বসন্তের ফুল - পর্ব ০৯ - তারিন জান্নাত - ধারাবাহিক গল্প


১৭!!

ছাদের এক কোণায় গাছের নিচে দাড়িয়ে আছে অভ্র। চোখে মুখে বিষন্নতার চাপ। চাইলে ও মানুষের কুলাহলের মধ্যে থাকতে পারে না সে। সবসময় একা থাকার স্বাদটা উপভোগ করে এসেছে তাই চাইলেও রমরমা পরিবেশে থাকতে পারে না।  নিজের এই বিষন্নতার যতেষ্ট কারন ও আছে। দিনশেষে নিজের আপন মানুষের অনুপস্থিতি বিষণ পুড়াতো ওকে। হাসিখুশীতে সবার সামনে নিজেকে প্রকাশ করলেও অগোচরে সে বড্ড দুঃখী। ছন্দহীন!

নিজেকে এতোদিন প্রানহীন লাগতো।কোনো এক বসন্তের ঋতুতে বসন্তের ফুল হয়ে তার জীবনে ফুলরানীর আগমন ঘটে। প্রাণহীন দেহে কিছুটা প্রাণ ফিরে পেয়েছিলো সেদিন। তাই কোনো প্রকারেও সে তার প্রাণপাখিটাকে হারাতে দিবে না। পণ করে ফেলে।

কাঁধে কারো শক্ত হাতের স্পর্শ পায় অভ্র। একটা ঘ্রান আসে নাকে। পেঁছন না ফিরেই অনায়াসে ব্যাক্তিটিকে চিনে ফেলে। অভ্র নিজের হাতটা সে হাতের উপরে রেখে হালকা চেপে ধরে। কাঁপা স্বরে বলে উঠে-

"অনেক বছর হয়ে গেছে তাই না?(অভ্র)
" হুম! তুই এখনো..
"নিরুপায় তো (অভ্র)
" পুরনো কথা মনে রাখতে নেই।
"রাখতে চায় না।তবুও মাথায় জেঁকে বসে থাকে।(অভ্র)
" তাহলে বর্তমানটা ভুলে যা।
"অসম্ভব! (অভ্র)

ছোট একটা শ্বাস ফেলে ব্যাক্তিটি বলে উঠেন-
" শর্তের কথা মনে আছে তো??
"হু আছে" (অভ্র)
"তাহলে আর কী নিজের গন্তব্য এবং লক্ষ্যে মনোযোগী হ।তাতেই তোর সাফল্য। 
" হেরে যাওয়ার পাত্র আমি নই। (অভ্র)
"সেটা তো আমি জানি!ব্রেভ বয়(মৃদু হেসে বলেন) 
" তাহলে যা করার দ্রুত কর।সময় চোখের পলকেই ফুরিয়ে যাবে।ঠের ও পাবে না।তাই সব ঠিক করে নে।
" হু" কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তোমাকে
 ছোট করতে চায় না।(অভ্র)

কথাটা বলেই অভ্র সেই ব্যাক্তিটিকে জড়িয়ে ধরে। শান্তি পায় সে। আর ওই ব্যাক্তিটি অভ্রের মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।অতঃপর সেখান থেকে চলে যায়। অভ্র ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে। কিছু একটা মনে মনে ভেবে চেয়ারে বসে পরে। চোখের দৃষ্টি নিচে অনুষ্টানে রঙিন ঝলমলে ছোট্ট বাতিগুলোর দিকে।
_________

ক্লাস ওয়ানে পড়া মেয়ের আর সাহসও বা কোথায় তার থেকে তিন চার বছরের বড় অাদ্র এবং সাইরার সাথে যুদ্ধ করার। রীতিমতো আদ্র সাইরার চুল ধরে ছিড়ে ফেলছে। এবং সাইরা আদ্রকে খামচি দিচ্ছে।এবং প্রিয়া নিরব দর্শক হয়ে তাদের যুদ্ধ দেখছে এবং নাক টানছে।

আদ্র প্রিয়াকে চকলেট দিয়ে নিজের বসে করে ফেলে।বাচ্চারা চকলেট আর আইসক্রিম ফেলে পটে যায়।তাই আদ্র প্রিয়াকে পটানোর জন্য চকলেট এবং আইসক্রিম দেয়। আদ্র চলে যেতেই সাইরা এসে চকলেট আর আইসক্রিম কেড়ে নিয়ে ফেলে।

সাথে সথেই প্রিয়া চিৎকার দিয়ে কান্না করতে শুরু করে দেয়। সাইরা নিজেও ভরকে যায় প্রিয়ার চিৎকারে। আদ্র হন্তদন্ত হয়ে চলে আসে চিৎকার শুনার কারনে।  এসে দেখে প্রিয়াকে দেওয়া চকলেট সাইরার হাতে।ব্যাস   সাথে সাথে সাইরার চুল টেনে ধরে। অতঃপর শুরু হয় দুজনের মারপিট। 

"প্রিয়া তুমি চলে যাও এখান থেকে। আমি দেখছি এই খরগোশকে!(আদ্র)

" কি আমি খরগোশ?  তাহলে তুই বিলাই!(আদ্রকে চিমটি দিতে দিতে)

"তুই হাতিনী! (আদ্র)

" তুই গন্ডার!

"তুই সাপ,কেঁচো,জোক (সাইরার চুল টানতে টানতে)

" তুই মাছ।(রেগে)

"তুই মুরগী!  (আদ্র)

" এনিমেলদের নামকরন করা শেষ??(অভ্র)

অভ্রের গলার স্বর শুনে দু'জনে থমকে যায়।সাথে সাথে দু'জন দু'জনে ছেড়ে দেয়। এবং সাথে সাথেই দুজনের হাত তাদের গালে। তার কারন অভ্র তাদের কথাটা বলার পরেই কষে চড় লাগিয়ে দেয়। 

"আমি কিছু....(আদ্র)
" চুপ! প্রিয়া আমাকে সব বলেছে।এই তোরা কি ছোট বাচ্চা? তোদের কান্ড দেখে আমি অবাক হয়ে যায়।আর যদি এভাবে ঝগড়া করিস তাহলে তোদের হাত পা ভেঙে আমি নদীতে ভাসিয়ে দিবো।(অভ্র)

অভ্র কথাগুলো বলে প্রিয়াকে নিয়ে চলে যায়। আর আদ্র ও যাওয়ার সময় সাইরাকে ভেংচি কেঁটে চলে যায়। 
________

প্রায় ঘন্টাখানেক ধরে প্রেমা তব্দা খেয়ে বসে আছে। সামনে তার দাদি ভিতূ মুখ নিয়ে বসে আছে।রুমে তারা দু'জন ব্যাতিতো আর কেউ নেই। প্রেমা চোখ মুখ জ্বালা করছে রাগে।কান দিয়ে ধোয়া বের হওয়ার উপক্রম। 

"তোমার থেকে আমি এমনটা আশা কখনো করিনি দাদি! আমাকে না জানিয়ে কাজটা তুমি ভালো করোনি।(প্রেমা)

" আস আসলে,আমাকে বলতে বারন করেছিলো প্রিয়াস। আরিয়ানের দাদি নিজেই তোর বাবার কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলো।এতো ভালো ঘরের প্রস্তাব তাই তোর বাবা না করেনি। (দাদি)

"বালের প্রস্তাব! আমাকে না জানিয়ে কাজটা ঠিক করোনি। তুমি অন্তত আমাকে বলতে? আমার বিয়ের সম্পর্কে কথা শুনছি আমি ওই মহিলা গুলোর মুখে। গুল্লি মারি এসবের আমি। (প্রেমা)

প্রেমা বসা থেকে উঠে দাড়িয়ে যায়। এবং ধরাম করে দরজা খুলে আবার লাগিয়ে চলে যায়। রেগে আগুন হয়ে একেবারে রাস্তায় চলে যায়। কোনোদিকে না তাকিয়ে বিরবির করতে করতে হাঁটতে লাগে।হঠাৎ একসময় প্রেমার হুস আসে রাগের মাথায় কোনো দিকে না তাকিয়ে এতোটা পথ চলে এসেছে।তার উপর অন্ধকার।এবং অচেনা জায়গা।আচমকা ভয় গায়ের সাথে জড়িয়ে যায়। আশেপাশে তাকিয়ে বুঝার আপ্রান চেষ্টা করে কতোদূর এসছে তা জানার। 

ভয়ের কারনে নড়ার শক্তিও পাচ্ছে না প্রেমা।তাই ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে। মিনিট পাঁচেক পর প্রেমার মনে হতে লাগলো কেউ আসছে। কিন্ত বুঝতে পারছে না কোনদিক থেকে আসছে। পেঁছন ঘুরে চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই কেউ একজন প্রেমার কোমড় ধরে ফেলে।আকস্মিক ঘটনায় প্রেমার ভয় আরো দ্বিগুন বেড়ে যায়। ছুটাছুটির চেষ্টা করতে লাগলো। কিন্তু ব্যার্থ হয়ে যায়। নিজেকে স্থির রেখে কম্পিত মৃদু স্বরে জিজ্ঞেস করে-

"কে"(প্রেমা)

" ভূত...(ফিসফিস শব্দে)
কথাটা বলেই প্রেমাকে শক্ত করে বুকের সাথে চেপে ধরে।

কিছু সময় পর প্রেমার চোখ মেলে তাকায়। নিজের অবস্থান বুঝার চেষ্টায় লেগে পরে।বুঝতে পারে একটা গাছের সাথে ঠেসে বসে আছে।সামনের দিকে চোখ যেতেই দেখে হালকা আলো আসছে। আর অপেক্ষা না করে দাড়িয়ে যায়।এবং দৌড় দেয় সেই দিকে।আশেপাশে না তাকিয়ে দৌড়াচ্ছে। দৌড়াতে দৌড়াতে হঠাৎ কারো বাহুর সাথে ধাক্কা লাগে। মাথা তুলতেই দেখে অভ্র দাড়িয়ে আছে প্রেমাকে ধরা অবস্থায়। 

"কি হয়েছে এভাবে কাঁপছো কেন?(অভ্র)
" ভূ ভূত! অভ্র ভূত আম আমাকে জড়িয়ে ধরেছিলো।

প্রেমার কথা শুনতেই অভ্রের কাশি উঠে যায়।
"আরে কী বলছো এসব?ভূত কোথায় থেকে আসবে? (অভ্র)
" আরে সত্যি আমি নিজের চোখে দেখেছি।ভূত আমাকে...
প্রেমার কথার মাঝে অভ্র হেসে উঠে।অভ্রের হাসির শব্দ বারবার প্রেমার কানে ভাজতে শুরু করে।কিছু সময়ের জন্য সব ভুলে অভ্রের দিকে তাকিয়ে থাকে। 
"দেখো প্রেমা! এসব ভূত তূট কিছুই হয় না! (অভ্র)
" তাহলে কে জড়িয়ে ধরেছিলো? (অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
"হুম,,ভাববার বিষয় তো!(অভ্র)
" মজা করছো আমার সাথে। তোমাকে বলাটাই ভুল হয়েছে আমার। (বলেই অভ্রকে রেখে চলে যায়)
অভ্র ঠোঁট কামড়ে প্রেমার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।
"ভয় ভাঙাতে হবে। তাতে তোমার এই ভয়ার্ত মুখ দেখা মিস হয়ে যাবে।বাট নো প্রবলেম।কিন্তু তোমার ভয় আমি ভাঙবোই।

১৮!!

বাড়িতে মেহমান গিজগিজ করছে।প্রেমা যখন বের হয়েছিলো।তখন এসব খেয়াল করেনি।তাই বাড়িতে প্রবেশ করতেই প্রেমা অবাক হয়ে যায়।

গুটিগুটি পায়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সোফার দিকে চোখ দিতেই চমকে যায় প্রেমা। আরিয়ানকে দেখে। সে তো ভেবেছিলো মাজা ভেঙেছে বাড়িতে বিশ্রাম নিবে। কিন্তু এ তো ড্যাং ড্যাং করে এখানে চলে এসেছে। আরিয়ানের চোখে চোখ পড়তোই আরিয়ান একটা হাসি দেয় প্রেমাকে উদ্দেশ্য করে।

বিরক্তিতে চোখ মুখ কুঁচকায়। এই মানুষটাকে কেন যেনো প্রেমা সহ্য করতে পারেনা।পেঁছনে একবার তাকায় অভ্র আসছে কী না দেখার জন্য। না নেই। তাই প্রেমা অপেক্ষা না করে ছাদে চলে যায়।কারো সাথে কথা বলার ইচ্ছেও নেই। 

ছাদেও লাইটিং করা হয়েছে।বেশ জ্বলমলে পরিবেশ।কিন্তু পুরো ছাদ ফাঁকা। এখানে থাকতেও হালকা ভয় করছে।পরক্ষণে ভাবলো।ভুত বলতে কিছুই নেই সবই মনের ভ্রম।সাহস জুগিয়ে চেয়ারে বসে এবং অন্য একটি চেয়ারে পা তুলে দেয়। তারপর নিজের ফোনটা টেপাই মনোযোগ দেয়।এই যন্ত্র গোটা দিন টিপলেও সে বিরক্ত হয় না। 

ক্ষনিক বাদে প্রেমা ঘাড় বাঁকা করে পেছনে ফিরে তাকায়। কারো উপস্থিতি টের পাচ্ছিলো প্রেমা কিন্তু কাউকেই দেখেনি।

ছাদের অপরপ্রানতে দাঁড়ানো অভ্র।হাত জোড়া বুকে গুঁজানো। প্রেমাকে দেখতে মত্ত সে। অভ্রের অবস্থান এমন একটা জায়গায় যে অভ্র প্রেমাকে ভালোভাবে দেখতে পারবে কিন্তু প্রেমা অভ্রকে দেখতে পাবে না। 

অভ্র এবার নিজের ফোনটা বের করে।মেসেঞ্জার থেকে প্রেমাকে আনব্লক করে। দেখে প্রেমার এক্টিভ রয়েছে। 
নিজের গ্যালারি থেকে একটা ছবি প্রেমাকে সেন্ড করে।

নিউজফিড স্ক্রল করতে করতে মেসেজ টিউন ভেজে উঠে  । খেয়াল ছুটে যায়। "বসন্ত পথিক" নামটা ভেসে উঠে।এক সেকেন্ড দেড়ি না করে মেসেজ সিন করতে গেলেই ফোনটা স্লো হয়ে যায়। নিজের মধ্যে আকস্মিক ভাবে আকুলতা দেখে প্রেমা নিজেও হতবাক । অপেক্ষা তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। এক মিনিট পরেই সে মেসেঞ্জারে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়।

একটা ছবি দেখতেই প্রেমার চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়।ভাবনায় পড়ে যায় ছবিটি কখনকার। এই ছবিটি ব্যাক সাইডের। কলা পাতা রঙের শাড়ির সাথে সাদা কাঠবেলি ফুলের মালা।যেটা বাগানে একটা কাঁচের বাক্সে পেয়েছিলো। 

মনে পড়ে যায় প্রেমার। বটতলায় মেলার কথা। তাদের গ্রামেই হয় মেলাটা। মিম,এবং আরো দুজন বান্ধবীর জোরাজোরিতে মেলা যেতে বাধ্য হয়েছিলো। শাড়ির পড়ানোর জন্য একপ্রকার যুদ্ধ করেছিলো সবাই প্রেমার সাথে। সম্পূর্ণভাবে তৈরি হতেই প্রেমার মনে হলো ওর খোঁপায় গুঁজানোর জন্য ফুলের মালা দরকার।নাহলে সে নিজেকে পরিপূর্ণ ভাবতে পারবে না। ছুটে যায় বারান্দার দিকে।এবং পেয়েও যায় মালা। কে যে মুখ ফুটে বলার আগেই ওর মনের কথাটা বুঝে যায়। ভেবে পায় না।  এ যেনো অভ্যক্ত মনোমিলন। 

গভীর মনোযোগ দিয়ে প্রেমা ছবিটা দেখছে।এ ছবির মূল কেন্দ্র যেনো খোঁপাটা ছিলো।৷ বেশ আকর্ষনীয় এবং সুন্দর দেখাচ্ছিলো।

এবার প্রেমার আঁখিজোড়া সেই ব্যাক্তিকে দেখার জন্য ছটপট করতে লাগে। তার অজান্তেই। আজ কোনো প্রকার ভয় হচ্ছে না প্রেমার। বরং অজানা অনুভূতিতে শিহরিত হচ্ছে। বিরবির করে বলে হঠে-
"তাহলেই এই সেই ব্যাক্তি। বসন্তটা শুর হয়েছিলো যার আগমনে। আমায় সই বানিয়েছিলো ফুলেদের। কী চায় সে?? কী নাম দিবো তার?  বসন্ত পথিক,,,হ্যাঁ সেটাই। 

এসবের ভাবতে ভাবতে প্রেমা ফোনের দিকে চোখ দেয়। দেখে বসন্ত পথিক আবারও ব্লক দিয়েছে তাকে।দুঃখে চোখের কোণায় পানি এসে জমে। দূর থেকে অভ্রের উন্মাদিত দৃষ্টি প্রেমাতে থাকলেও।প্রেমার চোখ মুখের অবস্থা তার চোখ আবদি আসেনি। ফলস্বরূপ প্রেমার অস্থিরতা নড়াছড়া দেখলেও মুখে বিষন্নতার চাপ দেখতে পায়নি।

কিছুসময় পর পায়ের শব্দ কানে ভেসে আসে অভ্রের। সতর্কতার সহিতে নিজেকে গুটিয়ে নেয়। এহেন সময় ঘটে আরিয়ানের আগমন।নাক ফুলিয়ে শক্ত করে রেলিং চেপে ধরে অভ্র। নিজেকে শান্ত রাখার জন্য।নাহলে সে নিজেকে আটকাতে না পেরে আরিয়ান গায়ে হাত তুলে ফেলতে পারে।

" কেমন আছো প্রেমা?"(আরিয়ান)

আরিয়ানের কথা প্রেমার কানে আসলেও চুপচাপ থাকে।আরিয়ান দেখতে খারাপ এটাও না।কোনো খারাপ অভ্যাস আছে এমন ও না।তবুও প্রেমা সহ্য করতে পারেনা।

"কী হলো উত্তর দিচ্ছো না যে??

এবার প্রেমা দাঁড়িয়ে আরিয়ানের সামনে গিয়ে দাড়ায়। পা থেকে মাথা অবদি ভালোভাবে দেখে নেই। তারপর বলে৷ উঠে-
 
" সিঁড়ি থেকে নাকি পড়ে গিয়েছিলেন?তো হাড্ডি-গুড্ডি কী ভাঙেনি?? ভাঙলে বেশি খুশী হতাম।(দাঁতে দাঁত চেপে কথাটা বলে প্রেমা নেমে যায়।আরিয়ান আহাম্মকের মতো তাকিয়ে ছিলো।)

হলুদের অনুষ্টানে সবাই সবার মতো আনন্দ করলেও এসবের ধারে কাছেও ছিলোনা প্রেমা আর অভ্র। এদের একটা জায়গায় বিষণ মিল সেটা হচ্ছে তারা মানুষের ভিড়ে থাকতে চায় না।

অনুষ্ঠান তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়।বেশিরভাগ মেহমান চলে যায়।এবং বাকিরা শুয়ে পরে। কাল বিয়ে তাই একটু শরীরে বিশ্রামের দরকার।

চুল ছেড়ে দিয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দেয় প্রেমা।রাজ্যের ঘুম চোখের পাতায় এসে ভার করে।অতঃপর তলিয়ে যায় ঘুমের দেশে।

মাঝরাতে প্রেমার চুলে টান পরতে লাগে অনবরত।ঘুমের মাঝেও রেগে যায়।তবুও চোখ মেলতে পারছে না।কিন্তু চুলের টানটা বেশ অনুভব করতে পারছে। চোখ মেলতে গিয়েও অক্ষম হয়। আবারও পাড়ি জমাই ঘুমের রাজ্য। 

হাতে একজোড়া নুপুর নিয়ে বসে আছে অভ্র। এবং মৃদু হাসছে। প্রেমার চুলে বিনুনি করা শেষ এখন এই নুপুরজোড়া যথাস্থানে পৌঁছে দেওয়ার পালা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন