উপল নূড়ি - পর্ব ০৩ - সুলতানা পারভীন - ধারাবাহিক গল্প


০৫!!

তানিশা পা টিপে টিপে শ্বশুরের রুমের সামনে এসে লম্বা একটা নিঃশ্বাস নিলো। একটু সাহস করে দরজায় নক করলো। ভেতর থেকে কোন শব্দ হলো না দেখে তানিশা সাহস করে আরেকবার নক করলো।

-বাবা? ডিনার করবেন না? 

----------------------

-বাবা? খেতে আসবেন না?

এবারও কোন জবাব এলো না দেখে তানিশা সাহস করে দরজাটার নব ঘুরিয়ে দরজাটা একটু ফাঁক করে রুমের ভেতরে উঁকি দিলো। আর ভেতরে তাকিয়েই তানিশার বুকের ভিতরে ধ্বক করে উঠলো। জীবনের বাবা খাটে হেলান দিয়ে বসেছিলেন। মাথাটা ডান দিকে এমনভাবে কাত হয়ে পড়ে আছে দেখেই তানিশার ভয় করছে। কি হয়েছে দেখতে ছুটে রুমে ঢুকলো। শ্বশুরের পাশে এসে তানিশা শক্ত হাতে ধরে উনাকে ঠিক করে বসিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলো। উনাকে বসিয়ে দেয়ার সময়ই তানিশা টের পেল মানুষটার ভয়ংকর জ্বর। এতো জ্বর যে মনে হচ্ছে গা পুড়ে যাচ্ছে।  তার উপরে জ্ঞান নেই উনার। ভয়ে তানিশার হাত পা কাঁপা শুরু হয়ে গেছে যেন। গলা দিয়েও কোন শব্দ বের হচ্ছে না। তবু মাথা ঠান্ডা রেখে শ্বশুরকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে ডাইনিং রুমে ছুটলো তানিশা। সেখানেই শাশুড়ি বসে আছে। তানিশা পড়িমরি করে ছুটছে দেখে শাশুড়ি তানিশার কাছে এগিয়ে গেলেন।

-কি হয়েছে বউমা? তোমার শ্বশুর কই? নাকি আবার ধমক দিয়ে খাবে না বলে পাঠিয়ে দিয়েছে?

-না মা--। বাবা---। বাবা-!!

-কি হয়েছে?

-মা বাবার ভিষণ জ্বর--। কথাও বলছে না। চোখও খুলছে না---।

-সে কি? কি বলছ এসব বউমা??

-মা আপনি বাবার কাছে যান। আমি আসছি---।

-কিন্তু এখন এতো রাতে কি করবো বউমা? জীবনটাও বাড়িতে নেই---।

-মা আপনি চিন্তা করবেন না। আমি দেখছি---। আপনি বাবার কাছে যান--।

জীবনের মা খাবারগুলো ঢেকে রেখে রুমের দিকে গেলেন। তানিশাও একটা গামলায় করে পানি আর একটা রুমাল নিয়ে রুমে এসে শ্বশুরের কপালে জলপট্টি দিয়ে দিলো। সাথে সাথে ডাক্তারকেও কল করে আসতে বললো। আধ ঘন্টার মতো পর ডাক্তার এলো। ডাক্তার এসে চেকআপ করে ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে দিলো। 

-দেখুন উনার ভাইরাল ফিভার হয়েছে। তাই জ্বর অনেক বেশি। আমি কিছু ওষুধ লিখে দিচ্ছি। উনার জ্ঞান ফিরলে কিছু খাইয়ে ওষুধগুলো খাইয়ে দিবেন। 

-এখন রাতে খাওয়াতে হবে ওষুধ?

-না না। আমি ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে দিয়েছি। আশা করি সকালের আগে ঘুম ভাঙবে না৷ ততক্ষণ জলপট্টি চালিয়ে যান। কোন সমস্যা হলে আমাকে কল করবেন---।

-ইয়েস ডক্টর---।

-আমি সকালে একবার এসে চেক করে যাবো--।

-ওকে----।

ডাক্তার চলে যাওয়ার পর তানিশা শ্বশুরের মাথায় জলপট্টি দিতে লাগলো। 

-মা--। আপনি খেয়ে নিন। আমি বাবার কাছে আছি--। 

-তুইও খেয়ে নিবি চল?

