অবেলার অভিলাষ - পর্ব ১০ - শারমিন আক্তার সাথী - ধারাবাহিক গল্প


       দিলরুবা আন্টি চুপ‌টি ক‌রে ভিত‌রে ঢু‌কে, বেডরু‌মে উঁকি দি‌য়ে হা হ‌য়ে গে‌লো। কারন তি‌নি দেখ‌লো, আয়াত‌ তনয়ার চু‌লে তেল লা‌গি‌য়ে দি‌চ্ছে। তি‌নি চোখটা ভা‌লো ক‌রে কচ‌লে আবার দেখ‌লেন। কারন এ ধর‌নের বিরল দৃশ্য দেখা, ডাই‌নোসর দেখার মতই অদ্ভুদ লা‌গে। কিন্তু নাহ তি‌নি ভুল দেখ‌ছেন না। স‌ত্যি আয়াত পরম য‌ত্নে তনয়ার চু‌লে তেল লা‌গি‌য়ে দি‌চ্ছে আর তনয়া‌কে বকা দি‌চ্ছে।

__ব‌লি তু‌মি কি নি‌জের একটু খেয়াল রাখ‌তে শিখবা না?

__আ‌রে এত বকা দেয়া লা‌গে?

__‌তো কি কর‌বে? চুল গু‌লো‌কে তো কা‌ঁকের বাসা বা‌নি‌য়ে ফেল‌ছো। বলি নি‌জের চু‌লের একটু যত্ন নি‌তে পা‌রোনা? য‌দি যত্ন না নি‌তেই পার‌বে ত‌বে এত ঘন লম্বা চুল রাখার কি দরকার? কে‌টে ছোট ক‌রে ন্যাকা মে‌য়ে‌দের মত স্টাইল কর‌লেই হয়! এটা ব‌লে তনয়ার মাথায় আয়াত একটা ঠুয়া মার‌লো।

তনয়া মাথায় হাত দি‌য়ে বলল,
__আউচ! মারছেন কেন?

__‌তো‌ কি কর‌বে? এত বড় মে‌য়ে দু‌দিন পর যার এমবিএ শেষ হ‌বে, আঠারো‌তে বি‌য়ে হলে যে, এত‌দি‌নে বাচ্চার মা হ‌য়ে যে‌তো, সে এখ‌নো চু‌লে তেল লাগা‌তে পা‌রেনা। এটাও আমায় দেখ‌তে হ‌লো?

__‌কি কর‌বে‌া? সবসময় তো মা লা‌গিয়ে দি‌তো। র‌শ্মির কাছে থাকার সময় র‌শ্মি লা‌গি‌য়ে দি‌তো। এখা‌নে এসে তো একদম একা হ‌য়ে গে‌ছি। কে লা‌গি‌য়ে দি‌বে?

__বাহ্ ভা‌লো। কেন আমার মত ছয় ফুট লম্বা চওরা লোকটা‌কে কি তোমার চো‌খে লা‌গেনা।

__আ‌মি কি ক‌রে জান‌বো আপ‌নি মে‌য়ে‌দের চু‌লে তেল দি‌তে পা‌রেন। তনয়া ভ্রু কুচ‌কে আয়া‌তের দি‌কে তা‌কি‌য়ে জি‌জ্ঞেস করলো, ঐ আপ‌নি কোথা থে‌কে শিখ‌ছেন?

আয়াত মুচ‌কি হে‌সে বলল,
__‌ছোট বেলা যখন মা মেঘা‌কে চুলে তেল দি‌য়ে দি‌তো। সেটা দে‌খে শিখ‌ছি।

__বাহ্। তার মা‌নে আমার সারা জীব‌নের টেনশন শেষ?

__মা‌নে?

__আ‌রে বুঝ‌লেন না। আপনার সা‌থেই তো সারা জীবন থাক‌ছি তো কষ্ট ক‌রে আমায় আর চু‌লে তেল লাগা‌নো শিখ‌তে হ‌বেনা। আপ‌নি দি‌য়ে দি‌বেন।

__পাগলী একটা।
আয়াত চু‌লে তেল দি‌য়ে দি‌চ্ছে আর তনয়া চোখ বন্ধ ক‌রে আছে। কোন এক অজানা সু‌খে তনয়ার চোখ ভ‌রে আস‌ছি‌লো বারবার। তনয়া ভারী গলায় বলল,

__আয়াত!

__হুমম।

__মা‌কে খুব মিস কর‌ছি? মাও আপনার মত আমা‌কে এভা‌বে চু‌লে তেল দি‌য়ে দি‌তো। জা‌নেন বাবা চুল বেঁ‌ধে দি‌তো। আজ সবাই থে‌কেও আমি একা। মিস দেম।

__একা কোথায় আমি আছিনা। সবসময় তোমার পা‌শে থাক‌বো প্র‌মিজ। 

তনয়া আয়া‌তের দি‌কে ঘু‌রে ওকে জ‌ড়ি‌য়ে ধ‌রে বলল,
__আয়াত আপ‌নি এত ভা‌লো কেন?

