পিরিতে বসে গেছে।ছিঃ ছিঃ। 

কাজী সাহেবের কথায় আরিয়ানের মা-বাবা অপমানিত হয়ে আরিয়ানের দিকে তাঁকায়।যেনো এই দৃষ্টিতেই খতম করে দিবে আরিয়ানকে।
অপমানিত স্বরে আরিয়ানের বাবা বললেন,
-দুঃখীত আলামিন সাহেব। আমাদের ভুল ছিলো, ছেলেকে চোখে চোখে রাখার প্রয়োজন ছিলো। ছেলে এতো খারাপ হয়ে যাবে বুঝতে পারিনি। 
.তখনি আরিয়ান এসে বলে উঠে,
-বাবা এসব, মিথ্যে। আংকেল আপনি প্রমাণ দেখা..
আরিয়ানের মুখ দিয়ে আর কিছু উচ্চারিত হওয়ার পূর্বেই খুব জোরে একটা থাপ্পর দেয় আরিয়ানের বাবা।

সাথে সাথে অভ্রের পশম দাঁড়িয়ে যায় শরীরে।অতীতের একটা স্মৃতি চোখের সামনে ভেসে উঠে। সেইদিনের কালো মুহুর্তটাকে আবার সামনে তুলেছে অভ্র।সুধ নিয়েছে আজ। বিয়ে ভাঙা একটা মাধ্যম মাত্র।অভ্র বিড়বিড় করে বলে উঠে,
-"অপমানের বদলে অপমান।"

অভ্র তাঁর বাবার দিকে তাঁকায়। উনার চোখেও অদ্ভুদ তৃপ্তিদায়ক আনন্দ দেখতে পাচ্ছে অভ্র। বড়ই বৈচিত্র্যময় জীবণটা।যারা নিজের আপন তাদের কোনো খোঁজও নেই।আর যারা পর তাদের বুকেই ঠায় হয়েছে আপন-জনদের সমতূল্য হয়ে।

-বাবা আমি সত্যিই বলছি,আমি এই মে..(আরিয়ান)
আরিয়ানের মা এসে একটা থাপ্পর দেয়। 
-চুপ একদম। তোর মতো ছেলেকে পেটে ধরেছি।ঘৃনা হচ্ছে আমার। বিয়ের করেছিস আমাদের বললেই হতো। আমি কী না করতাম।শুধু শুধু কেন এতো মানুষের সামনে আমাদের অপমান করলি। (আরিয়ানের মা)

-মা,প্লিজ শান্ত হোন।আমি আর আরিয়ান রিলেশনে ছিলাম।মাঝখানে আমাদের মধ্যে রাগারাগি হওয়াই আরিয়ান এই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয়।তাও রাগের মাথায়। যখন সব ঠিকঠাক হয় তখন আমরা বিয়ে কর ফেলি। আর উনি আপনাদের জানাতে ভয় পাচ্ছিলেন।থ্যাংকস আল্লাহ্,আমি সঠিক সময়ে উপস্থিত হয়েছি।
(কথাটা বাঁকা চোখে অভ্রের দিকে তাঁকায়)

-এই মেয়ে তুমি মিথ্যে বলছো কেন? 
কী প্রমাণ আছে তোমার?(আরিয়ান)
-বাবু! কী বলছো এসব কাল রাতেই তো মেসেজ দিয়েছিলে তুমি। (মেয়েটি)
-মানে, আমি.. (আরিয়ান)

তখনি প্রেমা এসে বলে উঠে,
-চুপ করুন। এভাবে আমাদের অপমান করেও শান্তি হচ্ছেনা।মিথ্যের উপর মিথ্যে বলছেন? 
আন্টি আংকেল আমি চাই আপুর সাথে আরিয়ান স্যারের বিয়েটা যেনো আবারও হয়।আমি চাইনা আমার জন্য কোনো মেয়ের জীবণ নষ্ট হোক।(প্রেমা)
-আমার খুব খারাপ লাগছে মা।তোমাকে আমি আমার ছেলের জন্য পছন্দ করেছিলাম।আমার ছেলে তোমার যোগ্যই না।(আরিয়ানের মা চোখ গরম করে আরিয়ানের দিকে তাঁকায়)

এতোক্ষণ আরিয়ানের ফুঁফি (সাইকানের মা) নীরব দর্শক হয়ে তাঁকিয়েছিলাম।উনার মস্তিষ্ক জানান দিচ্ছেন যে এখানে কোনো জামেলা রয়েছে।আরিয়ানকে উনি হাড়ে হাড়ে চিনেন। অভ্রের চেয়েও আরিয়ানের প্রতি উনার ভালোবাসা বেশি।যতোই হোক আপনের প্রতি টানটা বেশিই থাকে।উনি দাঁত খিঁচে বলে উঠলেন,
-এই মেয়ে তোমার কাছে কী প্রমাণ আছে তোমাদের বিয়ে হয়েছে।দেখাও?  কোন মুখে এতো কথা বলো। আর তোমার পরিচয়টা ও তো দিলেনা।কার না কার মেয়ে? বড়লোক বাড়ি দেখে হামলিয়ে পড়েছো তাইনা?

সাইকানের মায়ের কথা শুনে অভ্র রেগে যায়। রাগে মাথা পেটে যাচ্ছে।নেহাৎ হাত-পা বাঁধা।নাহলে এই ফুফি নামক মহিলাকে নালাতে ডুবাতো।

-প্রমাণ অবশ্যই আছে ফুফি-শাশুড়ি। (মেয়েটি)
সাইকানের মায়ের চোখ বড়বড় হয়ে যায়।ফুফি-শাশুড়ি ডাক শুনে।

-আমি অরিদ্রি আহমেদ অরি। অনিক আহমেদের মেয়ে।পলিটিশন অনিক আহমেদ।চেনেন তো আপনারা?(অরি)
(অভ্রের দিকে তাঁকাতেই অভ্র চোখের পলক ফেলে ইশারা করে)

আরিয়ানের বাবা নাম শুনতেই চমকে যান।অনিক আহমেদকে উনি ভালো মতন চিনেন।ভালো করে অরির দিকে তাঁকান।মনেমনে কিছু একটা ভেবে নেন।
-হ্যাঁ হ্যাঁ চিনি তো।তুমি তাহলে অনিক সাহেবের মেয়ে।
-জ্বি! (হালকা হেসে)
-আমি কিন্তু এখনো প্রেমাণ পাইনি। (সাইকানের মা)

অরির চোখমুখে তীক্ষ্ণতা নেমে আসে। এদের সবকটাকে দেখে নিবে।আগে নিজের কাজটা হোক। 
ফোন বের করে কাউকে ফোন দেয়। 
-হ্যাঁ সাদ। ভেতরে আয়।(অরি)

তখনি আরিয়ানের বয়সী একটা ছেলে বাড়িতে আসেন।হাতে একটা ফাইল। ফাইলটা অরি নিয়ে আরিয়ানের মায়ের হাতে দেয়। আরিয়ানের মা ফাইল খুলেই দেখেন গত পরশু বুধবারে বিয়ে হয়েছে। কিন্তু বিকাল থেকে সে তো শপিং এ ছিলো।ফিরেছিলো সেই রাত বারোটায়।তাহলে বিয়ে হলো কখন?
হঠাৎ মনে পড়ে শপিং এর পর আর উনার সাথে আরিয়ান বাড়ি ফিরেনি।কাজের বাহানায় চলে গিয়েছিলো।তাহলে??
এবার আরিয়ানের মায়ের সামনে সব পানির মতে পরিষ্কার।ছেলে তাঁর ঠকিয়েছে।তবে অরির পরিচয় জানার পর উনার আর কোন আপত্তি নেই বিয়ের জন্য।তবে প্রেমাদের কী জবাব দিবে ভেবে পাচ্ছেনা।

আরিয়ানের মা প্রেমার মা-বাবার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।
-আমাদের ক্ষমা করবেন।এসব ঘটনার জন্য আমরা বিষণ দুঃখীত এবং লজ্জিত। (আরিয়ান মা)
প্রেমার বাবা সহস্র রাগ এবং ক্রোধ নিয়ে পিয়াসের দিকে তাঁকিয়ে 'হুম' বলেন।এ নিয়ে চারবার প্রেমার বিয়ে ভেঙেছে।গ্রামে এখন মুখ কীভাবে দেখাবেন ভেবে পাচ্ছেন না। পিয়াসের জোরাজোরি তে উনি রাজি হয়েছিলেন।এটা সর্বশেষ সুযোগ ছিলো।পিয়াস মাথা নিচু কয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।

হঠাৎ সবার মাঝখান থেকে প্রেমার দৌড়ে বাড়ির বাইরে চলে যায়।উপস্থিত উভয়ে প্রথমে হকচকিয়ে যায়। অনেকে আফসোস বানী ছুড়ে মারছেন।আবার কেউ ফিসফিসিয়ে নানা রকমের কথা বলছেন। প্রেমার মা-বাবা ভয় পেয়ে যায়।প্রেমা যদি এবারের বিয়ে ভাঙাটা মেনে নিতে না পেরে যদি কোনো অঘটন ঘটাতে চাই। অভ্র মিটিমিটি হেসে পিয়াসের পাশে এসে দাঁড়ায়।এবং বাহু দিয়ে হালকা ধাক্কা দিয়ে বলে উঠে,
-বলেছিলাম না এ বিয়ে আমি হতে দিবোনা।(মৃদু কন্ঠে কথাটা বলে অভ্র প্রেমার মা-বাবার সামনে গিয়ে দাঁড়ায় এবং বলে,

-আপনারা ভয় পাবেন না।আমি দেখছি প্রেমাকে।আপনারা টেনশন করবেন না।আমি প্রেমাকে সেইফলি বাড়ি পৌঁছে দিবো।(অভ্র)
অভ্রের কথায় প্রেমার বাবা আশ্বাস ফিরের পান।চোখমুখে বিষন্নতা, উত্তেজিত কন্ঠে বলে উঠেন,
-যাও বাবা দয়া করে আমার মেয়েটাকে ফিরিয়ে আনো। ওর মনটা এবার বিষণ ভেঙে গিয়েছে।নিজেকে সামলাতে পারবে না হয়তো।(প্রেমার বাবা)

-বড় মা তোমরা ভাইয়া আর ভাবির বিয়ের ব্যবস্থা করো।আমি আসছি। (অভ্র)

কথাটা বলে অভ্রও দৌড়ে বাড়ি বাহিরে চলে আসে।এবং বাইকে চেপে রওনা দেয় প্রেমার পেঁছনে। প্রেমা দৌড়াচ্ছে আপনমনে।খুশীতে সে আত্মহারা।আজ বিয়ে ভাঙার জন্য এতো আনন্দ হচ্ছে যে নিজেকে সামলাতে পারছেনা।তখনি অভ্র পেঁছন থেকে বলে উঠে,
- হেই প্রেমা, উঠে এসো। শুটিং শেষ। যতেষ্ট এক্টিং করেছো। (অভ্র)
অভ্র বাইক থামাতেই প্রেমা বাইকে উঠে অভ্রকে জড়িয়ে ধরে বসে।এবং হাসছে। এবার হাসির গতি প্রকড়।আমোদিত কন্ঠে প্রেমার বলে উঠে,
-ইউ আর দ্যা অসাম পার্সন" (প্রেমা)
প্রেমার কথায় অভ্র হেসো বাইক চালানোতে মন দেয়।

সকাল থেকে আকাশ অন্ধকারে ছেঁয়ে ছিলো।এখনো সেই সমেত অবস্থা। চারপাশে বাতাস বইছে।প্রাণোচ্ছল 
হিমশীতল হাওয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে দুজনে। প্রাণবন্ত নদীর খেলা দেখতে মত্ত প্রেমা আর অভ্র।কালো গগনের দিকে একবার চোখ দেয় অভ্র। পাশে বসা সেই রুপময়ীর দিকে আরেকবার তাকায়। হঠাৎ মেঘেদের গর্জন শুরু হয়ে যায়।প্রেমা চমকে গগনের দিকে তাঁকায়। কিঞ্চিৎ ভয় এসে হানা দেয় মনে।তাই অভ্রের আরো কাছে এসে বসে।এবং অভ্রের হাতের ভাঁজে হাত গুঁজে দেয়।সাথে সাথে বাতাসের গতি আরো দ্বিগুন বেড়ে যায়।আশে পাশে তাকিয়ে অভ্র বলে উঠে,
-আজ ঝড় হবে,খুব বেশিই হবে।(অভ্র)
প্রেমা অভ্রের কথা শুনে অভ্রের দিকেই তাঁকিয়ে থাকে।অভ্র যখন লাল ঠোঁটজোড়া নেড়ে কথা বলে প্রেমার তখন ইচ্ছে করে দুনিয়ার সব খেয়াল সাইডে রেখে শুধু অভ্রের কথা বলা দেখতে।মাঝে মাঝে মাথায় দুষ্টুমিও চাপে। অভ্রের দৃ্ষ্টি তাঁর হাতের দিকে নিবদ্ধ ছিলো।প্রেমার দিকে তাঁকায়নি।নাহলে বুঝে ফেলতো প্রেমা ওকে নিয়ে কী কী ভাবে।
চোখ সরিয়ে প্রেমার দিকে তাঁকালেই প্রেমা দ্রুত অন্যদিকে তাঁকায়।অভ্র হাসে। এরপর চুলের কাটা খুলে নিয়ে নদীতে ছুড়ে মারে। প্রেমা সাথে সাথে অভ্রের দিকে তাঁকায়।
-কাটা ফেললে কেন? (প্রেমা)
-খোলা চুলেও তোমাকে ভালোলাগে।
কথার মাঝেই ঠান্ডা পানির স্পর্শ পায় তারা।মাথা তুলে তাঁকায়। গগনের বুক ছিড়ে নেমে আসছে অঝোর বৃষ্টির ধারা। মুখের সংস্পর্সে আসতেই অভ্র প্রেমার হাত ধরে টেনে দাড় করায়। হাতের চুরি,গলার হার,টিকলি সব খোলে নেয় অভ্র। প্রেমার শরীরে শুধু শাড়ি রয়েছে।
-এরপর কী?(প্রেমা মজা করে জিজ্ঞেস করে)
অভ্র প্রেমার কথার উত্তর না দিয়ে প্রেমার হাত ধরে দৌড়াতে শুরু করে।
-আজ আনন্দ ভ্রমণ করবো।
-কীভাবে??
-গেলে দেখতে পাবে।
নিদারুন মন নিয়ে ছুটে ছলেছে "প্রেমাভ্র"।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন