আড়ালে আবডালে - পর্ব ১১ - মুন্নি আক্তার প্রিয়া - ধারাবাহিক গল্প


"এমন একটা কাজ করার আগে কী তুই একটাবারও ভাবলি না আমার সম্মানের কথা?"
নিহি সবার সম্মুখে ড্রয়িংরুমে মাথা নিচু করে বসে আছে। আর অনবরত চোখের পানি ফেলছে। কিছুতেই অনলের করা কাজগুলোকে বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করছে না। এত বড় গেম অনল খেলতে পারল? নিহিকে প্রশ্ন করে উত্তরের আশায় চেয়ে আছেন নিজাম ইসলাম। নিহি নিরুত্তর। নীলম বলে,
"নিহি কী করেছে আব্বু?"
"কী করেছে? জিজ্ঞেস কর তোর আদরের বোনকে। বেশি ভালোবেসে নষ্ট করে ফেলেছি। জন্মের সময়ই যদি মুখে লবণ দিয়ে মেরে ফেলতাম তাহলে আজকের এই দিনটা আমায় দেখতে হতো না।" চেঁচিয়ে বলেন নিজাম ইসলাম। একটু দম নিয়ে আবার বলেন,
"আমার সব বিশ্বাস তুই ভেঙে দিলি নিহি।"
নীলমের দিকে তাকিয়ে বলেন,
"প্রিন্সিপাল স্যার কলেজে ডাকলেন আমায়। কলেজের এক ছেলেকে লাইব্রেরীতে জড়িয়ে ধরেছে। বাবা হয়ে এসব কথা বলতে মুখে বাঁধছে আমার! সেখানে আমার মেয়ে এমন কাণ্ড করেছে।"
"দুজন কি দুজনকে ভালোবাসে?" প্রশ্ন করে নীলম।
নিজাম ইসলাম ব্যাঙ্গ করে বলেন,
"ঐ ছেলে নিহিকে ভালোবাসে না। সবার সামনে বলেছে এই কথা। আর তোর বোন! ও আমার সামনে, সবার সামনে বলে যে ঐ ছেলেকে ভালোবাসে! তাও না হয় বুঝতাম যদি, ঐ ছেলেও নিহিকে ভালোবাসতো!"

কারো কোনো কথাই নিহির সহ্য হচ্ছে না। বাঁধ ভাঙা চোখের পানিকেও আটকাতে পারছে না। দৌঁড়ে রুমে চলে যায়। দরজা আটকে দিয়ে ফ্লোরে বসে পড়ে। বালিশের নিচ থেকে ফোন বের করে অনলকে ফোন করার জন্য। অনেকবার চেষ্টা করে অনলের সাথে যোগাযোগ করার। নিহির ফোন রিসিভ করে না অনল। সোশ্যাল মিডিয়ার সবকিছু থেকে নিহিকে ব্লক করে দেয়। নিহির নাম্বারও ব্লকলিস্টে ফেলে রেখেছে এখন। কোনোভাবেই অনলের সাথে যোগাযোগ করতে পারছে না। এত অসহায়ত্ববোধ আর কষ্ট এর আগে কখনো অনুভূত হয়নি। ফোন নিয়ে ফ্লোরে শুয়ে পড়ে। চোখের কোণা বেয়ে গড়িয়ে পড়ে অশ্রুজল। কাঁদতে কাঁদতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে বুঝতেও পারেনি। ঘুম ভাঙে দরজায় নক করার শব্দে। ভাবি ডাকছে। উঠে দরজাটাও খুলতে ইচ্ছে করছে না। ছোঁ মেরে ফোনটা চেক করে দেখে, অনল কোনো ম্যাসেজ করেছে কী না! আশায় পানি। অনলের না কোনো ম্যাসেজ এসেছে আর না কোনো কল। ফেসবুকে গিয়ে দেখে আনব্লক করেছে কী-না! সেখানেও ব্লক। এতটা পরিবর্তন? দরজায় অনবরত নক করেই যাচ্ছে। অনিচ্ছা সত্ত্বেও নিহি উঠে গিয়ে দরজা খুলে দেয়। খাবার হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে তমা। পাশেই দাঁড়িয়ে আছে উপমা। নিহিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে উপমা বলে,
"সব আমার জন্যই হয়েছে না?"
নিহি মৃদু হেসে উপমার পিঠে হাত বুলিয়ে বলে,
"কিছুই হয়নি। ঘরে আয়।"

নিহির পরনে এখনো কলেজের ইউনিফর্ম। উপমা প্রাইভেট পড়ে সরাসরি নিহির বাসায় এসেছে। নিহির মনে পড়ে যায়, এমনই একদিন প্রাইভেট শেষ করে অনল উপমাকে নিয়ে এসেছিল। নিহি দৌঁড়ে ব্যলকোনিতে যায়। আশা করেছিল, অনল আজও উপমাকে নিয়ে এসেছে। তীর্থের কাকের মতো নিচে চোখ বুলিয়েও অনলের দেখা মেলে না। উপমা নিহির কাঁধে হাত রেখে বলে,
"তুই যার আশা করছিস, সে আসেনি।"

নিহি ডুকরে কেঁদে ফেলে। বলে,
"অনল কেন করল এমন? শুধুমাত্র একটা থাপ্পড়ের জন্যই?"
"অমানুষ একটা! ছিঃ! আমি কল্পনাতেও ভাবেনি সে এমন। প্রাইভেট পড়তে গিয়ে দেখি বন্ধুদের নিয়ে রুমে হাসি-ঠাট্টা করছে। সে দিব্যি ভালো আছে নিহি।"
"আমার মনে হয় উপমা, অনল ইচ্ছে করে এমনটা করেনি।"
"তুই কি পাগল নিহি? সবটা নিজের কানে শুনে, চোখে দেখেও এমনটা কীভাবে বলতে পারিস? তুই কি অন্ধভাবে ভালোবেসে ফেললি? আমার কথা শোন, এখনো তেমন কিছুই হয়নি। ভাগ্য ভালো যে, সম্পর্ক গভীর হওয়ার আগেই সব শেষ হয়েছে। না হলে, তুই এখনই যতটা ভেঙে পড়েছিস, পরে তো মরেই যেতি।"
"মরেই তো গেছি আমি! আমি তো অনলের পরিবর্তন মেনে নিতে পারছি না।"
"মানুষ চিনে রাখ। মুখোশের আড়ালে কত নিকৃষ্ট চেহারা দেখেছিস?"

তমা বারান্দায় এসে বলে,
"সময় থাকতে নিজেকে সামলে নাও নিহি। এসব ট্রমা থেকে বেরিয়ে এসো। সব ভাবনা-চিন্তা মাথা থেকে দূর করো। এখন খাবে এসো।"
তমা জোর করে অল্পকিছু খাইয়ে দেয়। উপমা আরো কিছুক্ষণ সময় দিয়ে বাড়িতে চলে যায়। সবার এত বুঝও নিহির মনকে ধাতস্থ করতে পারছে না। শান্ত করতে পারছে না। বুকের ভেতর দহন কমাতে পারছে না এক চুল পরিমাণও। নিস্তেজ শরীরটা বিছানায় এলিয়ে দেয়।


দু'দিন পার হয়ে গেছে অনলের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ হয়নি নিহির। লুকিয়ে ভাবির ফোন থেকেও নিহি অনলকে ফোন করেছিল। নিহির কণ্ঠ শুনে অনল ফোন কেটে দিয়েছে। ফেক আইডি দিয়েও নিহি নক করেছিল। বলেছিল একটু কথা বলতে। অনল নিহির কোনো অাকুতি শোনেনি। ব্লক করে দিয়েছে। কষ্টে দগ্ধ হয়ে নিহির মরে যেতে ইচ্ছে করছে। নিজাম ইসলাম নিহির সঙ্গে কথা বলেন না। যেই মেয়ে বাবার কলিজা ছিল এখন সেই মেয়ের মুখও দর্শন করতে চান না তিনি। নীলমও আগের মতো কথা বলে না। মা-ও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। যেই পরিবারে নিহি সকলের চোখের মনি, ভালোবাসার,আদরের মেয়ে ছিল সে এখন সকলের চোখে বিষ। যেই জায়গাটা সবার মনে নিহির জন্য ছিল সেই জায়গাটা নিহি হারিয়ে ফেলেছে। শুধু অনলের জন্য!

কলেজ থেকে ফোন এসেছে। প্রিন্সিপাল স্যার ফোন করেছেন। জানিয়েছেন অনামিকা ম্যাম নিহিকে টিসি দিতে বারণ করেছেন। এবং তার জন্যই নিহি আরেকটা সুযোগ পাচ্ছে এই কলেজে পড়ার। নিজাম ইসলাম প্রিন্সিপাল স্যারের সঙ্গে কথা শেষ করে নীলমকে বলেন,

"কলেজ থেকে ফোন করেছিল। তারা আরেকটা সুযোগ নিহিকে দিতে চায়। এখন, তুই যা করার কর। আমি আর এসবের মাঝে নেই। যেই সম্মান একবার হারিয়েছি দ্বিতীয়বার একই ভুল করতে চাই না। মোট কথা, আমার আর ইচ্ছেই নেই ও'কে পড়ানোর। কলেজে পড়তে পাঠালে কী হবে? মেয়ে তো যায় প্রেম করতে। ছিঃ!"
তমা ভয়ে ভয়ে বলে,
"বাবা, নিহি বাচ্চা মানুষ। একটা ভুল করে ফেলেছে। তাই বলে এভাবে শাস্তি দেওয়া ঠিক হবে না। অন্তত ইন্টারটা শেষ করুক? অন্য কলেজে এডমিট করাতে গেলেও অনেক ঝামেলা পোহাতে হবে। তাই বলছিলাম যে..."
পুরো কথা শেষ করার আগে নিজাম ইসলাম বলেন,
"তোমাদের যা ভালো মনে হয় করো। আমার কোনো কিছুতেই কোনো সমস্যা নেই।" বলে নিজাম ইসলাম রুমে চলে যান। নীলম তমার কথা শুনে রাজি হয় নিহিকে কলেজে যেতে দিতে। এবং বলে,
"ও'কে বলে দিও, দ্বিতীয়বার এক ভুল যেন না করে।"
________________________

পরেরদিন থেকে কলেজে যায় নিহি। কলেজে গিয়েই অনলকে খুঁজে। সব প্রশ্নের উত্তর অনলকে দিতেই হবে।অনলকে ক্যান্টিনে পাওয়া যায়। বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিল। না চাইতেও অনলকে দেখে নিহির চোখে পানি চলে আসে।নিহি কাঁদতে কাঁদতে অনলের শার্টের কলার চেপে ধরে বলে,
"সমস্যা কী আপনার? আমার ফোন কেন তুলছেন না আপনি? আমার সাথে কথা কেন বলেন না?"
অনল ঝাঁকি দিয়ে নিহির হাত সরিয়ে দিয়ে বলে,
"কলার ছাড়ো আমার! এতকিছুর পরও বোঝো না কেন ইগনোর করি তোমায়? আমি তো ভেবেছিলাম তুমি বুদ্ধিমতি মেয়ে। যেদিন অফিসে সবার সামনে আমি তোমাকে ভালোবাসার কথা অস্বীকার করলাম সেদিনই তো বুঝে ফেলার কথা ছিল। এরপরও যখন বুঝতে পারোনি তখন বুঝিয়েই বলি। কলেজে যেদিন তুমি আমায় থাপ্পড় মেরেছিলে সেদিনই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম কঠিন প্রতিশোধ নেব আমি। বোঝার পর থেকে কেউ কখনো আমার গায়ে হাত তুলেনি। আর সেখানে তুমি অতি তুচ্ছ সাধারণ একটা মেয়ে হয়ে সবার সামনে আমায় মেরেছ। এত সহজে তোমায় আমি কী করে ছেড়ে দিতাম বলো? চাইলেই হয়তো পাল্টা থাপ্পড় আমিও মারতে পারতাম। কিন্তু সেই প্রতিশোধে কোনো মজা থাকত না। যেই মজাটা এখন পাচ্ছি। তোমার নিজের লাইফ এবং স্টাডি লাইফ দুটোই হেল করে দিয়েছি। কিন্তু আমার মায়ের জন্যই আবার তুমি এই কলেজে পড়ার পারমিশন পাচ্ছ। তাই আমার সাথে এমনকিছু করতে এসো না যাতে আবারও প্রিন্সিপাল স্যারকে তোমার নামে নালিশ করতে হয় আমার।"
নিহির কষ্টে বুকটা ফেঁটে যাচ্ছে। একটুও বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করছে না অনলের কথা। গলা ভারী হয়ে আসছে। চোখ দুটো ক্রমাগত ঝাপসা হয়ে আসছে। ভারী গলাতেই বলে,
"তাহলে এসব ভালোবাসা..."
"সব নাটক সব। আমি তোমায় ভালোবাসব এটা ভাবো কী করে তুমি? যেদিন আমাদের বাড়িতে প্রথম তুমি আসো তখন আমি কোনো হ্যালুসিনেশনে ছিলাম না। সেদিন যা করেছি সজ্ঞানে বুঝে-শুনেই করেছি। আমি জাস্ট তোমায় এটাই বুঝাতে চেয়েছিলাম যে, সারাক্ষণ তোমার কথাই ভাবি আমি। তোমায় ভালোবাসি আমি। আর তুমি বিশ্বাসও করে নিয়েছ।
তোমার বোনের বাড়ির সামনে যে আমাদের দেখা হয় সেটা ছিল কাকতালীয়। আমি জানতামও না তুমি ওখানে আছো। আমি গিয়েছিলাম আমার প্রয়োজনীয় কাজে। তোমায় দেখে ভাবলাম একটা টোপ ফেলেই দেখি। তখন তোমায় বলি, তোমায় খুঁজতে খুঁজতে এখানে এসেছি। তুমি সুবোধ বালিকার মতো এটাও বিশ্বাস করেছিলে। এইযে এতগুলো মাস তোমার পেছনে ব্যয় করেছি। সেটা কি এমনি এমনিই? শুধুমাত্র এই প্রতিশোধের জন্যই। আমার ফ্রেন্ড লিসার সাথে আমি মিজবিহেভ করেছি তোমার হয়ে? এটাই তো ভাবতে তুমি। আসলে তা নয়, তোমার মনে জায়গা পাওয়ার জন্যই এমন করতাম। এইযে এত সুন্দর প্ল্যান করেছি, এটা কিন্তু আমার বন্ধুমহলের কেউই জানত না। কেন জানো? কারণ আমি কোনো রিস্ক নিতে চাইনি। আর লাইব্রেরীর ঘটনাটা? সেদিনও আমি তোমায় জড়িয়ে ধরতে চাইনি। জানালা দিয়ে আমি প্রিন্সিপাল স্যারকে আসতে দেখেই তোমায় জড়িয়ে ধরেছিলাম। আর তার পরের ঘটনা তো তুমি জানোই। আরো কিছু শোনা লাগবে?"

নিহির মাথা ঘুরছে। নিজেকে স্থির রাখতে পারছে না। অনল সানগ্লাসটা চোখে দিয়ে হাসতে হাসতে বন্ধুদের নিয়ে ক্যান্টিন থেকে বের হয়ে যায়। নিজের ভারসাম্য বজায় রাখতে না পেরে নিহি একটা চেয়ারে বসে পড়ে। একটা মানুষ এত নিখুঁত অভিনয় কী করে করতে পারে? দেয়ালের সাথে মাথা ঠেকিয়ে মনে মনে বলে,
"আপনার নামের অর্থ আজ সত্যিই স্বার্থক মনে হচ্ছে অনল। আপনি সত্যিই আগুনে আমায় জ্বালিয়ে, পুড়িয়ে মারলেন। যেই আগুন দেখা যায় না, ধরা যায় না। শুধু বুকের দহনের সাথে সাথে অনুভব করা যায়।"
দু চোখের কার্ণিশ বেয়ে দুপাশে চোখের পানি গড়িয়ে পড়ে নিহির।
উপমা কলেজে আসার পর থেকেই নিহিকে খুঁজছে। দীপ্ত উপমাকে দেখে বলে,
"তাড়াতাড়ি ক্যান্টিনে চলো। অনল ভাইয়ার কাছে গেছে নিহি।"
দীপ্ত আর উপমা দৌঁড়ে যায় নিহির কাছে। নিহি স্তব্ধ হয়ে বসে আছে। শুধু গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে নোনাজল। দীপ্ত আর উপমা দুজনে নিহির পাশে বসে বলে,
"অনল ভাইয়া তোকে কিছু বলেছে? এই নিহি? চুপ করে আছিস কেন?"
নিহি নিশ্চুপ। দীপ্ত বলে,
"এই নিহি, কথা বলো।"

নিহি দাঁড়িয়ে হাতের উল্টো পিঠে চোখের পানি মুছে ক্যান্টিন থেকে বের হয়। পিছু পিছু দীপ্ত আর উপমাও আসছে। উপমা জিজ্ঞেস করছে, 'কোথায় যাচ্ছিস?' নিহি কোনো উত্তর না দিয়েই এগোতে থাকে। সেই কৃষ্ণচূড়া গাছটির কাছে যায়। এখন সেখানেই আছে অনল আর ওর বন্ধুরা। নিহিকে আসতে দেখে লিসা বলে,
"অনল, নিহি আসছে।"
অনল নিহির দিকে তাকিয়ে বলে,
"আসতে দে।"

নিহি কাছাকাছি আসতেই অনল উঠে দাঁড়ায়। নিহি মুখোমুখি দাঁড়ায় অনলের। সবসময়ের মতো অনলের ঠোঁটে হাসি। অনল বলে,
"কোনো প্রশ্ন করতে এসেছ সুন্দরী?" অনলের ব্যঙ্গ করে বলা কথা শুনে ওর বন্ধুরা সবাই হো হো করে হেসে ফেলে। নিহি তখনও অনলের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। অনল হাসছে মন খুলে। জিতে গেলে কেই বা মন খারাপ করে থাকবে? নিহি বলে,
"নিঃসন্দেহে আপনি একজন নিখুঁত অভিনেতা।"
"থ্যাঙ্কিউ।" বলে, মুখ টিপে হাসে অনল। জিজ্ঞেস করে,
"আর?"
"এইযে আপনার ঠোঁটে আজ জয়ের হাসি, একদিন এই আপনার চোখেই থাকবে বিষাদের পানি। আপনি যদি শুধু আমাকেই অপদস্থ করতেন তাহলে আমি মেনে নিতাম। কোনো অভিযোগ করতাম না। কিন্তু আপনি আমার বাবাকে অপমান করেছেন।পরিবারের সবার কাছে আমায় ছোট করেছেন। কলেজের সবার কাছে আমায় খারাপ প্রমাণ করেছেন। সত্যি মানতেই হবে, আপনি আপনার প্ল্যান এবং প্রতিশোধে সাক্সেসফুল। খুব জঘন্য আরো একটা অন্যায় কাজ করেছেন আমার ইমোশোন নিয়ে খেলে। আপনি অন্যভাবেও প্রতিশোধ নিতে পারতেন। আমার ইমোশোন, আমার ভালোবাসাকে কেন ইস্যু করলেন অনল? শুধু একটা থাপ্পড়ের জন্যই? চাইলে এখনই আমি আপনাকে আরো একটা থাপ্পড় দিতে পারতাম। কিন্তু আমি দেব না। কারণ আমি আপনার ধাতের না। কোনো দোষ না করা সত্ত্বেও মিথ্যে প্রতিশোধ নিয়েছেন আপনি জেদের বশে। আর আমার প্রতিশোধ নেবে প্রকৃতি। 'রিভেঞ্জ অফ ন্যাচার' বলতে একটা কথা আছে জানেন তো? আমি আপনায় ছেড়ে দিলাম। না কোনো অভিযোগ রাখলাম আর না কোনো প্রতিশোধের ইচ্ছে। আপনার প্রতিশোধের উত্তর দেবে আল্লাহ্। যেই ভালোবাসা নিয়ে আপনি খেলেছেন, একদিন এই ভালোবাসা পাওয়ার জন্যই উন্মাদ হয়ে থাকবেন। সেটা আমার জন্য হোক বা অন্য কোনো মেয়ের জন্য। পস্তাতে আপনাকে হবেই। অবশ্য আপনি ধন্যবাদ পাওয়ারও যোগ্য। আপনার কারণেই আমি মানুষ চিনতে শিখলাম। যেই ভুলটা আমি করেছি আপনাকে ভালোবেসে সেই ভুলটা আর কেউ না করুক। আপনি তৈরি থাকিয়েন আপনার পরিণতি দেখার জন্য!"
.
.
.
চলবে....................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন