"আমাকে লেখা তোমার মা'য়ের শেষ চিঠি এবং আমার কাছে দাবি করা তার শেষ ইচ্ছা।"
"ইচ্ছা? কী ইচ্ছা?"
"সাইয়ারা চাইতো তোমার ও জোহানের বিয়ে হোক এবং তুমি আমার ঘরের বউ হও।"
ইনারা কথাটা শুনেই আঁতকে উঠে, " আপনি এটা কি বলছেন আন্টি!"
"ঘাবড়ানোর কিছু নেই মামনী। সাইয়ারা অসুস্থ ছিলো। ওর কেবল চিন্তা ছিলো তোমার ভবিষ্যত নিয়ে এবং তোমার ভবিষ্যতের জীবনসঙ্গী নিয়ে। ওর কেবল ইচ্ছা ছিলো কিন্তু তোমার জীবনের সিদ্ধান্ত কেবল তুমি নিবে। অন্যকেউ নয়। আমি আজই তোমাকে একথা বলতে চাই নি। ভেবেছিলাম তোমার আঠারো বছর হবার পর বলব। কিন্তু কেন যেন না বলে থাকতে পারলাম না। এই চিঠিটা তুমি নিজের কাছে রাখো।"
ইনারা চিঠিটা খুলে দেখে। তার মা'য়ের হাতের লেখা। হঠাৎ তার বুক কেঁপে উঠে। চোখ দিয়ে গড়িয়ে পরে একবিন্দু জল।
চা'য়ের কাপ থেকে সাদা ধোঁয়া উড়ে বেড়াচ্ছে। দক্ষিণা বাতাস। চারদিকে সবুজ প্রকৃতি এবং কৃষ্ণ আকাশের হৃদয় কাড়ানো সৌন্দর্যের মেলা। ব্যালকনির সিঁড়িতে বসে মনের সুখে গান গাইছে জোহান। তার পাশে বসা ইনারা। সে নীরব শ্রোতা। জোহানের গান তার ভালো লাগছে। কিন্তু এই মুহূর্তে তার অনুভূতি কিছুক্ষণ আগের থেকে অনেকটাই ভিন্ন। এক দ্বিধার জঞ্জালে যেন সে ফেঁসে গেছে। হঠাৎ পাশ থেকে জোহান বলে উঠে, "গানটা কী ভালো লাগে নি?"
ইনারার ঘোর ভাঙে। সে হকচকিয়ে উঠে, "লাগবে না কেন? আপনি এত সুন্দর গান গাইতে পারেন। ভালো লাগাটাই স্বাভাবিক।"
"তুমি কাঁপছ? শীত লাগছে তোমার?" জোহান প্রশ্ন করে উওর দেবার পূর্বেই তার জ্যাকেটটা খুলে পরিয়ে দেয় ইনারাকে। এই ছোট একটি ঘটনাতেই অন্যরকম এক অনুভূতি হয় ইনারার। তার মা এই এই ছেলেটাকে তার জন্য বাছাই করেছে। যে কারও মন খারাপ দেখতে পারে না, কারও কষ্ট সহ্য করতে করতে পারে না, অন্য একজনের মন ভালো করার জন্য নিজের চিন্তাও করে না। জোহানের এত মিষ্টি স্বভাব দেখে তার মনে হলো তার মা তার জন্য একদম সঠিক মানুষ বাছাই করেছে। ভাবতেই কেমন লজ্জা পেল ইনারা। এই নিশি রাতে এক কিশোরী আবেগী হাওয়ায় ভেসে উঠে।
জোহান আরেকটি গান গাইতে শুরু করে। ইনারা মুগ্ধ হয়ে তা শুনে। এই হৃদয়ে উষ্ণতা ছড়ানোর আরেকটা কারণ জোহানের গান। ইনারার গান শোনাটা ছোটবেলা থেকেই ভীষণ পছন্দের। আর জোহানের গলায় গানটা শুনে তার গালের লালচে ভাবটা আরও গাঢ় হয়ে যায়। সে ভক্ত হয় জোহানের গানের, যা তার হৃদয়ের উদাসীনতা হাওয়ায় মিশিয়ে দিয়েছে। আচ্ছা এই নিশি রাতের আঁধারের মাঝে কি জোহান খেয়াল করেছিলো তার পাশে বসা কিশোরীটার লজ্জামাখা মুখখানা?
পরেরদিন সৌমিতা আন্টি তাদের দুইজনকে নিয়ে শ্রীমঙ্গল ঘুরে আসে। সেদিন সে ঐশি এবং জোহানের সম্পর্কে অনেক কিছু জানায় ইনারাকে। তাদের পছন্দ, অপছন্দ, শখ ইত্যাদি। তাদের অনেক গল্পও শুনায়। ইনারা খুব মনোযোগ দিয়ে সে কথাগুলো শুনে। তারও মনে পড়ে ঐশি এবং জোহানের সাথে তার ছোটবেলার কিছু মজার ঘটনা।
ইনারার কাছে তখন ফোন ছিলো না। তাই সৌমিতা আন্টি তাকে বলে যে সে নিজে থেকেই তার বাসায় কল দিবে। কিন্তু এরপর আর কোনো কল আসে না।
স্মৃতির পাতা থেকে বাহিরে এলো ইনারা। তার মগের কফিটা শেষ হয়। এ দুইবছর ধরে সে সুযোগ খুঁজছে জোহানের কাছে যাবার। সে চায় জোহান তাকে প্রথমে ভালোবাসুক। সে সাইয়ারার মেয়ে হিসেবে নয়, কেবল ইনারা হিসেবে। এতবছরে সে সুযোগটি পেয়েছে।
ইনারা এক লাফে দাঁড়িয়ে যায় এবং প্রবল স্বরে বলে, "এই সুযোগ হাতছাড়া করার মতো মানুষ ইনারা না। মা'য়ের ইচ্ছা সম্পূর্ণের সাথে তার প্রথম প্রেমকেও নিজের করে ছাড়বো। জোহান যাস্ট ওয়েট করো ইনারা আসছে তোমাকে নিজের করার জন্য। তুমি আমাকে ভালো না বেসে যাবে কোথায়?" কিন্তু করতে গিয়ে বিছানায় পরএ থাকা ফাইল দেখে তার উৎসুকভাব হাওয়ায় উড়ে সে। সে মুখ লটকিয়ে বলে, "কিন্তু তোমাকে পাওয়ার জন্য আমার ওই রাক্ষসের সাথে মোকাবিলা করতে হবে। সারাদিন মাথা খাওয়ার পরেও শান্তি নেই। এখনো ভূতের মতো ঘাড়ে চড়ে বসে আছে। না ইনু, তুই হার মানতে পারিস না। তোর জোহানকে পাওয়ার জন্য হাজারো বাঁধা পেরোতে পারবি তুই। এই রাক্ষস কী জিনিস!"
ইনারা রুমে ঢুকে আবার কাজ করতে শুরু করে। কিন্তু তা সম্পূর্ণ করতে পারে না। ঘুমিয়ে পড়ে। উঠে সকালে। খালাজানের ডাকে। তখন সকাল নয়টা বাজে। সময় দেখেই সে লাফ দিয়ে বিছানা থেকে নেমে যেমন-তেমন করে বের হয়। সভ্যের এপার্টমেন্টে যেয়ে শুনে তারা আগেই বেরিয়ে গেছে। তাই কোম্পানিতে রওনা দেয় ইনারা। দৌড়ে রুমের ভেতর ঢুকে হাঁপাতে হাঁপাতে বলে, "সরি, সময়ে ঘুম থেকে উঠতে পারি নি।"
রুমে সবাই রিহার্সাল করছিল। ইনারার কন্ঠ শুনে তার দিকে তাকায়। সভ্য ছাড়া। তাকে ভীষণ অগুছালো দেখাচ্ছে। সামি উঠে সোজা যায় তার কাছে, "এ কী অবস্থা তোমার?"
"দেরি হয়ে গিয়েছিলো তাই যেমন তেমন করে এসে পড়েছি। এজন্য এমন বাজে দেখাচ্ছে।"
সভ্য বলে, "সারাক্ষণ এমনই দেখায়।"
"আপনার জন্য সারারাত জেগেই এই অবস্থা হয়েছে আমার।"
"সভ্য তুই সারারাত কী করেছিলি রে যে ওর এই অবস্থা?" সামি ব্যাঙ্গ করে জিজ্ঞেস করে। তবে ইনারা কথাটা ধরতে পারে না। সে স্বাভাবিকভাবেই বলে, "দেখেন না কতগুলো কাজ দিয়েছে। আমি এতটুকু মাসুম জান কত কি করব বলেন।"
"আমি কি বলেতে চাইছি তুমি বুঝো নি?"
"কী বলতে চাইছেন?" অবুঝের মতো জিজ্ঞেস করে সে। সামি বলতে যেয়েও সভ্যের চোখ রাঙানো দেখে থেমে যায়। সভ্য বলে, "অনেক কথা হলো। এবার কাজেও একটু ধ্যান দেও। আজ মাফ করলাম। এরপর যেন দেরি না হয়। সামি ওকে নিয়ে মার্কেটিং অফিসে যা। রাস্তা দেখিয়ে আয় এবং তাদের ফাইলগুলো দিয়ে আসবি।"
"আর এই নোট?" ইনারা জিজ্ঞেস করে।
"আপাতত লাগবে না। তোমার কাছে রাখ।"
"না লাগলে আমাকে সারারাত জাগিয়ে এত কাজ করালেন কেন?"
"তোমার সাথে কথা বলার মতো আমার সময় নেই।"
ইনারা অগ্নি দৃষ্টিতে তাকায় সভ্যের দিকে। তারপর মুখ ফুলিয়ে হনহনিয়ে বেরিয়ে যায়। সামিও যায় তার পিছনে। সারা রাস্তায় ইনারা একটা শব্দ মুখ দিয়ে বের করে না। রাগে তার ফর্সা নাক মুখ লালচে হয়ে গেছে। সামি তার রাগ দূর করার জন্য অনেক কিছুই বলছিলো। কিন্তু তার রাগ কমার নামই নেই। অবশেষে ফাইল জমা দিয়ে আসার সময় জানলো এসব ফাইলের কাজ আগেই শেষ। এতটুকু শুনেই রাগে মাথা নষ্ট হয়ে যায় ইনারার। সে অফিসের ভেতরে কিছু না বললেও বের হয়ে সামির উপরই রাগের বর্ষণ করে সে, "আপনার বন্ধুর সমস্যা কোথায়? সে আমাকে চাকরি দিয়েছে বলে কি গুলাম করে নিবে? যেখানে আসল কাজ নেই সেখানে আমাকে সারারাত জাগিয়ে এত খাটানোর মানে কী?"
"ও একটু এমনই। তুমি কুল ডাউন হও।"
"কুল ডাউন হবো? আপনার বন্ধুর ভর্তা না বানানো পর্যন্ত আমি শান্ত হব না। তার ভর্তা বানিয়ে আমি রাস্তার কুকুরদের খাওয়াব। না, তারাও খাবে না। তাদের টেস্টও তো এত খারাপ না। আচ্ছা আপনি একটি কথা বলেন, উনি খাওনে কী এটিটিউড গিলে? এত এটিটিউড আনে কোথা থেকে সে? যেন এই পুরো পৃথিবী সে কিনে নিয়েছে।"
"চুপ...চুপ..."
"কী চুপ? আপনার এক ভূত। সারাদিন তো মাথায় চড়ে নাচে, বাসায় গেলেও পিছনে লেগে থাকে।"
"পিছনে... "
ইনারা এবারও সামির কথা শুনে না, "উনাকে যদি আমি ডাসুম-ডিসুম করে কতগুলো মারতে পারতাম। মন শান্ত হতো আমার। এক নাম্বারের বদমাইশ, রাক্ষস, ভূত সে।"
সামি তার কপালে জোরে একটা মারে। ইনারা মুখ বানিয়ে জিজ্ঞেস করে, "এখন আপনার কী হলো? ওই ভূতের চেহেরাটা আপনার চোখের সামনে হাজির হয়েছে না'কি?"
"না, সে নিজে আমার সামনে হাজির।"
"মা-মানে?"
"পিছনে দেখ।"
"আপনি মজা করছেন তাই না? সে নেই আমার পিছনে।"
"আছে।"
"না।" কান্নামাখা গলায় বলে ইনারা, "উনি নেই তাই না? আপনি মজা করছেন।"
সামি ইনারার কাঁধ ধরে তাকে পিছু ঘুরায়। সভ্য দাঁড়ানো। প্রতিবারের মতো আজও সভ্যের চোখদুটো সরু। মুখে কিছুটা রাগ এবং বিরক্তির ভাব বিদ্যমান। সে কঠিন গলায় জিজ্ঞেস করে, "তাহলে আমি ভূত?"
ইনারা নিভে যায় মুহূর্তে। তার এতক্ষণের বাঘ্রের মতো স্বভাব উধাও হয়ে যায়। সে কান্দুনে দৃষ্টিতে তাকায় সভ্যের দিকে। সভ্যের মায়া হয় না। সে বলে, "আমি তাহলে ভূতের মতো সারাক্ষণ তোমার পিছনে পরে থাকি? আরও কি যেন আমি? রাক্ষস, বদমাইশ?"
"আরও কোনো প্রসংশা আছে আমার নামে?
"তোর না'কি ভর্তা করলে কুকুরও খাবে না। তাদের টেস্ট এতও বাজে..." সামি আনমনে কথাগুলো বলতে যেতেই ইনারা তার পেটে কণুই মেরে চুপ করিয়ে দেয়। সামি ব্যাথায় পেটে হাত রেখে বলে, "আমি আবার কী করলাম?"
সভ্য ভ্রু কপালে তুলে বলে, "বাহ আমার নামে এত মহান চিন্তা আনো কোথা থেকে তুমি? তোমার কী আমাকে ভয় লাগে না? ছোট এবং মেয়ে বলে তোমাকে ছাড় দিচ্ছিলাম। অথচ তার কদরই নেই তোমার, তাই না?"
"আমার দিলে ডর ভয় এমনিতেই কম কিন্তু সত্যি বলতেছি আপনি এভাবে তাকালে আমি আপনাকে ভূত থেকেও বেশি ভয় পাই।"
"মানে তুমি বলতে চাচ্ছো আমি দেখতে ভূতের থেকেও বেশি ভয়ংকর?"
"যদিও এটা সত্যি কিন্তু আমি এটা বলতে চাই নি।"
"তোমাকে আমি...."
সভ্য রাগে ইনারাকে বকা দিয়ে এগিয়ে আসতেই ইনারা ভয়ে পিছিয়ে যায়। সে পিছাতে যেয়ে সামির পা'য়ের সাথে লেগে পরে যেতে নেয়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সভ্য ইনারার হাত ধরে একটানে নিজের দিকে টেনে নেয়। ইনারা চলে আসে সভ্যের কাছে। সে চোখ তুলে তাকাতেই সভ্যের চোখে চোখ পড়ে। তবে সে সভ্যের চোখে বেশি সময় ধরে তাকিয়ে থাকতে পারে না। তার চোখ দুটোয় অন্যরকম এক আকর্ষণ আছে। তার দৃষ্টি গভীর। ইনারার মনে হয়, কোনো মেয়ে একবার এই দৃষ্টিতে ডুবলে আর কখনো উঠতে চাইবে না।
এমন নয় যে ইনারা কোনো পুরুষের চোখে তাকায়নি। দৈনিক বিভিন্ন কাজেই তার কয়েকজনের সাথে কথপোকথন হয় অথবা সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখে। কিন্তু আজ পর্যন্ত সে কোনো পুরুষের এত আকর্ষণীয় চোখ দেখে নি। সে খানিকটা কৌতুহলে আনমনেই সভ্যের চোখের দিকে হাত বাড়ায়। সভ্য হাত ধরে নেয় তার, "এখন আমাকে অন্ধ করার ইচ্ছা আছে তোমার?"
"সত্যি করে বলবেন, আপনি কী দিনরাতে চব্বিশ ঘন্টা চোখে সুরমা লাগিয়ে ঘুরেন?"
"হ্যাঁ তোমার মতো তো অকর্মা আমি।"
"আপনি সারাক্ষণ আমার সাথে এত বাজে ভাবে কথা বলেন কেন? সুন্দরভাবে কথা বললে কি আপনার চোখ ব্যাঙের থেকে পেঁচার সাইজের হয়ে যাবে?"
"একারণেই তোমার সাথে কথা বলতে ইচ্ছে হয় না। আমি এসেছিলাম তোমার উপর দয়া করে এইসব কাজ বাদ দিব বলে। কিন্তু না। এখন তো একদমই না।"
সভ্য ইনারার হাত ছেড়ে পাশের দরজা খুলে একটি লোককে বলল, "সবুজ, ওর নাম ইনারা। ও আমাদের নতুন এসিস্ট্যান্ট। ওকে নতুন সব ফাইল সলভ করার জন্য দিবেন।"
ইনারা হতবাক, "আপনি এমন করতে পারেন না।"
"আমি করেছি না'কি? তোমার পিছনে যে ভূত লেগে থাকে না সে করেছে।"
"আপনি আমার সাথে কোন জনমের দুশমনি বের করছেন?"
"এই জনমেরই।"
ইনারা কাঁদোকাঁদো চেহেরায় নম্র দৃষ্টিতে তাকায় সভ্যের দিকে। কিন্তু সভ্যের কিছু এসে যায় না, সে বিরক্তিকর ভাব নিয়ে চলে গেল। সভ্য যাবার পরে ইনারা সামিকে বলে, "উনি কি জন্মের সময় করলা খাইসিলো? সারাক্ষণ করলার মতো মুখ করে রাখে, আর কথাও করলার মতো বলে। আই হেইট হিম। উফফ!"
"শান্ত হও, শান্ত হও। সভ্য এমনই। কেবল তোমার সাথে না, সবার সাথেই এমন কথা বলে। তোমার মাথা গরম। আসো তোমাকে আইস্ক্রিম খাইয়ে মাথা ঠান্ডা করি।"
"বলেন আপনারও আইস্ক্রিম খেতে মন চাইছে। আমি আপনাকে সাধবো তারপর আপনি খাবেন।"
"তুমি কীভাবে বুঝলে? চমকে উঠে সামি।"
"আপনি আর আমি এক ক্যাটাগরির।"
ক্যান্টিনে যেয়ে দুইজনে বসে অনেকক্ষণ ধরে খাবার খেল এবং গল্প করলো। গল্প বলতে কেবল সভ্যের বদনাম। এই দুইদিনেই দুইজনের খুব ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠে। ইনারার কাছে সামি যেন এখন বন্ধুর মতো। তাই আপনি থেকে তুমিতে এসে পড়েছে। সামি অনেক মিশুক। তাকে দেখলে কেউ বলতেও পারবে না যে সে এত বড় সেলিব্রিটি।
খাবার শেষে দুইজনে রুমে যেয়ে দেখে ঐশি এসেছে। সে সোফায় বসা। তার সামনে সোফায় ইরফান এবং তার পাশে বসা সভ্য। সভ্য তার মাথায় হাত রেখে গালে হাত রেখে বলে, "তুই চিন্তা করিস না সব ঠিক হয়ে যাবে। প্রয়োজনে আমি মিঃ হকের সাথে কথা বলবো।"
তার কথার ধরন দেখেই বড়সড় এক ঝটকা খায় ইনারা। বিস্ময়ে তার যেন গলায় শব্দ আটকে এসেছে। সে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকে দৃশ্যটির দিকে। পিছনে ঝুঁকে সামিকে জিজ্ঞেস করে, "এই করলা হঠাৎ করে মিষ্টি কীভাবে হয়ে গেল?"
"ঐশির সাথে সভ্য সবসময়ই এভাবে নরম গলায় কথা বলে।"
"এই রাক্ষসের ঘরের রাক্ষসে নরম গলায়ও কথা বলতে পারে? ঐশির সাথে কী কিছু চলে না'কি?"
"আমারও আগে মনে হতো। কিন্তু কোনো প্রমাণ পাই নি।"
ইনারা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ঢঙ করে বলে, "এইসবে ইনারার মতো এক্সপার্ট আর কেউ হতে পারে না। আমি ফুড়ুৎ করে তাদের পেটের কথা বের করে দেখাব। যাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ। ডিটেকটিভ ইনারা মোড অন।"
"ব্যাপারটা মজার শুনাচ্ছে তো। তাহলে এই প্রজেক্টে ডিটেকটিভ সামি আপনার সাথে প্রস্তুত আছে। সভ্য আর ঐশির পেটের কথা বের করার মিশন অন।"
.
.
.
চলবে.................................