__ভা‌লো হবার মত কি ক‌রে‌ছি?

__‌কী ক‌রেন‌নি সেটা ব‌লেন! বিশ্বাস ক‌রেন আয়াত প্র‌তিটা মে‌য়ে আপনার মত একজন জীবনসঙ্গী চায় যে, একটু কেয়া‌রিং হ‌বে। যে মে‌য়েটার শরীর ছোঁয়ার আগে মন ছু‌ঁয়ে দি‌বে। আপ‌নি তো এখন পর্যন্ত আমার নগ্ন শরীর স্পর্শ না ক‌রে আমার মন স্পর্শ ক‌রে‌ছেন।আমার মনটা‌কে আষ্টে পি‌ষ্টে জ‌ড়িয়ে ফেল‌ছেন। আমার ম‌নের উপর নি‌জের সমস্ত প্রভাব বিস্তার ক‌রে ফেল‌ছেন। ভা‌লো হ‌তে এর থে‌কে বে‌শি কি লা‌গে?

তনয়া আয়াত‌কে জ‌ড়ি‌য়ে ধ‌রে আছে। আয়াতও আর কিছু বল‌লো না। তনয়া‌কে নি‌জের বাহু‌ডো‌রে আবদ্ধ ক‌রে ফেলল।

‌যে রাগ নি‌য়ে দিলরুবা বেগম ওদের কথাশুনা‌তে এসে‌ছি‌লো, সে রাগটা আশ্চর্য জনক ভা‌বে কোথায় যে‌নো গা‌য়েব হ‌য়ে গে‌ছে। ওনি আগে ওদের নি‌য়ে যতটা বা‌জে মন্তব্য নি‌য়ে আস‌ছি‌লো এখন ম‌নে হ‌চ্ছে ওরা দু‌টো ঘুঘু পা‌খির জোড়া, যারা একে অপরকে ছাড়া নিঃসঙ্গ নক্ষ‌ত্রের মত। ওনি ম‌নে ম‌নে বল‌ছে, স‌ত্যি দু‌টোকে বেশ মা‌নি‌য়ে‌ছে। একেবা‌রে সোনায় সোহাগা। 

তনয়া আয়া‌তের বুক থেকে মাথা তু‌লে দরজার দি‌কে তাকা‌তেই দেখ‌লো, দিলরুবা দাড়া‌নো। তা‌কে দে‌খেই তনয়া ত‌রিঘ‌ড়ি ক‌রে আয়াত‌কে ছে‌ড়ে দি‌য়ে দাড়া‌লো। লজ্জায় আর ভ‌য়ে ঢোক গি‌য়ে বলল,
__আ‌ন্টি আ আ আপ‌নি কখন এলেন?

__মাত্র এলাম। তোমা‌দের দরজা খোলা ছি‌লো তাই পার‌মিশন না নি‌য়ে ঢুকে পড়ছিলাম। দুঃখীতো।

__আ‌রে না‌ না আন্টি ঠিক আছে। ঐ তখন আমি বাই‌রে বের হ‌য়ে‌ছিলাম হয়‌তো ভু‌লে দরজা লক ক‌রি‌নি। কিছু বল‌বেন আন্টি?

‌দিলরুবা কি বল‌বে ভে‌বে পা‌চ্ছেনা। তারপর কিছুটা তারাহু‌রো ক‌রে বলল,
__আজ আমার ছোট ছে‌লে (দীপু) রাজশাহী থে‌কে সকা‌লে বা‌ড়ি ফিরে‌ছে। তাই দুপু‌রে তোমরা মা‌নে তু‌মি আর আয়াত আমা‌দের বাসায় খা‌বে।

__‌কিন্তু আন্টি।

__নাহ কোন কিন্তু না। দুপু‌রে যে‌নো তোমা‌দের দুজ‌কে বাসায় দে‌খি।

তনয়া আর কিছু না ব‌লে তার কথায় মাথা না‌ড়ি‌য়ে সম্ম‌তি জানা‌লো। 
‌দিলরুবা যে‌তে যে‌তে ভাব‌ছে আমি ছে‌লে মে‌য়ে দু‌টো‌কে বকা দিতে কেন পারলাম না? দুজন‌কে দেখ‌লে বকা দেয়ার মত মানু‌সিকতা কেন জা‌নি হা‌রি‌য়ে যায়। দু‌টো দেখ‌তে যেমন তেম‌নি মধুমাখা কথা। দে‌খি ভ‌বিষ্য‌তে কি হয়? আল্লাহ ভরসা।

‌দিলরুবা যে‌তেই তনয়া দরজা লক ক‌রে বু‌কে থুথু দি‌য়ে স্ব‌স্তির নিঃশ্বাস ফেল‌লো। আয়াত মৃদু হে‌সে বলল,
__ভয় পে‌য়ে‌ছি‌লে?

__একটু। আয়াত বা‌রোটার বে‌শি বে‌জে গে‌ছে গোসল কর‌তে হ‌বে।

__‌দে‌খো বি‌য়ের আগে আমি তোমায় গোসল ক‌রি‌য়ে দি‌তে পার‌বোনা। (শয়তা‌নি হা‌সি দিয়ে)

__আপ‌না‌কে আমি বল‌ছি আমা‌কে গোসল ক‌রি‌য়ে দিতে! হুহ। এম‌নি‌তেও এখন য‌দি গোসল করা‌তে যান ত‌বে য‌দি আউট অফ ক‌ন্ট্রোল হয়ে নি‌জের উপর বিশ্বাস হা‌রি‌য়ে ফে‌লেন! ভাব‌ছেন য‌দি ভুল ক‌রে ব‌সেন। তাই তো?

__ও হ্যা‌লো ম্যাডাম। আপ‌নি আমার কা‌ছে থাক‌লেও আমি নি‌জে‌কে ক‌ন্ট্রোল কর‌তে পারি। আপ‌নি জানেন না আমি ঠিক কতটা শক্ত ছে‌লে।

__‌ওহ রি‌য়েল!(ব‌লে আয়া‌তের কা‌ছে আস‌তে লাগলো)

__ইয়েস।

__‌রি‌য়ে‌লি! (আয়া‌তের আরো কা‌ছে এসে)

__ই ই ইয়েস। কাঁপা কাঁপা গলায়

এবার তনয়া আয়া‌তের একদম কা‌ছে এসে নি‌জেই আয়া‌তের হাতদু‌টো নি‌জের কোম‌রে রে‌খে আয়া‌তের পা‌য়ের উপর নি‌জের পায়ের ভর দি‌য়ে দা‌ড়ি‌য়ে, আয়া‌তের কা‌নের কা‌ছে মুখ নি‌য়ে আল‌তো ক‌রে ফু দি‌য়ে বলল,
__‌রি‌য়ে‌লি!

এবার আয়াত কি বল‌বে ভে‌বে পা‌চ্ছেনা। ওর তো প্রাণ যায় যায় অবস্থা। নি‌জে‌কে সামলা‌তে হিম‌সিম খা‌চ্ছে। পৃ‌থিবীর যত শক্ত পুরুষই হোকনা কেন, রমনীর রহস্যময়ী ভা‌লোবাসাময় ছলনার কা‌ছে সে যে, দুর্বল , অসহায় হ‌য়ে প‌রে। আয়া‌তের ম‌নে চা‌চ্ছে তনয়া‌কে আদ‌রে আদ‌রে ভ‌রি‌য়ে দি‌তে। কিন্তু বি‌য়ের আগে কিছু কর‌বেনা ব‌লে প্র‌তিজ্ঞা ক‌রে‌ছে। যার কার‌নে আজ এত কষ্ট সহ্য কর‌তে হ‌চ্ছে। আয়াত দু তিনটা বড় বড় নিঃশ্বাস ছে‌ড়ে বলল,

__হ হ হ হ্য হ্যাঁ। 

তনয়া দুষ্ট হা‌সি দি‌য়ে নি‌জে‌কে আয়া‌তের বু‌কে সমার্পন ক‌রে আয়া‌তের বুকে ক‌য়েকটা চু‌মো খে‌লো। তারপর নি‌জের ঠোঁটটা আয়া‌তের গা‌লের কা‌ছে নি‌য়ে গি‌য়ে গভীর ভা‌বে‌ আয়াতের গা‌লে ঠোঁট ছুঁ‌য়ে দি‌লো। প্রায় তিন মি‌নি‌টের মত এরকম অবস্থায় ছি‌লো। আয়া‌তের পু‌রো শরী‌রে ঝিম ধ‌রে গে‌ছে। নি‌জের চেতনা শ‌ক্তি লোপ পা‌চ্ছে। ম‌নে হ‌চ্ছে পু‌রো শরী‌রে বিদ্যুৎ দ্রুত গ‌তি‌তে ছুট‌ছে।গায়ে কোন শ‌ক্তি পা‌চ্ছেনা। তনয়া‌কে সহই মা‌নে তনয়া‌কে বু‌কে নি‌য়ে দপ ক‌রে বিছানায় শু‌য়ে পর‌লো। তনয়া পরম আবে‌শে চোখ বন্ধ করে আয়া‌তের বু‌কে শু‌য়ে রই‌লো। আয়াত তনয়া‌কে অনেকক্ষ জ‌ড়ি‌য়ে ধ‌রে থে‌কে লম্বা লম্বা নিঃশ্বাস নি‌য়ে বলল,
__প্লিজ তনয়া আমায় এভা‌বে মেরোনা।

__‌কেন?

__এভা‌বে আমা‌কে জ্বালা‌নোটা ঠিক? 

__তাহ‌লে কিভা‌বে জ্বালা‌বো?

__‌কোন ভা‌বেনা। তনয়া তোমরা মেয়েরা বড্ড পা‌জি। এভা‌বে নি‌জে‌দের ছলনা দি‌য়ে আমা‌দের মত বেচারা ছে‌লে‌দের সি‌ডিউস ক‌রো প‌রে আমরা কিছু কর‌লে দোষ হয় আমা‌দের। হুহ। 

__আচ্ছ‌া! ত‌বে এখন শু‌য়ে থাকুন আমি গোসল ব‌রে আসি।

আয়াত তনয়া‌কে শক্ত ক‌রে জ‌ড়ি‌য়ে ধ‌রে বলল, 
এখন‌ কোথায় পালা‌চ্ছেন ম্যাডাম! এখন তো আমি তোমা‌কে ছাড়‌বো না।

__‌ঠিক আছে ধ‌রে রাখুন। 

আয়াত তনয়ার কথায় কিছুটা ভ্যাবাচ্যাকা খে‌য়ে বলল,
__না না যাও যাও গোসল ক‌রে নাও আমি খুব ভা‌লো ছে‌লে। 

তনয়া আয়া‌তের কপা‌লে ভা‌লোবাসার পরশ দি‌য়ে উঠে বাথরু‌মে চ‌লে গে‌লো। আয়াত মৃদু হে‌সে পাগলী ব‌লে, কতক্ষন বিছানায় শু‌য়ে থে‌কে ভাব‌লো,
__‌কি ক‌রে তনয়ার ত্যারা‌ বাপ‌কে শা‌য়েন্তা ক‌রে ত্যারা‌কে সোজা করা যায়। আর লা‌বিবা আর তান‌ভির সম্পর্ক কি ক‌রে ঠিক করা যায়! তার আগে আয়মন আপু‌কে খুঁ‌জে বের কর‌তে হ‌বে। 

আয়াত আবার ভাব‌ছে তনয়ার বাবা‌কে আগে কি ক‌রে শা‌য়েস্তা করা যায়। আয়া‌ত নি‌জে নি‌জে বল‌ছে দাদার ব্যাটা‌কে লঞ্চঘা‌টের পোর্টরোড মা‌ছের বাজা‌রে নি‌য়ে ঘন্টা চা‌রে বেঁ‌ধে রাখ‌লে কেমন হয়? মা‌ছের গন্ধে ব‌মি ক‌রে ‌পে‌টের ‌ভিত‌রের সব শয়তা‌নি ‌বের হ‌য়ে যা‌বে।

     দুপুর বেলা আয়াত তনয়া দিলরুবা আন্টির বাসায় খে‌তে গে‌লো। তার ছে‌লে দীপুর সা‌থে প‌রিচয় হ‌লো। কিন্তু আয়া‌তের দীপুর আচরন তনয়ার দি‌কে চাইবার ধরন যে‌নো কেমন লাগ‌ছি‌লো? 
‌যেমন, তনয়া কাপড় পর‌ছে, তখন তনয়ার কোম‌রের হালকা একটু দেখা যা‌চ্ছি‌লো। কিন্তু দীপু‌ বার বার সে‌দি‌কে তা‌কা‌চ্ছি‌লো। আয়াত সেটা খেয়াল হ‌তেই নি‌জেই তনয়ার কা‌ছে এসে তনয়ার কোম‌রের কাপড় ঠিক ক‌রে দি‌লো। আরো ক‌য়েক জায়গায় আয়া‌তের ভিষন খটকা লাগ‌লো। দীপু‌কে ওর মো‌টেও সু‌বিধার ম‌নে হ‌চ্ছেনা। তনয়া‌কে এখা‌নে রাখ‌তে কেমন যে‌নো ভরসা পা‌চ্ছেনা আয়াত।

২৭!!

        ২৩ দিন পর____
আয়াত তনয়াকে কে‌বি‌নে ডে‌কে বলল,

—————

__তনয়া আজ য‌দি আমি একটু স্বার্থপর হই ত‌বে কী তু‌মি খুব বে‌শি রাগ কর‌বে?

__আ‌গে দেখ‌তে হ‌বে স্বার্থপর হওয়াটা ঠিক কতখা‌নি স্বার্থপরতার!

__আ‌মি তোমার প‌রিবা‌রের সা‌থে তোমার সম্পর্ক ঠিক করার সব প‌রিকল্পনা ঠিক ক‌রে ফেল‌ছি।

__কী? স‌ত্যি! (ভিষন খু‌শি হ‌য়ে)

__হ্যাঁ কিন্তু আমার কিছু শর্ত আছে।

__এ্যাঁ! এ‌তে আবার কী শর্ত?

__প্রথমত তোমার প‌রিবা‌রের সা‌থে সব ঠিক হ‌য়ে যাবার পরও তু‌মি আমার অফিস থে‌কে জব ছাড়‌তে পার‌বে না।
আর দ্বিতীয় হ‌লো, এখন যেমন সপ্তা‌হে এক‌দিন আমা‌কে সময় দাও তেমন দি‌তে হ‌বে।
আর তৃতীয় শর্ত যতদ্রুত সম্ভব আমা‌কে বি‌য়ে কর‌তে হ‌বে।
আর চতুর্থ যে, বা‌ড়িটায় ভাড়া থা‌কো সেটা বদলা‌তে হ‌বে,তাও এ মা‌সের ম‌ধ্যে।
শর্ত মান‌লে শুধু তোমার সা‌থে প‌রিবা‌রের সম্পর্কই ঠিক হ‌বেনা। সা‌থে লা‌বিবা ভা‌বি আর তান‌ভির ভাইয়ার সম্পর্কও ঠিক করার ব্যবস্থা করে দি‌বে‌া। আয়মন আপুর ঠিকানা সহ যাবতীয় তথ্য বের ক‌রে ফেল‌ছি। আর শর্ত না মান‌লে তোমার প‌রিবা‌রের সা‌থে তোমার সম্পর্ক আরো খারাপ হবে। আমি ক‌রে দি‌বো। তখন বাধ্য হ‌য়ে তোমা‌কে আমার কা‌ছেই থাক‌তে হ‌বে।

__‌দিস ইজ রি‌ডিওকুলাস আয়াত। আপ‌নি রী‌তিমত আমায় ব্ল্যাক‌মেইল কর‌ছেন। 

__‌সে জন্যই তো বললাম, মান‌লে মা‌নো, তাহ‌লে পু‌রো দু‌টো প‌রিবার‌কে পা‌বে। আর না মানলে অন‌লি মি মা‌নে আমা‌কেই বেঁ‌ছে নি‌তে হ‌বে। নো চ‌য়েজ!

__ইউ আর টু মাচ আয়াত!

__টু মাস, থ্রী মাচ, বোয়াল মাচ যাই ব‌লো শর্তে রা‌জি কিনা সেটা ব‌লো?

তনয়া তীক্ষ্ণ দৃ‌ষ্টি‌তে আয়া‌তের দি‌কে তা‌কি‌য়ে বলল,
__‌ঠিক আছে সবাই‌ তো বুঝলাম। কিন্তু যে, বা‌ড়ি‌তে থাকি, সেখা‌নে কী সমস্যা?

__‌তোমার চোখ নেই তনয়া? তু‌মি খেয়াল ক‌রো‌নি ঐ বা‌ড়ি‌ওয়ালার ছে‌লে হারামজাদা দীপুটা সবসময় অসভ্য বেয়াদপের মত তোমার দিকে তা‌কি‌য়ে থা‌কে। শালা হ্যাংলা লুচ্চা একটা। আমি জে‌নেশু‌নে তোমা‌কে ওর মত হারা‌মির বা‌ড়ি‌তে থাক‌তে দেই কি করে ব‌লো? শত হ‌লেও আমার ভ‌বিষ্যৎ বাচ্চার মা ব‌লে কথা! (দুষ্ট‌মি ক‌রে)

তনয়া মুখ টি‌পে হে‌সে বলল,
__‌কিন্তু আয়াত আমি ছয় মা‌সের এগ্রি‌মেন্ট এ ঘরটা নি‌য়েছি। অথচ তিনমাসও হয়‌নি। এখন বাসা ছাড়‌লে আগামী তিনমা‌সের পে‌মেন্ট করা লাগ‌বে। আর য‌দিওবা ঘর ছে‌ড়ে দিলাম কিন্তু এত দ্রুত নতুন ভা‌লো ঘর কোথায় খুঁ‌জে পা‌বো?

__অত চিন্তা তোমার করা লাগ‌বে না। তোমার জন্য আলাদা ফ্ল্যাট ভাড়া করা হ‌য়ে‌ছে। আন্টি‌কে টাকা দি‌য়ে তোমার এগ্রি‌মেন্ট ক্যান‌সেল করা হ‌য়ে‌ছে।

__এতসব ক‌বে কর‌লেন? আর আ‌মি আপনার টাকা কেন নি‌বো? 

__চুপ (জো‌ড়ে ধমক দি‌য়ে) সবসময় ত্যারা‌মি করা তোমার অভ্যা‌সে প‌রিনত হ‌য়ে‌ছে। বে‌শি বক বক কর‌লে ঠোঁট দু‌টো‌তে সুপার গ্লু লা‌গি‌য়ে দি‌বো। তু‌মি আগামী কাল‌কেই প্যা‌কিং ক‌রে নতুন ফ্ল্যা‌টে উঠ‌বে। আমি তোমায় প্যা‌কিং এ হেল্প ক‌রে দি‌বো, তাই ‌বে‌শি চিন্তা নেই।

তনয়া কিছু বলার জন্য মুখ খুল‌তেই আয়াত বল‌ল, থাক অনেক বল‌ছো। আর বল‌তে হ‌বেনা। আর অফি‌সে কি বয়‌ফ্রেন্ড এর সা‌থে প্রেম কর‌তে আসো? যাও নি‌জের কাজ ক‌রো। খা‌লি ফা‌কিবা‌জি। আর শোনো চার দিন পর অফি‌সের ক‌া‌জে চট্টগ্রাম যে‌তে হ‌বে ম‌নে আছে তো?

তনয়া চোখ বড় বড় ক‌রে, রাগী চো‌খে কতক্ষন তা‌কি‌য়ে থে‌কে মুখ ভেং‌চি কে‌টে আয়া‌তের কে‌বিন থে‌কে চ‌লে গে‌লো। আয়াত হা হা হা ক‌রে হে‌সে কা‌জে মন দি‌লো।

২৮!!

     অনেকক্ষন যাবত তানভী মেঘার ক‌লে‌জের বাই‌রে দা‌ড়ি‌য়ে আছে। আজ বৃহস্প‌তিবার তাছাড়া আগামী, শুক্র, শনি আর র‌বিবার ওর কাজ বন্ধ তাই বা‌ড়িতে আস‌লো। তনয়ার সা‌থে ফোনে কথা হ‌য়ে‌ছে। রাতে তনয়ার সা‌থে দেখা হ‌বে। ক‌দিন যাবত মেঘার সা‌থে কথা হ‌চ্ছেনা। মেঘা রাগ ক‌রে কথা বল‌ছেনা। রা‌গের কারন হ‌লো, তানভী সে‌দিন নি‌জের অজা‌ন্তেই ব‌লে ফেল‌ছে ও মেঘা‌কে ভা‌লোবা‌সে। যার পর মেঘা শুধু একটা মে‌সেস কর‌ছে তানভী‌কে। মে‌সেটা ছি‌লো,

তানভী,
        আমা‌দের ভিতর বন্ধু‌ত্বের ডোরটাই মজবুত ছি‌লো। কিন্তু আপ‌নি ক‌বে কিভা‌বে সেটা বন্ধু‌ত্বের থে‌কে বে‌শি ভে‌বে ফেল‌ছেন, সেটা আমি বুঝ‌তে পা‌রি‌নি। 
‌কিছু সম্পর্ক বন্ধুত্ব‌েই মুগ্ধায় ঘেরা থা‌কে। সে সম্প‌র্কের অন্য নাম না দেয়াই ভা‌লো। আপনার আমার সম্পর্কটা  স্ব‌প্নের মত সুন্দর ছি‌লো। আর আপনার ভা‌লোবাসা পাওয়াটাও স্ব‌প্নের মতই। আর এটা নিশ্চয়ই জা‌নেন স্বপ্ন বে‌শির ভাগ সময়ই স‌ত্যি হয়না। 
আপনার আমার ম‌ধ্যে ভা‌লোবাসার সম্পর্ক হওয়াটা হয় দীবা স্বপ্ন, নাহয় সন্ধ্যা রা‌তে দেখা স্ব‌প্নের মত। কারন এ সময় দেখা স্বপ্ন কখ‌নোই স‌ত্যি হ‌বেনা।

আমি এটা বল‌ছিনা আপ‌নি আমার যোগ্য নন। আমি এটা বল‌ছি আমি আপনার যোগ্য নই। আমরা দুজন আয়নার সাম‌নে দাড়া‌লে দুজন‌কে দুজনার পা‌শে যতটা বেমানান ততটাই হাস্যকর লাগ‌বে, মানু‌ষের সাম‌নে তো দূ‌রের কথা। 

আপ‌নি য‌দি এখন আমা‌দের বন্ধুত্ব রাখ‌তে চান ত‌বে বল‌বো, মাফ কর‌বেন। আমি পার‌বো না। কারন যতই আপ‌নি বন্ধুত্ব রাখ‌তে চান না কেন বন্ধু‌ত্বের আড়াল থে‌কে আপনার ম‌নের প্রেমিক পুরুষটা হয়‌তো বের হ‌য়ে আস‌বে। আর জা‌নেন তো ছে‌লের ম‌নের প্রে‌মিক পুরুষটা মারাত্বক ভয়ানক। এটা একটা মে‌য়ের প্র‌তিক্ষা, অপেক্ষা আর প্র‌তিজ্ঞা‌কেও ভাঙ‌তে সক্ষম। আমি আমার প্র‌তিজ্ঞা ভাঙতে চাইনা। দুর্বল হ‌তে চাইনা। তাই এখন থেকে আমা‌দের দূ‌রে থাকাই শ্রেয়। 
ভা‌লো থাক‌বেন। আর আপনার মত সুন্দর একজন মে‌য়ে‌কে নি‌জের জীবন সঙ্গী হিসা‌বে বেঁ‌ছে নি‌বেন।

                                                            মেঘা

মে‌সেসটা পাবার পর তানভী অনেকবার মেঘা‌কে ফোন ক‌রে‌ছি‌লো। কিন্তু মেঘা ফোন রি‌সিভ করে‌নি।

‌বেশ কিছুক্ষন পর মেঘা ক‌লেজ থে‌কে বের হ‌য়ে দে‌খে, মাথাফাটা রোদ্দু‌রে তানভী দা‌ড়ি‌য়ে আছে। তানভী এর কা‌ছে এসে মেঘা বলল,

__‌কেমন আছেন?

__ভা‌লো আপ‌নি?

__হুম ভা‌লো। তা এত রো‌দে দা‌ড়ি‌য়ে নি‌জে‌কে কেন পোড়া‌চ্ছেন?

__‌কেউ গা‌য়ের রঙ নি‌য়ে পার্থক্য তু‌লে‌ছি‌লো। তা‌ই রো‌দে পুড়ে তারমত হ‌য়ে পার্থক্যটা দূর কর‌তে চাই। হায়‌রে মানুষ, পৃ‌থিবী একবিংশ শতা‌ব্দীতে এসেও গা‌য়ের রঙ আর বৈসম্য নি‌য়ে সবাই প‌ড়ে থা‌কে। ম‌নের রঙটা কেউ দেখ‌লোনা। অবশ্য অনেক মে‌য়ে‌দের ম‌তে ফর্সা‌ ছে‌লেদের চ‌রি‌ত্রে দোষ থা‌কে (যেমন গল্পের লে‌খিকা হি হি)। কিন্তু এটা ভা‌বেনা ফর্সা ছে‌লে‌দের বু‌কের ভিতরও হৃদ‌পিন্ড নামক একটা বস্তু আছে, যেটা ভা‌লোবাস‌তে জা‌নে। তারা সবসময় মে‌য়ে‌দের সু‌যোগ খোঁ‌জে না।

‌মেঘা নাক ফু‌লি‌য়ে বলল, ঢঙ কর‌বেন না‌তো চ‌লেন আমার সা‌থে। তারপর তানভী এর হাত ধ‌রে নি‌রি‌বি‌লি একটা জায়গায় গি‌য়ে বস‌লো। তারপর বেশ খা‌নিকক্ষন দুজ‌নেই নীরব কাটা‌লো। 
নীরবতা কা‌টি‌য়ে মেঘা বলল,
__সবসময়‌ তো পটর পটর করেন আজ চুপ কেন?

__‌কিছু বল‌লেই সবাই বল‌বে পটা‌নোর জন্য বল‌ছি। তাই চুপ থাকাই শ্রেয়।

__কেন কর‌ছেন এমন?

__আপ‌নি কেন কর‌ছেন?

__‌প্লিজ তানভী বোঝার চেষ্টা করুন। আজ আপ‌নি আবেগী হ‌য়ে হয়ত সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন এরপর সারা জীবন পস্তা‌বেন। আপনার বন্ধু প‌রিবার প‌রিজন সবাই আমা‌কে নি‌য়ে আপনা‌কে ছোট কর‌বে। তখন কি কর‌বেন?

তানভী বসা থে‌কে উঠে বলল, 
__চ‌লি!

__(অভিমানী ক‌ন্ঠে) কোথায়?

__তনয়া‌কে আপনার ভাই‌য়ের থে‌কে দূ‌রে নি‌য়ে যে‌তে।

__কী বল‌ছেন এসব?

__‌তো আপ‌নি কালো ব‌লে আমার পা‌শে দাড়া‌তে নি‌জে‌কে অযোগ্য ম‌নে কর‌ছেন। কারন লো‌কে আমা‌দের হাস‌বে। তখন তনয়া‌‌কে তো প্র‌তিবন্ধী বলা চ‌লে! কারন ওর ডান হা‌তের তো দু‌টো আঙুুলই নেই। ওর কার‌নেও তো আপনার ভাই‌কে হা‌সির পাত্র হ‌তে হ‌বে তাইনা? তাই তনয়া আর আপনার ভাইয়া‌কে আলাদা কর‌বো।

__কী বল‌ছেন এসব ভাইয়া তনয়া ভা‌বি‌কে পাগ‌লের মত ভা‌লোবা‌সে। ভা‌বির ত্রু‌টি‌তে ভাইয়ার কিছু আসে যায়না।

__‌তো আপনার গা‌য়ের র‌ঙেও আমার কিছু আসে যায়না। নাকি নি‌জের ভাই‌কে মহৎ প্রমাণ কর‌তে চাই‌ছেন?

__এগু‌লো কেমন কথা তানভী! তারা দুজন একে অপ‌রের সকল ত্রু‌টি‌কে ইগ‌নোর ক‌রে দুজন দুজনা‌কে প‌রিপূর্ণ ক‌রে‌ছে। দুজন দুজনাতে আসক্ত।

__তাহ‌লে মেঘা, আমরা কী পা‌রিনা একে অপ‌রের ত্রু‌টি গু‌লো ইগ‌নোর ক‌রে দুজন দুজনা‌কে প‌রিপূর্ণ কর‌তে?

এবার মেঘা কী বল‌বে ভে‌বে পা‌চ্ছেনা। তাই তানভী‌কে বলল,
__আমার ক‌দিন সময় চাই।

__তানভী মুচ‌কি হা‌সি দি‌য়ে বলল, ঠিক আছে। 

২৯!!

      জেলখানার অফিসার দুপুরের পর এসে বলল,
__‌মিঃ আয়াত আপনার জা‌মিন হ‌য়ে গে‌ছে। আপ‌নি এখন মুক্ত। 

আয়াত তারাতা‌রি লকাপ থে‌কে বের হয়ে যে‌তে নি‌লে, অফিসার কিছু সাইন কর‌তে বলল। আজ সাইনগু‌লো কর‌তে যে, এক মি‌নিট সময় লাগ‌লো আয়া‌তের ম‌নে হ‌চ্ছে, সাইন কর‌তে পু‌রো একটা দিন লে‌গে গে‌ছে। 

গা‌ড়ি‌তে উঠেই বলল,
__বাবা জল‌দি হস‌পিটা‌লে চ‌লো।

আয়া‌তের বাবা আমজাদ হো‌সেন বলল,
__বা‌ড়ি গি‌য়ে ফ্রেস হ‌য়ে তারপর গে‌লে ভা‌লো হ‌তোনা?

__বাবা তু‌মি এগু‌লো কী বল‌ছো? আজ তিন‌দিন যাবত আমি আমার তনয়া‌কে দে‌খিনা। আর তু‌মি বল‌ছো বা‌ড়ি যে‌তে?

আয়া‌তের বাবা আর কথা বাড়া‌লো না। সোজা হস‌পিটা‌লে নি‌য়ে গে‌লো। তনয়া এখনও আই সি ইউতে। আয়াত আইসিইউ এর দড়জার সাম‌নে গি‌য়ে ভিত‌রে ঢুক‌তে নি‌লেই তা‌মিম বাঁধা দেয়। আয়াত অনেক মিন‌তি ক‌রে তনয়া‌কে একবার দেখ‌তে দেয়ার। কিন্তু তা‌মিম সে বারবার বল‌ছে,
__আপনার বোন‌কে খুন করার চেষ্টা ক‌রে এখন নাটক কর‌তে আস‌ছিস?

আয়াত কোন উপায় না পে‌য়ে দপ ক‌রে মা‌টি‌তে ব‌সে তা‌মি‌মের পা জ‌ড়িয়ে ধ‌রে বলল,
__তা‌মিম তোর সা‌থে যা ছি‌লো সেটা অন্য কথা, সেটার সমাধানও হ‌য়ে গে‌ছি‌লো। আমরা আবারও বন্ধু হ‌য়ে গে‌ছিলাম। প্লিজ ভাই আমা‌কে একবার তনয়ার কা‌ছে যে‌তে দে। আমি ওর কা‌ছে গে‌লেই ও ঠিক হয়ে যা‌বে। 

তা‌মিম ইদা‌নিং পাথরের মত হ‌য়ে গে‌ছে। বি‌শেষ ক‌রে র‌শ্মির সা‌থে ব্রেকাপ হবার পর থে‌কে। তাই আয়া‌তের এমন মিনু‌তিও ওর মন গলা‌চ্ছেনা। 

আয়া‌তের এবার রাগ উঠে গে‌লো। কতক্ষন যাবত তনয়া‌কে দেখার জন্য পাগ‌লের মত হ‌য়ে আছে। কিন্তু তা‌মিম দেখ‌তে দি‌চ্ছেনা। আয়াত দা‌ড়ি‌য়ে তা‌মি‌মের শা‌র্টের কলার ধ‌রে বলল,
__অ‌নেকক্ষন অনু‌রোধ কর‌ছি কিন্তু ভু‌লে গে‌ছিলাম আমা‌কে ব‌াঁধা দেয়ার ত‌ুই কে?

__আমি তনয়ার ভাই। তুই কে? তুই তো বাই‌রের লোক।

আয়াত চোখ রক্তবর্ণ ধারন তা‌মি‌মের চো‌খের দি‌কে তা‌কি‌য়ে বলল,
__তুই য‌দি তনয়ার ভাই হোস ত‌বে আমিও তনয়ার হ্যাজ‌বেন্ড। আর বি‌য়ের পর মে‌য়ে‌দের উপর স্বামীর সব চে‌য়ে বে‌শি অধিকার থা‌কে। তার বাপ ভাই‌য়ের না। তাই ভাই ভা‌য়ের মত থাক। তা‌মিম আয়াত‌কে ঘু‌ষি মার‌তে গে‌লে, তানভী তা‌মি‌মের হাত ধ‌রে ব‌লে,

__‌দিন দিন তোর বি‌বেগ মানুষত্ব নষ্ট হ‌য়ে তো‌কে পশু‌তে প‌রিণত ক‌রে‌ছে। আয়াত ভাইয়া ঠিক বল‌ছে। আয়াত‌কে উদ্দেশ্য ক‌রে বলল, ভাইয়া আপ‌নি যান। মেজদাভাই‌কে আমি দেখ‌ছি।

আয়াত চোখ মুছ‌তে মুছ‌তে ডাক্তা‌রের কথামত আইসিইউতে ঢোকার ড্রেস প‌রে ভিত‌রে ঢুক‌লো। ভিতরে ঢু‌কে যা দেখ‌লো তা‌তে আয়াতের মাথা ঘুরে গে‌লো।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন