আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুগ্রহ করে গল্প সম্বন্ধে আপনার মতামত অবশ্যই প্রকাশ করবেন। আপনাদের মতামত আমাদের এই ছোট প্রয়াসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগায়। শীঘ্রই আরও নিত্য নতুন গল্প আপডেট আসছে, সঙ্গে থাকুন। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখক/লেখিকা'র নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত গল্পের ডায়েরি’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখক/লেখিকা'র কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় গল্পের ডায়েরি কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। গল্পের ডায়েরি'তে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ করলে তা কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

মোবাইল পাগলী (পর্ব ০৩)


০৫!!

আকাশের করা আজকের ব্যবহার আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারছিনা। কি করে পারলো আকাশ আমার গায়ে হাত তুলতে। আমার অপরাধটাই বা কি। কেন এমন করলো আকাশ আমার সাথে। কেন বললো আমি আকাশকে বিয়ে করতে চেয়েছি।আমি তো আকাশকে আমার অনেক ভালো বন্ধু ভাবি। আকাশ তো আমার বেষ্টফ্রেন্ড। আমি এটাও জানি আকাশ মেঘলাকে অনেক ভালোবাসে। তাহলে আমি কেন চাইবো ওদের সম্পর্ক নষ্ট হোক।
বেলকোনিতে বসে কথাগুলো ভাবছিলাম হঠাৎ এর মধ্যে আম্মু রুমে ঢুকে।
- কি রে এখানে বসে কি করছিস? (আম্মু)
- কিছুনা 
- মন খারাপ?
- না।
- দেখ মা, ছেলেটা অনেক ভালো। পরিবারও অনেক ভালো তোকে অনেক সুখে রাখবে।
- এসব কথা এখন আবার কেন তুলছো?
- এটা নিয়েই তো তুই আপসেট?
- না আমি কিছু নিয়েই আপসেট না।
- ওহ বুঝেছি্
- কি বুঝেছো?
- তোর আব্বু এখনো ফোন দেয়নি। এর জন্য মন খারাপ?
আম্মু মোবাইলের কথা বলতেই আকাশের কথাগুলো মনে পড়ে গেল। আমি নাকি সংসার, ভালোবাসার মত যোগ্য মেয়েই না। শুধু মাত্র ফোনের জন্য পাগল বলে!
- কি রে কি ভাবছিস
- কিছুনা।
- আচ্ছা তোকে আমি বিয়ের পর একটা নতুন ফোন কিনে দিবো।
- লাগবে না।
আমি বেলকোনি থেকে ওঠে রেডি হতে চলে গেলাম। কলেজে যেতে হবে।

কলেজে যাওয়ার সময় দেখলাম। আকাশ আর মেঘলা ফুসকা খাচ্ছে। অদ্ভুত বিষয় কালকেই না আকাশ বললো সম্পর্ক শেষ এখন আবার এত মিল। কাহিনী কি আর এর পেছনের রহস্যটাই বা কি! এসব ভাবছিলাম আর এগোচ্ছিলাম, তখন মেঘলা ডাক দিলো পেছন থেকে,
- আরে প্রিয়া আপু দাঁড়াও
মেঘলার ডাক শুনে দাঁড়িয়ে গেলাম। মেঘলা হাসি হাসি মুখ করে বলে,
- কি ব্যাপার? মন খারাপ না কি?
- না তো! কেন?
- আকাশের সাথে কিছু হয়েছে?
- কি হবে ওর সাথে?
- তাহলে ওর সাথে কথা না বলে চলে যাচ্ছো যে।
- সবার সাথে কথা বলার মত সময় আমার নেই মেঘলা। আর কিছু বলবা?
- না
- ওকে আসি।

ক্লাশে গিয়ে চুপচাপ বসে আছি। ভাল্লাগছে না। ঘোড়ার ডিম ফোনটা থাকলে এখন আর বোরিং লাগতো না। ক্লাশ শুরু হয়ে গেছে। আকাশও ক্লাশে এসেছে। আজ আকাশ পেছনে আর আমি সামনে বসেছি।
এভাবে ২ দিন চলে গেল আমরা কেউই কারো সাথে কথা বলি না।

এর মধ্যে আমাদের টেস্ট পরীক্ষার রুটিন দিয়ে দিয়েছে। আর কলেজের সবাইও বুঝে গেছে আকাশ আর আমার মধ্যে খুব বড় ঝগরা চলছে।

রুটিন নিয়ে বাড়ি ফিরছিলাম। পথে আকাশ আর মেঘলার সাথে দেখা। আমি ইগনোর করে চলে যাচ্ছিলাম কিন্তু মেঘলা কি আর তা হতে দেয়। এই মেয়েটা কিছুতেই পিছ ছাড়ে না। কাঁটা গায়ে নুনের ছিটা দেওয়া যেন ওর জন্ম জন্মান্তরের স্বভাব। আমি মুখে কিছুটা বিরক্তি ভাব নিয়েই বললাম,
- কিছু বলবা?
- তোমার জন্য খুব কষ্ট হচ্ছে গো আপু।
- মানে? কেন?
- তুমি তো পরীক্ষায় ডাহা ফেল করবা গো।
- স্যরি? মাথা ঠিক আছে?
- মাথা আমার ঠিকই আছে। তোমার সাথে তো আকাশের ঝামেলা চলছে। এবার পরীক্ষায় তো আকাশ তোমাকে হেল্প করবে না আর তুমি পাশ ও করবে না। কারণ মোবাইল পাগলী কি আর হেল্প ছাড়া পরীক্ষায় পাশ করতে পারবে বলো?
তবে আপু সমস্যা নেই। নেক্সট ইয়ারে আমি তোমাকে হেল্প করবো পরীক্ষার সময় কথা দিলাম।

আমি একটু তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললাম,
- মেঘলা! তুমি যদি আমার খুব কাছের একজনের ভালোবাসা না হতে না, তাহলে এই মুহুর্তে থাপ্রে তোমার সব কয়টা দাঁত আমি ফেলে দিতাম।
- ঠিক করে কথা বল প্রিয়া। তুই মেঘলার সাথে এভাবে কথা বলছিস কেন? এত সাহস কোথায় পাস তুই ( কথাগুলো অনেক রেগে বললো আকাশ)
- হেয় মিস্টার আকাশ, মাইন্ড ইউর ল্যাঙ্গুয়েজ!! তুই কাকে বলছেন আপনি? আপনি করে বলবেন আপনি। আর কি যেন বললেন ঠিক করে কথা বলতে? ঠিক বেঠিক বুঝার মত ক্ষমতা আপনার আছে তো? বাকি রইলো সাহসের কথা? যদি সাহস দেখতেই চান তাহলে বলবো, গফের জন যদি অন্যায়ের সাফাই করতেই হয় তাহলে অন্য কারো কাছে করেন আমার সামনে না নয়তো যেই থাপ্পড় টা মেঘলাকে দিতে চেয়েছি সেটা আপনার গালে পড়বে।
- প্রিয়া!!!! (আকাশ)
- আওয়াজ নিচে? নয়তো আমার হাত চলতে খুব একটা সময় লাগবে না।
আর এই যে মিস, মেঘলা কি যেন বলছিলে? আমি টেস্টে পাশ করতে পারবো না? আমি টেস্টে পাশও করবো আর ফাইনাল পরীক্ষাও দিবো। আর হ্যাঁ অবশ্যই ফোন সাথে থাকবে। পারলে আটকিয়ে দেখিয়ো।
- এত কনফিডেন্স তোর? ওহ স্যরি আপনার!? (আকাশ)
- আপনার উদ্দেশ্যে এখন বেশি কিছু বলবো না শুধু এতটুকুই বলবো যে,
বিশ্বাসে মেলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর।

বাসায় গিয়ে দেখি আমার টেবিলের ওপর একটা প্যাকেট। গিফ্ট পেপার দিয়ে সুন্দর সাজানো।
প্যাকেটটা খুলে দেখি একটা সুন্দর ফোন। তবে কি ফোনটা আম্মু দিয়েছে?  ফোনটা অন করেই দেখি অশুভর ছবি। তার মানে মোবাইলটা অশুভ পাঠিয়েছে। তবে কি এই সারপ্রাইজই দিবে বলেছিল সেদিন!!!??
দরজায় কারো কড়া নাড়ার শব্দ পেয়ে তাড়াতাড়ি ফোনটা লুকিয়ে দরজা খুলে দেখি আম্মু এসেছে।
- কিরে দরজা লাগিয়েছিস কেন?
- একটু টায়ার্ড লাগছিল। তাই শুয়েছিলাম।
- ওহ। আচ্ছা শুন আজকে ছেলেরা আসবে
- ছেলেরা আসবে মানে?
- মানে ছেলে পক্ষ আসবে।
- আবার কেন?
- আংটি পড়াতে।
- ওহ 
- হুম। এখন আয় খেয়ে নে
- যাও আসছি।

আম্মু চলে যাওয়ার পর ভাবছি এই বিয়েটা ভাঙ্গি কি করে? আকাশ যে বলছিল আমি সংসার করতে পারবো না, অন্তত ওকে দেখানোর জন্য হলেও বিয়েটা করা দরকার।
আচ্ছা বিয়ে করবো ভালো কথা, তাই বলে কোনো বুইড়া লোক কে! না তা তো হতে পারে না। বিয়েটা আমাকে ভাঙ্গতেই হবে। হাজারো চিন্তা আওরাতে আওরাতে ঘুমিয়ে পড়েছি।

সন্ধ্যার সময় মা এসে ধাক্কাচ্ছে।
- ঐ উঠ উঠ তাড়াতাড়ি উঠ। 
- ধুর! আরেকটু ঘুমাতে দাও তো।
- একটুপরই ছেলেপক্ষ আসবে। উঠ পরে ঘুমাইস।

ঘুম থেকে ওঠে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নিলাম। আজকেও শাড়ি পড়িয়েছে আম্মু। আমার মাথায় শুধু ঘুরছে কি করে ভাঙ্গবো এই বিয়েটা।
ছেলেরা এসে পড়েছে। একটুপরই আম্মু আমাকে ডাকতে আসলো। আমি বললাম, তুমি যাও আমি আপুর সাথে আসবো।
বিয়ের ভাঙ্গার জন্য আমার মাথায় ঘুরছে অন্য ফন্দি।
আমি কি পারবো বিয়েটা ভাঙ্গতে!?

০৬!!

ড্রয়িং রুমে সবার সামনে যাওয়ার পর চোখ যেন একেকজনের ছানাবড়া। নাহ্ সেদিকে আমার কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই কারণ আমার উদ্দেশ্য হলো বিয়েটা ভাঙ্গা। দরকার হলে পড়ে না হয় আম্মুর হাতে দু ' চারটা চড় থাপ্পড়ই খাবো। তাতে কি বিয়ে তো ভাঙ্গবে!
যাক, সবার দৃষ্টি এখন আমার দিকে। কেমন হা করে তাকিয়ে আছে। অবশ্য অবাক হওয়ারই কথা, যেই কান্ড করেছিনা!  হিহিহি। মনে মনে অশুভকে এত্তগুলা ধন্যবাদ দিতে ইচ্ছে করছে। ইশ! কত্ত ভালো ছেলেটা। ভাগ্যিস ফোনটা দিয়েছিল। কথাগুলো মনে মনে বলছি আর হাসছি মিটমিট করে আর সেই সাথে তো হাতে ফোন আছেই। খুব মনোযোগ দিয়ে ফোন টিপছি। 
শাড়ির আঁচল কোমড়ে গুজে, হাতে ফোন নিয়ে গেমস খেলতে খেলতে নিশ্চয় কোনো মেয়ে পাত্র পক্ষের সামনে যাবে না? কিন্তু আমি গিয়েছি। এমন অভদ্র মেয়েকে যে কেউ বিয়ে করতে রাজি হবে না এটা তো আমি শিওর! আজকে ঐ বুড়ো ভাম, খাচ্চর লোকটাকে দেখছি না। সে আসলে আরো একটু ভালো হতো। তারও মনটা উঠে যেত। এই বাড়ির মুখো তো আর হতে না। কিন্তু আমার ধারণাকে মিথ্যা প্রমাণ করে তারা আমাকে অবাক করে দিলো। একজন মহিলা যতটুকু মনে হলো ছেলের মা হবে হয়তো, তিনি আমার দিকে তাকিয়ে বলে,
- বাহ্ কি লক্ষী মেয়ে। কি সুন্দর লাগছে।
তার কথা শুনে আমি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম। এই মহিলা বলে কি! উনি কি আমাকে ভালো করে দেখেনি নাকি!
উনি  আবার বলা শুরু করলো,
- দেখেছিস সিমি, একদম বাঙালি বউয়ের মত লাগছে। কি সুন্দর কোমড়ে শাড়ি গুজে রেখেছে। গ্রামাঞ্চল ছাড়া আজকাল এমন দেখা  যায় না। আজকাল মেয়েরা তো শাড়িই পড়তে চায় না।
কথাগুলো উনি উনার বড় ছেলের বউকে উদ্দেশ্য করে বললো। আমি হা করে তাকিয়ে আছি তাদের দিকে। আমি কি নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারলাম নাকি! মহিলার কোল থেকে একটা ৪ বছরের হবে হয়তো, কিউট পিচ্চিটা আমার কোলে এসে ধপ করে বসে পড়ে।
- ওয়াও! চাচিমনি তুমিও গেম খেলো? জানো আমারও না গেমস অনেক ভালো লাগে। ছোট চাচ্চু বলেছিল যে আমার জন্য একটা মোবাইল পার্টনার এনে দিবে যে সারাক্ষণ আমার সাথে গেমস খেলবে। তুমি আমার সাথে গেমস খেলবে তো চাচিমনি? (পিচ্চিটা)

ওদের কথা শুনে পাড়ছি না শুধু মাটির সাথে মিশে যেতে! মনে মনে বলছি, মাটি তুমি দু'ভাগ হয়ে যাও আমি লুকিয়ে পড়ি।
- কি হলো চাচিমনি? খেলবে না?
- এ্যা? হ্যাঁ মানে....
- শুনো মা, আমার ছেলে সব বলেছে তোমার কথা। তুমি খুব ফোন পাগলী। এটা নিয়ে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু একটা কথা মা, রাস্তায় ফোন চালাবে না। যদি কিছু হয়ে যায়! তখন আমার ছেলের কি হবে? 
- হায়রে আমার কপাল! আমি মরি আমার জ্বালায় আর উনি আছে উনার ছেলের চিন্তায়।  এতকিছু ভেবে আসলাম তার কিছুই হলো না। হায়রে অশুভ, ভেবেছিলাম আপনার দ্বারা একটা শুভ কাজ হলে শুভ বলেই ডাকবো। কিন্তু তা আর হলো কই! অশুভের বাচ্চা তুই বিয়ে করলেও তো পারতি! ধুর না কিসব ভাবছি। (মনে মনে)
- কি হলো মা? কিছু বলো না কেন? তোমার কি এই বিয়েতে অমত আছে?
যেই মুহুর্তে হ্যাঁ বলতে যাবো সেই মুহুর্তেই অশুভর আগমন! আমাকে অবাক করে দিয়ে বলে,
- ওর কোনো অমত নেই মা। ও আমাকে অনেক ভালোবাসে। কিছুদিন পর মোবাইল পাগলী থেকে জামাই পাগলী হয়ে যাবে দেইখো।
ঘরভর্তি সব লোক হেসে দিলো। কত্তবড় মিথ্যাবাদী আমি নাকি তাকে ভালোবাসি!
কি ব্যাপার, আকাশের সাথে তো ঐ বুইড়াটাও আছে দেখছি। সব পরিচয় শেষে জানতে পারলাম লোকটা শুভর বড় ভাই শাওন। আল্লাহ্! কি ভাবছিলাম। আগে যদি জানতাম শুভই পাত্র তাহলে কি আর এত নাটক করতাম নাকি হিহি। কিন্তু শুভকে বুঝতে দেওয়া যাবে না। একটু ভাব তো নিতে হবে তাইনা!
আংটি পড়ানো শেষে সবার জন্য খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সবাই ডিনার করেই যাবে। সবাই খেতে বসেছে, তখন আমি শুভকে টেনে আমার রুমে নিয়ে যাই।
- ঐ ছেলে অশুভ, সমস্যা কি হু?
- প্রশ্নটা তো আমারও। সমস্যা কি? এভাবে টেনে নিয়ে আসলে কেন? আমার ক্ষুধা লাগছে আমি খাবো।
শুভ একটু দুষ্টু হাসি দিয়ে বলে, এই তুমি আবার চুমু টুমু খাওয়াতে আনোনি তো?
- চুমু? হ্যাঁ চুমু? খাওয়াচ্ছি আপনাকে চুমু।
এই বলেই আমি টেবিল থেকে স্কেল নিয়ে বললাম,
এসবের মানে কি? আমাকে না জানিয়েই বিয়ে?
- আমি তো আগেই বলেছিলাম যে আমি তোমাকে একটা সারপ্রাইজ দিবো।
- এটা কোনো সারপ্রাইজ হলো?
- কেন? হয়নি?
- না হয়নি। আর আপনি সবাইকে কেন বললেন যে আমি আপনাকে ভালোবাসি?
- যাতে তুমি বিয়েটা ভাঙ্গতে না পারো। আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি প্রিয়া।
- কিন্তু আমি অন্য একজনকে ভালোবাসি।
- কি বলছো? কাকে ভালোবাসো তুমি?
- কেন আমার ফোনকে! হিহিহি
- ফাজিল মেয়ে। ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম আমি।
- হু ঢং। এখন যান খেতে যান
- হুম।
অশুভ চলে যাচ্ছিল তখন কোমড়ে গুজে রাখা শাড়ির আঁচল টা খু্লছিলাম।
পেছন থেকে শুভ বলে,
- তোমাকে শাড়ি পড়া দেখেই আমার মাথা ঘুরে গেছে। আর যখন দেখলাম কোমড়ে শাড়ি গুজে রেখেছো! ইশ কি বলবো। ভাগ্যিস একটুর জন্য সেন্সলেস হয়নি। একদম বউ বউ লাগছিল। লাভ ইউ আমার মোবাইল পাগলী স্যরি বউটা।

কথাগুলো বলেই শুভ দৌড়ে চলে গেল। নিজের অজান্তেই ওর কথাগুলো শুনে হেসে দিলাম। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কানের দুল খুলছিলাম আর ভাবছিলাম,
- এবার তো আমি আকাশকে দেখিয়েই দিবো যে মোবাইল পাগলী মেয়েরাও ভালোবাসতে জানে। তারাও সংসার করতে পারে।

পরেরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে একটু ছাদে গেলাম। অনেকদিন হলো ছাদে যাওয়া হয়না। সকালের আবহাওয়াটা ছাদ থেকে বেশ অনুভব করা যায়। ছাদে গিয়ে দেখি আকাশের মা ছাদে ফুলগাছে পানি দিচ্ছে।
- কেমন আছো আন্টি? 
- আলহামদুলিল্লাহ্‌, তুই?
- আলহামদুলিল্লাহ্‌ ভালো। এত সকালে ছাদে যে?
- আমি তো সকালেই উঠি। ভাবলাম ফুলগাছ গুলোতে একটু পানি দেই।
- ওহ আচ্ছা।
- তোকে একটা কথা বলবো।
- হুম বলো।
- সত্যি সত্যি উত্তর দিবি।
- আরে বলোই না কি হয়েছে।
- আকাশের সাথে তোর ঝগরা কি নিয়ে?

আমি তো নিজেই জানিনা আকাশ কেন আমার সাথে এমন করলো। আন্টিকে কি বলবো আমি এখন। আকাশ কি কিছু বলেছে নাকি! ব্যাপাটা বুঝার জন্য আন্টিকে বললাম,
- কই ঝগরা হয়েছে? হয়নি তো।
- একদম মিথ্যা বলবি না। আমি সব জানি।
- কে বলেছে? আকাশ? 
- না। মেঘলা।
-মেঘলা!!! কখন বললো?
- কাল এসেছিল আকাশের সাথে বাসায়। আকাশের একটা কল আসায় আকাশ একটু বাহিরে যায়। তখন মেঘলা আমাকে সব বললো। শুধু তাই নয়, তোকে নিয়ে অনেক খারাপ মন্তব্যও করেছে। তুই নাকি আকাশকে অপমান করেছিস আবার থাপ্পড় ও দিয়েছিস।

আন্টির কথাগুলো শুনে অবাক না হয়ে পারলাম না। সবকিছু উল্টা বলা হয়েছে আন্টিকে। আবার এসব কথা মেঘলা বললো? মেঘলার এত বড় সাহস হলো! যদি এসব সত্যিই মেঘলা বলে থাকে তাহলে ওর কপালে খুব বড় দুঃখ আছে।
কিন্তু আন্টির কাছে আমাকে খারাপ করে কি লাভ? আকাশের? নাকি মেঘলা রয়েছে এসব কিছুর মূলে!!!.......
Author, Publisher & Developer

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

উফ!
মনে হচ্ছে আপনার ইন্টারনেট সংযোগে কিছু সমস্যা আছে। অনুগ্রহ করে আগে আপনার ইন্টারনেটের সংযোগ ঠিক করুন এবং তারপর আবার ব্রাউজিং শুরু করুন৷
AdBlock সনাক্ত করা হয়েছে!
আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি আপনার ব্রাউজারে অ্যাডব্লকিং প্লাগইন ব্যবহার করছেন৷ আমরা আপনাকে আপনার অ্যাডব্লকিং প্লাগইন বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করছি, কারন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমরা যে রাজস্ব আয় করি তা এই ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।