-না মা। কেউ একজন তো থাকতে হবে৷ আপনি খেয়ে আসুন। নইলে আপনার শরীর খারাপ করবে। যান না মা এখন।

-হুম। জীবনকে কল করেছিলি? ও কখন আসবে?

-মা ওর কাল সকালে একটা ইম্পর্ট্যান্ট মিটিং আছে। সেটা শেষ করে আসবে। তাই আর কিছু বলি নি--।

-আচ্ছা। 

-যান মা। আপনি খেয়ে নিন--।

তানিশার শাশুড়ি কোন মতে খেয়ে এসে তানিশাকে খেতে যেতে বললেন। তানিশা না খেয়েই শ্বশুরের মাথায় জলপট্টি দিতে লাগলো। সারারাত তানিশা জেগে বসে শ্বশুরের মাথায় জলপট্টি দিলো। 

সকালে ঘুম ভাঙতেই তানিশা দেখলো শাশুড়ি একসাথে হেলান দিয়ে বসেই ঘুমিয়ে আছে। তানিশা উঠে শ্বশুরের মাথায় হাত দিয়ে দেখলো জ্বর এখনো অনেকটাই বেশি। তানিশা শ্বাশুড়িকে ডেকে দিয়ে নিজে ফ্রেশ হয়ে এসে রান্নাঘরে গেল স্যুপ বানাতে। স্যুপটা ঠান্ডা হওয়ার জন্য রেখে আবার রুমে এলো তানিশা। তানিশা রুমে এলে শাশুড়িও হাত মুখ ধুয়ে আসলো। 

তানিশা স্যুপটা নিয়ে এসে রুমে এলো। রাতে ড্রাইভারকে দিয়েই ওষুধ আনিয়ে রেখেছে তানিশা। এখন রুমে এসে শ্বশুরের ঘুম ভাঙার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো। এমন সময় মোবাইলটা বেজে উঠলো। তানিশা মোবাইল হাতে নিয়ে দেখলো বসের কল। একবার ঢোক গিলে কলটা রিসিভ করলো তানিশা। 

-গুড মর্নিং স্যার।

-তানিশা। আজকে হাফ এন আওয়ার আগে এসে কাজটা কমপ্লিট করবে। মনে থাকে যেন। আজকের মধ্যে কাজটা শেষ না হলে কিন্তু------।

-স্যার--। সরি স্যার। আজকে আমি আসতে পারব না---।

-কেন?

-স্যার, গতকাল রাত থেকে বাবা ভিষণ অসুস্থ--। প্রচন্ড জ্বর--।

-বাবা! তোমার শ্বশুর?

-জি-জি স্যার----।

-তোমরা মেয়েরা যখন ফ্যামেলি মেম্বারদেরকেই জবের চেয়ে বেশি প্রায়োরিটি দিবে তাহলে জব ফিল্ডে আসো কেন? আজ শ্বশুরের শরীর খারাপ, কাল শ্বাশুড়ির মাথা ধরবে, পরশু তোমার হাসবেন্ডের কাজের প্রেশার বাড়বে-এসব বলে জবে ফাঁকি দিবে?

-স্যার??

-ডোন্ট সাউট। তুমি একটা ফরমাল জব করছ। সেটার গুরুত্ব হবে তোমার বাদ বাকি সব কিছুর চেয়ে বেশি ইম্পর্ট্যান্ট, সবচেয়ে বেশি।

-ফ্যামেলির চেয়েও বেশি স্যার? ফ্যামেলির কেউ একজন গুরুতর অসুস্থ দেখেও আমাকে চুপচাপ অফিসে গিয়ে মিটিং, ফাইল এসবে মুখ ডুবিয়ে বসে থাকতে হবে?! 

-ইয়েস ইয়েস। যদি কাজের সময় এটা ওটা অযুহাত দিয়ে কাজে ফাঁকিই দিবে তাহলে তোমরা মেয়েরা অফিসে আসো কেন? আজ এটার ছুটি, কাল প্রেগেন্সির জন্য মেটারনিটি লিভ---সিরিয়াসলি? আমি তো বুঝিও না মেয়েরা এতো প্রবলেম যখন সামলাতেই পারবে না তাহলে জব করার কি দরকার?

-ফ্যামেলি ইস্যু আপনার কাছে অজুহাত মনে হয়?

-তা নয়তো কি? শোনো তানিশা। জব করতে হলে এসব আলতু ফালতু অজুহাতগুলো কখনো দিবে না। নইলে কখনো কর্পোরেট লাইফে উন্নতি করতে পারবে না। আর শোনো-শ্বশুর শাশুড়ি অসুস্থ হলে হসপিটাল আছে। কোন একটা প্রাইভেট হসপিটালে এডমিট করে দিবে। টাকা দিবে চিকিৎসা হবে। জাস্ট ইট। অফিস থেকে ফেরার সময় চাইলে দেখে আসবে--। 

-স্যার!!

-আই থিংক কথাগুলো মাথায় ঢুকেছে তোমার। এখন ৭ টা বাজে। ঠিক ৮ঃ৩০ টার সময় যেন তোমাকে অফিসে দেখি---। আর কোন অজুহাত দিতে এসো না--। মাইন্ড ইট। এর পর যদি আজকেই কাজটা কমপ্লিট না হয় তাহলে কি হবে তুমি ভাবতেও পারবে না। আপাতত ফ্যামেলি নিয়ে না ভেবে নিজের জবটা বাঁচাতে কাজ করো--। ফ্যামেলি আজীবনই থাকবে। কিন্তু জবটা চলে গেলে---। আই থিংক ইউ বেটার নো হোয়াট আই মিন---।

-ইয়েস স্যার। 

-ওকে। সি ইউ এট এইট থার্টি। বায়।

তানিশা চোখ মুছে একটা লম্বার নিঃশ্বাস নিয়ে নিজেকে সামলে নিলো। শাশুড়ি তানিশার চুলে হাত বুলিয়ে দিলো।

-কি হয়েছে রে মা? অফিসে কোন সমস্যা হয়েছে নাকি?

-মা--। আমাকে একটু অফিসে যেতে হবে--।

-হ্যাঁ হ্যাঁ--। সমস্যা নেই। তুই রেডি হয়ে নে---।

-না আমি। এখনই না। আরেকটু পরে। আমি ডাক্তারকে কল করে আসতে বলব---।

-আচ্ছা। 

আটটার সময়ও জীবনের বাবার ঘুম ভাঙে নি দেখে তানিশা রেডি হয়ে অফিসে চলে গেল। ঠিক সাড়ে আটটার দিকে তানিশা বসের রুমে এলো। বস ঘড়ির দিকে তাকিয়ে হাসলো।

-গুড তানিশা। সময় মতো অফিসে এসেছে৷ যাও কাজ কমপ্লিট করো--।

-আমি আপনাকে একটা লেটার দিতে এসেছি স্যার। দিয়েই চলে যাব।

-মানে? কিসের লেটার?

-রেজিগনেশন লেটার--।

-হোয়াট?

-ইয়েস স্যার। জব আর ফ্যামেলির মধ্যে আমি ফ্যামেলিকেই চুজ করলাম। যে জবের কারণে আমাকে নিজের পরিবারকে কম্প্রোমাইজ করতে হয়-সেই জবেরই আমার দরকার নেই-। হ্যাভ এ গুড ডে স্যার।

-তানিশা??

তানিশা রেজিগনেশন লেটারটা রেখে বেরিয়ে এলো বসের রুম থেকে। তারপর উপল নূড়িতে ফিরার জন্য পা বাড়ালো। যদ কিছু হয়ে যাক পরিবারের কেউ অসুস্থ থাকে, আর তখন পাশেই না থাকতে পারে তবে এমন জব করার চেয়ে না করাই তানিশার কাছে ভালো মনে হচ্ছে এই মুহূর্তে। পরিবার পাশে থাকলে ভবিষ্যত নিয়ে পরেও ভাবার সময় পাবে, এই কথাটাই তানিশার মাথায় ঘুরছে।

০৬!!

সকালে জীবনের বাবার ঘুম ভাঙতেই জীবনের মাকে পাশে দেখলেন। জীবনের মাও তাড়াতাড়ি উঠে গিয়ে খাবার নিয়ে এসে উনাকে খাইয়ে দিয়ে ওষুধ খাওয়ালেন। ডাক্তারও এসে ব্লাড প্রেশার আর টেম্পারেচার চেক করে নিয়ম মতো ওষুধ খাওয়াতে বলে চলে গেল। জীবনের বাবা ইতি উতি তাকিয়ে দেখছেন দেখে জীবনের মা পাশে বসলেন।

-তোমার কি কিছু লাগবে? 

-জীবন আসে নি এখনো?

-না--। ওর আসতে দুপুর হয়ে যাবে।

-ওহ! তা তোমার গুণধর বউমাকে তো দেখছি না? সে কোথায়?

-তানিশা অফিসে গেছে। জরুরি মিটিং আছে----।

-বাহ! বাসায় একজন বয়স্ক মানুষ অসুস্থ! আর তার কাছে আজও অফিসে যাওয়াটা এতোই জরুরি হয়ে গেল? আজকের একটা দিন ছুটি নিতে পারতো না? আজকে অফিসে না গেলে চলছিলো না তাই না??

-মেয়েটা সারারাত জেগে তোমার মাথায় জলপট্টি দিয়েছে। এক মিনিটের জন্য দুটো চোখের পাতা এল করে নি। আর তুমি ওকেই--। যদি ইম্পর্ট্যান্ট কাজ না থাকতো তাহলে নিশ্চয়ই মেয়েটা যেত না আজকে--। আর অফিসেও মনে হয় কিছু হয়েছে---।

-আরে রাখো তো তোমার অফিস-। সব তোমাকে দেখানোর জন্য করে এই মেয়ে--। 

-তুমি যখন ঠিকই করে রেখেছ তানিশার কোন কাজই তুমি পছন্দ করবে না, তাহলে করো না। কিন্তু অহেতুক মেয়েটাকে অপমান করো না।

-হাহ-----।

৯ টার দিকে তানিশা বাসায় এসে দেখলো ডাক্তার এসে শ্বশুরকে চেকআপ করে গেছে। তাই তানিশা সোজা শ্বশুরের রুমে চলে এলো। তানিশাকে দেখে জীবনের মা উঠে তানিশার কাছে এলো।

-কি রে তানিশা? অফিস থেকে চলে এলি যে? কি হয়েছে?

-কিছু হয়নি মা--। এমনি একটু জরুরি কাজ ছিল তাই যেতে হয়েছে।

-এতো তাড়াতাড়ি কাজ শেষ?

-হ্যাঁ মা----। বাবা কেমন আছে এখন?

-এইতো ভালো আছে এখন। ডাক্তার তো এসে দেখে গেছে। ওষুধ দিয়ে গেছে---। 

-আচ্ছা। 

দুপুরে জীবন বাসায় ফিরে বাবার অবস্থা দেখে আর অফিসে গেল না। তানিশার সাথে কাজে হেল্প করলো। রাতে শ্বশুর শাশুড়িকে খাওয়া দাওয়া করানো শেষ হলে ওরা রুমে এলো। তানিশা জীবনের বুকে মাথা রেখে শুয়ে আছে চুপ করে। কোন কথা বলছে না দেখে জীবন আলতো করে তানিশার চুলে বিলি কেটে দিচ্ছে। তানিশা কিছু একটা বলার জন্যই চুপ করে আছে সেটা বেশ টের পাচ্ছে জীবন। তাই তাড়া না দিয়ে ওয়েট করছে তানিশার নিজে থেকে বলার জন্য। অনেকক্ষণ পরেও মেয়েটা কিছু বলছে না দেখে জীবন তানিশাকে আরেকটু কাছে টেনে নিলো নিজের। 

-তানু? কি বলবা বলো না পাগলিটা? এতো ভাবছ কেন? আমিই তো। বলো?

তানিশা জীবনের বুকে মুখ ডুবিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে মুখ লুকালো। জীবন আবার তানিশার চুলে আলতো করে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো।

-বলো না বাবা?

-আসলে--। একটা ঘটনা ঘটেছে---।

-বস আবার ঝাঁড়ি দিয়েছে তোমাকে? তোমার এই বসটাও না সত্যি আজব পাবলিক--। জানে মিটিং ফিটিং কিছুই তোমাকে ছাড়া হবে না--। তবু একটু কিছু হলেই তোমাকেই কথা শোনায়---। অবশ্য তোমাকে অনেক দেখতে পারে লোকটা---। নইলে ইদানিং যে হারে কামাই দিচ্ছ---।

-আমি জবটা ছেড়ে দিয়েছি জীবন।

-ও আচ্ছা---। মানে!?

-মানে আজ সকালে রেজিগনেশন দিয়ে দিয়েছি--।

-মানে কি!! তোমার না একটা প্রজেক্টের কাজ চলছে--? হুট করে জব ছাড়লে কেন? তাও আবার প্রজেক্টের মাঝখানে!!

-বস বেশি বেশি করছিল--। কাল মিটিং শেষ করেই চলে এসেছি বলে আজ সকাল সকাল যেতে বলেছে--। বাবা অসুস্থ, ছুটি লাগবে বলায় কি যে কাহিনী করলো লোকটা---। বলে ফ্যামেলি সামলাতে হলে জব করাট কি দরকার---। জব নাকি ফ্যামেলি দুটোর একটা বেছে নিতে হবে--। তাই----।

-হায় রে! তুমিও এই পাগলের সাথে পাগল হলে??

-কত কথা বলছিল জানো? সামনে পেলে মাথা ফাটিয়ে দিতাম শয়তান লোকের--।

-হা হা--। পাগলিটা---। আচ্ছা। বাদ দাও এখন এসব--। কাল সারা রাত ঘুমাও নি--। এখন লক্ষী মেয়ের মতো ঘুমাও--।

-তোমাকে কে বলেছে ঘুমাই নি--।

-কেউ বলতে হবে কেন? আমি কি তোমাকে চিনি না পাগলি?

-কচু চিনো--। আমি সারা রাত ঘুমিয়েছি রাতে। হুহ---।

-তুমি কেমন ঘুমাইসো আমার খুব জানা আছে ম্যাডাম--। এখন চুপ করে ঘুমাও--। জার্নি করে আমি নিজেও টায়ার্ড --। এখন জেগে থেকে আমাকে পাগল করলে কিন্তু---।

-অসভ্য ছেলে---। চুপচাপ ঘুমাও--। নিজে সারা রাত না ঘুমিয়ে আমাকে বলতে এসেছে সে--।

-কি করব বলো? আমাট একটা মাত্র লক্ষী বউ--। তার বুকে না ঘুমালে কি ঘুম হয় বলো??

-তুমি কি ঘুমাবা এখন?

-তুমি বললে ঘুমাতে পারি--। নইলে দুজনে মিলে হারিয়ে যেতে পারি---।

-এই ঘুমাও তো তুমি--। 

-হা হা--। পাগলীটা--। তুমিও ঘুমাও বউ সোনা---। আর আমার মনে হয় তোমার বস কয়েকদিনের মধ্যে বাসায় এসে তোমাকে কনভেন্স করবে আবার জয়েন করার জন্য--।

-হুম--। কাজ নেই আর কি তার-।

-আরে দেখে নিও তুমি--। আচ্ছা তুমি মা বাবাকে বলো নি এসব?

-উহুম--। তুমিও কিছু বলো না প্লিজ--। বাবা আবার কি মনে করে রাগ করে বসবে--। এমনিতে সকালে অফিসে গেছি তাই খেপে আছে শিউর---।

-বাদ দাও--। কি আর করবা--। এখন চোখ বন্ধ--। ঘুমাও---।

-হুম----।

তানিশা জীবনের বুকে মুখ ডুবিয়েই চোখ বুজলো। একসময় ঘুমিয়েও পড়লো। জীবনও তানিশাকে বুকে জড়িয়েই ঘুমিয়ে গেছে। সারাদিনের ক্লান্তির পর দু চোখ জুড়িয়ে ঘুম নেমেছে দুজনেরই। সমস্ত চিন্তা, ক্লান্তি ভুলে নতুন এক সকালের অপেক্ষায় শান্তির এক ঘুম।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন